অর্থনীতি
উচ্চ সম্ভাবনাময় নতুন খাত হতে যাচ্ছে জুয়েলারি

উচ্চ সম্ভাবনাময় নতুন একটি খাত হতে যাচ্ছে জুয়েলারি। এটা রপ্তানিকে বেগবান করতে পারে, আবার রপ্তানি বাস্কেটেও বৈচিত্র্য আনতে পারে। সোনাশিল্পের ক্ষেত্রে আমাদের যে ঐতিহ্য, ভুল পলিসির কারণে তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ট্যারিফ ন্যাশনালাইজেশন ট্যাক্স পলিসিটি ঠিক করা হলে এই খাতের সম্ভাবনা ও রাজস্ব আয় বাড়বে।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার (আইসিসিবি) নবরাত্রি হলে ‘রাজস্ব সম্ভাবনা ও যৌক্তিক কর কাঠামো’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে সরকার ন্যাশনাল ট্যারিফ পলিসি বলে একটি পলিসি গ্রহণ করেছে। সেখানে রপ্তানিতে নানা সুযোগ রাখা হয়েছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে সম্ভাবনাময় শিল্প হতে যাচ্ছে জুয়েলারি। তাই বসুন্ধরা গ্রুপের মতো বড় কম্পানিগুলোকে জুয়েলারি খাতে এগিয়ে আসতে হবে।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাজুসের সাবেক সভাপতি কাজী সিরাজুল ইসলাম, কার্যনির্বাহী সদস্য ডা. দিলীপ কুমার রায়, এফবিসিসিআইয়ের ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ পলিসি অ্যাডভাইজার মনজুর আহমেদ, এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র অতিরিক্ত মহাসচিব শাহ মো. আব্দুল খালেক, রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র্যাপিড) পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, জাতীয় কর আইনজীবী ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট ড. মো. নুরুল আজহার শামীম, বাজুসের সাধারণ সম্পাদক বাদল চন্দ্র রায়, কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন ও সহসভাপতি মাসুদুর রহমান।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও সিইও ড. এম. মাসরুর রিয়াজ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাজুসের সহসভাপতি রিপনুল হাসান। সঞ্চালনায় ছিলেন বাজুসের উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেল। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বারবার বলছেন রপ্তানিতে জোর দেওয়ার কথা। আমরা শুধু আরএমজির ওপর নির্ভর করছি। আমার মনে হচ্ছে, বাংলাদেশের জন্য আরেকটি রপ্তানিতে সম্ভাবনাময় খাত হতে যাচ্ছে জুয়েলারিশিল্প।
দীর্ঘ পরীক্ষিত ট্যারিফ পলিসিতে বলা আছে, আপনি যে পরিমাণ রপ্তানি করবেন, তার বিপরীতে যে পরিমাণ কাঁচামাল আমদানি করবেন তাতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবেন।’
আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, আমি ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের পক্ষ হয়ে কথা দিচ্ছি, আপনাদের বিশ্লেষণগুলো আমাদেরকে দেন। আমরা আপনাদেরকে নিয়ে আবার বসব। প্রয়োজনে একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হবে। এই কমিটির সুপারিশের আলোকে প্রয়োজনীয় সুপারিশ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) দেব। স্বর্ণশিল্প বিকাশে একটি সুষম কর ও শুল্ক কাঠামো তৈরিতে ট্যারিফ কমিশন যাতে ভূমিকা রাখতে পারে, সেই কাজটি আমরা করব।
পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম. মাসরুর রিয়াজ বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে আমরা এখন যেসব সুবিধা পাচ্ছি, এলডিসিতে গেলে সেগুলো আর থাকবে না। তাই যদি এখনই নতুন নতুন পণ্য তৈরি করতে না পারি তাহলে সেই জায়গায় টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে জুয়েলারি খাতের বড় একটি সম্ভাবনা আছে।
পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আরো বলেন, আমাদের স্থানীয় সোনার বাজার ২০২০ সালে ছিল প্রায় তিন বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি, যা প্রতিনিয়তই বৃদ্ধি হচ্ছে। ২০৩০ সালে এটা প্রায় ২৭ বিলিয়ন ডলারের বাজার হয়ে যাবে। এই সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জকে সামনে আনতে হবে।
বাজুসের উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেল তাঁর বক্তব্যে বলেন, আমরা শুধু কর কমানো বা বাড়ানোর কথাই বলছি না। আমরা বলতে চাই, এই খাত থেকে সরকার বছরে মাত্র ৪৫ কোটি টাকা রাজস্ব পায়। এই তথ্যটি সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম আমাদের এক সেমিনারে জানিয়েছেন। তিন লাখ কোটি টাকার স্থানীয় বাজার, সেখানে এই রাজস্ব আসার কথা নয়।

অর্থনীতি
বোরো মৌসুমে সরকারের ধান-চাল সংগ্রহে রেকর্ড

চলতি বোরো সংগ্রহ মৌসুমে সর্বোচ্চ ধান-চাল সংগ্রহ করেছে খাদ্য অধিদপ্তর।
অধিদপ্তর বলছে, খাদ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক ঘোষিত অভ্যন্তরীণ বোরো সংগ্রহ কর্মসূচি গত ১৫ আগস্ট শেষ হয়েছে। এবার ৩ লাখ ৭৬ হাজার ৯৪২ মেট্রিক টন ধান (১০৭.৬৯%), ১৪ লাখ ৬ হাজার ৫৩৩ মেট্রিক টন সেদ্ধ চাল (১০০.৪৬%) এবং ৫১ হাজার ৩০৭ মেট্রিক টন আতপ চাল (১০২.২১%) সংগৃহীত হয়েছে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
এবার সরকার অভ্যন্তরীণ বোরো সংগ্রহ কর্মসূচিতে ৩ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন ধান, ১৪ লাখ মেট্রিক টন সেদ্ধ চাল এবং ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে সরকার।
অর্থনীতি
৪৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ, ফারইস্টের ১৪ পরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ৪৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে নতুন একটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ মামলায় কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের ১৪ জন পরিচালককে আসামি করা হয়। দুদকের উপপরিচালক সৈয়দ আতাউল কবির গত ৩১ জুলাই ঢাকার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলা করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৩ সালের ৩ মার্চ অনুষ্ঠিত ফারইস্ট ইসলামী লাইফের ১৭৫তম পর্ষদ সভায়, ৩৬ তোপখানা রোডের ৩৩.৫৬ শতাংশ জমি ও একটি ভবন ২২৯ কোটি ১৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকায় কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন কোম্পানির ১৪ জন পরিচালক ও মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা।
দুদক জানায়, জমি ও ভবনের মূল্য অযাচিতভাবে অনেক বেশি ধরা হয়, যা আত্মসাতের উদ্দেশ্যেই করা হয়েছে।
এই ১৪ পরিচালক হলেন, বিমা কোম্পানিটির চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, যিনি প্রাইম পলিমার ও ফারইস্ট ইসলামী প্রোপার্টিজেরও চেয়ারম্যান। এছাড়া আমানত শাহ গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মো. হেলাল মিয়া, পিএফআই প্রোপার্টিজ ও নর্দার্ন জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের পরিচালক শাহরিয়ার খালেদ, মোশারফ গ্রুপের পরিচালক ও মোশারফ কম্পোজিট টেক্সটাইলের চেয়ারম্যান নাজনীন হোসেন, মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ডা. মো. মনোয়ার হোসেন, গেটকো টেলিকমিউনিকেশন ও গেটকো এগ্রো ভিশনের চেয়ারম্যান কে এম খালেদ, প্রাইম ব্যাংক ও প্রাইম ফাউন্ডেশনের উদ্যোক্তা এবং ম্যাক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টি এম এ খালেক, টারটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান ড. ইফফাৎ জাহান।
এ তালিকায় আরও আছেন, ফারইস্ট ইসলামী লাইফের পরিচালক খন্দকার মোস্তাক মাহমুদ, ফারইস্ট ইসলামী লাইফের পরিচালক মো. মিজানুর রহমান, মেডিনোভা মেডিকেল সার্ভিসের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন, ফারইস্ট ইসলামী লাইফের শেয়ারহোল্ডার পরিচালক রাবেয়া বেগম, স্বতন্ত্র পরিচালক ও আইডিআরএ’র সাবেক চেয়ারম্যান ড. এম মোশাররফ হোসেন এবং স্বতন্ত্র পরিচালক ও পিএফআই সিকিউরিটিজের সাবেক এমডি কাজী ফরিদ উদ্দীন আহমেদ। কোম্পানিটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হেমায়েত উল্যাহ-কেও দুদকের মামলার আসামি করা হয়।
এর আগে ফারইস্ট ইসলামী লাইফের আত্মসাতের ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের তিন মামলার মধ্যে ৭০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আসামি করা হয় ৯ জনকে। যাদের মধ্যে পরিচালক ছিলেন ৭ জন। তারা হলেন, নজরুল ইসলাম, কে এম খালেদ, শাহরিয়ার খালেদ, এম এ খালেক, মিজানুর রহমান, ফরিদউদ্দিন এফসিএ ও আসাদ খান।
এছাড়া ১১৫ কোটি আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে দুদকের মামলায় আসামি করা হয় ৮ জনকে। কোম্পানিটির সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী তাসলিমা ইসলাম, তাসলিমা ইসলামের ভাই সেলিম মাহমুদ, কোম্পানির সাবেক মুখ্য কর্মকর্তা হেমায়েত উল্যাহ, সাবেক ইভিপি ও প্রজেক্ট ইনচার্জ ইঞ্জিনিয়ার আমির ইব্রাহিম, টিপু সুলতান, ফুয়াদ আশফাকুর রহমান এবং মোহাম্মদ আলম খান।
জমি কেনার বিষয়ে বোর্ডসভায় যেসব সিদ্ধান্ত হয়
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ৩ মার্চ ফারইস্ট ইসলামী লাইফের ১৭৫তম পর্ষদ সভায় জমি কেনার সিদ্ধান্ত হয়। এই সভা হয় ফারইস্ট ইসলামী লাইফের প্রধান কার্যালয়ে। সভায় উপস্থিত কোম্পানিটির ১৪ জন পরিচালক ও মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এই জমি ক্রয়ের অনুমোদন করেন। সভায় ৩৬, তোপখানা রোডের ৩৩.৫৬ শতাংশ জমি ও ভবনের মূল্য, রেজিস্ট্রেশন খরচ ও অন্যান্য খরচসহ মোট ব্যয় ধরা হয় ২২৯ কোটি ১৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে জমির মূল্য নির্ধারণ করা হয় ২০০ কোটি ৩৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও বিল্ডিংয়ের মূল্য ধরা হয় ৭ কোটি টাকা।
এছাড়াও ট্যাক্স, ফি, রেজিস্ট্রেশন খরচ বাবদ আরও ২০ কোটি ৭৩ লাখ ৯৯ হাজার টাকা এবং রেজিস্ট্রেশন ও বিবিধ খরচ বাবদ- ১ কোটি ৩ লাখ ৬৯ হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় ওই সভায়। এর মধ্যে বায়না বাবদ ৭৫ কোটি টাকা অগ্রিম দেওয়া হয়। বাকি ১৩২ কোটি ৩৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা ৪ মাসের মধ্যে পরিশোধ করে দলিল রেজিস্ট্রির সিদ্ধান্ত হয়। পরে ২০১৪ সালের ১৬ মার্চ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেমায়েত উল্লাহ দলিল গ্রহীতা হিসেবে এবং জমির মালিক আজহার খান ও সোহেল খান দলিল দাতা হিসেবে ঢাকা জেলার সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে জমি রেজিস্ট্রি হয়। দলিল নং-১৮৮১।
যেভাবে পরিশোধ করা হয় জমির মূল্য
ফারইস্ট ইসলামী লাইফের কাছে জমি বিক্রি করেন আজাহার খান এবং সোহেল খান। তবে জমির মূল্য বাবদ ১৮১ কোটি ৫০ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয় আজাহার খানের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান মিথিলা টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজের নামে পরিচালিত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। যার মধ্যে জমি ক্রয়ের অগ্রিম বাবদ ৪ মার্চ ২০১৪ সালে পরিশোধ করা হয় ৭৫ কোটি টাকা। জমি রেজিস্ট্রির দিন (১৬ মার্চ ২০১৪) পরিশোধ করা হয় ১০৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এর মধ্যে মিথিলা টেক্সটাইলের ইউনিয়ন ব্যাংক গুলশান শাখায় জমা হয় ১৬৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আর এনসিসি ব্যাংক উত্তরা শাখার অ্যাকাউন্টে জমা হয় ১৩ কোটি টাকা।
এছাড়াও ফারইস্ট ইসলামী লাইফের নামে পরিচালিত দুটি ব্যাংক থেকে চেক দিয়ে নগদ তোলা হয় মোট ২১ কোটি ৬১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংক কারওয়ানবাজার শাখা থেকে তোলা হয় ৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা এবং শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক কারওয়ানবাজার থেকে তোলা হয় ১১ কোটি ৮৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এছাড়া সোনালী ব্যাংক বরাবর একটি পে-অর্ডার দিয়ে ২০ কোটি টাকা তোলা হয় ফারইস্ট ইসলামী লাইফের ইউনিয়ন ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে। এই টাকা তোলা হয় জমি রেজিস্ট্রি, স্ট্যাম্প ও অন্যান্য খরচ বাবদ।
জমি ক্রয়-বিক্রয়ে, নজরুল-খালেক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা কে কত নেন?
ফারইস্ট ইসলামী লাইফের জমি ক্রয়ের ক্ষেত্রে কোম্পানিটির সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী তাসলিমা ইসলাম এবং সাবেক পরিচালক এম এ খালেক ও তার স্ত্রী সাবিহা খালেক ও মেয়ে সারওয়াৎ খালেদ সিমিন মোট ৪৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। এর মধ্যে নজরুল ইসলাম আত্মসাৎ করেন ৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং তার স্ত্রী তাসলীমা ইসলাম আত্মসাৎ করেন ১০ কোটি টাকা। আর এম এ খালেক নেন ১৫ কোটি টাকা, তার স্ত্রী সাবিহা খালেক ২ কোটি ৬২ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং কন্যা সারওয়াৎ খালেদ সিমিন নেন ৭ কোটি ৮৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
তথ্য ছাড়াই এফডিআর করে আত্মসাৎ ২০ কোটি টাকা
মিথিলা টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজের ইউনিয়ন ব্যাংক গুলশান শাখায় জমির মূল্য পরিশোধ বাবদ মোট জমা হয় ১৬৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ওই টাকা থেকে ২০ কোটি টাকা জমা হয় সাউথ ইস্ট ব্যাংকের কামরাঙ্গির চর শাখায়। এই ২০ কোটি টাকার চেক দেন আজাহার খান। আজাহার খান সাউথ ইস্ট ব্যাংক কামরাঙ্গির চর শাখার নামে চেকটি দেন ২০১৪ সালের ১৬ মার্চ। এর তিন দিন পর (১৯ মার্চ) বিকাশের মাধ্যমে ব্যাংকটির সানড্রি ক্রেডিটর হিসাব নম্বরে এই টাকা জমা হয়।
এর পরদিন (২০ মার্চ) ব্যাংকটির ম্যানেজার এস এম মোর্শেদ ৬ জন ব্যক্তির নামে ৩ মাস মেয়াদি ৬টি এফডিআর করেন। এর মধ্যে এনায়েত হোসেনের নামে ৪ কোটি টাকা, শাহাদত হোসেন মল্লিকের নামে ৩ কোটি টাকা, আহমেদ করিম খানের নামে ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা, দেলোয়ার হোসেনের নামে ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা, সাইদুল ইসলামের নামে ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা এবং কামাল উদ্দিনের নামে ৩ কোটি টাকার এফডিআর হিসাব খোলা হয়। যার মধ্যে এনায়েত হোসেন, শাহাদত হোসেন মল্লিক ও আহমেদ করিম খানের নামে করা এফডিআর নগদায়ন করে সুদসহ মোট ১০ কোটি ৩৩ লাখ ৫৯ হাজার ২১৮ টাকা নেন এম এ খালেক। ২০১৪ সালের ২৪ জুন এই টাকা এম এ খালেকের সাউথ-ইস্ট ব্যাংক কামরাঙ্গির চর শাখায় তার নামে পরিচালিত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয়।
এছাড়া দেলোয়ার হোসেন, সাইদুল ইসলাম ও কামাল উদ্দিনের এফডিআর নগদায়ন করে সুদসহ মোট ১১ কোটি ৩২ লাখ ৮৬ হাজার ৬০৩ টাকা নেন ফারইস্ট ইসলামী লাইফের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের স্ত্রী তসলিমা ইসলাম। ওয়ান ব্যাংকের দিলকুশা বাণিজ্যিক শাখায় তসলিমার ব্যাকং অ্যাকাউন্টে এই টাকা জমা হয় তিনটি পে-অর্ডারের মাধ্যমে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এই ছয়জন গ্রাহকের হিসাব খোলার ফর্মগুলো সঠিকভাবে পূরণ করা হয়নি। ৬টি হিসাবের কোনোটিতেই সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের ছবি নেই। এ ছয়টি হিসাব খোলার ফরমে ইনট্রোডিউসার’র কোনো তথ্য নেই, কেওয়াইসি ফরম সম্পূর্ণ ফাঁকা বা কোনো তথ্য নেই। ফরম ফর রিপোর্টিং এসবিএস-২ এবং এসবিএস-৩ রিটার্ণ সম্পূর্ণ ফাঁকা। অর্থের উৎস সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই। শুধু গ্রাহকের এনআইডি’র ফটোকপি সংযোজন করা হয়।
সাপ্লায়ার পেমেন্ট দেখিয়ে আত্মসাৎ ২৫ কোটি টাকা
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, ২০১৫ সালের ২৪ মার্চ মিথিলা টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজের ইউনিয়ন ব্যাংক গুলশান শাখার অ্যাকাউন্টে সাপ্লায়ার পেমেন্ট হিসেবে জমা হয় ২৫ কোটি টাকা। এই ২৫ কোটি টাকা থেকে মিথিলা টেক্সটাইলের চেয়ারম্যান আহাজার খান ওই দিনই দু’টি পে-অর্ডারের মাধ্যমে এম এ খালেককে দেন ৫ কোটি টাকা। এই টাকা জমা হয় এম এ খালেকের সাউথ-ইস্ট ব্যাংক গুলশান শাখার দু’টি অ্যাকাউন্টে।
এছাড়াও একই তারিখে আরও দুটি পে-অর্ডারের মাধ্যমে এম এ খালেকের স্ত্রী সাবিহা খালেককে ২ কোটি ৬২ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং মেয়ে সারওয়াৎ খালেদ সিমিনকে ৭ কোটি ৮৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেন আহাজার খান। সাবিহা খালেক এবং সারওয়াৎ খালেদ সিমিনের টাকা জমা হয় প্রাইম ব্যাংকের এলিফ্যান্ট রোড শাখায় তাদের নিজ নিজ অ্যাকাউন্টে।
অপরদিকে, মিথিলা টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজের অ্যাকাউন্টে সাপ্লায়ার পেমেন্ট হিসেবে জমা হওয়া ওই ২৫ কোটি টাকা থেকে নজরুল ইসলাম ও তার স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে দেওয়া হয় মোট ৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এর মধ্যে- ২০১৫ সালের ২৪ মার্চ পে-অর্ডারের মাধ্যমে ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা নজরুল ইসলামের ওয়ান ব্যাংকে প্রধান শাখায় তার অ্যাকাউন্টে দেন আজাহার খান। মিথিলা টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজের একই অ্যাকাউন্ট থেকে একই দিনে নজরুল ইসলামের স্ত্রী তাসলিমা ইসলামের ওয়ান ব্যাংক মতিঝিল শাখার অ্যাকাউন্ট পে-অর্ডারের মাধ্যমে দেওয়া হয় ৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
দুদকের মামলায় আরও যারা আসামি
নজরুল ইসলাম ও এম এ খালেকের পরিবারের সদস্য ছাড়াও ফারইস্ট ইসলামী লাইফের ১৩ পরিচালককে আসামি করার পাশাপাশি মিথিলা টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ, সাউথ-ইস্ট ব্যাংক কামরাঙ্গীর চর শাখা এবং বিমা কোম্পানিটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আসামি করা হয় দুদকের এ মামলায়। তারা হলেন, ফারইস্ট ইসলামী লাইফের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেমায়েত উল্লাহ, কোম্পানি সেক্রেটারি সৈয়দ আব্দুল আজিজ, রিয়েল এস্টেট ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টের ইনচার্জ ইঞ্জিনিয়ার আমির মো. ইব্রাহিম, সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের স্ত্রী তাসলিমা ইসলাম, এম এ খালেকের স্ত্রী সাবিহা খালেক ও মেয়ে সারওয়াহ খালেদ সিমিন।
এছাড়াও মিথিলা টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান আজহার খান ও প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক সোহেল খান, সাউথ-ইস্ট ব্যাংক কামরাঙ্গীরচর শাখার সাবেক এক্সিকিউটিভ অফিসার গোলাম কিবরিয়া এবং ব্যাংকটির একই শাখার সাবেক ম্যানেজার এস এম মোর্শেদকে এই মামলায় আসামি করা হয়।
পরিচালকদের আসামি করার বিষয়ে যা বলা হয়েছে আইনে
বিমা আইন ২০১০ এর ১৩৬(২) ধারা অনুযায়ী, কোনো বিমাকারীর অর্থ বা সম্পত্তি অবৈধভাবে আত্মসাৎ হলে পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরাও দায়ী হবেন, যদি না তারা প্রমাণ করতে পারেন যে, অর্থ বা সম্পত্তি রক্ষায় তারা সব ধরনের যৌক্তিক পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। এছাড়া ১৩৫ ধারা অনুযায়ী, কোনো পরিচালক বা কর্মকর্তা অন্যায়ভাবে কোম্পানির সম্পদ অর্জন বা দখলে রাখলে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড এবং সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। এই আইনি ধারাগুলোর ওপর ভিত্তি করেই মামলাটি করা হয়েছে।
লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির লাইফ ফান্ডের অর্থ অবৈধভাবে দখলে রাখা, তছরুপ করা কিংবা অন্য কোনো উপায়ে হস্তগত করা হলে অর্থ আত্মসাতের সময়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরাও অভিযুক্ত হবেন বলে উল্লেখ করা হয় বিমা আইনে।
অর্থনীতি
পাচারকৃত ৪০ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তির সন্ধান পেয়েছে এনবিআর

বাংলাদেশ থেকে অর্থপাচার করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গড়া প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান পেয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)। চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত পাঁচটি দেশের সাতটি শহরে অনুসন্ধান চালিয়ে এই তথ্য পাওয়া গেছে বলে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে জানিয়েছেন সিআইসির মহাপরিচালক আহসান হাবিব।
রোববার (১৭ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান ও সিআইসি মহাপরিচালক প্রধান উপদেষ্টার সামনে এসব তথ্য তুলে ধরেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বার্তায় বিষয়টি জানানো হয়েছে।
এসময় জানানো হয়, নয়টি দেশে ৩৫২টি পাসপোর্টের সন্ধান পাওয়া গেছে যেগুলো টাকার বিনিময়ে অর্জন করেছে কিছু বাংলাদেশি। দেশগুলো হচ্ছে— অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডা, অস্ট্রিয়া, ডমেনিকা, গ্রেনেডা, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, নর্থ মেসিডোনিয়া, মালটা, সেন্ট লুসিয়া এবং তুরস্ক।
আহসান হাবিব বলেন, দেশে বসেই বিভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রাথমিক প্রস্তুতি শেষে সিআইসির গোয়েন্দারা দেশগুলোতে সরেজমিনে পরিদর্শন করে বিস্তারিত তথ্য তুলে নিয়ে আসেন।
আরও অনুসন্ধান চলমান আছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে অর্থপাচার করে গড়ে তোলা ৩৪৬টি সম্পত্তির সন্ধান মিলেছে। এটি আমাদের অনুসন্ধানের আংশিক চিত্র।
তিনি বলেন, এসব সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে বাংলাদেশের অনুকূলে নিয়ে আসার জন্য এবং অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সাজা নিশ্চিত করতে কাজ করছে সিআইসি।
তিনি জানান, ছয়টিরও বেশি আন্তর্জাতিক সংস্থা এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশকে সহযোগিতা করছে।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা যা পেয়েছি এটি টিপ অব দ্য আইসবার্গ। আমাদের কাছে এখনো প্রচুর তথ্য রয়েছে যা উন্মোচনে আরও সময় প্রয়োজন।
এই অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা শেখ হাসিনার আমলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডাটবেজ নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়ায় নিজেদের লোক বসিয়ে বহু তথ্য গায়েব করে দিয়েছে জানিয়ে আহসান হাবিব বলেন, আশার বিষয় হচ্ছে মুছে দেওয়া তথ্য উদ্ধারে দক্ষতা অর্জন করেছে সিআইসি।
বিস্তারিত জানার পর প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে দুদক, সিআইসি ও পুলিশের সিআইডিসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
তিনি বলেন, এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ দেশের সম্পদ লুট করে বিদেশে সম্পত্তি তৈরি করতে না পারে।
সিআইসিকে অনুসন্ধান কাজ চলমান রাখার নির্দেশনা দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যতদূর সম্ভব গভীরে যেতে হবে এবং সম্ভাব্য আরও দেশে অনুসন্ধান বিস্তৃত করতে হবে। যাতে দেশের সম্পদ দেশে ফিরিয়ে আনতে সম্ভাব্য সব পদক্ষেপে সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।
দেশের অর্থনৈতিক খাতের এই লুটপাটকে ভয়াবহ দেশদ্রোহিতা হিসেবে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর দেশ বিনির্মাণ করতে হলে অবশ্যই এই লুটেরাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
তিনি বলেন, দেশের সম্পদকে কীভাবে লুটপাট করেছে কিছু মানুষ তা জাতির সামনে প্রকাশ করতে হবে। সেজন্য সবগুলো সংস্থাকে জোটবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
কাফি
অর্থনীতি
আগস্টের ১৭ দিনে রেমিট্যান্স এলো সাড়ে ১৯ হাজার কোটি টাকা

আগস্ট মাসের ১৭ দিনেই বাংলাদেশে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি (১৬১ কোটি ৯০ হাজার ডলার) রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় এসেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ১৯ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, আগস্টের ১৭ দিনে ১৬১ কোটি ৯০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৪৯ কোটি ৩৩ লাখ ডলার। বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে এক ব্যাংকের (কৃষি ব্যাংক) মাধ্যমে এসেছে ১৫ কোটি ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৯৬ কোটি ২৭ লাখ ৬০ হাজার ডলার। এছাড়া বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩১ লাখ ৩০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স।
এর আগে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে দেশে এসেছে ২৪৭ কোটি ৭৯ লাখ ১০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩০ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। তবে ওই মাসে ৮টি ব্যাংকের মাধ্যমে কোনো রেমিট্যান্স আসেনি। এর মধ্যে রয়েছে— রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল) ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব)। বেসরকারি খাতে কমিউনিটি ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক ও পদ্মা ব্যাংক এবং বিদেশি ব্যাংকের মধ্যে হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া।
এর আগে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মার্চ মাসে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল, যা ছিল বছরের রেকর্ড পরিমাণ। আর পুরো অর্থবছর (২০২৪-২৫) জুড়ে প্রবাসী আয় এসেছে ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। উল্লেখ্য, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাসভিত্তিক রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল নিম্নরূপ- জুলাই: ১৯১.৩৭ কোটি ডলার, আগস্ট: ২২২.১৩ কোটি ডলার, সেপ্টেম্বর: ২৪০.৪১ কোটি ডলার, অক্টোবর: ২৩৯.৫০ কোটি ডলার, নভেম্বর: ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বর: ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারি: ২১৯ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারি: ২৫৩ কোটি ডলার, মার্চ: ৩২৯ কোটি ডলার, এপ্রিল: ২৭৫ কোটি ডলার, মে: ২৯৭ কোটি ডলার এবং জুনে এসেছে ২৮২ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারঘোষিত প্রণোদনা ও প্রবাসী আয়ের পথ সহজ করায় রেমিট্যান্স প্রবাহ ইতিবাচক ধারায় রয়েছে।
অর্থনীতি
সাড়ে ৫ মাস বন্ধের পর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু

সাড়ে পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পাঁচটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে মোট ১৫০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় পেঁয়াজবোঝাই ভারতীয় একটি ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
রোববার (১৭ আগস্ট) বিকেল ৪টায় জগদীশ চন্দ্র রায়ের ৩০ টন পেঁয়াজবোঝাই ট্রাকটি বাংলাদেশে প্রবেশ করার মাধ্যমে আমদানি কার্যক্রম শুরু হয়। হিলি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি রাশেদ ফেরদৌস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হিলি স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধের উপ-সহকারী কর্মকর্তা ইউসুফ আলী জানান, সততা বাণিজ্যালয়, নাশাত ট্রেডার্স, আল মক্কা ইমপ্রেস, সুরাইয়া ট্রেডার্স এবং জগদীশ চন্দ্র রায় পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন পেয়েছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ৩০ টন করে পেঁয়াজ আমদানি করতে পারবে।
এদিকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পেলেও পরিমাণ যথেষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন আমদানিকারকেরা।
আমদানিকারক নুর ইসলাম বলেন, ৩০ টন করে অনুমতি খুবই সীমিত, যা একটি ভারতীয় ট্রাকের সমান। আগে ২ হাজার থেকে ৫ হাজার টন পর্যন্ত আইপি দেওয়া হতো।
অন্যদিকে আমদানির খবরে দুদিনের ব্যবধানে হিলি স্থলবন্দরের বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। দুদিন আগে যেখানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ৭৫ টাকায়, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়।
হিলি কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের সর্বশেষ গত ৩ মার্চ এ বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছিল।
কাফি