অর্থনীতি
দুই প্রকল্পে বাংলাদেশকে ৬৪০ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

বাংলাদেশের জন্য ৬৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংক। গ্যাস সরবরাহ নিরাপত্তা জোরদার এবং বায়ুমান উন্নয়নে এ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
বুধবার (১৮ জুন) বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালনা পর্ষদ এই অর্থায়নের অনুমোদন দেয়।
সংস্থাটির অন্তর্বর্তীকালীন কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেছেন, জ্বালানি নিরাপত্তা ও বায়ুমান উন্নয়ন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে এই প্রকল্প দুটি।
জানা গেছে, অনুমোদনকৃত বিশাল এ অর্থ সহায়তার মধ্যে ৩৫০ মিলিয়ন ডলার দেওয়া হচ্ছে গ্যাস সরবরাহ নিরাপত্তা জোরদার প্রকল্পে। ‘এনার্জি সেক্টর সিকিউরিটি এনহান্সমেন্ট’ এর আওতায় এ সহায়তার মাধ্যমে পেট্রোবাংলার জন্য সাশ্রয়ী অর্থায়নের সুযোগ তৈরি করা হবে। ৩৫০ মিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্পটি একটি আইডিএ গ্যারান্টির মাধ্যমে সাত বছরে ২.১ বিলিয়ন ডলার বেসরকারি পুঁজি সংগ্রহে সহায়তা করবে, যা তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির জন্য ব্যবহৃত হবে।
বর্তমানে দেশের মোট গ্যাস ব্যবহারের এক-চতুর্থাংশ এলএনজি আমদানি নির্ভর, যার ৪২ শতাংশই ব্যবহার হয় বিদ্যুৎ খাতে। তাই গ্যাস সংকট হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হয়, যা অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। নতুন এই প্রকল্পের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে এলএনজি আমদানিতে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও কার্যকর পেমেন্ট ব্যবস্থার সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।
প্রকল্পটির টিম লিডার ও বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ওলায়িনকা এডেবিরি বলেন, এই উদ্যোগ শিল্প ও সাধারণ জনগণের জন্য নির্ভরযোগ্য ও সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে। এটি অর্থনীতির টেকসই প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।
এছাড়া দ্বিতীয় প্রকল্প ‘বাংলাদেশ ক্লিন এয়ার প্রজেক্ট’ এর আওতায় ২৯০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি পরিবেশ অধিদপ্তরের আওতায় বায়ু দূষণ পর্যবেক্ষণ নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করবে এবং আধুনিক মনিটরিং স্টেশন স্থাপন করবে।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বায়ু দূষণে ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ১ লাখ ৫৯ হাজারের বেশি অকাল মৃত্যু এবং ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন কর্মদিবস হারিয়েছে, যা দেশের মোট জিডিপির ৮ দশমিক ৩ শতাংশ সমপরিমাণ ক্ষতির কারণ।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৪০০টি পুরোনো ডিজেলচালিত বাস সরিয়ে নতুন শূন্য-নিষ্কাশন (ইলেকট্রিক) বাস চালু করা হবে। পাশাপাশি পাঁচটি নতুন যানবাহন পরিদর্শন কেন্দ্র নির্মাণ, দুটি অকার্যকর কেন্দ্র আধুনিকীকরণ এবং ২০টি মোবাইল ভেহিকেল এমিশন ইউনিট স্থাপন করা হবে। এর ফলে বছরে আনুমানিক ২ হাজার ৭৩৪ মেট্রিক টন পিএম ২ দশমিক ৫ নির্গমন হ্রাস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রকল্পটির টিম লিডার ও বিশ্বব্যাংকের লিড এনভায়রনমেন্ট স্পেশালিস্ট আনা লুইসা গোমেস লিমা বলেন, এটি বায়ুমান উন্নয়নের প্রথম বড় উদ্যোগ। যেহেতু বায়ু এক দেশের সীমানায় সীমাবদ্ধ নয়, তাই এ প্রকল্প আঞ্চলিক সহযোগিতা ও তথ্য বিনিময়ে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করছে বিশ্বব্যাংক। এ পর্যন্ত বাংলাদেশকে ৪৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অনুদান ও স্বল্পসুদে ঋণ দিয়েছে সংস্থাটি।
কাফি

অর্থনীতি
ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণসহ আর্থিক নিরীক্ষায় স্বাধীনতা ছিল না: আইসিএবি

ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণসহ আর্থিক নিরীক্ষায় আমাদের স্বাধীনতা ছিল না। বিভিন্ন চাপের মুখে নিরীক্ষকদের হাত-পা বাঁধা ছিল। আর্থিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন প্রকাশে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংক ও আদালতের রায় উপেক্ষা করতে পারিনি। ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির কাউন্সিল বা পর্ষদ সদস্য মেহেদি হাসান এসব কথা বলেন।
মেহেদি হাসান বলেন, ব্যাংক খাতের কোন ঋণকে খেলাপি ঋণ হিসেবে গণ্য করা হবে, সেই মানদণ্ড নির্ধারণ করে দিত বাংলাদেশ ব্যাংক। সেটি অনুসরণ করে বিগত সময়ে ব্যাংকগুলোর আর্থিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করতে হতো।’ তিনি আরও বলেন, ‘কারও কারও ব্যক্তিগত ব্যর্থতা আমরা অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদনে তুলে ধরেছি। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালার বাইরে গিয়ে আমাদের কিছু করার সুযোগ ছিল না।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন আইসিএবি’র সভাপতি মারিয়া হাওলাদার। উপস্থিত ছিলেন আইসিএবি’র সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ ফোরকান উদ্দিন, কাউন্সিল সদস্য মো. শাহাদাত হোসেন, মো. মনিরুজ্জামান, মোহাম্মদ মেহেদী হাসান, সাব্বির আহমেদ ও জেরিন মাহমুদ হোসেন প্রমুখ।
আর্থিক খাতের বিশেষ করে ব্যাংক ও ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অনেক অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে কিন্তু অডিট রিপোর্টে প্রকাশ পায়নি— এই দায় কার? সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইসিএবির কাউন্সিল সদস্য মোহাম্মদ মেহেদী হাসান জানান, তখন আমরা অনেক কিছু দেখেছি কিন্তু প্রকাশ করতে পারিনি কারণ আমাদের হাত-পা বাঁধা ছিল।
উদাহরণ হিসেবে তিনি জানান, ঋণ খেলাপি হয়েছে দেখেছি কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়মনীতি বলে দিয়েছে এটি খেলাপি দেখানো যাবে না। আবার অনেক ঋণ গ্রহীতা খেলাপি হওয়ার পর আদালতে গেছেন বিচারক বলে দিয়েছেন ঋণ খেলাপি করা যাবে না; ওই সময় আমাদের কিছু করার ছিল না।
তিনি জানান, আমরা প্রকাশ্য রিপোর্টে প্রকৃত তথ্য তুলে ধরতে না পারলেও অভ্যন্তরীণ বা ইন্টার্নাল রিপোর্টে সব তথ্য দিয়েছি। কিন্তু এসব তথ্য সাধারণের কাছে প্রকাশ করা আমাদের এখতিয়ার বহির্ভূত, তাই জানাতে পারিনি।
তার এই অভিযোগকে সমর্থন করে সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ ফোরকান উদ্দিনসহ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের অন্যান্য সদস্যরাও দাবি করেন, ব্যাংকের ইচ্ছামতো অডিট রিপোর্ট তৈরি করতে বাধ্য করা হয়েছে। কারো ঘাড়ে একাধিক মাথা ছিল না যে তাদের দাবি না মেনে প্রকৃত রিপোর্ট প্রকাশ করবে। এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে খেলাপি ঋণের হার নির্ধারণ করে দিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে লিখিত চিঠি পাঠানো হতো বলেও দাবি সংগঠনটির। প্রকৃত তথ্য লুকানোর কারণে আর্থিক খাতের যে দুরবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, এজন্য সরাসরি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়মনীতি ও অযাচিত হস্তক্ষেপের অভিযোগকে দায়ী করেন আইসিএবি’র সদস্যরা।
এর আগে এক সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে সার্টিফাইড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টকে (সিএমএ) অডিট ক্ষমতা প্রদানের দাবি জানায় দি ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি)। দেশের আর্থিক খাতের দুর্বলতা, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা দূরীকরণে ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।
আইসিএমএবি’র প্রেসিডেন্ট মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, সিএমএ সদস্যদেরকে একক মালিকানা, পার্টনারশিপ, এনজিও, ট্রাস্ট, এসএমই ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান যেগুলো চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের আওতার বাইরে, সেগুলো নিরীক্ষার অনুমতি দেওয়া আবশ্যক। যা এফআরসি বিধিমালার শিডিউল ১ এর (গ)-তে বর্ণিত। অতএব, এনবিআর, জ্বালানি নিয়ন্ত্রক সংস্থা, দাতা সংস্থা এবং তহবিল নিরীক্ষা (যেমন- ডব্লিউপিপিএফ, গ্র্যাচুইটি) এর আওতাধীন নিরীক্ষা কাজগুলোও সিএমএদের জন্য উন্মুক্ত করা ও বাস্তবায়ন সময়ের দাবি।
আইসিএমএবি’র আর্থিক বিবরণী নিরীক্ষার দাবির বিরোধিতা করে আইসিএবি। সংগঠনটি জানায়, বাংলাদেশে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট তৈরি ও তাদের মাধ্যমে অডিট করার দায়িত্ব একমাত্র আইসিএবি’র। এই সংস্থার পাঠ্যক্রম ও পরীক্ষা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড (আইএফএসি) অনুসরণ করে। ফলে এখান থেকে পাস করা অডিটররা দক্ষ ও যোগ্য হন।
আইসিএবি জানায়, আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে আর্থিক প্রতিবেদন নিরীক্ষার জন্য দেশে কেবল চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টদের আইনি স্বীকৃতি রয়েছে। তারা নিয়মিতভাবে গুণগত মান নিশ্চিতে কাজ করে। এ জন্য রয়েছে আলাদা কোয়ালিটি অ্যাসিওরেন্স বিভাগ, তদন্ত ও শৃঙ্খলা কমিটি।
তারা আরও জানায়, কস্ট অডিটের ক্ষেত্রে কোম্পানি আইনে আইসিএমএবি’র সদস্যদের সুযোগ থাকলেও এ বিষয়ে কোনো বাস্তব অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। এই কাজে আইসিএবি সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
সংগঠনটি বলছে, অডিট পেশার মান ধরে রাখা এবং দেশের স্বার্থে সবাইকে নিয়ে সহযোগিতার পরিবেশ গড়ে তুলতে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আইসিএবি সভাপতি বলেন, দেশের অর্থনীতি এগিয়ে নিতে অপপ্রচার বন্ধ করে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমরা চাই সবাই মিলে অ্যাকাউন্টিং পেশাসহ এই কঠিন পরিস্থিতির মোকাবেলা করি।
অর্থনীতি
সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থ জমা বেড়েছে ৩৩ গুণ

ইউরোপের দেশ সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশের নামে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ বেড়েছে। যেখানে জমা অর্থের পরিমাণ বেড়েছে ৩৩ গুণের বেশি।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক (এসএনবি) বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে ২০২৪ সালে তাদের দেশের ব্যাংকগুলোর দায় ও সম্পদের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে।
প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সাল শেষে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে বাংলাদেশের নামে পাওনা রয়েছে ৫৯ কোটি ৮২ লাখ সুইস ফ্রাঁ বা ৫৮৯৫৪৪ মিলিয়ন ফ্রাঁ। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ফ্রাঁ ১৫০ টাকা ধরে) যার পরিমাণ ৮ হাজার ৯৭২ কোটি টাকা। ২০২৩ সাল শেষে যার পরিমাণ মাত্র ছিল ১৭৭১৩ মিলিয়ন ফ্রাঁ। এ হিসাবে জমা অর্থের পরিমাণ বেড়েছে ৩৩ গুণের বেশি।
সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে দায়ের মধ্যে বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর পাওনা, আমনাতকারীদের পাওনা এবং পুঁজিবাজারে বাংলাদেশের নামে বিনিয়োগের অর্থ রয়েছে। এর মধ্যে ৯৫ শতাংশের বেশি বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর পাওনা, যা বাণিজ্যকেন্দ্রিক অর্থ বলে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
অভিযোগ আছে, সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকে থাকা অর্থের একটি অংশ পাচার করা সম্পদ হতে পারে। তবে এ বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। গত কয়েক বছর ধরে সুইজারল্যান্ড বার্ষিক ব্যাংকিং পরিসংখ্যান প্রকাশ করছে।
জানা গেছে, অর্থপাচার নিয়ে বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বা বিএফআইইউ সুইজারল্যান্ডের এফআইইউর সঙ্গে কয়েক দফা যোগাযোগও করেছিল। কিন্তু ব্যক্তির তালিকা সম্বলিত কোনো তথ্য তারা দেয়নি।
সুইজারল্যান্ডের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, অবৈধভাবে কেউ অর্থ নিয়ে গেছে এমন প্রমাণ সরবরাহ করলে তারা তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে পারে। বাংলাদেশের কোনো নাগরিক বা প্রতিষ্ঠান যদি নিজের বদলে অন্য দেশের নামে অর্থ গচ্ছিত রাখে তাহলে তা সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশের নামে থাকা পরিসংখ্যানের মধ্যে আসেনি।
একইভাবে সুইস ব্যাংকে গচ্ছিত রাখা মূল্যবান শিল্পকর্ম, স্বর্ণ বা দুর্লভ সামগ্রীর আর্থিক মূল্যমান হিসাব করে এখানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। অনেক দেশের নাগরিকই মূল্যবান সামগ্রী সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকের ভল্টে রেখে থাকেন।
অর্থনীতি
দুই প্রকল্পে ১১ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেবে এডিবি

ব্যাংকখাত শক্তিশালী করতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় দুই প্রকল্পে বাংলাদেশকে ৯০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় অবস্থিত এডিবির সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় এ ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়।
ঋণের অর্থের ৫০ কোটি ডলার ব্যাংকখাত সংস্কারে এবং ৪০ কোটি ডলার জলবায়ু সহনশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে ব্যয় করা হবে। ৯০ কোটি মার্কিন ডলার বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রতি ডলার ১২২ দশমিক ২০ টাকা ধরে এ অর্থের পরিমাণ ১০ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা।
ব্যাংকখাতে ৫০ কোটি ডলার
এডিবির অনুমোদিত ৫০ কোটি ডলারের নীতিভিত্তিক ঋণটি ‘ব্যাংকখাত স্থিতিশীলকরণ ও সংস্কার কর্মসূচি, উপ-প্রকল্প ১’র আওতায় দেওয়া হয়েছে। এ ঋণের মূল লক্ষ্য বাংলাদেশের ব্যাংকখাতের নিয়ন্ত্রণমূলক তত্ত্বাবধান, করপোরেট সুশাসন, সম্পদের গুণগত মান এবং সার্বিক স্থিতিশীলতা বাড়ানো। এ কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের তারল্য ব্যবস্থাপনা কাঠামো আরও কার্যকর হবে এবং ব্যাংকখাতের উল্লেখযোগ্য খেলাপি ঋণ সমাধানে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এডিবির প্রধান আর্থিকখাত বিশেষজ্ঞ সঞ্জীব কৌশিক জানান, এ অর্থ নিয়ন্ত্রক সংস্থার সক্ষমতা বাড়াতে, ব্যাংকখাতের মূলধন বাড়াতে এবং ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোগের জন্য সাশ্রয়ী অর্থায়নের সুযোগ উন্নত করতে সহায়ক হবে। বাংলাদেশের ব্যাংকখাত মূলত শিল্প ও বৃহৎ ঋণগ্রহীতাদের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় সাধারণ মানুষ প্রায়শই ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর করে। এ ঋণ কার্যকর আর্থিক মধ্যস্থতা নিশ্চিত করবে এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তির হার বাড়াতে সাহায্য করবে।
জলবায়ু সহনশীলতায় ৪০ কোটি ডলার
এডিবির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অনুমোদন হলো ‘জলবায়ু-সহনশীল অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন কর্মসূচির’ দ্বিতীয় ধাপের জন্য ৪০ কোটি ডলার ঋণ।
এ কর্মসূচিতে ফ্রান্সের এজেন্স ফ্রান্সাইজ ডি ডেভলপমেন্ট (এএফডি) থেকে প্রায় ১১৩ মিলিয়ন ডলার এবং এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইডি) থেকে অতিরিক্ত ৪০০ মিলিয়ন ডলার সহ-অর্থায়ন রয়েছে। এ ঋণের মাধ্যমে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় তার সক্ষমতা বাড়াতে, জলবায়ু গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোতে নির্গমন কমাতে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নকে সহায়তা করতে পারবে।
এডিবির জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ সমীর কাঠিওয়াড়া বলেন, এ কর্মসূচি সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় বাড়াবে। জলবায়ু অর্থায়ন সংগ্রহে বাধা দূর করবে এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অভিযোজন ও প্রশমন প্রচেষ্টা জোরদার করবে। কর্মসূচির আওতায় ‘বাংলাদেশ জলবায়ু উন্নয়ন অংশীদারত্ব’ প্রতিষ্ঠিত হবে। যা জলবায়ু অর্থায়ন সুরক্ষিত করতে এবং সরকারি মন্ত্রণালয়গুলোকে জলবায়ু প্রকল্পগুলো আরও কার্যকরভাবে তৈরি, বাস্তবায়ন ও মূল্যায়নে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, এছাড়াও এটি স্থানীয় যুব-সম্পর্কিত এবং লিঙ্গ সংবেদনশীল অভিযোজন ব্যবস্থাগুলোকে শক্তিশালী করবে এবং শস্য বিমা ও দুর্যোগ ঝুঁকি বিমার মতো উপকরণসহ একটি জাতীয় দুর্যোগ ঝুঁকি অর্থায়ন কৌশলকে সমর্থন করবে।
অর্থনীতি
অনুমোদন ছাড়াই বিদেশে পাঠানো যাবে সরকারি প্রকল্প সেবার ফি

সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বিদেশি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কাছ থেকে নেওয়া বিভিন্ন সেবার ফি এখন অনুমোদন ছাড়াই পাঠানো যাবে। এ বিষয়ে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বুধবার (১৮ জুন) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এখন থেকে সরকারি প্রকল্পে পরামর্শ, ব্যবস্থাপনা বা অন্যান্য চলতি সেবার জন্য নির্ধারিত ফি আগাম অনুমোদন ছাড়াই বৈধভাবে বিদেশে পাঠানো যাবে। এতদিন এসব লেনদেনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন নেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল।
তবে এ সুবিধা নিতে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। যেমন— প্রকল্পটি সরকারের অনুমোদিত হতে হবে এবং তাতে অর্থ ছাড়ের অনুমোদন থাকতে হবে। সেবা প্রদানকারী বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তিও থাকতে হবে। অর্থ ছাড়ের সময় প্রকল্প কর্তৃপক্ষকে ইনভয়েস ও সেবা নেওয়ার প্রমাণস্বরূপ একটি সনদপত্র জমা দিতে হবে। পাশাপাশি উৎসে কর, মূল্য সংযোজন করসহ অন্যান্য প্রযোজ্য কর পরিশোধের বিষয়েও নিশ্চিত হতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, রয়্যালটি, প্রযুক্তিগত জ্ঞান বা সহায়তা এবং ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি পাঠানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) নির্ধারিত নির্দেশিকা অনুসরণ করতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন নির্দেশনার ফলে এখন আর আগাম অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। এতে প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যক্রম আরও দ্রুত ও সহজ হবে।
অর্থনীতি
শ্রীলংকায় ওষুধ খাতে বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের আহ্বান

দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে ওষুধ খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার জন্য বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
বুধবার (১৮ জুন) শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত ‘অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সম্প্রসারণে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার বাণিজ্যিক সম্পর্কের উন্নয়ন’ শীর্ষক বিজনেস প্লেনারি সেশনে শ্রীলংকা-বাংলাদেশ বিজনেস কো-অপারেশন কাউন্সিলের সভাপতি আন্দ্রে ফার্নান্দো এ আহ্বান জানান।
শ্রীলঙ্কা সফররত ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে এ প্লেনারি সেশন হয়। দেশটিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনের সার্বিক সহযোগিতায় এর আয়োজন করে ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স অব শ্রীলঙ্কা।
অনুষ্ঠানে ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স অব শ্রীলঙ্কার সভাপতি আনূরা ওয়ারনাকুলাসুরিয়া বলেন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস জরুরি। দুদেশের বেসরকারি খাতের মধ্যে এ ধরনের সমন্বয় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
এসময় ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, বিগত কয়েক দশকে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ এবং ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেশ স্থিতিশীল ছিল। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ পণ্য, ইলেকট্রনিক্স ও হালকা প্রকৌশল এবং তথ্য-প্রযুক্তি প্রভৃতি খাত এ অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
তিনি জানান, শ্রীলঙ্কার উদ্যোক্তারা এরই মধ্যে বাংলাদেশে ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত, টেক্সটাইল ও তৈরি পোশাক, জ্বালানি, অবকাঠামো প্রভৃতি খাতে ৪৩৮ দশমিক ১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। তিনি বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে আরও বেশি বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
একই সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের অধিকতর উন্নয়নে প্রায় তিন দশক আগে সই হওয়া ‘ডাবল ট্যাক্সেশন এভয়ডেন্স এগ্রিমেন্ট’ যুগোপযোগী করার ওপর জোর দেন ঢাকা চেম্বার সভাপতি।
অনুষ্ঠানে শ্রীলঙ্কার এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান মানগালা ওয়াইজেসিঙ্গহি জানান, শ্রীলঙ্কার জিডিপিতে রপ্তানি খাতের অবদান ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ। ২০২৪ সালে মোট রপ্তানি ছিল ১৬ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। শ্রীলঙ্কার তার রপ্তানি পণ্যের বাজার সম্প্রসারণ ও পণ্যের বহুমুখীকরণের ওপর অধিক হারে প্রধান্য দিচ্ছে।
তিনি জানান, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে ওষুধ, তৈরি পোশাক, ফেব্রিক্স এবং কেমিক্যাল প্রভৃতি পণ্য আমদানি করেছে। এছাড়াও সুতা ও টেক্সটাইল, ফেব্রিক্স, মসলা, পশু খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, বাদাম ও কৃষিপণ্য প্রভৃতি খাতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে। শ্রীলঙ্কার ওষুধ, প্যাকেজিং, লজিস্টিক ও রপ্তানিমুখী পণ্য উৎপাদন খাতে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বোর্ড অব ইনভেস্টমেন্ট অফ শ্রীলঙ্কার রেনুকা এম ওয়াইরাকুনে বলেন, দুদেশের মধ্যকার এফটিএ স্বাক্ষরের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ অনেকাংশে বৃদ্ধির পাশাপাশি শুল্ক বিষয়ক প্রতিবন্ধকতাও নিরসন হবে। শ্রীলঙ্কায় ওষুধ, মেডিকেল যন্ত্রপাতি এবং ফেব্রিক্স খাতে বিদেশি বিনিয়োগের জন্য বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করা হয়েছে, সেখানে বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ করতে পারেন। একই সঙ্গে অবকাঠামো, পর্যটন, তথ্য-প্রযুক্তি এবং শিক্ষা প্রভৃতি খাত বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময়।
তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কার বিনিয়োগ বোর্ড উদ্যোক্তাদের সুবিধার্থে সব সেবা সম্বলিত ১৫টি রপ্তানি প্রক্রিয়া অঞ্চল পরিচালনা করছে। যেখানে বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ করতে পারেন।
অনুষ্ঠানে শ্রীলঙ্কায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াস এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার ধর্মপালা বীরাক্কোদি বক্তব্য দেন।
আন্দালিব ইলিয়াস বলেন, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে অতিদ্রুত এফটিএ স্বাক্ষর জরুরি।
এসময় ডিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা ও বিনিয়োগ বাড়াতে এফটিএ স্বাক্ষরে দুদেশের সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। এছাড়াও উভয় দেশের সমুদ্র অর্থনীতির সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে একযোগে কাজ করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। উভয় দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে দুদেশের শুল্ক-বিষয়ক প্রতিবন্ধকতা নিরসনের পাশাপাশি নীতির যুগোপযোগী সংস্কারের ওপর জোর দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে ঢাকা চেম্বারের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ৭০টি শ্রীলঙ্কান ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির ১৫০টি বিটুবি ম্যাচ-মেকিং অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে দুদেশের উদ্যোক্তারা নিজেদের ব্যবসা ও বিনিয়োগ বিষয়ক তথ্য আদান-প্রদানের সুযোগ পান। যা ভবিষ্যতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
অনুষ্ঠানে ডিসিসিআইয়ের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি রাজিব এইচ চৌধুরী, সহ-সভাপতি সালিম সোলায়মান ও প্রতিনিধিদলের সদস্যরা যোগ দেন।