অন্যান্য
‘৩০ ফেব্রুয়ারি’ দিনটি ইতিহাসে একবারই এসেছিল

লিপ ইয়ার বা অধিবর্ষে প্রতি চার বছর অন্তর ক্যালেন্ডারের পাতায় ফেব্রুয়ারি মাসে বাড়তি একটি দিন যোগ করা হয়। ফলে ওই বছরটি গণনা করা হয় ৩৬৬ দিনে। এভাবে বছর গণনার সমন্বয়ে আমরা অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। এবারও চলছে লিপ ইয়ার। ২০২৪ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি অবশ্যই বিশেষ একটি দিন।
তবে অবাক করা বিষয় হলো, ইতিহাসে একবার ‘৩০ ফেব্রুয়ারি’ এসেছিল।
বিবিসি বাংলার খবরে বলা হয়, সুইডেন একটি ডাবল লিপ ইয়ারের অংশ হিসেবে ১৭১২ সালের ক্যালেন্ডারে ‘৩০ ফেব্রুয়ারি’ দিনটি যুক্ত করা হয়েছিল।
তবে ভেবে দেখুন, সেই তারিখ যাদের জন্ম হয়েছিল তাদের ভাগ্যে কী হয়েছে? তারা কখনো জন্মদিন উদযাপন করতে পারেননি।
লিপ ইয়ার কেন আসে?
প্রতি চার বছর অন্তর ক্যালেন্ডারে যে অসঙ্গতি থাকে তা সমন্বয় করতেই লিপ ইয়ার পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়েছে। এই ক্যালেন্ডার পদ্ধতির প্রাথমিক ধারণা এসেছিল রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজারের কাছ থেকে।
তিনি তখন আলেকজান্দ্রিয়ান জ্যোতির্বিজ্ঞানী সোসিজেনেসকে রোমান ক্যালেন্ডারের একটি বিকল্প তৈরি করতে বলেন। যে ক্যালেন্ডার হবে সূর্যের চারিদিকে পৃথিবীর পরিভ্রমণের সঙ্গে আরও সামঞ্জস্যপূর্ণ।
অনেকের মতে, পৃথিবী সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে ৩৬৫ দিনের সঙ্গে পাঁচ ঘণ্টা, ৪৮ মিনিট, ৫৬ সেকেন্ড বেশি সময় লাগে। এই বাড়তি সময়কে সমন্বয় করতে সোসিজেনেস একটি ক্যালেন্ডার তৈরি করার প্রস্তাব করেন, যা মিশরীয়দের ক্যালেন্ডারের সঙ্গে প্রায় হুবহু মিলে যায়।
সৌর বছরের সঙ্গে সন্নিবেশ করতে প্রতি চার বছরে ৩৬৫ দিনের সঙ্গে একটি অতিরিক্ত দিন যোগ করা হয়। এভাবে জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের জন্ম হয়, এর প্রবর্তক জুলিয়াস সিজারের সম্মানে এই নামকরণ করা হয়েছিল।
বাড়তি দিন যেভাবে এলো
জুলিয়ান ক্যালেন্ডারও বেশিদিন টেকেনি। ওই ক্যালেন্ডারে কিছু দুর্বলতা থাকায় ১৫৮২ সাল থেকে ক্রমান্বয়ে জুলিয়ান ক্যালেন্ডারের জায়গা প্রতিস্থাপন করে নেয় আজকের গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার। জুলিয়ান ক্যালেন্ডারে বছর শুরু হতো মার্চ থেকে। যেহেতু প্রতি চার বছরে একটি অতিরিক্ত দিনের প্রয়োজন ছিল, তাই রোমানরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে এটি ফেব্রুয়ারিতে হবে, যা তখন বছরের শেষ মাস ছিল।
লিপ নামটি ল্যাটিন বাক্য থেকে এসেছে। যার অর্থ মার্চ মাস শুরুর ছয় দিন আগে, যা ২৪ ফেব্রুয়ারি। সেসময় ওই দিনটি লিপ ইয়ার হিসেবে পালন করা হত।
বাক্যটি কিছুটা দীর্ঘ হওয়ায় একে সংক্ষেপে ‘বিস সেক্সটাস’ বলা হয়ে থাকে যার অর্থ লিপ ইয়ার বা বাংলায় অধিবর্ষ। কয়েক বছর পরে, ত্রয়োদশ পোপ গ্রেগরি এক ডিক্রি জারির মাধ্যমে ক্যালেন্ডারটিকে ‘নিখুঁত’ করার সিদ্ধান্ত নেন।
তার আনা পরিবর্তনগুলোর মধ্যে একটি ছিল যে লিপ ইয়ারের অতিরিক্ত দিনটি হবে ২৯ ফেব্রুয়ারি।
সময়ের গণনা ও হেরফের
সময়কে মূলত গণনা করা হয়, দিন, মাস ও বছরের হিসেবে। এই গণনা প্রক্রিয়া মানুষের তৈরি। চন্দ্র আবর্তন অনুসরণ করে দেখা গেছে, দুটি পূর্ণিমার মধ্যে কমবেশি সাড়ে ২৯ দিনের পার্থক্য থাকে।
এছাড়া সৌর পরিভ্রমণ অনুযায়ী, পৃথিবী সূর্যের চারপাশে ঘুরতে সময় নেয় কমবেশি ৩৬৫ দিন ছয় ঘণ্টার মতো। তবে এটি এমন এক গণনা পদ্ধতি যা হেরফের হতে পারে।
ইতিহাস জুড়ে বিভিন্ন শাসক এক বছরকে কয়েক মাসে ভাগ করেছেন। সব সময়ে ১২ মাসে এক বছর ছিল না, মাসের সংখ্যায় হেরফের ছিল। ওই শাসকদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাহিদা-প্রয়োজন, বা তাদের ব্যক্তিগত ইচ্ছা অনুসারে সেই মাসগুলোয় বাড়তি দিন যোগ করা হতো নাহলে সরিয়ে নেওয়া হতো।
ফলে সৌর বছরের সঙ্গে এই ক্যালেন্ডারগুলোকে সমন্বয় করা প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে, যা উপেক্ষা করার উপায় ছিল না।
সম্রাট জুলিয়াস সিজার, প্রায় দুই হাজার বছর আগে, আমরা বর্তমানে যে ক্যালেন্ডার ব্যবহার করি তার অনুরূপ একটি ক্যালেন্ডার প্রবর্তন করেছিলেন। সেই তথাকথিত জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১২ মাসে এক বছর ছিল। এবং মাসগুলোর কিছু ৩০ দিন এবং কিছু ৩১ দিনে গণনা করা হতো।
শুধুমাত্র ফেব্রুয়ারি মাস গণনা হতো ২৮ বা ২৯ দিনে। বছর শুরু হতো মার্চ মাস থেকে। কারণ এটি বসন্তের শুরু। এজন্য বছরের শেষ মাস ফেব্রুয়ারিকে লিপ ইয়ারের জন্য বেছে নেওয়া হয়।
এক বছর যেহেতু ৩৬৫ দিন ছয় ঘণ্টায় হয়, তাই বাড়তি এই ছয় ঘণ্টাকে সমন্বয় করার জন্য সেই রোমান সময় থেকে লিপ ইয়ার চিহ্নিত করা হয়েছে।
গ্রেট গ্রেগরিয়ান লিপ
সময় গণনা শতাব্দী ধরে চলে আসছে, কিন্তু এই গণনা পদ্ধতি সঠিক নয়। সৌর বছর আসলে একটু ছোট- সুনির্দিষ্টভাবে বললে ১১ মিনিট ১৪ দশমিক ৭৮৪ সেকেন্ড কম।
আদতে মনে হতে পারে এটি এমন কোন বড় পার্থক্য নয়, যা তাৎক্ষণিক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে বছরের পর বছর ধরে, এই বাড়তি মিনিট/ সেকেন্ড যোগ হয়ে সেটি বড় ব্যবধান তৈরি করে।
এ কারণেই ত্রয়োদশ পোপ গ্রেগরি ১৫৮২ সালে তার ক্যালেন্ডারে থাকা অসঙ্গতিগুলো ঠিক করার জন্য কিছু পরিবর্তন এনেছিলেন। এটি প্রধানত ধর্মীয় কারণে করা হয়, কেননা এই সময়ের ব্যবধানের কারণে কয়েকশ বছরে ইস্টারের সূচনা তিন দিন আগ-পিছ হয়ে যায়। তবে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার এখন পর্যন্ত বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত মানসম্মত প্রতিষ্ঠিত ক্যালেন্ডার।
যারা ক্যাথলিক চার্চের সাথে যুক্ত ছিল, প্রথমে তারা এই ক্যালেন্ডার গ্রহণ করে। পরবর্তী চার দশকে লিপ ইয়ার নির্মূল করার পরিবর্তে, তারা অক্টোবর মাস থেকে এক লাফে ১০ দিন কমিয়ে দেয়।
১৫৮২ সালে ৫ অক্টোবর বৃহস্পতিবারের পরের দিন ১৪ অক্টোবর শুক্রবার করা হয়। অন্যান্য প্রোটেস্ট্যান্ট জাতি ও সাম্রাজ্যগুলো শুরুতে এই ক্যালেন্ডার গ্রহণে অনিচ্ছুক ছিল, কিন্তু অবশেষে তারাও এই পরিবর্তিত ক্যালেন্ডার গ্রহণ করে।
যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও এর আমেরিকান উপনিবেশগুলো এই পরিবর্তন সাদরে গ্রহণ করে। তবে নতুন ক্যালেন্ডারে সমন্বয় করতে গিয়ে ১৭৫২ সালে তাদেরকেও ১২ দিন কমাতে হয়েছিল। তারা ২ সেপ্টেম্বর থেকে এক লাফে ১৪ সেপ্টেম্বরে পদার্পণ করে।
সুইডিশ পার্সিমনি ও ৩০ ফেব্রুয়ারির প্রবর্তন
সুইডেন যখন গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়, তখন তারা হঠাৎ করে ওই দিনগুলোকে একসঙ্গে বাদ দিতে চায়নি। তারা ধীরে ধীরে এই পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়াকে উপযুক্ত বলে মনে করেছিল।
এজন্য তারা টানা ৪০ বছরের জন্য ফেব্রুয়ারির লিপ দিনগুলো এড়িয়ে যায়, যতক্ষণ না সেগুলো সামঞ্জস্যপূর্ণ হচ্ছে।
তাদের এতদিনের অনুসরণ করা জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে ১৭০০ সালে একটি লিপ ইয়ার ছিল, কিন্তু তারা ফেব্রুয়ারি মাস শুধুমাত্র ২৮ দিনেই কাটায়। একইভাবে ১৭০৪, ১৭০৮ সাল লিপ ইয়ার হলেও তারা ফেব্রুয়ারি মাস ২৮ দিনেই সীমাবদ্ধ রাখতে চেয়েছিলেন।
কিন্তু, ওই সময়ে যুদ্ধ শুরু হয়ে যায় এবং অন্যান্য অগ্রাধিকারমূলক কাজের মধ্যে এই লিপ ইয়ার না কাটানোর পরিবর্তনের কথা তারা ভুলে যায়। কয়েক বছর পরে, সম্রাট দ্বাদশ চার্লস বুঝতে পেরেছিলেন যে সুইডেনের ক্যালেন্ডারটি জুলিয়ান বা গ্রেগরিয়ান কোনটিই নয়।
এরপর তিনি ক্যালেন্ডার প্রণয়নে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন এবং আগের সব পরিবর্তন বাতিল করেন। কিন্তু, যেহেতু তারা ইতোমধ্যেই ১৭০০ সালের অধিবর্ষ বাদ দিয়েছিল, তাই তিনি আদেশ দেন যেন ১৭১২ অর্থাৎ আরেকটি লিপ ইয়ারে ২৯ ফেব্রুয়ারির পাশাপাশি আরেকটি অতিরিক্ত দিন যোগ করা হয়।
এভাবে জুলিয়াস সিজারের সময় থেকে ইতিহাসে প্রথম ও একটিমাত্র বারের জন্য ৩০ ফেব্রুয়ারি তারিখটি তৈরি করা হয়েছিল।
শেষ পর্যন্ত, সুইডেন উত্তর ইউরোপে তার প্রতিবেশী দেশগুলোর উদাহরণ অনুসরণ করে। দেশটি ১৭৫৩ সালে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার গ্রহণ করে এবং একই পদ্ধতিতে বছরে ১০ দিন এক সঙ্গে ক্যালেন্ডার থেকে বাদ দিয়ে দেয়।
অন্যান্য ৩০ ফেব্রুয়ারি
বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীতে ৩০ ফেব্রুয়ারি তারিখটি ব্যবহার করতে দেখা গেছে। রে ব্র্যাডবিউরির ছোট গল্প “দ্য লাস্ট নাইট অফ দ্য ওয়ার্ল্ড”-এ ৩০ ফেব্রুয়ারি ভয়াবহ ঘটনা ঘটবে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।
ব্রিটিশ লেখক জন রোনাল্ড রিয়েল টলকিয়েন তার ফ্যান্টাসি উপন্যাস ‘দ্য হবিট এবং দ্য লর্ড অফ দ্য রিংসে’ ৩০ ফেব্রুয়ারির কথা উল্লেখ করেন। তার বই অনুযায়ী হবিটরা একটি ক্যালেন্ডার তৈরি করে যেখানে ফেব্রুয়ারি মাস ছিল ৩০ দিনে। তবে বাস্তব জগতেও এই তারিখের ব্যবহার হতে দেখা গেছে।
যখন কোন মানুষের মৃত্যুর তারিখ অজানা থাকে তখন তাদের সমাধি প্রস্তর বা এপিটাফে জন্ম তারিখ হিসেবে ৩০শে ফেব্রুয়ারি দিনটিকে রেকর্ড করা হয়।
১৭৯২ সালে ফরাসি বিপ্লব চলাকালে দেশটি তাদের গণিতবিদ গিলবার্ট রোমের ডিজাইন করা একটি ‘প্রজাতন্ত্রী’ ক্যালেন্ডার গ্রহণ করে। এই ক্যালেন্ডারে ধর্মীয় রেফারেন্স বাদ দেওয়া হয় এবং মাসগুলোর নতুন নাম দেওয়ার চেষ্টা করা হয় – নতুন নামে প্রাকৃতিক ঘটনা এবং কৃষি খাতের নানা বিষয়কে প্রাধান্য দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ক্যালেন্ডারের নতুন এ সংস্করণের স্থায়িত্ব ছিল খুব সংক্ষিপ্ত।
এরপর ১৮১৪ সালে নেপোলিয়নের উৎখাতের পর, ফ্রান্স দ্রুতই ত্রয়োদশ গ্রেগরির তৈরি এবং জুলিয়াস সিজারের সংস্করণের ক্যালেন্ডারে ফিরে আসে।

অন্যান্য
গরম নিয়ে যা জানাল আবহাওয়া অফিস

সারা দেশে গরমের তীব্রতা বেড়েছে। ঢাকাতেও কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। আজও সারা দেশে গরমের তীব্রতা একই থাকবে।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকাসহ সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে। দেশের অন্যত্র আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
আরও বলা হয়েছে, মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, এর বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এটি আরও ঘনীভূত হতে পারে।
এদিকে, দুপুর ১টা পর্যন্ত ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থেকে মেঘলা থাকতে পারে। আবহাওয়া প্রধানত শুস্ক থাকতে পারে। দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
অন্যান্য
বিমানবন্দরে ২০০ কোটি টাকার ওষুধের কাঁচামাল পুড়েছে: ওষুধশিল্প সমিতি

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আগুনে অন্তত ২০০ কোটি টাকার ওষুধের কাঁচামাল পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ওষুধশিল্প সমিতির মহাসচিব মো. জাকির হোসেন।
সোমবার (২০ অক্টোবর) সকালে কারওয়ান বাজারের একটি হোটেলে কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের পর এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
ওষুধশিল্প সমিতির মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশে ৩০৭টি ওষুধ কোম্পানি আছে। এর মধ্যে ২৫০ কোম্পানি সচল আছে। আজ বেলা ১১টা পর্যন্ত শীর্ষস্থানীয় ৩২ কোম্পানি জানিয়েছে, তাদের ২০০ কোটি টাকার বেশি কাঁচামাল পুড়ে গেছে। বাকি কোম্পানিগুলো হিসাব দিলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।
শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আগুনে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি)। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ইএবি সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।
জাকির হোসেন বলেন, একেকটি ওষুধ উৎপাদনে ৫৩টি পর্যন্ত উপকরণের প্রয়োজন হয়। ফলে ২০০ কোটি টাকার কাঁচামাল পুড়ে যাওয়ার কারণে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার কোটি টাকার ওষুধের উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে। তবে এখনই সরবরাহ ব্যবস্থায় সমস্যা সৃষ্টি হবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, শনিবার আগুনের সময় অনেক বিমান চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেসব বিমানে থাকা ওষুধের কাঁচামাল শেষ পর্যন্ত ঠিকঠাক থাকবে কি না, তা নিয়েও শঙ্কা আছে। কেননা ওষুধের কাঁচামাল সংরক্ষণে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ খুবই জরুরি বিষয়। সেখানে এ ব্যবস্থা নেই।
তিনি আরও বলেন, সুনির্দিষ্টভাবে কত টাকার ক্ষতি হয়েছে, সেটা আমরা সব কোম্পানির কাছ থেকে জেনে আরও বিস্তারিত জানাতে পারবো। তবে এতে যে ওষুধশিল্প খাতের একটি বড় অর্থনৈতিক ঝুঁকি তৈরি হয়েছে সেটি ঠিক। এসময় তিনি অন্যান্য দেশের মতো বিমানবন্দরের পণ্য খালাস কার্যক্রম ৩৬৫ দিন চালু রাখার দাবি জানান।
অন্যান্য
দেশে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে ৬১ শতাংশ

বৈশ্বিক অর্থনীতির অনিশ্চয়তা, মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাত এবং বিনিয়োগে ধীরগতির প্রবণতার মধ্যেও বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে নিট এফডিআই প্রবাহ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ৬১ দশমিক ৫ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এ তথ্য জানিয়েছে। সংস্থাটির মতে, এ প্রবৃদ্ধি প্রমাণ করে যে বিদেশি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে ব্যবসা সম্প্রসারণে ক্রমেই বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে এবং দেশের বাজারে তাদের আস্থা বাড়ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে কার্যরত মুনাফাবান বিদেশি কোম্পানিগুলো তাদের আয়ের একটি বড় অংশ পুনরায় বিনিয়োগ করছে। পুনঃবিনিয়োগের পরিমাণও গত বছরের তুলনায় ৬১ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। অর্থাৎ, বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু মুনাফা নিচ্ছে না, বরং ভবিষ্যৎ সম্প্রসারণের সম্ভাবনা দেখে নতুন করে বিনিয়োগ করছে।
বিশ্বজুড়ে নতুন মূলধনের (গ্রিনফিল্ড এফডিআই) বিনিয়োগ কমলেও বাংলাদেশে এ খাতে ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি রেকর্ড হয়েছে। পাশাপাশি বিদেশি মূল কোম্পানিগুলো তাদের বাংলাদেশভিত্তিক স্থানীয় ইউনিটগুলোকে আরও বেশি অর্থায়ন করছে। এর ফলে ইন্টার-কম্পানি ঋণের হার এক বছরে বেড়েছে ২২৯ শতাংশ।
শুধু ছয় মাস নয়, পুরো অর্থবছরের চিত্রও আশাব্যঞ্জক। জুলাই ২০২৪ থেকে জুন ২০২৫ অর্থবছরে নিট এফডিআই প্রবাহ আগের অর্থবছরের তুলনায় বেড়েছে ১৯ শতাংশেরও বেশি।
এদিকে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত সময়ে দেশের পাঁচটি বিনিয়োগ উন্নয়ন সংস্থা—বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা), বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ (বিএইচটিপিএ) ও বিসিক—এর মাধ্যমে নিবন্ধিত হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কোম্পানির মোট ১ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রস্তাবিত বিনিয়োগ। এর মধ্যে ৬৫ কোটি ডলারের বেশি এসেছে সরাসরি বিদেশি কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৩ সালে বিনিয়োগের পরিমাণ হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। আর ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই ধারা বজায় থাকা অত্যন্ত ইতিবাচক। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারবে বলে মনে করছেন তারা।
অন্যান্য
দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে: ব্যারিস্টার আনিস

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, দেশের মানুষ বিশ্বাস করে না ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে।
শনিবার (১১ অক্টোবর) রাজধানীর গুলশানে হাওলাদার টাওয়ারে জাতীয় যুব সংহতির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা সহ সরকারের উপদেষ্টারা বারবার বলছেন, ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হবে। এছাড়া আগামী নির্বাচন স্মরণকালের সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ, অবাধ, সুষ্ঠু হবে বলে বারবার ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে।
অপরদিকে সরকারের তথ্য উপদেষ্টা বলেছেন-প্রশাসনের সব পদ বিএনপি-জামায়াত ভাগাভাগি করে নিয়েছে। তাহলে এ ধরনের প্রহসনের প্রশাসন দিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে তা একজন শিশুও বিশ্বাস করে না।
ব্যারিস্টার আনিস বলেন, আমি অনেক জায়গায় বৈঠকে যাই, সেখানে রাজনীতিবিদসহ সমাজের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিরা থাকেন। তারা আমাকে প্রশ্ন করেন, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে কিনা?
উত্তরে আমি বলি, আপনাদের প্রশ্নের মধ্যেই উত্তর রয়েছে। এই প্রশ্নের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয় আপনি নিজে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে সংশয়ের মধ্যে রয়েছেন। শুধু তারা নয়, দেশের সাধারণ মানুষও সর্বত্র একে অন্যকে প্রশ্ন করেন ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে কিনা? তার মানে, দেশের সাধারণ মানুষও বিশ্বাস করে না ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে।
সভায় ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, আজকে গায়ের জোরে সংবিধান পরিবর্তনের কথা বলছেন। আমি সবাইকে অনুরোধ করব, গায়ের জোরে সংবিধান পরিবর্তনের কথা কল্পনা করবেন না। কারণ আগামী ১০ বছর পর আরেকটা বিপ্লবের মাধ্যমে বলা হবে, যারা সংবিধান পরিবর্তন করেছিলো তারা অপরাধী। তাদের বিচার হবে।
জাতীয় যুব সংহতির আহ্বায়ক ফখরুল আহসান শাহজাদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিনিধি সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার।
সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সরদার শাহজাহান, ভাইস চেয়ারম্যান জামাল রানা, অ্যাডভোকেট সেরনিয়াবাত সেকান্দার আলী, আনোয়ার হোসেন তোতা, নাসির উদ্দিন সরকার, মিজানুর রহমান দুলাল, আনোয়ার হাওলাদার, কেন্দ্রীয় সম্পাদক তাসলিমা আকবর রুনা, মিজানুর রহমান, জিয়াউর রহমান বিপুল, ইন্ঞ্জিনিয়ার লিয়াকত আলী, ফজলে এলাহী মিঞা, আব্দুস সাত্তার, মাসুম, এস এম হাসেম, আলমগীর হোসেন, সাইফুল ইসলাম শোভন, জাতীয় যুব সংহতির নেতাদের মধ্যে রওশন মাহানামা, স্বপন হাওলাদার, মিজানুর রহমান দুলাল, প্রীতি বিশ্বাস, আওলাদ হোসেন, মাহবুবুর রহমান কামাল প্রমুখ।
অন্যান্য
ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ সভা

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পরিচালনা পরিষদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম জুবায়দুর রহমান।
সভায় এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবদুস সালাম, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম মাসুদ রহমান, স্বতন্ত্র পরিচালক মো. আবদুল জলিল, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর (চলতি দায়িত্ব) মো. আলতাফ হুসাইন, শরী’আহ সুপারভাইজরি কমিটির সদস্য সচিব প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আব্দুস সামাদ এবং কো¤পানি সেক্রেটারি মো. হাবিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।