অর্থনীতি
ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির অর্থে সবুর খানের স্ত্রী-কন্যার নামে শেয়ার ক্রয়
বিগত সরকারের কয়েকজন প্রভাবশালী মন্ত্রী-এমপির ঘনিষ্ঠতায় কোন জবাবদিহি ছাড়া সকল অনিয়ম ও দুর্নীতির মাত্রা অতিক্রম করেছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. সবুর খান। তিনি ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (ডিসিসিআই) পরিচালক ও সাবেক সভাপতি ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির তৎকালীন বোর্ড অব ট্রাস্টির সদস্যকে অবৈধভাবে বাদ দিয়ে ইউজিসি থেকে দ্রুততম সময়ে রেজুলেশন বের করে দায়িত্ব ছিনিয়ে নেন প্রথম জীবনে কম্পিউটারের পার্টস বিক্রি করা এই সবুর খান। এরপর থেকেই তিনি শুরু করেন দেশের অন্যতম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষায় দুর্নীতি। পরিচালকসহ বিভিন্ন পদে স্বজনদের বসিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় তহবিলের অর্থ ব্যক্তিগত খরচে ব্যবহার করতে ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটিকে অনিয়মের আখড়া বানিয়েছেন সবুর খান। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া টিউশন ফির অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে ব্যয় না করা, সরকারি জমি দখল, কর ফাঁকি, বিদেশে অর্থপাচার করে বাড়ি-ব্যবসা সবকিছুই করতে নানান কৌশল ও প্রতারণার আশ্রয় নেন তিনি। এছাড়াও পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ড্যাফোডিল কম্পিউটার্সের বিষয়ে নানান অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে সবুর খানের বিরুদ্ধে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের অর্থ বিনিয়োগ করে নিজের এবং স্ত্রী-কন্যার ব্যক্তিগত নামে একটি ওষুধ কোম্পানির বিপুল পরিমাণ শেয়ার কিনেছেন সবুর খান। এই তিনজনের নামে এরই মধ্যে নভো হেলথ কেয়ার অ্যান্ড ফার্মা লিমিটেডের ৫৭ দশমিক ৬ শতাংশ শেয়ার হস্তান্তর করা হয়েছে। যার মোট মূল্য ১৯ কোটি ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। আর এই অর্থের পুরোটাই দেওয়া হয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাংক হিসাব থেকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও ব্যবহারিক শিক্ষার সুবিধার জন্য একটি ওষুধ কোম্পানির শেয়ার কেনার প্রস্তাব দেন সবুর খান। নভো হেলথ কেয়ারের উদ্যোক্তাদের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনায়ও এ বিষয়টি সামনে আনা হয়েছিল। তবে শেয়ার হস্তান্তরের চূড়ান্ত পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তে সবুর খান, তার স্ত্রী সাহানা খান এবং মেয়ে সামিহা খানের নামে সব কাগজপত্র তৈরি করেন। চুক্তিপত্রে দেখা যায়, ওষুধ কোম্পানিটির মোট ৮ লাখ ৬৮ হাজার শেয়ারের মধ্যে ৪ লাখের মালিক এখন সবুর খান, যা মোট শেয়ারের ৪৬ দশমিক ০৮ শতাংশ। তার স্ত্রী সাহানা খান এবং মেয়ে সামিহা খানের নামে কেনা হয়েছে ৫০ হাজার করে মোট ১ লাখ শেয়ার। এই দুজন এখন কোম্পানিটির ৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ করে মোট ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ শেয়ারের অধিকারী। সব মিলিয়ে কোম্পানিটির ৫৭ দশমিক ৬ শতাংশ শেয়ারের মালিক এখন এই পরিবার।
জানা গেছে, প্রথম জীবনে কম্পিউটারের পার্টস বিক্রির ব্যবসা করা এই সবুর খান বিএনপি সরকারের আমলে খালেদা জিয়ার ভাগ্নে ও তৎকালীন বিএনপির প্রভাবশালী নেতা শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনের বদৌলতে তার সঙ্গে যৌথভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদপত্র সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে ১/১১ এর পটপরিবর্তনের সময় বিএনপির সাথে সে সমস্ত সম্পর্ক ছিণ্ণ করার ঘোষণা দেয় এবং ইউজিসির তৎকালীন ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য পাশ করা রেজুলেশনে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টির অন্যতম সদস্য বিএনপির নেতা শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন বিদেশে চলে যাওয়ায়, এই সুযোগকে ট্রাস্টি বোর্ড থেকে অবৈধভাবে তাকে বাদ দিয়ে ইউজিসি থেকে দ্রুততম সময়ে পুণরায় রেজুলেশন বের করেন মো. সবুর খান।
বর্তমানে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি পরিচালনার জন্য রয়েছে ১১ সদস্যের ট্রাস্টি বোর্ড। এর চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাতা মো. সবুর খান। পাশাপাশি তার স্ত্রী সাহানা খান ভাইস চেয়ারম্যান, কন্যা সামিহা খান, মা রওশন আরা বেগম এবং শ্যালক মো. ইমরান হোসেন ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসেবে রয়েছেন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুসারে, এ ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় হবে অলাভজনক সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। ট্রাস্ট আইন অনুসারেও ট্রাস্টের কোনো সদস্য প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যক্তিগতভাবে সুবিধা নিতে পারবেন না। এদের মধ্যে অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালকসহ বিভিন্ন পদে চাকরি করেন। যেখান থেকে তারা মাসে বেতন-ভাতা নেন। এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের টাকায় সম্মানীর নামে অর্থ গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। যদিও আইন অনুযায়ী তাদের এসব সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০ অনুযায়ী, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো এটিকে দাতব্য প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এর অধিনে প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করতে হবে। এছাড়াও সিন্ডিকেট, একাডেমিকসহ আরো বেশ কিছু কমিটি থাকবে। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো বিশ্ববিদ্যালয়কে অবশ্যই অলাভজনক এবং দাতব্য মডেলে পরিচালনা করতে হবে। এসব শর্ত থাকা স্বত্তেও সে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বত্র নিজের আত্মীয় স্বজনদের নিয়োগ দিয়ে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান সবুর খানের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। একইসঙ্গে তার মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়েও কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির জনসংযোগ কর্মকর্তা আনোয়ার হাবিব কাজলের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি অর্থসংবাদকে বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও ব্যবহারিক শিক্ষার সুবিধার জন্য বোর্ড ট্রাস্টির কাছে একটা ওষুধ কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে প্রস্তাবনা দেওয়া হয়। এই প্রস্তাবনার প্ররিপ্রেক্ষিতে ট্রাস্ট্রি বোর্ড ওষুধ কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে। এ বিষয়ে গণমাধ্যমের একটি সংবাদের সূত্র ধরে ট্রাস্টি বোর্ড হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়। বিচারপতি মমতাজউদ্দিনসহ তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ গত জুন মাসের ২৭ তারিখে রায় দেয়। রায় অনুযায়ী, ওষুধ কোম্পানি টাকাটা ফেরত দেবে। এর সাথে বিশ্ববিদ্যালয় এবং ট্রাস্ট্রি বোর্ডের কোন সম্পর্ক থাকবে না।
অভিযোগ রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে সবুর খানের শ্যালক-দুলাভাইসহ আত্মীয়-স্বজন নিয়োগ দিয়ে একক রাজত্ব্য কায়েম করেছেন। আত্মীয়করণের এই প্রক্রিয়ায় অযোগ্যদের হাতে পড়ে বিনষ্ট হচ্ছে একটি সম্ভাবনাময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দেশে আইটি শিক্ষার প্রসারে সরকারের অগ্রাধিকার থাকলেও এমন কিছু অযোগ্য মালিক ও কর্তৃপক্ষের হাতে পড়ে বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়টি শিক্ষার মানে নিম্নগামী হচ্ছে। তবে তথ্যপ্রযুক্তির ধুয়া তুলে উৎসাহী তরুণ-তরুণীর কাছ থেকে নিয়ে নিচ্ছে কাড়িকাড়ি টাকা।
এদিকে স্ক্যামের মহাযজ্ঞকে বাস্তবায়ণ করতে সবুর খান আরো প্রতিষ্ঠা করেন ড্যাফোডিল পরিবার। গ্রুপ অব কোম্পানির আদলে এই ড্যাফোডিল পরিবারে রয়েছে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে রয়েছে ডিসিএল, ওভাল ফার্নিচার, ক্রিয়েটিভ ইন্টারন্যাশনাল, সবুজ প্রিন্টার্স, ডিওএল, বাংলাদেশ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল লিমিটেড, স্কিল জবস, গ্রিন গার্ডেন, ড্যাফোডিল এডুকেশন নেটওয়ার্কসহ অনেক প্রতিষ্ঠান।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনোক্ষেত্রেই উন্মুক্ত টেন্ডার আহ্বান করা হয় না। মূলত এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই ফলস টেন্ডার সাবমিশনের মাধ্যমে কাজ পায় ড্যাফোডিল পরিবারেরই কোনো না কোনো প্রতিষ্ঠান। যার মাধ্যমে বাজারমূল্যের থেকে বেশি দামে পণ্য কিংবা সেবা দেখিয়ে সরানো হয় বিশ্ববিদ্যালয় ফান্ডে জমা পড়া শিক্ষার্থীদের টাকা।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রাজউক কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দেওয়ার নির্দেশ
কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে রাজউকের পরিচালক (প্রশাসন) মমিন উদ্দিন একটি অফিস আদেশ জারি করে কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন।
তিনি জানান, রাজউকের ৯ম গ্রেডে ও তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের এবং অবশিষ্ট গ্রেড ১০ থেকে অন্য গ্রেডের কর্মকর্তাদের সম্পদ বিবরণী আগামী ৩০ নভেম্বর মধ্যে চেয়ারম্যান দপ্তরে দাখিল করতে হবে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বিটকয়েনের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ
একটি বিটকয়েনের দাম ১ লাখ ছুইছুই করছে। আজ শুক্রবার বিটকয়েনের দাম ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে ছাড়িয়েছে। এই দাম বিটকয়েনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বিটকয়েনের দাম বাড়তে থাকে। আর্থিক বাজারের প্রত্যাশা, ট্রাম্প প্রশাসন ক্রিপ্টোবান্ধব হবে। খবর রয়টার্সের
এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থাটি বলছে, চলতি বছর বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনের দাম দিগুণের বেশি হয়েছে। গত ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর বিটকয়েনের দাম ২৫ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহের মধ্যে এটি বেড়েছে ৪৫ শতাংশের বেশি। আজ শুক্রবার একটি বিটকয়েন বিক্রি হয়েছে ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে।
মূল্যবৃদ্ধির দৌড়ে বিটকয়েন পাল্লা দিচ্ছে ইলন মাস্কের টেসলার সঙ্গে। ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে টেসলার শেয়ারের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। বিনিয়োগকারীরা মনে করেছেন, ট্রাম্পের বন্ধুরা এবং যেসব বিষয়ে তার আগ্রহ আছে, সেসব বিষয় তিনি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ভালো করবে।
সিডনির এটিএফএক্স গ্লোবালের প্রধান বাজার বিশ্লেষক নিক টুইডেল বলেন, ‘বিটকয়েনের দাম বাড়ছে ট্রাম্পের জন্যই। কারণ, তিনি এই শিল্পের খুবই সমর্থনকারী। এর মানে হলো, ক্রিপ্টোর মজুত ও মুদ্রা উভয়েইর চাহিদা আরও বাড়বে। নির্বাচনের ফল আসার পর বিটকয়েনের দাম প্রায় রেকর্ড পর্যায়ে ওঠার মানে হলো, এই মুদ্রার ওপরে কেবল খোলা আকাশ রয়েছে।’
গত ১০ নভেম্বর আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে ৮০,০০০ ডলারে পৌঁছে যায়। বিশেষজ্ঞরা রুশ বার্তা সংস্থা তাসকে বলেছেন, বর্তমান বৃদ্ধির পর্যায়ে থাকলে বিটকয়েনের দাম ৩ লাখ ডলারে পৌঁছানোও অবাক করার মতো কিছু হবে না।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারকারীদের মধ্যে জনপ্রিয়তার মাধ্যমে এর দাম ওঠা-নামা করে। ২০০৮ সালের নভেম্বরে সাতোশি নাকামোতো ছদ্মনামে বিটকয়েন কারেন্সি মার্কেটে প্রকাশ করা হয়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ব্যাংকে কলমানি সুদহার ১০ শতাংশ ছাড়ালো
ব্যাংক খাতে কলমানি সুদহার সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। সপ্তাহের শেষ দিনে গতকাল বৃহস্পতিবার কলমানি বাজারে এক দিনের জন্য ধার নেওয়া টাকার গড় সুদহার উঠেছে ১০ দশমিক ০৯ শতাংশে। ১৩ নভেম্বর থেকে এই সুদহার ১০ শতাংশ বা তার ওপরে রয়েছে। কলমানি বাজারে সুদহার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এর আগে সাম্প্রতিক সময়ে কলমানি বাজারে এক দিনের জন্য টাকা ধারের ক্ষেত্রে সুদহার ১০ শতাংশের ওপরে ওঠেনি। আবার চার দিন ও সাত দিনের জন্য টাকা ধারের ক্ষেত্রে এই সুদহার আরও বেশি। গতকাল চার দিনের ধারের ক্ষেত্রে গড় সুদহার ছিল সোয়া ১২ শতাংশ। আর সাত দিনের ধারের ক্ষেত্রে এই সুদহার ছিল ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। তবে কলমানিতে বিভিন্ন মেয়াদে ধারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি টাকা লেনদেন হয় এক দিনের ধার হিসেবে।
কলমানি হচ্ছে সরকারি–বেসরকারি ব্যাংকগুলোর নিজেদের মধ্যে টাকা ধার দেওয়া–নেওয়ার একটি ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থায় যেসব ব্যাংকের হাতে নগদ টাকার সংকট থাকে তারা তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটাতে যেসব ব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত তারল্য বা অর্থ থাকে তাদের কাছ থেকে টাকা ধার করে। এ জন্য সুদ দিতে হয়। সুদহার নির্ধারিত হয় চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে। ব্যাংকগুলো নিজেদের মধ্যে টাকা ধার দেওয়া–নেওয়া করলেও দিন শেষে লেনদেন ও সুদের তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক কলমানি বাজারের প্রতিদিনের লেনদেন ও সুদের তথ্য প্রকাশ করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে ২০১৬ সাল থেকে কলমানি বাজারের তথ্য রয়েছে। সেই তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৬ সালের পর গতকালই প্রথম কলমানিতে এক দিনের ধারের ক্ষেত্রে গড় সুদহার ১০ দশমিক ০৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এদিন এক দিনের জন্য কলমানিতে ১ হাজার ১৩১ কোটি টাকা লেনদেন হয়, যার সর্বোচ্চ সুদহার ছিল ১১ শতাংশ। আর সর্বনিম্ন সুদহার ছিল ৯ দশমিক ৯০ শতাংশ। এক দিনের ধারের ক্ষেত্রে কলমানিতে গড় সুদহার প্রথম ১০ শতাংশে উন্নীত হয় ১৩ নভেম্বর। ওই দিন এই বাজারে এক দিনের জন্য ৩ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল।
ব্যাংকাররা বলছেন, বর্তমানে কিছু ব্যাংক তীব্র তারল্যসংকটে রয়েছে। এসব ব্যাংকের সংকট এতটাই প্রকট যে গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী টাকাও ফেরত দিতে পারছে না। আবার সরকারি ট্রেজারি বিল–বন্ডের সুদহার বেড়ে যাওয়ায় অনেক ব্যাংক বেশি লাভের আশায় কলমানির বদলে বিল–বন্ডে অর্থ বিনিয়োগ করছে। ফলে কলমানিতে টাকা ধার দেওয়া বা এই বাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া ব্যাংকের সংখ্যা কমে গেছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
নন-লাইফ বিমা কোম্পানির সমস্যা নিরসনে বিআইএ’র সভা
দেশের নন-লাইফ বিমা খাতের কোম্পানিগুলোর সমস্যা নিরসনে করণীয় ঠিক করতে মতবিনিময় সভা করেছে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন (বিআইএ)। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাজধানীর নয়া পল্টনে অ্যাসোসিয়েশনের কনফারেস রুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বিভিন্ন নন-লাইফ বিমা কোম্পানির ৪২ জন মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বিআইএ’র নন-লাইফ টেকনিক্যাল সাব-কমিটির আহ্বায়ক ও রুপালী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির উপদেষ্টা পি কে রায়।
অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নাসির উদ্দিন আহমেদ (পাভেল) ও প্রথম ভাইস-প্রেসিডেন্ট হোসেন আখতার সভায় বিশেষভাবে উপস্থিত ছিলেন। নির্বাহী কমিটির সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সৈদয় বদরুল আলম, সৈয়দ শাহরিয়ার আহসান, মো. ইমাম শাহীন।
সভায় মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তারা দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে নন-লাইফ বিমা কোম্পানির সমস্যাসমূহ চিহ্নিত করেন এবং এসব সমস্যা নিরসনের জন্য নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করেন। বিআইএ’র প্রেসিডেন্ট, প্রথম ভাইস-প্রেসিডেন্ট ও নির্বাহী কমিটির সদস্যরা মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
মুডিসের রেটিংয়ে সঠিক চিত্র উঠে আসেনি দাবি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের
ঋণমান নির্ণয়কারী মার্কিন এজেন্সি মুডিস রেটিংয়ে বাংলাদেশের আর্থ-রাজনৈতিক অবস্থার সঠিক চিত্র উঠে আসেনি বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি ঋণমান কমানোর মাত্র দুদিনের মাথায় ছটি বেসরকারি ব্যাংকের ঋণমান কমানোর পর বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাতে এমন দাবি করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এতে বলা হয়, দেশের অর্থনীতি ও রাজনীতি একটি বড় রূপান্তরের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। সরকার এরই মধ্যে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড হাতে নিয়েছে। এর ইতিবাচক ফল পেতে আরও সময় লাগবে। দেশি-বিদেশি অংশীদারদের সমর্থন অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের গতি বাড়াবে।
এর আগে, গত বুধবার (২১ নভেম্বর) ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের ঋণমান কমিয়ে দিয়েছে মুডিস।
একই সময়ে মুডিস ছটি ব্যাংকের এলটি ডিপোজিট বা দীর্ঘমেয়াদি আমানতের রেটিং পূর্বাভাস পরিবর্তন করে স্থিতিশীল থেকে নেতিবাচক করেছে।
এমআই