Connect with us
৬৫২৬৫২৬৫২

মত দ্বিমত

জাতিসংঘ: পতনের ছায়া নাকি পুনর্জাগরণের আলো?

Published

on

ব্লক

গাজায় শিশুর কান্না, ইউক্রেনে যুদ্ধবিধ্বস্ত শহর, রোহিঙ্গাদের দীর্ঘশ্বাস—তাহলে জাতিসংঘ কোথায়? দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসস্তূপ থেকে মানবতার শান্তি, ন্যায় ও নিরাপত্তার আশায় ১৯৪৫ সালে জাতিসংঘের জন্ম হয়েছিল। প্রতিশ্রুতি ছিল—একটি বৈশ্বিক মঞ্চ, যেখানে সব রাষ্ট্র সমানভাবে অংশ নেবে, আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ মীমাংসা হবে, আর মানুষের জীবন, স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষা পাবে। কিন্তু প্রায় আট দশক পর প্রশ্ন উঠছে—জাতিসংঘ কি সেই স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছে, নাকি এটি আজ পতনের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে?

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

আমি ব্যক্তিগতভাবে গত কয়েক বছরে সুইডেনসহ বিশ্বের নানা দেশে এ বিষয়ে প্রতিবাদ করেছি এবং বহু নিবন্ধ লিখেছি। কারণ কথা ছিল—যুদ্ধ নয়, আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ মীমাংসা হবে। সেই স্বপ্নের নাম ছিল জাতিসংঘ। ১৯৪৫ সালের ২৪ অক্টোবর নিউইয়র্কে প্রতিষ্ঠার সময় ৫১টি রাষ্ট্র বিশ্ব শান্তি ও মানবাধিকার রক্ষার অঙ্গীকার করেছিল। আজ সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯৩-এ।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

প্রতিষ্ঠার সময় কাঠামো ও লক্ষ্য ছিল স্পষ্ট। সাধারণ পরিষদ, নিরাপত্তা পরিষদ, আন্তর্জাতিক আদালত, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ—এসব অঙ্গ সংস্থা রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সমন্বয় ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য তৈরি হয়েছিল। নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যদের জন্য ভেটো ক্ষমতা নির্ধারণ করা হয়েছিল, যা তখন মনে করা হয়েছিল বড় শক্তিগুলোর মধ্যে সংঘাত প্রতিরোধ করবে। অথচ আজ দেখা যাচ্ছে, এই ভেটোই মানবিক সংকট মোকাবিলার প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

২০২৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এক তীব্র সমালোচনামূলক ভাষণ দেন। তিনি সংস্থাটিকে “বিকল” এবং “অকার্যকর” বলে আখ্যা দেন, দাবি করেন এটি বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ। এমনকি তিনি জাতিসংঘ ভবনের একটি ভাঙা এস্কেলেটর ও টেলিপ্রম্পটারের ত্রুটি পর্যন্ত তুলে ধরেন, যদিও জাতিসংঘের মুখপাত্র পরে স্পষ্ট করেন—এগুলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের কারণে হয়েছিল। ট্রাম্পের বক্তৃতায় অভিবাসন, জলবায়ু পরিবর্তন, ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির প্রসঙ্গও উঠে আসে। তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভিবাসন নীতি ও সবুজ জ্বালানি প্রকল্পের সমালোচনা করেন, জলবায়ু পরিবর্তনকে “বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রতারণা” বলে উল্লেখ করেন এবং ন্যাটো দেশগুলোর রাশিয়ার জ্বালানি ক্রয়কে দ্বৈত নীতি হিসেবে আখ্যা দেন।

ট্রাম্পের এ বক্তব্য বিশ্বজুড়ে আলোচিত হয়। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জাতিসংঘকে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেন, যা ট্রাম্পের জাতীয়তাবাদী দৃষ্টিভঙ্গির বিপরীত। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা তাঁর একতরফা নীতির সমালোচনা করে বলেন, এটি সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও ট্রাম্পের মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সংস্থাটির প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা কামনা করেন।

কিন্তু বাস্তবতায় দেখা যায়, জাতিসংঘ প্রায়ই শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর স্বার্থের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ে। ২০২৪ সালের গাজা সংকট তার বড় উদাহরণ। নিরাপত্তা পরিষদে মানবিক ত্রাণ পাঠানোর প্রস্তাব ভেটোর কারণে স্থগিত হয়, ফলে হাজারো শিশু, বৃদ্ধ ও অসহায় মানুষ খাদ্য ও চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়। শুধু গাজাই নয়, ইউক্রেন, মিয়ানমার, আফগানিস্তান বা হাইতির মতো দেশগুলোতেও জাতিসংঘের সীমাবদ্ধতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনকে তার সাফল্যের নিদর্শন হিসেবে দেখাতে চায়। বাংলাদেশ, ভারত, নেপালসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো এতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। কিন্তু হাইতিতে শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতন ও শিশুশোষণের অভিযোগ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গভীর প্রশ্ন তুলেছে। ২০১০ সালে হাইতিতে চোলেরা মহামারির জন্যও শান্তিরক্ষা বাহিনীকে দায়ী করা হয়েছিল। এসব ব্যর্থতা জাতিসংঘের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে।

বাজেটের ক্ষেত্রেও অসমতা স্পষ্ট। যুক্তরাষ্ট্র একাই প্রায় ২২% অর্থায়ন করে, যার কারণে সিদ্ধান্ত গ্রহণে তার প্রভাব অস্বাভাবিকভাবে বেশি। ছোট দেশগুলোর কণ্ঠস্বর প্রান্তিক হয়ে পড়ে। মানবাধিকার কাউন্সিলও প্রায়শ দ্বিমুখী নীতি অনুসরণ করে—ফিলিস্তিন বা ইয়েমেনে নীরবতা, অথচ তুলনামূলক দুর্বল রাষ্ট্রগুলোর ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থান। আন্তর্জাতিক আদালত ও অপরাধ আদালত প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকর হতে ব্যর্থ, কারণ যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীন এসব আদালতের রায় মানতে অস্বীকার করে।

আজ জাতিসংঘের সামনে এক কঠিন বাস্তবতা দাঁড়িয়ে আছে। ভেটো ক্ষমতার সংস্কার, মহাসচিব নির্বাচনে স্বচ্ছতা, বাজেটে ভারসাম্য, শান্তিরক্ষা মিশনে জবাবদিহিতা, মানবাধিকার কাউন্সিলের নিরপেক্ষতা—এসব ছাড়া জাতিসংঘকে আধুনিক বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকর করা সম্ভব নয়। জাতিসংঘ আধুনিক ইতিহাসে এক অমূল্য প্রতিষ্ঠান—দুর্যোগে ত্রাণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য প্রকল্পে এর অবদান অনস্বীকার্য। তবুও কাঠামোগত সীমাবদ্ধতা ও রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে এটি প্রায় অচল হয়ে পড়ছে।

বাংলাদেশের জন্য এই সংকট আরও গভীর। রাজনৈতিক অস্থিরতা, সীমান্ত সমস্যা, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত, রোহিঙ্গা সংকট, দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার সীমাবদ্ধতা—এসবই আমাদের জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা ও মর্যাদাকে প্রতিনিয়ত হুমকির মুখে ফেলছে। বৈশ্বিক সংহতি ও কার্যকর আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ছাড়া এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা প্রায় অসম্ভব। একজন বাংলাদেশি হিসেবে আমি বিশ্বাস করি, জাতিসংঘের সংস্কার কেবল বৈশ্বিক শান্তির জন্য নয়, আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের টিকে থাকার জন্যও অত্যাবশ্যক।

তাহলে প্রশ্ন একটাই—জাতিসংঘ কি পতনের পথে যাবে, নাকি পুনর্জাগরণের আলোয় বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে? আজ আমাদের দৃঢ় কণ্ঠে বলতে হবে—সংস্কারই জাতিসংঘের পুনর্জন্মের একমাত্র পথ।

রহমান মৃধা
গবেষক ও লেখক
সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
Rahman.Mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-

মত দ্বিমত

পিআর পদ্ধতি কার্যকর করতে আগে দরকার প্রশাসনিক সংস্কার

Published

on

ব্লক

প্রযুক্তির যুগে আমরা প্রায়শই দেখে থাকি-যা ভালো লাগে, তা-ই নকল করতে চাই। হতে পারে পোশাক, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান বা শাসনব্যবস্থা। তবে স্থান, কাল ও পরিস্থিতি অনুযায়ী সবকিছু একেবারে হুবহু স্থানান্তর সম্ভব নয়। যেমন—সুইডেনে বসবাস করে সুন্দর রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা দেখা যায়, তবে তা বাংলাদেশে সরাসরি প্রয়োগ করা সম্ভব নয়।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

উদাহরণস্বরূপ, সুইডেনে Proportional Representation (PR) বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব পদ্ধতিতে নির্বাচন হয়। এই পদ্ধতিতে জনগণ যে ভোট দেয়, তার অনুপাতে সংসদীয় আসন বণ্টন হয়। ফলে কোনো একক দল একচেটিয়া ক্ষমতা পায় না; সরকার পরিচালনার জন্য জোট গঠন অপরিহার্য।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

সুইডিশ রাজনীতির বৈশিষ্ট্য:
– স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা: মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় কঠোর নিয়ম ও অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র মেনে চলে।
– দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশ: অর্থের প্রভাব কার্যত সীমিত।
– জনঅংশগ্রহণ: ভোটের ফল যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়; সংসদ সদস্যরা জনগণের কণ্ঠস্বর হিসেবে কার্যকর।
– শিক্ষার মান ও সামাজিক চুক্তি: জনগণ ও রাষ্ট্রের মধ্যে বিশ্বাস দৃঢ়। ভোট কেবল ক্ষমতার বণ্টন নয়, নাগরিক অধিকার ও কল্যাণের প্রতিফলন।
– নির্বাচনের স্বচ্ছতা: ভোট গ্রহণ, গণনা ও পর্যবেক্ষণ সম্পূর্ণ বিশ্বাসযোগ্য ও স্বাধীন।

ফলস্বরূপ, সুইডেনে সংসদ কার্যকর ও স্থিতিশীল; মতবিরোধ থাকলেও আইন প্রণয়ন, রাষ্ট্র পরিচালনা ও নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সঠিকভাবে নিশ্চিত হয়।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট
বাংলাদেশে PR পদ্ধতি সরাসরি চালু হলে সুইডেনের মতো ইতিবাচক ফলাফল আশা করা যায় না। কারণ:
– মনোনয়ন বাণিজ্য: প্রার্থী তালিকায় স্বজনপ্রীতি, ঘুষ ও অর্থের প্রভাব প্রচলিত।
– প্রচণ্ড ব্যয়বহুল প্রক্রিয়া: প্রতিযোগিতা অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও জটিল।
– ক্ষমতার অপব্যবহার: সংসদ সদস্যরা আইন প্রণয়নের বদলে প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারেন।
– দলীয় প্রধানের কেন্দ্রীভূত ক্ষমতা: সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়ায় একক নেতা বা ছোট গোষ্ঠীর প্রভাব বেশি।
– রাজনৈতিক প্রভাব প্রশাসনে: আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন রাজনৈতিক চাপের অধীনে কাজ করে।

ফলাফল: রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ সঙ্কট বৃদ্ধি এবং অর্থনীতি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বিপন্ন।

কাঠামোগত সংস্কারের প্রধান ধাপ
১. সংসদ সদস্যদের ক্ষমতা সীমিতকরণ: মূল দায়িত্ব হওয়া উচিত আইন প্রণয়ন ও নীতি নির্ধারণ। প্রশাসনিক ক্ষমতা তাদের হাতে থাকা উচিত নয়।
২. স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করা: ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পরিষদকে আইন বাস্তবায়ন, বাজেট ও উন্নয়ন পরিকল্পনার দায়িত্ব দেওয়া।
৩. জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা বৃদ্ধি:
– মনোনয়ন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করা।
– দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর আইন প্রয়োগ।
– জনগণের মতামত নেওয়া বাধ্যতামূলক।
৪. দলীয় অর্থায়নের স্বচ্ছতা: তহবিল ও দানের হিসাব প্রকাশ বাধ্যতামূলক।
৫. গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতার স্বাধীনতা: রাজনৈতিক জবাবদিহিতা ও দুর্নীতি উন্মোচন নিশ্চিত করবে।

ফলস্বরূপ, রাজনীতি হবে নীতি নির্ধারণ ও দূরদর্শিতার স্থান, প্রশাসন হবে জনগণের সেবার মঞ্চ।

নিরপেক্ষ প্রশাসনের মডেল: সুইডেন
সুইডেন দেখায়, একটি দেশের অগ্রগতি তখনই স্থায়ী হয় যখন প্রশাসন রাজনীতির হাত থেকে স্বাধীন।
– স্বাস্থ্যসেবা: জাতীয় স্বাস্থ্য ও কল্যাণ বোর্ড।
– সামাজিক নিরাপত্তা: Försäkringskassan (সোস্যাল ইন্সুরেন্স এজেন্সি)।
– শ্রমনীতি, পরিবেশ, শিক্ষা ও অন্যান্য: প্রতিটি খাতে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত।

রাজনীতিবিদরা কেবল নীতি নির্ধারণে সীমাবদ্ধ থাকেন, বাস্তবায়ন পেশাদার প্রশাসন সম্পন্ন করে। বাংলাদেশেও যদি প্রতিটি খাতে স্বতন্ত্র ও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা যায়, রাজনীতি আর দুর্নীতির বাহন হবে না।

সুইডেনের সংসদীয় ব্যবস্থা শেখায়, PR কার্যকর হতে হলে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশ অপরিহার্য। বাংলাদেশে PR সরাসরি প্রয়োগ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। তাই জরুরি:
– সংসদ সদস্যদের ক্ষমতা সীমিত করা,
– স্থানীয় সরকারকে ক্ষমতায়িত করা,
– নিরপেক্ষ ও স্বতন্ত্র প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা।

ফলে বাংলাদেশের রাজনীতি সত্যনিষ্ঠ, শিক্ষিত ও দেশপ্রেমিক নাগরিকদের নেতৃত্বে পরিচালিত হবে, যা দীর্ঘমেয়াদে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করবে।

-বাংলাদেশ যদি এই সংস্কারগুলো কার্যকর করতে পারে, তবে এক প্রজন্মের মধ্যে রাষ্ট্রীয় রাজনীতি ধ্বংসের মুখ থেকে ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে।
-শুধুমাত্র PR নয়, সুস্থ প্রতিষ্ঠান ও নিরপেক্ষ প্রশাসনই প্রকৃত পরিবর্তনের চালিকা শক্তি।

রহমান মৃধা
গবেষক ও লেখক
সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
Rahman.Mridha@gmail.com 

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

হাটে জন বিক্রি আধুনিক দাসত্বের অন্ধকার ও রাষ্ট্রীয় দায়

Published

on

ব্লক

বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজে আজও “নহাটার হাটে জন (কৃষিশ্রমিক বা কিষাণ) বিক্রি” এক বিভীষিকাময় বাস্তবতা। এই হাটে মৌসুমি জনেরা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকে-অপেক্ষায় থাকে নিজেদের শ্রমকে নগদ মূল্যে বিকিয়ে দেওয়ার। আর জমির মালিক বা কৃষকরা দরদাম করে তাদের কিনে নেয় দিনের বা মৌসুমের জন্য। আমার শৈশবের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতায় নহাটার হাটে জন বিক্রির ভয়াবহ দৃশ্য চোখে দেখেছি, যা আজও নির্মমভাবে চলমান। একবার হাটে দাসত্বের এই বাণিজ্যে বিক্রি হয়ে গেলে শ্রমিকেরা নিয়োগকর্তার খেয়াল-খুশি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত নিজ বাড়িতে ফিরে যেতে পারে না। এই প্রথা শ্রমিকদের স্বাধীনতা সম্পূর্ণভাবে গ্রাস করে, তাদের অস্তিত্বকে অবমানবিক দাসত্বের গহ্বরে নিক্ষেপ করে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

জন হাটের ইতিহাস গভীর শোষণ ও অমানবিকতার অন্ধকারে নিমজ্জিত। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনে গ্রামীণ অঞ্চলে চালু ছিল কুলি বাজার—যেখানে মৌসুমি শ্রমিকদের সস্তায় বিক্রি হতো। পাকিস্তান আমলেও জমিদাররা মৌসুমি শ্রমিক কেনাবেচার মাধ্যমে তাদের আধিপত্য বজায় রাখত। স্বাধীনতার পরও এই প্রথা এক বিকৃত উত্তরাধিকার হিসেবে টিকে আছে। জন হাট তাই কোনো আকস্মিক উদ্ভাবন নয়; বরং এটি শোষণ, পরাধীনতা ও ক্ষমতাবাদী নিপীড়নের ধারাবাহিক কাঠামোর নগ্ন প্রকাশ।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

জন বা কৃষিশ্রমিকদের জীবনযাত্রা একেবারেই ঐতিহাসিক দাসত্বের সমতুল্য। তাদের খাবার অপ্রতুল—এক মুঠো ভাত, সামান্য ডাল, বা কখনো রুটি। ঘুমাতে হয় অস্থায়ী ছাউনিতে বা খোলা আকাশের নিচে। অসুস্থ হলে আয় বন্ধ হয়ে যায়, চিকিৎসার ন্যূনতম সুযোগ মেলে না। হাটে দাঁড়িয়ে শ্রম বিক্রি করা তাদের জন্য সামাজিক কলঙ্ক, এক অদৃশ্য শৃঙ্খল। অতীতে দাসেরা যেমন প্রভুর দয়ার উপর নির্ভরশীল ছিল, আজকের জনেরাও নিয়োগকর্তার করুণার দাস। শর্ত পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা নিজের বাড়িতে ফিরতে পারে না। গার্মেন্টস শিল্পের উত্থান হয়তো এই শৃঙ্খল কিছুটা আলগা করেছে, দৈনিক মজুরি কিছুটা বেড়েছে—কিন্তু মৌলিক কাঠামো আজও দাসত্বেরই নামান্তর।

আমার ছোটবেলার এক করুণ স্মৃতি—মধুমতি নদীর নৌকাডুবির ঘটনা—প্রমাণ করে জন সম্প্রদায়ের জীবনের তুচ্ছতা ও অবমাননা। সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছিল, ঐ দুর্ঘটনায় ছয়জনের মৃত্যু হয়, যাদের মধ্যে চারজন ছিল জন সম্প্রদায়ের। রাষ্ট্রীয় এবং সামাজিক মূল্যায়নের বিচারে তাদের মৃত্যু কেবল পরিসংখ্যান হয়ে গিয়েছিল; যেন তারা পূর্ণ মানুষ নয়, অবহেলার ভারে চূর্ণিত আধা-অস্তিত্ব।

ঐতিহাসিক দাসত্বের সঙ্গে জন হাটের তুলনা সুস্পষ্ট। অতীতে দাসেরা ছিল প্রভুর চিরস্থায়ী সম্পত্তি—তাদের কোনো মজুরি ছিল না, স্বাধীনতা ছিল না, মর্যাদা ছিল শূন্য। জন হাটের শ্রমিকরা অল্প মজুরি পেলেও তাদের জীবনযাত্রা অমানবিক, সামাজিক মর্যাদা প্রায় অনুপস্থিত। খাদ্যের অনটন, নিরাপদ ঘুমের অভাব, স্বাস্থ্যসেবার অনুপস্থিতি, সর্বত্র অবহেলা—সব মিলিয়ে তারা আধুনিক ক্রীতদাস ছাড়া আর কিছু নয়। স্বাধীনতার ঘোষণার সময় বলা হয়েছিল মানুষ মানুষের জন্য হবে, শোষণহীন সমাজ গঠিত হবে। কিন্তু অর্ধশতক পেরিয়েও বাংলাদেশে জন প্রথার অবসান ঘটেনি; বরং শোষণ আরও সূক্ষ্ম, আরও নির্মম হয়েছে।

রাজনীতিবিদদের দুর্নীতি এই বৈষম্যকে রক্তক্ষরণময় ক্ষত হিসেবে আরও গভীর করেছে। সাধারণ মানুষ ক্ষুধার্ত, অনাহারী, অমানবিক অবস্থায় দিনাতিপাত করছে—অপরদিকে রাজনীতির তথাকথিত অভিভাবকেরা লুটতরাজে মত্ত। সরকারি প্রকল্প থেকে টাকা আত্মসাৎ, টেন্ডারবাজি, বিদেশে অবৈধ সম্পদ পাচার—সবই রাষ্ট্র ও সমাজকে বিষাক্ত করেছে। বিচারব্যবস্থা, যা ন্যায়বিচারের সর্বোচ্চ আসন হওয়ার কথা, আজ দুর্নীতি, পক্ষপাত ও ক্ষমতার দাসত্বে নিমজ্জিত। এই প্রতিষ্ঠান ন্যায়কে নির্বাসনে পাঠিয়ে অবিচারকে অভ্যাসে পরিণত করেছে। এক কথায়—বাংলাদেশের বিচার বিভাগ আজ পবিত্রতার মুখোশে লুকানো সবচেয়ে অপবিত্র ক্ষেত্র।

সমাধানের পথ স্পষ্ট, কিন্তু বাস্তবায়নের ইচ্ছা অদৃশ্য। ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা, শ্রমিকদের নিবন্ধন ও সামাজিক সুরক্ষা প্রদান, নিরাপদ আবাসন ও খাদ্যের নিশ্চয়তা, স্বাস্থ্যবিমা ও বয়স্কভাতা চালু করা, স্থানীয় সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, শ্রম আইন ও মানবাধিকার আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করা, এবং সর্বোপরি সমাজের মানসিকতার পরিবর্তন—এসব ছাড়া মুক্তি নেই।

কিন্তু নহাটার মতো সারা বাংলাদেশের অগণিত হাটে আজও জন বিক্রি প্রথা নির্মমভাবে বহাল রয়েছে। মধুমতি নদীর নৌকাডুবি, রাজনীতির দুর্নীতি ও চরম বৈষম্য প্রমাণ করে—শুধু নহাটায় নয়, বাংলাদেশের সর্বত্র কৃষিশ্রমিকরা আধুনিক দাসত্বের অন্ধকারে বন্দি। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক দাসপ্রথার উত্তরসূরি আজকের এই জন হাট; ধনী-দরিদ্রের চরম বৈষম্য, রাষ্ট্রীয় উদাসীনতা এবং রাজনীতির কদর্য চরিত্র মিলে এই বর্বরতাকে অমর করে রেখেছে।

প্রশ্ন জাগে—কবে ভাঙবে এই অভিশপ্ত প্রথা? কবে জনরা স্বাধীন বাংলাদেশের প্রকৃত নাগরিক হিসেবে পূর্ণ মর্যাদা পাবে? আজ তারা কেবল জীবনের ঝুঁকি, নিরাপত্তাহীনতা ও অবহেলার বোঝা বইছে। সমাজে ন্যায়বিচার, ন্যায্য মজুরি, নিরাপদ জীবন ও শ্রমিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ছাড়া এই অভিশাপ মোচনের কোনো পথ নেই। কিন্তু রাষ্ট্র কি সত্যিই এই দায় স্বীকার করবে? আজও আমি তা দেখি না। তবে একান্ত সাধ জাগে—একদিন যেন সত্যিই তা দেখি!

রহমান মৃধা
গবেষক ও লেখক
সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
Rahman.Mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

বাংলাদেশের রাজনীতিতে দফা বনাম বাস্তবতা

Published

on

ব্লক

আল্লাহর সৃষ্টির সবকিছুর পেছনে কারণ রয়েছে। সংখ্যা ৪০ ইসলামী শিক্ষায় বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ; নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর ওহী প্রাপ্তি, মূসা (আ.)-এর ৪০ দিনের প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য নবীদের জীবনধারায় এটি পরিপক্বতা, ধৈর্য ও আল্লাহর নৈকট্যের প্রতীক।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকেও দেখা যায়, কোনো নতুন অভ্যাস গড়ে তুলতে বা নেতিবাচক প্রবণতা বদলাতে ধারাবাহিক প্রচেষ্টা দরকার, যা প্রায় ৪০ দিনের মতো সময়ে স্থায়ী রূপ নেয়। সুতরাং, জীবনের কোনো পরিবর্তন তাড়াহুড়ো করে সম্ভব নয়; সময়, ধৈর্য এবং নিয়মিত চর্চা ছাড়া সত্যিকারের রূপান্তর অর্জন করা যায় না, বিশেষ করে যদি আমরা যৌথ উদ্যোগে কোনো ভালো কাজ করতে চাই।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা সবাই একমত হয়েছি—বাংলাদেশকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে হবে। কিন্তু শুধুমাত্র ভালো ইচ্ছে যথেষ্ট নয়; দরকার স্পষ্ট পদক্ষেপ এবং কার্যকর সংস্কার। গত এক বছরে অনেক কিছু হয়েছে, কিন্তু সংস্কার—যা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—প্রায় অসম্পূর্ণই রয়ে গেছে। দেশে দফার ছড়াছড়ি দেখলে মনে হয়, রাজনীতি মানেই কেবল দফা বানানোর প্রতিযোগিতা।

দফাগুলোতে বলা হয় কী করা হবে আর কী করা হবে না, বিশেষ করে ক্ষমতায় গেলে কী করা হবে—এ নিয়ে হৈচৈ লেগেই থাকে। কিন্তু প্রশ্ন হলো—যদি ক্ষমতায় যাওয়া না হয়, তখন কী হবে? এর কোনো রূপরেখা কি আমরা কখনো শুনেছি? না। মানে দাঁড়ালো, সব দফাই ক্ষমতার সঙ্গে শর্তযুক্ত। তাহলে জনগণের সামনে এসব প্রতিশ্রুতির মানেটা কী? ভোটের আগে আশ্বাস, বাস্তবে ব্যর্থতা—এটি কি বিভ্রান্তি, নাকি শুধু নাটক?

ইতিহাসে উদাহরণ স্পষ্ট। শেখ মুজিবের সময় ছিল ৬ দফা—সর্বোচ্চ স্পষ্ট ও লক্ষ্যভিত্তিক। স্বাধীনতার পর তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানোর কারণে স্বাধীনতার চেতনা বাস্তবায়িত হলো না। জাতি হারালো বিশ্বাস—বাকি সব হলো ইতিহাস।

বর্তমানের ৩১ দফা বা অন্যান্য দলের দফা—সবই বড়, কিন্তু বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্য নেই। চাঁদাবাজি, দুর্নীতি—যা দফায় নেই—ও বাস্তবে ঘটছে। এর মানে—দফা শুধু মঞ্চের বুলি; কাজ হচ্ছে উল্টো।

আমি বিএনপির উদাহরণ দিয়েছি, কিন্তু এখানে যেকোনো দলের নাম বসানো যায়। এমনকি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাজও ছিল সংস্কার আনা, কিন্তু তারা সেই সংস্কারকে বাদ দিয়ে প্রায় সবই করেছে—দুর্নীতি, লুটপাটসহ আরও কত কী। এতে স্পষ্ট হয়, শুধু নির্বাচিত সরকার নয়, রাজনীতির যে কোনো স্তরে স্বার্থপরতা ও দায়িত্বহীনতা রূপ নিচ্ছে।

দফা ও প্রতিশ্রুতির কাগজে লেখা সব ভালো শোনায়, কিন্তু বাস্তব কাজের সঙ্গে মিল নেই। চাঁদাবাজি, স্বার্থপরতা ও দুর্নীতি—এসব তখনও চলতে থাকে, যখন সরকার (নির্বাচিত বা অন্তর্বর্তীকালীন) দায়িত্ব নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। ফলোআপ ও বাস্তবায়ন ছাড়া, সব দফা কেবল মঞ্চের বুলি হয়ে যায়, আর জনগণ বিভ্রান্ত হয়।

আমার শিল্পকারখানার অভিজ্ঞতা এখানে প্রাসঙ্গিক। প্রতিদিনের টু-ডু লিস্ট তৈরি করতাম। দিনশেষে মিলিয়ে দেখতাম—যত দ্রুত সম্ভব গুরুত্বপূর্ণ মনে করা কাজগুলোও প্রায়ই করা হতো না, তবুও বড় সমস্যা হত না। এটি শিখিয়েছে—কোন কাজ সত্যিই জরুরি, আর কোন কাজ কেবল তাড়াহুড়োর কারণে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে। ফলোআপ তখনই দরকার হয়; এটি শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, আত্মসমালোচনার মাধ্যম।

রাজনীতিতেও একই প্রশ্ন প্রযোজ্য। রাজনৈতিক দলের দফা আসলে টু-ডু লিস্টের মতো—যা করা হবে, তা যদি বাস্তবে ফলোআপ না হয়, তবে তা কেবল শব্দের খেলা। ৩১ দফার ঘোষণার পর কি কোনো আপডেট বা বাস্তবায়ন হয়েছে? না। বাস্তবতা দেখায়—চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, স্বার্থপরতা চলছেই। ফলোআপ ও দায়বদ্ধতা ছাড়া, দফা কেবল কাগজে লেখা।

আমাদের মনে রাখা দরকার—আমরা ততক্ষণই স্মার্ট, যতক্ষণ অন্য কেউ আমাদের চালাকি ধরতে পারছে না। চোরও ততক্ষণ সাধু, যতক্ষণ সে ধরা পড়ে না। যদি সত্যিই সবাই দেশকে উন্নত করতে চায়, আর সবাই একমত হয়, তাহলে সমস্যা কোথায়? সময় যদি একটু বেশি লাগে, ক্ষতি কী? তাড়াহুড়ো কেন? নির্বাচনের ব্যস্ততায় রাজনীতিবিদদের মুখের জিভ শুকিয়ে গেছে। সংস্কারের অঙ্গীকার করা হয়েছে, কিন্তু পদক্ষেপ নেই। দফা বানানো হয়েছে অনেক, কিন্তু বাস্তবে কোনো দফাই মানা হয়নি। প্রতিশ্রুতির কাগজে লেখা আর বাস্তবের কাজ—আকাশ-পাতাল ফারাক।

সুতরাং প্রশ্ন উঠে—রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের আদৌ দেশের প্রয়োজন আছে কি? নাকি উল্টো, এই নেতা-কর্মীরাই দেশের মূল সমস্যা? জনগণ চায় সরাসরি উত্তর। তারা দেখেছে—যেখানে কথা আর কাজের মধ্যে ফারাক, সেখানে আস্থা চূর্ণ হয়। দফা বা নির্বাচনী ভাষণ সমস্যা সমাধান করতে পারে না; সত্যিকার পরিবর্তন আসে তখনই, যখন নেতা-কর্মীরা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ করবে, দায়িত্ব নেবে এবং নিয়মিত ফলোআপ করবে।

কিন্তু যদি ভণ্ড রাজনীতিবিদরা সংস্কারে অনাগ্রহী থাকে এবং নিজেদের স্বার্থকেই প্রাধান্য দেয়, তবে তারা কীভাবে জনগণের কল্যাণে আন্তরিকভাবে কাজ করবে? আজকের বাস্তবতা একেবারেই স্পষ্ট—দফা ও প্রতিশ্রুতি রয়েছে অগণিত, কিন্তু বাস্তব কর্ম, স্বচ্ছতা ও সততার চর্চা নেই বললেই চলে। দুর্নীতি ও স্বার্থপরতা যেন অঘোষিত নিয়মে পরিণত হয়েছে। জনগণ আর নাটক দেখতে চায় না; তারা চায় প্রমাণিত পরিবর্তন, সত্যিকারের কর্ম এবং দায়িত্বশীল নেতৃত্ব। অবশ্যই, একটি জাতির দীর্ঘকালীন রাজনৈতিক সংকট রাতারাতি সমাধান সম্ভব নয়। কিন্তু ৪০ দিনে না হোক, ৪০ মাসের আগেই সেই পরিবর্তনের যাত্রা শুরু হবে—এমন একটি আশা আমরা করতেই পারি।

রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন। Rahman.Mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

নরওয়ের অভিজ্ঞতা বনাম বাংলাদেশের বাস্তবতা: জবাবদিহিহীন রাজনীতির অন্তরায়

Published

on

ব্লক

নরওয়ের অভিজ্ঞতা: জবাবদিহির এক দৃষ্টান্ত
নরওয়ে সদ্য একটি জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন করেছে। পুরো প্রক্রিয়াটি ছিল স্বচ্ছ, শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক মানদণ্ডে উদাহরণস্বরূপ। ফলাফল ঘোষণার পর সেখানে এক চমৎকার রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রকাশ ঘটে। বিজয়ী দল নির্বাচনী সাফল্যের আনন্দে উচ্ছ্বসিত হলেও তারা দায়িত্বশীল আচরণ করেছে—প্রতিপক্ষকে অপমান না করে বরং ভবিষ্যতের কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

অন্যদিকে, পরাজিত দলগুলো জনগণের রায় খোলাখুলিভাবে মেনে নিয়েছে। কেউ কেউ নিজেদের অবস্থান পুনর্মূল্যায়নের ঘোষণা দিয়েছে। আরও তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো—কিছু নেতা ব্যক্তিগত দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করেছেন, এমনকি কেউ কেউ রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কারণ তাদের কাছে রাজনীতি মানে শুধু ক্ষমতা নয়, জনগণের আস্থা রক্ষা করা। ব্যর্থতাকে তারা পরাজয় নয়, বরং নৈতিক দায়িত্ব হিসেবে গ্রহণ করেছেন।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

এই আচরণই সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রতিফলন। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নির্বাচন কেবল ক্ষমতা পরিবর্তনের প্রক্রিয়া নয়, এটি নৈতিকতা, দায়বদ্ধতা ও জনগণের প্রতি সম্মানেরও পরীক্ষা। নরওয়ের অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে—জবাবদিহির চর্চা থাকলে গণতন্ত্র কেবল শক্তিশালী হয় না, রাষ্ট্র ও সমাজের ভিত্তিও হয় আরও সুদৃঢ়।

বাংলাদেশের বাস্তবতা: দায় স্বীকারের সংস্কৃতি অনুপস্থিত
বাংলাদেশে এর উল্টো দৃশ্যপট। এখানে পরাজয় মানে শত্রু তৈরি করা, অজুহাত দাঁড় করানো, প্রতিপক্ষ বা প্রশাসনকে দায়ী করা। যেমন একজন শিক্ষার্থী খারাপ ফল করলে নিজের দায় না নিয়ে অজুহাত খোঁজে—সিলেবাসের বাইরে প্রশ্ন এসেছে, আগের রাতে ঘুম হয়নি, কিংবা অসুস্থ ছিল। রাজনৈতিক ময়দানে একই প্রবণতা দেখা যায়।

বাংলাদেশের বেহায়া ও বেশরম রাজনীতির অবসান হোক—এই প্রত্যাশা প্রতিদিনই জনমনে ঘুরপাক খায়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেই পরিবর্তনের কোনো আলামত এখনো দৃশ্যমান নয়। এর বিপরীতে উন্নত গণতন্ত্র চর্চাকারী দেশগুলোতে আমরা এক ভিন্ন চিত্র দেখি, যা বাংলাদেশের জন্য এক বড় শিক্ষা হয়ে উঠতে পারে।

ডাকসু বা জাকসু নির্বাচনের ইতিহাস স্পষ্ট করে দেয়, যখনই কোনো ছাত্রসংগঠন বুঝেছে যে পরাজয় অনিবার্য, তখনই তারা নির্বাচন বয়কট করেছে। জনগণ বা শিক্ষার্থীদের আস্থা হারানোর বিষয়টি কখনো স্বীকার করেনি। বরং দায় চাপিয়েছে প্রতিপক্ষ, প্রশাসন, এমনকি আন্তর্জাতিক শক্তির ওপরও। সাম্প্রতিক জাকসু নির্বাচনেও একই ঘটনা ঘটেছে—পরাজয়ের মুখোমুখি হয়ে ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থীরা অংশগ্রহণ সীমিত করেছে বা শেষ মুহূর্তে বয়কট করেছে। এরপরও আত্মসমালোচনার বদলে বিভিন্ন অভিযোগই সামনে এনেছে।

ফলাফল হলো—শিক্ষার্থীদের কাছে রাজনীতির একটি নেতিবাচক প্রতিচ্ছবি গড়ে উঠছে। তারা দেখছে, রাজনীতিতে দায়বদ্ধতা বা নৈতিকতার জায়গা নেই। অথচ উন্নত গণতন্ত্রে নেতারা ব্যর্থতা স্বীকার করে নতুন প্রজন্মকে জায়গা দেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সেই স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও নৈতিক দায়বদ্ধতা এখনো অনুপস্থিত।

ছাত্ররাজনীতির সংকট: বিকৃত নেতৃত্বের ঝুঁকি
তত্ত্ব অনুযায়ী ছাত্ররাজনীতি হওয়া উচিত স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক। কিন্তু বাস্তবে দুর্নীতিগ্রস্ত ও ক্ষমতালোভী রাজনীতিবিদদের হস্তক্ষেপ শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করছে। কুৎসিত কৌশল, ভোট কারচুপি ও অনৈতিক প্রভাব প্রয়োগের ফলে দেশের ভবিষ্যত নেতৃত্ব বিকৃত হচ্ছে।

পুরোনো প্রথায় রাজনৈতিক দলগুলোর অতিরিক্ত প্রভাব শিক্ষার্থীদের অধঃপতিত করছে। এতে তারা দায়িত্বশীল নেতৃত্ব শেখার পরিবর্তে দেখে—ক্ষমতা অর্জনের জন্য অনৈতিকতাই কার্যকর। ফলে নতুন প্রজন্মের মধ্যে নৈতিকতার অভাব তৈরি হচ্ছে। এর পরিণতি দীর্ঘমেয়াদে ভয়াবহ: একটি রাষ্ট্র যখন নৈতিক নেতৃত্ব হারায়, তখন শুধু রাজনীতি নয়, সমাজ ও প্রশাসনের প্রতিটি স্তর দুর্বল হয়ে পড়ে।

বাংলাদেশের নতুন জন্ম ও নেপালের শিক্ষা
বাংলাদেশের নতুন জন্ম হলো ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে। কিন্তু প্রশ্ন হলো—কেন এই অভ্যুত্থান সদ্য ঘটে যাওয়া নেপালের গণঅভ্যুত্থানের ধরন থেকে এত ভিন্ন? নেপাল দেখিয়ে দিয়েছে, পরিবর্তনের মানে কেবল ক্ষমতা দখল নয়—পরিবর্তনের মানে হলো ভেতরের পরিশুদ্ধি। সেখানে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়ার পর শিক্ষার্থীরা আবার ক্লাসে ফিরেছে, আবার বই হাতে নিয়েছে। যাওয়ার আগে তারা ভাঙা রাস্তাঘাট মেরামত করেছে, আগুনে পোড়া জায়গা পরিষ্কার করেছে। আর সবচেয়ে বড় কথা—নিজেদের ভুলের জন্য তারা পুরো জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে দ্বিধা করেনি।

অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে উঠে আসেন সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশিলা কারকি। মাত্র তিনজন সহযোগী নিয়ে তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন। এমনকি যাকে মেয়র পদে বসানোর কথা ছিল, সেই ব্যক্তি বিনয়ের সঙ্গে প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। ৫ মার্চ নেপালের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে—পরিষ্কার সময়সূচি, নির্দিষ্ট লক্ষ্য, আর জনগণের আস্থার ওপর দাঁড়িয়ে।

এর বিপরীতে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ আলাদা। আমরা এত প্রত্যাশা নিয়ে যাকে ক্ষমতায় বসালাম, তিনি ও তার উপদেষ্টারা ব্যক্তিগত স্বার্থ ছাড়া কিছুই ভাবলেন না। আমি নিজেও একসময় ড. ইউনুসকে আইডল মানতাম—কিন্তু সময় আমাকে শিখিয়েছে, কেবল নাম বা খ্যাতির কারণে কাউকে অন্ধভাবে অনুসরণ করা যায় না।

আমাদের ক্ষোভের জায়গা থেকে শেখ হাসিনাকে বিদায় দিলাম, কিন্তু সেই একই কোটা অনেকের কাছে হয়ে উঠলো আলাদিনের চেরাগ। হঠাৎ করে ভাগ্য বদলে গেল কারো, দামী সানগ্লাস চোখে, ব্যান্ডের ঘড়ি হাতে, কোটি টাকার গাড়ি নিয়ে রাস্তায় নামলো তারা। অথচ কিছুদিন আগেও একই মানুষ বলতো—“আমরা এত গরিব, বাবাও খাওয়াতে কষ্ট পান।” এই বৈপরীত্যই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সংকট। এখানে একজনের চোখ নেই, কিন্তু আরেকজনের চোখে দামী চশমা; একজনের হাতে কিছুই নেই, আরেকজনের হাতে কোটি টাকার বিলাসিতা। তাই এদেশে সেই মনের মতো বীর জন্ম নেয় না—যাকে কবি স্বপ্ন দেখেছিলেন: “আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে, কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে।”

বাংলাদেশের অভ্যুত্থান তাই এখনো অসম্পূর্ণ। শুধু ক্ষমতার পালাবদল নয়, প্রয়োজন ভেতরের নৈতিক পরিশুদ্ধি—যা নেপাল আমাদের সামনে জীবন্ত দৃষ্টান্ত হিসেবে রেখে গেছে।

তাহলে কেন জবাবদিহির অভাব এত ভয়ঙ্কর?
• গণতন্ত্র দুর্বল হয়: জনগণের আস্থা হারালে গণতন্ত্র কাগুজে খোলসে পরিণত হয়।
• রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়ে: জবাবদিহি না থাকলে বিচারব্যবস্থা, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন—সবকিছুই দলীয় প্রভাবে দুর্বল হয়ে যায়।
• প্রজন্মের বিশ্বাস হারিয়ে যায়: তরুণরা রাজনীতিকে ঘৃণা করতে শেখে এবং নেতৃত্ব থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
• দুর্নীতি বাড়ে: দায় স্বীকার না করে সব দায় অন্যের ওপর চাপালে দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নেয়।

পরিবর্তনের পথ: আশার আলো কোথায়?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন সবচেয়ে জরুরি হলো আত্মসমালোচনা, নৈতিকতা ও জবাবদিহির সংস্কৃতি গড়ে তোলা। নেতাদেরই বুঝতে হবে—দায়িত্ব মানে কেবল ক্ষমতার আসনে বসা নয়, জনগণের আস্থা রক্ষা করা। জনগণের আস্থা হারালে সরে দাঁড়ানোই প্রকৃত নৈতিকতা।
• পরাজয়কে লজ্জা নয়, শিক্ষা হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।
• নতুন প্রজন্মকে নেতৃত্বের সুযোগ দিতে হবে।
• ছাত্ররাজনীতিকে দলীয় নিয়ন্ত্রণমুক্ত করতে হবে।
• নির্বাচন ব্যবস্থাকে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করতে হবে।

যেদিন বাংলাদেশে নেতারা বলবেন—“আমি ব্যর্থ হয়েছি, তাই আরেকজন নতুন মানুষকে সুযোগ দেওয়া হোক”—সেদিনই শুরু হবে প্রকৃত গণতন্ত্রের যাত্রা। পরাজয়কে লজ্জা নয়, শিক্ষা হিসেবে গ্রহণ করার দিনই শেষ হবে বাংলাদেশের বেহায়া ও বেশরম রাজনীতির। আর সেই দিনই রাজনীতি হয়ে উঠবে জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসের প্রকৃত প্রতিফলন।

রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন। Rahman.Mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

তরুণ প্রজন্মের চোখে আজকের বাংলাদেশ গুজব, বিভ্রান্তি আর অনিশ্চয়তায় ভরা

Published

on

ব্লক

ডাকসু নির্বাচন শেষ না হতেই জাকসু নির্বাচন শুরু হয়েছে। কিন্তু নির্বাচন মানেই এখন আর স্বচ্ছতা কিংবা আস্থার জায়গা নয়, বরং গুজব, পাল্টা গুজব আর দলীয় রাজনীতির ছায়ায় ঢাকা এক নাট্যমঞ্চ। এর মধ্যেই শোনা যাচ্ছে—বিএনপি সহ কয়েকটি দল নির্বাচনে অংশ নিলেও পরে তা প্রত্যাখ্যান করেছে। এদিকে ভোট গণনার কাজ চলছে, কিন্তু চূড়ান্ত ফলাফল কী হবে—সেটি নিয়েই প্রশ্নের শেষ নেই।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

প্রশ্ন উঠছে আরও বড় একটি জায়গায়—জামাত কি তাহলে বাংলাদেশের রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে? আবার শোনা যাচ্ছে এমনও গুঞ্জন—স্বয়ং স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী লীগের সমর্থক শিক্ষার্থীরা নাকি শিবিরের হয়ে নির্বাচনে নেমেছে এবং তাদের জয় নিশ্চিত করেছে। গত ডাকসু নির্বাচনের সময়ও শুনেছি, স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম হোসেন নাকি র’এর এজেন্ট হয়ে প্রার্থী হয়েছিলো।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

সব মিলিয়ে এক অদ্ভুত রাজনৈতিক নাটক। কে সত্য বলছে আর কে মিথ্যা, সেটা বোঝা প্রায় অসম্ভব। কারও কাছে তথ্য নেই, কারও কাছে আছে শুধু গল্প। অথচ সত্যিটা চাপা পড়ে আছে—কেউ আসল কথা বলতে চায় না, কিংবা বলার সুযোগ পাচ্ছে না।

এই বাস্তবতা শুধু শিক্ষাঙ্গন নয়, বরং পুরো দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রতিচ্ছবি। যে প্রজন্মের এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের নেতৃত্ব গড়ার কথা, তারা আজ গুজব, ষড়যন্ত্র আর অন্ধকার রাজনীতির চক্রে বন্দি। ফলাফল হলো—বিভ্রান্ত তরুণ সমাজ, আস্থাহীন রাজনৈতিক সংস্কৃতি, আর এক প্রশ্নবিদ্ধ বাংলাদেশ।

আমাদের বর্তমান প্রজন্ম তাই একটাই প্রশ্ন তুলতে বাধ্য—what’s going on? কিন্তু সঠিক উত্তর মেলে না।

দেশের কেন্দ্রবিন্দুগুলো হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়। এগুলো শুধু শিক্ষার জায়গা নয়, বরং ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রনেতা তৈরির কারখানা। অথচ সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে যদি এতো বিভ্রান্তি, এতো গুজব আর এতো রাজনৈতিক কৌশল ঢুকে পড়ে, তাহলে পুরো বাংলাদেশের অবস্থা কী হবে—এ প্রশ্ন কি আমরা ভেবেছি কখনও?

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেন জাতিকে আশ্বস্ত করতে চায়—সব ঠিক আছে, সব নিয়ন্ত্রণে আছে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন সংকেত দিচ্ছে। অন্যদিকে বিএনপির ডিজিটাল নেতা তারেক রহমান কী ভাবছেন? লন্ডনের নিরাপদ দূরত্ব থেকে তিনি কি দেশে ফেরার ঝুঁকি নেবেন, নাকি “ডিজিটাল নিরাপত্তা”র আড়ালেই থেকে যাবেন? প্রশ্ন উঠছে যখন তাঁর যোগ্যতা নিয়ে, তখনই আলোচনায় আসছে তাঁর অতীত—অপরাধীর প্রত্যাবর্তন ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির গভীর সংকট।

একজন দণ্ডপ্রাপ্ত রাজনীতিবিদ দেশে ফিরছেন—এ খবরেই রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। দুর্নীতি, অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে আদালতের রায় রয়েছে। তবুও তিনি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে আসীন, আর তাঁর সমর্থকরা বর্ণাঢ্য সংবর্ধনার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত।

মূল সমস্যা নিহিত আছে নেতৃত্বের যোগ্যতা ও নৈতিক ভিত্তির প্রশ্নে। যাঁর নেই কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, নেই স্বাভাবিক পেশা বা বৈধ আয়ের উৎস, তিনি কীভাবে একটি জাতীয় দলের নেতৃত্বের দাবিদার হতে পারেন? তাঁর একমাত্র পরিচয়—তিনি মুক্তিযোদ্ধা ও রাষ্ট্রপতির সন্তান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ছেলে। অর্থাৎ নেতৃত্বের ভিত্তি তাঁর ব্যক্তিগত অবদান নয়, বরং উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত পরিচয়।

এই চিত্র শুধু একজনকে ঘিরে নয়; বরং এটি আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির অন্তর্নিহিত সংকটকে উন্মোচিত করে। দল ও নেতার প্রতি অন্ধ আনুগত্য, ব্যক্তিত্বপূজা এবং বংশকেন্দ্রিক রাজনীতির কারণে অপরাধপ্রবণতা বারবার আড়াল হয়ে যায়। সমর্থকরা অপরাধের সত্যকে উপেক্ষা করে, বরং রাজনৈতিক আবেগে তা “নায়কোচিত প্রত্যাবর্তন” বলে আখ্যা দেয়।

কিন্তু একটি দেশের গণতন্ত্র টিকে থাকে যোগ্যতা, সততা ও জবাবদিহিতার ওপর। যদি অপরাধপ্রবণ ব্যক্তি কেবল পারিবারিক পরিচয়ের কারণে নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হন, তবে তা রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্বলতাকেই প্রতিফলিত করে। যতই জাঁকজমকপূর্ণ সংবর্ধনা দেওয়া হোক না কেন, এটি আসলে আমাদের রাজনৈতিক ও নৈতিক মানদণ্ডের অবক্ষয়ের প্রতিচ্ছবি।

অতএব, এ মুহূর্তে জাতির সামনে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—আমরা কী ধরনের নেতৃত্ব চাই? অপরাধীকে বরণ করা নাকি যোগ্য ও সৎ নেতৃত্বকে প্রতিষ্ঠা করা? দেশের দীর্ঘমেয়াদী ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে এই প্রশ্নের সঠিক উত্তরের ওপর।

আরেকটি অদ্ভুত প্রশ্ন উঠে আসে—যদি আওয়ামী লীগ শিবিরকে সমর্থন করে, তবে কি বিএনপির যুবদলকে ছাত্রলীগ সমর্থন করবে? নাকি উল্টো, তারা একদিন আবার জামায়াতের সঙ্গে গোপন জোট গড়ে তুলবে? আমাদের রাজনীতির ইতিহাস বলছে—অসম্ভব কিছুই নেই।

তাহলে আসল চিত্র কী? উত্তর নেই। শুধু প্রশ্ন, শুধু গুজব, শুধু অবিশ্বাস। শত প্রশ্নে দেশ ভরে গেছে, অথচ একটিরও সঠিক উত্তর মেলে না। কারণ দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি দীর্ঘদিন ধরে মিথ্যার চর্চায় অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। সত্যকে আড়াল করে মিথ্যাকে জাহির করাই এখন যেন প্রাত্যহিক রুটিন।

এই অবস্থায় সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম, ভীষণ হতাশ। তারা রাজনীতিকে আর ভবিষ্যতের ভরসা মনে করে না। তাদের চোখে রাজনীতি মানে দুর্নীতি, সুবিধা আর ক্ষমতার খেলা।

আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এখন যদি দেশের রাজনীতিবিদদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা না যায়, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম পুরোপুরি রাজনীতি থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। হয়তো সময় এসেছে সকল দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদদের ধরে ধরে জেলে ঢোকানোর—একটি পরিশুদ্ধ রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার জন্য। আমরা অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। আর নয়—এবার যথেষ্ট হয়েছে।

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে বারবার এক করুণ সত্য সামনে এসেছে—রাজনৈতিকভাবে এই জাতি একের পর এক পরাজয়ের গল্প শুনে চলেছে। মুক্তির স্বপ্ন ছিল যে স্বাধীনতায়, সেই স্বপ্নকে কলুষিত করেছে দুর্নীতি, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি আর অযোগ্য নেতৃত্ব। যারা দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকেও মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়েছে, তাদের হাতে আর কোনোদিন এই দেশকে নিরাপদ রাখা সম্ভব নয়।

প্রকৃতপক্ষে, এই দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদদের মানসিক চিকিৎসার আওতায় আনা উচিত—কারণ তারা সত্যকে ভুলে গিয়ে মিথ্যাকে এতটাই চর্চা করেছে যে, আজ বাস্তবতা ও ভ্রান্তির ফারাকও তারা চিনতে পারে না। এদের হাতে দেশকে চালনা করা মানে ভবিষ্যৎকে অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া।

তাহলে সামনে পথ কী?
দেশকে এগিয়ে নিতে হলে একমাত্র ভরসা সাধারণ জনগণ। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়—এই জনগণই বারবার অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। এখন প্রয়োজন তাদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা, প্রয়োজন একটি নৈতিক বিপ্লব। আমাদের সময়ের দাবি হচ্ছে—সৎ, সাহসী এবং দায়িত্বশীল মানুষের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর। কেবল তারাই পারবে ভাঙা আস্থা মেরামত করতে, দেশকে সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে।

আজ বাংলাদেশ দাঁড়িয়ে আছে এক নতুন রাজনৈতিক কল্পনার দোরগোড়ায়। যদি আমরা সাহস করে মিথ্যার রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারি, যদি আমরা দুর্নীতির শৃঙ্খল ছিন্ন করতে পারি, তবে এই দেশ আবারও স্বপ্ন দেখবে—একটি স্বাধীন, ন্যায়ভিত্তিক, সমৃদ্ধ বাংলাদেশের।

আমার দৃঢ় বিশ্বাস—এখনই সময়। আর নয় আপস, আর নয় প্রতারণা। এখন দরকার সত্য, ঐক্য, আর নতুন নেতৃত্বের পথে অগ্রযাত্রা।

রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন। Rahman.Mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

পুঁজিবাজারের সর্বশেষ

ব্লক ব্লক
পুঁজিবাজার7 hours ago

ব্লকে ২৬ কোটি টাকার লেনদেন

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্লকে মোট ৩৪টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মোট ৩৮ লাখ ৫৮হাজার ১৪১টি...

ব্লক ব্লক
পুঁজিবাজার8 hours ago

ইস্টার্ন ক্যাবলসের ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ইস্টার্ন ক্যাবলস লিমিটেডের ক্রেডিট রেটিং সম্পন্ন করা হয়েছে।  AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন × ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)...

ব্লক ব্লক
পুঁজিবাজার8 hours ago

কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্সের পরিচালকের শেয়ার হস্তান্তর

পুঁজিবাজারে বীমা খাতে তালিকাভুক্ত কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স পিএলসির এক পরিচালক পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শেয়ার হস্তান্তর সম্পন্ন করেছেন। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)...

ব্লক ব্লক
পুঁজিবাজার8 hours ago

রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের নাম সংশোধনে সম্মতি

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের প্রস্তাবিত নাম সংশোধনে সম্মতি দিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।...

ব্লক ব্লক
পুঁজিবাজার8 hours ago

বাংলাদেশের সঙ্গে উল্লেখযোগ্য হারে বাণিজ্য বাড়াতে চায় পাকিস্তান

বাংলাদেশ-পাকিস্তান দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ বাড়ানো, বাণিজ্য মিশন বিনিময় এবং ট্যারিফ ও অ-ট্যারিফ বাধাগুলো কমানোর মাধ্যমে বাণিজ্যের পরিমাণ...

ব্লক ব্লক
পুঁজিবাজার9 hours ago

ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সর্বোচ্চ দরপতন

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) শেয়ার দর পতনের শীর্ষে উঠে এসেছে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেড। ডিএসই...

ব্লক ব্লক
পুঁজিবাজার9 hours ago

দর বৃদ্ধির শীর্ষে নাভানা সিএনজি

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৭৫টির দর বেড়েছে। এর মধ্যে...

Advertisement
AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

সোশ্যাল মিডিয়া

তারিখ অনুযায়ী সংবাদ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০  
ব্লক
মত দ্বিমত5 minutes ago

জাতিসংঘ: পতনের ছায়া নাকি পুনর্জাগরণের আলো?

ব্লক
জাতীয়22 minutes ago

যুব বেকারত্ব সবচেয়ে গুরুতর চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে: ড. ইউনূস

ব্লক
সারাদেশ58 minutes ago

গাজীপুরে ঝুটের গোডাউনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৭ ইউনিট

ব্লক
অর্থনীতি1 hour ago

২৪ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২৭ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা

ব্লক
জাতীয়2 hours ago

দুর্গাপূজায় নিরাপত্তা নিয়ে কোনো অবহেলা করছি না: আইজিপি

ব্লক
কর্পোরেট সংবাদ2 hours ago

কমপ্লায়েন্সে জোর দিতে কর্মকর্তাদের নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের রিজিওনাল মিট

ব্লক
কর্পোরেট সংবাদ2 hours ago

এমএফএসের অপব্যবহার রোধে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ ও বিকাশের কর্মশালা

ব্লক
মত দ্বিমত3 hours ago

পিআর পদ্ধতি কার্যকর করতে আগে দরকার প্রশাসনিক সংস্কার

ব্লক
কর্পোরেট সংবাদ3 hours ago

আইএফআইসি ব্যাংক ও পিৎজা হাট’র মধ্যে চুক্তি

ব্লক
কর্পোরেট সংবাদ4 hours ago

থাইল্যান্ডে চিকিৎসা সেবায় বিশেষ সুবিধা পাবেন ব্র্যাক ব্যাংকের প্রিমিয়াম ব্যাংকিং গ্রাহকরা

ব্লক
মত দ্বিমত5 minutes ago

জাতিসংঘ: পতনের ছায়া নাকি পুনর্জাগরণের আলো?

ব্লক
জাতীয়22 minutes ago

যুব বেকারত্ব সবচেয়ে গুরুতর চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে: ড. ইউনূস

ব্লক
সারাদেশ58 minutes ago

গাজীপুরে ঝুটের গোডাউনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৭ ইউনিট

ব্লক
অর্থনীতি1 hour ago

২৪ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২৭ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা

ব্লক
জাতীয়2 hours ago

দুর্গাপূজায় নিরাপত্তা নিয়ে কোনো অবহেলা করছি না: আইজিপি

ব্লক
কর্পোরেট সংবাদ2 hours ago

কমপ্লায়েন্সে জোর দিতে কর্মকর্তাদের নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের রিজিওনাল মিট

ব্লক
কর্পোরেট সংবাদ2 hours ago

এমএফএসের অপব্যবহার রোধে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ ও বিকাশের কর্মশালা

ব্লক
মত দ্বিমত3 hours ago

পিআর পদ্ধতি কার্যকর করতে আগে দরকার প্রশাসনিক সংস্কার

ব্লক
কর্পোরেট সংবাদ3 hours ago

আইএফআইসি ব্যাংক ও পিৎজা হাট’র মধ্যে চুক্তি

ব্লক
কর্পোরেট সংবাদ4 hours ago

থাইল্যান্ডে চিকিৎসা সেবায় বিশেষ সুবিধা পাবেন ব্র্যাক ব্যাংকের প্রিমিয়াম ব্যাংকিং গ্রাহকরা

ব্লক
মত দ্বিমত5 minutes ago

জাতিসংঘ: পতনের ছায়া নাকি পুনর্জাগরণের আলো?

ব্লক
জাতীয়22 minutes ago

যুব বেকারত্ব সবচেয়ে গুরুতর চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে: ড. ইউনূস

ব্লক
সারাদেশ58 minutes ago

গাজীপুরে ঝুটের গোডাউনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৭ ইউনিট

ব্লক
অর্থনীতি1 hour ago

২৪ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২৭ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা

ব্লক
জাতীয়2 hours ago

দুর্গাপূজায় নিরাপত্তা নিয়ে কোনো অবহেলা করছি না: আইজিপি

ব্লক
কর্পোরেট সংবাদ2 hours ago

কমপ্লায়েন্সে জোর দিতে কর্মকর্তাদের নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের রিজিওনাল মিট

ব্লক
কর্পোরেট সংবাদ2 hours ago

এমএফএসের অপব্যবহার রোধে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ ও বিকাশের কর্মশালা

ব্লক
মত দ্বিমত3 hours ago

পিআর পদ্ধতি কার্যকর করতে আগে দরকার প্রশাসনিক সংস্কার

ব্লক
কর্পোরেট সংবাদ3 hours ago

আইএফআইসি ব্যাংক ও পিৎজা হাট’র মধ্যে চুক্তি

ব্লক
কর্পোরেট সংবাদ4 hours ago

থাইল্যান্ডে চিকিৎসা সেবায় বিশেষ সুবিধা পাবেন ব্র্যাক ব্যাংকের প্রিমিয়াম ব্যাংকিং গ্রাহকরা