অর্থনীতি
বাজেটে দাম বাড়তে পারে যেসব পণ্যের

বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় যেতে হলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানো প্রয়োজন। এই লক্ষ্যে আগামী বাজেটে সরকার বেশকিছু কর ও শুল্ক ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে। যার প্রভাবে বাজারে কিছু পণ্যের দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সোমবার (২ জুন) আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে চার লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনে বিকেল ৩টায় এ বাজেট বক্তব্য সম্প্রচার করা হবে।
দাম বাড়তে পারে যেসব পণ্যের-
রড ও স্টিলে ভ্যাট বৃদ্ধি
নির্মাণ শিল্পের অন্যতম উপাদান হলো রড। রাজস্ব আদায়ে প্রস্তাবিত বাজেটে অগ্রিম আয়কর (এআইটি) ও মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার। বর্তমানে আমদানি ও উৎপাদন পর্যায়ে শুল্ক-ভ্যাট ৪০ শতাংশের বেশি। প্রস্তাবিত বাজেটে আমদানিতে ভ্যাট ২০-২৩ শতাংশ ও উৎপাদনে ভ্যাট ২০ শতাংশ—বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। তবে বাতিল হতে পারে বিদ্যমান ফিক্সড আমদানি শুল্ক। শুল্ককর বাড়ানো হলে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি টনে রডের দাম বাড়তে পারে প্রায় ১ হাজার ৪০০ টাকা।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে স্টিলের মূল কাঁচামাল স্ক্র্যাপ আমদানিতে প্রতি টনে ফিক্সড শুল্ক আদায় করা হয় ১ হাজার ৫০০ টাকা। অন্যদিকে স্টিল থেকে বিলেট ও রড উৎপাদনে প্রতি টনে ফিক্সড ভ্যাট ২ হাজার ২০০ টাকা। সবমিলিয়ে আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট মিলিয়ে সরকার প্রতি টনে পাচ্ছে ৩ হাজার ৭০০ টাকা।
এসি-ফ্রিজে ভ্যাট বাড়ছে
মাত্র ছয় মাস আগে ফ্রিজ ও এয়ার কন্ডিশনার প্রস্তুতকারকদের ওপর কর্পোরেট কর দ্বিগুণ করার পর। এবার তাদের পণ্যে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে সরকার। ফলে দেশীয় উৎপাদনকারীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ দেখা দিতে পারে। বর্তমানে ফ্রিজ ও এয়ার কন্ডিশনারের উৎপাদন পর্যায়ে সাড়ে ৭ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপিত রয়েছে। তবে এনবিআর আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে তা ১৫ শতাংশ করার পরিকল্পনা করছে।
মোটরসাইকেল ও সাইকেলের যন্ত্রাংশ
বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটে মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশ আমদানিতে ৩ শতাংশের অতিরিক্ত সব আমদানি, নিয়ন্ত্রণমূলক ও সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছিল। কিন্তু এতে মোটরসাইকেলের দাম সেই অর্থে কমতে দেখা যায়নি। আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শুল্ক-ভ্যাট কিছুটা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আসতে পারে। ২০১৮ সালের পর দেশে মোটরসাইকেল উৎপাদনে ১০টির বেশি কারখানা স্থাপিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে জাপানের হোন্ডা, ইয়ামাহা ও সুজুকি এবং ভারতের উত্তরা মোটরস, টিভিএস অটো ও হিরোর মতো প্রতিষ্ঠান। দেশীয় ব্র্যান্ড হিসেবে রয়েছে রানার অটোমোবাইলস।
দেশীয় মোবাইল ফোন
মোবাইল ফোন উৎপাদন ও সংযোজনে হ্রাসকৃত ভ্যাটহার বাড়ানো হচ্ছে। উৎপাদনের ক্যাটাগরিভেদে ২ থেকে আড়াই শতাংশ ভ্যাট বাড়ানোর প্রস্তাব রাখা হচ্ছে প্রস্তাবিত বাজেটে। এর ফলে দেশে তৈরি মোবাইল ফোনের দাম বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ব্যাটারিচালিত রিকশার ব্যাটারিতে বাড়তি শুল্ক
ঢাকাসহ সারা দেশে বিপদজ্জনক বাহনের নাম ব্যাটারিচালিত রিকশা। অনিয়ন্ত্রিত পরিবহন ব্যাটারিচালিত রিকশার দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই রিকশার ১২০০ ওয়াটের ডিসি মোটরের কাস্টমস শুল্ক ১ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ করা হচ্ছে।
কসমেটিক্স পণ্যে বাড়তি খরচ
নারীদের সৌন্দর্যবর্ধনে ব্যবহৃত লিপস্টিক, লিপলাইনার, আইলাইনার, ফেসওয়াশ, মেকআপের সরঞ্জাম আমদানির ন্যূনতম মূল্য বিভিন্ন হারে বাড়ানো হচ্ছে। বর্তমানে প্রতি কেজি লিপস্টিক আমদানির ক্ষেত্রে শুল্কায়নের ন্যূনতম মূল্য ২০ ডলার আছে। সেটি বাড়িয়ে ৪০ ডলার করা হতে পারে। একইভাবে অন্য সব কসমেটিক্সের ন্যূনতম মূল্য বাড়ানো হচ্ছে বলে জানা গেছে।
ওয়ান টাইম প্লাস্টিক পণ্যে ভ্যাট দ্বিগুণ
একবার ব্যবহারযোগ্য (ওয়ান টাইম) প্লাস্টিক পণ্যের ওপর ভ্যাট দ্বিগুণ করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে চা-কফি কাপ, প্লাস্টিক প্লেট ও বাটির মতো পণ্যের ওপর ভ্যাট বেড়ে ১৫ শতাংশে পৌঁছাবে। এর ফলে এসব পণ্যের দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে এসব পণ্যের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত পরিবেশবান্ধব এবং প্রাকৃতিক উপকরণ দিয়ে তৈরি পণ্যের ওপর কোনো ভ্যাট আরোপ করা হবে না। পরিবেশ সুরক্ষায় এমন প্রস্তাব করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
ব্লেড
সেলুনে শেভিং কাজে ব্যবহৃত ব্লেডের দাম বাড়তে পারে। কারণ স্টেইনলেস স্টিলের স্ট্রিপ থেকে প্রস্তুত ব্লেড এবং কার্বন স্টিলের স্ট্রিপ থেকে প্রস্তুত ব্লেডের উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭ শতাংশ করা হচ্ছে।
টেবিলওয়্যার
বাসা-বাড়িতে ব্যবহৃত প্লাস্টিকের তৈরি টেবিলওয়্যার, কিচেনওয়্যার, গৃহস্থালি সামগ্রী, হাইজেনিক ও টয়লেটসামগ্রী উৎপাদনে ভ্যাট সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হচ্ছে। এতে এসব পণ্যের দাম বাড়বে।
হেলিকপ্টার
নতুন অর্থবছরে হেলিকপ্টার আমদানিতে ১০ শতাংশ আমদানি শুল্ক বসানো হতে পারে। তাতে হেলিকপ্টার আমদানির খরচ বাড়বে। এর আগে হেলিকপ্টার আমদানিতে শুল্ক ছিল না।
বিদেশি চকলেট
চকলেট আমদানির ক্ষেত্রে শুল্কায়নের ন্যূনতম মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাব থাকছে বাজেটে। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের চকলেটের শুল্কায়নের ন্যূনতম মূল্য চার ডলার। এটি বাড়িয়ে ১০ ডলার করা হচ্ছে। এতে আমদানি করা সব ধরনের চকলেটের দাম বাড়তে পারে।
বিদেশি খেলনা
স্থানীয় শিল্প সুরক্ষায় প্রস্তাবিত বাজেটে বিদেশি খেলনার ট্যারিফ মূল্য বাড়ানো হচ্ছে। এতে বিদেশি খেলনার দাম বাড়তে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সিগারেট
গত জানুয়ারিতে সিগারেটের চারটি স্তরে দাম ও শুল্ক দুটোই বাড়ানো হয়েছিল। আদেশে নিম্ন, মধ্যম ও উচ্চ স্তরে ১০ শলাকা প্রতি সিগারেটে সম্পূরক শুল্ক ৫ থেকে ৭ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছিল। ফলে প্রস্তাবিত বাজেটে এ বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না। তবে তামাক শিল্পে ব্যবহৃত সিগারেট পেপারের ওপর সম্পূরক শুল্ক ৬০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০০ শতাংশ করার প্রস্তাব আসছে বাজেটে। সেক্ষেত্রে আরেক দফায় দামে প্রভাব পড়তে পারে।
মার্বেল-গ্রানাইট
বাসা-বাড়ির মেঝেতে ব্যবহৃত মার্বেল-গ্রানাইট পাথর আমদানির সম্পূরক শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪৫ শতাংশ করা হচ্ছে। এতে মার্বেল-গ্রানাইটের দাম বাড়তে পারে।
দেশে তৈরি সুতা
দেশীয় টেক্সটাইল মিলে উৎপাদিত সুতার ভ্যাট বাড়ানো হচ্ছে। প্রতি কেজি কটন সুতা ও মেন মেইড ফাইবারে তৈরি সুতার সুনির্দিষ্ট কর তিন টাকা থেকে বাড়িয়ে পাঁচ টাকা করা হচ্ছে। এতে দেশীয় সুতায় তৈরি গামছা, লুঙ্গিসহ পোশাকের দাম বাড়তে পারে।
এ ছাড়া শুল্ক-কর বৃদ্ধিতে দাম বাড়ার আশঙ্কা আছে- তারকাঁটা, সব ধরনের স্ক্রু, নাট-বোল্ট, ইলেকট্রিক লাইন হার্ডওয়্যার, পোল ফিটিংস, তামাক বীজ ও দরজার তালা ইত্যাদি।

অর্থনীতি
৯ হাজার কোটি টাকার জ্বালানি তেল কিনছে সরকার

আন্তর্জাতিক দরপত্র (কোটেশন) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সিঙ্গাপুরের তিন প্রতিষ্ঠান থেকে পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করবে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ৯ হাজার ১৩৯ কোটি ২৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। দেশের জ্বালানি তেলের সরবরাহ নিশ্চিত করতে চলতি বছরের জুলাই-ডিসেম্বরের (ছয় মাস) জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার (৪ জুন) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে এই জ্বালানি তেল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
জানা গেছে, সিঙ্গাপুরের তিনটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তিনটি প্যাকেজে এ তেল আমদানি করা হবে। প্যাকেজ বি- পেট্রোচিনা ইন্টারন্যাশনাল পিটিই লিমিটেড, প্যাকেজ সিতে- ভিটল এশিয়া পিটিই লিমিটেড এবং প্যাকেজ ডিতে সিনোচেম আন্তর্জাতিক তেল (সিঙ্গাপুর) পিটিই লিমিটেড সিঙ্গাপুর। এতে মোট ব্যয় হযে ৯ হাজার ১৩৯ কোটি ২৪ লাখ ২০ হাজার টাকা।
এর আগে গত ২ জানুয়ারি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে জি-টু-জি ভিত্তিতে ২০২৫ সালের জানুয়ারি টু জুন সময়ের জন্য পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়ম করপোরেশন (বিপিসি)’র ২০২৫ সালের পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির প্রস্তাব গত বছরের ২৪ অক্টোবর সিসিইএ বৈঠকে নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়।
দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে মেয়াদি চুক্তির আওতায় জি-টু-জি ভিত্তিতে নেগোসিয়েশন করা চীনের দুটি এবং ইন্দোনেশিয়া, আরব আমিরাত, ভারত, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও ওমানের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন সময়ের জন্য ১৪ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করা হবে।
এই জ্বালানি তেলের মূল্য প্রিমিয়াম ও রেফারেন্স প্রাইসসহ ৯৫ কোটি ৬৫ লাখ ৮৭ হাজার ৩২ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১১ হাজার ৪৭৯ কোটি ৪ লাখ টাকা। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে সভায় এই প্রস্তাব উপস্থাপন করা হলে কমিটি তা যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দিয়েছে।
এরমধ্যে গ্যাস অয়েল ৮ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন, জেট এ-১: ১ লাখ ৯০ হাজার মেট্রিক টন, মোগ্যাস ৭৫ হাজার মেট্রিক টন, ফার্নেস অয়েল ২ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন এবং মেরিন ফুয়েল ৩০ হাজার মেট্রিক টন কেনা হবে।
কাফি
অর্থনীতি
১৭২ কোটি টাকায় পুলিশের জন্য কেনা হবে গাড়ি

বাংলাদেশ পুলিশের অপারেশনাল কাজে ব্যবহারের জন্য সরাসরি ক্রয় পদ্ধতির (ডিপিএম) মাধ্যমে ২০০টি ডাবল কেবিন পিকআপ ক্রয়ের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে খরচ হবে ১৭২ কোটি টাকা।
বুধবার (৪ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, জননিরাপত্তা বিভাগের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ পুলিশের অপারেশনাল কাজে ব্যবহারের জন্য সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি (ডিপিএম)-এর মাধ্যমে ২০০টি ডাবল কেবিন পিকআপ ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, বাংলাদেশ এর কাছ থেকে এই গাড়ি কিনতে খরচ হবে ১৭২ কোটি টাকা।
বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আজকে অর্থনৈতিক বিষয়ক সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে আমরা কতগুলো সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এরমধ্যে ধারাবাহিকভাবে এলএনজি আনা যাতে জ্বালানির বিষয়ে আমরা সেভ থাকি।
তিনি বলেন, বৈঠকে শস্য গুদামজাত করার জন্য সাইলো নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পুলিশের অনেকগুলো গাড়ি ডেমেজ হয়েছে। এজন্য গাড়ি কেনার অর্থ বরাদ্দ দিয়েছি। একইসঙ্গে পুলিশের জন্য ঢাকার কাছাকাছি আমরা একটা বিশেষ স্থান করেছি। তারা সেখানে হাউজিং কমপ্লেক্স করবে।
এছাড়া বৈঠকে এমওপি, টিএসপি সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নৌ-পরিবহণ মন্ত্রণালয়ের কিছু লাইট হাউজ আছে সেগুলো চর কুকড়িমুকড়ি মতো বিভিন্ন জায়গায় করার জন্য অনুমোদন দিয়েছি। জলযান ও সেলভেজ ভেইক্যাল এর মতো একটা জাহাজ রিপেয়ার করবে সেটার জন্য টাকা অনুমোদন করেছি।
অর্থনীতি
৩৭৯ কোটি টাকায় ১০০ টন সার কিনবে সরকার

রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে কানাডা ও রাশিয়া থেকে ৭০ মেট্রিক টন এমওপি সার এবং আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ইউএই থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন রক ফসফেট আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এতে মোট ব্যয় হবে ৩৭৯ কোটি ৫৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯০০ টাকা।
বুধবার (৪ জুন) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সার উৎপাদনকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেডের (টিএসপিসিএল) জন্য ৩০ হাজার মেট্রিক টন রক ফসফেট (৭০ শতাংশ বিপিএল মিনিমাম) আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) মেসার্স জেনট্রেড এফজেডই থেকে এ রক ফসফেট আনতে ব্যয় হবে ৮৯ কোটি ৫০ লাখ ৩৪ হাজার ৭০০ টাকা। প্রতি মেট্রিক টনের দাম পড়বে ২৩২ দশমিক ৯০ মার্কিন ডলার।
বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশন (সিসিসি) ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন এমওপি সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশন থেকে এ সার আনতে ব্যয় হবে ১৬৫ কোটি ৭৩ লাখ ৯৪ হাজার ৪০০ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম পড়বে ৩৩৯ দশমিক ৬৩ মার্কিন ডলার।
এছাড়া বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে রাশিয়ার জেএসসি ও বিএডিসির মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন এমওপি সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ সার আনতে ব্যয় হবে ১২৪ কোটি ৩০ লাখ ৪৫ হাজার ৮০০ টাকা। প্রতি মেট্রিক টন সারের দাম পড়বে ৩৩৯ দশমিক ৬৩ মার্কিন ডলার।
অর্থনীতি
ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে অর্থনীতি স্থবির হবে না: অর্থ উপদেষ্টা

ঈদে টানা ১০ দিনের দীর্ঘ ছুটিতে দেশের অর্থনীতিতে কোনো প্রভাব পড়বে না বা স্থবির হবে না জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বুধবার (০৪ জুন) সচিবালয়ে দুপুরে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ঈদে টানা ১০ দিনের ছুটি এ সময় দেশের অর্থনীতিতে কোনো প্রভাব পড়বে কিনা বা স্থবির হবে কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, স্থবির হওয়ার কোনো সুযোগ নেই, ব্যবসায়ীরা তাদের মতো করে ব্যবসা করবেন। বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে কোন কোন দিন, কোন কোন স্থানে ব্যাংক খোলা থাকবে… গরুর হাটে কীভাবে থাকবে।
তিনি বলেন, এ রকম হলিডে পৃথিবীর অন্যান্য দেশে আরও বেশি থাকে। বড়দিনে ২০ থেকে ২৫ দিন ছুটি থাকে। নেপালে দুর্গাপূজার সময় ৩০ দিন ছুটি থাকে। তখন তাদের দেশ চলে না? সুতরাং দেশ চলবে। ইতোমধ্যে আমরা বাজেট দিয়ে দিয়েছি। বাজেটে মোটামুটি কর্মপন্থা কী হবে সেই অনুযায়ী কাজ হবে।
তিনি আরও বলেন, ঈদের পর বাজেটের ওপর কার কী মন্তব্য, সাজেশন থাকবে সেটি নেব। ১৯ জুন পর্যন্ত মতামত দিতে পারবে বাজেটের বিষয়ে। ২২ তারিখ কেবিনেট বৈঠকে বাজেট অনুমোদন হবে।
প্রস্তাবিত বাজেটে দারিদ্র্যদের জন্য সুখবর আছে কিনা? এ প্রশ্নের জবাবে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সুখবর আছে, আপনারা বাজেটের কোথায় কোথায় পরিবর্তন হয়েছে সেটি একটু দেখেন।
এতে সাধারণ মানুষের মনে স্বস্তি ফিরবে বলে মনে করেন? এ প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, বাজেটে স্বস্তি আছে।
অর্থনীতি
যমুনা সেতুতে ২৪ ঘণ্টায় টোল আদায় ২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা

ঈদের আনন্দ পরিবারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে ঘরমুখো হচ্ছে মানুষ। এতে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে।এদিকে বাড়ছে যমুনা সেতুতে টোল আদায়ের পরিমাণ। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা সেতু থেকে ২ কোটি ৮৬ লাখ ৬৩ হাজার ৯০০ টাকা টোল আদায় করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ এবং এর বিপরীত ৩৩ হাজার ৫৬৪টি যানবাহন পারাপার হয়েছে।
বুধবার (৪ জুন) সকালে যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, সোমবার রাত ১২টা থেকে মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৩ হাজার ৫৬৪টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী ১৭ হাজার ৬৫৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৪৪ লাখ ৮২ হাজার ৮৫০ টাকা। অপরদিকে ঢাকাগামী ১৫ হাজার ৯০৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর বিপরীতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৪১ লাখ ৮১ হাজার ৫০ টাকা।
যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বলেন, মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়লেও নেই যানজট। যানজট নিরসনে যমুনা সেতু পূর্ব ও পশ্চিম উভয় অংশে ৯টি করে ১৮টি টোল বুথ স্থাপনসহ মোটরসাইকেলের জন্য ৪টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। সেতুর ওপর কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সেই জন্য দুইটি রেকারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আমাদের পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় আছে। সার্বক্ষণিক সিসি ক্যামেরা দিয়ে মনিটরিং করা হচ্ছে। মানুষ যেন নির্বিঘ্নে গন্তব্য পৌঁছাতে পারে।
এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ শরীফ বলেন, মহাসড়কে যানবাহনের চাপ রয়েছে, নেই যানজট। এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ মহাসড়কে কাজ করে যাচ্ছে। পুলিশ মহাসড়কে সার্বক্ষণিক রাত-দিন কাজ করছে। মানুষ যেন নির্বিঘ্নে গন্তব্য পৌঁছাতে পারে সেজন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।