রাজনীতি
আগামী নির্বাচন বিএনপির জন্য সহজ নয়: তারেক রহমান

আগামী নির্বাচন বিএনপির জন্য এতো সহজ নয়, জনগণ ম্যাটারস’ এ কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের জনগণের পাশে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
আজ রবিবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে বিএনপির আলোচনা সভায় লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ নির্দেশ দেন।
রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
তারেক রহমান বলেন, আমি গত কয়েক মাস ধরে বলছি, সামনের নির্বাচন এতো সহজ নয়, আপনারা যত সহজ ভাবছেন। জনগণ হচ্ছে আমাদের শক্তি, জনগণ হচ্ছে আমাদের সমর্থন, কাজেই আমরা যদি ভুল করি জনগণ আবার কোনো একটা কিছু বুঝিয়ে দেবে তখন কিন্তু পস্তাতে হবে, তখন কিন্তু হা-হুতাশ করতে হবে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, এখনো সময় আছে আসুন, আসুন, আসুন, আমরা জনগণের পাশে থাকি, জনগণের সঙ্গে থাকি। যারা এমন কিছু করবে যা আপনাকে-আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, যা আমার দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, যা আমাদের দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে আমরা তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলবো।
তিনি বলেন, আমরা কে ছোট নেতা, কে গ্রামের নেতা, কে ইউনিয়নের নেতা, কে বড় নেতা, কে বিভাগীয় নেতা, কে কেন্দ্রীয় নেতা বিষয়, এটি নয়। বিষয়টি হচ্ছে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, আমাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে হবে। আমাদের এমনভাবে দাঁড়াতে হবে, যাতে জনগণ বোঝে আমরা তাদের সঙ্গে আছি, জনগণ যেন বোঝে আমরা তাদের পাশে আছি। জনগণ যেন বোঝে, তারা যেভাবে চায় আমরা সেইভাবেই আছি। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী আমরা সেইভাবেই তাদের পাশে আছি।
আজকে রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকীতে এই হোক আমাদের শপথ, এই হোক আজকে আমাদের প্রতিজ্ঞা।
‘সর্ব পর্যায়ে জবাবদিহিতা নিশ্চিত চাই বলে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, রাষ্ট্রের সরকারের প্রতিটি পর্যায়ে যেখানে নির্ধারিত হবে, সেটি জাতীয় সংসদ হোক, সেটি পৌরসভা হোক, সেটি ইউনিয়ন পরিষদ হোক যেটিই হোক না কেন? আমরা যদি জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারি তাহলে ধীরে ধীরে আমরা এগোতে সক্ষম হবো। সরকার জনগণের কাছে জবাবদিহিতা করতে বাধ্য থাকে, প্রতিটি কাজের জন্য। তাহলেই একমাত্র জনগণের ক্ষোভ, দুর্দশা লাঘব করা সম্ভব হবে। জনগণের কথা, জনগণের ইচ্ছা, জনগণের আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হবে সরকারের কাজের মাধ্যমে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচন কেন চাইছি আমরা। একটি নির্বাচিত সরকার ছাড়া ম্যান্ডেড পাওয়া যায় না। সংস্কার করতে হলেও পার্লামেন্ট লাগবে। নির্বাচন যত দ্রুত হবে দেশের সংকট তত দ্রুত কাটবে। রাজনৈতিক সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। সংস্কারতো শুরু করেছিলাম আমরা আরও দুই বছর আগে। আমরা গত দুই বছর ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলে ৩১ দফা দিয়েছে। এখানে সব কিছু রয়েছে।
তিনি বলেন, জিনিসপত্রের দাম এখন এমনভাবে বাড়ছে মানুষের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। প্রতিদিন জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। অন্তর্রর্তী সরকারকে বলবো দয়া করে ওদিকে নজর দিন। দয়া করে সুশাসনের দিকে নজর দিন। এখন সরকারি যে আমলা কর্মকর্তা রয়েছে তাদের মধ্যে দুর্নীতি শুরু হয়ে গেছে দয়া করে ওদিকে নজর দিন। যাতে সুশাসন দিতে পারে সেদিকে নজর দিন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছিল। নির্মম ইতিহাস তাদের নেতার (শেখ মুজিব) ছবি মূর্তি যেখানে ছিল বাংলাদেশের মানুষ তা মুছে ফেলেছে। আর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম সবার সামনে ভেসে আসছে। কেন, কারণ হচ্ছে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের মানুষের অন্তরে চলে গিয়েছে। আমরা সব সময় বলি তাকে যতই মুছে দিতে চাও পারবে না, কারণ তার নাম মানুষের অন্তরে রয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
এছাড়া সভায় আরও বক্তব্য রাখেন কবি আবদুল হাই শিকদার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদ।
কাফি

রাজনীতি
দল পরিচালনায় যারা অক্ষম, তারা দেশ চালাতে পারবে না: ড. হেলাল

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর, ঢাকা-৮ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, যারা দল নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না; তারা কখনো দেশ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা-৮ আসনের উদ্যোগে মতিঝিলে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের পক্ষে গণসংযোগ অভিযান পূর্বক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠা-ফুটপাত শেষ করে এবার মানুষের বাসা-বাড়িতে, ফ্ল্যাটে-ফ্ল্যাটে গিয়ে চাঁদা দাবি করছে। এমনকি তারা নিজ দলের সাবেক মহাসচিবের পরিবারের কাছ থেকেও গভীর রাতে গিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করেছে। ৫ আগস্ট পরবর্তী তাদের দলীয় নেতাকর্মী সারাদেশে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী, লুটপাট, দখল, খুন, ধর্ষণের মহোৎসবে মেতে উঠেছে।
দুর্নীতিগ্রস্ত নেতৃত্ব দিয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য সৎ, যোগ্য, দক্ষ, আদর্শিক ও নৈতিক নেতৃত্ব নির্বাচিত করতে হবে। জামায়াতে ইসলামীতে রয়েছে সৎ, যোগ্য, দক্ষ, আদর্শিক ও নৈতিক, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ মুক্ত নেতৃত্ব রয়েছে। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে ৫ বছরে নয় এক বছরেই দেশকে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজমুক্ত করে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করবে। ক্ষুধা, দারিদ্র, বেকারত্ব দূরীকরণের মাধ্যমে বৈষম্যহীন কল্যাণ ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে। অন্যরা ক্ষমতায় বসতে পারলে দেশকে দেউলিয়া করবে।
এসময় তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী যারাই ক্ষমতায় বসেছে তারাই চেয়েছে নিজস্ব মতবাদ প্রতিষ্ঠিত করে ইসলামের বিধান মুছে দিতে। জামায়াতে ইসলামীসহ এদেশের আলেম-ওলামা সমাজে ইসলামের আদর্শিক সৌন্দর্য পৌঁছাতে চেষ্টা করেছে। কিন্তু ক্ষমতাসীনরা আলেমদের প্রতিহত করেছে। জামায়াতে ইসলামী এদেশের প্রতিটি ঘরে-ঘরে দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছানোর মহান দায়িত্ব পালন অব্যাহত রেখেছে।
লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রসঙ্গে ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে একটি দলের নেতাকর্মীরা মতিঝিল, শাহজাহানপুর, গুলিস্তান সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাসা-বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিচ্ছে দাঁড়িপাল্লার পক্ষে কোনো সভা-সমাবেশে যেতে পারবে না। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত না করে নির্বাচন দিলে সেটি হবে জাতির সাথে তামাশা। জাতি তামাশার নির্বাচন মেনে নেবে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য অনতিবিলম্বে প্রশাসনে দলীয়করণ বন্ধ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করতে এবং সর্বস্তরে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
ঢাকা-৮ সংসদীয় এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশ্যে ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের হৃৎপিন্ড হচ্ছে ঢাকা-৮ সংসদীয় এলাকা। এখানেই রয়েছে পিজি হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল, সচিবালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, বাংলাদেশ ব্যাংক, ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ বহু রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণের মাধ্যমে অতীতে জনসাধারণকে শোষন করা হয়েছে। আগামী জনগণকে শোষনমুক্ত করতে বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠনের বিকল্প নেই। অতীতে যারা বৈষম্যের সৃষ্টি করেছে তাদের দ্বারা বৈষম্যহীন দেশ গড়া সম্ভব হবে না। বৈষম্যহীন দেশ গড়তে নতুন নেতৃত্বে নির্বাচতি করতে তিনি জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
আগামীতে ঢাকা-৮ আসনের জনগণ তাকে নির্বাচিত করলে তিনি জনসাধারণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে ঢাকা-৮ সংসদীয় এলাকাকে দুর্নীতি, সন্ত্রাস-চাঁদাবাজ, মাদক মুক্ত করে শান্তির নীড় হিসেবে গড়ে তুলবেন জানিয়ে তিনি স্থানীয়দের সহযোগিতা ও সমর্থন কামনা করেন।
জামায়াতের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শুরা সদস্য ও মতিঝিল দক্ষিণ থানা আমীর মাওলানা মোতাছিম বিল্লাহ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পথা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি, ঢাকা-৮ আসনে জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচন পরিচালক শামছুর রহমান। আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য ও পল্টন থানা আমীর শাহীন আহমেদ খান, মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য ও শাহজাহানপুর পূর্ব থানা আমীর মাওলানা শরিফুল ইসলাম, মতিঝিল উত্তর থানা আমীর মো. শামছুল বারি, রমনা থানা আমীর মো. আতিকুর রহমান, পল্টন থানা সেক্রেটারি মঞ্জুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা মিঠু সহ ঢাকা-৮ সংসদীয় এলাকার বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ।
সভা শেষে ড. হেলাল উদ্দিনের নেতৃত্বে, নেতৃবৃন্দ মতিঝিল-আরামবাগ এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় নেতৃবৃন্দ স্থানীদের মাঝে জামায়াতে ইসলামীর লিফলেট বিতরণ করে দাঁড়িপাল্লার পক্ষে সমর্থন কামনা করেন।
রাজনীতি
কোনো কোনো দল নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করছে: মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন যেন পিছিয়ে যায়, সময়মতো নির্বাচন যাতে না হয়, সেই চেষ্টাই করছে কোনো কোনো দল। তিনি বলেন, রাজনীতি, অর্থনীতি ও শিক্ষা ব্যবস্থাকে নতুন করে সাজাতে নির্বাচন এখন অত্যন্ত প্রয়োজন।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বেলা ১১টায় রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি মিলনায়তনে ‘শহীদ জিয়া’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
রাজনীতি, অর্থনীতি ও শিক্ষা ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে নির্বাচনের বিকল্প নেই উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে দ্রুত একটি রাজনৈতিক সরকারের প্রয়োজন।
কিছু সংস্কার কাজ সম্পন্ন হওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, সংস্কারের প্রকৃত বাহক আমাদের দল, বিএনপি।
যারা বিএনপিকে ভিলেন বানানোর চেষ্টা করছে, তাদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, অনেকে বলছে বিএনপি সংস্কার চায় না, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রচার। দেশের যা কিছু ভালো, তার সবই এসেছে বিএনপি ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাত ধরে।
তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান ১৯৭১ সালে শহীদ হলে বাংলাদেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হতো। দেশ লিবিয়া বা আফগানিস্তানের মতো অস্থিতিশীল হয়ে পড়ত।
রাজনীতি
সরকারে থাকা দলীয় লোকদের সরিয়ে দিতে হবে: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বর্তমান সরকারের সময় প্রশাসনে কোনোভাবে কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত কেউ থাকলে, তাদের রাখা যাবে না। কারণ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কনসেপ্টই হলো নির্দলীয়তা। নির্দলীয় হলে সেখানে রাজনৈতিক দলের উপদেষ্টা বা দলীয় পরিচয়ের লোকদের থাকার কোনো কারণ নেই। বর্তমান সরকারে যদি দলীয় কেউ থাকে, তাদের সরিয়ে দিতে হবে- তা না হলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
বুধবার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, গত ১৫ বছরের নানা ধরনের অপকর্মে যারা জড়িত এবং যারা ফ্যাসিস্টদের রক্ষা করতে গিয়ে বেআইনি কাজ করেছেন, তাদের প্রশাসনে রেখে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। তারা গোপনে থাকেনি, অনেকে প্রকাশ্যেই সহযোগিতা করেছেন- তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপ নেবে, তখন তা নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ হওয়া উচিত। তাহলে বিগত ১৬ বছর যারা ভোটে বিশ্বাস হারিয়েছেন, তাদের মধ্যে আস্থা ফিরে আসবে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের দুটি মামলায় সাবেক ও বর্তমান ১৫ জন সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসব বিষয় আইনি প্রক্রিয়ার আওতায়। আইনি প্রক্রিয়ায় যা হওয়ার তা হবে—যারা অপরাধী তাদের বিচার হওয়া উচিত। তবে সবকিছুতে কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, তারা প্রমাণ করবেন যে- তারা অভিযুক্ত নন। যদি আদালত প্রমাণ করেন যে- তারা অভিযুক্ত, তাহলে আদালতের নির্ধারিত শাস্তি ভোগ করতে হবে। আইনের চোখে সবাই সমান।
রিজভী উল্লেখ করেন, জুলাই সনদ মোটামুটি সবাই মেনে নিয়েছে। সেখানে থাকা অঙ্গীকার বাস্তবায়নের আহ্বান জানান তিনি।
দেশের সর্বক্ষেত্রে চরমভাবে দলীয়করণ হয়েছে দাবি করে বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের অনেককে দেশে থাকতে না পেরে দেশ ছেড়ে যেতে হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভেবেছিলেন, তাদের জমিদারি সারাজীবন থাকবে। ৫ আগস্টের পর অনেকের মানসিকতা পরিবর্তিত হয়েছে, তবু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক হয়নি।
তিনি আরও বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষণা দিয়েছেন— বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ২৫ কোটি বৃক্ষরোপণ করা হবে এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সব ধরনের কাজ করা হবে।
রাজনীতি
বিভেদ নয়, ঐক্য চাই : মাসুদ সাঈদী

পিরোজপুর-১ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী মাসুদ সাঈদী বলেছেন, ‘বিভেদ নয়, ঐক্য চাই। আমরা ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তি একসঙ্গে ছিলাম, আছি এবং থাকব। যত দিন না এ দেশ থেকে ফ্যাসিবাদের শেষ চিহ্নটুকু মুছে ফেলতে না পারি, যত দিন না একটি সত্যিকারের শোষণ-বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক ও ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে না পারি।’
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে পিরোজপুর সদর উপজেলার ৬ নম্বর শারিকতলা ডুমুরীতলা ইউনিয়ন পরিষদ অডিটরিয়ামে মতবিনিময়সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মাসুদ সাঈদী বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে, গঠনমূলক সমালোচনা ও মতভেদ গণতান্ত্রিক রাজনীতির অন্যতম সৌন্দর্য। কিন্তু সেই সমালোচনা যেন আমাদের ঐক্যকে দুর্বল না করে। আজ যদি আমরা একে অপরের বিরুদ্ধে কথা বলি, যদি দলীয় স্বার্থকে জাতীয় স্বার্থের ওপরে স্থান দিই, তাহলে আমরা সেই একই ভুল করব, যা শত্রুরা চায়। আমরা চাই, ফ্যাসিবাদবিরোধী সব শক্তি একই পতাকার নিচে দাঁড়াক।
আমরা চাই, যে স্বপ্ন নিয়ে শহীদরা জীবন দিয়েছেন, সেই বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সবাই হাতে হাত রাখুক।’
তিনি বলেন, ‘স্বপ্নের বাংলাদেশ হবে এমন এক দেশ, যেখানে মানুষ স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারবে, যার যার রাজনৈতিক মত প্রকাশ করতে পারবে, ভিন্ন মতের জন্য নির্যাতিত হবে না। আমরা এমন এক দেশ চাই, যেখানে দুর্নীতি নয়, ন্যায়-নীতি ইনসাফ থাকবে। যেখানে অপশাসন নয়, সুশাসন থাকবে।
যেখানে স্বৈরতন্ত্র নয়, গণতন্ত্র থাকবে। অন্য কোনো দেশ পরিচালিত সরকার নয়, এ দেশের জনগণ দ্বারা পরিচালিত সরকার থাকবে।’
মাসুদ সাঈদী আরো বলেন, ‘আজ আমরা এক বাংলাদেশে আছি, যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে দীর্ঘ ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মাধ্যমে সবচেয়ে ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান হয়েছে। গত ১৬ বছর ধরে আমরা গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনার সংগ্রামে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়েছি। আমরা কেউ জামায়াত, কেউ বিএনপি, কেউ অন্য কোনো ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক শক্তির কর্মী—কিন্তু আমাদের লক্ষ্য ছিল একটাই, স্বাধীন বাংলাদেশে জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা করা।’
জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘এ দীর্ঘ সময়ে আমরা দেখেছি, কিভাবে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী সরকারবিরোধী মতের মানুষগুলোর ওপর কিভাবে নির্যাতন, মামলা, হত্যা, গুম-খুন, হামলা চালিয়ে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে। কিভাবে দেশের শীর্ষস্থানীয় নিরপরাধ আলেমদের অন্যায়ভাবে ফাঁসি দিয়েছে। খুনি হাসিনার এ জুলুমের হাত থেকে কেউ রেহাই পায়নি। দেশের প্রতিটি আন্দোলনকারী, প্রতিটি গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষ আজ সেই নিপীড়নের সাক্ষী। কিন্তু তবু আমরা দমে যাইনি—বরং প্রতিটি নির্যাতনের পর আল্লাহর দয়ায় আমরা আরো দৃঢ় হয়েছি, আরো ঐক্যবদ্ধ হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘এখন যখন জনগণের আন্দোলন সফল পরিসমাপ্তির পথে, যখন ফ্যাসিবাদী শাসন বাংলাদেশ থেকে চিরতরে অবসানের পথে, তখন আমাদের ভেতরে বিভেদ সৃষ্টির গভীর চক্রান্ত শুরু হয়েছে। শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীরা জনতার রোষে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। তারা জানে ঐক্যবদ্ধ ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তি ক্ষমতায় গেলে তাদের জবাবদিহির হাত থেকে কেউ রক্ষা করতে পারবে না। তাই তারা এখন ভেতরে ভেতরে ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিসমূহের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে ঐক্যের শক্তি ভাঙার চেষ্টা করছে। আমাদের সেই ষড়যন্ত্র সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।’
মাসুদ সাঈদী বলেন, ‘আমাদের ঐক্যই আমাদের শক্তি। এ শক্তিই হবে আগামী দিনের পরিবর্তনের চালিকাশক্তি। আমরা সম্মিলিতভাবে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছি, এবার ইনশাআল্লাহ আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে নতুন এক স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়বই।’
মতবিনিময়সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পিরোজপুর জেলা শাখার সম্মানিত নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রব, জেলা অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মাওলানা সিদ্দিকুল ইসলাম, সদর উপজেলা আমির মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান, শারিকতলা ডুমুরীতলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল খান, ইউপি সদস্য ময়না বেগম, ইউপি সদস্য শিরিন আক্তার, ইউপি সদস্য তপন কুমার সাহা, শারিকতলা ইউনিয়ন জামায়াত আমির ওমর ফারুক, যুবনেতা মুবাশশির সানি, জাকারিয়া হোসেন, মামুন হোসেনসহ ইউনিয়ন জামায়াত, বিএনপি ও স্থানীয় ব্যক্তিরা।
রাজনীতি
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ১৩১ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

রাজধানীতে ঝটিকা মিছিলে অংশগ্রহণকারী কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ১৩১ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিলে অংশগ্রহণকারী নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ১৩১ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদের মধ্যে ছয়জনের পরিচয় জানা গেছে।
তারা হলেন কক্সবাজার জেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সহসভাপতি এখলাস মিয়া (২৮), খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি থানার ছাত্রলীগের সভাপতি মো. জিয়াউর রহমান (৩৬), আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী ও রাজধানীতে দলীয় মিছিল-সমাবেশে অংশগ্রহণকারী সাইফুল ইসলাম (৪০), মাদারীপুর সদর উপজেলার যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক জুয়েল আহাম্মেদ রনি (৩৯), আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলে অংশগ্রহণকারী মো. রিয়াজ উদ্দিন (৪৯) ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মো. আক্তার হোসেন (৪৭)।