জাতীয়
প্রমাণ করেছি, সীমিত সম্পদ দিয়েও দেশ এগিয়ে নেওয়া যায়: প্রধানমন্ত্রী
রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে সীমিত সম্পদ দিয়েও একটি দেশকে এগিয়ে নেওয়া যায় বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দেশের ৫৪তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সোমবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা জানান।
তিনি বলেন, আজকে ২০২৪ সালে স্বাধীনতার ৫৩তম বার্ষিকীতে আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, আমরা দেশবাসীর প্রত্যাশা অনেকাংশেই পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি। এটা কোনো অসার বাগাড়ম্বর দাবি নয়। বাংলাদেশ আজ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল বিশ্বে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
ভাষণের শুরুতেই সরকারপ্রধান দেশে ও দেশের বাইরে বসবাসকারী বাংলাদেশের সব নাগরিককে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও রমজানের মোবারকবাদ জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রিয় দেশবাসী, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ টানা চতুর্থবার এবং ১৯৭৫-এর পর পঞ্চমবারের মত সরকার গঠন করেছে। একই সঙ্গে আমার দল আমাকে পঞ্চমবারের মত প্রধানমন্ত্রীর গুরুদায়িত্ব অর্পণ করেছে।
‘দেশবাসীর প্রতি আমার কর্তব্য হিসেবে এবং আমার পিতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার কাজ আরও এগিয়ে নেওয়ার জন্য আমি বারবার এ দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছি। আমি চেষ্টা করেছি সবার সমর্থন এবং সহযোগিতা নিয়ে এদেশের সাধারণ মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের মাধ্যমে তাদের মুখে হাসি ফোটাবার।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর অস্ত্রের মুখে সামরিক শাসকেরা রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে। জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ করে কায়েম করে একনায়কতন্ত্র। স্থবির হয়ে পড়ে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে জাতির পিতার নেওয়া সব কার্যক্রম। জনগণের ভাগ্যোন্নয়নের পরিবর্তে ক্ষমতাসীনরা নিজেদের ভাগ্য বদলাতে বিভোর হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ একুশ বছরের ইতিহাস এদেশের মানুষের নিপীড়ন আর বঞ্চনার ইতিহাস। এসময় লুটপাট, দুর্নীতি, ইতিহাস বিকৃতি, মৌলবাদ এবং জঙ্গিবাদ সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করিয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামের মৌল চেতনাকে ধূলিস্যাৎ করে বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর এবং পশ্চাদপদ দেশের তকমা পড়িয়ে দেওয়া হয়।
‘নিদারুণ দারিদ্র্য, ক্ষুধা, অকাল মৃত্যু এবং শিক্ষা, বাসস্থান, চিকিৎসার অভাব ছিল এদেশের মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী। সাধারণ মানুষ এসব বঞ্চনাকে ভাগ্যের লিখন হিসেবে মেনে নিতো। তখন মানুষকে বুঝতেই দেওয়া হয়নি যে, তাদের প্রতি সরকারের দায়িত্ব ও কর্তব্য বলে কিছু আছে।’
‘১৯৯৬ সালে জনগণের ভোটে বিজয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে জনবান্ধব নীতি গ্রহণ করা শুরু করে। ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে কৃষকদের জন্য বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মসূচি এবং ভূমিহীন, দুস্থ মানুষের জন্য বয়স্ক ভাতা, দুস্থ নারী ও বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, আশ্রয়হীনদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প, আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্প, কমিউনিটি ক্লিনিক, নিরক্ষরতা দূর করা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার বিস্তার, যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতুসহ ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়ন বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকারি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করি আমরা। এই সর্বপ্রথম সাধারণ মানুষ বুঝতে পারেন তাদেরও সরকারি সেবা পাওয়ার অধিকার রয়েছে।’
‘প্রিয় দেশবাসী, আপনাদের ম্যান্ডেট নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিগত পনের বছরের অধিক সময় ধরে সরকার পরিচালনা করছে। এই পনের বছরের অভিযাত্রা একেবারেই কুসমাস্তীর্ণ ছিল না। প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ, মহামারি, যুদ্ধ, আন্তর্জাতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং সর্বোপরি দেশি-বিদেশি শক্তির নানা ষড়যন্ত্র আমাদের চলার পথকে বাধাগ্রস্ত করেছে বারবার। ঘূর্ণিঝড় আইলা ও সিডর এবং কয়েক দফা প্রলয়ঙ্করী বন্যা উপকূলীয় এবং নিম্নাঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকায় ব্যাপক প্রভাব ফেলে।’
শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে শুধু আমাদের দেশের নয়, গোটা বিশ্বের অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছিল। সে ধকল কাটতে না কাটতেই ২০২২ সালের গোড়ার দিকে শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এই যুদ্ধকে কেন্দ্র করে অর্থনৈতিক অবরোধ-পাল্টা অবরোধ আরোপের ফলে আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশগুলো চরম সঙ্কটের মুখে পড়েছে। নিত্যপণ্যের উৎপাদন ও বিপণন যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনই এসব পণ্যের স্বাভাবিক চলাচলও বাধাগ্রস্ত হওয়ায় পণ্যের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর সঙ্গে গত বছরের শেষে যুক্ত হয়েছে গাজায় ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যা।
‘প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগও জনজীবনে কম দুর্ভোগের কারণ হয়নি। ২০১৩-১৪ সময়ে এবং ২০১৬ সালে বিএনপি-জামাতের দেশব্যাপী হরতাল-অবরোধ, অগ্নিসন্ত্রাস, অগণিত মানুষ হত্যার মত নৃশংসতা এখনো জনমনে গভীর দাগ কেটে আছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি এবং তার মিত্ররা এবারও হরতাল-অবরোধ, অগ্নিসংযোগের মত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সূচনা করেছিল। কিন্তু জনগণের প্রতিরোধের মুখে এবার তাদের পিছু হটতে বাধ্য হতে হয়। তবুও তাদের হাতে বেশ কয়েকজন নিরীহ মানুষ প্রাণ হারান এবং কয়েকশো কোটি টাকার সম্পদ বিনষ্ট হয়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে আমরা দেশের অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, বিগত দেড় দশকে আর্থ-সামাজিক খাতে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব রূপান্তর ঘটেছে।
তিনি বলেন, অভ্যন্তরীণ এবং বাইরের অভিঘাত মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কৃষি, শিল্প, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিশু ও মাতৃমৃত্যু হার, দারিদ্র্য বিমোচন, অবকাঠামো উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়নসহ সব খাতে আজকে দৃশ্যমান পরিবর্তন লক্ষ্যণীয়। এক সময়ের দারিদ্র্য-জ্বরাক্লিষ্ট বাংলাদেশ আজ সক্ষম উদীয়মান অর্থনীতির দেশ।

জাতীয়
সারাদেশে বিশেষ অভিযান গ্রেফতার ১ হাজার ৭৮২ জন

সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত আরও এক হাজার ২০৩ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে ৫৭৯ জন। একদিনে মোট এক হাজার ৭৮২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শুক্রবার (২০ জুন) পুলিশ সদরদপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর এসব তথ্য জানান।
এআইজি ইনামুল হক সাগর বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে পুলিশের বিশেষ অভিযানে এক হাজার ৭৮২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে এক হাজার ২০৩ জন মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি রয়েছে।
এছাড়া অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, গুলি ৯ রাউন্ড, একনলা বন্দুক দুটি, কার্তুজ ৪৬ রাউন্ড, রামদা চারটি, ধারালো চাকু তিনটি, লোহা কাটার কেচি একটি, শাবল দুটি, এলজি ছয়টি, চাপাতি দুটি, ছুরি চারটি, তরবারি সাতটি, হাসুয়া দুটি, ড্রেগার একটি, লোহার ও কাঠের তৈরি থ্রিনট থ্রি রাইফেল বাট একটি।
বিশেষ এ অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সদরদপ্তরের এ কর্মকর্তা।
জাতীয়
ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্ট থেকে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে: প্রেস উইং

অন্তর্বর্তী সরকারকে লক্ষ্য করে বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণা চালানো হচ্ছে দাবি করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে এসব করতে ‘তামান্না আক্তার ইয়েসমান’ নামে একটি ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করছে।
শুক্রবার (২০ জুন) সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্ট তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।
বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘তামান্না আক্তার ইয়েসমান’ নামে ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশ বিরোধী প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে, যা মূলত অন্তর্বর্তী সরকার বিরোধী প্রচারণা এবং ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে করা হচ্ছে’।
প্রেস উইং জানায়, গভীর অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই অ্যাকাউন্টটিতে পুরোপুরি মিথ্যা ও ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করা হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্র সচিব রীম আল-হাশিমির চুরি হওয়া ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করে মিথ্যা পরিচয়ের মাধ্যমে এই প্রচারণা চালানো হচ্ছে। প্রোফাইল হোল্ডার এমনভাবে করা হয়েছে যা দেখে অনুমান হতে পারে উচ্চ পর্যায়ের একজন আন্তর্জাতিক প্রচারক আওয়ামী লীগের পক্ষে সমর্থন করছে।
প্রোফাইলের মেটাডেটা বিশ্লেষণে জানা যায়, এটি গতবছরের ২৪ নভেম্বর তৈরি করা হয়েছে এবং বাংলাদেশ থেকে পরিচালিত হচ্ছে। মাত্র সাত মাসে এই অ্যাকাউন্টে ১৪ হাজারেরও বেশি ফলোয়ার হয়েছে।
প্রোফাইলের ছবি, ভিডিও ও বর্ণনা সাধারণ ব্যবহারকারীদের এ ধারণা দিতে পারে যে, একজন প্রভাবশালী নারী নেতা, যিনি আন্তর্জাতিক মঞ্চে আওয়ামী লীগকে সমর্থন করছেন।
এই ফেসবুক পোস্টে, ‘তামান্না আক্তার ইয়েসমান’ দাবি করেছে, সুইজারল্যান্ডের বিচারালয় রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ মামলায় শেখ হাসিনাসহ ৩৩৪ জনকে ক্ষমা করে দিয়েছে। রাশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার চেম্বার কোর্টগুলো একই রায় দিয়েছে।
তার আরেকটি পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভারত ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বা করতে যাচ্ছে।
পোস্টে আরও বলা হয়েছে, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সাতটি নির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা নিয়ে একটি চিঠি পাঠাচ্ছে। তিনি এই মিথ্যাচারও করেছেন যে, জি-সেভেন সভায় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার দেখা হয়েছে।
১৭ জুনের একটি পোস্টে দাবি করেছেন, আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশ সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাতিল করেছে।
১৭ জুনের আরেক পোস্টে তিনি বলেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে বলেছেন, আওয়ামী লীগ যাতে স্বাধীনভাবে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারে, তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। তবে প্রেস উইং দাবি করেছে ‘এসব দাবি সম্পূর্ণভাবে মিথ্যা’।
প্রেস উইং তার বিবৃতিতে আরও বলেছে, অপপ্রচার ছড়ানোর উদ্দেশ্যে তৈরি এই ধরনের সংবাদের কোনো সত্যতা নেই। সুইজারল্যান্ড, রাশিয়া বা অস্ট্রেলিয়ার চেম্বার কোর্টে রূপপুর প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ সম্পর্কিত কোনো মামলা হয়নি, বা সেখানে রায় হয়নি।
এছাড়া, ইনভেস্টিগেটিভ মিডিয়া রিপোর্টে বলা হয়েছে, রূপপুর প্রকল্প থেকে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আত্মসাৎ করা হয়েছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন।
প্রেস উইং নিশ্চিত করেছে, ভারত বা ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি বা তারা কোন হুমকি দেয়নি।
আয়ারল্যান্ডও বাংলাদেশ সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক বাতিল করেনি। অনুসন্ধানে এই দাবিগুলোর কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। এগুলো যদি সত্য হতো, তাহলে দেশে ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে অনেক প্রতিবেদন হতো, কিন্তু সেটা হয়নি।
১ থেকে ১৫ জুন, ২০২৫ তারিখের মধ্যে অ্যাকাউন্টটির ১০৩টি পোস্টের মধ্যে ৮৩টিতে (৮০ শতাংশ) দেখা গেছে রীম আল-হাশিমির ছবি, ও ১৮টিতে (১৭ শতাংশ) শেখ হাসিনা প্রশংসা করা হয়েছে।
বাকি ৬টি পোস্টে নেতিবাচকভাবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিশানা করা হয়েছে, যেমন বৈঠক বাতিল ও আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মিথ্যা দাবি করে।
‘বিশেষভাবে উল্লেখ করার বিষয় হলো অধ্যাপক ইউনূস সম্পর্কিত লেখাগুলো নেতিবাচক, আর সর্বশেষ লেখাসহ সব লেখায় শেখ হাসিনাকে ইতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে,’ বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
এ ধরনের ভ্রান্ত তথ্যগুলো আওয়ামী লীগের ফেসবুক গ্রুপে ছড়িয়ে দৃষ্টিগোচর করার পর তৈরি করা হয়েছে এবং পরে একাধিক প্ল্যাটফর্মে-এক্স (টুইটার), ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম ও টিকটকে ছড়িয়ে পড়েছে।
জাতীয়
হজ শেষে দেশে ফিরেছেন ৩৬ হাজার ৬০১ হাজি

পবিত্র হজপালন শেষে এ পর্যন্ত সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন ৩৬ হাজার ৬০১ জন হাজি। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫ হাজার ৬ জন আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩১ হাজার ৫৯৫ জন রয়েছেন।
শুক্রবার (২০ জুন) হজ সম্পর্কিত সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত ৯৩টি ফিরতি হজ ফ্লাইটে দেশে ফেরা হাজিদের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পরিবহন করেছে ১৪ হাজার ১৮২ জন হাজি, সৌদি এয়ারলাইনসের ১৫ হাজার ৪৫৮ জন ও ফ্লাইনাস এয়ারলাইনসের ৬ হাজার ৯৬১ জন হাজি দেশে ফিরেছেন।
এদিকে চলতি বছর এখন পর্যন্ত হজে গিয়ে ৩২ বাংলাদেশি মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ২৬ জন পুরুষ ও নারী ছয়জন। এরমধ্যে মক্কায় মারা গেছেন ২১ জন, মদিনায় ১০ জন ও আরাফায় ১ জন।
হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাত্রার প্রথম ফ্লাইট ছিল ২৯ এপ্রিল আর শেষ ফ্লাইট ৩১ মে। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট শুরু হয় গত ১০ জুন। এদিন সকাল ১০টা ৫৪ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইনসের ফ্লাইট ‘এসভি-৩৮০৩’ ৩৭৭ হাজিকে নিয়ে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। আগামী ১০ জুলাই হজযাত্রীদের শেষ ফিরতি ফ্লাইট।
জাতীয়
চট্টগ্রামে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর উদ্যোগ

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, নগরের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে রাজস্ব আদায়ে মনোযোগী হতে হবে। তবে কর আদায়ের নামে কোনো নাগরিক যেন হয়রানির শিকার না হন, তা দেখতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকালে চসিক পাবলিক লাইব্রেরির হলরুমে রাজস্ব বিভাগের মাঠপর্যায়ের কর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
মেয়র বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামোসহ নগরের সব উন্নয়ন কাজ এই রাজস্বের ওপর নির্ভরশীল। তাই রাজস্ব সংগ্রহে আন্তরিকতা, পেশাদারিত্ব ও সদাচরণ অপরিহার্য।
তিনি আরও বলেন, চসিক হোল্ডিং ট্যাক্স ব্যবস্থাকে অটোমেশন করতে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছে। ভবিষ্যতে অনলাইনে কর পরিশোধের সুযোগ চালু হলে নাগরিক ভোগান্তি কমবে এবং স্বচ্ছতা বাড়বে।
রাজস্ব আদায়ে প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না জানিয়ে মেয়র বলেন, কারও প্রভাব দেখিয়ে কর ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা বরদাশত করা হবে না। আইন অনুযায়ী কাজ করুন, আমি আপনাদের পাশে আছি।
২৩ জুন চসিকের নতুন অর্থবছরের বাজেট পেশ করা হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, হাতে আছে মাত্র ১০–১১ দিন। এই সময়ে সংগঠিতভাবে রাজস্ব আদায় করতে হবে। প্রয়োজনে আমি নিজে বড় করদাতাদের সঙ্গে কথা বলব।
মেয়র বলেন, রাজস্ব আদায় কেবল একটি আর্থিক কাজ নয়, এটি আস্থার জায়গা। মানুষ বিশ্বাস করে কর দেয়, যেন তাদের সন্তান ভালো স্কুলে পড়তে পারে বা পাড়ার রাস্তাটি মেরামত হয়। সেই বিশ্বাস রক্ষা করতে হবে।
সভায় চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা সরোয়ার কামাল, রাজস্ব কর্মকর্তা মো. সাব্বির রহমান সানি, কর কর্মকর্তা, উপ-কর কর্মকর্তা, কর আদায়কারী ও অনুমতিপত্র পরিদর্শকরা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয়
রোহিঙ্গা সংকট আঞ্চলিক নিরাপত্তায় হুমকি হতে পারে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধান না হলে দ্রুতই এই সংকট আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকির কারণ হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ‘আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার ওপর দারিদ্র্য, উন্নয়নঘাটতি ও সংঘাতের প্রভাব’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বিগত আট বছরের বেশি সময় ধরে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশ মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে আশ্রয় দিয়ে আসছে। কিন্তু দীর্ঘসূত্রিতার কারণে এই সংকট এখন আর শুধু মানবিক বিষয় নয়; এটি অর্থনৈতিক, পরিবেশগত এবং ক্রমবর্ধমানভাবে একটি নিরাপত্তা ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নিজ দেশ মিয়ানমারে নির্মম নির্যাতনের কারণে বাস্তুচ্যুত এই জনগোষ্ঠীকে পূর্ণ নিরাপত্তা ও অধিকারের সঙ্গে প্রত্যাবাসনের জন্য অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি।
তারুণ্যের গৌরবের প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে তরুণরা বারবার পরিবর্তনের অগ্রভাগে থেকেছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ, অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন এবং সম্প্রতি গঠিত পিস বিল্ডিং কমিশনের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর আহ্বান জানান, যাতে শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগগুলো বাস্তবভিত্তিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।
নিরাপত্তা পরিষদের এই বৈঠকে বাংলাদেশ ছাড়াও সুইডেন, উরুগুয়ে ও পূর্ব তিমুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, জার্মানির পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন।