ধর্ম ও জীবন
পবিত্র আশুরা আজ
আজ ১০ মহররম, পবিত্র আশুরা। যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় নানা-কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সারাদেশে পালিত হচ্ছে দিনটি। বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে মহররমের ১০ তারিখ ধর্মীয়ভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
পবিত্র কোরআন মাজিদ ও হাদিস শরিফে এ মাসের অত্যন্ত ফজিলত বর্ণনা করা হয়েছে। কোরআনের ভাষায় এটি ‘আরবাআতুন হুরুম’-অর্থাৎ চার সম্মানিত মাসের অন্যতম। এ মাসে রোজা রাখার প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত এক হাদিসে নবি কারিম (সা.) বলেছেন, ‘রমজানের পর আল্লাহর মাস মুহাররমের রোজা হলো সর্বশ্রেষ্ঠ।’
এদিন ঐতিহাসিক কারবালার ময়দানে হৃদয়বিদারক ঘটনা ছাড়াও বিভিন্ন ঘটনার কারণে দিনটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। রোজাসহ বিভিন্ন নফল ইবাদতের মধ্য দিয়ে মুসলিমরা দিনটি উদযাপন করে থাকেন।
আশুরার তাৎপর্য তুলে ধরে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার বাণীতে বলেন, ইসলাম শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম। পবিত্র আশুরার এ দিনে সাম্য, ন্যায়ভিত্তিক ও শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি মুসলিম উম্মার ঐক্য, সংহতি ও অগ্রগতি কামনা করছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, শান্তির ধর্ম ইসলাম সবসময় সম্প্রীতির বাণী প্রচার করে। মহানবি (সা.) তার বিদায় হজের ভাষণে বলেছিলেন, ‘হে লোক সকল, আল্লাহ বলেছেন-হে মানবজাতি, আমি তোমাদের এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদের বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পর পরিচিত হতে পারো, নিশ্চয় আল্লাহর কাছে সেই সৰ্বাধিক সম্মানিত যে সর্বাধিক পরহেজগার।’
আশুরা উপলক্ষে শিয়া সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিল উপলক্ষে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান। সোমবার (১৫ জুলাই) রাজধানীর লালবাগে হোসনী দালান ইমামবাড়ায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেন তিনি।
হাবিবুর রহমান জানান, ইমামবাড়ায় ইন্সট্রুমেন্টাল চেকিং ও ডগ স্কোয়াড দিয়ে সুইপিং সম্পন্ন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রবেশকারীদের আর্চওয়ে ও অন্যান্য সুইপিংয়ের পর ভেতরে যেতে দেওয়া হবে। আশপাশের উঁচু ভবন থেকেও ইমামবাড়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থা মনিটরিং করা হবে।
দিবসটি উপলক্ষে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
হিন্দু সম্প্রদায় কী চাইছে, তারা এখন কেন রাস্তায়
দেশের হিন্দু সম্প্রদায় তাদের আট দফা দাবি আদায়ের জন্য চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে শুক্রবার যে সমাবেশে করেছে তা নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা হচ্ছে বিভিন্ন মহলে। ওই সমাবেশ থেকে দাবি আদায়ের জন্য ঢাকা অভিমুখে লংমার্চের যে ঘোষণা দিয়েছে সেটিও অনেকের দৃষ্টিতে এসেছে। সমাবেশের আয়োজকরা বলছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যদের পরিচিত সংগঠনগুলোর বাইরে সাধু সন্তদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হওয়ায় এবারের সমাবেশের লোক সমাগম গণমাধ্যমের দৃষ্টি কেড়েছে এবং একই কারণে তাদের দেয়া বক্তব্যগুলোও আলোচনায় এসেছে বলে মনে করেন তারা। শুক্রবার লালদীঘির ওই সমাবেশের প্রধান বক্তা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রক্ষ্মচারী বলেছেন, তাদের বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছেন তারা।
আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই এটা সাধুসন্তদের আন্দোলন। এটি সরকার বা কোন দলের পক্ষে বা বিপক্ষে নয়। সংবিধান, আইনকানুনসহ সব কিছুতে সাম্য ও অসাম্প্রদায়িকতা চাই আমরা যাতে সবাই সমান মর্যাদা পেতে পারি, বলছিলেন তিনি। সনাতন জাগরণ মঞ্চের একজন সমন্বয়ক কাঞ্চন আচার্য বলছেন, নাগরিক অধিকার আদায়ের জন্যই তারা তাদের দাবিগুলো তুলেছেন। তিনি বলছেন, গত ৫৩ বছরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হওয়া হামলা নিপীড়নের একটি ঘটনারও বিচার হয়নি। তবে এখন ‘সরকারকে চাপে ফেলতে কিংবা আওয়ামী লীগকে সুযোগ করে দিতে মাঠে নেমেছেন’ বলে সরকার সমর্থকরা সামাজিক মাধ্যমে যে প্রচারণা চালাচ্ছে তা প্রত্যাখ্যান করেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রক্ষ্মচারী। তিনি বলেন, হিন্দু সম্প্রদায় কথা বললে তাতে রাজনৈতিক ট্যাগ দেয়া কিংবা অন্য দেশকে টেনে আনা সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনাগুলো উপেক্ষার পুরনো কৌশল। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে সবাইকে সাথে নিয়ে এগুতে হবে-এটাই আমরা বলতে চাইছি। শুক্রবারের সমাবেশ থেকে যে আট দফা দাবি জানানো হয়েছে তার মধ্যে আছে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে সংখ্যালঘু নির্যাতনে জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তি, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন এবং অবিলম্বে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা।
প্রসঙ্গত, এক দশকের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার বেশ কিছু ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও দৃষ্টি কেড়েছিলো। ২০২১ সালে দুর্গা পূজার সময় কুমিল্লার একটা পূজামণ্ডপে কোরআন পাওয়ার অভিযোগ ঘিরে দেশজুড়ে মন্দির মণ্ডপে হামলার ঘটনা ঘটেছিলো। মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাম্প্রতিক এক রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৩ সাল থেকে পরবর্তী নয় বছরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর সাড়ে তিন হাজারের বেশি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলার মধ্যে হিন্দুদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং পূজামণ্ডপ, মন্দিরে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ অন্যতম। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রক্ষ্মচারী বলছেন, একটি ঘটনাতেও কোন ব্যক্তিকে বিচার শেষ করে শাস্তি দেয়া হয়নি। বরং আমাদের ধর্মের অনুভূতিতে আঘাত করলে জামিন পায়। আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতির কথা বলে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হয়। আমরা কিছু বললে আমাদের একটি দলের ট্যাগ দেয়া হয়। অন্য দেশের ট্যাগ দেয়া হয়, তিনি অভিযোগ করেন।
তাদের আট দফার অন্য দাবি গুলো হলো, সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে হিন্দু ফাউন্ডেশনে উন্নীতকরণ, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকেও ফাউন্ডেশনে উন্নীতকরণ, দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন এবং অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন বাস্তবায়ন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপাসনালয় নির্মাণ ও হোস্টেলে প্রার্থনা রুম , সংস্কৃত ও পালি শিক্ষা বোর্ড আধুনিকায়ন এবং দুর্গাপূজায় পাঁচ দিন ছুটি দেয়া। কাঞ্চন আচার্য বলছেন, তারা ইতোমধ্যেই তাদের দাবিগুলো নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা করেছেন। এবারের দুর্গাপূজার সময় সরকারের প্রতিনিধিদের সাথে কথা হয়েছে কিন্তু এখনো তাতে কোন অগ্রগতি আসেনি, বলছিলেন তিনি। শুক্রবার লালদীঘিতে সনাতন সম্প্রদায়ের সমাবেশের পর সামাজিক মাধ্যমে অনেক নিয়ে এ নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন তুলেছেন। কেউ কেউ বলছেন আওয়ামী লীগ আমলে সনাতন সম্প্রদায়ের মানুষেরে এভাবে সোচ্চার হয়নি। আবার কেউ কেউ সনাতন সম্প্রদায় ‘আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে’ এমন মন্তব্য করছেন।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রক্ষ্মচারী বলছেন, সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়নকে বৈধতা দিয়ে এগুলো পুরনো কৌশল বলেই তারা মনে করেন। আমরা যে সরকারের আমলেই হোক যত অন্যায়ের শিকার হয়েছি তার বিচার চাই এবং সুরক্ষা নিশ্চিতের দাবি করছি। সরকার মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য পাঁচশ মসজিদ করেছে। আমরা একে স্বাগত জানিয়েছি কিন্তু অন্য ধর্মের জন্য কি করেছে?, বলছিলেন তিনি। আমরা এখন রাস্তায় নেমেছি কারণ এখন পরিবর্তনের কথা বলা হচ্ছে। তবে কিছু ঘটনা আমাদের বিচলিত করেছে। আগের বাড়িঘর মন্দির বা ব্যক্তির ওপর হামলা হয়েছে নিয়মিত। এখন জীবিকায় হাত দেয়া হচ্ছে। শুধু হিন্দু বলেই চাকরিচ্যুত ও পদাবনতির ঘটনা ঘটছে। বিভিন্ন জায়গায় আমাদের অনুষ্ঠানে বাধা দেয়া হচ্ছে। এসব কারণে আমাদের প্রতিবাদ করতে হচ্ছে, বলছিলেন তিনি। তিনি জানান, তারা ইতোমধ্যেই বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও হেফাজতে ইসলামীসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতাদের সাথে তাদের দাবির বিষয়ে মতবিনিময় করেছেন। সরকার ছয়টি কমিশন করেছে কিন্তু সেই কমিশনে তো সংখ্যালঘু বা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী নেই। আমরা চাই আমরা যেন আমাদের কথা তুলতে পারি।
হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের দাবি, ২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার জন্য কমিশন হলেও আওয়ামী লীগ সরকার পনের বছরে তার ভিত্তিতে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি সে সময় চট্টগ্রামে অধ্যক্ষ গোপাল কৃষ্ণ মুহুরী হত্যাকাণ্ড দেশজুড়ে আলোচনা তৈরি করলেও এখন পর্যন্ত সেই ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচার হয়নি। ২০০৬ সালে রাউজানে জ্ঞানজ্যোতি হত্যাকাণ্ড ও ২০১২ সালে রামুর বৌদ্ধ মন্দিরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ব্যাপক আলোড়ন তুললেও সেগুলোতেও বিচার হয়নি কারও। ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননাকর ছবি পোস্টের অভিযোগ তুলে ২০১৬ সালের ৩০শে অক্টোবর ব্রাক্ষণবাড়িয়ার নাসিরনগরে পনেরটি মন্দির ও তিন শতাধিক বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় হলেও এর আট মামলার সাতটিরই বিচার কাজ শেষ হয়নি। ২০১২ সালের ২৯শে সেপ্টেম্বর রাতে রামুর ১২টি বৌদ্ধ বিহার, উপাসনালয়ে অগ্নিসংযোগ ও হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। একইসঙ্গে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ৩০টি বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সোচ্চার হয়েছিলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও।
আওয়ামী লীগ আমলে এসব নিয়ে তারা মাঠে নামেননি কেন এমন প্রশ্নের জবাবে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রক্ষ্মচারী বলেন, তারা সবসময়ই এর বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। ২০২১ সালের ঘটনাতেও দেশজুড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছি আমরা। ১৫৪ টি দেশে ওই ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হয়ে তখন, বলছিলেন তিনি। যদিও সামাজিক মাধ্যমে সরকার সমর্থকরা অনেকে প্রচার করছেন যে সনাতন ধর্মের মানুষ আওয়ামী লীগকে সুবিধা দেয়ার জন্য এখন রাস্তায় নেমেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রক্ষ্মচারী বলেন, এটি আক্রমণকারী ও সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর পুরনো খেলা। এ কারণেই আমরা সরকাররে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছি। কারণ দেশকে সঠিক পথে নিতে হলে সবার সাথেই সমান আচরণ করতে হবে এবং সবাইকে সমান সম্মান ও নিরাপত্তাবোধ নিশ্চিত করতে হবে। রাজনৈতিক রং দিয়ে উপেক্ষা করার প্রবণতার কৌশল পুরনো। আমরা কিছু বললে ভারতের প্রসঙ্গ টানা হয়। আমরাও বলতে চাই যে পাকিস্তানেও তো সংখ্যালঘু কমিশন ও মন্ত্রণালয় আছে। তাহলে বাংলাদেশে কেন থাকবে না? মনে রাখতে হবে যে বিশ্বের কোথাও একজন মুসলিম ক্ষতিগ্রস্ত হলে যেমন সারাবিশ্বের মুসলিমদের মন কাঁদে, তেমনি একজন হিন্দুর ক্ষতি হলে সারা বিশ্বের হিন্দুদের মন কাঁদবে, তিনি বলেন। শুক্রবার লালদীঘি ময়দানের ওই সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী।
তিনি বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ। সেখানে দেয়া ভাষণে তিনি বলেন, কেউ যদি আমাদের উৎখাত করে শান্তিতে থাকার চেষ্টা করেন, তাহলে এ ভূমি আফগানিস্তান হবে, সিরিয়া হবে। শুধু সংখ্যালঘু পরিচয়ে ৯৩ জনকে পুলিশের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ভেটেরিনারি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হিন্দুদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। মাঝখানে কিছুদিন এমন অপকর্ম থেমে গিয়েছিল। এখন মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। আমরা আর নীরব থাকব না, বলেছেন তিনি। তিনি আরো বলেছেন, বাংলাদেশে সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আমাদের আপত্তি নাই। কিন্তু দ্বিতীয়/তৃতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়ে সংবিধান সংশোধনকে মানব না। পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি হিন্দু হয়েছেন। আর এ দেশে একজন করে ঝেঁটিয়ে বিদায় করেছেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
তাবলিগ জামাতের জোড় ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ
৫৮তম বিশ্ব ইজতেমাকে সামনে রেখে ঢাকার টঙ্গী ময়দানের পাশে টিনশেডে ২৮ নভেম্বর শুরু হবে তাবলিগ জামাতের ৫ দিনব্যাপী জোড় ইজতেমা। শনিবার (২৬ অক্টোবর) তাবলিগ জামাতের ‘শূরায়ে নিজাম’ এর মিডিয়া সমন্বয়ক মুফতি জহির ইবনে মুসলিম এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, ২০২৫ সালের বিশ্ব ইজতেমা সফল করতে তাবলিগ জামাতের পুরানো সাথীদের নিয়ে এই জোড় ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। ২৮ নভেম্বর শুরু হয়ে ২ ডিসেম্বর বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে জোড় ইজতেমা। এরপর আসন্ন বিশ্ব ইজতেমা সফল করতে দীনের মেহনতকে আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিতে সাথীরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়বেন।
তিনি আরও জানান, বিশ্ব ইজতেমার মাঠ তুরাগ তীরের পাশের টিনশেড জোড়ের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। এবারের জোড় ইজতেমায় তাবলিগের পুরানো সাথীদের প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার মুসল্লির উপস্থিতি আশা করা হচ্ছে। তারা এ ময়দানে নামাজ পড়বেন, তিলাওয়াত করবেন, দীনের ফিকির করবেন, এবং যারা দীনের থেকে দূরে সরে গেছেন, তাদের কীভাবে দীনের সঙ্গে পুনরায় যুক্ত করা যায় সেই মেহনত করবেন।
সাধারণত বিশ্ব ইজতেমার আগে জোড় ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। এই জোড় ইজতেমায় তাবলিগের সব সাথী অংশগ্রহণ করতে পারেন না; এটি শুধুমাত্র তিন চিল্লার সাথীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
হজ প্যাকেজ ঘোষণা ৩০ অক্টোবর
আগামী ৩০ অক্টোবর আগামী বছরের হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে। ওই দিন হজ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নির্বাহী কমিটির সভায় প্যাকেজ চূড়ান্ত হবে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সচিবালয়ে হজ যাত্রী পরিবহনে বিমান ভাড়া নির্ধারণ সংক্রান্ত সভা শেষে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন গণমাধ্যমকে এ কথা জানান।
বৈঠকে বিমান ভাড়া নির্ধারণ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, বিমান ভাড়া নির্ধারণের ক্ষেত্রে এখনো একটু বিবেচনার বিষয় আছে। তাই এখনো আমরা চূড়ান্তভাবে এ নিয়ে বলতে পারবো না।
উপদেষ্টা বলেন, এ মাসের ৩০ তারিখ আমরা প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারবো। অন্য বছরের মতো এবারও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সৌদিয়া এয়ারলাইন্স ও ফ্লাই নাস হজ যাত্রী পরিবহন করবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
বায়তুল মোকাররমে নতুন খতিব নিয়োগ
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে নতুন খতিব নিযুক্ত করা হয়েছে। ইসলামি আইন বিশেষজ্ঞ ও হাদিস বিশারদ মুফতি আবদুল মালেককে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে এই পদে নিয়োগের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মুফতি আবদুল মালেক দেশ-বিদেশের প্রসিদ্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইসলামিক স্টাডিজ, হাদীস ও ফিকহে ইসলামির ওপর উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনকারী একজন প্রখ্যাত ইসলামি স্কলার। বিশ্বখ্যাত ইসলামি পণ্ডিত মুফতি বিচারপতি তাকী ওসমানী তার উস্তাদ। সৌদি আরবের রিয়াদে অবস্থিত ইমাম মোহাম্মদ ইবনে সাউদ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের উসুলুদ্দীন অনুষদের অধ্যাপক শায়খ আবদুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহর অধীনে তিনি দুই বছর হাদীস ও ইসলামি আইন বিষয়ে উচ্চতর গবেষণা পরিচালনা করেন।
মুফতি আবদুল মালেক মক্কা, মদীনা, পাকিস্তান, ভারত ও তুরস্ক সফর করেছেন এবং বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন। তিনি ইতোমধ্যে বাংলা, আরবি, ইংরেজি ও উর্দু ভাষায় মোট ১৬টি গ্রন্থ রচনা করেছেন। এছাড়া তার তত্ত্বাবধানে মাসিক আল-কাউসার নামে নিয়মিত একটা গবেষণা পত্রিকা বের হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
আজ ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম
আজ ১১ রবিউস সানি ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম। হিজরি ৫৬১ সালের এ দিন বিখ্যাত ইসলাম প্রচারক ও সাধক হজরত আবদুল কাদের জিলানি (রহ.) মৃত্যুবরণ করেন। মূলত, তার মৃত্যুর দিনটিকেই ‘ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম’ হিসেবে পালন করা হয়।
‘ইয়াজদাহম’ ফারসি শব্দ। এর অর্থ এগারো। ‘ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম’ বলতে রবিউস সানি মাসের ১১তম দিনকে বোঝায়। এটি আবদুল কাদের জিলানী (রহ.)-এর স্মরণে পালিত হয়।
ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম হলো আবদুল কাদির জিলানী (রহ.)-এর ওফাত দিবস। হিজরি ৫৬১ সনের ১১ রবিউস সানি তিনি ইন্তেকাল করেন।
তার বাবার নাম সৈয়দ আবু সালেহ এবং মায়ের নাম বিবি ফাতেমা। তিনি ৪৭০ হিজরিতে ইরানের জিলান নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাগদাদের মহান পীর হজরত আবু সাঈদ ইবনে আলী ইবনে হুসাইন মাখরুমির (রহ.) কাছে মারেফাতের জ্ঞানে পূর্ণতা লাভ করেন এবং খেলাফত প্রাপ্ত হন।
এমআই