জাতীয়
শুল্কহার হ্রাসের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক বিজয়: প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঐতিহাসিক বাণিজ্য চুক্তি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এটি বাংলাদেশের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক বিজয়। বাংলাদেশের ট্যারিফ আলোচক দলকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।
শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে প্রধান উপদেষ্টার এই তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শুল্কহার ২০ শতাংশে নামিয়ে আনতে পারা- যা প্রত্যাশিত হারের চেয়ে ১৭ পয়েন্ট কম; এটি আমাদের আলোচক দলের অসাধারণ কৌশলগত দক্ষতা ও দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষায় অটুট প্রতিশ্রুতির একটি উজ্জ্বল প্রমাণ।
তিনি বলেন, গত ফেব্রুয়ারি থেকে তারা নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন এবং শুল্ক, অ-শুল্ক ও জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত জটিল আলোচনার মধ্য দিয়ে অত্যন্ত সফলভাবে এগিয়ে গেছেন। এই চুক্তি বাংলাদেশের তুলনামূলক সুবিধা ধরে রেখেছে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভোক্তা বাজারে আমাদের প্রবেশাধিকার বাড়িয়েছে এবং জাতীয় স্বার্থ সুদৃঢ়ভাবে সংরক্ষণ করেছে।
প্রধান উপদেষ্টা আরো বলেন, এই সাফল্য কেবল বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ক্রমবর্ধমান শক্তির স্বীকৃতি নয়, এটি আমাদের সামনে আরো বড় সুযোগ, দ্রুততর উন্নয়ন ও দীর্ঘমেয়াদি সমৃদ্ধির দ্বার উন্মোচন করেছে। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ এখন নিঃসন্দেহে উজ্জ্বল।
আজকের এই সাফল্য আমাদের জাতীয় দৃঢ়তা ও একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের সাহসী দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিচ্ছবি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এর আগে, বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ কমিয়ে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ হার যুক্তরাষ্ট্রের সময় অনুযায়ী শুক্রবার (১ আগস্ট) থেকে কার্যকর হবে।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শুল্ক নিয়ে হোয়াইট হাউসের এক ঘোষণায় এই পরিমাণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তালিকায় বাংলাদেশ ছাড়াও আরও কয়েকটি দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করা হয়।
হোয়াইট হাউসের নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশ অন্য দেশগুলোর মধ্যে পাকিস্তানের ওপর ১৯ শতাংশ, আফগানিস্তানের ওপর ১৫ শতাংশ, ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ, ব্রাজিলের ওপর ১০ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার ওপর ১৯ শতাংশ, মালয়েশিয়ার ওপর ১৯ শতাংশ, মিয়ানমারের ওপর ৪০ শতাংশ, ফিলিপাইনের ওপর ১৯ শতাংশ, শ্রীলঙ্কার ওপর ২০ শতাংশ, ভিয়েতনামের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ওয়াশিংটন।
কাফি

জাতীয়
বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী শমশের আলী মারা গেছেন

বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ও গবেষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক, সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য, প্রফেসর এমিরেটাস ড. এম শমশের আলী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
শমশের আলীর বড় ছেলে জেহান আলী তার বাবার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বাদ জোহর ধানমণ্ডির ৭ নম্বর রোডের বায়তুল আমান মসজিদে জানাজা হবে। এরপর আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে।
বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির প্রাক্তন সভাপতি শমশের আলী ১৯৩৭ সালের ২১ নভেম্বর কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৪ সালে যশোর জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্টিক পাস করেন। ১৯৫৬ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে আইএসসি পাস করেন। ১৯৫৬ সালে তিনি ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে। ১৯৫৯ সালে শ্রেষ্ঠত্বের সঙ্গে অনার্স ও ১৯৬০ সালে এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬১ সালে ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি সম্পূর্ণ করেন। ১৯৬৫ সালে সেই ম্যানচেস্টার থেকেই থিওরেটিক্যাল নিউক্লিয়ার ফিজিক্স বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৬১ সালে পাকিস্তান আণবিক শক্তি কমিশনে যোগদানের মাধ্যমে শমশের আলীর কর্মজীবন শুরু হয়। পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করার পর ১৯৬৫ সালে দেশে ফিরে এসে তিনি ঢাকায় আণবিক শক্তি কেন্দ্রে সিনিয়র সায়িন্টিফিক অফিসার হিসেবে যোগ দেন। কর্মদক্ষতার জন্য তিনি ১৯৭০ সালে অত্যন্ত অল্প বয়সে আণবিক শক্তি কমিশনের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পান। ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একটা স্পেশাল সাইটেশনের মাধ্যমে শমসের আলীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনারারি প্রফেসর অব ফিজিক্স করে তাকে একটা বিরল সম্মাননা প্রদান করে। ১৯৮২ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন এবং ২০০৬ সাল পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন।
এর মধ্যে ১৯৯২ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০২ সাল থেকে ২০১০ সাল সময় পর্যন্ত সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও ২০০৪ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন অধ্যাপক শমসের আলী।
অধ্যাপক এম শমশের আলী গত ২৪ মার্চ বাউবির প্রফেসর ইমেরিটাস পদে তার দাপ্তরিক কার্যক্রম শুরু করেন।
জাতীয়
শতকোটি টাকা নিয়ে পালালো ফ্লাইট এক্সপার্ট

বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গেছে অনলাইনে বিমানের টিকিট কাটার সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফরম ‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’। তাদের অফিস বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। ওয়েবসাইট হারিয়ে গেছে। বহু এজেন্সি ফ্লাইট এক্সপার্টে শত শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে বলে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
ফ্লাইট এক্সপার্টের সেলস ডিপার্টমেন্টের একজন মামুনুর রশিদ। তিনি বলেন, ‘গত রাতেই আমাদের মালিক দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। আমরা এখন মতিঝিল থানায় যাচ্ছি।’
এদিকে ফ্লাইট এক্সপার্টের সিওও সালমান তাদের অফিসের অভ্যন্তরীণ একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে লিখেছেন, সাঈদ, হোসাইন এবং সাকিব তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।
তারা খুব সতর্কতার সাথে পরিকল্পনা করে গত বৃহস্পতিবারের মিটিংয়ে এসব দোষ তার (সালমানের) ওপর চাপিয়ে দিয়েছেন। এটা সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ছিল এবং সালমানকে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগ দেওয়া হয়নি। আজ সকালে তারা ৩ কোটি টাকা বা তার কম টাকা তুলে নিয়েছেন এবং তা নিজেদের কাছে রেখে দিয়েছেন। এর ফলস্বরূপ, কম্পানিটি এখন বন্ধ হয়ে গেছে।
সালমান আরো জানিয়েছেন যে, তার দিকে আসা হুমকি এবং দোষারোপের কারণে নিজেকে রক্ষা করার জন্য তিনি ছুটি নিয়েছেন। এই পরিস্থিতির জন্য তিনি দুঃখিত এবং বলেছেন যে এভাবে চলে যাওয়ার কোনো ইচ্ছা তার ছিল না।
এদিকে ফেসবুকে অনেকেই লিখেছেন, ফ্লাইট এক্সপার্ট মালিক গতরাতেই দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
ফ্লাইট এক্সপার্টের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে গিয়ে দেখা গেছে, তাদের সর্বশেষ পোস্ট ছিল হজ নিয়ে। সেই পোস্টে হজ ২০২৬-এর রেজিস্ট্রেশন শুরু জানিয়ে হজ প্যাকেজের মূল্য ছাড়া হয়েছে।
জয়িতা আফ্রিন নামে একজন প্রশ্ন করে লিখেছেন, ফ্লাইট এক্সপার্টের মতো ট্রাস্টেড কম্পানি যদি দেশ থেকে পালিয়ে যায় তাহলে আর কাকে বিশ্বাস করব?
ফ্লাইট এক্সপার্ট ২০১৭ সালের মার্চ মাস থেকে বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম শুরু করে। তখন একটি লঞ্চ ইভেন্টের মাধ্যমে তাদের প্ল্যাটফরম চালু করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি খুব দ্রুত বাংলাদেশের অনলাইন ট্রাভেল ইন্ডাস্ট্রিতে একটি প্রভাবশালী নাম হয়ে ওঠে। তখন তারা দেশের ফ্লাইট টিকেটিং শিল্পে একটি বড় জায়গা দখল করে নেয়।
প্রতিষ্ঠানটি দেশি-বিদেশি বিভিন্ন এয়ারলাইনসের টিকিট বুকিং, হোটেল রিজার্ভেশন, ট্যুর প্যাকেজ এবং ভিসা প্রক্রিয়াকরণের মতো নানা ধরনের সেবা দিত। বিশেষ করে, সাশ্রয়ী মূল্যে ফ্লাইট টিকিট বুক করার সহজ সুবিধার কারণে এটি গ্রাহকদের কাছে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে। গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন আকর্ষণীয় অফার, ডিসকাউন্ট এবং সহজে পেমেন্টের ব্যবস্থা থাকায় এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
জাতীয়
ঢাকায় আজ তিন সমাবেশ, চলাচলে ডিএমপির বিধিনিষেধ

রাজধানী ঢাকায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল (ছাত্রদল) এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পূর্বঘোষিত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আজ (রোববার)। এ ছাড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠীর অনুষ্ঠান চলমান। এসব সমাবেশকে কেন্দ্র করে নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রদল ও এনসিপির এই সমাবেশ নির্দিষ্ট স্থানে অনুষ্ঠিত হলেও, নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) রাজধানীর বেশকিছু এলাকায় যান চলাচল সীমিত করেছে। কিছু সড়কে ডাইভারশন দেওয়া হয়েছে এবং গণপরিবহন চলাচলেও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, রোববার রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে ‘ছাত্র সমাবেশ’ করবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের’ দাবিতে সমাবেশ করবে জাতীয় নাগরিক পার্টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘জুলাই জাগরণ’ অনুষ্ঠান করবে সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠী।
এসব সমাবেশকে ঘিরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সমাবেশস্থল ও এর আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
কর্তৃপক্ষ জনসাধারণকে ধৈর্য ধারণ এবং পুলিশের নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছে। একই সঙ্গে, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সমাবেশ চলাকালীন সময়ে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলো পরিহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
রোববার বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের’ দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হবে এনসিপির জনসমাবেশ। দলটি জানিয়েছে, সেখানে নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার ঘোষণা করা হবে।
দলটির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এক পোস্টে বলা হয়, ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার ঘোষণা দেওয়া হবে। ইতিহাসের এই সন্ধিক্ষণে দেখা হচ্ছে আপনাদের সাথে।
এর আগে গত বুধবার বিকেলে নরসিংদী শহরের পৌরসভার সামনে আয়োজিত পথসভায় এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জানান, ৩ আগস্ট ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার ঘোষণা দেওয়া হবে।
রোববার দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শাহবাগ মোড়ে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে বিজয়ের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের উদ্যোগে ‘ছাত্র সমাবেশ’ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশকে ঘিরে সৃষ্টি হতে যাওয়া জনদুর্ভোগের জন্য রাজধানীবাসীর প্রতি অগ্রিম দুঃখ প্রকাশ করেছে ছাত্রদল।
এক বিবৃতিতে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির জানান, গত জুন মাসে আমরা আমাদের জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে ৩৬ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণায় শুরুতে ৩ আগস্টে জাতীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করি। কিন্তু পরে জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা ৩ আগস্ট শহীদ মিনারে তাদের সমাবেশ করার বিষয়ে আমাদের নেতাদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে একাধিকবার যোগাযোগ ও অনুরোধ করেন।
শহীদ মিনারের সমাবেশের বিষয়ে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস থেকে অনুমতিও গ্রহণ করেছিলাম। এই দিনে শহীদ মিনারে সমাবেশ করার বিষয়ে আমরাই ছিলাম একমাত্র বৈধ দাবিদার। কিন্তু পরে একটি উদার, গণতান্ত্রিক, পরমতসহিঞ্চু, সব মত ও পথের সহাবস্থানে বিশ্বাসী ছাত্রসংগঠন হিসেবে আমরা শহীদ মিনারে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে শাহবাগে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।
তিনি আরও বলেন, ব্যস্ত রাজধানীতে কর্মদিবসে সমাবেশের জনভোগান্তি সম্পর্কে আমরা অবগত। এতদসত্ত্বেও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এই গুরুত্বপূর্ণ স্মরণীয় দিনটিতে আমাদেরকে ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির বৃহৎ ঐক্যের স্বার্থে বৃহত্তম ছাত্রসংগঠন হিসেবে দায়িত্বশীলতা ও উদারতার জায়গা থেকে সমাবেশের স্থান পরিবর্তন করতে হয়েছে।
আমরা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা যেকোনো ধরনের জনদুর্ভোগের জন্য অগ্রিম দুঃখ প্রকাশ করছি। প্রত্যাশা করছি, সম্মানিত নগরবাসী বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করবেন। একটি দায়িত্বশীল ছাত্রসংগঠন হিসেবে ভবিষ্যতে এই বিষয়ে আমরা আরও অধিকতর সচেতন থাকব।
তিন কর্মসূচি ঘিরে শাহবাগ ও বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিপুল জনসমাগম হতে পারে, এমন ধারণা থেকে এদিন শাহবাগ এলাকায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এ কারণে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের সময় নিয়ে কেন্দ্রের উদ্দেশে রওনা হওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।
এক গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রোববার সভা-সমাবেশ ও অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে শাহবাগ, শহীদ মিনার ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় প্রচুর জনসমাগম ঘটবে। ফলে ওই এলাকা বিশেষ করে শাহবাগ ক্রসিং দিয়ে যানচলাচল করানো সম্ভব হবে না। এমতাবস্থায় ঢাকাবাসীকে ডাইভারশন মেনে বিকল্প পথে চলাচলের জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় : সোনারগাঁও সিগন্যাল বা বাংলামোটর ক্রসিং হয়ে উত্তর দিক থেকে আগত যানবাহনগুলো হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ক্রসিং এ সোজা শাহবাগের দিকে না গিয়ে বামে মোড় নিয়ে হেয়ার রোড/মিন্টু রোড হয়ে যাতায়াত করবে।
কাটাবন মোড় : সায়েন্সল্যাব ক্রসিং হয়ে পশ্চিম দিক থেকে আগত যানবাহনগুলো কাটাবন মোড় থেকে শাহবাগের দিকে না গিয়ে ডানে মোড় নিয়ে নীলক্ষেত/পলাশী হয়ে অথবা কাটাবন মোড় থেকে বামে মোড় নিয়ে সোনারগাঁও (হাতিরপুল) রোড হয়ে বাংলামোটর লিংক রোড দিয়ে চলাচল করবে।
মৎস্য ভবন মোড় : হাইকোর্ট/কদম ফোয়ারা ক্রসিং হয়ে আগত যানবাহনগুলো মৎস্য ভবন থেকে শাহবাগের দিকে না গিয়ে সোজা হেয়ার রোড/শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী সরণি (মগবাজার রোড) হয়ে চলাচল করবে।
অপরদিকে কাকরাইল মসজিদ ক্রসিং হয়ে উত্তর দিক থেকে আগত যানবাহন মৎস্যভবন ক্রসিং থেকে শাহবাগের দিকে না গিয়ে সোজা হাইকোর্ট হয়ে গুলিস্তান/ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে চলাচল করবে।
টিএসসি/রাজু ভাস্কর্য : নীলক্ষেত ক্রসিং/দোয়েল চত্বর ক্রসিং থেকে আসা যানবাহন টিএসটি/রাজু ভাস্কর্য ক্রসিংয়ে এসে শাহবাগের দিকে না গিয়ে দোয়েল চত্বর/নীলক্ষেত ক্রসিং হয়ে চলাচল করবে।
জাতীয়
৫ আগস্ট সব পক্ষের উপস্থিতিতে জুলাই ঘোষণাপত্র: প্রেস উইং

আগামী ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সব পক্ষের উপস্থিতিতে জুলাই ঘোষণাপত্র জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই ঘোষণাপত্রের খসড়া চূড়ান্ত করেছে। আগামী ৫ আগস্ট বিকেল ৫টায় গণঅভ্যুত্থানের সব পক্ষের উপস্থিতিতে জুলাই ঘোষণাপত্র জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত অবিলম্বে জানানো হবে।
জাতীয়
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত এলেন ৩৯ বাংলাদেশি

যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে অবস্থানের অভিযোগে দেশটি থেকে ৩৯ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (২ আগস্ট) সকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি সামরিক বিমানে তারা ঢাকার শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান।
এর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার ও কল্যাণ অনুবিভাগের এক বার্তায় জানানো হয়, মার্কিন সামরিক বাহিনীর বিমানে করে ৬১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
তবে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) একটি সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্র থেকে চার্টার্ড ফ্লাইটে অন্তত ৩০ জন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। এই দফায় ফেরত আসার সংখ্যা প্রথমে ৬০ জনের কথা বলা হলেও পরে ৩০ জন ফেরত আসছেন।
গত জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে অবৈধ অভিবাসীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো শুরু করে ট্রাম্প প্রশাসন। ভারত, ব্রাজিলসহ অনেক দেশের নাগরিকদের হাতকড়া পরিয়ে ফেরত পাঠানো হয়। তবে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র থেকে যেসব বাংলাদেশি নাগরিককে ফেরত পাঠানো হয়েছে, তাদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করেছে সে দেশের কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশি নাগরিকের কাউকে হাতকড়া পরানো হয়নি। ফেরত পাঠানোর আগের বিভিন্ন স্তরের আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মানবিক আচরণের বিষয়ে জোর দেওয়া হয়। সে অনুরোধে সাড়াও দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই দফায়ও যারা আসছেন তাদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করা হবে। বিভিন্ন সময় আরও ১১৮ বাংলাদেশি নাগরিককে ফেরত পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র।
প্রসঙ্গত, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মতো দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে অবৈধ হয়ে ধরা পড়া বাংলাদেশিসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের নিজ নিজ দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে প্রতি মাসে কিছু মানুষকে ফিরতে হচ্ছে ঢাকায়। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে শুক্রবার (১ আগস্ট) কিছু বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।