Connect with us
৬৫২৬৫২৬৫২

মত দ্বিমত

বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র নাকি ক্ষমতার অভ্যন্তরীণ উপনিবেশ?

Published

on

ব্লকে

বিশ্ববিদ্যালয় শব্দটি উচ্চারিত হলেই আমাদের মনে ভেসে ওঠে এক নিঃস্বার্থ, স্বাধীন ও মুক্ত জ্ঞানচর্চার পরিসর যেখানে সত্যের অনুসন্ধানই প্রধান সাধনা। আর সেখানেই মুক্তবুদ্ধি ও যুক্তির পথ ধরে গড়ে ওঠে সমাজ সংস্কারের বুনিয়াদ। বিশ্ববিদ্যালয় একসময় কেবল পুঁথিগত বিদ্যার কেন্দ্র নয়, বরং তা ছিল বুদ্ধিবৃত্তিক স্বাধীনতার রক্ষাকবচ। সেখানে তৈরি হতো জিজ্ঞাসু মন, ন্যায়বোধসম্পন্ন নাগরিক এবং অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্ব। মধ্যযুগে ইউরোপে পোপের প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে যেভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্ম হয়েছিল, সেভাবেই উপনিবেশ-উত্তর প্রেক্ষাপটে আমাদের দেশেও বিশ্ববিদ্যালয়কে কল্পনা করা হয়েছিল মুক্তচিন্তার আধার হিসেবে। কিন্তু আজকের বাস্তবতায়, বিশেষ করে বাংলাদেশের বহু সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই আদর্শচিন্তা গভীরভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

বিশ্ববিদ্যালয় এখন আর কেবল জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্র নয় বরং অনেক ক্ষেত্রেই তা পরিণত হয়েছে স্বজনপ্রীতির বলয়ে আবদ্ধ, দুর্নীতির দ্বারা সংক্রমিত, এবং রাজনৈতিক আনুগত্যের বিনিময়ে সুবিধা আদায়ের এক অভ্যন্তরীণ উপনিবেশে। এখানে জ্ঞান নয়, বরং ক্ষমতার বলয়, গোষ্ঠীগত আনুগত্য এবং ব্যক্তি-স্বার্থই হয়ে উঠছে প্রশাসনিক ও একাডেমিক সিদ্ধান্তের প্রধান নিয়ামক শক্তি।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

এই বাস্তবতায় একটি মৌলিক প্রশ্ন আমাদের সামনে এসে দাঁড়ায়: বিশ্ববিদ্যালয় কি সত্যিই জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র, নাকি ক্ষমতা কুক্ষিগত করে তা হয়ে উঠেছে স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি ও রাজনীতির এক অভ্যন্তরীণ উপনিবেশ? পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বিগত কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারি নিয়োগ, একাডেমিক ও প্রশাসনিক পদায়ন এবং সবধরনের সিদ্ধান্তগ্রহণে যোগ্যতা ও সক্ষমতার তুলনায় ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও গোষ্ঠীগত আনুগত্যকে অধিকতর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ‘আমার ছাত্র’, ‘আমার দলের লোক’ কিংবা ‘আমার এলাকার মানুষ’ এই পরিচিতিগুলোর ভিত্তিতে যারা সুযোগ পাচ্ছে, তারা প্রায়শই যোগ্যতায় দুর্বল হলেও অনায়াসে দায়িত্ব ও ক্ষমতা লাভ করছে। অদৃশ্য অথচ প্রবল এক ‘নেটওয়ার্কিং’ সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, যা এখন আর গোপন নয়, বরং একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে। ফলে নিয়োগ বোর্ডের স্বচ্ছতা আজ গভীরভাবে প্রশ্নবিদ্ধ। মেধা, গবেষণায় অবদান কিংবা একাডেমিক উৎকর্ষের চেয়ে কার সঙ্গে কার সম্পর্ক এই রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক পৃষ্ঠপোষকতা হয়ে উঠেছে নিয়োগপ্রাপ্তি ও পদায়নের মাপকাঠি।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

এমন পরিস্থিতিতে পিয়েরে বুরদিয়ুর ‘সাংস্কৃতিক পুঁজি’র ধারণা প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় আজ আর জ্ঞানচর্চার নৈতিক পুঁজি তৈরি করছে না; বরং এখানে রাজনৈতিক প্রভাব-বলয়ে সামাজিক পুঁজির অপপ্রয়োগের মাধ্যমে ক্ষমতার বৃত্ত তৈরি করা হচ্ছে। ফলে গোষ্ঠীগত অনুগত্যই সাফল্যের চাবিকাঠি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এর ফলে শুধু যে জ্ঞানচর্চার মান কমছে তা নয়, বরং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পেশাদারিত্ব, নিরপেক্ষতা ও সামাজিক গ্রহণযোগ্যতাও চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সামাজিক মান-মর্যাদা ভূলুন্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে দুর্নীতি এখন আর বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। এটি যেন এক দুরারোগ্য কাঠামোগত ব্যাধিতে রূপ নিয়েছে, যা একাডেমিক থেকে প্রশাসনিক সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। অবকাঠামো নির্মাণ, সরঞ্জাম কেনাকাটা, আবাসন ব্যবস্থা, এমনকি গবেষণার বাজেট কোনো কিছুই এই দুর্নীতির জাল থেকে মুক্ত নয়। বাস্তবে দেখা যায়, গবেষণার নামে প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও তার ফলাফল প্রায় অনুল্লেখযোগ্য। গবেষণার উদ্দেশ্য যেখানে হওয়া উচিত জ্ঞান উৎপাদন, নীতিনির্ধারণে সহায়তা বা সামাজিক উন্নয়ন, সেখানে অনেক শিক্ষক প্রজেক্ট গ্রহণ করছেন কেবলমাত্র আর্থিক লাভের আশায়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে গবেষণা প্রকল্পের রিপোর্টই জমা পড়ে না, অথচ কাগজে-কলমে সবই ঠিকঠাক।

এই ‘কাজীর গরু খাতায় আছে গোয়ালে নেই’ প্রক্রিয়া অ্যান্তোনিও গ্রামশির ‘প্যাসিভ রেভ্যুলুশন’ ধারণার সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ যেখানে ব্যবস্থাগত পরিবর্তনের ছদ্মাবরণে মূলত বিদ্যমান ক্ষমতার বলয়ই পুনরুৎপাদিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে দরপত্র ছাড়া অবকাঠামোগত উন্নয়ন বা মালামাল সরবরাহের কাজ ভাগ করে দেওয়া, নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর ব্যবসায়ী বা ঠিকাদারদের নিয়মিত সুবিধা প্রদান এবং প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে স্বচ্ছতার চূড়ান্ত অভাব সব মিলিয়ে এটি এক গভীরতর নৈতিক অবক্ষয়ের নিদর্শন। বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে নতুন চিন্তা জন্ম নেওয়ার কথা, সেখানে এখন দুর্নীতির মাধ্যমে পুরোনো ক্ষমতার কাঠামোকেই কেবল আরও দৃঢ় করা হচ্ছে। ছাত্রাবাস থেকে প্রশাসনিক ভবন পর্যন্ত এক অদৃশ্য দুর্নীতির বলয় তৈরি হয়েছে, যা ভাঙা এখন প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এ অবস্থা কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের মানকেই ধ্বংস করছে না, বরং দেশের সামগ্রিক জ্ঞানীয় অর্থনীতি ও ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব গঠনের ভিত্তিকেও বিপন্ন করে তুলছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও শিক্ষক রাজনীতি আজ আর আদর্শভিত্তিক শিক্ষাকেন্দ্রিক চর্চা নয়; বরং তা হয়ে উঠেছে ক্ষমতা অর্জনের কৌশল এবং পেশাগত সিঁড়ি বেয়ে উপরে ওঠার এক দারুণ কার্যকর মাধ্যম। শিক্ষকেরা যাঁরা একসময় ছিলেন সমাজের নৈতিক দিকনির্দেশক, আজ তাঁদের অনেকেই দলীয় বিভাজনের বলয়ে আবদ্ধ হয়ে পড়েছেন। দলীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা শিক্ষক ফোরামগুলো নীতির পক্ষে নয়, বরং প্রশাসনিক পদ-পদবি ভাগাভাগির গোপন বোঝাপড়ায় ব্যস্ত। এক সময় যে শিক্ষকতা ছিল জ্ঞানচর্চা, গবেষণা ও চিন্তার স্বাধীনতার প্রতীক, আজ তা অনেক ক্ষেত্রেই পরিণত হয়েছে গোষ্ঠীগত স্বার্থ রক্ষার কাজে নিযুক্ত ‘পেশাদার’ লেবাসধারি রাজনৈতিক দলদাস। ছাত্ররাজনীতির চিত্রটিও একইভাবে দুর্বিষহ। যেখানে ছাত্ররাজনীতি হওয়ার কথা ছিল মত প্রকাশ, ন্যায়বোধ ও নেতৃত্ব বিকাশের ক্ষেত্র, সেখানে তা অনেকাংশেই রূপ নিয়েছে সন্ত্রাস, নিয়ন্ত্রণ ও অনৈতিক সুবিধা আদায়ের হাতিয়ারে।

মিশেল ফুকোর ‘জ্ঞান ও ক্ষমতা’র পারস্পরিক সম্পর্কের আলোকে যদি দেখি, তবে এটি বোঝা যায় যে, জ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রটিও এখন ক্ষমতা চর্চার একটি অনুসারী ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্ঞানচর্চার প্রকৃত লক্ষ্য সত্য ও মানবিকতাকে তুলে ধরা নয়, বরং ক্ষমতার পুনঃউৎপাদন। ছাত্রসংগঠনগুলো অনেক সময় ছাত্রদের প্রতিনিধি না হয়ে পরিণত হচ্ছে রাজনৈতিক দলের শাখা সংগঠনে, আর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস রূপ নিচ্ছে তাদের দখলদারিত্বের যুদ্ধক্ষেত্রে।
ফলে শিক্ষক-ছাত্র উভয়েই বিশ্ববিদ্যালয়কে এক নৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিষ্ঠানের বদলে ক্ষমতার অনুশীলনকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করছেন। আদর্শ, নীতি, কিংবা মুক্ত চিন্তার জায়গায় এসেছে পদোন্নতি, নিয়োগ এবং প্রশাসনিক পদলাভের প্রতিযোগিতা। বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি তাই আজ আর সমাজবদলের অনুঘটক নয়, বরং নিজস্ব ক্ষমতার বলয়ের ভিত শক্ত করার কৌশলমাত্র। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে এই অবস্থার জন্য দায়ী কে? বিশ্ববিদ্যালয় কি একদিনে এ অবস্থায় পৌঁছেছে? না; তা একদমই নয়। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়ার ফল, যেখানে নীরব অনৈতিকতা, প্রশাসনিক অযোগ্যতা এবং রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার এক অদৃশ্য কিন্তু সুগঠিত সংস্কৃতি ধীরে ধীরে এই দুরবস্থার ভিত গড়ে তুলেছে।

রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকেরা একদিকে যেমন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে প্রকৃত অর্থে স্বায়ত্তশাসনের সুযোগ দেননি, অন্যদিকে জবাবদিহিতার কাঠামোও সুষ্ঠুভাবে গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন কিংবা অনেক ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক কারণে ইচ্ছাকৃতভাবে তা এড়িয়ে গেছেন। ক্ষমতার বলয়ে থাকা ব্যক্তি ও গোষ্ঠীগুলোর সুবিধা নিশ্চিত করতেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র না রেখে ‘নিয়ন্ত্রিত অধীনতার’ এক অভ্যন্তরীণ উপনিবেশে রূপান্তরিত করা হয়েছে।

তবে দায় শুধু বাইরের নয়, ভেতরেরও আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে থাকা বিবেকবান অংশ যাঁদের দায়িত্ব ছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো, প্রতিষ্ঠানকে নৈতিক নেতৃত্ব দেওয়া তাঁরাও অনেক সময় ব্যক্তিস্বার্থ, ভয় বা সুবিধাবাদের কারণে নীরব থেকেছেন। এ অবস্থা হান্না আরেন্ডের ‘মন্দের অস্বাভাবিকতা’ (বেনালিটি অব ইভিল) ধারণার কথা মনে করিয়ে দেয়, যেখানে ব্যক্তি প্রতিদিনের অনৈতিকতার সঙ্গে আপোষ করতে করতে ধীরে ধীরে তার দায়বোধ হারিয়ে ফেলে। এই নৈতিক নিস্ক্রিয়তা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবক্ষয়কে আরও বেগবান করেছে। অতএব দায় নির্দিষ্ট একটি পক্ষের নয়; এটি একটি সম্মিলিত ব্যর্থতা যেখানে রাষ্ট্র, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, রাজনৈতিক দল এবং বুদ্ধিবৃত্তিক শ্রেণির প্রত্যেকেরই দায় রয়েছে।

সঙ্গত কারণে প্রশ্ন করা যেতে পারে: তাহলে এই সংকট থেকে উত্তরণের পথ কী? কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়কে তার প্রকৃত চরিত্র জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র, গবেষণার ক্ষেত্র এবং নৈতিক নেতৃত্ব তৈরির প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা সম্ভব? একথা অনস্বীকার্য যে, এর জন্য প্রয়োজন সর্বাগ্রে একটি নীতিনিষ্ঠ, পেশাদার ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসনিক কাঠামো।
বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে নিয়োগ ও পদায়নের প্রতিটি ধাপে; যেখানে ‘কে কার লোক’ নয়, বরং কে কতটা ‘যোগ্য ও সক্ষম’, সেটিই হবে মূল বিবেচ্য বিষয়। একাডেমিক ও প্রশাসনিক পদে নিয়োগে কঠোর, প্রকাশ্য নিয়মকানুন প্রণয়ন এবং তার বাস্তবায়নে স্বাধীন নিয়ন্ত্রণ ও আপিল প্রক্রিয়া গড়ে তোলা অত্যাবশ্যক। একইসঙ্গে গবেষণার গুণগত মান যাচাইয়ের জন্য প্রণীত হতে পারে স্বতন্ত্র পিয়ার-রিভিউ কমিটি এবং প্রয়োজন দুর্নীতিবিরোধী স্বশাসিত নিরীক্ষা ব্যবস্থা, যা সর্বাবস্থায় দলীয় প্রভাবমুক্ত থাকবে। এখানে দক্ষিণ কোরিয়া বা জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কিছু দৃষ্টান্ত অনুসরণযোগ্য, যেখানে গবেষণার মান, পেশাগত মূল্যায়ন ও স্বচ্ছতা একত্রে বিবেচিত হয়।

অন্যদিকে ছাত্ররাজনীতিকে প্রতিরোধ নয়, বরং তাকে লেজুড়বৃত্তির বাইরে রেখে ইতিবাচক রূপান্তরের মাধ্যমে নেতৃত্ব বিকাশের প্ল্যাটফর্মে পরিণত করতে হবে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও বিরুদ্ধ মতের প্রতি সহিষ্ণুতা শেখানো, বিতর্ক, বৌদ্ধিক চর্চা ও সামাজিক দায়বদ্ধতার চর্চা ছাত্ররাজনীতির কেন্দ্রে থাকতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষকদের নেতৃত্ব নির্বাচনেও দলীয় আনুগত্য নয়, একাডেমিক শ্রেষ্ঠত্ব, গবেষণায় অবদান ও নৈতিক অবস্থান এই গুণগুলোই প্রধান হয়ে ওঠবে। এসবকে মূল ভিত্তি করে গড়ে তুলতে হবে নতুন এক সংস্কৃতি, যা রাজনৈতিক আনুগত্যের সংস্কৃতিকে দ্রুত মাটি চাপা দেবে। এইভাবে একটি নতুন ধারার, নৈতিক ও পেশাগতভাবে পরিশীলিত বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থার ভিত গড়ে তোলা সম্ভব যেখানে মূল শক্তি হবে জ্ঞানের সাধনা, গবেষণার বিস্তার ও মানবিক উৎকর্ষতা।

আমাদের মনে রাখতে হবে যে, বিশ্ববিদ্যালয় কেবল জ্ঞান উৎপাদনের কেন্দ্র নয়, এটি একটি জাতির মেধা, মনন, নৈতিকতা ও ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের প্রতীক। যে সমাজ তার বিশ্ববিদ্যালয়কে সম্মান দেয় না, স্বচ্ছ রাখে না, বাইরে থেকে হস্তক্ষেপ করে, সে সমাজ নিজের ভবিষ্যৎকেই অবমূল্যায়ন করে। অথচ আজ আমাদের বহু বিশ্ববিদ্যালয় স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি ও রাজনীতির দুষ্টচক্রে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে। এ চক্র চলতে থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একাডেমিক ক্ষয়েই ক্ষান্ত হবে না, বরং গোটা সমাজের মূল্যবোধ, বিচারবোধ ও নৈতিক ভিত্তিও ভেঙে পড়বে।

বিশ্ববিদ্যালয়কে তার মৌল আদর্শে ফিরিয়ে আনতে হলে প্রয়োজন এক সম্মিলিত নৈতিক জাগরণ, যেখানে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, প্রশাসক এবং নীতিনির্ধারকেরা সকলে মিলে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও পেশাদারিত্বের সংস্কৃতি গড়ে তুলবেন। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, জ্ঞানচর্চা কখনোই ক্ষমতার দাস হতে পারে না। যদি তা হয়, তবে সমাজ তার ভবিষ্যতের পথ হারাবে। যদি আমরা আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই আত্মঘাতী প্রবণতাগুলোকে রুখে না দাঁড়াই এবং নীরব থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে ক্ষমতার উপনিবেশে পরিণত হতে দিই, তবে ভবিষ্যতের জন্য আমরা কেবল অযোগ্য নেতৃত্ব, বিকৃত বিবেক আর আত্মপরতার নাগরিকই তৈরি করবো। যারা জানবে না কীভাবে একটি রাষ্ট্র গড়ে ওঠে কিংবা কেন ন্যায়, জ্ঞান ও মূল্যবোধ ছাড়া কোনো জাতির দীর্ঘ সময় টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই এখনই উৎকৃষ্ট সময়, সাহসিকতার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘ক্ষমতার উপনিবেশ’ থেকে পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ নেওয়ার যেন তা আবারও হয়ে উঠতে পারে চিন্তার মুক্তাঞ্চল, সত্যের অনুসন্ধানক্ষেত্র এবং একটি কল্যাণমুখী মানবিক রাষ্ট্রের রূপকার ও বাহক।

ড. মাহরুফ চৌধুরী
ভিজিটিং ফ্যাকাল্টি, ইউনিভার্সিটি অব রোহ্যাম্পটন, যুক্তরাজ্য
Email: mahruf@ymail.com 

শেয়ার করুন:-

মত দ্বিমত

ডাকসু নির্বাচন গণতন্ত্রের পথে কী আশা, বাধা ও সম্ভাবনার বার্তা দিল?

Published

on

ব্লকে

গণতন্ত্রের অনুশীলনকে যদি সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে হয়, তবে তার সূচনা হওয়া উচিত শিক্ষাঙ্গন থেকে। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, যাকে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের কেন্দ্রবিন্দু বলা হয়, সেখানে ছাত্রসংগঠনের স্বাধীন নির্বাচন গণতান্ত্রিক চর্চার প্রথম পরীক্ষাগার। এবারের ডাকসু নির্বাচন অনেকেই মনে করেছিলেন একটি নতুন সূচনা হতে পারবে। কিন্তু বাস্তবতা বলছে, এখানেও বাধা এসেছে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

আমি খতিয়ে দেখেছি—কিছু শিক্ষার্থীকে তাদের নিজ এলাকার ক্ষমতাসীন বা প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা ফোন করে চাপ দিতে চেষ্টা করেছেন। কেউ হয়তো সেটিকে উপেক্ষা করেছে, কেউ আবার ভয় পেয়েছে। প্রশ্ন হলো, এভাবেই কি আমরা গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চাই?

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

তবুও একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে। বারবার দমন-পীড়নের পরও কেন শিবিরের মতো একটি সংগঠন শিক্ষার্থীদের মাঝে এখনো আকর্ষণ সৃষ্টি করে? গত ৫৪ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে এটিই শেখার বিষয়—দমন কখনোই কোনো আদর্শকে মুছে ফেলতে পারে না। বরং দমন যত বেশি, তার প্রতিক্রিয়া সমাজে তত গভীরভাবে থেকে যায়। এখান থেকে রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য কয়েকটি শিক্ষণীয় দিক রয়েছে। গণতন্ত্রে সমান সুযোগ মানে হলো শিক্ষার্থীরা বুঝে গেছে, কারো কণ্ঠ রুদ্ধ করা মানেই তাকে রাজনৈতিকভাবে দুর্বল করা নয়। বলপ্রয়োগ করে কাউকে হারানো যায় না, বরং যুক্তি ও আলোচনার মাধ্যমে প্রমাণ করতে হয় কোন পথ সঠিক। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি গণতান্ত্রিক অনুশীলন ব্যাহত হয়, তাহলে জাতীয় নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ আশা করা বৃথা।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

এখন প্রশ্ন আসে—ভালো আর মন্দের পার্থক্য কীভাবে নির্ধারণ করবো? ভালো হলো যেখানে স্বচ্ছতা, অংশগ্রহণ ও আলোচনার সুযোগ থাকে। আর মন্দ হলো যেখানে চাপ, প্রভাব, অর্থ আর ভয়ভীতি প্রাধান্য পায়। একটি সমাজ ও রাষ্ট্রের অগ্রগতির জন্য অপরিহার্য হলো, ভালোকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া এবং মন্দকে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে সরিয়ে দেওয়া।

ডাকসু নির্বাচন গতকাল সম্পন্ন হয়েছে এবং আজ ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এর ফলাফল এবং অভিজ্ঞতা থেকেই জাতির জন্য শিক্ষণীয় বিষয় হবে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন। যদি ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা বাড়বে এবং জাতীয় নির্বাচন সম্পর্কেও জনগণের মনে নতুন করে আশা জাগবে। কিন্তু এখানে মৌলিক প্রশ্ন উঠতে বাধ্য—আমরা যাকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বলছি, বাস্তবে কি সেটি সত্য? যদি সত্য হয়, তাহলে কেন একটি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাঙ্গনের নির্বাচন সম্পন্ন করতে এত বিশাল প্রশাসনিক বাহিনী মোতায়েন করতে হয়? কেন নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি ছাড়া আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারি না?

আমরা যদি দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ডাকসু নির্বাচনও সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করতে না পারি, তাহলে ১৮ কোটি মানুষের জন্য যে গণতন্ত্রের চর্চার স্বপ্ন দেখাচ্ছি, সেটি কতটা বাস্তবসম্মত? অন্যদিকে, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, হত্যা, লুটপাট, হামলার মতো অপ্রিয় সত্যগুলোকে সুন্দর ইংরেজি শব্দে “মব অ্যাকশন” বলে চালিয়ে দিলে বাস্তবতা কি পাল্টে যায়? যদি রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের পথ হয় ভয় দেখানো আর শক্তি প্রদর্শন, তবে সহজ, সঠিক এবং সরল পথে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা আদৌ কি সম্ভব?

এই প্রশ্নগুলো আমাদের নৈতিক চেতনার দ্বার খুলে দিক। এটিই হবে জনগণের শেখার সুযোগ—“লিসন অ্যান্ড লার্ন”। কারণ রাজনীতি করা আর রাজনীতি করতে চাওয়া দুটি আলাদা জিনিস; আবার দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ হয়ে রাজনীতি করাও একেবারেই ভিন্ন জিনিস। এই ভিন্ন জিনিসগুলো রাষ্ট্র থেকে একে একে দূর করতে হবে—এখনই।

অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন—এত বড় দুর্নীতি এত অল্প সময়ে কীভাবে রোধ করা সম্ভব? আমি বলবো, অসম্ভব নয়। টুইন টাওয়ার ধ্বংস মুহূর্তেই ঘটেছিল। শেখ হাসিনার পতনও ঘটেছে হঠাৎ করেই। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কিংবা মৃত্যু কখনোই পূর্বঘোষণা দিয়ে আসে না। তাহলে নির্বাচন ব্যবস্থার শুদ্ধিকরণ কি অসম্ভব? না, মোটেও নয়। যখন দুর্নীতি করা সম্ভব হয়েছে, তখন তা বন্ধ করাও সম্ভব—প্রয়োজন কেবল দৃঢ় সংকল্প আর সঠিক সিদ্ধান্ত।

আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতাও আমাদের শেখায়। ভারত বারবার ছাত্ররাজনীতিকে গণতন্ত্রের প্রস্তুতিমূলক অনুশীলন হিসেবে ব্যবহার করেছে। দক্ষিণ কোরিয়া ও তাইওয়ানের মতো দেশে ছাত্রআন্দোলন গণতান্ত্রিক রূপান্তরের প্রধান চালিকাশক্তি হয়েছে। এমনকি পশ্চিমা বিশ্বেও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রায়শই গণতন্ত্র ও সংস্কারের সূতিকাগার। বাংলাদেশের ডাকসু নির্বাচনও সেই ধারাবাহিকতার অংশ হতে পারে, যদি এটি সুষ্ঠু হয়।

সবশেষে একটি আহ্বান—গণতন্ত্র হোক কেবল মুখের বুলি নয়, জীবনের বাস্তব অনুশীলন। প্রশ্ন হতে পারে, বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের পর বাস্তব অনুশীলনগুলো কী কখনও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হয়েছে? তাহলে আছে কী কোনো অনুসারী, যাদের পথ অনুসরণ করব? বাংলাদেশে নেই, কিন্তু আমাদের পূর্বপুরুষদের মাঝে আছে।

তাই আমি বলবো: চালাও সে পথে যে পথে তোমার প্রিয়জন গেছে চলি।

রহমান মৃধা
গবেষক ও লেখক
সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
Rahman.Mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

দুর্নীতিবাজ রাজনীতির অবসান: এক জাতীয় অঙ্গীকার

Published

on

ব্লকে

রাজনীতিবিদরা যদি রাজনীতি করে দেশের উন্নয়নে কোনো অবদান রাখতে না পারে, তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। দরকার হলে জেলহাজতে পাঠাতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের অপকর্মে যুক্ত হওয়ার সাহস না পায়।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

চুরি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসা, সন্ত্রাস, অবৈধ অর্থ পাচার আর দুর্নীতি—এই অপরাধগুলোতে তারা সক্রিয়ভাবে জড়িত থেকেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, গত ৫৪ বছরে তারা দেশের জন্য কী কোনো ভালো কাজ করেছে? যদি না করে থাকে, তবে কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না?

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

আপনি হাতে গুনে একজন সৎ রাজনীতিবিদের নাম বলতে পারবেন কি, যার নামে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ নেই? যদি না পারেন, তবে বুঝতেই হবে যে গোটা রাজনৈতিক ব্যবস্থাই দুর্নীতিগ্রস্ত।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

তাহলে প্রশ্ন দাঁড়ায়—অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কী ধরনের সংস্কার করছে? গত এক বছরে তাদের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। দেশের মানুষের উন্নয়নের পরিবর্তে তুলনামূলকভাবে এসব অভিযোগই আলোচনায় এসেছে, যা একটি ভয়াবহ আশঙ্কার বিষয়।

এরপরও কি জাতি হিসেবে আমাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই? নিশ্চয়ই আছে। এই পরিস্থিতিকে এভাবে চলতে দেওয়া যায় না।

আমি আমার অবস্থান তুলে ধরলাম। যদি আপনি আমার কথার সঙ্গে দ্বিমত করেন, অনুগ্রহ করে যুক্তিসঙ্গত কারণ দেখিয়ে তা উপস্থাপন করুন। আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত। কিন্তু যদি আমার বক্তব্যই সত্য প্রমাণিত হয়, তবে আসুন—আমরা একসাথে রুখে দাঁড়াই এবং দুর্নীতিবাজ রাজনীতির অপশক্তিকে বিদায় করি।

কারণ এরা দেশের শত্রু, এদের বাংলাদেশের মাটিতে থাকার কোনো অধিকার নেই। সংস্কার মানে একটাই—দুর্নীতিবাজ রাজনীতি দেশ থেকে চিরতরে বিদায় করা।

আমাদের করণীয়
• গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে দুর্নীতির প্রকৃত চিত্র তুলে ধরা।

• নাগরিকদের বোঝানো—দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ মানেই দেশের শত্রু।

• বিশেষ দুর্নীতি দমন ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দ্রুত বিচার।

• অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রের কোষাগারে ফেরত আনা।

• দুর্নীতিবাজদের আজীবন রাজনীতি থেকে নিষিদ্ধ করা এবং তাদের পরিবারের বেআইনি সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা।

• দুর্নীতিবাজ প্রার্থীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা।

• রাজনৈতিক দলে গণতন্ত্র ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।

• তরুণ প্রজন্মকে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত করা।

• শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সততা ও নৈতিকতা শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা।

• দুর্নীতিবাজদের সামাজিকভাবে বর্জন—তাদের বিয়ে, সমাবেশ, সমাজে কোনো সম্মান না দেওয়া।

• নিরপেক্ষভাবে দুর্নীতিবাজদের বিচারের আওতায় আনা।

• “দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ” ঘোষণা করে বাস্তবায়ন রোডম্যাপ তৈরি।

• বিদেশে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনা।

• দুর্নীতিবাজদের বৈদেশিক সম্পদের তথ্য প্রকাশ।

• সততা, স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচারকে জাতীয় সংস্কৃতিতে রূপান্তর।

• প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে “সততার উত্তরাধিকার” গড়ে তোলা।

• দুর্নীতিবিরোধী সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করা।

• প্রমাণ সংগ্রহ করে জনগণের সামনে প্রকাশ করা।

• আন্দোলনের মাধ্যমে জনচাপ সৃষ্টি করে সরকারকে বাধ্য করা।

• বিকল্প সৎ নেতৃত্বকে গড়ে তোলা।

• জাতীয় চার্টার বা ঘোষণা প্রকাশ করা—যেখানে থাকবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাতির অবস্থান ও ভবিষ্যতের অঙ্গীকার।

জাতীয় অঙ্গীকার
• দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপসহীন লড়াই চালাবো।

• সততা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা করবো।

• দুর্নীতিবাজদের শুধু বিচার নয়, রাজনীতি থেকে চিরতরে বহিষ্কার করবো।

• জনগণ মিলে তাদের সামাজিকভাবে বর্জন করবো, যাতে আর কখনো কেউ দুর্নীতির সাহস না করে।

• ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র উপহার দেবো।

সারকথা: দুর্নীতিবাজ রাজনীতিকে বিদায় না দিলে, জাতির মুক্তি নেই। তাই আসুন, আমরা একসাথে রুখে দাঁড়াই।

রহমান মৃধা
গবেষক ও লেখক
সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
Rahman.Mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বনাম কেমব্রিজ: শিক্ষার মানের এক সঙ্কট এবং সম্ভাবনা

Published

on

ব্লকে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার প্রধান প্রতিষ্ঠান। এর স্থাপত্য, ইতিহাস এবং সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটের কারণে এটি বিশেষ মর্যাদা পেয়েছে। তবে বাস্তবতা দেখায় যে, শিক্ষার মান, প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় আজ নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল লক্ষ্য শিক্ষার্থীর জ্ঞান, নৈতিকতা এবং চিন্তাশীলতার বিকাশ, কিন্তু কিছু বাস্তব সমস্যা এই লক্ষ্যকে প্রভাবিত করছে। অনেক শিক্ষার্থী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং অন্যান্য কারণে নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত হয় না। কিছু বিভাগে অভিজ্ঞ শিক্ষকের অভাব এবং অপ্রশিক্ষিত শিক্ষক থাকায় শিক্ষার মানে ভিন্নতা দেখা যায়। কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে প্রচুর বই আছে, তবে অনেক বই ব্যবহারযোগ্য নয় বা রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে শিক্ষার্থীর গবেষণার কাজে আসে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রায়শই রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের প্রভাবের মুখোমুখি হয়। রাজনৈতিক সংঘর্ষ, দ্বন্দ্ব এবং প্রভাব শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা ও ক্যাম্পাসের শান্তিকে প্রভাবিত করতে পারে। অবস্থান সংসদ ভবনের কাছাকাছি হওয়ায় রাজনৈতিক প্রভাব আরও প্রকট। কিছু ক্ষেত্রে, প্রশাসনিক দুর্বলতা ও অব্যবস্থাপনার কারণে শিক্ষার্থীরা অসুবিধায় পড়ে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস বা হলগুলোতে শিক্ষার্থীরা নানা ধরনের সাংস্কৃতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে। তবে, কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে, এবং কিছু শিক্ষার্থী ক্লাসে না এসে বাইরে সময় কাটাতে পছন্দ করে। রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের প্রভাব থাকায় কিছু শিক্ষার্থী ক্ষমতাসীন দলের সমর্থন না থাকলে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে। শিক্ষার মান নিয়ে কথাবার্তা কম হয়, এবং শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার বিষয়ও প্রায়শই আলোচনার বাইরে থাকে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অবস্থার পেছনে রাজনৈতিক প্রভাব, প্রশাসনিক দুর্বলতা, শিক্ষার মানের অবনতি এবং শিক্ষাব্যবস্থায় দুর্নীতি অন্যতম কারণ। প্রতিষ্ঠার সময় বিশ্ববিদ্যালয়কে উচ্চমানের শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে অগ্রগতি করার জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে বর্তমান সময়ে বাস্তবতা অনেক ক্ষেত্রেই প্রত্যাশার সাথে মিলছে না। বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষার মান, গবেষণার অগ্রগতি, প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা উচিত। এই মূল্যায়ন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন, শিক্ষাবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং স্বাধীন মূল্যায়ন সংস্থার মাধ্যমে নিয়মিতভাবে, যেমন প্রতি পাঁচ বছরে একবার, অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এখনও সম্ভাবনাময়। তবে রাজনৈতিক প্রভাব, প্রশাসনিক দুর্বলতা এবং শিক্ষার পরিবেশে বিঘ্ন থাকায় এটি তার পূর্ণ সম্ভাবনা অর্জন করতে পারছে না। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, প্রশাসন এবং নীতি নির্ধারকদের যৌথ প্রচেষ্টা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি উচ্চমানের শিক্ষার প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারে। সঠিক পদক্ষেপ, স্বচ্ছতা এবং সংস্কারই সেই পথে দিশা দেখাবে।

ওক্সফোর্ড বা কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের প্রাচীন ও মর্যাদাপূর্ণ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম। আমি জীবনের কোনো এক সময় কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি, তাই এর শিক্ষার মান, কলেজ ব্যবস্থা এবং গবেষণার সুযোগ সম্পর্কে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আছে। প্রতিষ্ঠার থেকে আজ পর্যন্ত এটি শিক্ষার মান, গবেষণার গুণগত মান এবং প্রশাসনিক স্বচ্ছতার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড হিসেবে পরিচিত। এখানে শিক্ষার্থীর নৈতিক ও মানসিক বিকাশকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাসে অংশগ্রহণ করে, এবং পাঠ্যক্রমের সঙ্গে গবেষণার সুযোগ সমন্বিত। শিক্ষকগণ অত্যন্ত দক্ষ, প্রশিক্ষিত এবং শিক্ষাদানে নিবেদিত, যা শিক্ষার মানকে ধারাবাহিকভাবে উচ্চ রাখে। কেমব্রিজে রাজনৈতিক প্রভাব সীমিত; প্রশাসনিক ব্যবস্থা স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ, ফলে শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা, ক্যাম্পাসের শান্তি এবং শিক্ষার পরিবেশে বিঘ্ন ঘটে না।

লাইব্রেরি এবং গবেষণা সুবিধা অত্যন্ত সমৃদ্ধ। বই ও রিসোর্সের সংখ্যা প্রচুর, আধুনিক ডিজিটাল রিসোর্স সহজলভ্য, এবং রক্ষণাবেক্ষণ যথাযথভাবে করা হয়। শিক্ষার্থীরা গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় সব সুযোগ ও তথ্য পায়। ক্লাস এবং গবেষণার মধ্যে সমন্বয় অত্যন্ত সুচারু, ফলে শিক্ষার্থীর জ্ঞান ও চিন্তাশীলতা সর্বোচ্চ মাত্রায় বিকাশ লাভ করে। শিক্ষার্থী ও শিক্ষক উভয়ই শিক্ষার প্রতি নিবেদিত, এবং নৈতিকতার মানও দৃঢ়।

কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর সার্বিক উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দেয়। কেবল পাঠ্যক্রম নয়, সাংস্কৃতিক, সামাজিক এবং শিক্ষণীয় কর্মকাণ্ডও শিক্ষার্থীর জীবনের অংশ। প্রশাসনিক ও শিক্ষাগত ব্যবস্থাপনা একে একটি স্থিতিশীল এবং ফলপ্রসূ শিক্ষা পরিবেশ হিসেবে গড়ে তোলে। আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা, বিশ্বখ্যাত শিক্ষক এবং সুশৃঙ্খল প্রশাসন প্রতিষ্ঠানটিকে বিশ্বজুড়ে শিক্ষার্থীর কাছে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ করে তুলেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়টি তার ইতিহাসের প্রতিটি স্তরে শিক্ষার মান, গবেষণার সুযোগ এবং শিক্ষার্থীর নৈতিক বিকাশকে অগ্রাধিকার দিয়ে এসেছে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি, মনোযোগ এবং কার্যকলাপের মান নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন করা হয়। প্রশাসনিক স্বচ্ছতা এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্কের স্বচ্ছতা শিক্ষার মানকে বজায় রাখতে সাহায্য করে। ফলে, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় একটি আদর্শ শিক্ষার পরিবেশ হিসেবে বিশ্ব মানচিত্রে পরিচিত।

দুটি বিশ্ববিদ্যালয়, দুটো চিত্র—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়। একটির অভ্যন্তরীণ অবস্থা রাজনৈতিক প্রভাব, প্রশাসনিক দুর্বলতা, শিক্ষার মানের অনিয়ম এবং দুর্নীতিতে ভরা; অন্যটি স্থিতিশীল, স্বচ্ছ প্রশাসন ও উচ্চমানের শিক্ষায় নিবেদিত। এ থেকে আমাদের জাতি হিসেবে বড় প্রশ্ন জাগে—আমরা কীভাবে দেশের দুর্নীতি ছাড়া প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকব? বিদেশের সঙ্গে যখন প্রতিযোগিতা অব্যাহত, আমাদের শিক্ষার মান, নৈতিকতা, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা এবং দুর্নীতিহীন পরিবেশ যদি এমন অবস্থায় থাকে, তাহলে আমাদের শিক্ষার্থী ও প্রজন্ম কিভাবে আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারবে?

সমস্যার মূল কারণ স্পষ্ট: রাজনৈতিক প্রভাব, প্রশাসনিক দুর্বলতা, শিক্ষার প্রতি উদাসীনতা, নৈতিকতার অভাব এবং দেশের মধ্যে সিস্টেমিক দুর্নীতি। শিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলোতে যদি এই উপাদানগুলো নিয়ন্ত্রণে না থাকে, তবে জাতির ভবিষ্যৎ ও প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা দুটোই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

করনীয় স্পষ্ট: প্রথমে শিক্ষার মান নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষকের যোগ্যতা, পাঠ্যক্রমের গুণমান এবং গবেষণার সুযোগ উন্নত করতে হবে। প্রশাসনিক স্বচ্ছতা আনার জন্য নিয়মিত মূল্যায়ন ও তদারকি প্রয়োজন। রাজনৈতিক প্রভাব কমাতে স্বাধীন, নিরপেক্ষ প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। শিক্ষার্থীর নৈতিকতা ও মনোযোগ বৃদ্ধির জন্য পড়াশোনা এবং গবেষণাকে অনুপ্রেরণামূলক পরিবেশে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। দুর্নীতিহীন পরিবেশ প্রতিষ্ঠা এবং সংস্কারমুখী নীতি কার্যকর করা অপরিহার্য।

যদি এসব পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তবে আমরা একটি সংস্কারমূলক পথ ধরে জাতি হিসেবে আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারব। প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকার জন্য শিক্ষা, নৈতিকতা, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা এবং দুর্নীতিহীন পরিবেশ—এই চারটি উপাদানই আমাদের ভবিষ্যতের মূল চাবিকাঠি।

রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন। Rahman.Mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

মন্ত্রীদের নতুন গাড়ি নয়— প্রথমে গরিবের ভাগ্য বদলাতে হবে

Published

on

ব্লকে

কে এই ডাকাত মন্ত্রীরা, যারা গরিব দেশের টাকায় কোটি কোটি টাকার এসইউভি কিনে বসবে? এরা কি দেশের সেবক, নাকি রাষ্ট্র লুটে খাওয়া চোর? আগের সরকারের গাড়িগুলো গেল কোথায়? চুরি হলো, পাচার হলো, নাকি নিজের গ্যারাজে লুকিয়ে রাখল? কেন প্রতিবার ক্ষমতায় এলেই নতুন গাড়ি কিনতে হবে? উন্নয়নের বুলি কেবল মুখে, হাতে শুধু লুটের হিসাব!

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

বাংলাদেশ ৫৪ বছর ধরে কী দেখেছে? রাজনীতিবিদদের ধারাবাহিক ডাকাতি, সম্পদ পাচার, গরিবের রক্ত দিয়ে বিলাসবহুল প্রাসাদ বানানো। ১৯৮৮ সালে এমপিদের জন্য চালু হলো ডিউটি-ফ্রি গাড়ি—তারপর থেকে তারা এমপি নয়, গাড়ি ব্যবসায়ী। কোটি টাকার গাড়ি আনা হলো, পরে বেচে দেওয়া হলো, টাকা ঢুকল ব্যক্তিগত পকেটে। ২০১৮ সালে ওআইসি সম্মেলনের নামে কেনা হলো মার্সেডিজ-বিএমডব্লিউ, সম্মেলন শেষ হতেই গাড়িগুলো ভাগ হয়ে গেল ভিআইপিদের দখলে। এটা রাষ্ট্র নয়, মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়া লুটের বাজার।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

এবার শুধু মন্ত্রীদের জন্য ৬০টি এসইউভি নয়, মোট ২৮০টি গাড়ি কেনার পরিকল্পনা আছে—৪৪৫ কোটি টাকা খরচ হবে। প্রতিটি গাড়ির দাম প্রায় দুই কোটি টাকা। এ টাকার উৎস কোথায়? গরিব মানুষের কর, কৃষকের ঘাম, শ্রমিকের রক্ত, প্রবাসীর রেমিট্যান্স। অথচ সেই মানুষরা একমুঠো চাল কিনতে পারে না, হাসপাতালের বেড নেই, অক্সিজেন নেই, স্কুলে শিক্ষক নেই। কিন্তু মন্ত্রীদের থাকতে হবে নতুন চকচকে গাড়ি। এরা কি মানুষ, নাকি জাতির রক্তচোষা জোঁক? সরকার নিজেরাই স্বীকার করেছে—“সমাপ্ত প্রকল্পের গাড়িগুলো” ফেরত আসে না, পড়ে থাকে নষ্ট হয়ে, অথবা হাওয়া হয়ে যায়। তাহলে প্রশ্ন—কারা সেই গাড়ি গিলে খেল? কোন মন্ত্রী, কোন আমলা দায়ী? কেন মামলা হয় না? কেন জবাবদিহি নেই? পুরোনো গাড়ি রিফার্বিশ করে আবার ব্যবহার করা যায় না কেন? কেন প্রতিবার কোটি কোটি টাকা ঢালতে হবে নতুন গাড়ির নামে? এ তো দিনের আলোয় ডাকাতি।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বলছে—বাংলাদেশ ১৮০ দেশের মধ্যে ১৫১তম। অর্থাৎ রাষ্ট্রযন্ত্র আজ দুর্নীতির ডাস্টবিন। মন্ত্রীরা গাড়ি চালাতে জানে, কিন্তু হাসপাতালের অক্সিজেন কিনতে জানে না। এমপিরা ডিউটি-ফ্রি গাড়ি বেচে দেয়, কিন্তু গ্রামের স্কুলে একজন শিক্ষক বাড়াতে পারে না। প্রশ্ন একটাই—এই গাড়ি কার জন্য? মন্ত্রীরা কি গাড়িতে চড়বে, নাকি জনগণ খালি পায়ে হাঁটবে? বাংলাদেশের মানুষ কি দাস? কেন প্রতিটি সরকারের প্রথম কাজ হয় গাড়ি কেনা, আর শেষ কাজ হয় দেশকে লুটে খাওয়া? কতদিন চলবে এই অপমান? এক মুঠো চাল না পাওয়া মানুষদের ঘাম দিয়ে কেন মন্ত্রীদের বিলাসবহুল কনভয় সাজানো হবে? জাতিকে বুঝতে হবে—এরা সেবক নয়, এরা চোর। এরা রাজনীতিবিদ নয়, এরা ক্ষমতার দালাল, রাষ্ট্রের শকুন। গরিবের রক্ত খেয়ে ধনী হচ্ছে, বিদেশে পাচার করছে। উন্নয়নের কথা মানে ভিখারির হাতে সোনার ঘড়ি—শুধুই প্রতারণা আর ডাকাতির মুখোশ।

এখন চাই পূর্ণাঙ্গ অডিট—কোন গাড়ি কোথায় আছে, কোনটা ফেরত এসেছে, কোনটা গিলে খাওয়া হয়েছে। জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে সব নম্বরপ্লেট ও চেসিস নাম্বার। জমা না দিলে সরাসরি মামলা করতে হবে। পুরোনো গাড়ি মেরামত করে আবার ব্যবহার করতে হবে। ডিউটি-ফ্রি সুবিধা বন্ধ করতে হবে। নতুন গাড়ি কেনার নামে জাতিকে আর ঠকানো যাবে না।

জনগণের চাহিদা স্পষ্ট—নতুন এসইউভি নয়, চাই হাসপাতালের অক্সিজেন। বিলাসবহুল কনভয় নয়, চাই সাশ্রয়ী চাল–ডাল। মন্ত্রীর আরাম নয়, চাই মানুষের বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা। গাড়ি কেনা মানেই রাষ্ট্র লুট করা—এই নগ্ন সত্য এখন জনগণের সামনে দাঁড়িয়ে গেছে।

দেশটা কার? জনগণের, নাকি এই দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদদের? এখনই সময়, জনগণকে দাঁড়াতে হবে। বলতে হবে—আর না, একটুও নয়! জনগণের রক্ত–ঘামে উপার্জিত টাকায় গাড়ি, বাড়ি, বিলাসবহুল সুবিধা—এই বেহায়াপনা আর চলবে না।

প্রথমে পরিবর্তন আসুক জনগণের ভাগ্যে। মানুষ যেন পায় ভাত, কাজ, চিকিৎসা, শিক্ষা—এটাই প্রধান কর্তব্য। তারপরই ভাবা যাবে—রাষ্ট্রের কর্মকর্তারা আদৌ কোনো বিলাসের যোগ্য কি না। যারা দুর্নীতির টাকা দিয়ে ভোগে মত্ত, তারা সেবক নয়—জাতির শত্রু, রাষ্ট্রের ডাকাত। এখনই শক্ত হাতে দমন করতে হবে। বছরের পর বছর ধরে “সংস্কার” বলে যা দেখানো হলো, তা কি নমুনা? এধান্দাবাজি বাদ দিয়ে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে এখনই।

রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন। Rahman.Mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে কি নতুন মোড় আসছে?

Published

on

ব্লকে

নানা গুঞ্জনের মধ্যে দিয়ে দিল্লি থেকে শুরু করে দেশের অলিগলিতে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড জোরদার হচ্ছে। সেনাপ্রধানের বিভিন্ন উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক, চীন সফরসহ একাধিক কর্মসূচি ও আলোচনা চলছে। প্রধান উপদেষ্টা ফেব্রুয়ারি প্রথম সপ্তাহে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন। কিন্তু কেন? আবার কেন নয়?

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

এটি নতুন ঘটনা নয়। সম্প্রতি প্রচণ্ড চাপের মুখে বিএনপি-সহ প্রায় সব রাজনৈতিক দল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি চাপ সৃষ্টি করেছিল। উদ্দেশ্য ছিল একটাই—নিজেদের জন্য গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দিন নিশ্চিত করা। কিন্তু যখন সেই দিনক্ষণ ধার্য হলো, তখনই নতুন ঝামেলা শুরু হলো। এখন বলা হচ্ছে, নির্বাচন কেবল কেয়ারটেকার সরকারের মাধ্যমে সম্ভব। কারণ, দুর্বল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে, যা ড. ইউনূসের নেতৃত্বে রয়েছে, কেউই সঠিক ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য বিশ্বাস করতে পারছে না।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

এদিকে প্রধান বিচারপতির মেয়াদ শেষের পথে। তাহলে কি তাকে কেয়ারটেকার সরকারের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য প্রটোকলের বাইরে সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক হচ্ছে? ইউএস রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকও চলছে। সব মিলিয়ে, বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে নানা ধরনের মন্তব্য শোনা যাচ্ছে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

এক প্রশ্ন থেকে যায়—বলা হচ্ছে আওয়ামী লীগকে রাজধানীতে আসতে দেওয়া হবে না। কিন্তু এটি কি গ্রহণযোগ্য? আমার কাছে তা বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় না। কারণ, পুরো দেশে প্রশাসন, সাংবাদিক সমাজ এবং জনগণের অন্তত ৫০% দীর্ঘ ১৬–১৭ বছর আওয়ামী লীগের প্রতি সমর্থন রেখেছে। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে সারা দেশের মানুষ রাস্তায় নেমেছিল, কিন্তু এটি মূলত স্বৈরশাসক পতনের জন্য ছিল, পুরো আওয়ামী লীগকে বাতিল করার জন্য নয়।

কিছু ক্ষমতাশালী রাজনীতিবিদ ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দুর্নীতি ও অপকর্মের কারণে গোটা আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে নিষিদ্ধ করা সঠিক হবে না। কারণ এতে সাধারণ কর্মী ও নির্দোষ সমর্থকরাও শাস্তি পাবে। যদি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হয়, তবে বিএনপির নেতা-কর্মীরাও যারা সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি এবং দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, তাদেরকেও নিয়ন্ত্রণে আনা উচিত। একইভাবে, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদেরও আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। কিন্তু বাস্তবে কি তা হচ্ছে? না। বা পুরো দলকে বাতিল করা হচ্ছে কি?

এখান থেকেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। ফলে দেশের ভেতরে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রতিবাদ, বিভ্রান্তি এবং পাশের দেশ থেকে উসকানিমূলক প্রভাব দেখা যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলেও তৎপরতা চলছে। বাংলাদেশ বহু বছর ধরে দুর্নীতির শীর্ষে অবস্থান করছে। রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে থাকা এই দুর্নীতি কেবল একটি দল বাতিল করে সমাধান করা যাবে কি? একেবারেই নয়। বরং “গরম তেলে ফোড়ন দেওয়া” পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করবে।

একটি দেশে যখন তেল আনতে নুন শেষ, তখন সেখানে অপরিকল্পিত ও পক্ষপাতমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ শোভন নয়। প্রশ্ন জাগে—কোথায় যাবে বাংলাদেশের জনগণ? কীভাবে বদলাবে তাদের ভাগ্য? নতুন প্রজন্ম, যারা জন্মের পর থেকে কেবল দুর্নীতি, লুটপাট এবং নৈরাজ্য দেখেছে, তারা কি কখনো সৃজনশীল শিক্ষা ও যোগ্যতার মাধ্যমে নিজের ভবিষ্যৎ গড়তে পারবে? দুঃখজনক হলেও সত্য—এখনো তাদের জন্য কোনো ইতিবাচক উত্তর নেই।

এমন পরিস্থিতিতে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন যেন আবার এক অচলাবস্থার দিকে এগোচ্ছে। একদিকে আন্তর্জাতিক চাপ, অন্যদিকে জনগণের ভেতরে দীর্ঘদিনের ক্ষোভ—দুটোই মিলে রাষ্ট্রযন্ত্র কার্যত অচল হতে বসেছে। মানুষ ভাবছে, সত্যিই কি এই পথে গেলে কোনো সমাধান আসবে, নাকি আবারও নতুন এক সংঘাতের দরজা খুলে যাবে?

বিগত ইতিহাস আমাদের সামনে আছে—প্রত্যেকবার যখনই ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে, তখন দেশকে চরম মূল্য দিতে হয়েছে। আজও একই আশঙ্কা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। রাজনৈতিক দলগুলো পারস্পরিক অবিশ্বাসে জড়িয়ে পড়ে আবারও সাধারণ মানুষের আস্থা হারাচ্ছে। অথচ এই আস্থা ছাড়া কোনো নির্বাচন, কোনো সরকার, কোনো উন্নয়নই দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট কেবল একটি নির্বাচন বা একটি দলের কর্মকাণ্ডের উপর নির্ভর করছে না; এর মূল কারণ হলো রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি জনগণের আস্থাহীনতা। সমাধানও তাই হবে দীর্ঘমেয়াদি, কাঠামোগত এবং জনসম্পৃক্ত।

প্রথমত, একটি স্বচ্ছ ও কার্যকর অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি। এখানে শুধু রাজনৈতিক দল নয়—বিচারব্যবস্থা, সেনা, সুশীল সমাজ, সাংবাদিকতা এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরাও আস্থা রাখতে হবে। কেয়ারটেকার সরকারকে কোনো একটি দলের পক্ষে ঝুঁকলে চলতে দেওয়া যাবে না।

দ্বিতীয়ত, রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর “সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা” আরোপের বদলে তাদের পুনর্গঠন ও জবাবদিহির সংস্কৃতি তৈরি করতে হবে। যেসব নেতা দুর্নীতি, সন্ত্রাস বা চাঁদাবাজিতে জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। কিন্তু সাধারণ কর্মী বা নির্দোষ সমর্থকদের রাজনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।

তৃতীয়ত, নতুন প্রজন্মকে সামনে এনে একটি যৌথ নাগরিক মঞ্চ গঠন করা যেতে পারে, যেখানে তরুণদের নেতৃত্বে রাষ্ট্রচিন্তা বিকাশের সুযোগ থাকবে। শুধু পুরোনো ব্যর্থ রাজনীতির পুনরাবৃত্তি নয়, বরং নতুন উদ্ভাবন, নতুন ধারণা এবং শক্তিশালী নেতৃত্বের জন্ম হবে।

চতুর্থত, দেশের দুর্নীতিগ্রস্ত অর্থনীতি ও প্রশাসন সংস্কারের জন্য একটি রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত জাতীয় পুনর্গঠন কমিশন গঠন করা যেতে পারে, যা প্রতিটি খাতকে নতুনভাবে দাঁড় করানোর রূপরেখা তৈরি করবে।

আমার পরামর্শ হলো—যেহেতু অনেকেই প্রটোকল না মেনে দমনমূলক বৈঠক করছেন এবং এর ফলে দেশের গণতন্ত্র বিপন্ন ও পরিস্থিতি ঘোলাটে হচ্ছে, তাই এখনই প্রয়োজন সহমত ও সংহত প্রচেষ্টা।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান, ড. ইউনূস, যদি সকল রাজনৈতিক দলকে একত্রিত করে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত করেন, যেখানে সেনাপ্রধান, রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতি এবং প্রয়োজনে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও অংশগ্রহণ করেন, এবং স্বচ্ছ ও আন্তরিক সংলাপে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়, তাহলে দেখা যাবে যে সবার মতামত গ্রহণ করে একটি সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব।

সবশেষে, এক কথায় বলতে গেলে—বাংলাদেশের মানুষ বহুবার প্রমাণ করেছে তারা পরিবর্তন চায়। অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে তারা একত্র হতে জানে। এখন সময় এসেছে সেই শক্তিকে সঠিক দিকনির্দেশনায় কাজে লাগানোর। আমরা যদি সাহসী, ন্যায়পরায়ণ এবং সংহতভাবে এগিয়ে যাই, তাহলে এই অস্থিরতার মধ্যেও আশা, সংহতি এবং সৃজনশীল ভবিষ্যতের পথ খোলা সম্ভব।

রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন। Rahman.Mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

পুঁজিবাজারের সর্বশেষ

ব্লকে ব্লকে
পুঁজিবাজার15 minutes ago

ব্লকে ৩৮ কোটি টাকার লেনদেন

সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে মোট ৪৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মোট ৩৮ কোটি...

ব্লকে ব্লকে
পুঁজিবাজার29 minutes ago

জনতা ইন্স্যুরেন্সের লভ্যাংশ বিতরণ

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান জনতা ইন্স্যুরেন্স পিএলসি গত ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ সমাপ্ত হিসাববছরে জন্য ঘোষিত লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীদের কাছে পাঠিয়েছে। ঢাকা স্টক...

ব্লকে ব্লকে
পুঁজিবাজার2 hours ago

ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সর্বোচ্চ দরপতন

সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন শেষে দরপতনের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।...

ব্লকে ব্লকে
পুঁজিবাজার2 hours ago

দর বৃদ্ধির শীর্ষে তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল

সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৩টির দর বেড়েছে। এর মধ্যে...

ব্লকে ব্লকে
পুঁজিবাজার2 hours ago

লেনদেনের শীর্ষে রবি আজিয়াটা

সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে রবি আজিয়াটা পিএলসি। ডিএসই সূত্রে এই তথ্য...

ব্লকে ব্লকে
পুঁজিবাজার2 hours ago

সূচকের পতনে হাজার কোটি টাকার নিচে নামল লেনদেন

সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সব মূল্যসূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। একই সঙ্গে লেনদেনে অংশ...

ব্লকে ব্লকে
পুঁজিবাজার3 hours ago

অস্বাভাবিক শেয়ারদর বাড়ার কারণ জানে না তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল মিলস পিএলসির শেয়ারদর অস্বাভাবিকভাবে বাড়ার কারণ জানে না বলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) জানিয়েছে কোম্পানিটি।...

Advertisement
AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

সোশ্যাল মিডিয়া

তারিখ অনুযায়ী সংবাদ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০  
ব্লকে
পুঁজিবাজার15 minutes ago

ব্লকে ৩৮ কোটি টাকার লেনদেন

ব্লকে
জাতীয়19 minutes ago

৪৭তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি: ১২০ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ

ব্লকে
জাতীয়29 minutes ago

গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান বাংলাদেশের

ব্লকে
পুঁজিবাজার29 minutes ago

জনতা ইন্স্যুরেন্সের লভ্যাংশ বিতরণ

ব্লকে
জাতীয়54 minutes ago

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রের খসড়া প্রকাশ

ব্লকে
পুঁজিবাজার2 hours ago

ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সর্বোচ্চ দরপতন

ব্লকে
পুঁজিবাজার2 hours ago

দর বৃদ্ধির শীর্ষে তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল

ব্লকে
পুঁজিবাজার2 hours ago

লেনদেনের শীর্ষে রবি আজিয়াটা

ব্লকে
পুঁজিবাজার2 hours ago

সূচকের পতনে হাজার কোটি টাকার নিচে নামল লেনদেন

ব্লকে
পুঁজিবাজার3 hours ago

অস্বাভাবিক শেয়ারদর বাড়ার কারণ জানে না তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল

ব্লকে
পুঁজিবাজার15 minutes ago

ব্লকে ৩৮ কোটি টাকার লেনদেন

ব্লকে
জাতীয়19 minutes ago

৪৭তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি: ১২০ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ

ব্লকে
জাতীয়29 minutes ago

গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান বাংলাদেশের

ব্লকে
পুঁজিবাজার29 minutes ago

জনতা ইন্স্যুরেন্সের লভ্যাংশ বিতরণ

ব্লকে
জাতীয়54 minutes ago

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রের খসড়া প্রকাশ

ব্লকে
পুঁজিবাজার2 hours ago

ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সর্বোচ্চ দরপতন

ব্লকে
পুঁজিবাজার2 hours ago

দর বৃদ্ধির শীর্ষে তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল

ব্লকে
পুঁজিবাজার2 hours ago

লেনদেনের শীর্ষে রবি আজিয়াটা

ব্লকে
পুঁজিবাজার2 hours ago

সূচকের পতনে হাজার কোটি টাকার নিচে নামল লেনদেন

ব্লকে
পুঁজিবাজার3 hours ago

অস্বাভাবিক শেয়ারদর বাড়ার কারণ জানে না তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল

ব্লকে
পুঁজিবাজার15 minutes ago

ব্লকে ৩৮ কোটি টাকার লেনদেন

ব্লকে
জাতীয়19 minutes ago

৪৭তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি: ১২০ জন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ

ব্লকে
জাতীয়29 minutes ago

গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান বাংলাদেশের

ব্লকে
পুঁজিবাজার29 minutes ago

জনতা ইন্স্যুরেন্সের লভ্যাংশ বিতরণ

ব্লকে
জাতীয়54 minutes ago

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রের খসড়া প্রকাশ

ব্লকে
পুঁজিবাজার2 hours ago

ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সর্বোচ্চ দরপতন

ব্লকে
পুঁজিবাজার2 hours ago

দর বৃদ্ধির শীর্ষে তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল

ব্লকে
পুঁজিবাজার2 hours ago

লেনদেনের শীর্ষে রবি আজিয়াটা

ব্লকে
পুঁজিবাজার2 hours ago

সূচকের পতনে হাজার কোটি টাকার নিচে নামল লেনদেন

ব্লকে
পুঁজিবাজার3 hours ago

অস্বাভাবিক শেয়ারদর বাড়ার কারণ জানে না তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল