ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
একুশে ফেব্রুয়ারি নিয়ে শিক্ষার্থীদের মনের কথা

ভাষা মানে হয়তো মায়ের ধমকানি, চিরসহিষ্ণু বাবার প্রশ্রয়ের হাসি। ভাই/বোনের অহেতুক খুনসুঁটি বা মানুষের ভীরে অযুত আঁখি ফাঁকি দিয়ে প্রেমিকার প্রতি স্বলজ্জ চোরাচাওনি। ওর অভিমানভরা চোখের সামনে কর্তব্যবিমূঢ় হাসি। ভাষা মানে হয়তো কৈশোরের খলখলানি, বার্ধ্যক্যের বিস্ময়ভরা চাহনি, জীবিকার তাগিদে রাস্তার মোড়ে কোন হকারের অনবরত জিহ্বার নাচুনি কিংবা ভাষা মানে আড্ডায় চায়ের কাপে কথার ঝুড়ি অথবা গভীর রাতে ভীষণ একাকীত্বে দুঃখ গলিয়ে টিস্যুর ভাজে ভাজে বিন্দু বিন্দু সুখের চুরি কিংবা ভাষা মানে আরও না বলা অনেক কিছু।
বিশ্বের বুকে ৫২’র ২১ শে ফেব্রুয়ারির বাঙালি তরুণরা তাদের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে বাংলা ভাষার প্রতি অগাধ ভালোবাসা প্রমাণ করেছিল এবং সেইসাথে বাঙালি জাতিসত্তাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে এক অনন্য উচ্চতায়। তাদের অসামান্য অবদান প্রজন্ম হতে প্রজন্ম পর্যন্ত বহাল রাখার দায়িত্ব রাষ্ট্রের প্রতিটি মানুষের।
দেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের তরুণ শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে একুশে ফেব্রুয়ারি নিয়ে মনের কথা ব্যক্ত করার চেষ্টা করেছেন ও গ্রন্থনা করেছেন কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘অর্থসংবাদ’র প্রতিনিধি মো. সাকিব আসলাম।
আমি বাংলায় কথা বলি, আমি বাঙালী, আমি বাঙাল। আমি গর্বিত আমি বাঙাল।এটা যদি অনাধুনিকতা, অসামাজিকতা বা আভিজাত্যহীনতা হয় তবে তাই সই।
অর্ণব হাসান
লোক প্রশাসন বিভাগ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
যে ভাষা স্বতন্ত্রতা বজায় রেখে ভিন্ন ভাষার শব্দ গ্রহণ করতে পারে সে ভাষা ততবেশী সমৃদ্ধ, এটা ভাষাতাত্ত্বিকদের অভিমত। তবে, আমরা এ প্রজন্মের কথাতাত্ত্বিক তরু(ণ/ণী)রা আরো এক কাঠি এগিয়ে। বিগত কয়েক বছর ধরে, আমরা কথার মাঝে মাঝে ইংরেজি বা হিন্দি শব্দ ঢালাওভাবে ঢুকিয়ে বাংলা ভাষাকে হাস্যকর ভাবে সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করছি। শরীর দুলিয়ে, ঠোঁট বাকিয়ে বাংলা, ইংরেজি আর হিন্দি মিশিয়ে “বাংরেন্দি” নামক এক কিম্ভূত ভাষায় কথা বলাকেই আমরা “স্মার্টনেস” ভাবা শুরু করেছি। আমাদের তারকারা ভূলেভরা ইংরেজিতে কথা বলাকেই আভিজাত্য ভাবছেন, হুজুরেরা কথার মাঝে মাঝে আরবি, ফার্সি, উর্দুকে টেনে এক অদ্ভুতুড়ে ভাষায় কথা বলাকে ধার্মিকতা মনে করছেন। আমি ভিন্ন ভাষার প্রতি বিদ্বেষী হবার কথা বলছিনা। অন্যভাষা জানাটা নিঃসন্দেহে একটা শিল্পকর্ম তবে নিজ ভাষায় শুদ্ধ করে কথা বলাটা তার চেয়েও বড় ও অনুপম এক শিল্প। যে শব্দের প্রচলিত বাংলা শব্দ নেই সেখানে অন্য ভাষার প্রতিশব্দের ব্যবহার নিশ্চয়ই করবো তবে প্রচলিত ও সুন্দর বাংলা শব্দকে হটিয়ে তথায় ভিন্ন ভাষার শব্দকে জোর করে ব্যবহার করে অভিজাত হওয়ার ভান করা যে আধুনিকতার আবরণে অসুস্থতা তা কবে বুঝবো?
আমি বাংলা ভাষার সাধনা করে কাউকে গীতগোবিন্দ বা পদ্মাবতী হতে বলছিনা, বলছিনা ভাষার জন্য জীবন দিয়ে শহীদ মিনারের খুঁটি হতে, আমাদের পূর্বজনেরা তা অনেক আগেই করেছেন, কেবল শুদ্ধ বাংলার চর্চা করতে অনুরোধ জানাচ্ছি। যেদিন ওয়াইক্লিফ ল্যাটিন ছেড়ে ইংরেজি, মধূসূদন ইংরেজি ছেড়ে বাংলা আর রামকৃষ্ণভাবশিষ্য বিবেকানন্দ তাঁর দীক্ষাগুরুর ভাষার বলয় ভেঙ্গে নিজ ভাষায় প্রবেশ করেছিলেন স্বার্থক তারা সে দিনেই হয়েছিলেন এবং আজও স্বমহিমায় টিকে আছেন।
সকল ভাষা শহীদ আর ভাষা সংগ্রামীদের প্রতি শ্রদ্ধা।ভাষার মাসে কেবল শহীদ মিনার, কালো ব্যাচ, ফুলের তোড়া, খালি পায়ের মধ্যে আটকে না পড়ে আজ থেকে শুরু হোক শুদ্ধ ভাষার চর্চা। একজন বৃদ্ধ আনিসুজ্জামান বা আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ শুদ্ধ বাংলায় কথা বলে যদি হাজারো মানুষকে মুগ্ধ করতে পারেন তবে আমরা প্রাণবন্ত তরুণেরা কেন নয়?
বাংলা ভাষা জীবনের সামগ্রিক যোগসূত্র
শাহানীন সুলতানা মীম
ইংরেজি বিভাগ
শান্ত-মরিয়াম সৃজনশীল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
ভাষা যোগাযোগের একটি অন্যতম মাধ্যম। ভাষার মাধ্যমে আমরা আমাদের সুখ-দুঃখ, ভালো লাগা, খারাপ লাগা প্রকাশ করি। ভাষা একটি দেশের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। আর এই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণে ভাষা হচ্ছে শক্তিশালী হাতিয়ার। মাতৃভাষার প্রচলন কেবল ভাষাগত বৈচিত্র্য, বহু ভাষাভিত্তিক শিক্ষাকেই উৎসাহিত করবে না, বরং ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উন্নয়ন ও অনুধাবনের ক্ষেত্রে অতুলনীয় অবদান রাখবে। বাঙালি জাতি নিজের রক্ত দিয়ে প্রমাণ করেছে বাংলা তাদের নিকট ভালোবাসার মন্ত্র এবং সারা বিশ্বের নিকট তুলে ধরেছে ভাষা একমাত্র হতে পারে ভালোবাসার মন্ত্র। আমাদের মাতৃভাষা দিবসের মধ্যে দেশ, দেশের মানুষ, দেশের সংস্কৃতি ভালোবাসা’সহ নানা প্রেক্ষাপটের তাৎপর্য লুকিয়ে আছে।
বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি আত্মিক বন্ধনে অতপ্রোতভাবে জড়িত
নাজমুন নাহার
সমাজ কল্যাণ বিভাগ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস শুধুমাত্র একটি উদযাপন নয়, বরং এটি একটি ভাষার প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা এবং সংস্কৃতির প্রতি দায়িত্ববোধ। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমানে বাংলাদেশ) বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা প্রতিবাদ করে। পুলিশের গুলিতে সেদিন রহিম উদ্দিন, সালাম, বরকত, জব্বার, রফিকসহ বেশ কয়েকজন ছাত্র শহীদ হন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস প্রতি বছর ২১শে ফেব্রুয়ারি পালিত হয়। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর, জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কো ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এই দিনটি সারা বিশ্বে বিভিন্নভাবে পালিত হয়। বাংলাদেশে, সরকারিভাবে এই দিনটি শোক ও শ্রদ্ধা দিবস হিসেবে পালিত হয়। সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হয়। সারাদেশে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মিছিল ও শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। মাতৃভাষা মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি শুধুমাত্র যোগাযোগের মাধ্যমই নয়, বরং সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং পরিচয়েরও বাহক। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিশ্বের সকল মানুষকে তাদের মাতৃভাষা গর্বের সাথে ধারণ করতে এবং বিশ্বের বহুভাষিকতা রক্ষা করতে অনুপ্রাণিত করে। ২১ ফেব্রুয়ারি শুধুমাত্র মাতৃভাষার জন্য নয়, বরং বাংলার সাথে আমাদের আত্মিক বন্ধন টিকে রাখার দিনও। ভাষা কেবল যোগাযোগের মাধ্যম নয়, বরং এটি আমাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, পরিচয় এবং আবেগের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। বাংলা ভাষা আমাদের জীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছে এবং আমাদেরকে বাঙালি হিসেবে গড়ে তুলেছে। ২১ ফেব্রুয়ারি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে বাংলা ভাষার জন্য কত মূল্যবান জীবন উৎসর্গ করা হয়েছে। সেই ভাষার প্রতি আমাদের কতটা দায়িত্ব আছে, তাও এই দিন আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়।
২১ ফেব্রুয়ারি শুধু একটি দিনের উদযাপন নয়, বরং এটি একটি প্রতিজ্ঞার দিন। আমাদের সকলের উচিত এই দিনে বাংলার প্রতি আমাদের ভালোবাসা ও আনুগত্যের প্রতিজ্ঞা নবায়ন করা। বাংলা ভাষা আমাদের গর্ব এবং আমাদের পরিচয়। ২১ ফেব্রুয়ারি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে এই ভাষার জন্য কত ত্যাগ স্বীকার করা হয়েছে। আমাদের সকলের উচিত বাংলার সাথে আমাদের আত্মিক বন্ধন টিকিয়ে রাখা এবং এর প্রসার ও বিকাশে ভূমিকা রাখা। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস শুধুমাত্র একটি উদযাপন নয়, বরং এটি একটি ভাষার প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা এবং সংস্কৃতির প্রতি দায়িত্ববোধ।
নিজভূমে পরবাসী
মো. মহাইমিনুল ইসলাম অপু
ইম্পেরিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, খুলনা
পৃথিবী জুড়ে সমাদৃত ও সম্মানিত হলেও অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় খোদ বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর কাছে বাংলা ভাষা যেন অবহেলিত। অযত্ন অনাদরে পড়ে আছে দুঃখিনী বাংলা। সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন ও ব্যবহারে যে স্বপ্ন নিয়ে রক্ত দিয়েছিলেন বাংলার দামাল ছেলেরা, তাঁদের সে স্বপ্ন যেন আজ ক্রমশ ফ্যাকাশে হতে শুরু করেছে। ব্যক্তি পর্যায় থেকে শুরু করে সরকারি-বেসরকারি অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, আইন-আদালত, গণমাধ্যমসহ সর্বত্র উপেক্ষিত বাংলা। শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষত উচ্চ শিক্ষায় বাংলা ব্যবহার নেই বললেই চলে। অথচ ভাষাগত দিক থেকে বাংলা যথেষ্ট সমৃদ্ধশালী। তথাপি বাংলা যেন নিজভূমে পরবাসী। কবি মাইকেল মুধুসূদন দত্তের ভাষায়- হে বঙ্গ, ভান্ডারে তব বিবিধ রতন; তা সবে, (অবোধ আমি) অবহেলা করি।
বাংলাকে সমৃদ্ধ করতে হলে আমাদের শিক্ষা সহ নানা ক্ষেত্রে বাংলার গুরুত্ব দিতে হবে সর্বপ্রথমে এবং বাংলা ভাষার সৌন্দর্যকে প্রজন্ম পর প্রজন্মের নিকট সুস্পষ্ট থাকে এ বিষয়ে যথার্থ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে হচ্ছে ‘বিশেষজ্ঞ পুল’

প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে ‘জেলা বিশেষজ্ঞ পুল’ গঠন করতে যাচ্ছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। মূলত, শিক্ষা কর্মকর্তা ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মানসম্মত প্রশিক্ষণ নিশ্চিতের লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দেশের প্রতিটি জেলার জন্য বিশেষজ্ঞদের একটি তালিকা প্রস্তুত করা হবে, যারা শিক্ষক প্রশিক্ষণে পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দেবেন।
বুধবার (২১ মে) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং ও সমন্বয় অনুবিভাগের সহকারী সচিব মো. জাহাঙ্গীর হোসাইন স্বাক্ষরিত এক স্মারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, নির্ধারিত যোগ্যতা পূরণ করে সরকারি ও বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রের আগ্রহী ব্যক্তিরা এই বিশেষজ্ঞ পুলে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। আবেদনপত্র জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে পাঠাতে হবে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে। এই পুলের সদস্যরা ৩ বছর মেয়াদে দায়িত্ব পালন করবেন বলেও জানানো হয়েছে।
বিশেষজ্ঞ পুলে অন্তর্ভুক্তির জন্য শর্তাবলিতে বলা হয়েছে, ‘জেলা বিশেষজ্ঞ পুল’-এ অন্তর্ভুক্ত হতে চাইলে প্রার্থীদের অবশ্যই যেকোনো বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি থাকতে হবে। পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষা, সরকারি চাকরি সংক্রান্ত কার্যক্রম, বাজেট ব্যবস্থাপনা বা সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়ার যেকোনো একটি ক্ষেত্রে তাদের বিশেষজ্ঞ জ্ঞান থাকা আবশ্যক। অবশ্য, সরকারি ও বেসরকারি—উভয় ক্ষেত্রের আগ্রহী ব্যক্তিরা এই পুলে আবেদন করার সুযোগ পাবেন।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, পুলে অন্তর্ভুক্ত হলে সরকারি বিশেষজ্ঞরা সরকার নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী সম্মানী পাবেন। আর বেসরকারি বিশেষজ্ঞদের প্রতিটি সেশনের জন্য ২ হাজার ৫০০ টাকা হারে সম্মানী দেওয়া হবে। তবে বেসরকারি প্রার্থীদের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রকাশনা, গবেষণাপত্র কিংবা জাতীয় দৈনিক বা স্বীকৃত পত্রিকায় প্রকাশিত প্রবন্ধ বা নিবন্ধ থাকা বাধ্যতামূলক বলেও জানানো হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
৪৬তম ও ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার সময়সূচিতে পরিবর্তন

৪৭তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা প্রায় দেড় মাস পিছিয়ে ১৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। শুরুতে ২৭ জুন নির্ধারিত তারিখ পরে ৮ অগাস্ট করা হলেও এবার ৪৩ দিন পিছিয়ে তা ১৯ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)। বুধবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এছাড়া স্থগিত হওয়া ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার নতুন সময়সূচিও দিয়েছে পিএসসি। ২৪ জুলাই থেকে শুরু হবে লিখিত পরীক্ষা, যা ৩ অগাস্ট পর্যন্ত চলবে। এরপর ১০ থেকে ২১ অগাস্ট অনুষ্ঠিত হবে পদ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ের পরীক্ষা।
পিএসসির জনসংযোগ কর্মকর্তা এস এম মতিউর রহমান জানান, পরীক্ষার সময়সূচি, আসন বিন্যাস ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পিএসসি ও টেলিটকের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
উল্লেখ্য, ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল ৮ মে, তবে চাকরিপ্রত্যাশীদের আন্দোলনের কারণে তা স্থগিত করা হয়। প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ ২১ হাজার ৩৯৭ জন প্রার্থী লিখিত পরীক্ষার অপেক্ষায় রয়েছেন।
২০২৩ সালের ৩০ নভেম্বর ৪৬তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর, ২০২৪ সালের ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হয় প্রিলিমিনারি পরীক্ষা, যেখানে অংশ নিয়েছিলেন ২ লাখ ৫৪ হাজার ৫৬১ জন। এতে উত্তীর্ণ হন ১০ হাজার ৬৩৮ জন। পরে ‘বৈষম্য দূরীকরণে’ আরও ১০ হাজার ৭৫৯ জনকে উত্তীর্ণ ঘোষণা করে ২৭ নভেম্বর নতুন করে ফল প্রকাশ করে পিএসসি।
এদিকে, ২৮ নভেম্বর প্রকাশিত ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ৩ হাজার ৪৮৭টি ক্যাডার এবং ২০১টি নন-ক্যাডার পদে নিয়োগ দেওয়া হবে। ১০ ডিসেম্বর থেকে আবেদন শুরুর কথা থাকলেও তা একদিন আগে স্থগিত করা হয়। পরে ২৬ ডিসেম্বর সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি।
সংশোধিত নিয়মে আবেদন ফি ও মৌখিক পরীক্ষার নম্বর কমিয়ে ১০০ করা হয়, যা আগে ছিল ২০০। ফলে লিখিত ও মৌখিক মিলিয়ে মোট নম্বর কমে দাঁড়ায় ১০০০। পাশাপাশি, এবারই প্রথমবারের মতো আবেদনের বয়সসীমা বাড়িয়ে ৩২ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। আবেদন প্রক্রিয়া চলে ২৯ ডিসেম্বর থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
সায়েমের উদ্ভাবনী প্রযুক্তিতে ৩ বাংলাদেশি উপকৃত, আরও ১০ জনের সুযোগ

সায়েম নামের একজন উদ্ভাবক তার প্রযুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের তিনজনকে উপকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, আরও ১০ জন এই সেবা পেতে পারেন।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) অনুষ্ঠিত ইসমাইল আল-জাযারি “বিজ্ঞান উৎসবে প্রযুক্তি প্রদর্শনীতে” এই ঘোষণা দেন তিনি।
অর্থসংবাদ/সাকিব
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
সাম্য হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না করলে যমুনায় যাবে ছাত্রদল: জহির রায়হান

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদ সহ সভাপতি জহির রায়হান আহমেদ বলেন, সাম্য হত্যার আজকে ৭ দিন হয়ে গেছে। তবুও ইন্টেরিম কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার করতে না পারলে ছাত্রদল বসে থাকবে না। প্রয়োজনে যমুনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবে ছাত্রদল চরম ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। যদি ছাত্রদল চায় তাহলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সারা বাংলাদেশ অচল করে দিতে পারে।
মঙ্গলবার (২০ মে) রাতে সাম্য হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের দাবিতে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে মশাল মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার ব্যাপারে এর আগেও আমরা প্রশ্ন তুলেছি। সমাধান হয়নি। তারই পরিণতিতে সন্ত্রাসীর দ্বারা ছাত্রদলের কর্মীকে হত্যার শিকার হতে হয়েছে। তিনজন আটক করেছে কিন্তু তারা আদৌও জড়িত কিনা এখনও স্পষ্ট করেনি ইন্টেরিম সরকার। ছাত্রদল কর্মী হওয়ায় আপনারা তদন্ত করছেন না।
আজ রাত ৯ টায় কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি জহির রায়হানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ইবি শাখা বিশ্ববিদ্যালয়ের আনাস হলের সামনে থেকে মশাল মিছিলটি বের করে। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকের সামনে সমবেত হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ইবি ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ওমর ফারুক, আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ, সদস্য সচিব মাসুদ রুমী মিথুন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক- আনোয়ার পারভেজ, যুগ্ম আহ্বায়ক আনারুল ইসলাম, সালাহউদ্দিন। সদস্য সাব্বির হোসেন, রাফিজ আহমেদ, নুর উদ্দিন, তরিকুল ইসলাম সৌরভ, উল্লাস মাহমুদ, মুক্তাদির রহমান রুকনুজ্জামান, রাকিব হোসেন সাক্ষর, রায়হানুল ইসলাম টিপু, মেহেদী হাসান, রিফাত, রিয়াজ, ফজলে রাব্বি প্রমুখ।
অর্থসংবাদ/সাকিব/কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
অক্সফোর্ড ছাড়লেন ব্র্যাকের জন্য, পরে জানলেন অফার লেটার বাতিল

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি করছিলেন মুহাম্মদ উবায়দুল হক (জাবের উবায়েদ)। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির সুযোগ পেয়ে ছেড়ে দেন অক্সফোর্ডের চাকরি। কিন্তু অফার লেটার সাসপেন্ড হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তিনি।
সোমবার (১৯ মে) এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে এমনটাই জানান উবায়দুল হক।
তিনি ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন- সম্প্রতি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় আমার সঙ্গে বড় ধরনের একটি অন্যায় আচরণ করেছে। আমি স্কুল অব জেনারেল এডুকেশনে ফ্যাকাল্টি মেম্বার হিসেবে জয়েন করার জন্য আবেদন করি গত ফেব্রুয়ারিতে। দুই দফা ইন্টারভিউ, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস জমা ও সব প্রক্রিয়া শেষে কনফারমেশন ইমেইল পাই ২৮ এপ্রিল। লেকচারার হিসেবে অফার লেটার পাই গত ৯ মে। জয়েনিং ডেট উল্লেখ করা হয় জুনের ১ তারিখ। আমার সঙ্গে এইচআর থেকে যিনি যোগাযোগ করছিলেন তার পরামর্শক্রমে আমি ইউকে থেকে দেশে ফেরার সার্বিক প্রস্তুতি নিতে থাকি।
আপনারা জানেন যে আমি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অ্যাসেসমেন্ট অফিসার’ হিসেবে চাকরি করছিলাম গত মার্চ মাস থেকে। তবে দেশে আসতে চাচ্ছিলাম দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় যদি কিছু অবদান রাখা যায় সে চিন্তা থেকে।
সেই এইচআর অফিসারের সঙ্গে আলাপের ভিত্তিতে আমি আমার অক্সফোর্ডের অফিসে মে মাসের শুরুতেই নোটিশ দেই। সে অনুযায়ী তারা আমার রিপ্লেসমেন্ট হায়ার করে গত ১৩ মে। আর আমি রিজাইন করি ১৪ মে। একইসঙ্গে ২০ তারিখে দেশে আসার বিমানের টিকেটও বুক করি।
আমি যখন দেশে আসার সব প্রস্তুতি নিয়ে নিয়েছি এর মধ্যে গত ১৫ মে একতরফাভাবে কোনো কারণ না বলে আমার অফার লেটার সাসপেন্ড করে দেয় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়।
অক্সফোর্ডে আমার রিপ্লেসমেন্ট নিয়ে নেওয়ায় আগের জবে জয়েন করার আর সুযোগ নেই। আমি ব্র্যাকের ফিরতি ইমেইলে কারণ জানতে চেয়েছি। এর কোনো জবাব পাইনি।
আজ আবার জেনারেল এডুকেশনে স্কুলের ডিনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমায় এইচআর এর নোটিশ ও জবাবের দিকে রেফার করেন। আর বিস্তারিত কারণ বলার প্রয়োজন বোধ করেননি।
এইচআরের যে অফিসার আমার সঙ্গে সবকিছু নিয়ে আলাপ করেছেন শুরু থেকে তিনিও অফার সাসপেন্ডের ইমেইলের কপিতে আছে। তার এ ব্যাপারের জানার কথা থাকলেও উনি বলছেন যে কিছু জানেন না। উনি যেন কিছু লুকানোর চেষ্টা করছেন ও অসত্য বলছেন।
স্ট্যাটাসে তিনি আরও লেখেন, অফার লেটারে উল্লেখ ছিল যে জয়েনিং সন্তোষজনক ব্যাকগ্রাউন্ড ভেরিফিকেশনের ওপরে নির্ভর করবে। আমার বিরুদ্ধে কোনো ক্রিমিনাল রেকর্ড নেই। আমার মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ড ও সোস্যাল মিডিয়ায় টুকটাক লিখি। জুলাই কেন্দ্রিক একটিভিজমকে প্রমোট করি।
আমি ব্র্যাক থেকে আমার সেকেন্ড মাস্টার্স করেছি। সম্মানজনক শিভেনিং স্কলারশিপ পেয়ে বিশ্বের ১ নম্বর এডুকেশন স্কুল (টাইমস হায়ার এডুকেশন সাবজেক্ট র্যাংকিং অনুযায়ী) Institute of Education, UCL এ পড়েছি। আমি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২১ জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত কর্মরতও ছিলাম।
উবায়দুল হক জানান, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে সব মিলিয়ে ১ বছর কাজ করেছি ‘আউটরিচ ডেলিভারি অ্যাসিস্ট্যান্ট’ এবং ‘অ্যাসেসমেন্ট অফিসার’ হিসেবে। আমার বিভিন্ন সাকসেস স্টোরি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইট ও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারও করেছে দুই বার। তার পরেও আমার সঙ্গে এমন একটি অন্যায্য একটি জঘন্য আচরণ করলো; সেটা আমি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না।
আমি আর ব্র্যাকে জয়েন করবো না। কিন্তু এমন আচরণ তারা কীভাবে একজন মানুষের সঙ্গে করতে পারে সেটা বুঝতে চাই। কীভাবে আমার যোগ্যতাকে, দক্ষতাকে অগ্রাহ্য করে আমার সঙ্গে অন্যায় আচরণ করলো এর জবাব চাই। আমার মতো একজনের সঙ্গে এমন আচরণ করতে পারলে আরও কত মানুষের সঙ্গে এমন হয় সেটা আমরা জানি না। এর প্রতিকার জুলাই বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশে হতেই হবে।
জানা যায়, উবায়দুল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১২-১৩ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করার পর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিতে যোগদান করেন। এর আগে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকেন্ড মাস্টার্স করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বরাতে কমিউনিকেশন অফিস গণমাধ্যমকে জানান, ১৮৭২ সালের চুক্তি আইনের ধারা ৫ অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার অফার লেটারটি প্রত্যাহার করেছে। যথাযথ বিবেচনার পর এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।