জাতীয়
কাউকে গ্রেফতার করতে হলে পরিচয়পত্র দেখাতে হবে: আইন উপদেষ্টা

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, আমরা কিছু ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন করেছি। এ সংশোধনের পর কাউকে গ্রেফতার করতে হলে পুলিশ বা সংস্থার ক্লিয়ার পরিচয় দিতে হবে। আইডি কার্ড দেখাতে হবে। যে ব্যক্তি গ্রেফতার হচ্ছেন, সে চাহিবামাত্র আইডি কার্ড দেখাতে হবে। এটা বাধ্যতামূলক।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।
আসিফ নজরুল বলেন, থানায় আনার পর গ্রেফতার করা ব্যক্তির স্বজনদের জানাতে হবে। ১২ ঘণ্টার মধ্যেই তার পরিবারকে জানাতে হবে। প্রতিটা গ্রেফতারের ক্ষেত্রে কোন আইনে, কি কারণে গ্রেফতার হয়েছে। সবকিছুর একটা মেমোরেন্ডাম থাকতে হবে।
তিনি বলেন, গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তির শরীরে যদি কোনো আঘাত থাকে বা সে যদি বলে অসুস্থ, তাকে অতিদ্রুত চিকিৎসা করাতে হবে। আমরা বলেছি প্রত্যেকটা গ্রেফতারের ক্ষেত্রে মেমোরেন্ডাম অব অ্যারেস্ট থাকতে হবে।
তিনি বলেন, আগে ফ্যাসিবাদী আমলে বিভিন্ন এজেন্সি গ্রেফতার করতো। আসামির স্বজনদের পুলিশ, র্যাব গোয়েন্দা সংস্থা একে-অপরেররের কাছে পাঠাতো। র্যাব গ্রেফতার করে বলতো পুলিশ জানে, পুলিশ গ্রেফতার করে বলতো র্যাব জানে। আমরা আইনে বলেছি, যে সংস্থাই গ্রেফতার করুক, তাদের কনসার্ন অফিসে গ্রেফতার করা ব্যক্তিকে কেন, কোনো আইনে গ্রেফতার করেছে ১২ ঘণ্টার মধ্যে কার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, সমস্ত কিছু থাকতে হবে। এবং সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠিয়ে দিতে হবে।
আমরা বলেছি নিয়মিতভাবে প্রত্যেকটি থানায়, জেলা পুলিশের কার্যালয় গ্রেফতার করা ব্যক্তিদের তালিকা থাকতে হবে। কত তারিখে কোনো আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেই তালিকা থাকতে হবে।
তিনি বলেন, সন্দেহের অবকাশে ফিফটি ফোরে ইচ্ছে মতো গ্রেফতার করা হতো। সেখানেও আমরা উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছি। আমরা বলেছি, আপনি (পুলিশ) যদি সন্দেহের অভিযোগে গ্রেফতার করেন, তাকে (পুলিশ) নিশ্চিত হতে হবে আমি এ লোককে গ্রেফতার করেছি, সে আমার সামনে অপরাধ ঘটিয়েছে এবং আমার (পুলিশ) বিশ্বাস করার কারণ আছে, সে আমার সামনে অপরাধ ঘটিয়েছে। এবং সেটা তাকে লিখিতভাবে এক্সপ্লেইন করতে হবে। ৭ বছরের নিচে যেসব অপরাধ, এসব ক্ষেত্রে তাকে সন্তুষ্ট হতে হবে, আমি যদি তাকে গ্রেফতার না করি, সে পালিয়ে যাবে। এই দুইটা কন্ডিশন ফুল ফিল করলে ৫৪ এর আন্ডারের গ্রেফতার করতে পারবে।
তিনি বলেন, আমরা আইন করেছি, সেখানে অনলাইন বেল বন্ড সাবমিশনের বিধান আছে। সেখানে ডিজিটালি ওয়ারেন্ট দেওয়া যাবে। এছাড়া বিচারিক তদারকি স্ট্রং করেছি। এই আইন যদি সঠিকভাবে পালন করা যায়, তাহলে মানুষকে আর ইচ্ছামতো গ্রেফতার কিংবা গুম করা যাবে না। এসব আইন সংশোধনে মানুষকে হয়রানি বন্ধ হবে। এবং এটা যুগান্তকারী ভূমিকা হিসেবে পালন করবে বলে তিনি জানান।
মাইলস্টোনে নিহতদের ঘটনায় পরিবারের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে। মাইলস্টোন স্কুলের সঙ্গে কথা বলে সব কিছু করা হবে। আগামীকাল সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দোয়া অনুষ্ঠান হবে। মর্মান্তিক ভাবে দুইজন শিক্ষিকা মারা গেছেন। উনাদের রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেওয়া হবে বলে জানান আইন উপদেষ্টা।
কাফি

জাতীয়
ডেঙ্গুতে আরও ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৩৩১

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় ৩৩১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। শনিবার (২৬ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়াদের মধ্যে ঢাকা সিটি করপোরেশনের ৭৫ জন এবং বাকিরা ঢাকা সিটির বাইরের।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৯ হাজার ১২০ জন। এর মধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছেন ১৭ হাজার ৬৯৩ জন। মারা গেছেন ৭৩ জন।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু এখন সিজনাল নেই, সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এটা বাড়ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনে পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার চালাতে হবে। একইসঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী বলছেন, মশানিধনে শুধু জেল-জরিমানা আর জনসচেতনতা বাড়িয়ে কাজ হবে না। সঠিকভাবে জরিপ চালিয়ে দক্ষ জনবল দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে দেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী আক্রান্ত এবং ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়।
কাফি
জাতীয়
সারাদেশে বিশেষ অভিযান, গ্রেফতার আরও ১৪৮৬

সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত আরও ৯৮৮ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্য ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন ৪৯৮ জন।
শনিবার (২৬জুলাই) পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে পুলিশের বিশেষ অভিযানে মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত ৯৮৮ আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্য ঘটনায় ৪৯৮ জন। মোট গ্রেফতার করা হয়েছে ১৪৮৬ জনকে।
অভিযানিক কার্যক্রমে উদ্ধার করা হয়েছে দেশীয় ওয়ান শুটার এলজি ২টি, কার্তুজ ৭ রাউন্ড, কার্তুজের খোসা ১ রাউন্ড ও ককটেলের বিশেষ অংশ ৩টি।
কাফি
জাতীয়
দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমে আমরা সোচ্চার: বাণিজ্য উপদেষ্টা

জুলাই গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের আন্দোলন সংগ্রামের একটি মাইলফলক। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমেও আমরা সোচ্চার হয়েছি বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন এবং বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
তিনি বলেন, আমরা যদি সেবাকে দায়িত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারি তবে বুঝবো জুলাই গণআন্দোলনের মূল শিক্ষা আমরা ধারণ করতে পেরেছি।
শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের ওয়েসিস প্রাঙ্গণে জুলাই গণঅভ্যুত্থান উপলক্ষে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় আয়োজিত জুলাই পুনর্জাগরণ-২০২৫ অনুষ্ঠানমালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মিজ নাসরিন জাহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার (উপদেষ্টা পদমর্যাদা) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিমান ও সিএ) আব্দুন নাসের খান। এছাড়া ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে ৪ আগস্ট দৃষ্টি হারানো মো. সাব্বির আহমেদ জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন।
পর্যটন ও বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আজকে আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক মুহূর্ত স্মরণ করছি-ঐতিহাসিক জুলাই আন্দোলনের এক বছর পূর্তি। এ জুলাই আন্দোলনে নিহত সব শহীদদের প্রতি গভীর ও বিনম্র শ্রদ্ধা, অগণিত আহতদের জানাই সহমর্মিতা ও সম্মান। একই সঙ্গে গভীর সমবেদনা ও দুঃখ জানাই মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে হৃদয় বিদারক বিমান দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ বিভিন্ন মানুষের প্রাণহানির ঘটনায়।
তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলন আমাদের রাষ্ট্র ও প্রশাসনের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। এ অধ্যায় কেবল প্রতিবাদ কিংবা বিরোধের নয়-এটি আশাবাদ ও পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা আর জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার এক সাহসী আহ্বান। এটি বাংলাদেশে নতুন এক বৈষম্যহীন ও ন্যায়বান রাষ্ট্র সৃষ্টির জন্য অদম্য পথযাত্রার সূচনা করেছে। ছাত্ররা এ আন্দোলনে পথ দেখিয়েছিল আর আপামর জনগণ সেদিন এ আন্দোলনে শরিক হয়েছিল। আপনারা দেখেছেন সেসময় রাজপথের দেয়ালে, ব্যস্ত সড়কে আর গ্রামের অলিতে গলিতে যে গ্রাফিতি আঁকা হয়েছিল তা শুধু চিত্র নয়, ছিল বাংলাদেশের মানুষের আর্তনাদ ও বিদ্রোহী কণ্ঠস্বর।
উপদেষ্টা বলেন, যে কোনো গণআন্দোলনের পর একটি জাতির সামনে আসে আত্মবিশ্লেষণের সময়। আমরা পেছনে ফিরে তাকাই-কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল? কোথায় কোথায় আমরা প্রশাসনিকভাবে ব্যর্থ হয়েছি? আর আমরা সামনে তাকাই-এই ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠতে আমাদের করণীয় কী? অনেক দেশেই গণআন্দোলনের পর সংবিধান সংস্কার, নির্বাচন এবং সমঝোতার মাধ্যমে একটি স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক পথে এগিয়ে যাওয়ার উদাহরণ রয়েছে, যেমন আফ্রিকার রুয়ান্ডা। এর অন্যতম কারণ ছিল তাদের প্রশাসনিক সক্ষমতা এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছা।
তিনি বলেন, আমাদের দেশেও জুলাই আন্দোলনের পর আমরা প্রশাসনের সব স্তরে আত্মজিজ্ঞাসা করেছি- আমরা কোথায় জনগণের চাহিদা শুনিনি? এ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত আইন, বিধি ও নীতিমালায় সংস্কার এবং নতুনভাবে প্রণয়নের মাধ্যমে আমরা সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য সরকারি ও বেসরকারি খাতের সম্মিলনে সামষ্টিকভাবে কাজ করছি। আওতাধীন দপ্তর ও সংস্থার কাজে দৃশ্যমান গতি এনেছি। দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমেও আমরা সোচ্চার হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা জনগণের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ বাড়িয়েছি, কার্যকরী পরিবর্তন আনতে সচেষ্ট হয়েছি এবং সবচেয়ে বড় কথা, আমরা জনগণের ওপর আস্থা রাখতে শিখেছি। জনগণ শুধু সংখ্যা নয়, জনগণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এ অর্জন আমাদের সবার। আমরা যদি সেবাকে দায়িত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারি তবে বুঝবো জুলাই গণআন্দোলনের মূল শিক্ষা আমরা ধারণ করতে পেরেছি। আমরা যেন এমন একটি রাষ্ট্র ও প্রশাসন গড়ে তুলি, যেখানে নাগরিকের কণ্ঠস্বর উপেক্ষিত হবে না, যেখানে সিদ্ধান্ত হবে তথ্যভিত্তিক ও জনস্বার্থে এবং যেখানে প্রশাসন জনগণের সবচেয়ে বড় মিত্র হয়ে উঠবে।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন, তরুণদের কখনো দমিয়ে রাখা যায় না। তারা উদ্যম তারা দুর্বার। যখন তাদের বাধা দেওয়া হয় তারা হয়ে ওঠে আরও অনির্বাণ। তরুণরা যে কত দুর্বার হতে পারে জুলাই আগস্টের অভ্যুত্থান আমাদের তা দেখিয়েছে। এ সময় তিনি সব রকম দুর্নীতি থেকে বেরিয়ে এসে দেশ গড়ায় আত্মনিয়োগ করতে তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে জুলাই অভ্যুত্থানে সম্পূর্ণভাবে দৃষ্টি হারানো ১১ জন জুলাই যোদ্ধার হাতে ইউএস বাংলা এয়ারলাইনস এর দেওয়া পবিত্র ওমরাহ পালনের জন্য (ঢাকা- জেদ্দা- ঢাকা) দুটি করে টিকিট প্রদানের কনফারমেশন লেটার ও স্কাই ক্যাপিটাল এয়ারলাইনসের পক্ষ থেকে দেওয়া ওমরাহ হজ পালনের অন্যান্য ব্যয়ের ৫০ হাজার টাকার চেক হস্তান্তর করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
এছাড়া জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী তিন জনের হাতে আভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের টিকিট ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানমালার মধ্যে ছিল ২০২৪ এর ছাত্র-জনতার জুলাই অভ্যুত্থানকে স্মরণ করে চিত্রাঙ্কন ও রক্তদান কর্মসূচি। উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন রক্তদানের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন। এছাড়াও জুলাই অভ্যুত্থানকে স্মরণীয় করতে পর্যটন মেলার আয়োজন ছিল। মোট ১০টি স্টল মেলায় অংশ নেয়। অতিথিদের নিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন।
কাফি
জাতীয়
দগ্ধদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে চীনা মেডিকেল টিম

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের পরিপ্রেক্ষিতে উহান থার্ড হাসপাতালের চীনা চিকিৎসকদল বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব বার্নস অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারিতে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
শনিবার (২৬ জুলাই) ঢাকার চীনা দূতাবাস জানিয়েছে, চীনা চিকিৎসক ও নার্সরা ক্ষত সংক্রমণ প্রতিরোধ ও আহতদের নিয়মিত যত্নের পদ্ধতি সম্পর্কে বাংলাদেশি চিকিৎসকদের পরামর্শ দিচ্ছেন। তারা রোগীদের অবস্থা পরীক্ষা, ক্ষত পরিষ্কার, ড্রেসিং পরিবর্তন, ধমনীতে ছিদ্র করতে সহায়তা ও অস্ত্রোপচারের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।
চিকিৎসকদলটি সিঙ্গাপুর ও ভারতের চিকিৎসকদলসহ বাংলাদেশি চিকিৎসকদের সঙ্গেও পরামর্শ করেছে। চীনা পক্ষ জোর দিয়ে বলেছে যে, তারা আহতদের চিকিৎসায় বাংলাদেশকে সব ধরনের সহায়তায় আগ্রহী।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের অনুরোধে পাঁচজন পোড়া বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ও নার্সের সমন্বয়ে গঠিত চীনা জরুরি চিকিৎসকদল গত ২৪ জুলাই ঢাকায় আসে।
উল্লেখ্য, সোমবার ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। এতে আহতদের চিকিৎসাসেবা দিতে ঢাকায় আসে ভারত, চীন ও সিঙ্গাপুর থেকে মেডিকেল টিম।
কাফি
জাতীয়
তিন মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত ৭২, গণপিটুনিতে ১৯

চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত দেশে রাজনৈতিক সহিংসতায় অন্তত ৭২ জন নিহত এবং ১ হাজার ৬৭৭ জন আহত হয়েছেন। একই সময়ে গণপিটুনিতে প্রাণ হারিয়েছেন ১৯ জন। মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’–এর প্রকাশিত ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
সংগঠনটি জানায়, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সংগৃহীত তথ্য এবং সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই তিন মাসে বিএনপির ১০৫টি এবং আওয়ামী লীগের (কার্যক্রম নিষ্ক্রিয়) ৪টি অভ্যন্তরীণ সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। বিএনপির সংঘাতে নিহত হয়েছেন ১৯ জন এবং আহত হয়েছেন ৯৭৩ জন। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের সংঘাতে ২ জন নিহত ও ২৪ জন আহত হয়েছেন।
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড: এপ্রিলে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার যৌথ বাহিনী গঠন করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছে। তবে এই সময়েও বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এপ্রিলে থেকে জুন পর্যন্ত ৮ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৫ জন পুলিশের, ১ জন র্যাব, ১ জন কোস্টগার্ড এবং ১ জন যৌথ বাহিনীর সদস্যদের হাতে নিহত হন বলে দাবি করা হয়েছে।
গণপিটুনি ও সহিংসতা: প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গণপিটুনির ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি ও ব্যবস্থা গ্রহণে দুর্বলতার কারণে ১৯ জন গণপিটুনিতে প্রাণ হারিয়েছেন।
কারাগার পরিস্থিতি: দেশের কারাগারগুলোর ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত বন্দী থাকায় সেগুলোর অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে ধারণক্ষমতার তিন গুণ বন্দী থাকার উল্লেখ করা হয়েছে। চিকিৎসা-সংকটের কারণে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত ২২ জন বন্দী মারা গেছেন, যাঁদের ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে অসুস্থতা থেকে সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ার কারণে।
নারী ও শিশু নির্যাতন: এই সময়ে ২০৮ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। ধর্ষণের শিকারদের মধ্যে ৭৮ জন নারী এবং ১০৯ জন কন্যাশিশু। দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ১৩ জন কন্যাশিশু, আর ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হন ৩ জন। যৌতুকের কারণে ১১ জন নারী নিহত হন এবং যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ১৪ জন।
সীমান্তে সহিংসতা: বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ৯ জন বাংলাদেশি নিহত ও ৫ জন আহত হয়েছেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়। নিহতদের মধ্যে ৭ জন গুলিতে এবং ২ জন নির্যাতনে মারা যান। একই সময়ে নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ ১ হাজার ৭৮৩ জন বাংলাদেশিকে জোরপূর্বক ফেরত পাঠানোর অভিযোগও উত্থাপন করা হয়।
সাংবাদিক নির্যাতন: প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ৩০ জন সাংবাদিক আহত, ১৬ জন লাঞ্ছিত এবং ১১ জন হুমকির শিকার হয়েছেন। হামলার জন্য বিএনপি-জামায়াত কর্মী, প্রশাসনের সদস্য ও মাদক ব্যবসায়ীদের দায়ী করা হয়েছে।
কাফি