অর্থনীতি
ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা বুঝবেন যেভাবে
![ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা বুঝবেন যেভাবে ইসলামী ব্যাংক](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2024/03/MONEY.jpg)
বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই আলোচনা-সমালোচনা চলছে। সেই চর্চায় নতুন রসদ জুগিয়েছে ‘নয়টি ব্যাংক রেড জোনে অবস্থান করছে’এই মর্মে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি গবেষণা প্রতিবেদন।
আদতে কোন ব্যাংকের কী হাল তা বোঝার মাপকাঠি কী? ব্যাংক বাছাইয়ের জন্য কোন বিষয়গুলো বিবেচনা করতে পারেন একজন গ্রাহক?
সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে স্থানীয় কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করা হয় যে বাংলাদেশে চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকসহ মোট নয়টি ব্যাংক ‘রেড জোনে’ আছে।
‘ব্যাংকস হেলথ ইনডেক্স (বিএইচআই) অ্যান্ড হিট ম্যাপ’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘ইয়েলো জোনে’ আছে ২৯টি ব্যাংক এবং ‘গ্রিন জোনে’ আছে ১৬টি ব্যাংক।
প্রতিবেদন থেকে ধারণা পাওয়া যায়, রেড জোনে থাকা ব্যাংকগুলোর অর্থনৈতিক অবস্থা নাজুক।
যদিও মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট টুল (ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা) হিসেবে এ ধরনের গবেষণা নিয়মিতই করা হয়।
এই গবেষণাকে ব্যাংকের হেলথ ইন্ডিকেটর (উৎকর্ষের সূচক) বলা যায় না বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক।
তিনি বলেন, ব্যাংক ভালো আছে কি নেই তা জানা যায় ব্যালেন্স শিট এবং ইনকাম স্টেটমেন্ট থেকে। সেগুলোই সত্যিকারের আর্থিক প্রতিবেদন। তবে, অর্থনীতিবিদরা আরও কয়েকটি বিষয়কেও মানদণ্ড হিসেবে দেখার কথা বলছেন।
তারল্য
ব্যাংকগুলোতে নগদ টাকার যে সরবরাহ তাকেই তারল্য বলা হয়। কোনো কারণে ব্যাংকে নগদ টাকার সরবরাহের তুলনায় চাহিদা বেড়ে গেলে তাকে বলে তারল্য সংকট।
তারল্য সংকট ব্যাংক খাতের স্বাস্থ্য সম্পর্কে ধারণা দেয় বলে জানান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
তিনি বলেন, এটা সামগ্রিক অর্থনীতিরই বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, দেখতে হবে কোনো ব্যাংক বারবার কেন্দ্রীয় বা অন্য কোনো ব্যাংকের দ্বারস্থ হচ্ছে কি না। যদি বারে বারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যায়, তার মানে তাদের হাতে কিন্তু টাকা নেই।
কোনো ব্যাংকে তারল্য সংকট দেখা দিলে তারা তখন নির্দিষ্ট সুদের বিনিময়ে অন্য ব্যাংক থেকে টাকা ধার করতে শুরু করে। এই সুদের হারকে বলে কলমানি রেট।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদের মন্তব্য, লিকুইডিটি না থাকলে আগ্রাসী হয়ে ডিপোজিট বাড়ানোর চেষ্টা করে অনেক ব্যাংক।
মূলধনের পর্যাপ্ততা ও ব্যাংকের আয়
মূলধন ব্যাংকের মূল শক্তির জায়গা। মূলধন কাঠামো ও প্রতিষ্ঠানের সম্পদের বিপরীতে মূলধনের অনুপাত সক্ষমতা বেশি হওয়া জরুরি বলে মনে করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ।
কোন ব্যাংক কতটা লাভজনক অবস্থায় আছে তা থেকেও ওই ব্যাংকের আর্থিক সক্ষমতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, ব্যাংকের প্রফিটেবলিটি কেমন, রিটার্ন কেমন, প্রফিট কী হচ্ছে এসব জানা জরুরি। তাহলে অর্থ জমা রাখা বা ব্যাংকিং সংক্রান্ত অন্যান্য সিদ্ধান্ত নেয়া সহজ হয়। সঞ্চয়ের পরিমাণের দিকেও দৃষ্টি দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য তারা।
প্রভিশন
প্রভিশন হলো, ঋণের মান অনুযায়ী সঞ্চিতি রাখা। যাতে ঋণ দেওয়া টাকা ফেরত পাওয়া না গেলেও ওই টাকাটা ব্যাংক তার মুনাফা থেকে রাখা অর্থ দিয়ে আমানতকারীদের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হয়।
এর ফলে যে ঋণগুলো খেলাপিগ্রস্ত হওয়ার কারণে শ্রেণীকরণ করা হয়েছে সেগুলো আর ফেরত পাওয়া যাবে না ধরে নিয়ে একটি নির্দিষ্ট শতাংশ পরিমাণ ব্যাংকের মুনাফা থেকে কমিয়ে দেখাতে হয়।
সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, যদি এই প্রভিশন ঠিকঠাকভাবে সংরক্ষণ করা না হয়, তবে ব্যাংকের মূলধনে সংকট দেখা দিতে পারে।
এরকম ক্ষেত্রে ওই ব্যাংকে আমানত করা অর্থ ফেরত পেতে গ্রাহককে বেগ পেতে হতে পারে।
বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশে বিশেষ করে রাষ্ট্রায়ত্ত এবং নতুন কিছু ব্যাংকের দুর্দশাগ্রস্ত ঋণগুলোকে ভুলভাবে প্রভিশন করে অতিরিক্ত মুনাফা দেখানো হয়।
ব্যাংক পরিচালনায় সুশাসন
ব্যাংক পরিচালনার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও সুশাসন নিশ্চিত হচ্ছে কি না, সংশ্লিষ্ট অন্যদের পাশাপাশি গ্রাহককেও সে ব্যাপারে ধারণা রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা।
মনসুর বলেন, কোনো ব্যাংকের স্ক্যাম (কেলেঙ্কারি) যদি গণমাধ্যমে আসে, তার মানে তাদের গভর্ন্যান্স (সুশাসন) নেই।
বাংলাদেশে ব্যাংক খাতের অসঙ্গতি প্রায়ই স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোতে উঠে আসে। ছোট-বড় আর্থিক কেলেঙ্কারির খবরও দেখা যায়।
বিশ্লেষকদের মতে, এগুলোর ভিত্তিতে কোন ব্যাংক কেমন, সে ধারণা পাওয়া যায়।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, পরিচালনা পর্ষদে কারা আছেন, ঋণ অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা থাকছে কিনা, এগুলোও মাপকাঠি হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত।
যে ব্যাংকগুলোর অবস্থা বেশি খারাপ সেগুলোকে একীভূত না করে বরং অবসায়ন (লিকুইডেশন) করা ভালো বলে মনে করেন তিনি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল স্টেবিলিটি (আর্থিক স্থিতিশীলতা) বিভাগের যে পর্যালোচনা গণমাধ্যমে উদ্ধৃত করা হয়েছে তাতে জানা যাচ্ছে, ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত ৩৮টি ব্যাংকের অবস্থার অবনতি হয়েছে এবং ১৬টি ব্যাংকের অবস্থার উন্নতি হয়েছে।
এই ব্যাংকগুলোকে রেড, ইয়েলো ও গ্রিন তিনটি স্তরে বিন্যস্ত করা হয়েছে।
রেড জোনে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো হল জনতা ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক ও বেসিক ব্যাংক।
এই জোনের বাকি পাঁচটি ব্যাংক হলো বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, ন্যাশনাল ব্যাংক ও এবি ব্যাংক।
ইয়েলো জোনে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক আছে দুটি। একটি সোনালী ব্যাংক এবং অপরটি বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক।
এছাড়া ১৭ টি বেসরকারি ব্যাংক আছে এই তালিকায়।
সেগুলো হলো আইএফআইসি, মেঘনা, ওয়ান, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল, এনআরবি, এনআরবি কমার্শিয়াল, মার্কেন্টাইল, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, ডাচ-বাংলা, প্রিমিয়ার, ব্র্যাক, সাউথইস্ট, সিটি, ট্রাস্ট, এসবিএসি, মধুমতি, ঢাকা, উত্তরা ও পূবালী ব্যাংক।
শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলো হলো- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী, আল আরাফাহ, স্ট্যান্ডার্ড, ইউনিয়ন, এক্সিম ও গ্লোবাল ইসলামী।
গ্রিন জোনে থাকা ১৬টি ব্যাংক হলো প্রাইম, ইস্টার্ন, হাবিব, এনসিসি, মিডল্যান্ড, ব্যাংক আলফালাহ, ব্যাংক এশিয়া, সীমান্ত, যমুনা, শাহজালাল ইসলামী, উরি, এইচএসবিসি, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন, সিটি, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।
উপাত্তগত পার্থক্য থাকায় বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক এবং আইসিবি ইসলামিক ব্যাংককে এই বিশ্লেষণের বাইরে রাখা হয়েছে।
বেঙ্গল কমার্শিয়াল, সিটিজেন, কমিউনিটি ও প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ব্যাপারে যথেষ্ট তথ্য উপাত্ত না পাওয়ায় সেগুলোকেও তালিকার বাইরে রাখতে হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
![](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2023/02/Logo_OS_250_72.webp)
অর্থনীতি
১১ মাসে পোশাক রপ্তানি কমেছে ৫ দশমিক ২ শতাংশ
![১১ মাসে পোশাক রপ্তানি কমেছে ৫ দশমিক ২ শতাংশ ইসলামী ব্যাংক](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2024/04/garments.jpg)
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত অর্থবছরের জুলাই-মে মাসে তৈরি পোশাকের রপ্তানি আয় কমেছে ৫ দশমিক ২ শতাংশ। এছাড়া তৈরি পোশাক পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ গত অর্থবছরের জুলাই-মে মাসে আয় করেছে ৩৩ দশমিক ০৪ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৩৪ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার।
তবে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসাব অনুযায়ী, গত অর্থবছরের জুলাই-মে মাসে তৈরি পোশাকের রপ্তানি আয়ে ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে।
ইপিবি তাদের প্রকাশিত তথ্যে দেখিয়েছিল, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে তৈরি পোশাক খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪৩ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন ডলার। এটি আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪২ দশমিক ৬৩ বিলিয়ন ডলার। ফলে প্রবৃদ্ধি ছিল ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, নিট পোশাকের রপ্তানি আয় ৫ দশমিক ৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরে ছিল ১৮ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে, ওভেন পণ্যের আয় কমেছে ৫ দশমিক ১ শতাংশ। ওভেন পণ্য থেকে আয় হয়েছে ১৫ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরে একই সময়ে ছিল ১৬ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার।
পোশাক শিল্পের আয় কমার পেছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে বলে মনে করছেন রপ্তানিকারকরা। কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে পোশাকের ইউনিটের দাম কমে যাওয়া। বৈশ্বিক রাজনৈতিক অস্থিরতা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কার্যাদেশের কিছুটা নিম্নমুখী প্রবণতাও লক্ষণীয়।
তৈরি পোশাক খাতে রপ্তানি আয় কমা নিয়ে কথা হয় বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি এসএম মান্নান কচি জানান, রপ্তানিমুখী পোশাক পণ্যের উৎপাদন খরচ বেড়েছে কয়েকগুণ। কারণ শ্রমিকের মজুরি বেড়েছে। বেড়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্য। ফলে আমাদের প্রতিযোগীদের সঙ্গে মূল্য সক্ষমতায় টিকে থাকতে পারছি না। এমনই সংকটময় মুহূর্তে ক্রেতারা পণ্যের দাম কমিয়েছেন। ফলে রপ্তানিতে ছন্দপতন হয়েছে। রপ্তানি আয়ে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে গ্যাস ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় সামনের মাসগুলোতেও নেতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এ ব্যবসায়ী নেতা।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
আরব আমিরাতে রিহ্যাবের আবাসন মেলা, শুরু ৬ সেপ্টেম্বর
![আরব আমিরাতে রিহ্যাবের আবাসন মেলা, শুরু ৬ সেপ্টেম্বর ইসলামী ব্যাংক](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2024/06/rehab1.jpg)
প্রবাসে উপার্জন স্বদেশে আবাসন- স্লোগানকে সামনে রেখে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজা শহরে আবাসন মেলা করতে যাচ্ছে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব)। আগামী ৬ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর শারজা এক্সপো সেন্টারে রিহ্যাব হাউজিং অ্যান্ড রেমিট্যান্স ফেয়ার-২০২৪ শীর্ষক তিন দিনব্যাপী এ মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবু জাফর মেলার উদ্বোধন করবেন। রিহ্যাবের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
রিহ্যাব জানায়, সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে রিহ্যাবের আবাসন মেলা নিয়ে ইতিমধ্যে উৎসাহ–উদ্দীপনা লক্ষ করা যাচ্ছে। মেলায় প্রবাসীদের গৃহঋণ নেওয়ার ব্যবস্থাও থাকবে। এর জন্য এবারের মেলায় আবাসন কোম্পানির পাশাপাশি বেশ কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।
রিহ্যাব ইন্টারন্যাশনাল ফেয়ার স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলিম উল্ল্যাহ এবং কো–চেয়ারম্যান মো. ইমদাদুল হক সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবু জাফরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। সাক্ষাতে রাষ্ট্রদূত রিহ্যাব হাউজিং অ্যান্ড রেমিট্যান্স ফেয়ার সফলভাবে আয়োজনে সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সরবরাহ বাড়ায় কিছুটা কমেছে সবজির দাম
![সরবরাহ বাড়ায় কিছুটা কমেছে সবজির দাম ইসলামী ব্যাংক](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2024/03/Vegetable-market-1.jpg)
কারফিউ শিথিল হওয়ায় রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম কমতে শুরু করেছে। ফলে অস্থির বাজারে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে বলে জানায় ভোক্তারা। তবে এখনো দু-তিন সপ্তাহ আগের অবস্থায় ফিরে আসেনি।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মহাখালী কাঁচাবাজার ও বাড্ডাসহ আরও কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের তুলনায় বাজারে সবজিসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের সরবরাহ বেড়েছে। বাজারে বেগুন, টমেটো ও করলা ছাড়া এখন বেশির ভাগ সবজি ৫০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে কিনতে পারছে ভোক্তারা। যদিও কিছুদিন আগে ৭০ টাকার নিচে কম সবজিই পাওয়া যেত।
বাজারে প্রতি কেজি ভালো মানের বেগুন ৭০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা কিছুদিন আগে ১০০ থেকে ১৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। অনেক বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ৫২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়, দাম কমে এখন ২৪০ টাকায় নেমেছে। প্রতি কেজি করলা ১৫০ টাকায় ওঠে, গতকাল কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়।
দাম কমে প্রতি কেজি পটোল ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, চিচিঙ্গা ও ঢেঁড়স কেজি ৬০ টাকায়, পেঁপে কেজি ৫০ টাকায়, চাল কুমড়া প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, মিষ্টিকুমড়া কেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়, শসা কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকায়, কচুমুখি কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকায়, টমেটো কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকায়, লাউ প্রতিটি আকারভেদে ৫০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সরবরাহ বাড়ায় রাজধানীর পাইকারি কারওয়ান বাজারে পেঁয়াজ ও আলুর দাম কেজিতে ৫টাকা পর্যন্ত কমেছে। কিন্তু খুচরায় প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ টাকায় এবং প্রতি কেজি আলু ৬৫ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের এক পাইকারি আলু বিক্রেতা বলেন, বাজারে সরবরাহ বাড়ায় এখন পাইকারিতে ৫৭ থেকে ৫৮ টাকায় প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ, আলুর দাম কেজিতে তিন-চার টাকার মতো কমেছে।
বাজারে প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়, দেশি রসুন কেজি ২২০ টাকায়, আমদানি করা রসুন কেজি ২০০ টাকায়, ছোট দানার মসুর ডাল কেজি ১৪০ টাকায় এবং বড় দানার মসুর ডাল কেজি ১১০ থেকে ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি রুই মাছ ২৬০ ও দেড় থেকে দুই কেজি ওজনের রুই ৪০০ টাকা। গ্রাসকার্প ২৫০ টাকা কেজি, মাঝারি মানের কই ১৮০ টাকা ও এক কেজি ওজনের মৃগেল ২৫০ টাকা। তবে সবচেয়ে বেশি দাম কমেছে তেলাপিয়ার। গত সোমবার যে মাছ বিক্রি হয়েছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিতে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বাণিজ্য ঘাটতি ২০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে
![বাণিজ্য ঘাটতি ২০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে ইসলামী ব্যাংক](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2024/04/roptani-1.jpg)
ডলার সংকটের কারণে আমদানিতে বিভিন্ন শর্ত দেওয়া আছে। এর প্রভাবে আমদানি কমেছে। তবে একই সময় রপ্তানি আয়ও কমে গেছে। আশানুরূপ হারে বাড়েনি রেমিট্যান্স। যার কারণে এখনো বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি হচ্ছে। বাণিজ্য ঘাটতির সঙ্গে চলতি হিসাবের ঘাটতি বাড়ছে। সঙ্গে সামগ্রিক বৈদেশিক লেনদেনেরও বিশাল ঘাটতি তৈরি হয়েছে। তবে রপ্তানি আয় সমন্বয় হওয়ায় আর্থিক হিসাবে উদ্বৃত্ত রয়েছে।
বৃহস্পতিবার ( ২৫ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংক গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-মে পর্যন্ত সময়ের বৈদেশিক লেনদেন ভারসাম্যের (ব্যাল্যান্স অব পেমেন্ট) পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-মে মাস পর্যন্ত সময়ে তিন হাজার ৭৩৪ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। এ সময় আমদানি হয়েছে ৫ হাজার ৭৫৬ কোটি ডলারের পণ্য। এতে অর্থবছরের ১১ মাসে ২ হাজার ২২ কোটি ( ২০.২২ বিলিয়ন) ডলারের বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। বর্তমান বিনিময় হার হিসাবে দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি এক ডলার ১১৮ টাকা ধরে) এর পরিমাণ ২ লাখ ৩৮ হাজার ৬১৯ কোটি টাকা। যদিও তার আগের ২০২২-২৩ অর্থবছরের একই সময় বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ২৬ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার।
ডলার সংকট কাটাতে নানা উপায়ে আমদানি নিয়ন্ত্রণ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে শুল্ক বাড়িয়েছে সরকার। একই সঙ্গে তুলনামূলক কম প্রয়োজন বা বিলাসী পণ্যের এলসি খোলার সময় শতভাগ পর্যন্ত নগদ মার্জিনের শর্ত দেওয়া আছে। এসব কারণে আমদানি কমেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে জানানো হয়, আগে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যের মধ্যে বড় ধরনের ফারাক ছিল, যা এখন সমন্বয় করা হয়েছে। এতে করে আর্থিক হিসাবে এই উদ্বৃত্ত তৈরি হয়েছে। গত অর্থবছরের ১১ মাসে বৈদেশিক বাণিজ্যের আর্থিক হিসাবে ২০৮ কোটি ডলার উদ্বৃত্ত আছে, যা তার আগের অর্থবছরের একই সময়ের এ উদ্বৃত্ত ছিল ৫৫১ কোটি ডলার। তবে সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যে বড় ঘাটতি তৈরি হয়েছে।
চলতি হিসাবের ভারসাম্য (কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স)
কোনো দেশের চলতি হিসাব মূলত বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাণিজ্য এবং মানুষের আয় কেন্দ্রিক আয়-ব্যয়ের হিসাব। চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হলো নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোনো ঋণ করতে হচ্ছে না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়। সেই হিসাবে উন্নয়নশীল দেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকা ভালো।
সবশেষ তথ্য বলছে, গত অর্থ বছরের ১১ মাসে চলতি হিসাবে ঘাটতি ৫৯৮ কোটি ডলার। তার আগের অর্থবছরে একই সময়ে এ ঘাটতি ছিল ১ হাজার ২০২ কোটি ডলার।
ওভার অল ব্যাল্যান্স
সামগ্রিক লেনদেনে (ওভারঅল ব্যাল্যান্স) বড় ঘাটতিতে আছে বাংলাদেশ। জুলাই-মে মাসে সামগ্রিক লেনদেনের (ঋণাত্মক) পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৮৮ কোটি ডলার। এই সূচকটি আগের বছর একই সময় ঘাটতি ছিল ৮৮০ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতি বেড়ে যাওয়া মানে বিভিন্ন উৎস থেকে দেশে যে পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আসছে, তার চেয়ে বেশি পরিশোধ করতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে পরিশোধ ঝুঁকি এড়াতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রচুর পরিমাণ ডলার বিক্রি করছে।
রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি
গত অর্থবছর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ১ হাজার ২৬৯ কোটি ডলার বা ১২ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ হাজার ৩৫৮ কোটি ডলার (১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন) বিক্রি করা হয়েছিল। আর ২০২১-২২ অর্থবছরে বিক্রি হয় ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন বা ৭৬২ কোটি ডলার। সব মিলিয়ে তিন অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে ৩৩ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে দুই হাজার ১৩৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা। আগের বছর একই সময় পাঠিয়েছিলেন ১ হাজার ৯৪১ কোটি ডলার।
বিদেশি বিনিয়োগ
দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) কমেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-মে বাংলাদেশ যেখানে ৪০৭ কোটি ডলারের এফডিআই পেয়েছিল। গেল অর্থবছরের একই সময় সেখানে এসেছে ৩৮১ কোটি ডলার। বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে সরাসরি মোট যে বিদেশি বিনিয়োগ আসে তা থেকে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান মুনাফার অর্থ নিয়ে যাওয়ার পর যেটা অবশিষ্ট থাকে সেটাকে নেট এফডিআই বলা হয়।
আলোচ্য অর্থবছরে নেট বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে। এই সূচকটি আগের বছরের চেয়ে দশমিক ৩ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়ে ১৫৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার হয়েছে। আগের অর্থবছরে নেট বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ১৫০ কোটি ২০ লাখ ডলার।
একই সঙ্গে আলোচিত সময়ে দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ (পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্ট) নেতিবাচক অবস্থা অব্যাহত আছে। গত অর্থবছরের ১১ মাসে শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ (নেট) যা এসেছিল তার চেয়ে ১১ কোটি ১০ লাখ ডলার চলে গেছে। তার আগের অর্থবছরের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ঋণাত্মক ৩ কোটি ৮০ লাখ ডলার।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
একদিনে সাড়ে ২৫ হাজার কোটি টাকা ধার দিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক
![একদিনে সাড়ে ২৫ হাজার কোটি টাকা ধার দিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক](https://orthosongbad.com/wp-content/uploads/2023/06/bangladesh-bank1.jpg)
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে টানা পাঁচ দিন ইন্টারনেট বন্ধ থাকার কারণে ব্যাংকে লেনদেন হয়নি। এটিএম বুথেও ছিল টাকার স্বল্পতা। কয়েকটি ব্যাংকের সার্ভারও ডাউন ছিল। লেনদেন সমস্যা তৈরি হয় মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবাদাতা কোম্পানি এমএফএস সেবার ক্ষেত্রেও। এসব কারণে নগদ টাকার চাহিদা বেড়ে গেছে। গতকাল বুধবার সীমিত পরিসরে ব্যাংক খোলার নির্দেশনা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর ফলে প্রথম দিনেই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রায় ২৫ হাজার ৫২১ কোটি টাকা ধার দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলো ধার নিয়েছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। বাকি টাকা নিয়েছে অন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বুধবার বাণিজ্যিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক রেপো, অ্যাসিউরড রেপো, অ্যাসিউরড লিকুইডিটি সাপোর্ট (এএলএস) এবং শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর জন্য ইসলামিক ব্যাংকস লিকুইডিটি ফ্যাসিলিটির (আইবিএলএফ) নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। নিলামে ৭ দিন মেয়াদি রেপো সুবিধার আওতায় ১৪ ব্যাংক ও দুই আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ৫ হাজার ৭ কোটি টাকা ধার দেওয়া হয়। ১৪ দিন মেয়াদি রেপো সুবিধার আওতায় ৯টি ব্যাংককে ২ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। ২৮ দিন মেয়াদি রেপো সুবিধার আওতায় ১২টি ব্যাংক ও ২টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে ধার দেওয়া হয় ৭ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা।
এছাড়া ১৮০ দিন মেয়াদি অ্যাসিউরড রেপো আওতায় তিন ব্যাংকে ৫ হাজার ৬৯১ কোটি টাকা এবং এক দিন মেয়াদি অ্যাসিউরড লিকুইডিটি সাপোর্ট আওতায় ১১টি প্রাইমারি ডিলার ব্যাংককে ৩ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা দেওয়া হয়। আর ১৪ দিন মেয়াদি ইসলামিক ব্যাংকস লিকুইডিটি ফ্যাসিলিটির আওতায় একটি ব্যাংকে দেওয়া হয় ৪৯৭ কোটি টাকা এবং ২৮ দিন মেয়াদে ৫ ইসলামি ধারার ব্যাংকে দেওয়া হয় ৯৮৪ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে একদিনেই ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধার দেওয়া হয় ২৫ হাজার ৫২১ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সাত দিন মেয়াদে টাকা ধারের সুদহার ছিল ৮ দশমিক ৬০ শতাংশ, ১৪ দিন মেয়াদে সুদহার ছিল ৮ দশমিক ৭০ শতাংশ ও ২৮ দিন মেয়াদি টাকা ধারের সুদহার ছিল ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এ ছাড়া অ্যাসিউরড রেপো ও অ্যাসিউরড লিকুইডিটির সুদহার ছিল সাড়ে ৮ শতাংশ। ইসলামি ধারার ব্যাংকের জন্য মুনাফার হার নির্ধারণ ছিল সাড়ে ৫ শতাংশ। আর ইসলামি ধারার ব্যাংকের জন্য ২৮ দিন মেয়াদির মুনাফার হার ছিল ৩ দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে সাড়ে ৬ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, চলমান পরিস্থিতির কারণে নগদ টাকার চাহিদা বেড়েছে। এটিএমগুলোতেও নগদ টাকার চাহিদা বেড়ে গেছে। এসব কারণে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো এক দিনে সাড়ে ২৫ হাজার কোটি টাকা ধার নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে। এ অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে থাকা হিসাবে ঘাটতি ও নগদ জমায় (সিআরআর) ঘাটতি হিসেবে ব্যবহার করে অনেক ব্যাংক। অনেক ব্যাংক আবার নগদ টাকা নিয়ে গ্রাহকের চাহিদাও মিটিয়ে থাকে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবারের ব্যাংকিং কার্যক্রমের পর পাঁচ দিনের ছুটি শেষে গতকাল বুধবার ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠান খুলেছে। এর মধ্যে শুক্র-শনিবার ছিল সাপ্তাহিক ছুটির দিন। এরপর গত রবি থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত টানা তিন কার্যদিবস সাধারণ ছুটি ছিল। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা-বিক্ষোভের কারণে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।