জাতীয়
বজ্রপাতে তিন জেলায় ৪ জনের মৃত্যু
বেশ কয়েকদিন ধরে তাপপ্রবাহের পর দেশের বিভিন্ন স্থানে স্বস্তির বৃষ্টির দেখা মিলেছে। এতে জনজীবনে কিছুটা সময়ের জন্য প্রশান্তি নেমে এসেছে। কিন্তু এই বৃষ্টি সবার জন্য প্রশান্তি হয়ে আসেনি। বৃষ্টির সময় বজ্রপাতে তিন জেলায় অন্তত চার জনের মৃত্যু হয়েছে।
মাদারীপুরে বজ্রপাতে দুই জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার বিকেলে জেলার শিবচর উপজেলার বহেরাতলা উত্তর ইউনিয়নের সোতার পাড় এবং বাঁশকান্দি ইউনিয়নের শেখপুর এলাকায় দুর্ঘটনা দুটি ঘটে।
নিহতরা হলেন- সোতারপার এলাকার আকমল ঢালীর স্ত্রী শারমিন আক্তার (৩৫) এবং শেখপুর এলাকার জেলাউদ্দিন মুন্সীর ছেলে মো. রাশেদ মুন্সী (২৫)।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বিকেলের দিকে ঝড়োবাতাস ও বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হতে থাকে। এসময় বহেরাতলা উত্তর ইউনিয়নের সোতারপার এলাকার শারমিন আক্তার রান্নাঘর থেকে বসতঘরে যাওয়ার সময় উঠানোর বজ্রাঘাত ঘটনাস্থলেই মারা যান।
অন্যদিকে ফসলের ক্ষেতে কাজ করার সময় বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই বাঁশকান্দি ইউনিয়নের শেখপুর এলাকার মো. রাশেদ নামের ওই যুবকের মৃত্যু হয়।
শিবচর থানার অফিসার ইনচার্জ সুব্রত গোলদার বলেন, আমাদের কাছে এখনও খবর আসেনি। খোঁজ নিচ্ছি।
এছাড়া, ঢাকার ধামরাইয়ের সুতিপাড়া ইউনিয়নের কিশোরীনগর গ্রামে মাছ শিকার করতে গিয়ে বজ্রপাতে আবুল কাশেম নামে এক মৎস্যজীবি মারা গেছেন।
নিহতের স্বজন আল আমিন বাবু জানান, তার ফুপা আবুল কাশেম মঙ্গলবার বিকেলে বৃষ্টির সময় পাশের গ্রাম কিশোরীনগরে একটি পুকুরে মাছ ধরতে যান। এসময় বজ্রপাতে তিনি মারা যান। তবে নিহতের শরীরে তেমন কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। তার দাবি, বজ্রপাতের সময় হয়তো ভয়ে তিনি মারা যেতে পারেন। পরে স্থানীয়রা তার মরদেহ উদ্ধার করে বালিথা গ্রামে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন।
নরসিংদীর রায়পুরায় বজ্রপাতে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া বজ্রপাতে মনোহরদী ও বেলাবতে দুই জন আহত হয়েছেন। নিহতের নাম জাকির আলী (৪০)। মনোহরদী উপজেলার হাতিরদিয়া এলাকার আলীম উদ্দিনের ছেলে, পেশায় পিকআপ ভ্যানচালক ছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, বিকেলে ঝড়ো হাওয়ার সময় সড়কের পাশেই বসে ছিলেন জাকির আলী। এসময় বজ্রপাতে আহত হলে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বারৈচার একটি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে পাঠালে পথেই মারা যান তিনি।
এছাড়াও জেলার বেলাব এবং মনোহরদীতে বজ্রপাতে দুই জন আহতের হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তারা হলেন, বেলাব উপজেলার ধুকুন্দী এলাকার দুলাল মিয়ার স্ত্রী আকলিমা বেগম (৪০) এবং মনোহরদী উপজেলার আকানগরের কাওছার মিয়ার স্ত্রী ঝুমা আক্তার (২৬)।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
বেআইনিভাবে কোন প্রকল্প দেয়া হবে না: রেল উপদেষ্টা
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, আমাদের কোনো অসৎ উদ্দেশ্য নেই। তাই কাউকে বেআইনিভাবে প্রকল্পও দেওয়া হবে না।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে রেল ভবনে রিপোর্টার্স ফর রেল অ্যান্ড রোডের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
ফাওজুল কবির খান বলেন, কর্ণফুলী টানেল নিয়ে এখন নানা ধরনের প্রতিবেদন হচ্ছে। কিন্তু টানেল নিয়ে আর কিছুই করার নেই। কারণ, প্রকল্পটা হয়ে গেছে। ফলে সাংবাদিকদের অনুরোধ করব, আপনারা আগেই একটা প্রকল্পের ভালো-খারাপ, সুবিধা-অসুবিধা কোনো রাজনৈতিক বিবেচনায় কিছু হচ্ছে কি না, সেই বিষয়গুলো আগেই তুলে ধরবেন, তাহলে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হবে।
এ সময় রেলের রুট রেশনালাইজেশন নিয়েও কথা বলেন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, সবাই তার বাড়ির কাছে রেলস্টেশন চায়। সেটা হয়তো আমরা দিতে পারব না। তবে রেলের রুট রেশনালাইজেশনের কাজে হাত দিয়েছি। সেই জায়গায় আপনাদের সহযোগিতা চাই।
উপদেষ্টা আরও বলেন, ইতোমধ্যেই আমরা ই-টিকেটিং ব্যবস্থার পরিবর্তন এনেছি। আপনারা হয়তো সেটা দেখতে পাচ্ছেন।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
নভেম্বরেই আদানির ১৭ কোটি ডলার দিবে সরকার
ভারতীয় কোম্পানি আদানি পাওয়ার ঝাড়খন্ড লিমিটেডের (এপিজেএল) বকেয়া ১৭ কোটি ডলার চলতি মাসেই পরিশোধ করবে সরকার। আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে বকেয়া পরিশোধের ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধের পর সরকারের পক্ষ থেকে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
সোমবার (০৪ নভেম্বর) দুজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেতনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আদানি গ্রুপের ভারতের ঝাড়খন্ডের গড্ডা প্লান্ট থেকে এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে। প্রতিষ্ঠানটি এ কেন্দ্রটি বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্যই নির্মাণ করেছে।
সরকারের দুজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, আদানির বকেয়া আংশিক পরিশোধের ব্যাপারে তারা ইতোমধ্যেই প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমার ইতোমধ্যে আদানি গ্রুপকে ১৭ কোটি ডলারের ক্রেডিট চেক ইস্যু করেছি।’
এর আগে বকেয়া ৮০ কোটি ডলার পরিশোধ না করা হলে আগামী ৭ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেয় আদানি গ্রুপ। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার আলটিমেটাম প্রসঙ্গে বিবিসির পক্ষ থেকে আদানি গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো জবাব দেয়নি।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি না যে এটি এমন পর্যায়ে যাবে, যেখানে আদানি সম্পূর্ণ সরবরাহ বন্ধ করে দেবে। বাংলাদেশ পর্যায়ক্রমে এই পাওনা নিয়মিতভাবে পরিশোধ করবে।’ পাশাপাশি এই সংকট খুব দ্রুত সমাধান হওয়ারও প্রত্যাশা করেন তারা।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
২০৪০ সালের মধ্যে সিসামুক্ত বাংলাদেশের লক্ষ্য: সৈয়দা রিজওয়ানা
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ইউনিসেফসহ বিভিন্ন অংশীদারদের সহায়তায় ২০৪০ সালের মধ্যে শিশুদের সিসা দূষণমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সিসা এবং ভারী ধাতু দূষণ নীরব সংকট। ফলে সিসা দূষণ সংকট মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ নিতে হবে।
মঙ্গলবার (০৫ নভেম্বর) ঢাকার বিআইসিসিতে অনুষ্ঠিত ‘সিসামুক্ত বাংলাদেশ: আমরা কীভাবে পৌঁছাব?’ শীর্ষক জাতীয় কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকার সব অংশীজনের সহযোগিতায় ২০৪০ সালের মধ্যে সিসামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করেছে। সিসা দূষণের উৎস শনাক্ত ও নিয়ন্ত্রণে একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার ওপরও তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
পরিসংখ্যানের গুরুত্ব উল্লেখ করে উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সিসা দূষণের জাতীয় পর্যায়ের তথ্যসমূহ কার্যকর নীতিমালা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ। ইউনিসেফ এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সহযোগিতার প্রশংসা করেন এবং দূষণ প্রতিরোধে সমন্বিত, তথ্যভিত্তিক উদ্যোগের আহ্বান জানান।
আন্তর্জাতিক সিসা দূষণ প্রতিরোধ সপ্তাহ উপলক্ষে মন্ত্রণালয় এবং ইউনিসেফের উদ্যোগে আয়োজিত এ কর্মশালার উদ্দেশ্য ছিল ভারী ধাতু দূষণের স্বাস্থ্যগত প্রভাব, বিশেষত শিশুদের ওপর এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং এই সংকট মোকাবিলায় সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারদের একত্রিত করা।
কর্মশালায় উপস্থাপিত বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশের শিশুদের রক্তে উদ্বেগজনক মাত্রায় সিসা রয়েছে এবং এর ঝুঁকি বায়ু, পানি, মাটি, খাদ্য এবং রং ও রান্নার পাত্রের মতো ভোক্তা সামগ্রী থেকে হতে পারে। দ্রুত নগরায়ণ ও শিল্পায়নের ফলে ভারী ধাতুর দূষণ বেড়েছে, যা শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।
সম্প্রতি ইউনিসেফের সহযোগিতায় আইইডিসিআর ও আইসিডিডিআরবি পরিচালিত এক গবেষণায় ঢাকা, খুলনা ও সিলেটসহ বিভিন্ন জেলায় শিশুদের রক্তে সিসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এই সংকটকে সামনে রেখে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, ইউনিসেফ ও ইউএসএআইডির সহযোগিতায় আসন্ন এমআইসিএস ২০২৪-২০২৫ জরিপে রক্তের সিসার মাত্রা অন্তর্ভুক্ত করেছে, যা নীতি প্রণয়নে সহায়ক তথ্য দেবে।
ইউনিসেফ একটি শক্তিশালী বহু-খাতভিত্তিক কর্মপরিকল্পনার আহ্বান জানিয়ে গবেষণাগারে ভারী ধাতুর পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা বৃদ্ধির কথা বলেছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
মোংলা হবে বিশ্বমানের স্মার্ট সমুদ্রবন্দর: নৌপরিবহণ উপদেষ্টা
মোংলা বন্দরকে বিশ্বমানের নিরাপদ আধুনিক ও স্মার্ট সমুদ্রবন্দরে পরিণত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড এম সাখাওয়াত হোসেন। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে খুলনায় মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে এ কথা জানান।
মোংলা বন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নত করা হবে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, মোংলা বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর। ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় এ সমুদ্র বন্দরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের অর্থনীতিতেও বন্দরটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। রাজধানী ঢাকা থেকে বন্দরটির সড়ক পথে দূরত্ব মাত্র ২১০ কিলোমিটার। এছাড়াও বন্দরটির সাথে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য প্রান্তের রেল ও নৌযোগাযোগ রয়েছে। সুতরাং এ বন্দরটিকে পিছিয়ে রাখার কোনো সুযোগ নেই। মোংলা বন্দরকে আরও আধুনিক ও বিশ্বমানের করে গড়ে তোলার জন্য বেশ কিছু প্রকল্প চলমান রয়েছে ও কিছু প্রকল্প ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য হাতে নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, চলমান প্রকল্পগুলো যথা নিরাপদ চ্যানেল বিনির্মাণ, সমুদ্রগামী জাহাজ সুষ্ঠুভাবে হ্যান্ডলিং এবং দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় জরুরি উদ্ধারকাজ পরিচালনার জন্য ‘মোংলা বন্দরের জন্য সহায়ক জলযান সংগ্রহ’, ‘মোংলা বন্দরে আধুনিক বর্জ্য ও নিসৃত তেল অপসারণ ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রকল্প, ‘আপগ্রেডেশন অব মোংলা পোর্ট’ শীর্ষক প্রকল্প, ‘পশুর চ্যানেলের ইনার বারে ড্রেজিং” শীর্ষক প্রকল্প, ‘মোংলা বন্দরের ২টি অসম্পূর্ণ জেটি নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে। অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন প্রকল্পসমূহ হচ্ছে-মোংলা বন্দরের সুবিধাদির সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন’ প্রকল্প,মোংলা বন্দর চ্যানেলে ৫ বছর মেয়াদি সংরক্ষণ ড্রেজিং প্রকল্প, পশুর চ্যানেলে নদীশাসন এবং মোংলা বন্দরের আরো সম্প্রসারণের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রকল্প।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এ সকল প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে মোংলা বন্দরের বার্ষিক সক্ষমতা বাড়বে। চ্যানেলে ৮.৫ সিডি গভীরতা অর্জিত হবে। এতে ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ মোংলা বন্দরে হ্যান্ডেল করা সম্ভব হবে। মোংলা বন্দরে বার্ষিক প্রায় ৮ লাখ টিইউজ কন্টেইনার, ৪ কোটি মেট্রিক টন কার্গো এবং ৩০ হাজার গাড়ি হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা বাড়বে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
সাড়ে তিন কোটি শিশুর রক্তে বিপজ্জনক মাত্রায় সিসা: ইউনিসেফ
সিসা দূষণে ক্ষতিগ্রস্ত শিশুর সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে চতুর্থ। বিপজ্জনক মাত্রায় দেশে সাড়ে ৩ কোটির বেশি শিশুর রক্তে সিসা রয়েছে বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) শিশুদের সিসা দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে ‘আন্তর্জাতিক সিসা দূষণ প্রতিরোধ সপ্তাহ’ উপলক্ষে এক কর্মশালা হয়।
ইউনিসেফের সঙ্গে যৌথভাবে এ আয়োজন করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। সিসাসহ শিশুদের ক্ষতি করে এমন ভারী ধাতুর উৎস সম্পর্কে ধারণা বাড়ানো এবং সিসার দূষণ কমানোর লক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি খাতের অংশীজনদের সম্পৃক্ত করতে এই কর্মশালা আয়োজন করা হয়।
কর্মশালায় পূর্ববর্তী গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্য প্রমাণ ও ফলাফল তুলে ধরা হয়। যেখানে শিশুদের রক্তে উদ্বেগজনক মাত্রায় সিসার উপস্থিতি, সিসার উৎস ও দূষণের উপায়গুলো দেখানো হয়। সিসা দূষণের বাস্তবতা বুঝতে হলে সারা দেশে এর উপস্থিতি (রক্তে সিসার মাত্রা) সম্পর্কিত উপাত্ত জানা জরুরি। এসব বিষয় জানা থাকলে বাংলাদেশ সরকার, ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের সংগঠনগুলো একসঙ্গে সিসা দূষণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারবে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘সিসা ও ভারী ধাতুর দূষণ একটি নীরব ঘাতক, যা মোকাবিলায় প্রয়োজন জরুরি ও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ। সবার জন্য একটি সিসামুক্ত ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে এবং ২০৪০ সালের মধ্যে সিসা দূষণ রোধ করতে অন্তর্বর্তী সরকার সব অংশীজনের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমি সব অংশীজনকে এই কর্মশালায় সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানাই। বাংলাদেশে বিষাক্ত ধাতুর সংস্পর্শে আসার প্রধান উৎসগুলো চিহ্নিত করতে আমরা একত্রে একটি বিস্তৃত ও কার্যকরী কর্ম পরিকল্পনা গড়ে তুলতে পারবো।’
সিসা দূষণ একটি জরুরি পরিবেশগত স্বাস্থ্য সংকট, বিশেষ করে বাংলাদেশে। দ্রুত নগরায়ণ ও শিল্পায়ন পরিবেশে ভারী ধাতুর দূষণ বাড়িয়েছে। যার ফলে শিশুদের বাতাস, পানি, মাটি, খাবার, খেলনা, রং ও রান্নার সামগ্রীর মাধ্যমে বিষাক্ত পদার্থের সংস্পর্শে আসার ঝুঁকি বেড়েছে। সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কমিউনিটির নারী ও শিশুদের মধ্যে সিসা দূষণের প্রভাব ব্যাপক। এটি ছোট শিশুদের জন্য বেশি ক্ষতিকর, যা স্থায়ীভাবে তাদের স্নায়বিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণ হচ্ছে।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ারস বলেন, ‘সাধারণত ভারী ধাতু বিশেষ করে সিসা প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের ওপর বেশি গুরুতর প্রভাব ফেলে। এই ক্ষতি চিরস্থায়ী ও অপরিবর্তনীয়। দুর্ভাগ্যবশত, শিশুদের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের বিকাশের সময়সীমা কমে যায় এবং প্রায় সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বয়স্কদের ক্ষেত্রে হৃদরোগ (কার্ডিওভাসকুলার) দেখা দেয়, গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে তাদের অনাগত শিশুরা হয় ক্ষতিগ্রস্ত। তবে সুস্পষ্ট আইন এবং বিশেষ করে বেসরকারি খাতের সঠিক ও কার্যকরী পদক্ষেপে এই দূষণ প্রতিরোধযোগ্য। এভাবে এই দূষণের ফলে ভুক্তভোগী নারী ও শিশুদের যে অতিরিক্ত খরচ ও ভোগান্তি হয়ে থাকে, পাশাপাশি সামগ্রিক স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে যে বাড়তি খরচ হয়ে থাকে, সেটাও অনেকাংশে কমিয়ে ফেলা সম্ভব। ইউনিসেফ অংশীদারদের সঙ্গে একত্রে মিলে অন্তর্বর্তী সরকারকে একটি স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ বাংলাদেশ গড়তে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যেখানে প্রতিটি শিশু সিসা ও বিষাক্ত ধাতুমুক্ত পরিবেশে বেড়ে উঠতে, খেলতে ও শিখতে পারবে।’
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এবং আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর, বি)র সঙ্গে মিলে ইউনিসেফ খুলনা, টাঙ্গাইল, পটুয়াখালী ও সিলেট জেলায় ৯৮০ এবং ঢাকায় ৫০০ শিশুকে পরীক্ষা করে সবার রক্তে সিসার উপস্থিতি শনাক্ত করে। এসব নমুনার মধ্যে চার জেলায় ৪০ শতাংশ এবং ঢাকায় ৮০ শতাংশ নমুনায় প্রতি ডেসিলিটার রক্তে ৫ মাইক্রোগ্রামের বেশি সিসা পাওয়া যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত ন্যূনতম মাত্রার চেয়ে যা বেশি। অবশ্য শিশুদের রক্তে কোনো মাত্রায় সিসার উপস্থিতিই নিরাপদ নয়। তাই এই অংশীদারিত্বের (পার্টনারশিপ) মাধ্যমে সিসা শনাক্তকরণ ও সিসার সংস্পর্শে আসার উৎস ও উপায়গুলো রোধ করার ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হবে।
২০২৪ সালের জুনে ইউএসএআইডির আর্থিক সহায়তায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও ইউনিসেফ ‘মাল্টি পলইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে (এমআইসিএস): রাউন্ড ৭ (২০২৪-২০২৫)’ শুরুর কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে। যেখানে প্রথমবারের মতো রক্তে সিসাও অন্যান্য বিষাক্ত ধাতুর মাত্রা সম্পর্কে উপাত্ত সংগ্রহের মডেল অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বড় পরিসরে এই নির্ভরযোগ্য ও জাতীয় পর্যায়ের উপাত্ত, নীতিমালা সংস্কারে জোরালো তথ্য প্রমাণ জোগান দেবে। বাংলাদেশে সিসামুক্ত ভবিষ্যতের জন্য শক্তিশালী আইন ও পদক্ষেপ গ্রহণেও সহায়ক হবে, যেখানে সব পণ্য হবে সিসামুক্ত এবং থাকবে নিরাপদ শিল্পায়ন ব্যবস্থা।
শিশুদের সিসার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচানোর ও সিসামুক্ত পৃথিবী গড়ার লক্ষ্য নিয়ে চালু হওয়া বৈশ্বিক উদ্যোগ ‘পার্টনারশিপ ফর এ লেড-ফ্রি ফিউচার (পিএলএফ)’ এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ২০৪০ সালের মধ্যে সিসা দূষণ রোধের মাধ্যমে শিশুদের ওপর সিসার বিষক্রিয়া নির্মূল করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। পিএলএফের অংশীদার হিসেবে ইউনিসেফের সহায়তায় বাংলাদেশ সিসার সংস্পর্শে আসার উৎসসমূহ চিহ্নিত ও সিসা দূষণ প্রতিরোধ করতে প্রতিশ্রুতির কথা জানান দিয়েছে। পাশাপাশি সুশীল সমাজের সংস্থা ও বেসরকারি খাতের দক্ষতা, সম্পদ ও সহযোগিতা কাজে লাগানোর সুযোগ পাচ্ছে।
ইউনিসেফ সিসা দূষণ মোকাবিলায় ব্যবস্থা নিতে এবং ভারী ধাতুর উপস্থিতি পরীক্ষা করার আহ্বান জানায়। স্বাস্থ্য ও পরিবেশ খাতের পরীক্ষাগারের সক্ষমতা জোরদার করতে একটি বহুখাতীয় কর্মপরিকল্পনার জন্য সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ের প্রতি কর্মশালায় আহ্বান জানানো হয়।
একই সঙ্গে সিসা দূষণের কারণগুলো চিহ্নিত করতে সহায়তা, এর উৎস ও সংস্পর্শে আসার পথগুলো শনাক্ত করতে আহ্বান জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে অংশীজনদের দক্ষতা কাজে লাগানোরও আহ্বান জানিয়েছে ইউনিসেফ।
কাফি