অর্থনীতি
জাতীয় রপ্তানি ট্রফি দেওয়া হবে আজ

বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে রপ্তানি খাতে অবদানের জন্য জাতীয় রপ্তানি ট্রফি দেওয়া হবে আজ রোববার। ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ট্রফি প্রদান করবেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, বিশেষ অতিথি থাকবেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি টিপু মুনশি এবং সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম।
২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য জাতীয় রপ্তানি ট্রফি পাবে ৭৭টি প্রতিষ্ঠান। এছাড়া সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রপ্তানি ট্রফি পাবে একটি প্রতিষ্ঠান।
শনিবার (১৩ জুলাই) টিসিবি অডিটোরিয়ামে জাতীয় রপ্তানি ট্রফি প্রদান অনুষ্ঠান উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে আরও জানানো হয়, জাতীয় রপ্তানি ট্রফি নীতিমালা-২০১৩ অনুসরণে প্রাথমিক ও চূড়ান্ত বাছাই কমিটির মাধ্যমে মোট ৩২টি খাতের রপ্তানিকারকদের মধ্য থেকে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের জন্য রপ্তানি আয়, আয়গত প্রবৃদ্ধি, নতুন পণ্যের সংযোজন, নতুন বাজারে প্রবেশ, কমপ্লায়েন্স প্রতিপালন ইত্যাদি মূল্যায়নপূর্বক ট্রফি বিজয়ী প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করেছে। প্রতিটি খাতের জন্য কৃতি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে স্বর্ণ, রোপ্য ও ব্রোঞ্জ ট্রফি দেওয়া হবে। এছাড়া সব খাতের মধ্যে হতে সর্বোচ্চ রপ্তানি আয় অর্জনকারী প্রতিষ্ঠানকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রপ্তানি ট্রফি শিরোনামে একটি বিশেষ ট্রফিসহ (স্বর্ণ) মোট ২৯টি স্বর্ণ, ২৭টি রৌপ্য এবং ২১টি ব্রোঞ্জ ট্রফি প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
এবার ট্রফি পাবে যারা
গত ফেব্রুয়ারিতে এ ট্রফির জন্য গেজেট প্রকাশ করা হয়। যেখানে মনোনীত প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করা হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জারি করা ওই গেজেটে বলা হয়, দেশের সেরা রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বঙ্গবন্ধু রপ্তানি ট্রফি (স্বর্ণ) পাচ্ছে রিফাত গার্মেন্টস।
এছাড়া স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ এ তিন ক্যাটাগরিতে জাতীয় রপ্তানি ট্রফির জন্য নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানগুলো হলো তৈরি পোশাক খাতে (ওভেন) উইন্ডি অ্যাপারেলস স্বর্ণ, অ্যাপারেল গ্যালারি রৌপ্য এবং চিটাগাং এশিয়ান অ্যাপারেলস ব্রোঞ্জ ট্রফি পাচ্ছে। তৈরি পোশাক খাতে (নিটওয়্যার) লিবার্টি নিটওয়্যার স্বর্ণ, ডিভাইন ইন্টিমেটস রৌপ্য, ফ্লামিংগো ফ্যাশনসকে ব্রোঞ্জ ট্রফি দেওয়া হবে।
সব ধরনের সুতা খাতে বাদশা টেক্সটাইলস স্বর্ণ, স্কয়ার টেক্সটাইলস রৌপ্য এবং কামাল ইয়ার্ন ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। টেক্সটাইল ফেব্রিকস খাতে নাইস ডেনিম মিলস স্বর্ণ, হা-মীম ডেনিম রৌপ্য এবং ফোর এইচ ডায়িং অ্যান্ড প্রিন্টিং ব্রোঞ্জ ট্রফি পাচ্ছে।
হোম ও স্পেশালাইজড টেক্সটাইল খাতে জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফেব্রিকস স্বর্ণ, মমটেক্স এক্সপো রৌপ্য এবং এসিএস টেক্সটাইলস (বাংলাদেশ) ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। টেরিটাওয়েল খাতে নোমান টেরিটাওয়েল মিলস স্বর্ণ এবং এসিএস টাওয়েল রৌপ্য ট্রফি পাচ্ছে। হিমায়িত খাদ্য খাতে ছবি ফিশ প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিজ স্বর্ণ, প্রিয়াম ফিশ এক্সপোর্ট রৌপ্য এবং এমইউসি ফুডস ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। কাঁচা পাট খাতে পপুলার জুট এক্সচেঞ্জ স্বর্ণ, তাসফিয়া জুট ট্রেডিং রৌপ্য এবং ইন্টারন্যাশনাল জুট ট্রেডার্সকে ব্রোঞ্জ ট্রফি দেওয়া হবে।
পাটজাত দ্রব্য খাতে জনতা জুট মিলস স্বর্ণ এবং আকিজ জুট মিলস রৌপ্য ট্রফি; চামড়াজাত পণ্য খাতে পিকার্ড বাংলাদেশ স্বর্ণ এবং এবিসি ফুটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ রৌপ্য ট্রফি; ফুটওয়্যার খাতে বে-ফুটওয়্যার স্বর্ণ, এডিসন ফুটওয়্যার রৌপ্য এবং এফবি ফুটওয়্যার ব্রোঞ্জ ট্রফি পাচ্ছে। কৃষিজ পণ্য খাতে (তামাক ব্যতীত) ইনডিগো করপোরেশন স্বর্ণ, মনসুর জেনারেল ট্রেডিং কোং রৌপ্য এবং সিএসএস ইন্টারন্যাশনালকে ব্রোঞ্জ ট্রফি দেওয়া হবে।
অ্যাগ্রো প্রসেসিং পণ্য খাতে (তামাকজাত পণ্য ব্যতীত) হবিগঞ্জ অ্যাগ্রো স্বর্ণ, প্রাণ অ্যাগ্রো রৌপ্য এবং প্রাণ ফুডস ব্রোঞ্জ ট্রফি পাচ্ছে। হস্তশিল্পজাত পণ্য খাতে কারুপণ্য রংপুর স্বর্ণ, বিডি ক্রিয়েশন রৌপ্য এবং ক্লাসিক্যাল হ্যান্ডমেড প্রোডাক্টসকে বিডি ব্রোঞ্জ ট্রফি দেওয়া হবে।
মেলামাইন খাতে ডিউরেবল প্লাস্টিক স্বর্ণ ট্রফি; প্লাস্টিক পণ্য খাতে অলপ্লাস্ট বাংলাদেশ স্বর্ণ, আকিজ বায়াক্স ফিল্মস রৌপ্য এবং বঙ্গ প্লাস্টিক ইন্টারন্যাশনাল ব্রোঞ্জ ট্রফি পাচ্ছে। সিরামিক সামগ্রী খাতে শাইনপুকুর সিরামিকস স্বর্ণ, আর্টিসান সিরামিকস রৌপ্য এবং প্রতীক সিরামিকসকে ব্রোঞ্জ ট্রফি দেওয়া হবে।
লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে এমঅ্যান্ডইউ সাইকেলস স্বর্ণ, মেঘনা বাংলাদেশ রৌপ্য এবং রংপুর মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ ব্রোঞ্জ ট্রফি পাচ্ছে। ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস পণ্য খাতে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি স্বর্ণ এবং বিআরবি কেবলকে ইন্ডাস্ট্রিজ রৌপ্য ট্রফি দেওয়া হবে।
অন্যান্য শিল্পজাত পণ্য খাতে মেরিন সেফটি সিস্টেম স্বর্ণ, এশিয়া মেটাল মেরিন সার্ভিস রৌপ্য এবং তাসনিম কেমিক্যাল কমপ্লেক্স ব্রোঞ্জ ট্রফি; ফার্মাসিউটিক্যাল খাতে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস স্বর্ণ, ইনসেপটা ফার্মাসিউটিক্যালস রৌপ্য এবং স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসকে ব্রোঞ্জ ট্রফি দেওয়া হবে।
কম্পিউটার সফটওয়্যার খাতে সার্ভিস ইঞ্জিন স্বর্ণ এবং গোল্ডেন হারভেস্ট ইনফোটেক রৌপ্য ট্রফি; ইপিজেডভুক্ত শতভাগ বাংলাদেশি মালিকানাধীন (সি ক্যাটেগরি) তৈরি পোশাক শিল্প খাতে (নিট ও ওভেন) ইউনিভারসেল জিন্স স্বর্ণ, প্যাসিফিক জিন্স রৌপ্য এবং শাশা ডেনিমস ব্রোঞ্জ ট্রফি পাচ্ছে।
প্যাকেজিং ও অ্যাকসেরিজ পণ্য খাতে স্বর্ণ, মনট্রিমস রৌপ্য এবং ইউনিগ্লোরি পেপার অ্যান্ড প্যাকেজিংকে ব্রোঞ্জ ট্রফি দেওয়া হবে।
অন্যান্য প্রাথমিক পণ্য খাতে হেয়ার স্টাইল ফ্যাক্টরি স্বর্ণ ট্রফি, রায় ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল রৌপ্য ও ইকো ফ্রেশ ইন্টারন্যাশনাল ব্রোঞ্জ ট্রফি পেয়েছে। অন্যান্য সেবা খাতে এক্সপো ফ্রেইট স্বর্ণ ট্রফি এবং মীর টেলিকম রৌপ্য ট্রফি পাচ্ছে।
এছাড়া নারী উদ্যোক্তা বা রপ্তানিকারকদের জন্য সংরক্ষিত খাতে পাইওনিয়ার নিটওয়্যার্স (বিডি) স্বর্ণ ট্রফি, বিকন নিটওয়্যার রৌপ্য ট্রফি এবং ইব্রাহিম নিট গার্মেন্টসকে ব্রোঞ্জ ট্রফি দেওয়া হবে।

অর্থনীতি
‘টাকা-পে’ নামে ভুয়া ওয়েবসাইট, সতর্ক করলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক

জাতীয় কার্ড স্কিম ‘টাকা পে’র কোনো ওয়েবসাইট বা অ্যাপ না থাকলেও একটি ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে জনসাধারণের সংবেদনশীল ও গোপন তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে বলে সতর্ক করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সোমবার (৪ আগস্ট) এক বিজ্ঞপ্তিতে সতর্ক করে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, https://takapaycard.com নামের ওয়েবসাইটটিতে ঢুকলে বা তথ্য দিলে যে কেউ আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি হয়রানির শিকার হতে পারেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশীয়ভাবে কার্ডভিত্তিক লেনদেনের নিয়ন্ত্রণ, ব্যয় সাশ্রয় ও বৈদেশিক মুদ্রার ব্যবহার হ্রাসের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ‘টাকা পে’ নামে একটি জাতীয় কার্ড স্কিম চালু করে। এরইমধ্যে ১৫টি তফসিলি ব্যাংক এই সেবার আওতায় গ্রাহকদের ‘টাকা পে’ ডেবিট কার্ড প্রদান করছে। তবে সম্প্রতি লক্ষ্য করা গেছে, https://takapaycard.com নামের একটি ভুয়া ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জনসাধারণের সংবেদনশীল ও গোপন তথ্য সংগ্রহের অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। ‘টাকা পে’ এর কোনো ওয়েবসাইট বা অ্যাপ বর্তমানে প্রচলিত নেই। প্রতারণামূলক এই সাইটে বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘টাকা পে’ ও এনপিএসবির লোগো অনুমতি ব্যতীত ব্যবহার করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অর্থ লেনদেন, বিনিয়োগ গ্রহণ কিংবা ঋণ প্রদানের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে না। এই ধরনের কার্যক্রম আইন অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ।
বিজ্ঞপ্তিতে ওয়েবসাইটটিতে না ঢুকতে ও তথ্য না দিতে জনসাধারণকে অনুরোধ জানিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
অর্থনীতি
সুকুক বন্ড বরাদ্দের হার পুনর্নির্ধারণ

বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন শ্রেণির জন্য ইসলামিক বন্ড ‘সুকুক’ এর বরাদ্দ হার পুনর্নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি সুকুক বরাদ্দ সংক্রান্ত পূর্বে জারি করা দুটি পৃথক সার্কুলারও বাতিল করা হয়েছে।
সোমবার (৪ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেট ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট থেকে এ সংক্রান্ত একটি নতুন সার্কুলার জারি করা হয়।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, সুকুক বন্ডের বরাদ্দ নিম্নোক্ত হারে নির্ধারণ করা হয়েছে-
শরিয়াহ্ ভিত্তিক ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিমা কোম্পানি এবং কনভেনশনাল ব্যাংকের ইসলামিক শাখা/উইন্ডো: বরাদ্দের ৮০ শতাংশ।
কনভেনশনাল ব্যাংক, ফাইন্যান্স কোম্পানি ও বিমা কোম্পানি: বরাদ্দের ৫ শতাংশ।
ব্যক্তি বিনিয়োগকারী, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি ফান্ড, ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানি, ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড: বরাদ্দের ১৫ শতাংশ।
বরাদ্দ পদ্ধতি
সার্কুলারে আরও বলা হয়েছে, তিনটি শ্রেণির যে কোনো একটি যদি নির্ধারিত অনুপাতের বেশি পরিমাণে বিড দাখিল করে, তবে উক্ত শ্রেণির সব বিডদাতার মধ্যে সমানুপাতিক হারে বরাদ্দ দেওয়া হবে।
অন্যদিকে, কোনো শ্রেণিতে যদি নির্ধারিত অনুপাতে বিড না আসে, তবে সেখানে বরাদ্দের পর অবশিষ্ট সুকুক অন্য শ্রেণির অধিক বিডদাতাদের মধ্যে তাদের বিডের অনুপাতে বণ্টন করা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই পদক্ষেপের ফলে শরিয়াহ্-সম্মত বিনিয়োগ ব্যবস্থার কাঠামো আরও সুসংগঠিত ও স্বচ্ছ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অর্থনীতি
উদ্বোধনের দিনেই ১০ হাজারের বেশি ই-রিটার্ন জমা

চার শ্রেণির ব্যক্তি ছাড়া সবার জন্য অনলাইন রিটার্ন বাধ্যতামূলক করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই কার্যক্রম উদ্বোধনের প্রথম দিনেই ১০ হাজারের বেশি করদাতা রিটার্ন জমা দিয়েছেন।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সোমবার (৪ আগস্ট) অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের দিনেই অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিলে করদাতারা ব্যাপক সাড়া দিয়েছেন। ১০ হাজার ২০২ জন আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন।
এনবিআর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, গত বছর ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ অনলাইন রিটার্ন দাখিল শুরু হলে প্রথম দিনে ২ হাজার ৩৪৪ জন করদাতা অনলাইনে ই-রিটার্ন দাখিল করেছিলেন। সে হিসেবে এবারে ২০২৫-২৬ কর বছরের ই-রিটার্ন দাখিল শুরুর দিনে রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা প্রায় ৫ গুণ।
গত বছর ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের জন্য সীমিত পরিসরে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। তখন সাড়া দিয়ে প্রায় ১৭ লাখ করদাতা ই-রিটার্ন দাখিল করেন।
এর আগে, গত ৩ আগস্ট এনবিআর একটি বিশেষ আদেশ জারি করে জানায়, ২০২৫-২৬ কর বছর থেকে দেশে অবস্থানরত সব ব্যক্তি করদাতার জন্য অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক। তবে, ৬৫ বছরের বেশি বয়সী প্রবীণ করদাতা, শারীরিকভাবে অক্ষম বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন করদাতা, প্রবাসী করদাতা এবং মৃত করদাতার আইনগত প্রতিনিধিদের ক্ষেত্রে এই বাধ্যবাধকতা প্রযোজ্য নয়।
এছাড়া যেসব করদাতা ই-রিটার্ন সিস্টেমে নিবন্ধন করতে না পারার যৌক্তিক সমস্যায় পড়বেন, তারা ৩১ অক্টোবর ২০২৫ এর মধ্যে উপকর কমিশনার বরাবর আবেদন করলে অনুমোদনের ভিত্তিতে কাগজে (পেপার রিটার্ন) রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।
বর্তমানে করদাতারা ঘরে বসেই অনলাইনে কর পরিশোধ এবং রিটার্ন দাখিল করতে পারছেন। ব্যাংক ট্রান্সফার, ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড, বিকাশ, রকেট, নগদসহ বিভিন্ন মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ব্যবহার করে আয়কর পরিশোধ করা যাচ্ছে। রিটার্ন দাখিল শেষে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রাপ্তি স্বীকারপত্র এবং আয়কর সনদ সংগ্রহ করা যাচ্ছে।
এনবিআর জানিয়েছে, করদাতারা অনলাইন রিটার্ন দাখিলে কোনও সমস্যার সম্মুখীন হলে তাৎক্ষণিক সমাধানের জন্য কল সেন্টার ও অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
অর্থনীতি
রপ্তানি আয় ২৫ শতাংশ বেড়ে ৪.৭৭ বিলিয়ন ডলার

দেশের রপ্তানি আয় চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে প্রায় ২৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, জুলাই মাসে পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৪.৭৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা গত বছরের একই মাসে (অর্থবছর ২০২৪-২৫) ৩.৮২ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির তুলনায় ২৪.৯০ শতাংশ বেশি।
মোট ৪.৭৭ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের মধ্যে তৈরি পোশাক (আরএমজি) খাত থেকে আয় হয়েছে ৩.৯৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২৪.৬৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি।
তৈরি পোশাক খাতের মধ্যে নিটওয়্যার রপ্তানি ২৬.০১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২.১৭ বিলিয়ন ডলার। ওভেন পোশাক রপ্তানি ২৩.০৮ শতাংশ বেড়ে ১.৭৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে এবং হোম টেক্সটাইলস খাতে রপ্তানি আয় ১৩.২৪ শতাংশ বেড়ে ৬৮.০৮ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া, পাট ও পাটজাত পণ্যে রপ্তানি আয় ৪.৯২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৫.৪৪ মিলিয়ন ডলার এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ১২৭.৩৮ মিলিয়ন ডলার, যা ২৯.৬৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি।
কৃষিপণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৯০.৫০ মিলিয়ন ডলার, যা ১২.৮৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি।
হিমায়িত ও জ্যান্ত মাছ রপ্তানি ৪২.৭১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৪১.২০ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে, এর মধ্যে চিংড়ি রপ্তানি ৪৭.৩৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৩১.২৩ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যে রপ্তানি আয় ৭৪.৪৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৫৮.২৩ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে এবং প্লাস্টিক পণ্যে রপ্তানি আয় হয়েছে ২১.১৬ মিলিয়ন ডলার, যা ৭.৪১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি।
অর্থনীতি
ব্যাংকের পর্ষদ সভায় দ্বিমত–পর্যবেক্ষণ কার্যবিবরণীতে লিপিবদ্ধের নির্দেশ

ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় পরিচালকদের কারও আলোচ্যসূচি নিয়ে কোনো দ্বিমত বা পর্যবেক্ষণ থাকলে এখন থেকে তা কার্যবিবরণীতে উল্লেখ করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি যেসব ব্যাংকের পর্ষদে বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষক রয়েছেন, তাঁরা কোনো মতামত দিলে সেটিও কার্যবিবরণীতে উল্লেখ করতে বলা হয়েছে। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও পর্যবেক্ষকদের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এমন উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সোমবার (০৪ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংক এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে এ–সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও পরিচালনা পর্ষদের সহায়ক কমিটির সভায় উপস্থাপিত কোনো বিষয়ে কোনো সদস্য নোট অব ডিসেন্ট বা নিজস্ব মতামত দিলে তা কার্যবিবরণীতে উল্লেখের বিধান রয়েছে। কিন্তু ব্যাংকগুলো অনেক ক্ষেত্রে এ নির্দেশনা পালন করছে না। এ ছাড়া অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও সহায়ক কমিটির সভায় উপস্থাপিত কোনো বিষয়/এজেন্ডার ওপর ওই সভায় যে আলোচনা হয় এবং পরিচালকসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষক যেসব মতামত দেন, তা সভার কার্যবিবরণীতে যথাযথভাবে উল্লেখ করা হয় না। ফলে পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের পর্ষদ ও সহায়ক কমিটির সভায় কার্যকরভাবে অংশগ্রহণ ও অবদান রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। এ জন্য পরিচালনা পর্ষদের সদস্যের কার্যকর অংশগ্রহণ ও অবদান রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য নতুন নীতিমালা মেনে চলতে বলা হয়েছে।
এ নীতিমালায় বলা হয়েছে, পরিচালনা পর্ষদ ও সহায়ক কমিটির সভায় উপস্থাপিত কোনো বিষয়ের ওপর কোনো আলোচনা এবং কোনো পরিচালকের দ্বিমত, ভিন্ন মতামত বা পর্যবেক্ষণ থাকলে তা সভার কার্যবিবরণীতে অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সভায় আলোচিত পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও সহায়ক কমিটির সব পর্যবেক্ষণ বা সুপারিশও কার্যবিবরণীতে যথাযথভাবে লিপিবদ্ধ করতে হবে। এ ছাড়া কোনো ব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষক থাকলে এবং সভায় উপস্থাপিত কোনো বিষয়ের ওপর ওই পর্যবেক্ষক কোনো মতামত বা পর্যবেক্ষণ দিলে, তা–ও সভার কার্যবিবরণীতে যথাযথভাবে উল্লেখ করতে হবে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, গত এক দশকে ব্যাংকের যেসব ঋণে অনিয়ম হয়েছে, সেসব ঋণের বিষয়ে পর্ষদ সভার কার্যবিবরণীতে কারও কোনো দ্বিমত পাওয়া যায়নি। ফলে এখন পর্ষদের সবাই আইনের আওতায় আসছেন। এখন সময় এসেছে পর্ষদে কার কী ভূমিকা, তা সুস্পষ্ট করার। যাতে ভবিষ্যতে দোষী কেউ ধরাছোঁয়ার বাইরে না থাকেন। এতে সৎ পরিচালকেরা তাঁদের ভূমিকা পালনে উৎসাহিত হবেন।