অর্থনীতি
রোজার আগে অস্থির তেল-চালের বাজার, সবজিতে স্বস্তি

সরবরাহ বাড়ায় রাজধানীর বাজারে কমেছে প্রায় সব ধরনের শাক-সবজি ও মাছের দাম। তবে ব্রয়লার মুরগির দাম সামান্য বাড়লেও রোজার আগে আরও চড়েছে তেল ও চালের বাজার।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) কেরানীগঞ্জের আগানগর এবং রাজধানীর নয়াবাজার ও কারওয়ান বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
রোজার বাকি এক মাসেরও কম সময়। রমজানের বাজার ধরতে এরইমধ্যে মজুত শুরু করছেন ব্যবসায়ীরা। যার প্রভাব পড়ছে তেল ও চালের বাজারে। ক্রেতারা বলছেন, রমজানের আগেই ফের অস্থির হয়ে পড়েছে তেলের বাজার। আর গত কয়েকমাস ধরে ভোগাচ্ছে অতি প্রয়োজনীয় পণ্য চাল।
ইকরাম নামে এক ক্রেতা বলেন, রমজানে চালের চাহিদা কম থাকায় দাম সাধারণত বাড়ে না। তবে গত বছর রোজার আগে সিন্ডিকেট করে চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছিল ব্যবসায়ীরা। এবার সেই প্রবণতা শুরু হয়েছে দুই মাস আগে থেকেই।
আরেক ক্রেতা ফাহিম বলেন, রোজার আগেই তেল-চালের বাজারে যে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে, তাতে রোজায় কী হবে বলা মুশকিল। সরকারের উচিত এখনই ব্যবসায়ীদের লাগাম টেনে ধরা। না হলে রোজায় নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের জন্য চলা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহ ব্যবধানে আরও চড়েছে চালের বাজার। বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট ৮০-৮৪ টাকা, আটাইশ ৫৮-৬০ টাকা, মোটা স্বর্ণা ৫২-৫৬ টাকা, নাজিরশাইল ৭৬-৮৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি পোলাও চাল বিক্রি হচ্ছে ১১৬-১১৮ টাকায়।
রাজধানীর কারওয়ানবাজারের বরিশাল রাইচ এজেন্সির বিক্রেতা আল হাসিব বলেন, চালের দাম কমার বদলে উল্টো বেড়ে যাচ্ছে। মিল পর্যায়ে তদারকি নেই। এখানে তদারকি না বাড়ালে সামনে দাম আরও বাড়বে।
তেলের বাজারের অবস্থা আরও করুণ। দাম বাড়ানোর এক মাস পরও বাজারে কৃত্রিম সংকট কাটেনি বোতলজাত সয়াবিন তেলের। ভোক্তাদের অভিযোগ, বোতলজাত পাঁচ লিটারের তেল কিছুটা পাওয়া গেলেও এক ও দুই লিটারের বোতলজাত তেল পাওয়া যাচ্ছে না পর্যাপ্ত পরিমাণে। হাতে গোনা দুয়েকটি দোকানে পাওয়া গেলেও তা নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
আর বোতলজাত সয়াবিন তেলের চেয়েও বেশি দামে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হতে দেখা গেছে। খোলা সয়াবিন তেল কেজি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকায়। তবুও মিলছে না পর্যাপ্ত পরিমাণে।
তেলের বাজারের এই অস্থিরতার কথা স্বীকার করে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলেন, বাজারে পর্যাপ্ত তেল সরবরাহ করছে না কোম্পানিগুলো। দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা চলছে। আবার তেল কিনতে গেলে সঙ্গে অন্য পণ্য কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। এতে কিছুটা সরবরাহ সংকট তৈরি হয়েছে।
এদিকে, কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে গেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। আর প্রতি কেজি সোনালি মুরগি ৩০০-৩২০ টাকা, দেশি মুরগি ৫৫০-৬০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৪০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৬৫০ টাকায়।
তবে স্থিতিশীল রয়েছে ডিমের দাম। প্রতি ডজন লাল ডিম ১৩০-১৩৫ টাকা ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। আর প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ২৩৫-২৪০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দামও। বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি খাসির মাংস ১ হাজার ৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়।
স্বস্তি ফিরেছে সবজির বাজারে। কেজিতে ৫ টাকা পর্যন্ত কম মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন ৪০-৫০ টাকা, করলা ৪০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, মুলা ১৫-২০ টাকা ও লতি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি পেঁপে ৩০-৩৫ টাকা, গাজর ২৫-৩০ টাকা, টমেটো ৩০-৩৫ টাকা, শিম ২০ টাকা, শালগম ২০ টাকা, মটরশুঁটি ৮০ টাকা ও শসা বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়।
এছাড়া প্রতি কেজি ধনেপাতা ২০-৩০ টাকা, পেঁয়াজের কলি ২০-২৫ টাকা, পাতাসহ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। আর মানভেদে প্রতি পিস ফুলকপি ২০-২৫ টাকা, বাঁধাকপি ২৫-৩০ টাকা, ব্রকলি ৩০-৪০ টাকা এবং লাউয়ের জন্য গুনতে হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা।
সবজির দামের নিম্নমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে আলু ও পেঁয়াজের বাজারেও। বর্তমানে প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকায়। আর কেজিতে ৫ টাকা কমে খুচরায় প্রতি কেজি মুড়িকাটা পেঁয়াজ ৪৫-৫০ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকায়।
স্থিতিশীল রয়েছে কাঁচা মরিচের দাম। খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০-৫০ টাকায়, আর পাইকারিতে ৩০-৪০ টাকা। এছাড়া বাজারে লালশাকের আঁটি ১০ টাকা, পুঁইশাক ২০-২৫ টাকা, লাউশাক ৩০ টাকা, মুলাশাক ১০ টাকা, কলমিশাক ১০ টাকা, মেথি শাক ১০ টাকা ও পালংশাক বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়।
অস্থির হয়ে ওঠা ইলিশের বাজারে স্থিতিশীলতা বিরাজ করলেও কমেছে অন্যান্য মাছের দাম। বর্তমানে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২২০০ টাকায়। এছাড়া দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ২৮০০ টাকা, ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৮০০-১৯০০ টাকা হারে বিক্রি হচ্ছে, আর ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৩০০-১৪০০ টাকা ও ৩০০-৪০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের জন্য গুনতে হচ্ছে ৭০০-৮০০ টাকা পর্যন্ত।
রাজধানীর কারওয়ানবাজারের ইলিশ বিক্রেতা মো. শুকুর আলী বলেন, সরবরাহ তেমন বাড়েনি। তবে দাম বেশি হওয়ায় চাহিদা কমেছে। এতে কমেছে দামও।
বাজারে কেজিতে ২০-৫০ টাকা পর্যন্ত কমে প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪২০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা ও তেলাপিয়া ১৬০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া প্রতি কেজি বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, পোয়া ৪৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, আইড় ৭৫০ থেকে ৮০ টাকা, দেশি কৈ ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা, শিং ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, শোল ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা এবং নদীর পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়।
নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েরই। ক্রেতারা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয় না। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পান।
আর বিক্রেতারা বলছেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধুদের দৌরাত্ম্য কমবে।

অর্থনীতি
সোনার দাম ভরিতে কমলো ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা

দেশের বাজারে কমেছে সোনার দাম। আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যহ্রাসের সঙ্গে স্থানীয় চাহিদা ও দাম কমার কারণে নতুন করে দাম কমানো ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
বুধবার (২২ অক্টোবর) বাজুসের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রতি ভরিতে সর্বোচ্চ ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা পর্যন্ত কমেছে সোনার দাম। নতুন দামের ফলে সবচেয়ে ভালো মানের ২২ ক্যারেট এক ভরি সোনার দাম দাঁড়াচ্ছে ২ লাখ ৮ হাজার ৯৯৬ টাকা। নতুন এ দাম বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) থেকে কার্যকর হবে।
বাজুস জানিয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) দাম কমায় সোনার মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী, ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনা বিক্রি হবে ২ লাখ ৮ হাজার ৯৯৬ টাকা, ২১ ক্যারেট সোনার দাম ১ লাখ ৯৯ হাজার ৫০১টাকা, ১৮ ক্যারেট এক লাখ ৭০ হাজার ৯৯৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনার ভরি বিক্রি হবে এক লাখ ৪২ হাজার ২০৯ টাকায়।
সোনার দামের সঙ্গে কমানো হয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম থাকছে ৫ হাজার ৪৭০ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপা ৫ হাজার ২১৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ৪ হাজার ৪৬৭ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপা বিক্রি হবে ৩ হাজার ৩৫৯ টাকায়।
কাফি
অর্থনীতি
রিজার্ভ ছাড়িয়েছে ৩২ বিলিয়ন ডলার

রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিলাম পদ্ধতিতে ডলার কেনার প্রেক্ষাপটে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও দেখা দিয়েছে উত্থান।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, সোমবার (২১ অক্টোবর) পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী বর্তমান রিজার্ভের পরিমাণ ২৭ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত ৯ অক্টোবর পর্যন্ত গ্রস রিজার্ভ ছিল ৩১ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী যার পরিমাণ ছিল ২৭ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র জানান, রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিলামের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে ডলার কেনায় রিজার্ভ বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ বেড়ে ৩২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। আর গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ২৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এ পর্যন্ত নিলাম পদ্ধতির মাধ্যমে মোট ২১২ কোটি ৬০ লাখ ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত ১৩ জুলাই থেকে নিলামের মাধ্যমে ডলার কেনা শুরু হয়।
এছাড়া সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রেমিট্যান্স প্রবাহও বাড়ছে। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের শুরু থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত দেশে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ৯১৫ কোটি ৯০ লাখ ডলারের। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৮০৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার। অর্থবছর অনুযায়ী রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, চলতি অর্থবছরের মাসভিত্তিক প্রবাসী আয়ের প্রবাহ ছিল যথাক্রমে—জুলাইয়ে ২৪৭ কোটি ৭৮ লাখ ডলার, আগস্টে ২৪২ কোটি ১৯ লাখ ডলার এবং সেপ্টেম্বরে ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ডলার।
অর্থনীতি
তিন দেশ থেকে ৬৬৪ কোটি ৪০ লাখ টাকার সার কিনবে সরকার

সৌদি আরব, মরক্কো ও রাশিয়া থেকে এক লাখ ১৫ হাজার মেট্রিক টন সার কেনার প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ৬৬৪ কোটি ৪০ লাখ ৯৮ হাজার ৪৪০ টাকা। এরমধ্যে রয়েছে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া, ৪০ হাজার টন ডিএপি এবং ৩৫ হাজার টন এমওপি সার। এছাড়া বরগুনায় ১০ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমকা সম্পন্ন একটি বাফার গোডাউন নির্মাণ কাজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে
আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) ভার্চ্যুয়ালি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে জন্য সৌদি আরবের সাবিক কৃষি-পুষ্টি কোম্পানি থেকে ৫ম লটের ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
সৌদি আরব থেকে এ সার আনতে ব্যয় হবে ১৫১ কোটি ৭৭ লাখ ৪৭ হাজার ৭৬০ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম পড়বে ৪১৩.৩৩ মার্কিন ডলার।
বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মরক্কোর ওসিপি নিউট্রিক্রপস এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ৭ম লটের ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
মরক্কো থেকে এই সার আমদানিতে ব্যয় হবে ৩৬০ কোটি ০১ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম পড়বে ৭৩৫.৩৩ মার্কিন ডলার।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের অপর এক প্রস্তাবে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে রাশিয়ার একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ৫ম লটের ৩৫ হাজার মেট্রিক টন এমওপি সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
রাশিয়া থেকে এ সার আমদানিতে খরচ হবে ১৫২ কোটি ৬১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম পড়বে ৩৫৬.২৫ মার্কিন ডলার।
এ ছাড়া বৈঠকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ‘সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার্থে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৩৪টি বাফার গুদাম নির্মাণ’ (১ম সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় প্যাকেজ-৪ এর লট-৫ (বরগুনা— ১০ হাজার মেট্রিক টন) এর অধীন ১টি সাইটে গোডাউন নির্মাণ কাজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
সুপারিশকৃত দরদাতা প্রতিষ্ঠান এম/এস এমবিএল – আরএফএল। এতে ব্যয় হবে ৫১ কোটি ৭৩ লাখ ৯৪ হাজার ২৯৫ টাকা।
অর্থনীতি
জিটুজি চুক্তির মাধ্যমে পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করবে সরকার

অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের কমিটি আজ দুটি প্রস্তাব নীতিগতভাবে অনুমোদনের সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ২০২৬ সালের জন্য জিটুটি (সরকারের সঙ্গে সরকারের) চুক্তির মাধ্যমে পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে ই-পাসপোর্টের সরঞ্জাম ক্রয়।
এই বছরের ৩৪তম অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত কমিটির সভাটি আজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
প্রস্তাব দুটি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এসেছিল।
প্রথম প্রস্তাবটির অধীনে, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সময়ের জন্য সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির অধীনে জিটুজি চুক্তির মাধ্যমে পরিশোধিত জ্বালানি তেল ক্রয় ও আমদানির জন্য নীতিগত অনুমোদন চেয়েছিল।
প্রস্তাবটি পর্যালোচনার পর, দেশের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে তেলের স্থিতিশীল সরবরাহ নিশ্চিত করার গুরুত্ব বিবেচনা করে কমিটি নীতিগতভাবে এটি অনুমোদনের সুপারিশ করে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক উত্থাপিত দ্বিতীয় আলোচ্যসূচির বিষয়টি ছিল ‘বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট প্রবর্তন এবং স্বয়ংক্রিয় সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক চলমান প্রকল্প সংক্রান্ত।
সরাসরি চুক্তি ক্রয় পদ্ধতির অধীনে ৫৭ লক্ষ ই-পাসপোর্ট পুস্তিকা এবং সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণ প্যাকেজের পাশাপাশি জরুরি পরিস্থিতিতে ৫০ লক্ষ পর্যন্ত কাঁচামালসহ এক কোটি ই-পাসপোর্ট কাঁচামাল সংগ্রহের জন্য নীতিগতভাবে প্রস্তাবটি অনুমোদিত হয়েছে।
বিস্তারিত আলোচনার পর, কমিটি ই-পাসপোর্ট ইস্যুর ধারাবাহিকতা বজায় রাখা এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনা দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রকল্পের কৌশলগত গুরুত্ব উল্লেখ করে নীতিগত অনুমোদনের জন্য প্রস্তাবটি সুপারিশ করেছে।
অর্থনীতি
শিশুখাদ্য আমদানিতে এলসি শর্ত শিথিল করলো বাংলাদেশ ব্যাংক

শিশুখাদ্য আমদানিতে ১০০ শতাংশ নগদ মার্জিন রাখার বাধ্যবাধকতা শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে শিশুখাদ্য আমদানি ঋণপত্র (এলসি) খোলার সময় মার্জিনের হার নির্ধারণ করা যাবে।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়। এতে সই করেন বিভাগের পরিচালক মো. আলা উদ্দিন।
সার্কুলারে বলা হয়, গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশের মুদ্রা ও ঋণ ব্যবস্থাপনা সুসংহত রাখতে পণ্যের আমদানি ঋণপত্র স্থাপনের সময় ১০০ শতাংশ নগদ মার্জিন সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। ওই সময় ‘নন সিরিয়াল ফুড’ অর্থাৎ অ-শস্য খাদ্যপণ্য এবং ‘প্রক্রিয়াজাত খাদ্যদ্রব্য ও পানীয়’ যেমন— টিনজাত খাদ্য, চকলেট, বিস্কুট, জুস, কফি, সফট ড্রিংকস ইত্যাদি এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে সম্প্রতি কিছু ব্যাংক অত্যাবশ্যকীয় শিশুখাদ্যকে ওই তালিকার অন্তর্ভুক্ত করে শতভাগ নগদ মার্জিন সংরক্ষণের শর্ত আরোপ করছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরে আসে।
এ অবস্থায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, অত্যাবশ্যকীয় শিশুখাদ্য এসব পণ্যের তালিকায় পড়বে না। ফলে শিশুখাদ্য আমদানি ঋণপত্র স্থাপনের ক্ষেত্রে আর বাধ্যতামূলক ১০০ শতাংশ মার্জিন রাখতে হবে না। ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে এ হার নির্ধারণ করা যাবে।