রাজনীতি
শিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন, পদ পেলেন যারা

সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে ২০২৫ সেশনের জন্য ৪৬ সদস্যের কার্যকরী পরিষদ গঠন করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। রবিবার (১৯ জানুয়ারি) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম নির্বাচিত কার্যকরী পরিষদ সদস্যদের সাথে পরামর্শ করে ১৪ জনকে কার্যকরী পরিষদের সদস্য হিসেবে মনোনয়ন প্রদান করেছেন। পরবর্তীতে তিনি কার্যকরী পরিষদের পরামর্শক্রমে ২৭ সদস্যের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারিয়েট গঠন করেন।
এতে কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সাবেক সভাপতি সিবগাতুল্লাহ। আর আর কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন ঢাবি শিবিরের আলোচিত সদ্য সাবেক সভাপতি সাদিক কায়েম।
কেন্দ্রীয় সম্পাদকীয় অন্য পদগুলোর মধ্যে কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক পদে আজিজুর রহমান আজাদ, তথ্য-প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জি. নাজমুস সোয়াদ রফি, আন্তর্জাতিক সম্পাদক মু. মু’তাসিম বিল্লাহ শাহেদী, সাহিত্য সম্পাদক ডা. মোহাম্মদ নাঈম, অর্থ সম্পাদক তৌহিদুল হক মিছবাহ, মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাইদুল ইসলাম, ছাত্র অধিকার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম, দাওয়াহ সম্পাদক হাফেজ মো. মিছবাহুল করিম, বিজ্ঞান সম্পাদক ডা. উসামাহ রাইয়ান, ফাউন্ডেশন সম্পাদক আসাদুজ্জামান ভূইয়া, ছাত্রকল্যাণ ও সমাজসেবা সম্পাদক হাফেজ ডা. রেজওয়ানুল হক, শিল্প ও সংস্কৃতি সম্পাদক হাফেজ মুহাম্মদ আবু মুসা, স্কুল কার্যক্রম সম্পাদক মো. নোমান হোসেন নয়ন, শিক্ষা সম্পাদক আব্দুল মোহাইমেন, প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক নাহিদুল ইসলাম, কলেজ কার্যক্রম ও ব্যবসায় শিক্ষা সম্পাদক মো. শহীদুল ইসলাম, এইচআরডি সম্পাদক শরীফ মাহমুদ, বিতর্ক সম্পাদক হারুনুর রশিদ রাফি, মাদরাসা কার্যক্রম সম্পাদক আলাউদ্দিন আবির, গবেষণা সম্পাদক গোলাম জাকারিয়া, পাঠাগার সম্পাদক মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, তথ্য সম্পাদক আবু সায়েদ সুমন, মানবাধিকার সম্পাদক মো. সিফাত উল আলম, আইন সম্পাদক আরমান হোসেন এবং কেন্দ্রীয় স্পোর্টস সম্পাদক পদে ইঞ্জি. এস এম তানভীর উদ্দীন নির্বাচিত হয়েছেন।

রাজনীতি
সরকারে থাকা দলীয় লোকদের সরিয়ে দিতে হবে: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বর্তমান সরকারের সময় প্রশাসনে কোনোভাবে কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত কেউ থাকলে, তাদের রাখা যাবে না। কারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কনসেপ্টই হলো নির্দলীয়তা। নির্দলীয় হলে সেখানে রাজনৈতিক দলের উপদেষ্টা বা দলীয় পরিচয়ের লোকদের থাকার কোনো কারণ নেই। বর্তমান সরকারে যদি দলীয় কেউ থাকে, তাদের সরিয়ে দিতে হবে- তা না হলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
বুধবার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, গত ১৫ বছরের নানা ধরনের অপকর্মে যারা জড়িত এবং যারা ফ্যাসিস্টদের রক্ষা করতে গিয়ে বেআইনি কাজ করেছেন, তাদের প্রশাসনে রেখে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তারা গোপনে থাকেনি, অনেকে প্রকাশ্যেই সহযোগিতা করেছেন- তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপ নেবে, তখন তা নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ হওয়া উচিত। তাহলে বিগত ১৬ বছর যারা ভোটে বিশ্বাস হারিয়েছেন, তাদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসবে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের দুটি মামলায় সাবেক ও বর্তমান ১৫ জন সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসব বিষয় আইনি প্রক্রিয়ার আওতায়। আইনি প্রক্রিয়ায় যা হওয়ার তা হবে—যারা অপরাধী তাদের বিচার হওয়া উচিত। তবে সবকিছুতে কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তারা প্রমাণ করবেন যে- তারা অভিযুক্ত নন। যদি আদালত প্রমাণ করেন যে- তারা অভিযুক্ত, তাহলে আদালতের নির্ধারিত শাস্তি ভোগ করতে হবে। আইনের চোখে সবাই সমান।
রিজভী উল্লেখ করেন, জুলাই সনদ মোটামুটি সবাই মেনে নিয়েছে। সেখানে থাকা অঙ্গীকার বাস্তবায়নের আহ্বান জানান তিনি।
দেশের সর্বক্ষেত্রে চরমভাবে দলীয়করণ হয়েছে দাবি করে বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের অনেককে দেশে থাকতে না পেরে দেশ ছেড়ে যেতে হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভেবেছিলেন, তাদের জমিদারি সারাজীবন থাকবে। ৫ আগস্টের পর অনেকের মানসিকতা পরিবর্তিত হয়েছে, তবু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক হয়নি।
তিনি আরও বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষণা দিয়েছেন— বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ২৫ কোটি বৃক্ষরোপণ করা হবে এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সব ধরনের কাজ করা হবে।
রাজনীতি
বিভেদ নয়, ঐক্য চাই : মাসুদ সাঈদী

পিরোজপুর-১ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাসুদ সাঈদী বলেছেন, ‘বিভেদ নয়, ঐক্য চাই। আমরা ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তি একসঙ্গে ছিলাম, আছি এবং থাকব। যত দিন না এ দেশ থেকে ফ্যাসিবাদের শেষ চিহ্নটুকু মুছে ফেলতে না পারি, যত দিন না একটি সত্যিকারের শোষণ-বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক ও ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে না পারি।’
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে পিরোজপুর সদর উপজেলার ৬ নম্বর শারিকতলা ডুমুরীতলা ইউনিয়ন পরিষদ অডিটরিয়ামে মতবিনিময়সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মাসুদ সাঈদী বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে, গঠনমূলক সমালোচনা ও মতভেদ গণতান্ত্রিক রাজনীতির অন্যতম সৌন্দর্য। কিন্তু সেই সমালোচনা যেন আমাদের ঐক্যকে দুর্বল না করে। আজ যদি আমরা একে অপরের বিরুদ্ধে কথা বলি, যদি দলীয় স্বার্থকে জাতীয় স্বার্থের ওপরে স্থান দিই, তাহলে আমরা সেই একই ভুল করব, যা শত্রুরা চায়। আমরা চাই, ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তি একই পতাকার নিচে দাঁড়াক।
আমরা চাই, যে স্বপ্ন নিয়ে শহীদরা জীবন দিয়েছেন, সেই বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সবাই হাতে হাত রাখুক।’
তিনি বলেন, ‘স্বপ্নের বাংলাদেশ হবে এমন এক দেশ, যেখানে মানুষ স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারবে, যার যার রাজনৈতিক মত প্রকাশ করতে পারবে, ভিন্ন মতের জন্য নির্যাতিত হবে না। আমরা এমন এক দেশ চাই, যেখানে দুর্নীতি নয়, ন্যায়-নীতি ইনসাফ থাকবে। যেখানে অপশাসন নয়, সুশাসন থাকবে।
যেখানে স্বৈরতন্ত্র নয়, গণতন্ত্র থাকবে। অন্য কোনো দেশ পরিচালিত সরকার নয়, এ দেশের জনগণ দ্বারা পরিচালিত সরকার থাকবে।’
মাসুদ সাঈদী আরো বলেন, ‘আজ আমরা এক বাংলাদেশে আছি, যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে দীর্ঘ ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মাধ্যমে সবচেয়ে ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান হয়েছে। গত ১৬ বছর ধরে আমরা গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনার সংগ্রামে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়েছি। আমরা কেউ জামায়াত, কেউ বিএনপি, কেউ অন্য কোনো ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক শক্তির কর্মী—কিন্তু আমাদের লক্ষ্য ছিল একটাই, স্বাধীন বাংলাদেশে জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা করা।’
জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘এ দীর্ঘ সময়ে আমরা দেখেছি, কিভাবে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী সরকারবিরোধী মতের মানুষগুলোর ওপর কিভাবে নির্যাতন, মামলা, হত্যা, গুম-খুন, হামলা চালিয়ে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে। কিভাবে দেশের শীর্ষস্থানীয় নিরপরাধ আলেমদের অন্যায়ভাবে ফাঁসি দিয়েছে। খুনি হাসিনার এ জুলুমের হাত থেকে কেউ রেহাই পায়নি। দেশের প্রতিটি আন্দোলনকারী, প্রতিটি গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষ আজ সেই নিপীড়নের সাক্ষী। কিন্তু তবু আমরা দমে যাইনি—বরং প্রতিটি নির্যাতনের পর আল্লাহর দয়ায় আমরা আরো দৃঢ় হয়েছি, আরো ঐক্যবদ্ধ হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘এখন যখন জনগণের আন্দোলন সফল পরিসমাপ্তির পথে, যখন ফ্যাসিবাদী শাসন বাংলাদেশ থেকে চিরতরে অবসানের পথে, তখন আমাদের ভেতরে বিভেদ সৃষ্টির গভীর চক্রান্ত শুরু হয়েছে। শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীরা জনতার রোষে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। তারা জানে ঐক্যবদ্ধ ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তি ক্ষমতায় গেলে তাদের জবাবদিহির হাত থেকে কেউ রক্ষা করতে পারবে না। তাই তারা এখন ভেতরে ভেতরে ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিসমূহের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে ঐক্যের শক্তি ভাঙার চেষ্টা করছে। আমাদের সেই ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।’
মাসুদ সাঈদী বলেন, ‘আমাদের ঐক্যই আমাদের শক্তি। এ শক্তিই হবে আগামী দিনের পরিবর্তনের চালিকাশক্তি। আমরা সম্মিলিতভাবে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছি, এবার ইনশাআল্লাহ আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে নতুন এক স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়বই।’
মতবিনিময়সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পিরোজপুর জেলা শাখার সম্মানিত নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রব, জেলা অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মাওলানা সিদ্দিকুল ইসলাম, সদর উপজেলা আমির মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান, শারিকতলা ডুমুরীতলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল খান, ইউপি সদস্য ময়না বেগম, ইউপি সদস্য শিরিন আক্তার, ইউপি সদস্য তপন কুমার সাহা, শারিকতলা ইউনিয়ন জামায়াত আমির ওমর ফারুক, যুবনেতা মুবাশশির সানি, জাকারিয়া হোসেন, মামুন হোসেনসহ ইউনিয়ন জামায়াত, বিএনপি ও স্থানীয় ব্যক্তিরা।
রাজনীতি
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ১৩১ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

রাজধানীতে ঝটিকা মিছিলে অংশগ্রহণকারী কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ১৩১ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিলে অংশগ্রহণকারী নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ১৩১ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদের মধ্যে ছয়জনের পরিচয় জানা গেছে।
তারা হলেন কক্সবাজার জেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সহসভাপতি এখলাস মিয়া (২৮), খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি থানার ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জিয়াউর রহমান (৩৬), আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী ও রাজধানীতে দলীয় মিছিল-সমাবেশে অংশগ্রহণকারী সাইফুল ইসলাম (৪০), মাদারীপুর সদর উপজেলার যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক জুয়েল আহাম্মেদ রনি (৩৯), আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলে অংশগ্রহণকারী মো. রিয়াজ উদ্দিন (৪৯) ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মো. আক্তার হোসেন (৪৭)।
রাজনীতি
সারজিস আলমের গাড়িবহরে ককটেল হামলা

বগুড়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের গাড়িবহরে ককটেল হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে বগুড়া জেলা পরিষদ মিলনায়তনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমন্বয় সভা চলাকালে মিলনায়তনের বাইরে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় দলের উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের উপস্থিতি ছিলেন। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জেলা পরিষদের পেছন সংলগ্ন ভবন থেকে দুটি ককটেল নিক্ষেপ করা হয়, যার মধ্যে একটি বিস্ফোরিত হয়। তাৎক্ষণিকভাবে অতিরিক্ত পুলিশ ও সিআইডির ক্রাইমসিন দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশ অবিস্ফোরিত অন্য ককটেলটি উদ্ধার করে সেটি নিষ্ক্রিয় করার জন্য বালতির পানিতে ডুবিয়ে রাখে।
তবে ককটেল বিস্ফোরণে এনসিপির সভায় কোনো বিঘ্ন ঘটেনি। সভা শেষে সারজিস আলম নিরাপদে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। এর পরপরই স্থানীয় নেতাকর্মীরা তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল করেন।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে স্থানীয় এনসিপি নেতারা পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
তাদের দাবি, সভার জন্য বারবার নিরাপত্তা চাওয়া হলেও পুলিশ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেয়নি, যার ফলেই সভাস্থল লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
তবে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান বাসির বলেন, জেলা পরিষদ চারদিকে নিরাপত্তা দেওয়ালে ঘেরা। এর ভেতরে সভা চলছিল। পর্যাপ্ত পুলিশ জেলা পরিষদের প্রধান গেটে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছিল। জেলা পরিষদের পেছন সংলগ্ন ভবন থেকে কে বা কারা দুটি ককটেল নিক্ষেপ করে। তবে এতে কেউ হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
জেলা সমন্বয় সভার আগে বিকেল পৌনে ৩টার দিকে সারজিস আলম শহরের আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠ সংলগ্ন এনসিপির অস্থায়ী কার্যালয় উদ্বোধন করেন এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
জুলাই অভ্যুত্থান প্রসঙ্গ টেনে সারজিস আলম বলেন, মানুষ এখনো জুলাই অভ্যুত্থানের কথা শুনলে শিউরে ওঠে। এই দেশের মানুষের সামনে নতুন করে কেউ স্বেচ্ছাচারিতা করতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, যদি জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি, বিচারিক প্রক্রিয়া দৃশ্যমান হয় এবং নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করে, তাহলে ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।
দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতি প্রসঙ্গে এনসিপির এই নেতা মন্তব্য করেন, বিগত সময়ে বিএনপি যখনই সরকার গঠন করেছে, তা জোট সরকারের মাধ্যমেই করেছে। জামায়াতও কখনো শক্তিশালীভাবে সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে পারেনি। আমরা মনে করি, আগামীতে আওয়ামী লীগ ও আধিপত্যবাদ প্রশ্নে বিএনপি বা জামায়াত কেউ এককভাবে দেশকে নেতৃত্ব দিতে পারবে না। এই জায়গায় এনসিপির রাজপথে ও সংসদে শক্তিশালী প্রতিনিধিত্ব প্রয়োজন।
তরুণ প্রজন্মের রাজনীতিতে আসার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, আগামী প্রজন্ম যদি সংসদে প্রতিনিধিত্ব না করে, তাহলে রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন সম্ভব নয়। যারা জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও খুনিদের বিচারের জন্য কাজ করবে, তাদের সঙ্গে এনসিপি ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে।
কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাকিব মাহাদীর সভাপতিত্বে সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন এনসিপির কেন্দ্রীয় মুখ্য সমন্বয়ক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক।
রাজনীতি
পিআরের দাবি জামায়াতের রাজনৈতিক প্রতারণা: নাহিদ

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জামায়াতে ইসলামীর তথাকথিত ‘আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) আন্দোলন’ একটি সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক প্রতারণা।
রবিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে নাহিদ এ কথা বলেন। পোস্টটি তিনি ইংরেজিতে লিখেছেন।
পোস্টে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, আন্দোলনটি ইচ্ছাকৃতভাবে গঠিত হয়েছিল ঐকমত্য কমিশনের সংস্কার প্রক্রিয়া ভ্রান্ত পথে চালিত এবং জনগণের অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্র ও সংবিধান পুনর্গঠন-সংক্রান্ত জাতীয় সংলাপ ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য।
নাহিদ লেখেন, ভোটের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে একটি উচ্চকক্ষ গঠনের মূল সংস্কার দাবি ছিল সংবিধানিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা। আমরা এমন ভিত্তিগত সংস্কারের চারপাশে একটি গণআন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করছিলাম এবং জুলাই সনদের আইনি কাঠামো বিস্তৃত জাতীয় ঐকমত্যের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলাম।
তিনি আরও লেখেন, কিন্তু জামায়াত ও তার মিত্ররা এ এজেন্ডা ছিনতাই করে একে সুকৌশলে পিআর ইস্যুতে নামিয়ে আনে এবং বিষয়টি নিজেদের সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থে দরকষাকষির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল না সংস্কার, বরং ছিল কৌশলী প্রতারণা।
নাহিদের অভিযোগ, জামায়াত কখনোই সংস্কারমূলক আলোচনায় অংশ নেয়নি- না জুলাই অভ্যুত্থানের আগে, না পরে। তারা কখনোই কোনো গঠনমূলক প্রস্তাব দেয়নি, কোনো সাংবিধানিক দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করেনি কিংবা একটি গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেয়নি।
নাহিদ জানান, ঐকমত্য কমিশনে জামায়াতের হঠাৎ করে ‘সংস্কারের’ পক্ষে অবস্থান নেওয়া আদর্শগত বিশ্বাসের প্রকাশ ছিল না, বরং এটা ছিল একটি রাজনৈতিক অনুপ্রবেশ, সংস্কারের ছদ্মবেশে নাশকতা।
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, আজ বাংলাদেশের জনগণ এ প্রতারণা পরিষ্কারভাবে বুঝে গেছে। তারা এখন জেগে উঠেছে এবং আর কখনো কোনো ভুয়া সংস্কারবাদী বা ষড়যন্ত্রকারী শক্তির দ্বারা প্রতারিত হবে না। না সর্বশক্তিমান, না এ দেশের সার্বভৌম জনগণ- কেউই আর কখনো অসৎ, সুবিধাবাদী ও নৈতিকভাবে দেউলিয়া শক্তিগুলো শাসন করার সুযোগ দেবে না।