অর্থনীতি
এডিবি থেকে ৪০ কোটি ডলার পাওয়ার আভাস অর্থ উপদেষ্টার

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাজেট সহায়তা হিসেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছ থেকে ৪০ কোটি মার্কিন ডলার পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এই অর্থ পাওয়া যাবে বলে আশা করছে সরকার।
রবিবার সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নিজ দপ্তরে এডিবি ও জাপানের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (জাইকা) প্রতিনিধি দল এবং ঢাকায় নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাই কমিশনারের (ভারপ্রাপ্ত) সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
ওই সময় সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, তহবিল দেওয়ার বিষয়ে তিন পক্ষই (এডিবি, জাইকা ও অস্ট্রেলিয়া) ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেছে। এডিবির কাছ থেকে বাজেট সহায়তা পাওয়া যাবে। আশা করছি, সংস্থার কাছ থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই ৪০০ মিলিয়ন ডলার বা ৪০ কোটি ডলার পাওয়া যাবে। এ ছাড়া ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তির আওতায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে আমরা নতুন করে আরও ৩০০ কোটি ডলারের বাজেটে সহায়তা চেয়েছি।
এ ছাড়া এডিবির অনেকগুলো প্রকল্প রয়েছে। সেগুলো এডিবি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে যাতে আরও বেশি সহযোগিতা করে সেটা তাদের বলা হয়েছে। আমরা ভবিষ্যতে কি কি করব সেসব বিষয়ে সংস্থাটিকে বলা হয়েছে। সেখানেও তারা প্রয়োজন মতো সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, জাইকা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার। দেশের অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্টে তাদের অর্থায়ন রয়েছে। ভৌত অবকাঠামো ঋণগুলো আমরা কন্টিনিউ করতে বলেছি, সেটা ওরা করবে। এ ছাড়া আরও দুটি বিষয়ে কথা বলেছি। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও টেকনিক্যাল বিষয়ও রয়েছে। বৈদেশিক ঋণের ফ্লো কমে গেছে কিনা, সাংবাদিকদের প্রশ্নে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বৈদেশিক ঋণের ফ্লো ঠিক ছিল। ফ্লো একেবারে কম আসেনি। কিন্তু এগুলোর ব্যবহার নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, যারা এসেছিলেন তারা সবাই আমাদের উন্নয়ন সহযোগী। আমরা সবার সঙ্গে আলাপ করেছি। তাদের যেসব সহায়তা চলমান সেসব আরও জোরদার করতে বলা হয়েছে।
এমআই

অর্থনীতি
একনেকে ১ হাজার ৯৮৮ কোটি টাকার ১৩ প্রকল্প অনুমোদন

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) ১৩টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় এক হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক বৈঠকে প্রকল্পগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সভয় প্রধান উপদেষ্টা এবং একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন। অসুস্থ থাকায় সভা শেষে সংবাদ সম্মেলন করেননি পরিকল্পনা উপদেষ্টা।
পরিকল্পনা কমিশন জানায়, একনেক সভায় মোট ১৩টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে ১ হাজার ৯৮৮ কোটি ৭ লাখ টাকা ব্যয় হবে।
এর মধ্যে ঋণ হিসেবে পাওয়া যাবে ৫৩ কোটি ২ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থেকে পাওয়া যাবে ৫০ কোটি টাকা এবং বাকি টাকা সরকারি কোষাগার থেকে ব্যয় করা হবে। অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে নতুন প্রকল্প ৩টি, সংশোধিত প্রকল্প ৭টি এবং ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে মেয়াদ বৃদ্ধির ৩টি প্রকল্প রয়েছে।
অনুমোদিত ১৩টি প্রকল্প হলো–
কৃষি মন্ত্রণালয়: ‘পিআরও-অ্যাক্ট বাংলাদেশ: রেজিলিয়েন্স স্ট্রেন্থেনিং থ্রু এগ্রি-ফুড সিস্টেমস ট্রান্সফর্মেশন ইন কক্সেস বাজার’ প্রকল্প।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়: “গ্রামীণ মাটির রাস্তাসমূহ টেকসইকরণের লক্ষ্যে হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) করণ (২য় পর্যায়) (প্রস্তাবিত ৩য় সংশোধন)”।
পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় (৩টি):
“খুলনা বিভাগ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (৩য় সংশোধন)”।
“জামালপুর শহরের নগর স্থাপত্যের পুনঃসংস্কার ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উন্নয়ন প্রকল্প (৩য় সংশোধিত)”।
“গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ০১ থেকে ০৫ নং জোনের অভ্যন্তরীণ রাস্তা, নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ (৩য় সংশোধিত)”।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়: “উত্তরা লেক উন্নয়ন (১ম সংশোধিত)” প্রকল্প।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়: “অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় বাংলাদেশ চ্যান্সারি ভবন নির্মাণ” প্রকল্প।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়: “কিশোরগঞ্জ (বিন্নাটি)-পাকুন্দিয়া-মির্জাপুর টোক জেলা মহাসড়ককে যথাযথমানে উন্নীতকরণ (১ম সংশোধিত)” প্রকল্প।
শিল্প মন্ত্রণালয়: “বিএসটিআই’র পদার্থ (ফিজিক্যাল) ও রসায়ন (কেমিক্যাল) পরীক্ষণ ল্যাবরেটরির সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন” প্রকল্প।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়: “ঘোড়াশাল ৩য় ইউনিট রি-পাওয়ারিং প্রকল্প (২য় সংশোধিত)”।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়: “মানসিক হাসপাতাল, পাবনা-কে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে রূপান্তর” প্রকল্প।
রেলপথ মন্ত্রণালয় (২টি):
“বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের লেভেল ক্রসিং গেইটসমূহের পুনর্বাসন ও মান উন্নয়ন (৪র্থ সংশোধিত)” প্রকল্প।
“বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল লেভেল ক্রসিং গেইটসমূহের পুনর্বাসন ও মান উন্নয়ন (৫ম সংশোধিত)” প্রকল্প।
একনেক সভায় অংশগ্রহণ করেন– পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, স্বরাষ্ট্র এবং কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.), শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন; পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় ও যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, বীর প্রতীক, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনসহ সংশ্লিষ্টরা।
অর্থনীতি
স্বর্ণের দাম বেড়ে ভরি ২ লাখ ১৭ হাজার ৩৮২ টাকা

দেশের বাজারে সোনার দাম আবার বাড়ানো হয়েছে। এতে সোনার সর্বোচ্চ দামের নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে এক হাজার ৫০ টাকা। এতে এক ভরি সোনার দাম ২ লাখ ১৭ হাজার ৩৮২ টাকা হয়েছে।
স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে। সোমবার (২০ অক্টোবর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
রবিবার (১৯ অক্টোবর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে গত ১৫ অক্টোবর সোনার দাম বাড়ানো হয়। এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম হয় ২ লাখ ১৬ হাজার ৩৩২ টাকা। এখন আবার দাম বাড়ানোর ফলে সেই রেকর্ড ভেঙে গেলো।
এখন সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম এক হাজার ৫০ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ১৭ হাজার ৩৮২ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক হাজার ৪ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ৭ হাজার ৫০৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ৮৫২ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম এক লাখ ৭৭ হাজার ৮৫৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ৭২৩ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৪৮ হাজার ৭৪ টাকা।
এর আগে গত ১৫ অক্টোবর সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৬১৩ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয় ২ লাখ ১৬ হাজার ৩৩২ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ৪৯৬ টাকা বাড়িয়ে ২ লাখ ৬ হাজার ৪৯৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ২ হাজার ১৪৬ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম এক লাখ ৭৭ হাজার এক টাকা নির্ধারণ করা হয়। সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম এক হাজার ৮৩১ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় এক লাখ ৪৭ হাজার ৩৫১ টাকা। আজ রোববার এই দামে সোনা বিক্রি হয়েছে।
সোনার দাম বাড়ানো হলেও রুপার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ২০৫ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ৫ হাজার ৯১৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ৫ হাজার ৭৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ৩ হাজার ৮০২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অর্থনীতি
১৮ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৯ হাজার ২০৩ কোটি টাকা

চলতি (অক্টোবর) মাসের প্রথম ১৮ দিনে দেশে এসেছে প্রায় ১৫৭ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১৯ হাজার ২০৩ কোটি টাকা। প্রতিদিন গড়ে যোগ হয়েছে আট কোটি ২৮ লাখ ডলার বা প্রায় এক হাজার ১১ কোটি টাকার প্রবাসী আয়।
রবিবার (১৯ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, এ রেমিট্যান্স গত বছরের একই সময়ের তুলনায় পাঁচ কোটি ১০ লাখ ডলার বেশি। গত বছরের ওই সময়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৫২ কোটি ৩০ লাখ ডলার।
চলতি (২০২৫-২৬) অর্থবছর ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত মোট রেমিট্যান্স এসেছে ৯১৫ কোটি ৯০ লাখ ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ৮০৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার। অর্থবছর অনুযায়ী রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে ২৪৭ কোটি ৭৮ লাখ, আগস্টে ২৪২ কোটি ১৯ লাখ ও সেপ্টেম্বরে ২৬৮ কোটি ৫৮ লাখ ডলার প্রবাসী আয় এসেছে।
গত অর্থবছরের মার্চ মাসে রেমিট্যান্সপ্রবাহ সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলারে পৌঁছেছিল, যা ছিল ওই অর্থবছরের এক মাসের হিসাবে রেকর্ড। পুরো অর্থবছরে প্রবাসী আয় দাঁড়ায় ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার। এটি আগের বছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার। তখন জুলাইয়ে ১৯১ দশমিক ৩৭ কোটি, আগস্টে ২২২ দশমিক ১৩ কোটি, সেপ্টেম্বরে ২৪০ দশমিক ৪১ কোটি, অক্টোবরে ২৩৯ দশমিক ৫০ কোটি, নভেম্বরে ২২০ কোটি, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি, ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি, মার্চে ৩২৯ কোটি, এপ্রিলে ২৭৫ কোটি, মে মাসে ২৯৭ কোটি ও জুনে ২৮২ কোটি ডলার প্রবাসী আয় পাওয়া গিয়েছিল।
অর্থনীতি
বিমানবন্দরে আগুনে ক্ষতির পরিমাণ ১০০ কোটি টাকার বেশি: বিজিএমইএ

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ১০০ কোটি টাকার বেশি হতে পারে বলে অনুমান করছেন তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র নেতারা।
তারা বলেছেন, এ দুর্ঘটনায় দেশের রপ্তানি বাণিজ্য, বিশেষ করে তৈরি পোশাকশিল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রবিবার (১৯ অক্টোবর) বিজিএমইএ’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইনামুল হক খানের নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদল শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরিদর্শন শেষে বিজিএমইএ নেতারা এসব কথা বলেন।
পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সামনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইনামুল হক।
তিনি বলেন, ওই অগ্নিকাণ্ডের ফলে তৈরি পোশাক, মূল্যবান কাঁচামাল এবং নতুন ব্যবসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্যাম্পল পুড়ে গেছে। এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আগুনে যে পরিমাণ পণ্য নষ্ট হয়েছে, তা শুধু বর্তমান রপ্তানির ক্ষতি নয়, ভবিষ্যতের ব্যবসায়িক সুযোগও ব্যাহত করবে। বিজিএমইএ এরই মধ্যে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে কাজ শুরু করেছে। সদস্যদের কাছ থেকে নির্ধারিত ফরমে ক্ষতিগ্রস্ত পণ্যের তালিকা চাওয়া হয়েছে। দ্রুত তথ্য সংগ্রহের জন্য একটি অনলাইন পোর্টাল খোলা হয়েছে।
দিনে ২০০-২৫০টি কারখানার পণ্য আকাশপথে রপ্তানি হয় জানিয়ে ইনামুল হক খান বলেন, ক্ষতির পরিমাণ বিপুল হতে পারে। সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে শিগগির বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, কাস্টমসসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে একটি সমন্বয় সভা করবে বিজিএমইএ।
তিনি বলেন, আমরা ভেতরে গিয়ে ভয়াবহ চিত্র দেখেছি। পুরো ইমপোর্ট সেকশন পুড়ে গেছে। আমাদের অনুমান, ক্ষতির পরিমাণ ১ বিলিয়ন (১০০ কোটি) টাকার বেশি হতে পারে।
অর্থনীতি
চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্যবাহী গাড়ির বাড়তি মাশুল স্থগিত

চট্টগ্রাম বন্দরে প্রবেশের যানবাহনের বর্ধিত গেট পাস ফি (বাড়তি মাশুল) স্থগিত করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এতে বন্দরে নতুন ট্যারিফ শিডিউলে পণ্যবাহী গাড়ির গেট পাস ফি বৃদ্ধির ঘটনায় সৃষ্ট অচলাবস্থা সাময়িকভাবে নিরসন হলো।
চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান আশ্বাস দিয়েছেন, পণ্যবাহী গাড়ির ক্ষেত্রে বর্ধিত ফি স্থগিত থাকবে।
রবিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে পরিবহন শ্রমিক ও মালিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বন্দর কর্তৃপক্ষের আলোচনা শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, লরি, ট্রেইলার শনিবার থেকে বন্ধ। ফলে আমদানি পণ্য ডেলিভারি বন্ধ ছিল। বিষয়টির সঙ্গে দেশের আমদানি-রপ্তানি জড়িত। তাই বন্দর চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে শ্রমিক ও মালিকদের সঙ্গে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে আলোচনা হয়েছে। সরকারি অনুমোদনক্রমে জারি করা এ গেজেট বন্দর প্রশাসন তাৎক্ষণিক কোনোরকম কারেকশন কিংবা বন্ধ করতে পারে না। তারপরও পরিবহন শ্রমিকদের বিষয়টা বিবেচনা করে যানবাহনের ক্ষেত্রে বর্ধিত গেট পাস ফি পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।
ওমর ফারুক বলেন, আমরা বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুসারে সুপারিশসহ প্রস্তাব পাঠাবো। বোর্ডের সিদ্ধান্ত নিয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠাবো। প্রস্তাব অনুমোদন হয়ে এলে আপনারা জানতে পারবেন কী সিদ্ধান্ত হয়েছে। আপাতত তা স্থগিত থাকবে। উপস্থিত শ্রমিক ও মালিক প্রতিনিধিরা আশ্বস্ত করেন তারা কাজে ফিরে যাবেন। বাইরে প্রায় ৬ হাজার ট্রাক-কাভার্ডভ্যান অপেক্ষা করছে। সব বন্দরে ডেলিভারি বা রপ্তানি কাজে নিয়োজিত হবে।
বিভাগীয় পণ্য পরিবহন ফেডারেশনের বন্দর বিষয়ক সম্পাদক মো. শামসুজ্জামান সুমন বলেন, বন্দর চেয়ারম্যান আমাদের সঙ্গে বৈঠকে পণ্যবাহী গাড়ির ক্ষেত্রে নতুন ট্যারিফ শিডিউলের বর্ধিত ফি স্থগিত করেন। চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, আপাতত ট্রাক, কাভার্ডভ্যান বন্দরে প্রবেশের ক্ষেত্রে আমাদের ২৩০ টাকা দিতে হবে না। আগের মতো ৫৭ টাকা ৫০ পয়সা ফিতে পাস নিতে পারবো আমরা। যদি আমরা ৫৭ টাকা ৫০ পয়সায় পণ্যবাহী গাড়ির পাস পাই তাহলে আমাদের গাড়ি বন্দরের পণ্য পরিবহন করবে। প্রতিদিন আমাদের ৮-৯ হাজার গাড়ি বন্দরে পণ্যবাহী ট্রাক-কাভার্ডভ্যান চলাচল করে।
চট্টগ্রাম জেলা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন ফারুক বলেন, দীর্ঘ সময় আলোচনার পর বন্দর চেয়ারম্যান পণ্যবাহী গাড়ির গেট পাসের বর্ধিত ফি স্থগিতের কথা জানিয়েছেন। স্থগিত করার লিখিত কাগজ পেলে আমরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করবো। যেহেতু এটা কার্যকরের বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন, তাই স্থগিতের বিষয়টিও লিখিতভাবে জানালে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দরে নতুন ট্যারিফ শিডিউলে পণ্যবাহী গাড়ির গেট পাসের ফি বৃদ্ধির ঘটনায় অচলাবস্থা তৈরি হয়। নতুন ট্যারিফ শিডিউলে পণ্যবাহী গাড়ি সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারীদের গেটপাসের ফি বৃদ্ধির ঘটনায় প্রাইমমুভার, ট্রেইলার মালিক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন কর্মবিরতি পালন করে। একই দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে আন্তঃজেলা ট্রাক মালিক সমিতি। বন্দর চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠকে আপাতত অচলাবস্থা কাটলেও আশংকা এখনো কাটেনি।