Connect with us

মত দ্বিমত

জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠনের প্রস্তাব: দুই প্রজন্মের নেতৃত্বে নতুন স্বপ্ন

Published

on

ঢাকা ব্যাংক

বাংলাদেশ আজ একটি কঠিন সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। দলে দলে বিভক্ত নেতৃত্ব, আত্মসাৎ করা গণতন্ত্র, দুর্নীতির অতল গহ্বর—সবকিছু মিলিয়ে রাষ্ট্রের অস্তিত্বই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। এমন মুহূর্তে প্রয়োজন একটি সাহসী, গ্রহণযোগ্য ও ঐতিহাসিক রূপরেখা—যা আমাদের জাতিকে আবার ঘুরে দাঁড়ানোর পথ দেখাবে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির নেতৃত্ব প্রশ্নবিদ্ধ। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এখন কার্যত দলে কোণঠাসা, বিপরীতে মাঠ পর্যায়ে কর্তৃত্ব দখল করেছে এমন এক সিনিয়র নেতা চক্র যারা তারেক রহমানের আদর্শ বা নেতৃত্বকে বিশ্বাস করে না। এই চক্রের সঙ্গে মিশে আছে ভারতের ছায়া, হানিট্র্যাপ এবং আওয়ামী শাসনামলের সুযোগ-সুবিধা গ্রহীতারা। মাঠ পর্যায়ে এই নেতারা তারেক রহমানের অভিপ্রায়, ভাষণ, পরিকল্পনা—কোনোটিই বাস্তবায়ন করছে না। বরং তাদের উগ্রতা, দম্ভ ও কূটকৌশলে আজ বিএনপি পরিণত হয়েছে এক বি-টিমে, আওয়ামী লীগের বিকল্প মুখোশধারী শক্তিতে। জাতি দেখছে, বোঝছে—এবং হতাশ।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

তবে হতাশার মাঝেই দেখা যাচ্ছে নতুন আশার আলোকছটা—জাতীয় সরকার গঠনের একটি ঐতিহাসিক প্রস্তাব। রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত নাগরিক মতবিনিময় সভায় প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে উত্থাপন করা হয়েছে এই প্রস্তাব—অন্তর্বর্তীকালীন সর্বদলীয় জাতীয় সরকার গঠনের রূপরেখা, যার মূল কাণ্ডারি হবেন রাষ্ট্রপতি হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তারেক রহমান।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

এই সরকারের মেয়াদসীমা সর্বোচ্চ ১৮ থেকে ২৪ মাস। এই সময়ের মধ্যে কোনো জাতীয় নির্বাচন হবে না। বরং চলবে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রস্তুতি, প্রশাসন ও রাজনীতির depoliticization এবং গণতান্ত্রিক কাঠামো পুনর্গঠন। এই সরকারের রাষ্ট্রপতি হবেন ড. ইউনূস—একজন নিরপেক্ষ, আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত, সাহসী ও মানবিক ব্যক্তিত্ব। আর প্রধানমন্ত্রী হবেন তারেক রহমান—জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক উত্তরসূরি, জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রতীক এবং জনগণের প্রত্যাশার কেন্দ্রবিন্দু।

এই অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন কাঠামো হবে সর্বদলীয়, যেখানে থাকবে বড় রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সমাজ, সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী ও তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব। মন্ত্রী পরিষদে দায়িত্ব ভাগাভাগি হবে প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী পর্যায়ে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির সঙ্গে উপ-রাষ্ট্রপতি মিলেই একটি ভারসাম্যপূর্ণ, সমন্বিত প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে তুলবে। সরকারের মূল দায়িত্ব হবে দুর্নীতি দমন, প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠা, বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং একটি জনগণের সংবিধান রচনার প্রক্রিয়া শুরু করা।

এই প্রেক্ষাপটে জামাতসহ দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোও গুরুত্বপূর্ণ। তারা দেশের পরিকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ চিন্তা ও কাজ করে আসছে। তাদের সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা ও ভূমিকা অবশ্যই মান্যতা পাওয়ার যোগ্য এবং এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরিচালনায় তাদের উপস্থিতি প্রয়োজন। জাতীয় পুনর্গঠন কোনো একক গোষ্ঠীর দ্বারা সম্ভব নয়—সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে সংলাপে এনে দেশের জন্য কাজ করতে হবে।

এনসিপি ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশের মানুষ স্বৈরাচারী শাসন থেকে মুক্তি পেয়েছে। তাদের এই আন্দোলন ও সংগ্রাম নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি স্থাপনে এক অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। তাদের অভিজ্ঞতা ও রাজনৈতিক ত্যাগকে রাষ্ট্র গঠনে কাজে লাগানো এখন সময়ের দাবি। এনসিপি-সহ সকল জাতীয়তাবাদী, ইসলামী ও গণমুখী ধারার প্রতিনিধিত্ব অন্তর্ভুক্ত করেই হতে হবে একটি সুষ্ঠু, স্থিতিশীল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

এই সংকটপূর্ণ সময়ে প্রতিরক্ষা বাহিনীর ভূমিকা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। সংবিধান রক্ষা, জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং জনস্বার্থে নিরপেক্ষভাবে অবস্থান নেওয়া—এটাই তাদের কর্তব্য। তারা রাজনৈতিক বিবেচনার ঊর্ধ্বে থেকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করবে, যাতে অন্তর্বর্তী সরকার নিঃশঙ্কভাবে জনগণের কল্যাণে কাজ করতে পারে। সামরিক বাহিনীকে একটি জবাবদিহিমূলক, সংবিধাননিষ্ঠ, সুশৃঙ্খল ও শান্তির বাহিনী হিসেবে জাতীয় ঐক্যের রক্ষাকবচ হতে হবে।

এই মুহূর্তে আমাদের রাষ্ট্রকে প্রয়োজন এমন এক কাঠামো, যেখানে দলীয় ছত্রছায়ায় চলা দুর্নীতিবাজ প্রশাসনের অবসান ঘটানো যাবে। যেখানে গণতন্ত্র কেবল ভোটাধিকারেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং নীতি, নৈতিকতা ও জবাবদিহিতার ওপর প্রতিষ্ঠিত হবে। যেখানে রাজনীতি মানে হবে শোষণ নয়, সেবা। এই লক্ষ্যেই এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের ডাক দেওয়া হচ্ছে।

আজকের প্রজন্ম দুর্নীতির ভারে নুয়ে পড়া রাষ্ট্র চায় না। তারা চায় সততা, উদ্ভাবন, ন্যায়বিচার আর আত্মমর্যাদার বাংলাদেশ। এই নতুন প্রজন্মের জন্য, একটি নিরপেক্ষ, স্বল্পমেয়াদী এবং সর্বদলীয় অন্তর্বর্তী সরকারই একমাত্র কার্যকর পথ হতে পারে।

তারেক রহমানের প্রতি আহ্বান—আপনি মায়ের পথ অনুসরণ করুন। দৃঢ় হোন। যারা আপনার বিশ্বাস ভেঙেছে, তাদের ঝেঁটিয়ে বিদায় দিন। দল পুনর্গঠনে সাহসী হোন। জাতীয় ঐক্যের নতুন ভিত্তি তৈরি করুন। জাতি আজও আপনার দিকে তাকিয়ে। আপনি ফিরে আসুন, রাষ্ট্র গড়ার এই ঐতিহাসিক দায়িত্বে নেতৃত্ব দিন।

এটি কেবল সময়ের ডাক নয়, এটি ইতিহাসের অনিবার্য বাস্তবতা। যদি জাতি আবার জেগে উঠে, তবে তা হবে এই অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্য দিয়েই—যার রাষ্ট্রপতি হবেন ড. ইউনূস, প্রধানমন্ত্রী তারেক রহমান। এই রাষ্ট্র হবে জনগণের, ভবিষ্যতের, নতুন প্রজন্মের। এই প্রস্তাব বাস্তবায়নে নাগরিক সমাজ, ছাত্র-জনতা ও দেশপ্রেমিক প্রশাসনিক অংশের একটি ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ এখন সময়ের দাবি।

লেখক: রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মত দ্বিমত

বিদায় নাডাল: এক কিংবদন্তির শেষ অধ্যায়ে হৃদয়ের র‍্যাকেট হাতে কিছু কথা

Published

on

ঢাকা ব্যাংক

ব্যক্তিগত সংযুক্তি: হৃদয়ের রকেটে বাজে টেনিসের সুর
আমি নিজে কোনো পেশাদার খেলোয়াড় নই। তবে খেলার সঙ্গে আমার প্রেম বহুদিনের। ছোটবেলায় ফুটবল আর ব্যাডমিন্টনে কাটিয়েছি বিকেলগুলো—বন্ধুদের সঙ্গে গলির মাঠে ঘাম ঝরানো সেই সময়গুলো ছিল সরল আনন্দের এক নাম। জীবনের মোড় ঘুরে যখন সুইডেনে পা রাখি, তখন টেনিসের প্রতি আমার আগ্রহ যেন অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে। আর হবে নাই বা কেন—বিশ্ব ক্রীড়াজগতে সুইডেন তো এক বিস্ময়, এক টেনিস-জাতি। বোর্গ থেকে শুরু করে এডবার্গ—এই দেশকে টেনিসের ‘মক্কা’ বলা হয়, সার্থকভাবেই।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

আমি একজন সুইডিশ প্রবাসী ক্রীড়াপ্রেমিক ও অভিভাবক, আমি টেনিস জগতে নিজের সন্তানদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে খেলাটির সঙ্গে গড়ে তুলেছি গভীর সম্পর্ক। আমার এই ভালোবাসা যেন আমার সন্তানদের মধ্যেও রক্তের সাথে বইতে থাকে। আমার ছেলে ও মেয়ে—দুজনেই সুইডেনের পতাকা বুকে নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে লড়েছে। দেশ, কোর্ট, টুর্নামেন্ট, প্রশিক্ষণ আর প্রতিযোগিতার ভেতর দিয়ে তারা নিজেরাই হয়ে উঠেছে টেনিস-যোদ্ধা। শত শত ট্রফি, হাজারো ম্যাচ—সবই যেন আমাদের পরিবারের জীবনরেখায় লেখা এক ক্রীড়া-সাহিত্য।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

টেনিসকে আমি কেবল খেলা হিসেবে দেখিনি, দেখেছি এক ধরণের দর্শন, এক জীবনভাবনা হিসেবে। বিশ্বমানের খেলোয়াড়দের কাছ থেকে খুব কাছ থেকে দেখেছি, কথা বলেছি, কিছু অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করেছি—সেইসব দিনগুলো আমাকে শেখায়: খেলার চেয়েও বড় কিছু হচ্ছে মনোবল, সম্মান ও আত্মত্যাগ।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

তবে জীবনের পথ সবসময় মসৃণ নয়। আমার ছেলে জনাথনের হঠাৎ করে পাওয়া একটি গুরুতর ইনজুরি আমাদের পরিবারে দীর্ঘ এক নীরবতা এনে দেয়। কোর্ট, র‍্যাকেট, সেই যুদ্ধ—সব যেন থমকে যায়। তবে থেমে যায় না হৃদয়ের স্পন্দন। প্রতিটি ম্যাচ, প্রতিটি মুহূর্ত মনে পড়ে ক্ষণে ক্ষণে।

আজ, জনাথান আবার হাতে তুলে নিয়েছে র‍্যাকেট। চলছে নতুন প্রস্তুতি। নিজেকে ফিরে পাওয়ার লড়াই। চোখে আগুন, মনে দৃঢ়তা—প্রিপারেশন, ডেডিকেশন এবং মোটিভেশন মিলিয়ে যেন এক নতুন সূচনা। ঠিক এই সময়েই, আরেকজন কিংবদন্তির বিদায় দেখতে বসেছি।

রাফায়েল নাডাল, যিনি ‘ক্লে কোর্টের রাজা থেকে অনুপ্রেরণার প্রতীক’ নামে পরিচিত। ২২টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয় করে টেনিস ইতিহাসে নিজের স্থান নিশ্চিত করেছেন। তার মধ্যে ১৪টি এসেছে ফ্রেঞ্চ ওপেনে, যা একটি অনন্য রেকর্ড। তার খেলার প্রতি নিষ্ঠা, প্রতিপক্ষের প্রতি সম্মান এবং নম্রতা তাকে কেবল একজন ক্রীড়াবিদ নয়, বরং একজন মানবিক আদর্শে পরিণত করেছে। ২০২৫ সালের রোলাঁ গারোসের প্রথম দিন, এক ঐতিহাসিক আবেগে ভেসেছিল ক্লে কোর্ট। রাফায়েল নাডাল—যিনি আগেই টেনিস থেকে অবসর নিয়েছেন—তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানানো হয় তাঁর ভালোবাসার কোর্টেই। ১৪ বারের চ্যাম্পিয়নকে ঘিরে কান্নাভেজা বিদায়ী মুহূর্ত যেন গলে গিয়েছিল কোটি ভক্তের হৃদয়ে। গোটা টেনিসবিশ্ব শোকাহত, আবেগে আলোড়িত।

বিদায়ের মুহূর্ত: নাডালের কণ্ঠে হৃদয়ের স্বর
ফ্রান্সের রোলাঁ গারোস টেনিস টুর্নামেন্ট (ফ্রেঞ্চ ওপেন) ঐতিহাসিক কোর্টে যখন নাডাল বিদায় জানালেন, তখন কেবল একটি প্রতিযোগিতা নয়, এক দিগন্তই যেন অস্ত গেল। তিনি বললেন, ‘আমি শান্তি নিয়ে বিদায় নিচ্ছি, কারণ আমি জানি আমি আমার সর্বোচ্চ দিয়েছি।’

তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহানুভূতির সাথে তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমরা কেবল প্রতিযোগী ছিলাম না, একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল সহযাত্রী ছিলাম।’ এই কথাগুলো যেন নতুন প্রজন্মকে জানিয়ে দিল—সফলতা কেবল ট্রফিতে নয়, চরিত্রেও। ‘আমাদের সম্পর্ক কেবল প্রতিযোগিতার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না; আমরা একে অপরকে সম্মান করতাম এবং একসঙ্গে বেড়ে উঠেছি।’

এই প্রতিটি শব্দ যেন ক্রীড়া জগতের নৈতিকতা ও সৌন্দর্যের প্রতিচ্ছবি।
নাডাল শুধু এক খেলোয়াড় নন, তিনি অধ্যবসায়ের প্রতীক। ইনজুরি, ব্যথা, প্রতিপক্ষ—সব বাধা পেরিয়ে তিনি খেলেছেন হৃদয় দিয়ে। বারবার ফিরে এসেছেন, জিতেছেন, কখনো হেরেছেন, কিন্তু কখনো হেরে যাননি।

ভালোবাসার চোখে বিদায়: একটি ইতিহাসঘন মুহূর্ত
নাডালকে গোটা বিশ্বের টেনিস ভক্তরা বিদায় জানিয়েছেন হৃদয়ের অন্তরস্থল থেকে, তবে সবচেয়ে আবেগময় ও ঐতিহাসিক মুহূর্তটি ছিল রোলাঁ গারোসের ক্লে কোর্টে সময়ের সেরা তিন তারকা—নোভাক জোকোভিচ, রজার ফেদেরার এবং অ্যান্ডি মারে—এর সরাসরি উপস্থিতি। এত প্রতিযোগিতা, এত ফাইট, জয়-পরাজয়ের শত শত অধ্যায়—তারপরও আজকের এই বিদায়ের দিনে তাদের চোখে ছিল জলের ঝিলিক, মুখে ছিল ভালোবাসার মৃদু হাসি। তাদের আন্তরিক আলিঙ্গন আর চোখের ভাষা যেন বলে দেয়, খেলার চেয়েও বড় কিছু আছে—মানবতা, শ্রদ্ধা আর বন্ধুত্ব।

এই ভালোবাসার দৃশ্য যেন ছুঁয়ে যাক যুদ্ধবিধ্বস্ত মাটি, রক্তমাখা বুলেট আর বিভক্তির দেয়াল। ছুয়ে যাক ধর্ম-বর্ণ-রাজনীতির বিভেদ। মুছে যাক অতীতের হিংস্রতা আর ফিরে আসুক শান্তির এক রোদেলা সকাল—সবার হৃদয়ে। আমি কেনো মাঝে মাঝে এমন মানুষদের কথা লিখি? কারণ নাডাল, ফেডেরার বা জোকোভিচ কেবল ক্রীড়াবিদ নন—তারা মূল্যবোধ, আত্মমর্যাদা ও নৈতিকতার জীবন্ত উদাহরণ। রোলাঁ গারোঁতে টেসলার বিজ্ঞাপন ফিরিয়ে দিয়ে নাদাল আমাদের মনে করিয়ে দিলেন—সবকিছু টাকায় কেনা যায় না। “আমি চাই না আমার সবচেয়ে বিশেষ দিনটি অর্থের বিনিময়ে বিক্রি হোক”—এই একটিমাত্র বাক্যে তিনি যা বললেন, তা অনেক রাজনীতিবিদও আজ বলেন না। dignity মানে শুধু না বলা নয়, নিজেকে চিনে নিজের মূল্যে অটল থাকা। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এই নৈতিক সাহসিকতা আজ আমাদের রাজনীতিতে প্রায় অনুপস্থিত। আহা, যদি আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্বেও এমন সত্য বলার সাহস থাকত!

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নাডাল: একটি বিকল্প দৃষ্টিভঙ্গি
বাংলাদেশে যেখানে প্রতিনিয়ত আলোচনা হয় দুর্নীতি, শাসনব্যবস্থার ব্যর্থতা, লুটপাট আর রাজনৈতিক বঞ্চনার গল্প—সেখানে নাডালের জীবনের গল্প হতে পারে এক বিকল্প আলোকবর্তিকা। টেনিসের কোর্ট থেকে উঠে আসা এক শিক্ষা—কঠোর পরিশ্রম, শৃঙ্খলা, শ্রদ্ধা, সংযম এবং ভালোবাসার শক্তি দিয়ে কীভাবে একটি মানুষ নিজেকে বিশ্ববাসীর কাছে অনুপ্রেরণায় পরিণত করতে পারে।

বিশ্ববিখ্যাত ফুটবলার Pelé-র একটি বাণী এ প্রসঙ্গে মনে পড়ে যায়: ‘Success is no accident. It is hard work, perseverance, learning, studying, sacrifice and most of all, love of what you are doing or learning to do.’ — Pelé (সাফল্য কোনো দুর্ঘটনা নয়। এটি কঠোর পরিশ্রম, ধৈর্য, শেখা, পড়াশোনা, আত্মত্যাগ এবং সর্বোপরি, আপনি যা করছেন বা যা শিখছেন তা ভালোবাসার ফলাফল।)

নাডাল তার জীবন দিয়ে এই কথাগুলোর প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। তাই আজ যখন তিনি বিদায় নিচ্ছেন, আমি শুধু একজন দর্শক হিসেবে নয়—একজন ক্রীড়ামনস্ক বাবা হিসেবে, একজন সুইডিশ-প্রবাসী অভিভাবক হিসেবে, আর একজন মানবিক চিন্তাবিদ হিসেবে আবেগে আপ্লুত হয়ে লিখতে বসেছি।

শেষ কথা: এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মের দিকে
রাফায়েল নাডাল তার বিদায় দিয়ে কেবল নিজের অধ্যায়ের সমাপ্তি টানলেন না, আমাদের জন্য রেখে গেলেন এক জীবন্ত শিক্ষা—কোনো লক্ষ্যই অসম্ভব নয়, যদি থাকে অন্তরের ভালোবাসা, পরিশ্রমের ইচ্ছা এবং মানুষের প্রতি সম্মান।

আমার ছেলে আজ আবার টেনিসের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে, নতুন দিনের জন্য। আমিও প্রস্তুত হচ্ছি—এই খেলার সৌন্দর্যকে আরও ভালোভাবে উপলব্ধি করতে, নতুন করে ভালোবাসতে। আজকের দিনে বিদায় জানাচ্ছি এক কিংবদন্তিকে, আর বরণ করে নিচ্ছি ভবিষ্যতের সম্ভাবনাকে—হৃদয় দিয়ে।

রহমান মৃধা, গবেষক ও লেখক, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন।

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

বারোটা বেজে গেছে, দায়িত্ব ছেড়ে দিন

Published

on

ঢাকা ব্যাংক

নাতির বয়সি উপদেষ্টাদের দিয়ে অভিজ্ঞ সরকার হয় না—এই বক্তব্য ইতিহাসের প্রতি অবমাননা, তরুণদের প্রতি ঘৃণা। সম্প্রতি একজন জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদের মন্তব্য— ‘নাতির বয়সি উপদেষ্টাদের দিয়ে অভিজ্ঞ সরকার হয় না’— সমাজের বিভিন্ন স্তরে এক গভীর আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে এমন বক্তব্য শুধু তরুণদের নেতৃত্বের যোগ্যতাকে খাটো করে দেখায় না, বরং এটি ইতিহাস, ত্যাগ এবং ভবিষ্যতের সম্ভাবনার মুখে এক নির্লজ্জ চপেটাঘাত।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

ইতিহাস কি বলে?
বাংলাদেশের ইতিহাস মূলত তরুণদের হাত ধরেই রচিত হয়েছে। যাঁরা আজ ‘নাতির বয়সি’ বলে তুচ্ছ করছেন, তারাই অতীতে যুগান্তকারী আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি ছিলেন।
•১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন: স্কুল-কলেজের ছাত্ররাই রাজপথে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। তাদের ‘অভিজ্ঞতা’ ছিল না, ছিল আদর্শ।
•১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ: অসংখ্য তরুণ অস্ত্র হাতে দেশ রক্ষায় লড়েছে। শিশু মুক্তিযোদ্ধারাও জীবন বাজি রেখে রণাঙ্গনে নেমেছিল।
•১৯৯০ সালের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন: তরুণ প্রজন্মের গণজাগরণই স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

তাদের তখন কেউ ‘অভিজ্ঞ’ সার্টিফিকেট দেয়নি। তারা নিজেরাই নিজের সামর্থ্য প্রমাণ করেছেন রক্ত আর ত্যাগ দিয়ে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

একজন শিশু মুক্তিযোদ্ধার আত্মপ্রকাশ
এই বক্তব্যের প্রতিবাদে, আমি নিজেই একজন শিশু মুক্তিযোদ্ধা। কই কেউ তো ১৯৭১-এ আমাকে তখন বলেনি— ‘যুদ্ধে যেয়ো না, স্কুলে যাও!’ আজ ২০২৪-এর নতুন প্রজন্মের তরুণ-তরুণীদের জ্ঞান-যোগ্যতা, বিশ্বদর্শন, প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্লেষণ—সবকিছুকে অস্বীকার করে ‘নাতির বয়সি’ বলে উপেক্ষা করা কি সেই মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধাচরণ নয়? এই প্রশ্ন শুধু একটি ব্যক্তিগত ক্ষোভ নয়—এটি একটি ঐতিহাসিক ও নৈতিক দাবি, যা গোটা জাতির পক্ষ থেকে উঠে এসেছে।

বিশ্বপরিপ্রেক্ষিত
বিশ্বজুড়ে তরুণ নেতৃত্ব ইতিহাস বদলে দিয়েছে।
•সানা মারিন (ফিনল্যান্ড) ৩৪ বছর বয়সে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন।
•জাস্টিন ট্রুডো (কানাডা) ও ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ (ফ্রান্স) তরুণ বয়সেই নিজেদের যোগ্যতা দিয়ে রাষ্ট্র চালাচ্ছেন।
তাদের কেউ ‘নাতির বয়সি’ ছিল না—তারা ছিল যথার্থ নেতৃত্বের প্রতিচ্ছবি।

দেখেছেন সামাজিক প্রতিক্রিয়ায় তীব্র প্রতিঘাত?
এই বিতর্কিত বক্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসংখ্য প্রতিবাদ উঠে এসেছে। কিছু উল্লেখযোগ্য মন্তব্য:
•তরুণদের অবদান অস্বীকার করা মানে ইতিহাসকে অস্বীকার করা।
•বয়স দিয়ে অভিজ্ঞতা মাপা যায় না; নেতৃত্ব আসে চেতনা ও দক্ষতা থেকে।
•এই বক্তব্য তরুণদের মনোবল ভেঙে দেওয়ার একটি অপচেষ্টা।

এই প্রতিক্রিয়াগুলো স্পষ্ট করে দেয়—জনগণ এমন ধারার অবজ্ঞাপূর্ণ রাজনীতিকে আর গ্রহণ করতে প্রস্তুত নয়।

বিএনপির পতনের ইঙ্গিত?
এমন অপমানজনক বক্তব্যের মাধ্যমে বিএনপি কি নিজেদের রাজনৈতিক পতনের ঘণ্টা বাজাতে শুরু করেছে?
সালাউদ্দিন, রিজভীসহ একদল নেতাকর্মীর অযাচিত ও সময়োচিত অবস্থানহীন কথাবার্তা বিএনপিকে জনবিচ্ছিন্ন করে তুলছে। অন্যদিকে, তারেক রহমান লন্ডনে বসে লংডিস্টান্সে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও নির্দেশনার মাধ্যমে দল পরিচালনার যে অভ্যাস গড়ে তুলেছেন—তা দল নয়, দেশকেই ভয়ংকর এক অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। কারণ যাদের তিনি ‘সাহসী নেতা’ বলছেন, বাস্তবে তাদের অনেকেই অতীতে সন্ত্রাস ও সহিংসতার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। বিশ্বাস না হলে নিরপেক্ষ তদন্ত করুন এবং প্রমাণ পাওয়া গেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।

বিএনপির রাজনীতি এখন প্রশ্নবিদ্ধ—নৈতিক, সাংগঠনিক এবং কৌশলগত দিক থেকে। আপনিও কি আমার মত ভাবছেন, নাকি অনেকটা বদলে গেছেন? খুব জানতে ইচ্ছে করে।

বিএনপি কি চায় বাঁচতে? তাহলে গ্রহণ করতে হবে বাস্তবতা
যদি বিএনপি সত্যিই জনগণের আস্থা ফিরে পেতে চায়, তবে কৌশলগত ও আদর্শিকভাবে তাকে মৌলিক পরিবর্তনের পথে হাঁটতেই হবে। তা না হলে এই দল এক সময় শুধু ইতিহাসের বইতেই রয়ে যাবে।

প্রথমত, বিএনপিকে জিয়াউর রহমানের সেই মূল আদর্শে ফিরে যেতে হবে—যেখানে আত্মনির্ভরতা, রাষ্ট্রচিন্তা, জাতীয় স্বার্থ, এবং জনগণের শক্তিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছিল। দলকে পুনর্গঠনের কেন্দ্রে থাকতে হবে জনগণকেই—উপদেষ্টা, কর্মী বা বংশানুক্রমিক নেতৃত্ব নয়। জনগণ হতে হবে বিএনপির প্রাণকেন্দ্র।

দ্বিতীয়ত, তারেক রহমানকে দীর্ঘকাল প্রবাসে বসে ‘নির্দেশনা দিয়ে রাজনীতি’ বন্ধ করতে হবে। তাকে অনতিবিলম্বে দেশে ফিরতে হবে, মাঠে নামতে হবে, জনগণের চোখে চোখ রেখে তাদের আস্থা অর্জন করতে হবে। শুধুমাত্র বক্তৃতা আর হুমকি নয়, দরকার বিশ্বাসযোগ্যতা ও সাহসের রাজনীতি।

তৃতীয়ত, নতুন প্রজন্মকে একঘরে করে নয়—তাদের হাত ধরেই ভবিষ্যতের জন্য রাজনৈতিক কর্মসূচি সাজাতে হবে। আর এই প্রক্রিয়ায় পুরাতনদের বিদায় অনিবার্য। শুধু বয়স নয়, সময়, পরিস্থিতি এবং যুগবোধ বিবেচনায় তাদের অবদানকে সম্মান জানিয়ে অবসর নিতে হবে। বাস্তবতা হলো—৫৪ বছর ধরে যারা পারেনি, তারা এই বৃদ্ধ বয়সে পারবে—এই ধারণা শুধু অলীকই নয়, আত্মপ্রবঞ্চনাও।

বারোটা বাজে একবার—তাদের জন্য তা বাজছে দীর্ঘকাল। এখন সময়, সেই শব্দ শুনে স্থান ছেড়ে দেওয়ার।

সবশেষে বলতে চাই, বিএনপির সমস্যার সমাধানই কিন্তু দেশের সর্বাঙ্গীন সমাধান নয় বরং বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও সামাজিক পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল এবং বহুপ্রতিষ্ঠিত সমস্যা দ্বারা বিপর্যস্ত। দুর্নীতি, মতপ্রকাশের সংকট, প্রশাসনিক অবনতি, বিচারহীনতা, রাজনৈতিক সন্ত্রাস এবং নেতৃত্বহীনতা দেশের সর্বাঙ্গীন উন্নয়নের পথে গুরুতর বাধা সৃষ্টি করছে। রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে থাকা দুর্নীতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারে সাধারণ জনগণের বিশ্বাস হ্রাস পাচ্ছে, যা গণতন্ত্র ও শাসন ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত হুমকিস্বরূপ।

তবে এই সংকট থেকে উত্তরণের পথও রয়েছে। প্রয়োজন দৃঢ় রাজনৈতিক সংকল্প, স্বচ্ছ প্রশাসনিক সংস্কার, দুর্নীতি দমনে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। নতুন ও যোগ্য নেতৃত্বের বিকাশ, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের স্বাধীনতা দেশের উন্নয়নকে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে পারে।

বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশের এই প্রতিবেদন এক সুস্পষ্ট আহ্বান—সমাজের প্রতিটি স্তরে প্রকৃত সংস্কার ছাড়া দেশের প্রগতি সম্ভব নয়। এটি শুধুমাত্র রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্ব নয়, বরং প্রতিটি নাগরিকের অধিকার ও কর্তব্য। এই প্রতিবেদন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশপ্রেমিক এবং সচেতন নাগরিকেরা সম্মিলিত উদ্যোগে পরিবর্তনের বাণী ছড়িয়ে দেবেন, তবেই বাংলাদেশকে একটি মুক্ত, সমৃদ্ধ এবং স্বচ্ছ দেশ হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে।

লেখক: রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

ব্যাংক খাতের সংকট উত্তরণের দশ উপায়

Published

on

ঢাকা ব্যাংক

সম্প্রতি বড় অংকের মূলধন ঘাটতির কারণে নিজেদের অ্যাকাউন্ট ফাইনাল করতে পারছে না ১৯টি ব্যাংক। ফলে বড় ধরণের বেকায়দায় পড়েছে ব্যাংকগুলো। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বিপ্লবের পর তারল্য সংকটে পড়ে এসব ব্যাংক। গ্রাহকদের দৈনন্দিন চাহিদা পূরণের অবস্থাও ছিলনা কোন কোন ব্যাংকের। নানা রকম গুজবের কারণে কোন কোন ব্যাংকে গ্রাহকরা নিজেদের জমানো টাকা তুলতে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। ফলে এ সংকট আরো তীব্র আকার ধারণ করে। কেন্দ্রীয় ব্যংক তারল্য সুবিধা দিয়ে এসব ব্যাংককে সহযোগিতা দিলেও মূলধন ঘাটতির সমস্যা সমাধান হয়নি।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

পালাতক আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতার অপব্যবহার, অনিয়ম ও দুর্ণীতির মাধ্যমে ব্যাংক থেকে সীমা লঙ্ঘন করে অতিরিক্ত বিনিয়োগ গ্রহণ, বেনামী বিনিয়োগ ও কোন ডকুমেন্ট বিহীন অর্থ লুটের কারণেই সৃষ্টি হয় এমন বিপর্যয়কর অবস্থা। এ লেখায় ব্যাংক খাতের সমস্যার কারণ ও তা প্রতিকারের কিছু উপায় আলোচনা করব।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ব্যংক খাত ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে। আশির দশকে বেশ কিছু বেসরকারি ব্যাংক গড়ে ওঠায় ব্যাংক খাত উন্নত হতে থকে। গড়ে উঠতে থাকে ছোট-বড় নানান শিল্প কারখানা। বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে থাকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার পথে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

২০০৮ সালের পর দেশের অর্থনীতির উপর শ্যেন দৃষ্টি পড়ে অর্থলোলুপ গোষ্ঠীর। পতিত স্বৈরাচারের মদদপুষ্ট একটি শ্রেণী অর্থনীতি ধ্বংসের নীলনকশা আঁকতে থাকে। তারা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দখল করে একের পর এক ব্যাংক। দখল করে নেয় বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় ও সুশৃঙ্খল ব্যাংক হিসেবে পরিচিত ইসলামী ব্যাংকসহ বেশ কটি ব্যাংক। তাদের ব্যাংক পরিচালনার যোগ্যতা বা অভিজ্ঞতার বিষয় বিবেচনা করা হয় না। রাতারাতি ব্যাংকের মালিক বনে গিয়ে তারা আকর্ষণীয় মুনাফার প্রলোভন দিয়ে ব্যাংকে আমানত রাখতে সাধারণ মানুষকে প্রলুব্ধ করে। এক পর্যায়ে জনগণের জমানো অর্থ নিয়ম ভঙ্গ করে তারা নামে-বেনামে ঋণ গ্রহণ করতে শুরু করে।

আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এক ব্যাংকের পরিচালক অন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়। পরিচালকরা পরস্পরকে সহযোগিতা করে অন্য ব্যাংক থেকে ঋণ পাইয়ে দিতে। এভাবে ব্যাংক খাত থেকে নিয়ম বহির্ভুতভাবে তারা বের করে নেয় ৪৫ হাজার কোটি টাকা। (২৭ আগস্ট ২০২৪, দ্যা ডেইলি স্টার)। এসব পরিচালকদের বেশিরভাগই রাজনৈতিক আশির্বাদপুষ্ট। ব্যবসায়িক হিসাব, আর্থিক পরিস্থিতি ও ব্যাংকিং নীতি বিবেচনায় নিলে এই ব্যবসায়িক গ্রুপগুলোর বেশিরভাগই ঋণ পাওয়ার যোগ্য ছিল না। তাই তারা একে অপরকে ঋণ দেয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো ব্যাংকের পরিচালক তার নিজ ব্যাংক থেকে নির্দিষ্ট অংকের বেশি ঋণ নিতে পারেন না। এই নিয়ম ফাঁকি দিতেই তারা নিজের ব্যাংক থেকে অপরকে ঋণ দেওয়ার ধূর্ত পদ্ধতি বেছে নেন।

এছাড়া বিভিন্ন নামে বেনামে কোম্পানী খুলে ভুয়া ঋণ গ্রহণ করেছে অনেক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী এবং ব্যাংক পরিচালক। তারা গড়ে তুলেছে অদৃশ্য মাফিয়া চক্র। বিভিন্ন প্রলোভন ও টোপ দিয়ে ব্যাংকের অসাধু কিছু কর্মকর্তাকে হাত করে তারা ব্যাংক থেকে বের করে নিয়েছে হাজার হাজার কোটি টাকা। যেসব ব্যাংকার তাদের অনিয়মের বিরোধিতা করেছে তাদেরকে ব্যাংক থেকে বিতাড়ন, পুলিশি হয়রানিসহ নানানভাবে হয়রানি করা হয়েছে। এসব লুটেরা গোষ্ঠী ব্যাংক খাত থেকে বের করে নিয়েছে ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহযোগিতায় এসব ঘটনা ঘটেছে। (যুগান্তর ১৩ আগস্ট ২০২৪)

এর বাইরে খেলাপী ঋণ ব্যাংক খাতের গলার কাটা। পরিচালকদের এই বড় ধরণের অনিয়মের পাশাপাশি ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংক খাতে খেলাপী ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩.৪৫ লাখ কোটি টাকা যা ব্যাংক খাতের মোট ঋণের ২০.২০ শতাংশ (বাংলাট্রিবিউনডটকম ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫)।

ব্যাংক খাত থেকে বের করে নেয়া এসব ঋণ ও খেলাপী ঋণের বেশিরভাগই পাচার হয়েছে দেশের বাইরে। ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত স্বৈরাচার আওয়ামীলীগ সরকারের নেতা ও তাদের দোসর ব্যবসায়ীরা ২৮ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। (প্রথম আলো ২ ডিসেম্বর ২০২৪)। অর্থাৎ বছরে গড়ে ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। ব্যাংক থেকে পুনঃপুন অর্থ লোপাটের এসব খবরে গ্রাহকদের মনে দানা বেঁধেছে ভয় এবং হতাশা। ফলে তারা ব্যাংকে জমানো টাকা নিজেদের হাতে সংরক্ষণ করছেন। একদিকে অর্থ পাচার ও খেলাপী ঋণ অন্যদিকে আতঙ্কিত গ্রাহকদের টাকা উত্তোলনের ফলে ব্যাংক খাতে দেখা দিয়েছে বড় ধরনের তারল্য সংকট।

পাঁচ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর নতুনভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা দেখতে পায় ব্যাংক খাত। আর্থিক খাতে সংস্কারের অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে একজন দক্ষ অর্থনীতিবিদকে গভর্নরের দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছেন। প্রতিটি বেদখল হওয়া ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙ্গে দেয়া হয়। গঠন করা হয় অন্তর্বর্তীকালীন নতুন পর্ষদ। এসব পর্ষদ কাজ করছে খাদের কিনারা থেকে ব্যাংকগুলোকে উদ্ধারের জন্য। ১৫ বছরের অপশাসন ও লুটপাটে ধ্বংসের দারপ্রান্তে ব্যাংক খাত। এ অবস্থা থেকে ব্যাংক খাতকে ফিরিয়ে আনতে এই দশটি উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে।

প্রথমত: ব্যাংকগুলোতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও অনুকূল কর্মপরিবেশ ফিরিয়ে আনতে অসাধু, অযোগ্য ও জাল সনদে চাকরি প্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারি অপসারণ করে সৎ, দক্ষ ও পেশাদার ব্যাংকারদের পদায়ন করলে গ্রাহকবান্ধব ব্যাংকিং সেবা প্রদান সহজ হবে।

দ্বিতীয়ত: যারা নামে বেনামে ব্যাংক থেকে অর্থ বের করে বিদেশে পাচার করেছে তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রশাসক বসিয়ে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত আয় থেকে ব্যাংকের অর্থ পরিশোধ করার ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার ব্যবস্থা করতে হবে।

তৃতীয়ত: রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় যারা অস্ত্রের মুখে ব্যাংক দখল করেছিল সেসব দখলদারদের সকল শেয়ার এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পদ রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় বিক্রি করার ব্যবস্থা করতে হবে। বিক্রয়লব্ধ অর্থ থেকে ব্যাংকের টাকা পরিশেধের ব্যবস্থা করতে হবে এবং প্রকৃত মালিকদের হাতে ব্যাংকগুলো ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

চতুর্থত: যেসব পরিচালক নিয়ম ভেঙে নিজ ব্যাংক এবং অন্য ব্যাংক থেকে নামে বেনামে বিনিয়োগ নিয়ে খেলাপী হয়েছেন তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে এবং তারা যে টাকা ব্যাংক থেকে নিয়েছে তা ফেরত আনার ব্যবস্থা করতে হবে।

পঞ্চমত: ব্যাংকগুলোতে ঋণ খেলাপীদের তালিকা তৈরি করে তা প্রকাশ করা এবং ইচ্ছাকৃত খেলাপীদের আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা করতে হবে।

ষষ্ঠত: যেসব ব্যাংকের টাকা অন্য ব্যাংকে আমানত (প্লেসমেন্ট) হিসেবে রাখা আছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় পাওনাদার ব্যাংককে এসব টাকা ফেরত দেয়ার দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সপ্তমত: দুর্নীতিবাজ এবং লুটেরাদের দোসর ব্যাংক কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

অষ্টম পদক্ষেপ হিসেবে ব্যংকগুলো থেকে কি পরিমাণ অর্থ লুট হয়েছে তার সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ করা এবং যারা এসব কাজে জাড়িত তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

নবম পদক্ষেপ হিসেবে লুটেরাদের নিষ্পেষণে যেসব ব্যাংক তারল্য সংকটে ভুগছে, ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সেই ব্যাংকগুলোকে পর্যাপ্ত তারল্য সরবরাহ করতে হবে। এবং দশম পদক্ষেপ হিসেব ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির অর্থ যেমন রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় লুট হয়েছে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এ ব্যাংকের ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ সুবিধা প্রদান করতে হবে যেন লুটেরাদের নিয়ে যাওয়া ভুয়া বিনিয়োগের বিপরীতে ব্যাংকের কোন প্রভিশন সংরক্ষণ করা না লাগে।

আগামীতে যেন কেউ এভাবে ব্যাংক দখল করতে না পারে সেজন্য ব্যাংকবান্ধব আইন প্রণয়ন করতে হবে। এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়ন সম্ভব হলে দেশের ব্যাংক খাত ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হবে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতি নতুন উচ্চতায় উন্নীত হবে বলে আশা করা যায়।

লেখক: রিয়াজ উদ্দিন, ব্যাংকার। riyazenglish@gmail.com

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

চট্টগ্রাম বন্দর নয়, লুটের রাজত্ব হারানোর আর্তনাদ!

Published

on

ঢাকা ব্যাংক

চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে আজ যারা উচ্চস্বরে চিৎকার করছেন, তারা আসলে বন্দরের পক্ষে দাঁড়াচ্ছেন না—তারা নিজেদের হারানো লুটপাটের রাজত্ব ফিরে পেতে হাহাকার করছেন। ‘বিদেশীদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে’—এই বাক্যটি শুধু একটা ঢাল, যেটার আড়ালে লুকিয়ে আছে এক ভয়ানক বাস্তবতা: দীর্ঘদিন ধরে কিছু ব্যবসায়ী-রাজনৈতিক গোষ্ঠী এই বন্দরকে নিজেদের ব্যক্তিগত সম্পদ বানিয়ে রেখেছিল। আজ যখন সেই সিন্ডিকেটের চাকা থেমে যাচ্ছে, তখনই উঠছে এই কৃত্রিম শোরগোল।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

তারা কি একবারও বলছে—এই বিদেশি প্রতিষ্ঠান কত বছরের জন্য আসছে? কী শর্তে? কত বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে? বাংলাদেশের লাভ কী? না, এই প্রশ্নগুলোর উত্তর তাদের মুখে নেই। কারণ সত্য প্রকাশ পেলে তাদের মুখোশ খুলে যাবে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃদস্পন্দন। এটি কোনো দলের নয়, কোনো গোষ্ঠীর নয়—এটি আমাদের সকলের। অথচ বহু বছর ধরে এই বন্দরে চলছে চরম অনিয়ম, ঘুষ, চাঁদাবাজি, সিন্ডিকেটবাজি। রাষ্ট্রীয় সম্পদকে ব্যক্তিগত মুনাফার যন্ত্রে পরিণত করে তোলা হয়েছে। যারা এই অব্যবস্থার অংশ, তারাই আজ জাতীয় স্বার্থের কথা বলে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াতে চায়।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

বিদেশি প্রতিষ্ঠান এলেই কি দেশের স্বার্থ বিকিয়ে যায়? না। বরং প্রশ্ন হওয়া উচিত—কারা দক্ষ? কারা সময়মতো কাজ শেষ করতে পারে? কারা স্বচ্ছভাবে সেবা দিতে পারে? বিশ্বজুড়ে সিঙ্গাপুর, দুবাই, ডেনমার্ক—এসব দেশের বন্দরগুলোতে বিদেশি অপারেটররা দক্ষতার সঙ্গে কাজ করছে। তারা কি তাদের স্বকীয়তা হারিয়েছে? বরং তাদের বন্দর ব্যবস্থাপনা আরও আধুনিক, আরও কার্যকর হয়েছে।

বাংলাদেশে এত ভয় কেন? ভয়টা সেই গোষ্ঠীর, যারা এতদিন এই বন্দরকে ব্যক্তিগত খনি বানিয়ে রেখেছিল। যারা দুর্নীতি করে ঋণ নেয়, ফেরত দেয় না, অথচ বিদেশে বিলাসবহুল জীবনযাপন করে। যারা শ্রমিকদের ব্যবহার করে অপারেটরদের জিম্মি করে ফেলে, এবং রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় নিজেদের অপরাধ আড়াল করে।

দেশপ্রেম মানে দুর্বলতা আঁকড়ে ধরা নয়। দেশপ্রেম মানে, দেশের স্বার্থে দক্ষতা ও স্বচ্ছতা গ্রহণ করা। যদি দেশের প্রতিষ্ঠান দক্ষ ও সৎ হয়, তাহলে তারাই কাজ করুক। কিন্তু যদি তারা দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়, তাহলে আমাদের সাহসিকতা দেখাতে হবে—সেই কাঠামো ভেঙে নতুন কিছু গ্রহণ করতে হবে, তা বিদেশি হলেও।

এই মুহূর্তে দরকার এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি। আমরা চাই চট্টগ্রাম বন্দর হোক বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের চালিকাশক্তি। এটা যেন আর কোনো রাজনৈতিক দল, চাঁদাবাজ নেতা বা কর্পোরেট মাফিয়ার দখলে না থাকে। দরকার সুশাসন, প্রযুক্তি, দক্ষতা—জাতীয়তাবাদ নয়, বাস্তবতাবাদ। এ লড়াই উন্নয়নের পক্ষে। এ লড়াই দুর্নীতির বিরুদ্ধে। এ লড়াই ভবিষ্যতের বাংলাদেশের জন্য।

এই দুর্নীতিগ্রস্ত গোষ্ঠীকে প্রতিহত করতে হলে সচেতন জনগণের জাগরণ দরকার। শুধু ফেসবুকে নয়, বাস্তবে। অফিসে, গণমাধ্যমে, সমাজে—সবখানে প্রশ্ন তুলতে হবে, কারা দেশের পক্ষে, আর কারা দেশের ক্ষতির জন্য কাজ করছে।

বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা আমার মতো দেড় কোটি প্রবাসী ভাই-বোনেরা—আপনারাই হচ্ছেন এই জাতির নীরব কান্ডারি। আপনাদের পাঠানো রেমিট্যান্সে দেশ চলে, ঘরে ঘরে আলো জ্বলে। তাই আপনাদের দায়িত্বও ছোট নয়। আপনাদের জানতেই হবে—কারা এই দেশের উন্নয়ন চায়, আর কারা শুধু লুটে খেতে চায়। নিজের পরিবার, সমাজ, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আজ আপনাদের চোখ খুলে তাকাতে হবে।

এই ভয়ংকর বাস্তবতার মাঝেও আমরা আশার আলো খুঁজি। আমরা সেই একজনকে খুঁজি—যিনি নিজের স্বার্থে নয়, অন্যের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করতে চান। ড. মুহাম্মদ ইউনূস আমাদের সামনে সেই নাম। হয়তো তাঁর জীবনেও প্রশ্ন আছে, বিতর্ক আছে, কিন্তু আজ যদি তিনি আরেকবার দেশের জন্য কিছু করতে চান, তাহলে তাকে বাধা না দিয়ে, সুযোগ দেওয়া দরকার। কারণ যদি তিনিও ব্যর্থ হন, তাহলে বুঝে নিতে হবে—আমরাই জাতি হিসেবে সব পথ বন্ধ করে দিয়েছি।

আর যদি তাকে প্রতিহত করা হয়, আরেকটি স্বচ্ছ প্রয়াসও যদি নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না। তখন আমরা পরিণত হব এক ব্যর্থ জাতিতে—যারা নিজের সম্ভাবনা নিজের হাতেই ধ্বংস করে দিয়েছে। তখন আমরা পরিচিত হব “পৃথিবীর আবর্জনা” হিসেবে, আর সেই লজ্জার দায় থাকবে আমাদের দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর কাঁধে।

তবে সেই দিন যেন না আসে। আসুক এক নতুন ভোর—যেখানে উন্নয়ন হবে সবার জন্য, কিছু গোষ্ঠীর জন্য নয়। যেখানে নেতৃত্বের মানদণ্ড হবে সততা ও দক্ষতা। যেখানে প্রবাসীদের পাঠানো কষ্টের টাকা সঠিকভাবে বিনিয়োগ হবে।

এই বিশ্বাস, এই সাহস, এই অঙ্গীকার নিয়েই আমরা এগিয়ে যাব। বাংলাদেশ বাঁচুক। মানুষ জাগুক।দুর্নীতির ছোবল থামুক। গর্জে উঠুক এই প্রজন্ম—নতুন বাংলাদেশের নির্মাতা হয়ে।

রহমান মৃধা, গবেষক এবং লেখক, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন।

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

বাংলার এই দুর্দিনে তারেক রহমান এখনো কেন লন্ডনে?

Published

on

ঢাকা ব্যাংক

বলছি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কথা। আজ যখন বাংলাদেশ গভীর রাজনৈতিক, সামাজিক এবং নৈতিক সংকটে নিপতিত, তখন তিনি কোথায়? দেশের মাটিতে নন, লন্ডনের নিরাপদ আশ্রয়ে। প্রশ্ন ওঠে-এটা কি মৃত্যুভয়, নাকি মিলিটারি কিংবা সরকারের রোষানলে পড়ার আতঙ্ক? আজ দেশের জন্য প্রয়োজন সাহসী, প্রজ্ঞাসম্পন্ন ও মাঠঘাটে সরব নেতৃত্ব। অথচ, তারেক রহমান এখনো দেশের মাটিতে ফেরার সাহস দেখাতে পারছেন না।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

জিয়াউর রহমান বা খালেদা জিয়া কখনো ভাড়াটে সন্ত্রাসীর ওপর নির্ভর করে নেতৃত্ব দেননি। তাঁরা রাজনীতি করেছেন মাটি ও মানুষের সঙ্গে, জীবনবাজি রেখে। তাহলে আজ বিএনপির রাজনীতিতে কেন এত সন্ত্রাসী চরিত্র, দূর-নির্দেশনা নির্ভরতা, আর মাঠের কর্মীদের আত্মবিশ্বাসহীনতা?

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

যদি তারেক রহমান জেল, হয়রানি, কিংবা জীবনের নিরাপত্তার আশঙ্কায় দেশে না ফেরেন, তাহলে কীভাবে তিনি একটি দেশের শাসনভার নেবেন? রাজনীতি তো শুধু বক্তব্য ও দূরবর্তী নিয়ন্ত্রণ নয়—এটি উপস্থিতি, আত্মত্যাগ, নেতৃত্ব এবং মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সাহসের নাম।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

বাংলাদেশের বাস্তবতা অত্যন্ত করুণ। মানুষ ধর্ম পালন করে—নামাজ, রোজা, হজ, ওমরাহ সবই আছে; কিন্তু সমাজে সততা, ন্যায়বোধ, জবাবদিহি নেই। চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, রাজনৈতিক প্রতারণা—এসবই যেন এখন নিত্যনৈমিত্তিক। মানুষ ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলে, কিন্তু সামাজিক নৈতিকতা ও দায়বদ্ধতা হারিয়ে ফেলেছে। এই চিত্রের মধ্যেই দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃত্ব আজ বিভ্রান্ত ও জনবিচ্ছিন্ন।

এই পরিস্থিতিতে যদি ডিসেম্বরেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তবে প্রশ্ন থেকে যায়—তারেক রহমান কি লন্ডনে বসেই বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা করবেন? দেশ চালানোর প্রস্তুতি কি বিদেশে বসে নেয়া সম্ভব? সবকিছু তার পছন্দমতো ‘অনুকূল’ হলে দেশে ফেরার শর্ত রাজনীতিতে কতটা গ্রহণযোগ্য?

বাংলাদেশের মানুষ কি শুধুই রক্ত দেবে? কি শুধুই গুলিবিদ্ধ হবে? আর বসন্তের কোকিলেরা বছরে একবার দেশে ফিরে নেতৃত্বের দাবি করবে? এই কি সেই গণতন্ত্র, যার জন্য এদেশের মানুষ সংগ্রাম করেছে? পাকিস্তানের পতনের পর, একদলীয় শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে যদি নতুন আশার জন্ম দিতে পারে, তবে আজও সেই আশা কেন মরে যাবে?

এই দেশের মানুষ প্রতারণায় ক্লান্ত, তারা দৃঢ় নেতৃত্ব চায়। সাহসী সিদ্ধান্ত চায়। তারেক রহমান, আপনি কি প্রস্তুত? যদি প্রস্তুত থাকেন, তবে আজই দেশে ফিরে আসুন, রাজপথে নামুন, মানুষের পাশে দাঁড়ান। আর যদি আপনার শর্তই হয় নিরাপত্তা ও অনুকূল পরিবেশ, তাহলে দয়া করে নেতৃত্ব দাবি করবেন না। কারণ মানুষ আর প্রতারিত হতে চায় না।

এখন সিদ্ধান্ত আপনার—আপনি কী করবেন? সাহসিকতার পথ ধরবেন, না নিরাপদ দুরপরবাসেই থাকবেন?

কারণ এই দেশ আর সময় চায় না। দেশের মানুষ দীর্ঘ ৫৪ বছর ধরে নিপীড়িত, নির্যাতিত, অনিয়ম-অবিচারে জর্জরিত। বছরের পর বছর তারা প্রতিশ্রুতির ছায়ায় বাঁচার চেষ্টা করেছে, কিন্তু প্রতিবারই হয়েছে প্রতারিত। জাতি একসময় আশাবাদী হয়েছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি, নতুন প্রজন্মের তরুণ নেতৃত্বের প্রতি—কিন্তু তারাও জাতিকে হতাশ করেছে।

আমরা আশাবাদী হয়েছিলাম ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বেও—কিন্তু তিনিও আমাদের হৃদয়ের ভাষা, ১৬ কোটি মানুষের মনের ব্যথা বুঝতে পারেননি, বা তাকে বুঝতে দেওয়া হয়নি। তিনি থেকেছেন এলিটদের ছত্রছায়ায়, দূরে সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বর থেকে, এবং সে কারণেই তাঁরও পথভ্রষ্ট হওয়া অনিবার্য হয়ে উঠেছে।

তবু, এখনো সময় আছে। উপায় আছে।

যদি সকল রাজনৈতিক দলের সমর্থকদের প্রতিনিধিত্বে একটি নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা যায়, তবে দেশকে ফেরানো সম্ভব সঠিক পথে। সেখানে আপনি, তারেক রহমান, ড. ইউনূসের মতো একজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্বের ছায়ায় নেতৃত্ব দিতে পারেন—নিরাপত্তার পেছনে না লুকিয়ে, সাহস নিয়ে সামনে এসে।

তবে সেই মহানুভবতার পরিচয় দিতে হলে মনে রাখতে হবে জিয়াউর রহমানের সেই ঐতিহাসিক শিক্ষা:
“ব্যক্তির আগে দল, আর দলের আগে দেশ।”

পারবেন কি আপনি সেই আত্মত্যাগ করতে? পারবেন কি দলের সংকীর্ণ গণ্ডি পেরিয়ে দেশের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নিতে?

তাহলে আসুন, একসাথে দেশ পরিচালনা করি। ভাঙা স্বপ্নগুলো জোড়া লাগাই। বাংলাদেশের ইতিহাসের নতুন পৃষ্ঠা লিখি—সাহস, ন্যায্যতা ও মানুষের ভালোবাসার কালি দিয়ে।

রহমান মৃধা
গবেষক এবং লেখক
সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
Rahman.Mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পুরো সংবাদটি পড়ুন

পুঁজিবাজারের সর্বশেষ

ঢাকা ব্যাংক ঢাকা ব্যাংক
পুঁজিবাজার11 hours ago

ঢাকা ব্যাংকের আয় বেড়েছে ১০ শতাংশ

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের কোম্পানি ঢাকা ব্যাংক পিএলসি গত ৩১ মার্চ,২০২৫ তারিখে সমাপ্ত প্রথম প্রান্তিকের (জানুয়ারি’২৫-মার্চ’২৫) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ...

ঢাকা ব্যাংক ঢাকা ব্যাংক
পুঁজিবাজার11 hours ago

লভ্যাংশ সংক্রান্ত তথ্য জানালো এসবিএসি ব্যাংক

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের কোম্পানি এসবিএসি ব্যাংক পিএলসি গত ৩১ ডিসেম্বর,২০২৪ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য লভ্যাংশ সংক্রান্ত তথ্য জানিয়েছে। ব্যাংকটি...

ঢাকা ব্যাংক ঢাকা ব্যাংক
পুঁজিবাজার11 hours ago

রাইট শেয়ারে আবেদনের সময়সূচি জানালো বার্জার পেইন্টস

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানি বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ পিএলসি তাদের রাইট শেয়ারের জন্য আবেদনের সময়সূচি প্রকাশ করেছে। আগামী ১৫ জুলাই আবেদন...

ঢাকা ব্যাংক ঢাকা ব্যাংক
পুঁজিবাজার12 hours ago

ব্যাংক আলফালাহ অধিগ্রহণে ব্যাংক এশিয়ার চুক্তি

বহুজাতিক ব্যাংক আলফালাহ’র বাংলাদেশ কার্যক্রম অধিগ্রহণ করবে ব্যাংক এশিয়া পিএলসি। ব্যাংক এশিয়া এ লক্ষ্যে ব্যাংক আলফালাহ বাংলাদেশ এর সঙ্গে একটি...

ঢাকা ব্যাংক ঢাকা ব্যাংক
পুঁজিবাজার12 hours ago

নগদের সঙ্গে বোনাস লভ্যাংশ দেবে ঢাকা ব্যাংক

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের কোম্পানি ঢাকা ব্যাংক পিএলসি গত ৩১ ডিসেম্বর,২০২৪ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটি আলোচিত...

ঢাকা ব্যাংক ঢাকা ব্যাংক
পুঁজিবাজার12 hours ago

লভ্যাংশ সংক্রান্ত তথ্য জানালো এনআরবিসি ব্যাংক

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক খাতের কোম্পানি এনআরবিসি ব্যাংক পিএলসি গত ৩১ ডিসেম্বর,২০২৪ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য লভ্যাংশ সংক্রান্ত তথ্য জানিয়েছে। কোম্পানিটি...

ঢাকা ব্যাংক ঢাকা ব্যাংক
পুঁজিবাজার16 hours ago

৪৪ কোম্পানিকে বিএসইসির চিঠি, ব্যর্থতার জন্য নেওয়া হবে ব্যবস্থা

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর উদ্যোক্তা-পরিচালকদের ন্যূনতম ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের বিধান নিশ্চিত করতে ৪৪ কোম্পানিকে চিঠি দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ...

Advertisement
AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

সোশ্যাল মিডিয়া

তারিখ অনুযায়ী সংবাদ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০
১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭৩০৩১
ঢাকা ব্যাংক
সারাদেশ9 hours ago

সকাল থেকে ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় 

ঢাকা ব্যাংক
রাজনীতি9 hours ago

ক্ষমতায় গেলে পরিবারের নারীপ্রধানকে ফ্যামিলি কার্ড দেবে বিএনপি

ঢাকা ব্যাংক
অর্থনীতি10 hours ago

অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা

ঢাকা ব্যাংক
পুঁজিবাজার11 hours ago

ঢাকা ব্যাংকের আয় বেড়েছে ১০ শতাংশ

ঢাকা ব্যাংক
পুঁজিবাজার11 hours ago

লভ্যাংশ সংক্রান্ত তথ্য জানালো এসবিএসি ব্যাংক

ঢাকা ব্যাংক
পুঁজিবাজার11 hours ago

রাইট শেয়ারে আবেদনের সময়সূচি জানালো বার্জার পেইন্টস

ঢাকা ব্যাংক
রাজনীতি11 hours ago

সালাউদ্দিন কাদেরকে স্মরণ করলেন জামায়াত নেতা এটিএম আজহার

ঢাকা ব্যাংক
পুঁজিবাজার12 hours ago

ব্যাংক আলফালাহ অধিগ্রহণে ব্যাংক এশিয়ার চুক্তি

ঢাকা ব্যাংক
পুঁজিবাজার12 hours ago

নগদের সঙ্গে বোনাস লভ্যাংশ দেবে ঢাকা ব্যাংক

ঢাকা ব্যাংক
জাতীয়12 hours ago

সচিবালয়ে সপ্তাহে দুই দিন বন্ধ থাকবে দর্শনার্থী প্রবেশ

ঢাকা ব্যাংক
সারাদেশ9 hours ago

সকাল থেকে ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় 

ঢাকা ব্যাংক
রাজনীতি9 hours ago

ক্ষমতায় গেলে পরিবারের নারীপ্রধানকে ফ্যামিলি কার্ড দেবে বিএনপি

ঢাকা ব্যাংক
অর্থনীতি10 hours ago

অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা

ঢাকা ব্যাংক
পুঁজিবাজার11 hours ago

ঢাকা ব্যাংকের আয় বেড়েছে ১০ শতাংশ

ঢাকা ব্যাংক
পুঁজিবাজার11 hours ago

লভ্যাংশ সংক্রান্ত তথ্য জানালো এসবিএসি ব্যাংক

ঢাকা ব্যাংক
পুঁজিবাজার11 hours ago

রাইট শেয়ারে আবেদনের সময়সূচি জানালো বার্জার পেইন্টস

ঢাকা ব্যাংক
রাজনীতি11 hours ago

সালাউদ্দিন কাদেরকে স্মরণ করলেন জামায়াত নেতা এটিএম আজহার

ঢাকা ব্যাংক
পুঁজিবাজার12 hours ago

ব্যাংক আলফালাহ অধিগ্রহণে ব্যাংক এশিয়ার চুক্তি

ঢাকা ব্যাংক
পুঁজিবাজার12 hours ago

নগদের সঙ্গে বোনাস লভ্যাংশ দেবে ঢাকা ব্যাংক

ঢাকা ব্যাংক
জাতীয়12 hours ago

সচিবালয়ে সপ্তাহে দুই দিন বন্ধ থাকবে দর্শনার্থী প্রবেশ

ঢাকা ব্যাংক
সারাদেশ9 hours ago

সকাল থেকে ১২ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় 

ঢাকা ব্যাংক
রাজনীতি9 hours ago

ক্ষমতায় গেলে পরিবারের নারীপ্রধানকে ফ্যামিলি কার্ড দেবে বিএনপি

ঢাকা ব্যাংক
অর্থনীতি10 hours ago

অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা

ঢাকা ব্যাংক
পুঁজিবাজার11 hours ago

ঢাকা ব্যাংকের আয় বেড়েছে ১০ শতাংশ

ঢাকা ব্যাংক
পুঁজিবাজার11 hours ago

লভ্যাংশ সংক্রান্ত তথ্য জানালো এসবিএসি ব্যাংক

ঢাকা ব্যাংক
পুঁজিবাজার11 hours ago

রাইট শেয়ারে আবেদনের সময়সূচি জানালো বার্জার পেইন্টস

ঢাকা ব্যাংক
রাজনীতি11 hours ago

সালাউদ্দিন কাদেরকে স্মরণ করলেন জামায়াত নেতা এটিএম আজহার

ঢাকা ব্যাংক
পুঁজিবাজার12 hours ago

ব্যাংক আলফালাহ অধিগ্রহণে ব্যাংক এশিয়ার চুক্তি

ঢাকা ব্যাংক
পুঁজিবাজার12 hours ago

নগদের সঙ্গে বোনাস লভ্যাংশ দেবে ঢাকা ব্যাংক

ঢাকা ব্যাংক
জাতীয়12 hours ago

সচিবালয়ে সপ্তাহে দুই দিন বন্ধ থাকবে দর্শনার্থী প্রবেশ