জাতীয়
স্বৈরাচারমুক্ত নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থা অভ্যুত্থানের লক্ষ্য: প্রধান উপদেষ্টা

অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য ছিল-একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতি ও স্বৈরাচারমুক্ত নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, টানা ১৬ বছরের স্বৈরাচারী অপশাসনের বিরুদ্ধে সম্মিলিত বিস্ফোরণ ছিল জুলাই গণ-অভ্যুত্থান। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মূল লক্ষ্য ছিল- একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতি ও স্বৈরাচারমুক্ত নতুন রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে রাষ্ট্রকে জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পরে এ সকল লক্ষ্য বাস্তবায়নে রাষ্ট্রযন্ত্রের সকল খাতে ব্যাপক সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পতিত স্বৈরাচার ও তার স্বার্থলোভী গোষ্ঠী এখনও দেশকে ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করতে হবে। আসুন সবাই মিলে আমরা এমন এক বাংলাদেশ গড়ে তুলি, যেখানে আর কোনো স্বৈরাচারের ঠাঁই হবে না।
সোমবার (৪ আগস্ট) জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অবিস্মরণীয় দিন আজ। এক বছর আগে এই দিনে জুলাই গণঅভ্যুত্থান পূর্ণতা পায়, দীর্ঘদিনের ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে মুক্ত হয় প্রিয় স্বদেশ। বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ, যাদের যূথবদ্ধ আন্দোলনের ফসল আমাদের এই ঐতিহাসিক অর্জন, তাদের সবাইকে আমি এই দিনে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।
তিনি বলেন, আজ আমি স্মরণ করছি সেই সব সাহসী তরুণ, শ্রমিক, দিনমজুর ও পেশাজীবীদের, যারা ফ্যাসিবাদী শক্তিকে মোকাবিলা করতে গিয়ে শাহাদত বরণ করেছেন। গণ-অভ্যুত্থানে শাহাদত বরণকারী সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে আহত সকল জুলাই যোদ্ধা, চিরতরে পঙ্গু হওয়া ও দৃষ্টিশক্তি হারানো সকল জুলাই যোদ্ধাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন অধ্যাপক ইউনূস।
ড. ইউনূস বলেন, জুলাই গণহত্যার বিচারের কার্যক্রম দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। জুলাই শহীদদের স্মৃতি রক্ষা ও আহত জুলাই যোদ্ধাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমাদের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে রাজনৈতিক ও নির্বাচন ব্যবস্থা এবং প্রয়োজনীয় সকল সংস্কারে রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা চলমান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, একটি টেকসই রাজনৈতিক সমাধানের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে অন্তর্বর্তী সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ।
কাফি

জাতীয়
ঢাকায় পৌঁছেছে ছাত্র-জনতা বহনকারী ৬ ট্রেন

রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউয়ে ৩৬ জুলাই উদযাপন ও জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠানে ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণের জন্য দেশের আটটি অঞ্চল থেকে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে সরকার।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুপুর ১টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে মোট ছয়টি ট্রেন পৌঁছেছে।
ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. আনোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মোট আটটি বিশেষ ট্রেনের ছয়টি স্টেশনে পৌঁছেছে। যাত্রীরাও স্টেশন ত্যাগ করেছে। এখনও দুটি ট্রেন স্টেশনে পৌঁছায়নি, কিছুক্ষণের মধ্যে পৌঁছাবে।
তিনি জানান, ভাঙ্গা, নারায়ণগঞ্জ, সিলেট, রংপুর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম থেকে আসা ট্রেনগুলো পৌঁছেছে। নরসীংদী এবং জয়দেবপুর থেকে আসা ট্রেন এখনও পৌঁছায়নি।
জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করাকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠানে ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণের জন্য আটটি বিশেষ ট্রেন ভাড়া করেছিল সরকার। এসব ট্রেনে ফ্রিতে যাতায়াত করতে পারছেন সাধারণ মানুষ।
জাতীয়
জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত

‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে একটি স্মারক ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম ও সিলমোহর অবমুক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় ডাকটিকিট, উদ্বোধনী খাম ও সিলমোহর অবমুক্ত করেন তিনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, শিল্প ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব আবু নাসের খান।
প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানান।
জাতীয়
রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা

জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টার প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে আজ (মঙ্গলবার) রাত ৮টা ২০ মিনিটে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বিটিভি নিউজ ও বাংলাদেশ বেতারে ভাষণটি একযোগে সম্প্রচার করবে।
এদিকে, প্রধান উপদেষ্টা আজ (মঙ্গলবার) বিকেল ৫টায় সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, জুলাই শহিদ পরিবারের প্রতিনিধি ও আহত যোদ্ধাদের উপস্থিতিতে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় ঐতিহাসিক জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করবেন।
এ ছাড়া এদিন জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
জাতীয়
ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে জাতির পুনর্জন্মের দিন ৫ আগস্ট: প্রধান উপদেষ্টা

৫ আগস্ট শুধু একটা দিবস নয়, এটি একটি প্রতিজ্ঞা। গণ-জাগরণের উপাখ্যান এবং ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে জাতির পুনর্জন্মের দিন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকালে ঢাকা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আজ আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের। যাদের কারণে আত্মত্যাগের কারণে আমরা আমরা পেয়েছি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, দেশের মানুষের বুকে গুলি চালিয়ে শেষ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল ফ্যাসিবাদী সরকার। বিগত ১৬ বছরে মাফিয়াতন্ত্র কায়েম করা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, জুলাই-আগস্টে গুলিবিদ্ধ আহদের চিকিৎসা নিতে দেওয়া হয়নি এবং তৎকালীন সরকার হাসপাতালগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে, যাতে আহদের চিকিৎসা দেওয়া না হয়।
জুলাই আগস্ট আন্দোলনে আহত নিহতদের স্মরণ করে ড. ইউনূস বলেন, শহীদ পরিবার এবং আহতদের আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে। গুরুতর আহতদের বিদেশে চিকিৎসা করানো হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ১৯৭১ সালে সাম্য সামাজিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এদেশের জনগণ সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল। লাখো প্রাণের বিনিময়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দি পরেও এদেশের মানুষ সুবিচার ও গণতন্ত্র থেকে বঞ্চিত হয়েছে, বৈষম্যের শিকার হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০২৪ সালের উত্তাল জুলাই ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসের এক সংকটময় অধ্যায়। ১৬ বছরের পুঞ্জিভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। এ দেশের এই বিপুল সংখ্যক তরুণরা ১৬ বছর ধরে ক্রমাগত হতাশায় নিমজ্জিত ছিল। ভালো ফলাফল করেও চাকরির জন্য ক্ষমতাসীনদের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেছে। চাকরিকে ঘিরে তৈরি হয়েছিল দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি আর তদবির বাণিজ্য। যে তরুণ ঘুষ দিতে পারেনি এলাকার মাফিয়াদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলতে পারেনি, তার চাকরি হয়নি।
তিনি আরও বলেন, সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি, যেটা মূলত ছিল দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির আরেকটা হাতিয়ার। এর বিরুদ্ধে তরুণ সমাজ দীর্ঘদিন প্রতিবাদ বিক্ষোভ করলেও ফ্যাসিবাদী শাসকের টনক নড়েনি। দীর্ঘদিন এই সেক্টরে মাফিয়াতন্ত্র কায়েম করে একটি সুবিধাভোগী শ্রেণি তৈরি করা হয়েছিল। যারা আর্থিক বা অন্য সুবিধার বিনিময়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলবে-কাজ করবে। স্বৈরাচারের পক্ষের সঙ্গী হলেই তার চাকরি হবে।
জাতীয়
প্রথমবার শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনাল ব্যবহার করলো বিমান

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালে প্রথমবারের মতো একটি প্লেন অবতরণ করেছে। টার্মিনাল-৩ ব্যবহার করা প্রথম প্লেনটি হলো বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার।
বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার সোমবার (৪ আগস্ট) বিমানবন্দরের টার্মিনাল ৩-এ প্যাসেঞ্জার বোর্ডিং ব্রিজ (পিবিবি) এবং ভিজ্যুয়াল ডকিং গাইডেন্স সিস্টেম (ভিডিজিএস) ব্যবহার করার মধ্য দিয়ে নতুন এ টার্মিনালে প্রথম অবতরণের স্বীকৃতি পেয়েছে। সোমবার সকালে প্লেনটি রোম থেকে ফিরে তৃতীয় টার্মিনালে অবতরণ করে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স জানায়, ক্যাপ্টেন ইশতিয়াক হোসেন ফ্লাইটটি পরিচালনা করেন এবং ফার্স্ট অফিসার তাহসিন তাকে সহায়তা করেন। এয়ার কমোডর আবু সাঈদ মেহবুব খান এ অপারেশনাল মাইলফলক প্রত্যক্ষ করার জন্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
যাত্রী নামানোর পর সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ডিজিএস, বোর্ডিং ব্রিজে বাহ্যিক বিদ্যুৎ-সংযোগ, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থার কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়।
টার্মিনাল ৩-এর অপারেশনাল প্রস্তুতি এবং বর্ধিত পরিষেবা সক্ষমতার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
এর আগে ২০১৭ সালে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণের প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়। এরপর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপানি সহযোগিতা সংস্থা জাইকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে ১৬ হাজার ১৪১ কোটি টাকা। আর বাকি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।
৩০ লাখ বর্গফুট জায়গায় তিনতলা বিশিষ্ট এ টার্মিনাল ভবনটির আয়তন হবে দুই লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার এবং লম্বা ৭০০ মিটার ও চওড়া ২০০ মিটার। এ ভবনটির নকশা করেছেন রোহানি বাহারিন। তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন সিপিজি কর্পোরেশন প্রাইভেট লিমিটেড, সিঙ্গাপুরের স্থপতি।