জাতীয়
রোহিঙ্গা সংকট বাংলাদেশের একার পক্ষে সমাধান অসম্ভব: প্রধান উপদেষ্টা

রোহিঙ্গা সংকটের দায় শুধু বাংলাদেশের নয়, এটা বিশ্বমহলের বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে। কিন্তু এ সংকটের দীর্ঘস্থায়ী সমাধান কেবল বাংলাদেশের পক্ষে সম্ভব নয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত উদ্যোগ ও কার্যকর চাপের মাধ্যমেই রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করা সম্ভব।
সোমবার (২৫ আগস্ট) কক্সবাজারের ইনানীতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সংলাপের দ্বিতীয় দিনের অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেন, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের নাগরিক নয়, তাদের স্বদেশ মিয়ানমার। আট বছর ধরে বাংলাদেশ তাদের মানবিক সহায়তা দিচ্ছে, কিন্তু সমস্যার মূলোৎপাটন হচ্ছে না। এই অবস্থায় বিশ্ব সম্প্রদায়কে কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে, নতুবা এ অঞ্চল দীর্ঘমেয়াদে অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে।
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচার কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়ন, খাদ্য সহায়তা জোরদার করা এবং রোহিঙ্গাদের মনোবল ধরে রাখতে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস। সেখান থেকে তিনি সরাসরি সম্মেলনস্থল ‘হোটেল বে ওয়াচে’ যান এবং মঞ্চে ওঠেন।
‘টেক অ্যাওয়ে টু দ্য হাই-লেভেল কনফারেন্স অন দ্য রোহিঙ্গা সিচুয়েশন’ শীর্ষক তিন দিনের সম্মেলন রোববার (২৪ আগস্ট) শুরু হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং রোহিঙ্গা ইস্যু বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভের দপ্তর যৌথভাবে এ আয়োজন করেছে। এতে অংশ নিচ্ছেন জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং রোহিঙ্গা ইস্যুতে সক্রিয় সব স্টেকহোল্ডারসহ অন্তত ৪০টি দেশের প্রতিনিধি।
সম্মেলনের প্রথম দিনে রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দল সরাসরি বিদেশি অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করে নিজেদের অভিজ্ঞতা, নির্যাতনের কাহিনি ও প্রত্যাবাসনের আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরেন।
এসময় একজন রোহিঙ্গা তরুণ বলেন, আমরা বাংলাদেশে আশ্রিত, কিন্তু এখানে আমাদের ভবিষ্যৎ নেই। মিয়ানমারকে আমাদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।
জাতিসংঘের এক প্রতিনিধি সভায় বলেন, রোহিঙ্গা সংকট এখন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়া ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্যই এ সমস্যার সমাধান জরুরি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি জানান, তাদের পক্ষ থেকে মানবিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে। তবে সমাধানের জন্য মিয়ানমারের ওপর রাজনৈতিক চাপ বাড়াতে হবে।
আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, তিন দিনের এই সম্মেলন থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য কার্যকর রূপরেখা প্রণয়নের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ফান্ড গঠন, গণহত্যার বিচার, খাদ্য ও মানবিক সহায়তা এবং রোহিঙ্গাদের মানসিক শক্তি ও মনোবল বৃদ্ধির মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতেও জোর দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) শেষ দিনে বিদেশি অতিথিরা কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন। সেখানে তারা সরাসরি বাস্তব পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে বর্তমান দুঃসহ জীবনের কথা শুনবেন।
কূটনৈতিক মহল মনে করছে, উচ্চপর্যায়ের এই সম্মেলন থেকে নতুন কোনো আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার বা উদ্যোগ ঘোষিত হলে রোহিঙ্গা ইস্যুতে দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা নিরসনে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

জাতীয়
পদোন্নতি পেয়ে উপসচিব হলেন ২৬৮ কর্মকর্তা

বিসিএস প্রশাসনসহ বিভিন্ন ক্যাডারের সিনিয়র সহকারী সচিব পদমর্যাদার ২৬৮ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিয়েছে সরকার।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) এসব কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিয়ে পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
পদোন্নতিপ্রাপ্তদের মধ্যে ২৬২ জন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে এবং আটজন দেশের বাইরে বিভিন্ন দূতাবাসে প্রথম সচিব হিসেবে কর্মরত আছেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিসিএস ৩০তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে উপসচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। আজই প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পদোন্নতি সংক্রান্ত সার-সংক্ষেপ অনুমোদন দেওয়া হয়।
পদোন্নতির বিধিমালা অনুযায়ী, সিনিয়র সহকারী সচিব পদে পাঁচ বছর চাকরিসহ অন্তত ১০ বছর চাকরির অভিজ্ঞতা থাকলেই উপসচিব পদে পদোন্নতি পাওয়ার কথা। বিসিএস ৩০তম ব্যাচের কর্মকর্তারা সেই যোগ্যতা অর্জন করেছেন ২০২২ সালের ৩ জুন। তাদের দীর্ঘ দিন পদোন্নতি হয়নি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানায়, ২০১২ সালের ৩ জুন সরকারি চাকরিতে যোগ দেন বিসিএস ৩০তম ব্যাচের কর্মকর্তারা। সেই হিসাবে তাদের উপসচিব পদে পদোন্নতির যোগ্যতা অর্জিত হয় ২০২২ সালের ৩ জুন। ২০২৪ সালের ১৮ জানুয়ারি উপসচিব পদে পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তাদের তথ্য চেয়ে পাঠায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। নানা কারণেই আর ৩০তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি হয়নি। এই ব্যাচে ২৭৭ জন কর্মকর্তা যোগদান করেন।
মন্ত্রণালয় আরও জানায়, লেফট আউটসহ প্রশাসন ক্যাডারের ৩১৯ কর্মকর্তা পদোন্নতির যোগ্য হয়েছেন। এছাড়া অন্যান্য ক্যাডারের ২২৩ কর্মকর্তা ডিএস পুলে যোগ দিতে আবেদন করেছেন। তাদের মধ্য থেকে ২৬৮ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হলো।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান প্রশাসনে অতিরিক্ত সচিবের ২১২ পদে কর্মকর্তা আছেন ৩৫৮ জন। যুগ্মসচিবের ৫০২টি পদে রয়েছেন এক হাজার ২৮ জন। সুপারনিউমারারি পদসহ উপসচিবের অনুমোদিত পদসংখ্যা এক হাজার ৪২০। বিপরীতে কর্মরত আছেন এক হাজার ৪০০ জন। অর্থাৎ প্রতিটি স্তরেই নির্দিষ্ট পদের চেয়ে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক কর্মকর্তা বেশি রয়েছেন। ফলে পদ খালি না থাকায় পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের আগের পদেই কাজ করে যেতে হবে।
জাতীয়
ঈদে মিলাদুন্নবীর ছুটির তারিখ পুনর্নির্ধারণ

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর (স.) ছুটি ৫ সেপ্টেম্বরের পরিবর্তে ৬ সেপ্টেম্বর পুনর্নির্ধারণ করছে সরকার। বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) ছুটি পুনর্নির্ধারণ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অ্যালোকেশন অব বিজনেস অ্যামাং দ্য ডিফারেন্স মিনিস্ট্রিস অ্যান্ড ডিভিশন্স-এ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে দেওয়া ক্ষমতাবলে সরকার পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) উপলক্ষে সাধারণ ছুটি নির্ধারিত তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবারের পরিবর্তে ৬ সেপ্টেম্বর শনিবার পুনর্নির্ধারণ করলো। সেই হিসাবে পুনর্নির্ধারণের পরও ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) ছুটি শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির মধ্যেই যাচ্ছে।
জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঈদে মিলাদুন্নবীর (স.) ছুটি পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার। আগে ৫ সেপ্টেম্বর ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) ধরে ছুটির নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু গত রোববার (২৪ আগস্ট) জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি জানায়, ওইদিন দেশের কোথাও রবিউল আউয়াল মাসের চাঁদ দেখা না যাওয়ায় সফর মাস ৩০ দিনে শেষ হয়। রবিউল আউয়াল মাস শুরু হয় মঙ্গলবার। সেই হিসাবে ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) হবে ৬ সেপ্টেম্বর। বাংলাদেশে ঈদে মিলাদুন্নবীর (স.) দিন সাধারণ ছুটি।
ছুটি পুনর্নির্ধারণের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ছুটিকালীন সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।
এছাড়া জরুরি পরিষেবা যেমন- বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরের কার্যক্রম, পরিচ্ছ কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং এ সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীরা এই ছুটির আওতার বাইরে থাকবেন।
হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এ সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা এই ছুটির আওতার বাইরে থাকবেন।
চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মী এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মী এবং জরুরি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত অফিস এই ছুটির আওতার বাইরে থাকবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে। আদালতের কার্যক্রমের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিবে।
জাতীয়
রোজার আগে নির্বাচন, ৬০ দিন আগে তফসিল ঘোষণা: ইসি সচিব

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাইরে অন্য কিছু ভাবার সুযোগ নেই। রমজানের আগেই নির্বাচন হবে। ৬০ দিন আগে তফসিল হবে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব আখতার আহমেদ।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তফসিল ও ভোট কবে হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ভোট গ্রহণের ৬০ দিন আগে তফসিল দেব। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর বলেছে, আগামী রমজানের আগে ভোট করার জন্য। আমার যদি ভুল না হয়ে থাকে তাহলে ১৭ বা ১৮ ফেব্রুয়ারি রমজান শুরু। আবার রমজানতো চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল। এভাবে আপনি নির্বাচনের তারিখ বের করতে পারেন।
গণপরিষদ ও গণভোটের দাবির বিষয়ে আখতার আহমেদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা কেবল জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য। এর বাইরে আমাদের অন্য কোনো কিছু ভাবার সুযোগ নেই।
জাতীয়
দেশের তিন স্থলবন্দর বন্ধ ঘোষণা, একটির কার্যক্রম স্থগিত

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের অলাভজনক তিনটি স্থলবন্দর বন্ধ ঘোষণা এবং একটি স্থলবন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের ৪০তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন তিনটি বন্ধ করে দেওয়া স্থলবন্দর হচ্ছে— নীলফামারীর ডোমার উপজেলার চিলাহাটি স্থলবন্দর, চুয়াডাঙ্গার দৌলতগঞ্জ স্থলবন্দর এবং রাঙামাটির তেগামুখ স্থলবন্দর।
এ ছাড়া সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার বাল্লা স্থলবন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম স্থগিত রাখার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।
এর আগে, ২ মার্চ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, তিনটি অলাভজনক ও কার্যক্রমহীন স্থলবন্দর সম্পূর্ণ বন্ধ এবং একটি স্থলবন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধের সুপারিশ করা হয়। বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের আটটি স্থলবন্দর কার্যকর বা অকার্যকরের বিষয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের গঠিত যাচাই কমিটি এ সুপারিশ করে।
কমিটি প্রতিবেদনে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও বাণিজ্য সম্ভাবনা বিবেচনায় নীলফামারীর ডোমার উপজেলার চিলাহাটি স্থলবন্দর, চুয়াডাঙ্গার দৌলতগঞ্জ, রাঙ্গামাটির তেগামুখ স্থলবন্দরের কার্যক্রম চালুর জন্য অবকাঠামো নির্মাণের প্রয়োজন নেই বলে সুপারিশ দেয়। এছাড়া হবিগঞ্জের বাল্লা স্থলবন্দরের কেদারকোটে নির্মিত স্থলবন্দরের ভারতীয় অংশে কোনো অবকাঠামো ও সড়ক না থাকায় চালু করা সম্ভব হচ্ছে না উল্লেখ করে বাল্লা স্থলবন্দরের অপারেশন কার্যক্রম বন্ধ রাখা যেতে পারে বলে সুপারিশ করে। একই সঙ্গে কমিটি ময়মনসিংহের গোবরাকুড়া-কড়ইতলী স্থলবন্দরের দুটি স্থানের পরিবর্তে একটি স্থানে কার্যক্রম চালু রাখার সুপারিশ করে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন দায়িত্ব গ্রহণের পর দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর সরেজমিন পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে উপদেষ্টা বিগত সরকারের আমলে নির্মিত দেশের অলাভজনক ও কার্যক্রমহীন বিভিন্ন স্থলবন্দরের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় গত ৬ নভেম্বর বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের ৮টি অলাভজনক ও কার্যক্রমহীন স্থলবন্দর যাচাই করা হয়। এসব স্থলবন্দর কার্যকর/অকার্যকরের বিষয়ে যাচাইয়ের লক্ষ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধির সমন্বয়ে ছয় সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ওই ৮টি স্থলবন্দর সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দাখিল করে।
জাতীয়
চীন সফর শেষে দেশে ফিরলেন সেনাপ্রধান

চীন সফর শেষে বুধবার রাতে দেশে ফিরেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। সফরে তিনি পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) স্থল বাহিনীর পলিটিক্যাল কমিসার জেনারেল চেন হুইসহ উচ্চপদস্থ চীনা সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং দ্বিপাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনী প্রধান গত ২২ আগস্ট চীনের পিএলএ সদর দপ্তরে পৌঁছালে তাকে ‘গার্ড অব অনার’ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী প্রধান পিএলএর স্থল বাহিনীর পলিটিক্যাল কমিসার জেনারেল চেন হুইর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে তারা দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত সহযোগিতা, জনগণের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের প্রত্যাবর্তনে সহায়তা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেন।
এছাড়াও, বাংলাদেশের সামরিক শিল্পের উন্নতিতে চীন কর্তৃক প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের বিষয়টি আলোচনা করা হয়।
গত ২৩ আগস্ট সেনাবাহিনী প্রধান চীনের নরিনকো গ্রুপের প্রেসিডেন্ট চেন ডেফাংয়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে তারা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে প্রচলিত নরিনকো গ্রুপের বিভিন্ন ধরনের সামরিক সরঞ্জামাদির আপগ্রেডেশন ও রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ও উক্ত বৈঠকে আলোচিত হয়।
এছাড়াও, সেনাবাহিনী প্রধান পিএলএর অ্যাকাডেমি অব আর্মার্ড ফোর্সের বেইজিং ক্যাম্পাসের প্রশিক্ষণ সুবিধাদিসহ বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জামাদি উৎপাদন গবেষণাগার পরিদর্শন করেন। উল্লেখ্য যে, আন্তর্জাতিক মানের উক্ত অ্যাকাডেমিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা কারিগরি প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকেন।
এছাড়া, সফরকালে সেনাবাহিনী প্রধান বেইজিং ও শিয়াংয়ে অবস্থিত নরিনকো গ্রুপের বিভিন্ন কারখানা ও গবেষণা কেন্দ্র, চায়না অ্যারোস্পেস লং-মার্চ ইন্টারন্যাশনাল কো লিমিটেড এবং আইসাং ইউএভি ফ্যাক্টরিসহ অন্যান্য আধুনিক অস্ত্র ও গোলাবারুদ তৈরির কারখানা পরিদর্শন করেন।
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান গত ২০ আগস্ট সরকারি সফরে চীন গমন করেন।