আইন-আদালত
স্ত্রী-সন্তানসহ সাবের হোসেন চৌধুরীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

সাবেক পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, তার স্ত্রী রেহান চৌধুরী, ছেলে হামদাদ হোসেন ও আরাজ আলম, মেয়ে রাইমা চৌধুরি ও আলিশা বাবর চৌধুরীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
রবিবার (২৫ মে) দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জনসংযোগ বিভাগের উপ-পরিচালক আকতারুল ইসলাম।
আবেদনে বলা হয়েছে, সাবের হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অর্থনৈতিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থেকে বিপুল পরিমাণ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।
অনুসন্ধানকালে জানা গেছে যে, সাবের হোসেন চৌধুরী ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে এবং দেশের বাইরে কানাডা, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ রয়েছে।
সাবের হোসেন চৌধুরী এবং তার পরিবারবর্গ দেশ ছেড়ে যেতে এবং স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তর করার চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে। তারা বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধানকার্য ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বিধায়, অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন বলে এ আবেদন করা হয়।

আইন-আদালত
৯ সেপ্টেম্বরেই হবে ডাকসু নির্বাচন: আপিল বিভাগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। এই আদেশের ফলে আগামী ৯ সেপ্টেম্বরেই ডাকসু নির্বাচন হতে আর কোনো বাধা রইল না।
বুধবার (০৩ সেপ্টেম্বর) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এদিন বেলা ১১টার পর প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়।
এর আগে ডাকসু নির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ বহাল রেখেছিলেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এ আদেশ দিয়েছিলেন।
ওইদিন আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
এর আগে সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) ডাকসু নির্বাচন আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা করেছিলেন হাইকোর্ট। একই দিন ওই আদেশের ওপর স্থগিতাদেশ দেন চেম্বার আদালত।
গত ২৮ আগস্ট ডাকসু নির্বাচনে এস এম ফরহাদের প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে অপরাজেয় ৭১’, ‘অদম্য ২৪’ প্যানেলের বামজোট মনোনীত প্যানেলের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী বি এম ফাহমিদা আলম হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করেন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়া কথা রয়েছে। ডাকসু নির্বাচন ঘিরে এরইমধ্যে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ও বামপন্থি ছাত্রসংগঠনগুলোেআলাদা আলাদা প্যানেল ঘোষণা করেছে। পূর্ণ ও আংশিক মিলিয়ে এবার ১০টির মতো প্যানেল দেয়া হয়েছে এ নির্বাচনে।
আইন-আদালত
ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আপিলের শুনানি আজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিতের মেয়াদ বাড়িয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। আজ বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের করা আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এ আদেশ দেন। আদালত বলেছেন, বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) শুনানির জন্য নির্ধারণ করা হলো। সেই সময় পর্যন্ত স্থগিতাদেশ বাড়ানো হলো।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রিটকারীর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। এ বিষয়ে শিশির মনির জানান, বুধবার আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য ১ নম্বর আইটেম হিসেবে থাকবে।
এছাড়াও মঙ্গলবার রাতে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে জানানো হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন স্থগিত করে দেওয়া হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল আবেদনের শুনানি বুধবারের আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় এসেছে। বিষয়টি কার্যতালিকায় এক নম্বর ক্রমিকে রাখা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হবে।
এর আগে, এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) ডাকসুর নির্বাচন প্রক্রিয়া ও চূড়ান্ত ভোটার তালিকার কার্যক্রম স্থগিত করে আদেশ দেন। এই আদেশের ফলে ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ডাকসু নির্বাচন আটকে গিয়েছিল। পরে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষে সোমবার চেম্বার আদালতে আবেদন করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে চেম্বার আদালত নিয়মিত সিভিল মিসলেনিয়াস পিটিশন (দেওয়ানি বিবিধ আবেদন) না করা পর্যন্ত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন। ফলে ডাকসু নির্বাচন আয়োজনে বাধা কাটে।
হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষে সিভিল মিসলেনিয়াস পিটিশনটি মঙ্গলবার আদালতে দাখিল করা হয়। এরপর সম্পূরক কার্যতালিকায় আবেদনটি শুনানির জন্য ওঠে এবং শুনানি হয়।
ডাকসু নির্বাচনে ভোট গ্রহণ হওয়ার কথা ৯ সেপ্টেম্বর। নির্বাচনে ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেল ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ থেকে ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রার্থী হয়েছেন এস এম ফরহাদ। তিনি ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি।
নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ নিইয়ে ফরহাদের প্রার্থিতার বৈধতা বিষয়ে গত ২৮ আগস্ট রিট করেন ডাকসু নির্বাচনের এক প্রার্থী।
রিটের ওপর সোমবার হাইকোর্টে শুনানি হয়। শুনানি নিয়ে বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ ডাকসু নির্বাচন প্রক্রিয়া ও প্রকাশিত চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকার কার্যক্রম ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করে আদেশ দেন।
রুলে ডাকসুর গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় জিএস পদে এস এম ফরহাদের প্রার্থিতার বৈধতা দেওয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে।
এস এম ফরহাদের ক্ষেত্রে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সদস্য তথা সম্পৃক্ততার অভিযোগের বিষয়ে তথ্য-প্রমাণাদিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে ১৫ দিনের মধ্যে আবেদন করতে রিট আবেদনকারীকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
আদেশে বলা হয়, ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গ্রহণ করে অনুসন্ধান করবে। রিট আবেদনকারী ও ফরহাদসহ অন্য নির্ভরযোগ্য ব্যক্তিদের বক্তব্য শুনবেন এবং ২১ অক্টোবর আদালতে প্রতিবেদন দেবেন।
কাফি
আইন-আদালত
বিচার বিভাগের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ফিরল সুপ্রিম কোর্টে

বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের কিছু অংশ অবৈধ এবং বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তিন মাসের মধ্যে পৃথক সচিবালয় গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি আহমেদ সোহেল ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আইনজীবীরা জানান, এ রায়ের ফলে অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি ও পদোন্নতির ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের হাতে ফিরেছে। এ ছাড়া এ রায়ের ফলে সুপ্রিম কোর্টের পৃথক সচিবালয় স্থাপনে কোনো বাধা থাকল না।
এদিন সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের রায় ঘোষণা শুরু হয়।
গত ১৩ আগস্ট বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষ হয়। একইসঙ্গে এ বিষয়ে রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়।
সেদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। ইন্টারভেনর হিসেবে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম।
গত ২৩ এপ্রিল বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা প্রশ্নে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শুরু হয়।
বিচার বিভাগের নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট আবেদন নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টে বেঞ্চ গঠন করে দেন প্রধান বিচারপতি। গত ২০ এপ্রিল প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ এ বেঞ্চ নির্ধারণ করেন।
এর আগে মামলাটি বিচারপতি ফারাহ মাহবুবের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি ও নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ছিল। তবে গত ২৪ মার্চ বিচারপতি ফারাহ মাহবুব আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় সেই বেঞ্চটি ভেঙে যায়। এরপর সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ সংক্রান্ত মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য নতুন বেঞ্চ নির্ধারণের আবেদন করেন রিটকারী আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
তিনি গত বছরের ২৫ আগস্ট ১০ জন আইনজীবীর পক্ষে মূল সংবিধানের ১৯৭২ সালের ১১৬ অনুচ্ছেদ পুনর্বহালের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেন। পরে হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চান-বিদ্যমান সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না।
বর্তমানে প্রযোজ্য (সংশোধিত) সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘অধস্তন আদালতের দায়িত্ব পালনরত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ (কর্মস্থল নির্ধারণ, পদোন্নতি, ছুটি মঞ্জুরিসহ) ও শৃঙ্খলা বিধানের দায়িত্ব রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত থাকবে।’ কিন্তু ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছিল, ‘বিচারকর্মবিভাগে নিযুক্ত ব্যক্তিদের এবং বিচার বিভাগীয় দায়িত্বে নিযুক্ত ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলা বিধান সুপ্রিম কোর্টের ওপর ন্যস্ত থাকবে।’
বিদ্যমান সংবিধানের অনুযায়ী বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়োগ, পদায়ন, বদলি, পদোন্নতি, ছুটি ও শৃঙ্খলাবিধির ক্ষেত্রে নির্বাহী বিভাগের প্রভাব রয়েছে, যা বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
কাফি
আইন-আদালত
বিচারকাজ দ্রুত শেষ করতে হতে পারে তৃতীয় ট্রাইব্যুনাল: আইন উপদেষ্টা

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ আরও গতিশীল করতে তৃতীয় ট্রাইব্যুনাল গঠনের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে ট্রাইব্যুনাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞের বিচারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। ইতোমধ্যে বিচারকাজ সন্তোষজনকভাবে এগোচ্ছে এবং মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য প্রয়োজনে নতুন ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হতে পারে।
সংসদ নির্বাচনে ভোটকক্ষে নারী-পুরুষ ভোটার সংখ্যা বাড়লো
পরিদর্শনকালে তার সঙ্গে ছিলেন গৃহায়ন, গণপূর্ত ও শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান এবং চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকাজ ইতোমধ্যেই জোরেশোরে শুরু হয়েছে। একাধিক মামলায় অভিযোগ গঠন সম্পন্ন হয়েছে এবং সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জড়িত বেশ কয়েকটি মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
বর্তমানে ট্রাইব্যুনাল-১ ও ট্রাইব্যুনাল-২-এ বিচার কার্যক্রম চলছে। তবে মূল ভবনের সংস্কার কাজ শেষ না হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারকাজ টিনশেড ভবনে পরিচালিত হচ্ছে।
আইন-আদালত
জবানবন্দি দিতে ট্রাইব্যুনালে রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি মামুন

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আজ জবানবন্দি দেবেন আসামি থেকে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা মামলায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।
তিনি তার নিজের মামলায় সাক্ষ্ গ্রহণের ১১তম দিনে রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেবেন। প্রসিকিউশন সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১- এ ক্যামেরা ট্রায়ালে জবানবন্দি দেবেন তিনি। এ সময় কোনো সাংবাদিক উপস্থিত থাকতে পারবে না বলে জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেলে এই সাক্ষ্যগ্রহণ হওয়ার কথা রয়েছে। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন, বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। এর আগে সকালে তাকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
এ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ চলমান।
আজ মামলার ১১তম দিনের সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করার কথা রয়েছে। এর আগে এই মামলায় ৩৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়।
জুলাই অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের এই মামলার পলাতক আসামি।
এর আগে, ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনালে নিজের দায় স্বীকার করেন শেখ হাসিনার এ মামলায় স্বপ্রণোদিত হয়ে রাজসাক্ষী হতে চান চৌধুরী মামুন। একইসঙ্গে নিজের সব দায় স্বীকার করেন।
এ মামলায় গত ৩ আগস্ট থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে এখন পর্যন্ত ৩৫ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষীদের জবানবন্দিতে গত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে দেশজুড়ে হত্যাযজ্ঞ চালানোর বীভৎস বর্ণনা উঠে এসেছে। আর এসবের জন্য দায়ী করে শেখ হাসিনা, কামালসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন শহীদ পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরা।
এরও আগে গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, কামাল ও মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। এ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন ৮১ জন।