অর্থনীতি
একনেকে ৯ হাজার কোটি টাকার ১৭ প্রকল্প অনুমোদন

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ১৭টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা একনেক সভার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।
পরিকল্পনা কমিশন জানায়, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) মোট ৮ হাজার ৯৭৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৭টি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৩ হাজার ১৮০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, প্রকল্প ঋণ ৫ হাজার ৫৬৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ২৩০ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এ ছাড়া একনেক সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টার নিজস্ব ক্ষমতাবলে ইতোমধ্যে অনুমোদিত ১৫টি প্রকল্প সম্পর্কে একনেক সদস্যদের অবহিত করা হয়।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো- স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প– ‘উপজেলা কমপ্লেক্স সম্প্রসারণ প্রকল্প (২য় পর্যায়) (২য় সংশোধিত)’ এবং ‘বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠি এবং স্থানীয় জনসমাজের সমন্বিত সেবা ও জীবন-জীবিকা উন্নয়ন’ প্রকল্প। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প ‘৭টি বিভাগীয় শহরে ২০০ শয্যাবিশিষ্ট মাদকাশক্তি নিরাময় ও পূনর্বাসন কেন্দ্র নির্মাণ’। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প ‘নবনির্মিত ৪টি মেরিন একাডেমিতে সিমুলেটর ও সংশ্লিষ্ট সুবিধাদি স্থাপনের মাধ্যমে সক্ষমতা বৃদ্ধি’। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প ‘অ্যাক্সেস টু জাস্টিস ফর উইমেন : স্ট্রেংথেনিং কমিউনিটি ডিসপুট রিসল্যুশন অ্যান্ড ইম্প্রোভিং কেস ম্যানেজমেন্ট’। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প ‘বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন (প্রস্তাবিত ২য় সংশোধিন)’। শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প ‘সার সংরক্ষণ ও বিতরণ সুবিধার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৩টি নতুন বাফার গোডাউন নির্মাণ (৩য় সংশোধিত ৪র্থ বার বৃদ্ধি)’। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প– ‘কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপন (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প ও ‘নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিকার ও প্রতিরোধে সমন্বিত সেবা জোরদারকরণ এবং কুইক রেসপন্স টিমের কার্যক্রম’। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প ‘টিভিইটি টিচারস ফর দ্য ফিউচার (টিটিএফ) প্রোগ্রাম’। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘দেশব্যাপী ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি ৩য় সংশোধিত’ প্রকল্প।
এছাড়া পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের চারটি প্রকল্প– ‘কার্যক্রম বিভাগে একটি নতুন ডিজিটাল ডাটাবেজ সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে উন্নয়ন বাজেট ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি শক্তিশালীকরণ (৩য় সংশোধিত)’, ‘ইম্প্রুভমেন্ট অব পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আইপিআইএমএস)’, ‘প্রকিউরমেন্ট মডারনাইজেশন টু ইম্প্রুভ পাবলিক সার্ভিস ডেলিভারি (পিএমআইপিএসডি) ও ‘স্ট্যাটিস্টিক্যাল ক্যাপাসিটি এনহেঞ্চমেন্ট অ্যান্ড মডারনাইজেশন প্রজেক্ট (এসসিইএমপি)। অর্থ মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প ‘স্ট্রেংথেনিং পাবলিক অডিট দ্রু ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন অ্যান্ড ক্যাপাসিটি এনহেঞ্চমেন্ট (এসপিএডিটিইসি) এবং ‘স্ট্রেংথেনিং ডোমেস্টিক রেভিনিউ মোবিলাইজেশন প্রজেক্ট (এসডিআরএমপি) প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।

অর্থনীতি
রিজার্ভ বেড়ে ২৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দুই কিস্তির ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ একসঙ্গে পেল বাংলাদেশ। চলমান ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির আওতায় এটি তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তির অর্থ। মঙ্গলবার (২৪ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে এ অর্থ যোগ হয়েছে। ফলে মোট রিজার্ভ ফের ২৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মঙ্গলবার দিন শেষে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার গ্রোস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী, ২২ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার। এর বাহিরে ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ এখন প্রায় ১৭ বিলিয়ন।
মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বিয়োগ করলে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ পাওয়া যায়। তবে এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, তা হলো ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ। এ তথ্য আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেখানে আইএমএফের এসডিআর খাতে থাকা ডলার, ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবে থাকা বৈদেশিক মুদ্রা এবং আকুর বিল বাদ দিয়ে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের হিসাব করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সেই হিসাবে দেশের ব্যয়যোগ্য প্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৭ বিলিয়ন ডলারে ঘরে আছে। প্রতি মাসে সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলার হিসেবে এ রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের বেশি আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম ৩ মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়।
চলতি মাসের শুরুতে অর্থাৎ (৪ জুন) পর্যন্ত দেশে বৈদেশিক মুদ্রার মোট বা গ্রোস রিজার্ভ ছিল ২৬ দশমিক ০৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিপিএম-৬ অনুযায়ী, রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার আর ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ ছিল ১৬ বিলিয়নের ঘরে।
এর আগে সোমবার বাংলাদেশ সময় রাতে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে আইএমএফ-এর প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত বৈঠকে বাংলাদেশকে দেওয়া ঋণ কর্মসূচির আওতায় তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যালোচনার (রিভিউ) প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয় এবং তা অনুমোদন করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ ২০২১ সালের আগস্টে সর্বোচ্চ উঠেছিল ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার (৪৮ বিলিয়ন)। তখন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নজিরবিহীন অর্থপাচার ও বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ নানা কারণে কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় বড় ধরনের চাপের মুখে পড়ে বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন (রিজার্ভ)। বড় ধরনের বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়ে ক্রমাগত চলতি হিসাবের ঘাটতিও বেড়েছিল বাংলাদেশের। ডলারের বিপরীতে টাকা দর অবনমন হতে থাকলে প্রভাব পড়ে জ্বালানির দর ও আমদানিতে। সংকট মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি শুরু করে। ফলে আস্তে আস্তে তলানিতে নামে রিজার্ভ। ওই সময় রিজার্ভ বাড়াতে বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রার সহায়তা নিতে আইএমএফ এর কাছে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তা চেয়ে ২০২২ সালের জুলাইতে আবেদন করে বাংলাদেশ।
এরপর ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য সাড়ে ৩ বছর মেয়াদি এই ঋণপ্রস্তাব অনুমোদন করে। ঋণ কর্মসূচি অনুমোদনের সময় আইএমএফ জানিয়েছিল, এই সহায়তা বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, ঝুঁকিতে থাকা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশসম্মত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক হবে।
মূলত চলতি হিসাবে বড় ধরনের ঘাটতি, টাকার অবমূল্যায়ন এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ায় তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার আইএমএফের কাছে এই ঋণ সহায়তা চায়।
মোট ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণের মধ্যে বর্ধিত ঋণসহায়তা (ইসিএফ) ও বর্ধিত তহবিল সহায়তা (ইএফএফ) বাবদ ৩৩০ কোটি ডলার এবং রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ ১৪০ কোটি ডলার অন্তর্ভুক্ত। উল্লেখযোগ্যভাবে, আরএসএফ আইএমএফের একটি নতুন তহবিল, যেখান থেকে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশই প্রথমবারের মতো ঋণ পেয়েছে।
২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার এবং ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার বাংলাদেশ পেয়েছে। অর্থাৎ তিন কিস্তিতে আইএমএফ থেকে বাংলাদেশ পেয়েছে ২৩১ কোটি ডলার। বাকি আছে ঋণের ২৩৯ কোটি ডলার। দুই কিস্তির প্রস্তাব অনুমোদিত হওয়ার পর বাকি থাকবে ১২৯ কোটি ডলার, যা পাওয়া যাবে আরও দুই কিস্তিতে।
এদিকে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ১৪ বিলিয়নের ডলারের নিচে নামে। সে সময় বৈদেশিক ঋণ ও বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছ থেকে ডলার কেনার মাধ্যমে রিজার্ভ বাড়ানো হয়। আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর নতুন গভর্নর এসে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ রেখেছে। আবার বিভিন্ন সোর্স থেকে ডলার যোগানের চেষ্টা করছে। ফলে আস্তে আস্তে আবার রিজার্ভ বাড়তে শুরু করেছে।
অর্থনীতি
অবশেষে কমলো সোনার দাম

দেশের বাজারে সোনার দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। প্রতি ভরিতে সর্বোচ্চ এক হাজার ৬৬৮ টাকা কমানো হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৭২ হাজার ৮৬৪ টাকা। আজ (মঙ্গলবার) প্রতি ভরি সোনা ১ লাখ ৭৪ হাজার ৫২৮ টাকা টাকা বেচাকেনা হয়েছে।
মঙ্গলবার ( ২৪ জুন) এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে বাজুস। বুধবার (২৫ জুন) থেকেই নতুন দাম কার্যকর হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) মূল্য কমেছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন দাম অনুযায়ী সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম এক লাখ ৭২ হাজার ৮৬০ টাকা, ২১ ক্যারেট প্রতি ভরি এক লাখ ৬৪ হাজার ৯৯৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম এক লাখ ৪১ হাজার ৪২৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম এক লাখ ১৭ হাজার ২ টাকা।
সোনার দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৮১১ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৬৮৩ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ২৯৮ টাকা এবং সনাতন।
অর্থনীতি
রোহিঙ্গাদের জন্য ১ হাজার ৫৮ কোটি টাকা দেবে এডিবি

বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের জন্য এবং তাদের আশ্রয়দাতা বাংলাদেশি সম্প্রদায়গুলোর জন্য অত্যাবশ্যকীয় অবকাঠামো ও পরিষেবা নিশ্চিত করতে ১ হাজার ৫৮ কোটি টাকা অনুমোদন করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
এরমধ্যে রয়েছে ৭১৫ কোটি টাকা অনুদান এবং সহজ শর্তে ৩৪৩ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন করেছে সংস্থাটি। এই অর্থায়ন এডিবির দরিদ্রতম ও সবচেয়ে অরক্ষিত সদস্য দেশগুলোর জন্য নির্ধারিত এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (এডিএফ) থেকে দেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) এডিবির ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এডিবি জানায়, ‘ইন্টিগ্রেটেড সার্ভিসেস অ্যান্ড লাইভলিহুড ফর ডিসপ্লেসড পিপল ফ্রম মিয়ানমার অ্যান্ড হোস্ট কমিউনিটিস ইমপ্রুভমেন্ট প্রোজেক্ট’ শীর্ষক প্রকল্পটির মাধ্যমে পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও স্বাস্থ্যবিধি; রাস্তা ও সেতু; নিরাপত্তা ও সুরক্ষা; নিষ্কাশন ব্যবস্থা; খাদ্য নিরাপত্তা এবং দুর্যোগ সহনশীলতার মতো মৌলিক পরিষেবাগুলোর সুযোগ বাড়াতে কাজ করা হবে। কক্সবাজার ও ভাসানচর এলাকার রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দাতা উভয় সম্প্রদায়ের নির্দিষ্ট চাহিদা পূরণে একটি বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে। প্রকল্পটি অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবাগুলোতে যোগাযোগ ও প্রবেশাধিকার বাড়ানোর পাশাপাশি প্রকল্প ব্যবস্থাপনা ও বাস্তবায়নে সরকারের সক্ষমতাও জোরদার করবে।
এই অর্থায়নের বিষয়ে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইয়ুন জিয়ং বলেন, মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত জনগণের সুরক্ষা ও স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে এবং ক্যাম্প ও আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়ের মধ্যে সামাজিক সংহতি প্রচারে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে পেরে আমরা আনন্দিত। নতুন এই সহায়তা আমাদের পূর্ববর্তী সমর্থনের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। যেখানে জরুরি সহায়তা প্রকল্প এবং এর অতিরিক্ত অর্থায়নের অধীনে ২০১৮ সাল থেকে বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠী ও আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়গুলোকে মোট ১৭১.৪ মিলিয়ন ডলার অনুদান ও ঋণ দেওয়া হয়েছে।
কাফি
অর্থনীতি
৩৯০ কোটি টাকায় টোটালগ্যাজ বাংলাদেশ অধিগ্রহণ করছে ওমেরা পেট্রোলিয়াম

ফরাসি কোম্পানি টোটালগাজের বাংলাদেশের ব্যবসা অধিগ্রহণ করবে বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের প্রতিষ্ঠান ওমেরা পেট্রোলিয়াম। ৩২ মিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশী প্রায় ৩৯০ কোটি টাকার এই অধিগ্রহণ সম্পন্ন হলে দেশের তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) বাজারে ওমেরার অবস্থান আরও দৃঢ় হবে। বর্তমানে ওমেরার বাজার হিস্যা ২২ শতাংশ, যেখানে টোটালগাজের হিস্যা প্রায় ৫ শতাংশ।
দুই কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, এই চুক্তির আওতায় ১৯ মিলিয়ন ডলার ইক্যুইটিতে ব্যবহৃত হবে, বাকি ১৩ মিলিয়ন ডলার যাবে দায়-দেনা ও সম্পদ অধিগ্রহণে, যার মধ্যে ব্যাংক ঋণও রয়েছে।
কয়েক মাস ধরে আলোচনার পর সমঝোতা
এ চুক্তির জন্য উভয় পক্ষের মধ্যে কয়েক মাস ধরে জটিল আলোচনা চলে। টোটালগ্যাজ বাংলাদেশের ১১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে স্থানীয় শেয়ারহোল্ডারদের হাতে, আলোচনার অন্যতম বাধা ছিল এই অংশীদারদের অনিচ্ছা। তবে দীর্ঘদিন ধরে প্রতি বছর ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা লোকসান মুখে পড়া টোটালগ্যাজ অবশেষে বাংলাদেশ থেকে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে।
“উভয়পক্ষ ইতোমধ্যে সব আইনি নথি বিনিময় করেছে। খুব শিগগিরই আমরা চুক্তি স্বাক্ষর করব, বলেন ওমেরা পেট্রোলিয়ামের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
ওমেরার সম্প্রসারণ ও এলপিজি বাজারের চিত্র
ওমেরা পেট্রোলিয়ামের মালিক ওমেরা এলপিজি, একটি যৌথ মালিকানাধীন কোম্পানি। এর ৬২ শতাংশ অংশীদারত্ব এমজেএল বাংলাদেশের, আর ২৫ শতাংশ অংশীদারত্ব হচ্ছে বিবি এনার্জি (এশিয়া) প্রাইভেট লিমিটেড এবং বাকি ১৩ শতাংশের অংশীদার নেদারল্যান্ডসভিত্তিক উন্নয়ন ব্যাংক- এফএমও।
২০০২ সালে টোটালগ্যাজ বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং অল্প সময়ের মধ্যেই দেশের শীর্ষ তিনটি এলপিজি আমদানিকারক ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে স্থান করে নেয়। তবে স্থানীয় কোম্পানিগুলোর আক্রমণাত্মক বিনিয়োগ এবং সম্পূর্ণ আমদানি-নির্ভর বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারেনি তারা।
বাংলাদেশে টোটালগ্যাজের কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে এলপিজি আমদানি, সংরক্ষণ, বোতলজাতকরণ এবং ১২ কেজি, ১৫ কেজি ও ৩৩ কেজি সিলিন্ডারে বাজারজাতকরণ। শিল্প খাতের জন্য তারা বাল্ক বা পাইকারি সরবরাহও করে থাকে। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে তাদের ১ লাখ টন ধারণক্ষমতার টার্মিনাল এবং বগুড়ায় একটি সেকেন্ডারি স্থাপনাও রয়েছে।
উত্থান-পতনের মধ্যেও এলপিজি খাতের বিকাশ
২০১০ সালে যেখানে দেশের এলপিজি চাহিদা ছিল মাত্র ৭০ হাজার টন, সেখানে এখন বার্ষিক চাহিদা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৭ লাখ টনে। প্রতি বছর এই খাত ১৫ থেকে ২০ শতাংশ হারে বাড়ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে চাহিদা ৩০ লাখ টনে পৌঁছানোর পূর্বাভাস রয়েছে।
প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ কমে আসার আশঙ্কায় সরকার ২০০০ এর দশকের শুরুতে—নতুন গ্যাস সংযোগে বিধিনিষেধ আরোপ করে, এবং এলপিজি ব্যবহারে উৎসাহ দেয়। ২০০৯ সাল থেকে এপর্যন্ত ৫৮টি এলপিজি ব্যবসার লাইসেন্স ইস্যু করা হয়েছে।
বাজারে এখন বসুন্ধরা গ্রুপ, যমুনা স্পেসটেক, বেক্সিমকো, মেঘনা, সিটি গ্রুপের মতো শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক গ্রুপগুলোর আধিপত্য রয়েছে। তবে ক্রমবর্ধমান পরিচালন ব্যয় এবং প্রচণ্ড মূল্য প্রতিযোগিতার কারণে— বিশেষ করে ফ্রি সিলিন্ডার অফারসহ নানা প্রণোদনার কারণে — কিছু কোম্পানি আর্থিকভাবে চাপে পড়েছে। এরমধ্যে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে এলপিজি ব্যবসা থেকে সরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে।
অর্থনীতি
দেশে প্রথমবারের মতো গুগল পে চালু হচ্ছে আজ

বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হতে যাচ্ছে গুগলের ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা ‘গুগল পে’। আজ মঙ্গলবার (২৪ জুন) এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর সেবাটির উদ্বোধন করবেন।
গুগল, মাস্টারকার্ড ও ভিসার সহায়তায় সেবা চালু করছে সিটি ব্যাংক। এটি হতে যাচ্ছে গুগল পের সঙ্গে যুক্ত হওয়া দেশের প্রথম ব্যাংক।
প্রথম ধাপে শুধু সিটি ব্যাংকের মাস্টারকার্ড ও ভিসা কার্ডধারীরা তাদের কার্ড গুগল ওয়ালেটে যুক্ত করে গুগল পে ব্যবহার করতে পারবেন। পরে অন্য ব্যাংকও যুক্ত হলে সে সুযোগ আরও প্রসারিত হবে।
গুগল পে ব্যবহার করে গ্রাহকেরা দেশে বা বিদেশে যে কোনো পয়েন্ট অব সেল (POS) টার্মিনালে অ্যান্ড্রয়েড ফোন ট্যাপ করে নিরবচ্ছিন্ন, দ্রুত এবং নিরাপদ লেনদেন করতে পারবেন। এতে আলাদা করে কার্ড বহনের প্রয়োজন হবে না।
সেবাটি ব্যবহারের জন্য গ্রাহকের একটি অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন থাকতে হবে এবং গুগল পে অ্যাপ ডাউনলোড করে সিটি ব্যাংকের কার্ড যুক্ত করতে হবে। এরপর যে কোনো দোকান বা রেস্তোরাঁয় স্মার্টফোন ট্যাপ করেই অর্থ পরিশোধ সম্ভব হবে।
গুগল পে লেনদেনে কোনো ফি নেয় না এবং কার্ডের মূল তথ্যের পরিবর্তে একটি ‘টোকেন’ ব্যবহার করে গ্রাহকের তথ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে।