অর্থনীতি
২৪ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২৭ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা

রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ের ঊর্ধ্বমুখী প্রবাহ চলতি মাস সেপ্টেম্বরেও অব্যাহত রয়েছে। এ মাসের প্রথম ২৪ দিনেই ২ দশমিক ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেশে এসেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ২৭ হাজার ২৫৫ কোটি (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, ১ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২২৩ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার বা ২ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার। টাকার অঙ্কে (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে) এর পরিমাণ প্রায় ২৭ হাজার ২৫৫ কোটি।
এই ধারা অব্যাহত থাকলে পুরো মাস শেষে রেমিট্যান্স তিন বিলিয়ন ডলার আসতে পারে বলে ধারণা করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
গত বছরের একই সময়ে এসেছিল ১৯০ কোটি ৯০ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স। সে হিসাবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় রেমিট্যান্স বেড়েছে ৩২ কোটি ৫০ লাখ ডলার।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের ২১ দিন পর্যন্ত রেমিট্যান্স এসেছে ৬৯৩ কোটি ডলার। গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ৫৭৭ কোটি ডলার। অর্থবছর হিসাবে গত অর্থবছরে একই সময়ের চেয়ে রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি ২০ দশমিক ১ শতাংশ।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৪৭ কোটি ৭৯ লাখ ১০ হাজার ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩০ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা। আর গেল আগস্টে এসেছিল ২৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার বা ২৯ হাজার ৫৪৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
এর আগে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মার্চ মাসে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল, যা ছিল বছরের রেকর্ড পরিমাণ। আর পুরো অর্থবছর (২০২৪-২৫) জুড়ে প্রবাসী আয় এসেছে ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি।
কাফি

অর্থনীতি
অগ্রিম রপ্তানি আয়ের ১০ শতাংশ সংরক্ষণের নিয়ম শিথিল

বিদেশি ক্রেতাদের কাছ থেকে রপ্তানি আয়ের অগ্রিম অর্থের একটি অংশ সংরক্ষণ করতে হয়। এই নিয়ম শিথিল করা হয়েছে। বিদেশি ক্রেতাদের কাছ থেকে অগ্রিম প্রাপ্ত রপ্তানি আয়ের ১০ শতাংশ সংরক্ষণ করার এত দিনের বাধ্যবাধকতা তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আজ বৃহস্পতিবার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই বাধ্যবাধকতা তুলে নেওয়া হয়।
মূলত রপ্তানিকারকদের নগদ প্রবাহ বাড়ানো ও রপ্তানি বাণিজ্য সহজ করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান। নতুন নির্দেশনায় প্রকৃত লেনদেন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা অনুসারে, রপ্তানিকারকের নিশ্চিত এলসি বা চুক্তি থাকতে হবে, যার ভিত্তিতে পণ্য রপ্তানি করা হবে।রপ্তানিকারকের পূর্ববর্তী রপ্তানি কার্যক্রম সন্তোষজনক হতে হবে ও অর্ডার বাস্তবায়নের জন্য যথেষ্ট সক্ষমতা থাকতে হবে। এ ছাড়া অগ্রিম প্রাপ্ত অর্থ অবশ্যই সুদমুক্ত হতে হবে।
ব্যবসায়িক মহলের মতে, এই শিথিলতা রপ্তানিকারকদের কাঁচামাল সংগ্রহ ও উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে সহায়তা করবে, একই সঙ্গে ব্যাংকিং তদারকির মাধ্যমে নিয়মনীতি মেনে চলা নিশ্চিত করবে।
অর্থনীতি
বাংলাদেশের ব্যাংক খাত নিয়ে যে সতর্কবার্তা দিল মুডিস

বাংলাদেশ ব্যাংকের দেওয়া খেলাপি ঋণ নবায়নের নতুন সুবিধাকে দেশের ব্যাংক খাতের জন্য ‘ক্রেডিট নেগেটিভ’ বা ‘ঋণ ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে অভিহিত করেছে আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা মুডিস।
সংস্থাটির মতে, এই নীতির ফলে ব্যাংকের ওপর চাপ সাময়িকভাবে কমলেও দীর্ঘমেয়াদে ঝুঁকি বাড়বে এবং ঋণ পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত মুডিসের প্রতিবেদনে এ সতর্কবার্তা দেওয়া হয়।
খেলাপি ঋণ নবায়নে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক যে ছাড় দিয়েছে, তাতে দেশের ব্যাংক খাতে সার্বিকভাবে ঝুঁকির মাত্রা বেড়ে যাবে। এই সুবিধার ফলে সাময়িকভাবে খেলাপি ঋণের মাত্রা কমতে পারে। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে ঋণ আদায় কমে যাবে। গ্রাহকের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা যাচাই করা বিলম্বিত হবে। ফলে দীর্ঘ মেয়াদে চাপে পড়বে ব্যাংক খাত।
এর আগে ২০২২ সালে এই ধরনের ছাড় দিয়েও কোনো বাড়তি সুবিধা পায়নি ব্যাংক খাত।
এর আগে ১৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি ঋণ নবায়নের বিষয়ে নতুন একটি সার্কুলার জারি করেছে। এতে সাম্প্রতিক সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণ ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট জমা দিয়ে নবায়ন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ১০ বছর মেয়াদে ঋণ নবায়ন করা যাবে। গ্রেস পিরিয়ড দেওয়া হয়েছে দুবছর। খেলাপি ঋণের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা থাকলে নবায়নের পর তা স্থগিত রাখতে হবে।
মুডিস এই ধরনের সুবিধা দেওয়ার ফলে দেশের ব্যাংক খাতের জন্য ‘ক্রেডিট নেগেটিভ’ বা ঋণের জন্য নেতিবাচক হিসাবে অভিহিত করেছে। এ ধরনের নীতির কারণে ব্যাংকের ওপর চাপ সাময়িকভাবে কমলেও দীর্ঘ মেয়াদে ঝুঁকি বাড়বে। সেই সঙ্গে ঋণ আদায়ের প্রক্রিয়াও বাধাগ্রস্ত হবে। কারণ, এর আগে ২০২২ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক এই ধরনের সুবিধা দিয়ে কোনো সুফল পায়নি। গ্রেড পিরিয়ড দেওয়ার কারণে গ্রহীতার প্রকৃত ঋণ পরিশোধ সক্ষমতা যাচাই করা বিলম্বিত হবে। কারণ, নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করলে গ্রহীতা একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকে। তার ব্যবসার গতিবিধি বোঝা যায়। দুবছর গ্রেস পিরিয়ডের কারণে তা বোঝা যাবে না। ফলে দুই বছর গ্রেস পিরিয়ডের পর গ্রাহক ঋণ পরিশোধ করতে পারবে কি না, সেটি বোঝা কঠিন হবে।
অর্থনীতি
এলডিসি উত্তরণে ব্যবসায়ীদের প্রস্তুতি নিতে হবে: অর্থ উপদেষ্টা

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণ নিয়ে আলোচনা চলছে। আমি বিস্তারিত কিছু বলছি না, তবে ব্যবসায়ীদের বলব, এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আপনারা নিজেদের মত করে প্রস্তুত গ্রহণ করুন
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর র্যাডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেনে ২৩তম বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাওয়ার্ডস প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বহুজাতিক কুরিয়ার প্রতিষ্ঠান ডিএইচএল ও ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের যৌথ উদ্যোগে এ পুরস্কার দেওয়া হয়।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এলডিসি উত্তরণের তারিখ নিয়ে এখনই সিদ্ধান্ত হবে না, কিন্তু প্রতিযোগিতামূলক হতে হবে। বৈশ্বিক পরিস্থিতি এবং স্থানীয় বাজারের দিকে নজর দিতে হবে। সরকার অবশ্যই নীতিগত সংস্কার, প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং প্রাথমিক সহায়তার মাধ্যমে ব্যবসাকে এগিয়ে নিতে কাজ করবে।
তিনি বলেন, সত্যি বলতে কখনও কখনও সরকার ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে দূরত্ব থেকে যায়। তবুও আমরা সবসময় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করি। তবে নীতিমালা শুধু জনপ্রিয় ধারণার ভিত্তিতে তৈরি করা সম্ভব নয়। অনেকেই আমাকে কর কমানোর অনুরোধ করেন, আবার কেউ কর বাড়ানোর অনুরোধ করেন, কেউ নগদ প্রণোদনা বাড়াতে বলেন। সবগুলো পূরণ করা বাংলাদেশের সামর্থ্যের মধ্যে পড়ে না। তাই ভারসাম্য রাখতে হয়। তবে আমরা অবশ্যই ব্যবসাবান্ধব হতে চাই। আমরা বিশ্বাস করি বেসরকারি খাতের উন্নয়নেই ভবিষ্যৎ। অতীতের মতো রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বড় বড় করপোরেশনের যুগ শেষ হয়েছে। এখন ব্যবসায়ীরাই উৎকৃষ্ট কাজ করছে এবং ভবিষ্যতেও তারা অবদান রাখবে।
অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, আমরা একমত যে, কর্মসংস্থান তৈরি করবে বেসরকারি খাত। সরকার কেবল সীমিত কিছু ক্ষেত্রে চাকরি দিতে পারে। গত ১১–১২ মাসে কর্মসংস্থানের তেমন উন্নতি হয়নি, ব্যবসাও দ্রুত বাড়েনি। ফলে কর্মসংস্থান কিছুটা স্থবির থেকেছে। আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিও প্রভাব ফেলেছে।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সম্প্রতি মার্কিন চেম্বার অব কমার্সের সহ-সভাপতি আমাকে বলেছেন, মার্কিন বেসরকারি খাত বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের নিয়ে খুশি, তারা দক্ষ। আমি বলেছি, আমরা শেভরন ও মেটলাইফের মতো প্রতিষ্ঠানের বকেয়া প্রায় ৪০ লাখ ডলার পরিশোধ করেছি। এটা আমার ব্যক্তিগত কৃতিত্ব নয়, এটা রপ্তানিকারক ও উদ্যোক্তাদের অর্থ দিয়েই পরিশোধ করা হয়েছে। এর ফলে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভালো ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে।
অনুষ্ঠানে ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, দুঃখজনকভাবে কিছু করপোরেট নেতা রাজনৈতিক সম্পর্ক ব্যবহার করে অতীতে ব্যাংক লুট করেছে এবং দেশকে অপমানিত করেছে। তাই প্রথম পদক্ষেপ হবে—সৎ ব্যবসায়ী ও অসৎ ব্যবসায়ীর মধ্যে পার্থক্য করা।
মাহফুজ আনাম আরও বলেন, দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাওয়ার্ড একটি অনুপ্রেরণার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে। আমরা এমন ব্যক্তিত্ব ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে সম্মান জানাই, যারা ব্যবসায়িক নৈতিকতা, উৎকর্ষতা এবং দৃঢ়তাকে ধারণ করে এগিয়ে চলেছে।
তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে মাত্র ছয় মাস সময় আছে। আমি অনুরোধ করব—এই সময়টুকু ব্যবহার করে কিছু বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত নিন। ছোট ছোট উদ্যোগ হলেও তা বেসরকারি খাতকে এগিয়ে নিতে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। পাশাপাশি পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের জন্য একটি রূপরেখা রেখে যান। আমি বেসরকারি খাতকেও আহ্বান জানাই—আপনারা নিজেরা একটি প্রাইভেট সেক্টর চার্টার তৈরি করুন এবং জাতির সামনে উপস্থাপন করুন।
দুই প্রতিষ্ঠান ও তিন ব্যক্তি পেলেন বিজনেস অ্যাওয়ার্ডস
দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে অবদানের জন্য পাঁচ ক্যাটাগরিতে তিন ব্যক্তি ও দুই প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাওয়ার্ডস দেওয়া হয়েছে। এবার ব্যবসা-বাণিজ্যে অবদানের জন্য আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন এসিআই গ্রুপের চেয়ারম্যান ও শিল্পোদ্যোক্তা আনিস উদ দৌলা। ২০২৪ সালের সেরা ব্যবসায়ীর স্বীকৃতি পেয়েছেন শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ প্রাণ-আরএফএলের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী। একইসঙ্গে ২০২৪ সালের অসাধারণ নারী উদ্যোক্তার পুরস্কার পেয়েছেন শেয়ারট্রিপের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী সাদিয়া হক।
এছাড়া সেরা আর্থিক প্রতিষ্ঠান সিটি ব্যাংক ও বছরের সেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ওয়ালটন গ্রুপ পুরষ্কার পেয়েছে। নির্বাচিতদের হাতে তুলে দেন অর্থদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ডিএইচএলের এ দেশীয় ব্যবস্থাপক মো. মিয়ারুল হক।
পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী, শিল্পোদ্যোক্তা, অর্থনীতিবিদ, গবেষক, ব্যাংকারসহ ব্যবসা-বাণিজ্য ও দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। তাদের মধ্যে ছিলেন বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা গীতি আরা সাফিয়া চৌধুরী, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক, ট্যুরিজম ও এভিয়েশন–বিষয়ক পাক্ষিক বাংলাদেশ মনিটর–এর সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুল আলম। ব্যবসায়ী ও ব্যাংকারদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ. কে. আজাদ, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তপন চৌধুরী, ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবদুল মুক্তাদির, ট্রান্সকম লিমিটেডের গ্রুপ সিইও সিমিন রহমান, ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি জাভেদ আখতার, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের সিইও নাসের এজাজ বিজয়, মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল।
অর্থনীতি
২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে স্বর্ণের দামে আবারও রেকর্ড

২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দেশের বাজারে আবারও সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ৩ হাজার ৬৬৩ টাকা। এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৯৪ হাজার ৮৫৯ টাকা হয়েছে।
স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানো হয়েছে।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) থেকে নতুন দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে গতকাল ঘোষণা দিয়ে আজ থেকে সোনার দাম বাড়ানো হয়। এতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম হয় ১ লাখ ৯১ হাজার ১৯৬ টাকা। এই রেকর্ড দামের ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে আবার সোনার দাম বাড়ানো হলো।
এখন সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ৩ হাজার ৬৬৩ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৯৪ হাজার ৮৫৯ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ৩ হাজার ৫১১ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৮৬ হাজার ৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ২ হাজার ৯৯৮ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৫৯ হাজার ৪২৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ২ হাজার ৫৫৪ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৫১ টাকা।
এর আগে গতকাল ঘোষণা দিয়ে আজ থেকে সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৮৮৯ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৯১ হাজার ১৯৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ৭৯৬ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৮২ হাজার ৪৯৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ১ হাজার ৫৪০ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪২৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ১ হাজার ৩১৮ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ২৯ হাজার ৭৯৭ টাকা। আজ মঙ্গলবার এই দামে সোনা বিক্রি হয়েছে।
সোনার দাম বাড়ানোর পাশাপাশি রুপার দামও বাড়ানো হয়েছে। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ১৫২ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৬২৮ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ১৪০ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৪৫৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ১১৭ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৯৬৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ৯৩ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ২২৮ টাকা।
অর্থনীতি
৫৮ হাজার টন রাইস ব্র্যান তেল রপ্তানির অনুমতি পেলো ২৩ প্রতিষ্ঠান

৫৮ হাজার টন রাইস ব্র্যান তেল রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ২৩টি প্রতিষ্ঠানকে এসব তেল রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে একক প্রতিষ্ঠান হিসেবে মজুমদার এগ্রোটেক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড এবং বগুড়া মাল্টি অয়েল মিলস লিমিটেড ১০ হাজার টন করে রাইস ব্র্যান তেল রপ্তানির অনুমতি পেয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ওইসব প্রতিষ্ঠানকে রপ্তানির অনুমতি প্রদান করা হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি-২ শাখা থেকে এই অনুমোদনপত্র জারি করা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, গত ১৫ জানুয়ারি থেকে রাইস ব্র্যান অয়েল রপ্তানিতে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। দেশের বাজারে ভোজ্যতেলের সরবরাহ বাড়াতেই সরকার এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এজন্য অনুমতি ছাড়া এই তেল রপ্তানি বন্ধ করা হয়। অর্থাৎ রপ্তানি করতে হলে আগে সরকারের অনুমতি লাগবে। এরপর থেকে সরকার আর কোনো রপ্তানির অনুমতি দেয়নি। এরপর এই প্রথম ৫৮ হাজার মেট্রিক টন রাইস ব্র্যান অয়েল রপ্তানির অনুমতি দিলো সরকার।
জানা গেছে, কয়েক মাস ধরেই ব্যবসায়ীরা রাইস ব্র্যান অয়েল রপ্তানির অনুমতি চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে আসছিলেন। এরই প্রেক্ষিতে এই অনুমোদন দেওয়া হলো।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, সবশেষ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রায় ৭৫ হাজার মেট্রিক টন রাইস ব্র্যান অয়েল রপ্তানি করা হয়, যার বিপরীতে ৯৭৪ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আসে।
এদিকে অভ্যন্তরীণ বাজারে স্থিতিশীলতার জন্য এনবিআর রাইস ব্র্যান অয়েল রপ্তানিতে ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বসিয়েছে।
অন্যদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় রপ্তানিকারকদের রপ্তানি নীতি ২০২৪-২৭ এর বিধি অনুসরণ করতে নির্দেশনা প্রদান করেছে। একই সঙ্গে এই রপ্তানির একটি নির্দিষ্ট মেয়াদও দিয়ে দিয়েছে। আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রপ্তানি শেষ করতে হবে। অনুমোদিত পরিমাণের বেশি কোনো প্রতিষ্ঠানই রপ্তানি করতে পারবে না বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।