জাতীয়
অবস্থা অপরিবর্তিত, হাদির দুই কিডনির কার্যক্ষমতা ফিরেছে: চিকিৎসক
দুর্বৃত্তের গুলিতে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির অবস্থা অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে কার্যক্ষমতা বন্ধ হয়ে যাওয়া তাঁর দুই কিডনি আবার সচল হয়েছে। ফুসফুসের কার্যক্রমও অপরিবর্তিত রয়েছে।
আজ রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান ঢাকা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক আবদুল আহাদ। এই হাসপাতালে ওসমান হাদির অস্ত্রোপচার দলে ছিলেন তিনি।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ওসমান হাদি এখন ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
চিকিৎসক আবদুল আহাদ বলেন, রবিবার দুপুরে ওসমান হাদির জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সভা হয়েছে। এর আগে ওসমান হাদির ‘রিপিট সিটি স্ক্যান’ করা হয়। পরে মেডিকেল বোর্ডের সভায় চিকিৎসকেরা এসব বিষয় জানান।
আবদুল আহাদ বলেন, ওসমান হাদির ব্রেইনের ক্ষত খুব গভীর। এখনো তাঁর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কামুক্ত নয়। লাইফ সাপোর্টের মাধ্যমে শরীরের অন্যান্য অঙ্গের কার্যকারতা চলছে।
এই চিকিৎসক ওসমান হাদির জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
আবদুল আহাদ বলেন, ‘খুব এক্সপার্ট হ্যান্ডে তাঁকে (ওসমান হাদি) হেড শুট করা হয়েছে।…বুলেটটা রাইট সাইড দিয়ে ঢুকে বাঁ সাইড দিয়ে বের হয়ে গিয়েছে।’
আবদুল আহাদ জানান, ওসমান হাদির ব্রেইনের ভেতরে এখনো বুলেটের একটি অংশ থেকে গেছে। এই অংশের অবস্থান ব্রেইনের স্পর্শকাতর রক্তনালির সঙ্গে।
আবদুল আহাদ বলেন, ‘একটা অংশ বের হয়ে গেছে। অপারেশনের সময় বুলেটের একটি শেল (কাভার) অংশ ডাক্তাররা বের করেছেন। তবে আরও একটি ছোট অংশ এখনো ব্রেইনের ভেতরে থেকে গেছে। ঝুঁকি বিবেচনা করে ডাক্তাররা যদি প্রয়োজন মনে করেন, এই অংশ বের করা সম্ভব তাহলে সেটা করবেন।’
এই চিকিৎসক জানান, ওসমান হাদি এখনো নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন। তবে তাঁর পরিবার বিদেশে চিকিৎসার জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছে; যদিও বিদেশে নেওয়ার বিষয়টি মেডিকেল বোর্ডের সম্মতি ও পরিবারের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে।
গত শুক্রবার বেলা ২টা ২৪ মিনিটে ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট এলাকায় ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। পেছন থেকে অনুসরণ করে আসা একটি মোটরসাইকেল থেকে এক ব্যক্তি ব্যাটারিচালিত রিকশায় থাকা হাদিকে গুলি করেন।
জাতীয়
ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ইসির নির্দেশ
পাশের উপজেলা থেকে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে সকল রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নিয়োগ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আজ সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনের উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে সকল রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছে ইসি।
চিঠিতে ইসি জানায়, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচন উপলক্ষে নির্ধারিত নীতিমালা অনুযায়ী ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল আগামী ১৮ ডিসেম্বর চূড়ান্ত করার জন্য ইতোমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছে। নীতিমালার আলোকে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট উপজেলায় ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার সংকুলান না হলে পার্শ্ববর্তী/নিকটবর্তী উপজেলা (স্ব স্ব জেলাধীন) হতে উক্তরূপ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য নির্বাচন কমিশন অনুমতি দিয়েছে।
এই অবস্থায়, উল্লিখিত সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
এদিকে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে দায়িত্ব পালন করা রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সকল কর্মকর্তাদের তথ্য সংগ্রহ করার নির্দেশ দিয়েছে ইসি। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা সকল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছে সংস্থাটি। সম্প্রতি ইসির উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ কথা বলা হয়।
নির্বাচন কমিশনের এ নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নির্বাচনকালীন সময়ে দ্রুত যোগাযোগ নিশ্চিত করতে উক্ত নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারদের পাশাপাশি—স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের তথ্য পাঠাতে হবে। এর মধ্যে উপমহাপুলিশ পরিদর্শক, পুলিশ কমিশনার, পুলিশ সুপার এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।
এছাড়া মাঠপর্যায়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নিজস্ব কর্মকর্তাদের—আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, সিনিয়র জেলা/জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং উপজেলা/থানা নির্বাচন কর্মকর্তাদের তথ্যও নির্ধারিত ছকে আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঠানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২৯ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের শেষ তারিখ ১১ জানুয়ারি; আর নিষ্পত্তি ১২ জানুয়ারি থেকে ১৮ জানুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি; রিটার্নিং কর্মকর্তা দ্বারা চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও প্রতীক বরাদ্দ ২১ জানুয়ারি। নির্বাচনি প্রচার চলবে ২২ জানুয়ারি থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত। আর ভোটগ্রহণ হবে ১২ ফেব্রুয়ারি।
জাতীয়
সিঙ্গাপুর পৌঁছেছে হাদিকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্স
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদিকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি সিঙ্গাপুরে অবতরণ করেছে। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটের দিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি সিঙ্গাপুরের সেলেতার বিমানবন্দরে ল্যান্ড করে।
এর আগে সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটের দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে উড্ডয়ন করে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি।
এর আগে দুপুর ১টা ১০ মিনিটে এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় হাদিকে বহন করা অ্যাম্বুলেন্সটি। অ্যাম্বুলেন্সটি বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। একপর্যায়ে দেড়টার দিকে তাকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয়।
এর আগে বেলা ১১টা ২২ মিনিটের দিকে সিঙ্গাপুর থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকায় এসে পৌঁছায়। ওসমান হাদির সঙ্গে সিঙ্গাপুরে যাচ্ছেন তার ভাই ওমর বিন হাদি ও ওসমান হাদির বন্ধু আমিনুল হাসান ফয়সাল। তিনি হাদির রাজনৈতিক সহযোদ্ধা ছিলেন।
জানা গেছে, চার ঘণ্টা উড্ডয়নের পর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি সিঙ্গাপুর বিমানবন্দরে পৌঁছালে সেখান থেকে ওসমান হাদিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হবে। ঢাকার এয়ারকেয়ার হাসপাতাল ও সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে তার দীর্ঘ এই সফরে সম্মত হয়েছেন।
গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকার পল্টন এলাকায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। তারপর থেকে সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন ওসমান হাদি।
গতকাল রোববার (১৪ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান, এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. জাফর, ওসমান হাদির ভাই ওমর বিন হাদির মধ্যে এক জরুরি কল কনফারেন্সে হাদিকে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।
গত দুদিন ধরে ওসমান হাদির চিকিৎসার জন্য সরকার সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়ার কয়েকটি হাসপাতালে যোগাযোগ করে। গতকাল এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের পরামর্শে ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনার পর প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিষয়ক বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান প্রধান উপদেষ্টাকে জানান, বর্তমানে ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত।
ওসমান হাদির চিকিৎসা সংক্রান্ত সব ব্যয় রাষ্ট্রীয়ভাবে বহন করা হবে। তার চিকিৎসা প্রক্রিয়া সার্বক্ষণিকভাবে পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতা কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া ও প্রার্থনা চেয়েছেন তিনি।
জাতীয়
নির্বাচন-গণভোট আয়োজনে ইসিকে সহযোগিতা দিতে পরিপত্র
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট সুষ্ঠুভাবে আয়োজনে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) সহযোগিতা দিতে পরিপত্র জারি করেছে সরকার। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ পরিপত্র জারি করা হয়েছে।
সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সিনিয়র সচিব, সচিব, রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তা, সব বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং মাধ্যমিক, প্রাথমিক, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকদের কাছে এ পরিপত্রের অনুলিপি পাঠানো হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ স্বাক্ষরিত পরিপত্রে বলা হয়, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ এবং গণভোট একই সঙ্গে অনুষ্ঠিত হবে। উল্লিখিত প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য ইসি এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিয়েছে। ইসি সচিবালয়ের অনুরোধক্রমে সরকারের পক্ষ হতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নেওয়া পরিকল্পনা করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, নির্বাচনসংক্রান্ত কার্যাদি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও সম্পাদনের জন্য সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ তথা সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত অফিস/প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্য থেকে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেসরকারি অফিস/প্রতিষ্ঠান থেকেও প্রিসাইডিং অফিসার/সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার/পোলিং অফিসার নিয়োগ করার প্রয়োজন হবে। সরকারি, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মধ্য থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষককে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ ছাড়াও নির্বাচনের বিভিন্ন দায়িত্ব প্রদান করা হতে পারে। এ ছাড়া বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবনগুলো ভোটকেন্দ্র হিসেবে এবং প্রতিষ্ঠানের আসবাবপত্র নির্বাচনের কাজে ব্যবহার করা প্রয়োজন হবে।
‘নির্বাচন কার্য সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য সংশ্লিষ্ট সব সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। অতীতেও তারা নির্বাচনের কাজে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে ইসিকে প্রয়োজনীয় সহায়তা ও সহযোগিতা দিয়েছেন। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নির্বাচন কর্মকর্তাদের শৃঙ্খলা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য ‘নির্বাচনি কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১’ বলবৎ রয়েছে। এতে কোনো কর্মকর্তা/কর্মচারী নির্বাচনসংক্রান্ত কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত হলে তিনি তার এরূপ নিয়োগের তারিখ থেকে নির্বাচনি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি না পাওয়া পর্যন্ত তার চাকরির অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ইসির অধীনে প্রেষণে চাকরিরত আছেন বলে গণ্য হবেন।’
পরিপত্রে বলা হয়, প্রেষণে চাকরিরত থাকাকালে নির্বাচনসংক্রান্ত দায়িত্ব পালনের বিষয়ে ইসি এবং ক্ষেত্রমত রিটার্নিং অফিসারের নিয়ন্ত্রণে থাকবেন এবং তিনি তার যাবতীয় আইনানুগ আদেশ বা নির্দেশ পালনে বাধ্য থাকবেন। প্রেষণে চাকরিরত থাকাকালে নির্বাচনসংক্রান্ত দায়িত্ব প্রাধান্য পাবে। এমতাবস্থায়, সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে রিটার্নিং অফিসারের যে কোনো আইনানুগ নির্দেশ জরুরি ভিত্তিতে পালনের নিশ্চয়তা বিধান করা প্রয়োজন।
সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১২৬ এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর অনুচ্ছেদ ৫ অনুসারে নির্বাচন অনুষ্ঠানে ইসিকে সহযোগিতা করা সবার একটি অবশ্যপালনীয় দায়িত্ব। এছাড়া গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৪৪৬ অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী নির্বাচনি সময়সূচি জারি হওয়ার পর হতে ফলাফল ঘোষণার পরবর্তী ১৫ দিন পর্যন্ত ইসির অনুমতি ছাড়া ওই অনুচ্ছেদে বর্ণিত কোনো কর্মকর্তা/কর্মচারীকে অন্যত্র বদলি করা যাবে না বলেও পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লিখিত অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে তিনটি ব্যবস্থা নিতে হবে বলে পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
১. আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কাজে অর্পিত দায়িত্ব আইন ও বিধি অনুযায়ী নিরপেক্ষভাবে পালন করে ইসিকে সহায়তা ও সহযোগিতা প্রদানের লক্ষ্যে সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ এবং অধিদপ্তর/দপ্তর/সংস্থা হতে তাদের অধীন কর্মকর্তা/কর্মচারীদের অবিলম্বে নির্দেশ দিতে হবে।
২. শিক্ষা মন্ত্রণালয়/প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় হতে সরকারি, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক/শিক্ষিকাদের প্রতিও এমন নির্দেশ জারি করতে হবে।
৩. নির্বাচন পরিচালনার কাজ অব্যাহত রাখার নিশ্চয়তা বিধানের জন্য সব মন্ত্রণালয়/বিভাগ তথা সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত অফিস/প্রতিষ্ঠান/সংস্থাকে তাদের যে সব কর্মকর্তা ও কর্মচারী নির্বাচনের কাজে জড়িত আছেন, নির্বাচনের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে ছুটি প্রদান বা অন্যত্র বদলি করা বা নির্বাচনি দায়িত্ব ব্যাহত হতে পারে এমন কোনো দায়িত্ব প্রদান হতে বিরত থাকতে হবে।
উল্লিখিত নির্দেশনা জারিসহ আনুষঙ্গিক কার্যাদি সম্পন্ন করে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠানে সর্বাত্মক সহায়তা দিতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানানো হয় পরিপত্রে।
জাতীয়
ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টা মামলা ডিবিতে হস্তান্তর
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় করা মামলাটি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মতিঝিল বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় পল্টন থানার দায়েরকৃত একটি মামলা ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। মামলাটি ডিবি মতিঝিল বিভাগ তদন্ত করবে।
এর আগে, রোববার রাতে ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় পল্টন থানা মামলা হয়। পুলিশ বলেছে, মামলায় ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে রাহুলসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।
পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ জাবের বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। হত্যার পরিকল্পনা, অর্থের জোগানদাতা পৃষ্ঠপোষকতাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১২ ডিসেম্বর দুপুরে নির্বাচনী প্রাচারণা চালানোর সময় রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জুমার নামাজ শেষে মতিঝিল দিক থেকে একটি কালো মোটরসাইকেলে করে দুজন ব্যক্তি আসে। মোটরসাইকেলের পেছনে বসা ব্যক্তি ক্লোজ রেঞ্জ (খুব কাছ) থেকে হাদির মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালায়। হামলার পরপরই মোটরসাইকেলটি দ্রুতগতিতে এলাকা ত্যাগ করে। এরপর হাদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে আনা হয়েছে। সেখানে থেকে গুরুতর অবস্থায় তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। তবে, মূল আসামি এখনও ধরা-ছোঁয়ার বাহিরে। গুলি করা সেই ব্যক্তিকে ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে সরকার।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. নজরুল ইসলাম জানান, ওসমান বিন হাদির ওপর হামলাকারী মূল আসামি দেশেই আছে। সন্দেহভাজন হামলাকারীদের পাসপোর্ট ব্লক করে দেওয়া হয়েছে।
এমকে
জাতীয়
সুদানে নিহত সেনাদের নেমপ্লেট পরে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন প্যারাট্রুপাররা
সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় শহীদ ছয় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর নেমপ্লেট পরে প্যারাট্রুপিং করবেন মহান বিজয় দিবসে প্যারাট্রুপিং করতে যাওয়াদের মধ্যে ছয়জন।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ‘আগামীকাল ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে ৫৪ জন প্যারাট্রুপার বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে প্যারাট্রুপিং করে বিশ্ব রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন।’
‘এই ৫৪ জনের শেষ ছয়জন পোশাকে নিজেদের নেমপ্লেটের পরিবর্তে সুদানের ইউএন ঘাঁটিতে নিহত ছয় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের নেমপ্লেট পরে প্যারাট্রুপিং করবেন।’
এর আগে গত শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয় শান্তিরক্ষী নিহত এবং আটজন আহত হন। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর এবং তার সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। তাদের সবার পরিচয় জানিয়েছে আইএসপিআর।
আইএসপিআর জানায়, সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিক বেসে শনিবার স্থানীয় সময় আনুমানিক বিকেল ৩টা ৪০ মিনিট থেকে ৩টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী ড্রোন হামলা চালায়।
হামলায় শহীদ শান্তিরক্ষীরা হলেন- নাটোরের মো. মাসুদ রানা (কর্পোরাল), কুড়িগ্রামের মো. মমিনুল ইসলাম (সৈনিক), রাজবাড়ীর শামীম রেজা (সৈনিক), কুড়িগ্রামের শান্ত মন্ডল (সৈনিক), কিশোরগঞ্জের মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম (মেস ওয়েটার) ও গাইবান্ধার মো. সবুজ মিয়া (লন্ড্রি কর্মচারী)।




