পুঁজিবাজার
আর্থিক সংকটে থাকা ১৮ ব্যাংককে লভ্যাংশ দিতে নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশ ব্যাংকের

আর্থিক পরিস্থিতি সংকটাপন্ন হওয়ায় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১৮ ব্যাংককে লভ্যাংশ দিতে নিষেধ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক পরিচালক ও শীর্ষ নির্বাহীদের বারংবার আবেদন সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সিদ্ধান্তে অনড় থাকে।
ব্যাংক কোম্পানি আইন-১৯৯১’র ২২ ধারা উল্লেখ করে গত (২১ মে) বাংলাদেশ ব্যাংক ১৮ ব্যাংককে চিঠি দেয়। তাতে আর্থিক পরিস্থিতি সংকটাপন্ন হওয়ায় ব্যাংকগুলোকে লভ্যাংশ দিতে নিষিদ্ধ করা হয়। তবে এসব ব্যাংকের বেশিরভাগকেই খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণে বাড়তি সময় দেওয়া হয়েছে।
ব্যাংকগুলো হলো- এবি ব্যাংক, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, মার্কেন্টাইল ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, এসবিএসি ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক ও রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক প্রভিশন ঘাটতি পূরণে ডেফারেল সুবিধা নেওয়া ব্যাংকগুলোকে লভ্যাংশ না দেওয়ার বিষয়ে কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৬ ব্যাংকের মধ্যে ১৬টি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিগত বছরের বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে পেরেছে। আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক লোকসান করেছে। অন্যদিকে, ওয়ান ব্যাংক মুনাফা করলেও লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছড়া শেষ সময়ে এসে ঢাকা ব্যাংককে লভ্যাংশ ঘোষণা দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক চিঠিতে বলা হয়েছে- প্রভিশন ঘাটতি মেটানোর মতো মুনাফা ব্যাংকগুলোর নেই। ফলে এসব ঘাটতি সমন্বয় না করে ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়া হিসাব বছরের আর্থিক বিবরণী তৈরি করতে পারবে এসব ব্যাংক।
প্রভিশন ও মূলধন ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে ব্যাংকগুলোকে এক মাসের মধ্যে নিজ নিজ বোর্ডের অনুমোদনপ্রাপ্ত বাস্তবসম্মত ও সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
চিঠিতে ব্যাংকগুলোকে ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রভিশন ঘাটতির পরিমাণ তাদের আর্থিক বিবরণী ও পুঁজিবাজারের তথ্যে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে বলা হয়েছে। প্রভিশন রক্ষণাবেক্ষণ, লাভ-ক্ষতির হিসাব ও মূলধন পর্যাপ্ততা সম্পর্কিত তথ্যে ঘাটতির কথা অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরও বলেছে, দাখিলকৃত তথ্য ও নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণীর মধ্যে অসঙ্গতি থাকলে ব্যাংক কোম্পানি আইনের অধীনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত মার্চে লভ্যাংশ দেওয়ার নতুন নিয়ম জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০২৪ সাল থেকে যেসব ব্যাংক প্রভিশনিংয়ে ডেফারেরল সুবিধা নিবে তাদের লভ্যাংশ দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে না। আগামী বছর থেকে যেসব ব্যাংকের মোট ঋণের ১০ শতাংশের বেশি খেলাপি সেগুলোর ওপর এমন বিধিনিষেধ আসবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এ সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের (বিএবি) চেয়ারম্যান আবদুল হাই সরকার। তিনি বলেন, আমানতকারী, শেয়ারহোল্ডার ও গ্রাহকদের আস্থা নিয়ে ব্যাংকগুলো চলছে। কিন্তু লভ্যাংশ দিতে না পারলে আস্থা কমবে। নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বোঝানোর চেষ্টা করছি, কিন্তু তারা তা শোনেনি।
পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত ওই ১৮ ব্যাংকসহ বেশির ভাগ ব্যাংকই প্রভিশন ঘাটতিতে পড়ায় ৩০ এপ্রিলের মধ্যে তাদের আর্থিক বিবরণী চূড়ান্ত করতে ব্যর্থ হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের অনুমোদন নিয়ে এ সময়সীমা ৩১ মে পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৬ ব্যাংকের মধ্যে সিটি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, যমুনা ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক ও মিডল্যান্ড ব্যাংক লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
কাফি

পুঁজিবাজার
লোকসানে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি গত ৩১ মার্চ,২০২৫ তারিখে সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি’২৫-মার্চ’২৫) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গত বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হলেও আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির লোকসান হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) অনুষ্ঠিত ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে আলোচিত প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকে সমন্বিতভাবে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি ৪ টাকা ৭৬ পয়সা লোকসান হয়েছে। গত বছর একই সময়ে সমন্বিতভাবে ৩০ পয়সা আয় হয়েছিল।
আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি অর্থের প্রবাহ বা ক্যাশ-ফ্লো ছিলো মাইনাস ১৭ টাকা ৮০ পয়সা। আগের বছরে যা ছিলো মাইনাস ১৮ টাকা ৫৩ পয়সা।
গত ৩১ মার্চ,২০২৫ তারিখে সমন্বিতভাবে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ১১ টাকা ৬৪ পয়সা।
এসএম
পুঁজিবাজার
লভ্যাংশ সংক্রান্ত তথ্য জানালো এনআরবি ব্যাংক

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের কোম্পানি এনআরবি ব্যাংক পিএলসি গত ৩১ ডিসেম্বর,২০২৪ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য লভ্যাংশ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। কোম্পানিটি আলোচিত বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দেবে না।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) অনুষ্ঠিত ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সর্বশেষ হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর লভ্যাংশ সংক্রান্ত এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ব্যাংক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, সমাপ্ত ২০২৪ সালে সমন্বিতভাবে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি ১১ পয়সা আয় হয়েছে। আগের বছর শেয়ার প্রতি ১ টাকা ৩৫ পয়সা আয় হয়েছিল।
সর্বশেষ বছরে সমন্বিতভাবে শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ছিল ৬ টাকা ৫৯ পয়সা, যা আগের বছর ৫ টাকা ৪ পয়সা ছিল।
গত ৩১ ডিসেম্বর,২০২৪ তারিখে সমন্বিতভাবে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ১১ টাকা ৬৬ পয়সা।
আগামী ২১ সেপ্টেম্বর, রোববার সকাল ১১টায় হাইব্রিড পদ্ধতিতে ব্যাংকটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২১ জুলাই।
এসএম
পুঁজিবাজার
লোকসানে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের কোম্পানি সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি গত ৩১ মার্চ,২০২৫ তারিখে সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি’২৫-মার্চ’২৫) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গত বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হলেও আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটির লোকসান হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) অনুষ্ঠিত ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে আলোচিত প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়। কোম্পানি সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকে ব্যাংকটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৪১ পয়সা লোকসান হয়েছে। গত বছর একই সময়ে সমন্বিতভাবে ১৭ পয়সা আয় হয়েছিল।
আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি অর্থের প্রবাহ বা ক্যাশ-ফ্লো ছিলো মাইনাস ২১ টাকা ১৯ পয়সা। আগের বছরে যা ছিলো মাইনাস ৭৮ পয়সা ছিল।
গত ৩১ মার্চ,২০২৫ তারিখে সমন্বিতভাবে ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ১৬ টাকা ৭৪ পয়সা।
এসএম
পুঁজিবাজার
রাশেদ মাকসুদ কমিশনের অযোগ্যতার ভয়াবহ তথ্য আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও

পুঁজিবাজারে ধারাবাহিক দরপতন অব্যাহত আছে। এতে পুঁজি হারিয়ে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। গত বছরের জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর পুঁজিবাজারে গতিশীলতা ফিরে আসার প্রত্যাশায় ফের সক্রিয় হন বিনিয়োগকারীরা। তবে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ দায়িত্ব নেওয়ার দীর্ঘ ৯ মাসেও তা দৃশ্যমান না হওয়া আশাহত বিনিয়োগকারীরা। ফলে কমিশনের ওপর আস্থাহীনতায় পুঁজিবাজার ছাড়ছেন বিনিয়োগকারীরা। এছাড়াও, রাশেদ মাকসুদ দায়িত্ব নেওয়ার পর স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কমিশনের দূরত্ব হয়েছে। ফলে কমিশনের ওপর আস্থা হারিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কমিশনকে উৎখাত করতে আন্দোলন করেছে। যে কমিশনকে বাজারের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সেই কমিশন নিজের শৃঙ্খলাই ফিরিয়ে আনতে পারেনি।
দীর্ঘদিন ধরে দেশের গণমাধ্যমগুলো রাশেদ মাকসুদ কমিশনের অযোগ্যতার এমন সব তথ্য তুলে ধরে আসছে। এবার জার্মানভিত্তিক গণমাধ্যম ডয়চে ভেলেতে এ ভয়াবহ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
২০১৬ সালের ২০ জুন পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ছিলো ৩২ লাখ ৭৬৬ জন। আর গত বছরের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের দিন পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারী ছিল ১৬ লাখ ৬৮ হাজার ৮৯৫ জন। তবে গত ২৫ মে এই সংখ্যা কমে ১৬ লাখ ৯০ হাজার ২২৭ জনে দাঁড়িয়েছে। গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর তিন দিন দেশে কোনো সরকার ছিল না। নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হতে যাচ্ছে-এমন খবরে পুঁজিবাজারের সূচক বেড়েছিল। কিন্তু সরকার গঠনের পর থেকে আবার তা কমতে থাকে।
বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম ইকবাল হোসেন বলেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীরা ভাষাহীন হয়ে গেছে। গত ১৫ বছরের পুঁজিবাজারকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয়েছে। মুহাম্মদ ইউনুস সরকার গঠনের পর মানুষ আশা করেছিল পুঁজিবাজার ভালো হবে। গত ৫ আগস্টের পর যখন কমিশনে চেয়ারম্যান ছিলেন না তখন ইনডেক্স ভালো বেড়েছিল। আমরা ধারণা করেছিলাম পুঁজিবাজার এভাবেই চলবে এবং বিনিয়োগকারীরা তাদের পুঁজি ফিরে পাবেন।
বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সমালোচনা করে ইকবাল হোসেন বলেন, মার্কেটের ধারাবাহিক পতন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে পুঁজিবাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনার পরিবর্তে বিনিয়োগকারীরা আরও আস্থা হারিয়েছে। তিনি দায়িত্বে নেওয়ার পর পুঁজিবাজারের সূচক ১২০০ পড়ে গেছে। পুঁজিবাজার থেকে ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকার মতো ক্যাপিটাল লস হয়েছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্রোকারেজদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, কনফিডেন্সের অভাবে বিনিয়োগকারীদের ধরে রাখা যাচ্ছে না। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০ শতাংশ ইনডেক্স হারিয়েছি।
মোবারক হোসেন নামে এক সাধারণ বিনিয়োগকারী জার্মানভিত্তিক গণমাধ্যমকে বলেন, দেড় বছর আগে একটি শেয়ার ৩৪৪ টাকায় কিনেছিলাম। ফ্লোর প্রাইজ তোলার আগেও দাম ছিল ২৩৭ টাকা। এখন এই শেয়ারের দাম নেমে এসেছে ৬৭ টাকায়। জিপিএইচ ইস্পাতের ফ্লোর প্রাইজ ৩৪ টাকা থাকলে এর দাম এখন ১৭ টাকা ৬০ পয়সায় নেমেছে। আমার কেনা সব শেয়ারের দাম তলানিতে নেমেছে। আমরা পরিচিত একজনের এক কোটি টাকার শেয়ার আছে, তিনি এখন ২০ লাখও পাবেন না। সবই লুটপাট হয়ে গেছে।
শরিফুল ইসলাম নামে আরেক বিনিয়োগকারী বলেন, সাইফ পাওয়ারের ৩০ টাকার শেয়ারের দাম এখন ৭ টাকা। ভালো-মন্দ সব শেয়ারের দামই কমেছে। আমার যতগুলো শেয়ার আছে সবগুলোর দাম কমেছে, আমি এখন অনেকটা নিঃস্ব। সামনে কি আছে তা কেউ বলতে পারবে না।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সামনে ঢাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মোতালেব হোসেন বলেন, আগের সরকার শেয়ারবাজারে লুটপাট করেছে। কিন্তু এই সরকারের যাওয়ার সময় ঘনিয়ে এলেও তারা শেয়ারবাজার ঠিক করেনি। কে ক্ষমতায় থাকবে আর কে ক্ষমতায় থাকবে না সেটি দেখে বড় বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করবে না, এটাই স্বাভাবিক। এই সরকার আর কতদিন ক্ষমতায় থাকবে তা কেউ বলতে পারছে না।
অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময় পুঁজিবাজারে নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্তিতে কারসাজি হলেও তখনকার নিয়ন্ত্রণ কমিশন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এখন এসব কোম্পানির প্রকৃত অবস্থা সামনে আসার পর সেগুলোর শেয়ারের দাম পড়ে গেছে। অন্যদিকে ভালো কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দামও প্রতিনিয়ত কমছে।
কমিশন সূত্র জানায়, কোম্পানি তালিকাভুক্তি থেকে শুরু করে পুঁজিবাজারে বিভিন্ন কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিগত কমিশনের সময় অভিযোগ দাখিল করা হয়। কিন্তু ওই কমিশন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের একজন কর্মকর্তা বলেন, বর্তমান কমিশন আগের অভিযোগের বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ায় বাজারে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। নতুন করে বড় বিনিয়োগকারীরা আর আসছে না। আগে যারা বিনিয়োগ করেছিলেন তারাও সরে যাচ্ছেন। বিনিয়োগকারীদের মনে ভয় ধরেছে। বাজারে তার প্রভাব পড়েছে। আগে বাজার চাঙা করে নিয়ন্ত্রণ কমিশন এসবে হাত দিলে ভালো হতো।
এরআগে, রাশেদ মাকসুদের অপসারণ দাবিতে দীর্ঘদিন ঘরে আন্দোলন করে আসছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বহু বার প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। রাশেদ কমিশনে আস্থা না পেয়ে তাঁর পদত্যাগের দাবিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কার্যালয়ের মূল গেটে তালা ঝুলিয়ে দেয় বিনিয়োগকারীরা। এছাড়াও, তার অপসারণের দাবিতে কফিন ও কাফন মিছিল করেছে ক্ষতিগ্রস্ত বিক্ষুদ্ধ বিনিয়োগকারীরা।
এসএম
পুঁজিবাজার
ডিএসইতে পিই রেশিও কমেছে ৩.৭১ শতাংশ

বিদায়ী সপ্তাহে (২৪ মে-২৯ মে) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) ৩ দশমিক ৭১ শতাংশ কমেছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, বিদায়ী সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল ৯ দশমিক ১৭ পয়েন্টে। আর সপ্তাহ শেষে তা অবস্থান করছে ৮ দশমিক ৮৩ পয়েন্টে। ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর পিই রেশিও কমেছে ০ দশমিক ০৩ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ২৩ শতাংশ।
এসএম