পুঁজিবাজার
টেকসই পুঁজিবাজার গঠনে সঠিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ জরুরী: ডিএসই এমডি

পুঁজিবাজারের উন্নয়নে একটি দক্ষ ও টেকসই বাজার গঠনে সঠিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা খুবই জরুরী বলে জানিয়েছেন করেছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ড. এটিএম তারিকুজ্জামান।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত টেক্সটাইল সেক্টরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান আথিক কর্মকর্তা ও কোম্পানি সচিবদের অংশগ্রহণে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃক আয়োজিত ডিএসই মাল্টিপারপাস হলে ‘ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং এবং ডিসক্লোজারস: রেগুলেটরি রিকুয়ারমেন্টস’ শীর্ষক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আজকে যে বিষয় নিয়ে সেমিনারটিতে আলোচনা করা হয়েছে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পুঁজিবাজারের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান এবং বিনিয়োগকারীদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে এ আয়োজন অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে। একটি কোম্পানির আর্থিক অবস্থা তার আর্থিক প্রতিবেদনে জানা যায়। একটি সঠিক আর্থিক প্রতিবেদন কোম্পানির অবস্থা সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারে। কারণ আর্থিক প্রতিবেদনের মধ্যে কমপ্লায়েন্স, গভর্নেন্স, আর্থিক অবস্থার সঠিকতা সহ নিয়ন্ত্রক সংস্থার নজরদারির এবং বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অনেক কিছুই থাকে। আর্থিক প্রতিবেদন শুধু বিনিয়োগকারি নয়, ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ, অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠানের জন্যও প্রয়োজন। এছাড়াও সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের জন্যও সঠিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রয়োজন। একটি দক্ষ পুঁজিবাজারের অন্যতম শর্ত হলো তথ্যসমূহ পরিপূর্ণভাবে সময়মত প্রকাশ করা। দক্ষ পুঁজিবাজার করতে হলে আমাদের আর্থিক প্রতিবেদনের স্বচ্ছতা ও সময়মতো প্রদান নিশ্চিত করতে হবে। তাই পুঁজিবাজারের উন্নয়নে একটি দক্ষ ও টেকসই বাজার গঠনে সঠিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা খুবই জরুরী। এজন্য ডিএসই ধাপে ধাপে সকল তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য এ ধরণের প্রোগ্রামের আয়োজন করবে।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএসইসির কমিশনার মো. আব্দুল হালিম। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ডিএসইর পরিচালক মো. আফজাল হোসেন।
এসময় বিএসইসির কমিশনার মো. আব্দুল হালিম বলেন, তালিকাভুক্তির পর দেখা যায় অনেক কোম্পানির আর্থিক অবস্থা ক্রমেই খারাপ হতে থাকে। তাহলে কোম্পানিটি যখন আইপিও’র কাগজপত্র জমা দিয়েছে সেগুলো অতিরঞ্জিত করে তৈরি করা হয়েছে। আমরা যারা এই কাজ করি, তারা বিবেকের কাছে প্রশ্ন করি। এ দেশের নাগরিক হিসেবে, দেশের মানুষদের ঠকানোর জন্য এ কাজ করতে পারি না। আমরা সঠিক তথ্য দিব। সেটা আমাদের দায়িত্ব।
আর্থিক প্রতিবেদনের অস্বচ্ছতা নিয়ে তিনি আরও বলেন, আমরা আপনাদের কে ভয়-ভীতি দেখাই, হেয়ারিংয়ে এ নিয়ে আসি এবং জরিমানা করি। যাতে আপনারা ঠিক হন। কিন্তু এরপরও আমরা দেখেছি অনেকের বোর্ডে সমস্যা রয়েছে, ঠিক মত আর্থিক তথ্য প্রকাশ করে না। অন্যান্য কাজ ঠিকমত করে না। আবার সেগুলো নিয়ে জালিয়াতি করে। এগুলো সাধারণ নিয়মিত কাজ। কোনো সমস্যা থাকলে আমাদের কাছে আসেন। আমরা সমাধান দেয়ার চেষ্টা করবো। বিভিন্ন বিধিবিধান সম্পর্কে অধ্যয়ন না করার কারণে অনেকে বিষয়গুলো সঠিকভাবে পরিপালন করতে পারছেন না। কিন্তু আমরা যারা কোম্পানির সচিব রয়েছি এবং সিএফও রয়েছি তাদের উচিত বিধি-বিধানগুলো সঠিকভাবে পড়া এবং সেগুলো যথাযথ পালন করা। যদি কোথাও সমস্যা মনে হয় তাহলে আপনারা ডিএসইর মাধ্যমে জানাবেন বা কমিশনের জানালে আমরা অবশ্যই সেটার ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডিএসইর পরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, ফিনান্সিয়াল রিপোর্ট এবং ডিসক্লোজ সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হচ্ছে মালিক, বিনিয়োগকারী এবং ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের জন্য। কারণ এটার সাথে বড় একটি অংশ শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ জড়িয়ে আছে। ফিনান্সিয়াল রিপোর্ট হচ্ছে মূলত চার্টার্ড একাউন্টদের যেটা নিরীক্ষক প্রতিবেদন থাকে এবং সেটার সঙ্গে কিছু সংযুক্ত তথ্য থাকে। এটার সঙ্গে বিস্তারিত তথ্য সহ একটি ফুল ডিসক্লোজ থাকবে। যেটার মাধ্যমে একেবারে সাধারণ যে মানুষও আর্থিক প্রতিবেদনটা বুঝতে পারবে সেভাবে প্রকাশ করতে হবে। এটা হচ্ছে ফিনাসিয়াল রিপোর্টিং এর মূল কথা। তবে স্টক এক্সচেঞ্জের ক্ষেত্রে এটা আরো বিস্তারিত প্রকাশ করতে হয়। সেক্ষেত্রে ফুল ডিসক্লোজার থেকেও আরও বেশি তথ্য এবং এনালাইসিস সহকারে প্রকাশ করতে হয়। সেই সঙ্গে প্রাইস সেনসিটিভ ইনফরমেশনগুলো ডিসক্লোজারের একটি অংশ। তাই আর্থিক প্রতিবেদনগুলো সঠিক এবং বিস্তারিত তথ্য দিয়ে প্রকাশ করা দরকার।
তিনি আরো বলেন, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য মূলত আর্থিক প্রতিবেদনে স্বচ্ছতা প্রয়োজন। আর এজন্য দুটি পক্ষের দায়িত্ব পালন করতে হবে। একটি হলো ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ও আরেকটি হলো চাটার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট। পুঁজিবাজারের উন্নয়নের জন্য আমাদের আর্থিক প্রতিবেদনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। আর ভবিষ্যতে আমাদের এই ধরনের সেমিনার আরও বড় পরিসরে আয়োজন করা প্র্রয়োজন। এছাড়াও অতীতের সমস্যা কাটিয়ে একটি টেকসই পুঁজিবাজার গড়ে তুলতে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সকলের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
বিএসইসির প্রধান হিসাবরক্ষক এবং নির্বাহী পরিচালক কামরুল আনাম খান বলেন, আজকে যে সেমিনারটি আয়োজন করা হয়েছে তা অত্যন্ত সময়োপযোগী। আজকের অনুষ্ঠানে যারা উপস্থিত আছেন তারা স্ব স্ব কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করেন। মূল প্রবন্ধে আর্থিক প্রতিবেদনে যে ৩৮টি ভুলের কথা বলা হয়েছে ভবিষ্যতে আপনারা এ বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে লক্ষ্য রাখবেন। সময়মতো আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ না করলে শুধু জরিমানাই হয় না, একইসাথে বিনিয়োগকারীগণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়াও পুঁজিবাজারে কোম্পানিটি সম্পর্কে বিরূপ ধারণা হয়। তাই কোম্পানির সুনাম অক্ষুন্ন রাখার জন্য সকল আইনকানুন সঠিকভাবে পালন করতে হবে। আর এক্ষেত্রে রেগুলেটরের কাছ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে ডিএসইর প্রধান রেগুলেটরী কর্মকর্তা খায়রুল বাসার আবু তাহের মোহাম্মদ বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে টেক্সটাইল সেক্টরের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো শুধুমাত্র তাদের শেয়ারহোল্ডারদের জন্যই নয়, তাদের কর্মচারী, গ্রাহক এবং বৃহত্তর সমাজের জন্যও একটি অনন্য দায়িত্ব বহন করে আসছে। আর্থিক প্রতিবেদনে স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসের ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে৷ প্রয়োজনীয় আইন মেনে চলার মাধ্যমে এই কোম্পানিগুলো জবাবদিহিতা এবং নৈতিকতা নীতিগুলোকে মেনে স্টেকহোল্ডারদের জন্য একটি সমতা নিশ্চিত করে৷ আজকের আলোচনায় আর্থিক প্রতিবেদনের প্রয়োজনীয়তা, সর্বোত্তম অনুশীলন এবং চ্যালেঞ্জগুলো ওঠে আসবে বলে আমি মনে করি।
সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিএসইর কর্পোরেট গভর্ন্যান্স এবং ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং কমপ্লায়েন্স ডিপার্টমেন্টের সহকারী মহাব্যবস্থাপক ও প্রধান মো. মাসুদ খান। মূল প্রবন্ধে তিনি আর্থিক প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য, আর্থিক বিবরণী জমা দেওয়ার নিয়ম, প্রবিধান, বিজ্ঞপ্তি এবং সময়সীমা, আর্থিক বিবৃতিগুলির প্রধান অসঙ্গতি ও নন কমপ্লায়েন্স এবং প্রশমনের উপায় নিয়ে আলোকপাত করেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পুঁজিবাজার
রবির লভ্যাংশ ঘোষণা

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত টেলিকম খাতের কোম্পানি রবি আজিয়াটা গত ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটি আলোচিত বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেবে। যার পুরোটাই নগদ লভ্যাংশ। গত বছর কোম্পানিটি ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সর্বশেষ হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর লভ্যাংশ সংক্রান্ত এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
আজ পর্ষদ সভা শেষে রবির পক্ষ থেকে আয়োজিত এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে লভ্যাংশসহ গত বছরের আর্থিক প্রতিবেদনের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হয়।
সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে রবির মুনাফা দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। গত বছর শেষে রবি আজিয়াটার মুনাফা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭০২ কোটি টাকায়। ২০২৩ সালে কোম্পানিটির মুনাফা ছিল ৩২০ কোটি টাকা।
সর্বশেষ বছরে রবির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৩৪ পয়সা, যা আগের বছর ৬১ পয়সা ছিল। বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির ইপিএস বেড়েছে ১১৯ শতাংশ।
আলোচ্য বছরে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ছিল ৮ টাকা ৮৩ পয়সা, যা আগের বছর ৭ টাকা ৭৯ পয়সা ছিল।
আগামী ২১ এপ্রিল রবির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ মার্চ।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
বিএসসির আয় বেড়েছে

পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের (বিএসসি) পরিচালনা পর্ষদ দ্বিতীয় প্রান্তিকের (অক্টোবর’২৪-ডিসেম্বর’২৪) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) বেড়েছে।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সর্বশেষ হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর লভ্যাংশ সংক্রান্ত এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর’২৪-ডিসেম্বর’২৪) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩ টাকা ৫২ পয়সা। গত অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ৩ টাকা ২৯ পয়সা।
অপরদিকে, ৬ মাসে (জুলাই’২৪-ডিসেম্বর’২৪) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৯ টাকা ৩৫ পয়সা । গত অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ৬ টাকা ৫৯ পয়সা।
৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ শেষে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ (এনএভি) হয়েছে ২০ টাকা ১০ পয়সা।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
ফের আইন লঙ্ঘন, প্রতারণার শিকার কৃষিবিদ ফিডের বিনিয়োগকারীরা

পুঁজিবাজারে এসএমই খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি কৃষিবিদ ফিড লিমিটেড যেন আইনের তোয়াক্কাই করছে না। একের পর এক আইন লঙ্ঘন করেই যাচ্ছে এসএমই খাতে তালিকাভুক্ত এই কোম্পানিটি। গত বছরের (২০২৩) ঘোষণাকৃত লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীদের এখনো পরিশোধ করেনি। ফান্ড সংকটের কারণে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশের অর্থ কোম্পানিটি অন্য খাতে ব্যবহার করেছে, যেটি সম্পূর্ণ আইন লঙ্ঘন। এরই মধ্যে আবারও আইন লঙ্ঘন করে বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে কোম্পানিটি। গত বছরের লভ্যাংশের অর্থ পরিশোধ না করে আবারও নতুন করে লভ্যাংশ ঘোষণাকে প্রতারণা বলছেন বিনিয়োগকারীরা। এর আগেও কোম্পানিটির বিরুদ্ধে একাধিকবার সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। ডিএসই ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, গত ৩০ জুন,২০২৪ সমাপ্ত হিসাববছরের শেয়ারহোল্ডারদের শুধুমাত্র ৫ শতাংশ বোনাস (স্টক ডিভিডেন্ড) লভ্যাংশ ঘোষণা এসএমই বোর্ডের কোম্পানিটি। তবে এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সমাপ্ত বছরের জন্য ঘোষিত ১০ শতাংশ নগদ ও ২ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ একবছরেও বিনিয়োগকারীদের পরিশোধ করতে পারেনি কোম্পানিটি। গত বছরের লভ্যাংশের অর্থ বিনিয়োগকারীদের পরিশোধ না করে কোম্পানিটি অন্য খাতে খরচ করে। একবছরেও লভ্যাংশ পরিশোধ না করে নতুন করে লভ্যাংশ ঘোষণাকে প্রতারণা বলছেন বিনিয়োগকারীসহ বাজার সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র জানায়, গত ৩০ জুন,২০২৩ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের কৃষিবিদ ফিডের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১২ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করে কোম্পানিটি। যার রেকর্ড ডেট ছিলো ২০২৪ সালের ০৩ মার্চ। আর এজিএম ছিলো ২০২৪ সালের ২৮ মার্চ। এজিএমে শেয়ারহোল্ডারদের দিয়ে এ লভ্যাংশ অনুমোদনও করিয়ে নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। অথচ লভ্যাংশের সেই অর্থ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধই করেনি। লভ্যাংশ ঘোষণা করে তা না দেওয়াকে মহাপ্রতারণা বলছেন বিনিয়োগকারীরা। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিনেন্স অনুযায়ী, কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের ঘোষণা করা লভ্যাংশ বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) শেয়ারহোল্ডদের অনুমোদনের ৩০দিনের মধ্যে বিতরণ সম্পন্ন করতে হবে।
তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর লভ্যাংশ বিতরণ সংক্রান্ত বিষয়ে ২০২১ সালের ১৪ জানুয়ারি বিএসইসির জারি করা আদেশে বলা হয়, অনুমোদনের ৩০ দিনের মধ্যেই বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে লভ্যাংশ জমা করতেই হবে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন নির্দেশনা থাকলেও ঘোষিত লভ্যাংশ অনুমোদনের একবছর হতে গেলেও সেই লভ্যাংশের অর্থ এখনো বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে পাঠায়নি এসএমই খাতে তালিকাভুক্ত এই প্রতিষ্ঠানটি। কোম্পানিটির লভ্যাংশের অর্থ পাঠানোর শেষ সময় ছিল ২০২৪ সালের ২৮ এপ্রিল।
এবিষয়ে জানতে চাইলে কৃষিবিদ ফিড লিমিটেড কোম্পানি সচিব মো. মামুন আহমেদ অর্থসংবাদকে বলেন, ২০২৩ সালের জন্য ১২ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছিলো। যার ৭৫ শতাংশ বিনিয়োগকারীদের পরিশোধ করা হয়েছে। বাকি ২৫ শতাংশ এখনো পরিশোধ করা হয়নি। তবে লভ্যাংশের অর্থ কেনো পরিশোধ করা হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ফান্ড সংকটের কারণে কোম্পানি টিকিয়ে রাখতে ডলার সংকটের কারণে লভ্যাংশের কিছু অর্থ অন্যখাতে ব্যবহার করা হয়েছে। যেকারনে লভ্যাংশের অর্থ বিনিয়োগকারীদের পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। তবে শিগগরই তা পরিশোধ করার চেষ্টা চলছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম অর্থসংবাদকে বলেন, এবিষয়ে এখনি কিছু বলতে পারছি না। ভালোভাবে জেনে-বুঝে জানাতে পারবো।
বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছে না। তারা শুধুমাত্র দায়সারা সতর্ক করেই ক্ষান্ত দিচ্ছে, ফলে কৃষিবিদ ফিড লিমিটেডের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যদি বিএসইসি এবং ডিএসই বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করে ঘোষিত লভ্যাংশ এজিএম সম্পন্ন করার ৩০ দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নিত, তাহলে বিগত একবছর এই কৃষিবিদ ফিড লিমিটেড বিনিয়োগকারীদের প্রাপ্য অংশটুকু দিতে তালবাহানা করার সুযোগ পেত না। কৃষিবিদ ফিড লিমিটেড ২০২৩ সালের ঘোষিত লভ্যাংশের জন্য গতবছরের ২৮ মার্চ এজিএম সম্পন্ন করেছে, নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যেই বিনিয়োগকারীদের প্রাপ্য অংশটুকু তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অথবা বিও একাউন্টে পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কোম্পানির পক্ষ থেকে এই নিয়মের কোন ধার ধারেনি।
অনেক বিনিয়োগকারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এইভাবে কোন দেশের শেয়ার বাজার চলতে পারে না, নিয়ন্ত্রক সংস্থা যদি বিনিয়োগকারী স্বার্থ রক্ষা করতে না পারে তাহলে এই বাজারে নতুন বিনিয়োগকারী আসবেনা। বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে এসএমই বোর্ডের তালিকার শেয়ার গুলোর বিষয়ে বারবার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বরাবর চিঠি দিয়েও কোন সুরাহা করা যায়নি। বিনিয়োগকারীদের দাবি, যেহেতু এসএমই বোর্ডের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ উদাসীন সেহেতু এই এসএমই বোর্ড বিলুপ্ত করে এই বোর্ডের সকল শেয়ারকে মূল মার্কেটে স্থানান্তর করে সঠিক মনিটরিংয়ের আওতায় আনা উচিত।
কোম্পানির কিছু কর্মকর্তারা জানান, চেয়ারম্যান ড. আফজালের নির্দেশ ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। তার সিদ্ধান্তের অপেক্ষাতেই ডিভিডেন্ট পরিশোধ আটকে আছে। তবে বিনিয়োগকারীরা মনে করেন, চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক পরিবর্তন না হলে ভবিষ্যতে আরও ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।
এর আগেও আইন বহির্ভূতভাবে কৃষিবিদ ফিডের উদ্যোক্তা পরিচালক জিন্নাত আরা শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দেয়। যা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইনের বিধি ৪ এর ২ উপবিধির লঙ্ঘন হয়। ওই আইনে বলা হয়েছে, কোন কোম্পানির বার্ষিক হিসাব সমাপ্ত হওয়ার দুই মাস পূর্ব থেকে পরিচালনা পর্ষদ কতৃক উক্ত হিসাব বিবেচিত, গৃহীত বা অনুমোদিত হওয়ার সময়কাল পর্যন্ত কোন পরিচালক, স্পন্সর কেউ শেয়ার বিক্রি করতে পারবে না। যেহেতু কৃষিবিদ ফিড জুন ক্লোজিং বা হিসাববছর সমাপ্ত হয় জুন মাসে (জুলাই-জুন)।
এছাড়াও, গত ৩০ জুন,২০২৩ সমাপ্ত হিসাববছরের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য বোনাস ও নগদ মিলিয়ে ১২ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করে তালিকাভুক্ত কোম্পানি কৃষিবিদ ফিড লিমিটেড। যা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিনেন্সের ২ সিসি এবং কন্সেন্ট লেটার (সম্মতি পত্র) কন্ডিসন (শর্ত) সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। কনসেন্ট লেটার কন্ডিসন (সম্মতি পত্রের শর্ত) অনুযায়ী এসএমই প্লাটফর্মে লেনদেনের তারিখ থেকে পরবর্তী তিন বছর ইস্যুয়ার কোম্পানি কোনো বোনাস শেয়ার ইস্যুর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের এসএমই প্লাটফর্মে লেনদেন শুরু করে কৃষিবিদ ফিড। সেই হিসাবে এখনো বোনাস শেয়ার ইস্যু করার কোনো সুযোগ নেই কোম্পানিটির। যেহেতু এসএমই প্লাটফর্মে লেনদেনের তারিখ থেকে পরবর্তী ৩ বছর ইস্যুয়ার কোম্পানি কোনো বোনাস শেয়ার ইস্যু করতে পারবে না এমন শর্ত রয়েছে। এক্ষেত্রে কোম্পানিটি কৌশলের আশ্রয় নেয়।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
বিএসইসির নতুন মুখপাত্র আবুল কালাম, উপ-মুখপাত্র আল ইসলাম

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) মুখপাত্রের দায়িত্ব পুনঃবন্টন করা হয়েছে। নতুন করে মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন পরিচালক মো. আবুল কালাম। আর উপ-মুখপাত্রের দায়িত্ব পেয়েছেন উপ-পরিচালক কাজী মো. আল ইসলাম।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিএসইসির জনসংযোগ কর্মকর্তা ও সহকারী মুখপাত্র মো. মোহাইমিনুল হক স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংস্থাটির সহকারী মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বিএসইসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মোহাইমিনুল হক এবং সহকারী পরিচালক সারা তাসনুভা।
মুখপাত্র সংশ্লিষ্ট নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত সকল কর্মকর্তাগণকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছে কমিশন। একইসঙ্গে সফলতার সাথে মুখপাত্রের দায়িত্ব পালনের জন্য পূর্ববর্তী মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম এবং মুখপাত্র (অতিরিক্ত দায়িত্ব) কাওসার আলীকে কমিশনের পক্ষ হতে ধন্যবাদ ও শুভকামনা জানানো হয়।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুঁজিবাজার
ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সর্বোচ্চ দরপতন

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৬টি কোম্পানির মধ্যে ১৫৬ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ দরপতন হয়েছে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেডের।
ডিএসই সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) কোম্পানিটির শেয়ারদর আগের কার্যদিবসের তুলনায় কমেছে ১০ পয়সা বা ৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। এতে দরপতনের তালিকায় শীর্ষে জায়গা নিয়েছে কোম্পানিটি।
দর হারানোর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা মেঘনা সিমেন্টের শেয়ারদর আগের দিনের তুলনায় ৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ কমেছে। আর শেয়ারদর ৪ দশমিক ১৬ শতাংশ কমে যাওয়ায় তালিকার তৃতীয় স্থানে অবস্থান নিয়েছে রিজেন্ট টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড।
এদিন দরপতনের তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলো হচ্ছে- জাহিনটেক্স, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল টি, জনতা ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, তাল্লু স্পিনিং, জিএসপি ফাইন্যান্স এবং ফারইস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।
এসএম