অর্থনীতি
২০ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ভিত্তি নড়বড়ে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পথে বাংলাদেশ ব্যাংক

দেশের ২০টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ভিত্তি অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমানত রাখা গ্রাহকরা টাকা ফেরত পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এনবিএফআই) নিবন্ধন সনদ বা লাইসেন্স বাতিলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেই সাথে এসব এনবিএফআইয়ের লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একইসঙ্গে ১৫ দিনের মধ্যে এই চিঠির জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এসব প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- সিভিসি ফাইন্যান্স, বে লিজিং, ইসলামিক ফাইন্যান্স, মেরিডিয়ান ফাইন্যান্স, জিএসপি ফাইন্যান্স, হজ্জ ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল ফাইন্যান্স, আইআইডিএফসি, প্রিমিয়ার লিজিং, প্রাইম ফাইন্যান্স, উত্তরা ফাইন্যান্স, আভিভা ফাইন্যান্স, ফিনিক্স ফাইন্যান্স, পিপলস লিজিং, ফার্স্ট ফাইন্যান্স, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, বিআইএফসি, ফারইষ্ট ফাইন্যান্স ও এফএএস ফাইন্যান্স।
এর আগে দীর্ঘদিন ধরে সংকটে থাকা, উচ্চ খেলাপি ঋণ ও গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে না পারা ২০টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এসব প্রতিষ্ঠানের যে ঋণ রয়েছে, তার বিপরীতে জামানতও খুবই কম। এই অবস্থায় এসব এনবিএফআইয়ের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চিঠির জবাব পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাতে এসব প্রতিষ্ঠান একীভূত বা অবসায়নের উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নথিপত্র থেকে জানা যায়, দেশে মোট এনবিএফআই রয়েছে ৩৫টি। এর মধ্যে ২০টির অবস্থা খুবই নাজুক। গত ডিসেম্বরে এসব প্রতিষ্ঠানের আমানতের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক আমানত ১২৭ কোটি উক্তা কোটি টাকা ও ব্যক্তি আমানত ও কোটি টাকা। গত ডিসেম্বরে এসব হাজার ৭৬০ কো প্রতিষ্ঠানের ঋণের পরিমাণ ছিল ২০ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা। এই অণের ৮৩ শতাংশই খেলাপি হয়ে পড়েছে, যার পরিমাণ ২১ হাজার ৪৬২ কোটি টাকা। ঋণের বিপরীতে জামানতের পরিমাণ ৬ হাজার কোটি টাকা। জামানতের অর্থ নিয়ে ব্যক্তি আমানতকারীর অর্থ ফেরত দেওয়া সম্ভব। সব পুঞ্জিত ক্ষতির মিলিয়ে ২০টি প্রতিষ্ঠানের ক্রম পুঞ্জিত পরিমাণ ২৩ হাজার ৪৪৮ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব প্রতিষ্ঠান আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে ভালো আর্থিক ও পুরো বাতের ওপর প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপরও। এতে পুরো খাতের ওপর আস্থাহীনতা তৈরি হচ্ছে। ভালো প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসা ও বাজার বিরুপভাবে প্রভাবিত হচ্ছে, যা হতে উত্তরণ আবশ্যক।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, চিহ্নিত ২০টি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বছরে বেতন ১৭২ কোটি টাকা ও এমডিদের বেতন ১২ কোটি টাকা। ভাড়া, অন্যান্য খরচসহ সব মিলিয়ে ব্যয় ২০৬ কোটি টাকা। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত কোনো সুদ আয় নেই। তাই আইন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠন ও একর্মীকরণের প্রয়োজন দেখা নিয়েছে।
চিঠিতে যা বলা হয়েছে, সংকটে থাকা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়েছে, এসব প্রতিষ্ঠানে আমানতকারীর। আমানতকারীর দায় পরিশোধে সম্পদের অপর্যাপ্ততা, শ্রেণিকৃত ঋণের উচ্চহার, মূলধন মাটতি তথা ন্যূনতম সংরক্ষিতব্য মূলধন সংরক্ষণে ব্যামান্ডাসহ নানা বিষয় পরিলক্ষিত হয়েছে। চাই এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাখ্যাও ২ পরিকল্পনা জানতে চাওয়া হয়। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, আইন অনুযায়ী কেন প্রতিষ্ঠানগুলোর লাইসেন্স বাতিল করা হবে না, তা-ও জানাতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আর্থিক খাতের বহুল আলোচিত ব্যক্তি প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যে অনিয়ম করে গেছেন, তার জের টানতে হচ্ছে পুরো খাতকে। পি কে হালদারের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় ছিল, এমন কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠনও রয়েছে এই তালিকায়। পি কে হালদার যখন এসব অনিয়ম করেন, তখন তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘনিষ্ঠ মোহাম্মদ সাইফুল আলমের (এস আলম) নিয়ন্ত্রণাধীন একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ছিলেন। পি কে হালদারের মাধ্যমে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের পর ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোরও একই দশা করেন এস আলম। তাতে পুরো আর্থিক খাতই এখন ধুকছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সব জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা

বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সহ-সভাপতি মো. রিপনুল হাসানকে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে সারা দেশের সকল জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বুধবার (২৮ মে) বাজুসের সাধারণ সম্পাদক বাদল চন্দ্র রায়ের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বাজুসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সহ-সভাপতি মো. রিপনুল হাসানকে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আজ থেকে ঢাকাসহ সারা দেশের সব জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। একই সঙ্গে বাজুসের সহ-সভাপতি মো. রিপনুল হাসানকে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলায় গ্রেপ্তারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বাজুসের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গুলজার আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক বাদল চন্দ্র রায়সহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় রাজধানীর তাঁতীবাজার নিজ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন বাজুসের সহ-সভাপতি মো. রিপনুল হাসান।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
৯৬৬ কারখানা ঈদ বোনাস দেয়নি, এপ্রিলের বেতন বাকি ২৪টিতে

চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে আগামী ৬ অথবা ৭ জুন বাংলাদেশে ঈদুল আজহা অনুষ্ঠিত হতে পারে। সে হিসেবে পোশাক শ্রমিকদের ঈদের বোনাস ১ জুন ও মে মাসের বেতন ৩ জুনের মধ্যে দেওয়ার কথা। তবে এখন পর্যন্ত ২ হাজর ৯২টি কারখানার মধ্যে এক হাজার ১২৬টি কারখানা শ্রমিকদের বোনাস পরিশোধ করেছে। এখনো ঈদ বোনাস দেয়নি ৯৬৬ কারখানা। আর এপ্রিল মাসের বেতন পরিশোধ করেনি ২৪ কারখানা।
বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, এখন পর্যন্ত মাত্র এক হাজার ১২৬টি কারখানা ঈদ বোনাস পরিশোধ করেছে, যা মোট কারখানার ৫৩ দশমিক ৮২ শতাংশ।
অন্যদিকে বিজিএমইএর অধীনে থাকা ঢাকা ও চট্টগ্রামের মোট ২ হাজার ৯২টি কারখানার মধ্যে ৯৬৬টি কারখানা এখনো ঈদ বোনাস পরিশোধ করেনি। যদিও বোনাস পরিশোধে কারখানা মালিকদের হাতে এখন মাত্র তিনদিন সময় আছে। বিজিএমইএ আশা করছে, সরকারের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বোনাস ও বেতন পরিশোধ সম্পন্ন হবে।
বিজিএমইএ’র সর্বশেষ তথ্যমতে, এখনো এপ্রিল মাসের বেতন দেয়নি ২৪টি কারখানা। এপ্রিলে বেতন হয়েছে ২ হাজার ৬৮টি কারখানায়। তাছাড়া মার্চ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে দুটি কারখানায়। ১৩/১ ধারায় একটি কারখানা বন্ধ রয়েছে। আর কারখানা খোলার পর কাজ বন্ধু, স্ব-বেতনে ছুটি বা শ্রমিকরা চলে গেছে এমন কারখানার সংখ্যা তিনটি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সামাজিক উন্নয়নে করছাড় সুবিধা পেল ৯ প্রতিষ্ঠান

স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সমাজসেবাসহ নানা সামাজিক ও জনকল্যাণমূলক কার্যক্রমে অবদান রাখা ৯টি প্রতিষ্ঠানকে আগামী পাঁচ বছরের জন্য করছাড় সুবিধা দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
মঙ্গলবার (২৭ মে) এনবিআর থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন ইস্যু করা হয়েছে। আয়কর আইন, ২০২৩-এর ক্ষমতাবলে জারি করা এ প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, এসব প্রতিষ্ঠান ২০৩০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত কর অব্যাহতি সুবিধা পাবে।
করছাড় পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশন, মাস্তুল ফাউন্ডেশন, এসওএস চিলড্রেনস ভিলেজ ইন্টারন্যাশনাল ইন বাংলাদেশ, রোগীকল্যাণ সমিতি, বাংলাদেশ জাতীয় বধির সংস্থা, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, ঢাকা আহছানিয়া মিশন, প্যালিয়েটিভ কেয়ার সোসাইটি অব বাংলাদেশ এবং আগামী এডুকেশন ফাউন্ডেশন।
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, এই ধরনের উদ্যোগ করদাতাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সমাজসেবাসহ নানা খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে করছাড় দেওয়া সামাজিক দায়িত্ব পালনে উৎসাহিত করবে এবং জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানগুলোর টেকসই অর্থায়নে সহায়ক হবে।
বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশন দীর্ঘদিন ধরে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা, রক্ত সংগ্রহ, সচেতনতামূলক কার্যক্রম এবং স্ক্রিনিং সেবা দিয়ে আসছে। আর মাস্তুল ফাউন্ডেশন কাজ করছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও পুনর্বাসনের মতো খাতে। পথশিশুদের জন্য স্কুল, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও আশ্রয়কেন্দ্র পরিচালনাও করছে এই প্রতিষ্ঠানটি।
অন্যদিকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র কম দামে ওষুধ উৎপাদন, গণ চিকিৎসা, মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা এবং স্বাস্থ্যকর্মী প্রশিক্ষণে দীর্ঘদিন ধরে ভূমিকা রেখে আসছে। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও শিশু অধিকার, শিক্ষা উন্নয়নে কাজ করছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দেশের রিজার্ভ আরও বাড়লো

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার (২৭ মে) পর্যন্ত দেশের মোট (গ্রস) রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে প্রায় দুই হাজার ৫৮০ কোটি ডলার বা ২৫ দশমিক ৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
মঙ্গলবার (২৭ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে, চলতি মাসের ২২ মে পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৫৬৪ কোটি ২৭ লাখ ৪০ হাজার বা ২৫ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ২৭ কোটি ২৭ লাখ ডলার বা ২০ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার।
উল্লেখ্য, নিট রিজার্ভ (প্রকৃত রিজার্ভ) গণনা করা হয় আইএমএফের বিপিএম-৬ পরিমাপ অনুসারে। মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বিয়োগ করলে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের পরিমাণ পাওয়া যায়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
জিডিপি কমে ৪ শতাংশের নিচে, মাথাপিছু আয় এখন ২৮২০ ডলার

চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা শঙ্কার মধ্যে ছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের পালিয়ে যাওয়ার পর ভঙ্গুর অর্থনীতি আরো ভেঙে পড়ে। রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাব দেশের মোট দেশজ উৎপাদন তথা জিডিপিতে পড়েছে।
সাময়িক হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৩ দশমিক ৯৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এর আগের অর্থবছরের চূড়ান্ত হিসাব অনুযায়ী প্রবৃদ্ধি ছিল ৪ দশমিক ২২ শতাংশ। তবে এ অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি কমলেও মাথাপিছু আয় বেড়ে ২ হাজার ৮২০ ডলার হয়েছে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) চলতি অর্থবছরের জিডিপির সাময়িক হিসাব প্রকাশ করেছে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সামগ্রিকভাবে অর্থনীতির বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ, বিশেষ করে উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং বিনিয়োগ প্রত্যাশিত মাত্রায় না বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এ প্রবৃদ্ধির হার প্রতিফলিত হয়েছে। তবে বিনিয়োগের গুরুত্ব অপরিসীম। বর্তমানে বিনিয়োগ স্তিমিত রয়েছে এবং গত নয় মাসে বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক অবস্থায় রয়েছে।
চলতি অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৩ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিদ্যমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যেও সংস্থাটি এ পূর্বাভাস দিয়েছে। ঋণদাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) চলতি বছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৮ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বলেছে, বাংলাদেশ চলতি অর্থবছরে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারে।
চলতি অর্থবছরে জিডিপির আকার বেড়ে ৪৬২ বিলিয়ন ডলার হয়েছে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫৫ লাখ ৫২ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। আগের অর্থবছরে (২০২৩-২৪) জিডিপির আকার ছিল ৪৫০ বিলিয়ন ডলার, দেশীয় মুদ্রায় যা ৫০ লাখ ২ হাজার ৬৫৪ কোটি টাকার সমান।
বিবিএস দেশের জনসংখ্যা, কৃষি, শিল্প, জনমিতি, অর্থনীতি, আর্থ-সামাজিক বিষয়াদি, প্রাকৃতিক সম্পদ, পরিবেশ ইত্যাদি সংক্রান্ত পরিসংখ্যান প্রণয়ন ও প্রকাশ করে থাকে। এর মধ্যে স্থুল দেশজ উৎপাদনসহ (জিডিপি) গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক নির্দেশক প্রাক্কলন অন্যতম। এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জিডিপির চূড়ান্ত হিসাব প্রকাশ করা হয়েছিল। বর্তমানে সাময়িকভাবে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জিডিপির সাময়িক হিসাব প্রাক্কলন করা হয়েছে।
বিবিএসের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়ে ২ হাজার ৮২০ ডলারে দাঁড়িয়েছে। আগের অর্থবছরে (২০২৩-২৪) মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ৭৩৮ ডলার। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে মাথাপিছু আয় ৮২ ডলার বেড়েছে।
জিডিপির প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিনিয়োগের বড় প্রভাব রয়েছে। বিবিএসের তথ্যানুযায়ী, এ অর্থবছরে বিনিয়োগ কমে দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৩৮ শতাংশে, আগের অর্থবছরেও তা ছিল ৩০ দশমিক ৭ শতাংশ। এছাড়া দেশজ সঞ্চয় কমে ২৩ দশমিক ২৫ শতাংশে ঠেকেছে, আগের অর্থবছর তা ছিল ২৩ দশমিক ৯৬ শতাংশ। তবে জাতীয় সঞ্চয় বেড়ে ২৯ দশমিক শূন্য ১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, আগের অর্থবছর তা ছিল ২৮ দশমিক ৪২ শতাংশ।