অর্থনীতি
এস আলম ও তার পরিবারের ব্যাংকে জমা ছিল ১ লাখ কোটি টাকা!

এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল আলমের পরিবারের সদস্য ও বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ছয়টি ব্যাংকের হিসাবে ১ লাখ ৯ হাজার কোটি টাকা জমা হয়েছিল বলে জানতে পেরেছে রাজস্ব কর্তৃপক্ষ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সূত্রগুলোর মতে, বর্তমানে এসব হিসাবের স্থিতি ২৬ হাজার কোটি টাকা। তবে কিছু ব্যাংকের থেকে এখনও লেনদেনের তথ্য আসছে বিধায় এর পরিমাণ এখনই চূড়ান্তভাবে বলা যাচ্ছে না।
এই ব্যাংকগুলো হলো- ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক এবং বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক। যারমধ্যে পাঁচটি ব্যাংকই এর আগে ছিল এস আলমের নিয়ন্ত্রণে।
তবে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে আহসান এইচ মনসুরকে নিয়োগের পর থেকেই এসব ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে।
গত ১৪ আগস্ট এনবিআরের অধীন ইনকাম ট্যাক্স জোন-১৫ থেকে ৯১টি ব্যাংক ও ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে এস আলম, তার পরিবার এবং তাঁদের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িক সত্ত্বাগুলোর অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত তথ্য দিতে বলা হয়। এর এক মাস পরে তারা এসব হিসাবের মধ্যে বিপুল পরিমাণ লেনদেনের ঘটনা খুঁজে পেয়েছে।
ট্যাক্স জোন-১৫ এর কমিশনার আহসান হাবিব বলেন, “এস আলমের পরিবারের সদস্য, এবং গ্রুপের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব সার্চ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে।” এর বেশি তিনি আর কিছু জানাতে রাজি হননি।
নাম না প্রকাশের শর্তে ট্যাক্স জোন-১৫ এর একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, ঋণ ও বিক্রির অর্থসহ এসব ব্যাংকে এপর্যন্ত তারা ১ লাখ ৯ হাজার কোটি টাকা জমার সন্ধান পেয়েছেন। “তবে এরমধ্যে কত টাকা ঋণের এখনও তা নির্ধারণের কাজ চলছে” – বলে জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, “এস আলমের পরিবারের সদস্য ও ব্যবসায়িক সত্ত্বাগুলোর এসব হিসাবের বর্তমান স্থিতি ২৬ হাজার কোটি টাকা বলে আমরা জানতে পেরেছি।”
এই তথ্য কোন সময়ের, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমরা সাধারণত পাঁচ বছরের তথ্য চাই। তবে এক্ষেত্রে এর আগের সময়ের তথ্যও থাকতে পারে।”
অতীতে ইনকাম ট্যাক্স অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী, যে কোন করদাতার বিগত পাঁচ বছরের ব্যাংক লেনদেনের তথ্য চাওয়া যেত। তবে নতুন আয়কর আইন অনুযায়ী, যা ২০২৩ সালে পাস হয়েছে, সেখানে এই টাইমলিমিট তুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে কর বিভাগ অতীতের যে কোন সময়ের করদাতার তথ্য চাইতে পারে।
এস আলমের বিরুদ্ধে অন্যান্য তদন্ত
এনবিআর ছাড়াও, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন ধরণের অনিয়ম খুঁজে বের করতে কাজ করছে।
এর আগে এস আলমের কব্জায় থাকা ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠন করার পর নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। গত ৫ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে মাসুদ বলেন, ইসলামী ব্যাংকের মোট ঋণের অর্ধেকেরও বেশি এস আলম গ্রুপ নিয়েছে।
জুন শেষে ব্যাংকটির ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৭৪ হাজার কোটি টাকার বেশি।
এছাড়া, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম ও পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ১ লাখ ১৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সংঘবদ্ধ অপরাধ, প্রতারণা, জালিয়াতি ও হুন্ডি কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে এস আলম ও তাঁর সহযোগী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে।
গত ৩১ আগস্ট সিআইডির মিডিয়া উইংয়ের ককর্মকর্তা আজাদ রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সিআইডির ফিনান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট এই অনুসন্ধান করছে।
ব্যাংকগুলো থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে এই ব্যবসায়িক গোষ্ঠী ফায়দা লুটেছে এমন অনেক অভিযোগ রয়েছে।
এমআই

অর্থনীতি
প্রবাসীদের আয়কর রিটার্ন দাখিল সহজ করলো এনবিআর

বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতাদের জন্য অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল সহজ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ই-রিটার্ন সাইটে নিবন্ধনের জন্য করদাতার নিজ নামে বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন করা বাংলাদেশের মোবাইল সিমে ওটিপি পাঠানো হতো বিধায় বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতাদের ই-রিটার্ন দাখিল করতে সমস্যা হচ্ছিল। তবে এখন থেকে এই ওটিপি ই-মেইলে পাঠানো হবে। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় এনবিআর।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৫-২৬ কর বছরে অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে করদাতারা বিপুল সাড়া দিয়ে এ পর্যন্ত ৮ লাখ ৫০ হাজারের বেশি আয়কর রিটার্ন অনলাইনে দাখিল করেছেন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এক বিশেষ আদেশের মাধ্যমে ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের প্রবীণ করদাতা, শারীরিকভাবে অসমর্থ বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন করদাতা, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতা এবং বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি নাগরিক ব্যতীত সকল ব্যক্তি শ্রেণির করদাতার অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করেছে। বিশেষ আদেশে যেসব করদাতাকে অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা হতে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এরূপ সকল করদাতা অনলাইনেও ই-রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।
অনলাইন রিটার্ন দাখিল সহজ ও ঝামেলাবিহীন হওয়ায় এবং করদাতা তাৎক্ষণিক স্বয়ংক্রিয়ভাবে ই-রিটার্ন দাখিলের acknowledgement slip বা প্রাপ্তি স্বীকারপত্র এবং প্রয়োজনীয় তথ্য উল্লেখপূর্বক আয়কর সনদ প্রিন্ট নিতে পারেন বিধায় বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতার জন্য বাধ্যতামূলক না হলেও তাদের অনেকেই অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করতে চাচ্ছেন। তবে, ই-রিটার্ন সাইটে নিবন্ধনের জন্য করদাতার নিজ নামে বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশন করা বাংলাদেশের মোবাইল সিমে ওটিপি প্রেরণ করা হয় বিধায় বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতার ই-রিটার্ন দাখিল করতে সমস্যা হচ্ছিল। এ সমস্যা সমাধানের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতার জন্য মোবাইল ফোনের পরিবর্তে তাদের নিজস্ব ই-মেইলে ওটিপি পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
এনবিআর জানায়, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতার পরিচিতি ও অবস্থান নিশ্চিত করার জন্য তার পাসপোর্ট নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, ভিসা-সিলের কপি, ই-মেইল অ্যাড্রেস ইত্যাদি তথ্য এবং ছবি ereturn@etaxnbr.gov.bd ইমেইলে প্রেরণ-পূর্বক আবেদন করলে আবেদনকারীর ই-মেইলে ওটিপি এবং রেজিস্ট্রেশন লিংক পাঠানো হবে। ওই লিংকের মাধ্যমে ই-রিটার্ন পোর্টালে ওটিপি ব্যবহার করে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি করদাতা ই-রিটার্ন সিস্টেমে রেজিস্ট্রেশন করত: সহজেই অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।
বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি জানায়, অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে কোনো প্রকারের কাগজপত্র বা দলিলাদি আপলোড করতে হয় না, তবে যেসব তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে করদাতা ই-রিটার্নে তার আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায়ের তথ্য এন্ট্রি করছেন সেসকল কাগজপত্র ও দলিলাদি তিনি নিজ হেফাজতে সংরক্ষণ করতে পারবেন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড দেশে ও বিদেশে অবস্থানরত সম্মানিত ব্যক্তি করদাতাকে ই-রিটার্ন সিস্টেম ব্যবহার করে আগামী ৩০ নভেম্বর ২০২৫ তারিখের মধ্যে ২০২৫-২০২৬ কর বর্ষের আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য অনুরোধ করছে।
অর্থনীতি
ডলারের দাম আরও বাড়লো

টাকার বিপরীতে আবারও বেড়েছে মার্কিন ডলারের মান। বুধবার (২২ অক্টোবর) দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে ডলারের বিক্রয়মূল্য সর্বোচ্চ ১২২ টাকা ৭৫ পয়সায় উঠেছে, যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ১২২ টাকা ৩০ পয়সা ছিল।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে আমদানি এলসি খোলার প্রবণতা বাড়ায় বাজারে ডলারের চাহিদা বেড়েছে। চাহিদা বৃদ্ধির কারণে দামও ঊর্ধ্বমুখী।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে বুধবার ডলার বিক্রি হয়েছে ১২২ টাকা ৭৫ পয়সায় এবং ক্রয় করা হয়েছে ১২১ টাকা ৭৫ পয়সায়।
রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করেছে ১২২ টাকা ৬০ পয়সা, ক্রয়মূল্য ১২১ টাকা ৬০ পয়সা। অন্যদিকে, ঢাকা ব্যাংকে এক ডলার বিক্রি হয়েছে ১২২ টাকা ৫০ পয়সায়, ক্রয় করা হয়েছে ১২১ টাকা ১৫ পয়সায়— যা গত সপ্তাহের তুলনায় সামান্য বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, বুধবার আন্তঃব্যাংক বাজারে ডলারের সর্বোচ্চ দর ছিল ১২২ টাকা ২৫ পয়সা, যা মঙ্গলবার ছিল ১২২ টাকা। গত ২০ অক্টোবর এই হার ছিল ১২১ টাকা ৮০ পয়সার কাছাকাছি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, সেপ্টেম্বর মাসে ৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারের আমদানি এলসি খোলা হয়েছে, যা আগস্টের ৫ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে প্রতি ডলার ১২১ টাকা ৮০ পয়সা দরে ৩৮ মিলিয়ন ডলার ক্রয় করেছে। চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ব্যাংকগুলো থেকে মোট ২ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, আমদানির চাপ কিছুটা বাড়ায় ডলারের দাম সামান্য বেড়েছে। তবে এটি অস্বাভাবিক নয়। বাজারে ডলারের সরবরাহ এখনও পর্যাপ্ত রয়েছে।
অর্থনীতি
সোনার দাম ভরিতে কমলো ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা

দেশের বাজারে কমেছে সোনার দাম। আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যহ্রাসের সঙ্গে স্থানীয় চাহিদা ও দাম কমার কারণে নতুন করে দাম কমানো ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
বুধবার (২২ অক্টোবর) বাজুসের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রতি ভরিতে সর্বোচ্চ ৮ হাজার ৩৮৬ টাকা পর্যন্ত কমেছে সোনার দাম। নতুন দামের ফলে সবচেয়ে ভালো মানের ২২ ক্যারেট এক ভরি সোনার দাম দাঁড়াচ্ছে ২ লাখ ৮ হাজার ৯৯৬ টাকা। নতুন এ দাম বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) থেকে কার্যকর হবে।
বাজুস জানিয়েছে, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) দাম কমায় সোনার মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী, ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনা বিক্রি হবে ২ লাখ ৮ হাজার ৯৯৬ টাকা, ২১ ক্যারেট সোনার দাম ১ লাখ ৯৯ হাজার ৫০১টাকা, ১৮ ক্যারেট এক লাখ ৭০ হাজার ৯৯৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনার ভরি বিক্রি হবে এক লাখ ৪২ হাজার ২০৯ টাকায়।
সোনার দামের সঙ্গে কমানো হয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম থাকছে ৫ হাজার ৪৭০ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপা ৫ হাজার ২১৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ৪ হাজার ৪৬৭ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপা বিক্রি হবে ৩ হাজার ৩৫৯ টাকায়।
কাফি
অর্থনীতি
রিজার্ভ ছাড়িয়েছে ৩২ বিলিয়ন ডলার

রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিলাম পদ্ধতিতে ডলার কেনার প্রেক্ষাপটে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও দেখা দিয়েছে উত্থান।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, সোমবার (২১ অক্টোবর) পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী বর্তমান রিজার্ভের পরিমাণ ২৭ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত ৯ অক্টোবর পর্যন্ত গ্রস রিজার্ভ ছিল ৩১ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী যার পরিমাণ ছিল ২৭ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র জানান, রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিলামের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে ডলার কেনায় রিজার্ভ বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ বেড়ে ৩২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। আর গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ২৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এ পর্যন্ত নিলাম পদ্ধতির মাধ্যমে মোট ২১২ কোটি ৬০ লাখ ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত ১৩ জুলাই থেকে নিলামের মাধ্যমে ডলার কেনা শুরু হয়।
এছাড়া সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রেমিট্যান্স প্রবাহও বাড়ছে। চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের শুরু থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত দেশে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ৯১৫ কোটি ৯০ লাখ ডলারের। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৮০৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার। অর্থবছর অনুযায়ী রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, চলতি অর্থবছরের মাসভিত্তিক প্রবাসী আয়ের প্রবাহ ছিল যথাক্রমে—জুলাইয়ে ২৪৭ কোটি ৭৮ লাখ ডলার, আগস্টে ২৪২ কোটি ১৯ লাখ ডলার এবং সেপ্টেম্বরে ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ডলার।
অর্থনীতি
তিন দেশ থেকে ৬৬৪ কোটি ৪০ লাখ টাকার সার কিনবে সরকার

সৌদি আরব, মরক্কো ও রাশিয়া থেকে এক লাখ ১৫ হাজার মেট্রিক টন সার কেনার প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে ব্যয় হবে ৬৬৪ কোটি ৪০ লাখ ৯৮ হাজার ৪৪০ টাকা। এরমধ্যে রয়েছে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া, ৪০ হাজার টন ডিএপি এবং ৩৫ হাজার টন এমওপি সার। এছাড়া বরগুনায় ১০ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমকা সম্পন্ন একটি বাফার গোডাউন নির্মাণ কাজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে
আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) ভার্চ্যুয়ালি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে জন্য সৌদি আরবের সাবিক কৃষি-পুষ্টি কোম্পানি থেকে ৫ম লটের ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
সৌদি আরব থেকে এ সার আনতে ব্যয় হবে ১৫১ কোটি ৭৭ লাখ ৪৭ হাজার ৭৬০ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম পড়বে ৪১৩.৩৩ মার্কিন ডলার।
বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মরক্কোর ওসিপি নিউট্রিক্রপস এবং বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ৭ম লটের ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
মরক্কো থেকে এই সার আমদানিতে ব্যয় হবে ৩৬০ কোটি ০১ লাখ ৭৫ হাজার ৬৮০ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম পড়বে ৭৩৫.৩৩ মার্কিন ডলার।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের অপর এক প্রস্তাবে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে রাশিয়ার একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ৫ম লটের ৩৫ হাজার মেট্রিক টন এমওপি সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
রাশিয়া থেকে এ সার আমদানিতে খরচ হবে ১৫২ কোটি ৬১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম পড়বে ৩৫৬.২৫ মার্কিন ডলার।
এ ছাড়া বৈঠকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ‘সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার্থে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৩৪টি বাফার গুদাম নির্মাণ’ (১ম সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় প্যাকেজ-৪ এর লট-৫ (বরগুনা— ১০ হাজার মেট্রিক টন) এর অধীন ১টি সাইটে গোডাউন নির্মাণ কাজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
সুপারিশকৃত দরদাতা প্রতিষ্ঠান এম/এস এমবিএল – আরএফএল। এতে ব্যয় হবে ৫১ কোটি ৭৩ লাখ ৯৪ হাজার ২৯৫ টাকা।