রাজনীতি
বাজেটের আগে এনবিআরে অচলাবস্থা সৃষ্টি করেছে সরকার: তারেক রহমান
রাজনীতি
খুব শিগগিরই আমরা গোপালগঞ্জ যাবো: নাহিদ

গোপালগঞ্জের সাধারণ মানুষকে ‘মুজিববাদমুক্ত’ করার ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। সেই সঙ্গে খুব শিগগিরই আবারও গোপালগঞ্জে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) ফরিদপুরে পদযাত্রা শেষে জনতা ব্যাংক মোড়ে অনুষ্ঠিত পথসভায় তিনি এ কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, অনেকে কালই গোপালগঞ্জ যেতে চেয়েছিলেন। খুব শিগগিরই আমরা সেখানে যাচ্ছি। গোপালগঞ্জের সাধারণ মানুষকে মুজিববাদ থেকে মুক্ত করবো। তবে সরকারকে সতর্ক করে দিতে চাই—সাধারণ মানুষকে যেন হেনস্তা করা না হয়।
তিনি আরও বলেন, আমরা ন্যায্য বিচার আদায় না করে রাজপথ ছাড়বো না। এখনো সময় দিচ্ছি—সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করুন। তা না হলে আমরা আবারও গোপালগঞ্জ অভিমুখে লং মার্চ করবো। তবে এবার আর ফিরে আসবো না—মুজিববাদ মুক্ত করে তবেই ফিরবো।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ৬৪টি জেলায় পদযাত্রা শেষ না করে আমরা ঘরে ফিরবো না। আগামী ৩ আগস্ট আমরা শহীদ মিনারে জড়ো হবো জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদ প্রকাশের জন্য। যাই হোক না কেন, এই পদযাত্রা থামবে না। মানুষের মুক্তির এই আন্দোলনে আমরা বিজয়ী হয়েই ফিরবো।
রাজনীতি
আবারো গোপালগঞ্জে যাব, গ্রামে-উপজেলায় কর্মসূচি করব: নাহিদ ইসলাম

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, গোপালগঞ্জ নিয়ে আমাদের অবস্থান গতকালের বক্তব্যেই পরিষ্কার বলা হয়েছে। পুরো বাংলাদেশের প্রতি আমাদের যে কমিটমেন্ট, গোপালগঞ্জের প্রতিও আমাদের সেই কমিটমেন্ট। গোপালগঞ্জের অধিবাসীদের প্রতি রাজনৈতিক বৈষম্য আমরা বিরোধিতা করি।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বেলা ১১টার পর তিনি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
নাহিদ বলেন, গোপালগঞ্জ ও পুরো বাংলাদেশকে আমরা মুজিববাদী সন্ত্রাস ও ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত করব। আওয়ামী লীগ যুগের পর যুগ ধরে গোপালগঞ্জের মানুষের জীবনকে বিপণ্ন করেছে, মুক্তিযুদ্ধকে কলুষিত করেছে এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে বেইনসাফি করেছে। আমরা বলেছি আমরা এ পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাব।
‘আমরা যুদ্ধের আহ্বান নিয়ে যাই নাই। আমাদের পূর্বঘোষিত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ছিল। মুজিববাদী সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে সশস্ত্র হামলা চালায় আমাদের ওপরে। যেরকমটা জুলাই গণঅভ্যুত্থানেও হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সবসময় একটা গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়।
তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের এত হত্যাযজ্ঞের পরেও ৫ আগস্টের পরে অনেকে ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ আনতে চেয়েছিল। তাদের মনে রাখা উচিত, আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয় আর, এটা একটা সন্ত্রাসবাদী সংগঠন।
‘৫ আগস্টের পরে আমরা বহুবার বলছি আমরা আইনি ও বিচারিক প্রক্রিয়ায় জুলাই গণহত্যার বিচার চাই। কিন্তু ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের লোকদের ব্যাপকভাবে গ্রেপ্তার করা হয় নাই। গ্রেপ্তার হলেও কোর্টে জামিন নিচ্ছে, থানা থেকে পালিয়ে যাচ্ছে। ’
নাহিদ বলেন, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে ঘাপটি মেরে আছে ফ্যাসিবাদের দোসর এবং দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা যাদের টাকা দিয়ে কিনে ফেলা যায়। নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের পুরো বাংলাদেশের বিভিন্ন যায়গার নেতাকর্মীরা গতকাল গোপালগঞ্জে ছিল।
তিনি বলেন, প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী যেভাবে ইনস্ট্রাকশন দিয়েছে, সকালের নাশকতার পরেও সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স পেয়েই আমরা গোপালগঞ্জে প্রবেশ করেছি। পদযাত্রা করি নাই, পথসভা করেছি শুধু। গোপালগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আমাদের লোকজনকে আসতে দেওয়া হয় নাই। বিভিন্ন যায়গায় বাস আটকে দেওয়া হয়েছে।
‘এরপরেও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পথসভা শেষ করেছি। যাওয়ার পথে সশস্ত্র আক্রমণ চালিয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। নিরাপত্তাবাহিনী যেভাবে ইনস্ট্রাকশন দিয়েছে আমরা সেভাবে সেখান থেকে বের হয়েছি। আমরা চারজনের মৃত্যুর কথা শুনেছি। ’
তিনি বলেন, কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে আমরা সমর্থন করি না, প্রত্যাশা করি না। সন্ত্রাসীদের বিচারিক প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থা যদি সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিতো তাহলে এ পরিস্থিতি তৈরি হতো না।
‘এ দায়ভার সরকার ও প্রশাসনকে নিতে হবে। আমরা পুরো ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও সন্ত্রাসীদের বিচার দাবি করছি। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। শুধু গোপালগঞ্জ নয় সারাদেশে এ গ্রেপ্তার অভিযান চালাতে হবে। ’
তিনি আরও বলেন, আমরা কমিট করেছিলাম আমরা গোপালগঞ্জে যাবো। আমরা গেছি এবং শহীদের রক্তের শপথ নিয়ে ঘোষণা করছি যে মুজিববাদকে গোপালগঞ্জ ও বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়াতে দেব না। আমরা আবারো গোপালগঞ্জে যাব। আমরা জীবিত থাকলে গোপালগঞ্জের প্রত্যেকটা উপজেলায়, প্রত্যেকটা গ্রামে কর্মসূচি করব।
‘গোপালগঞ্জের প্রতিটা ঘরে ঘরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পতাকা উড়বে। গোপালগঞ্জ মুজিববাদীদের হবে না, বাংলাদেশপন্থীদের হবে। শহীদ বাবু মোল্লার গোপালগঞ্জ, শহীদ রথীন বিশ্বাসের গোপালগঞ্জকে আমরা পুনরুদ্ধার করব। ’
মকসুদপুরে, কোটালীপাড়ায় আমাদের শহীদদের কবর রয়েছে। এ মাটি মুজিববাদীদের হতে দিবো না। বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটিও মুজিববাদীর হবে না। যারা গতকালের হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছেন, রাস্তায় নেমেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। ফরিদপুরে পদযাত্রায় দেখা হবে, বলেন এনসিপির আহ্বায়ক।
কাফি
রাজনীতি
নির্বাচনের আগে অবশ্যই গণহত্যাকারীদের বিচার করতে হবে: ড. হেলাল উদ্দিন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, নির্বাচনের আগে অবশ্যই গণহত্যাকারীদের বিচার করতে হবে; তাদের বিচার ব্যতীত দেশের নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
বুধবার (১৬ জুলাই) শাহজাহানপুর পশ্চিম থানা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে জাতীয় সমাবেশের প্রচারাভিযানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে শাহজাহানপুর পশ্চিম থানা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে প্রচারাভিযান পরিচালনা করা হয়।
মিছিল শেষে এক সংক্ষিপ্ত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, গোপালগঞ্জে জুলাই যোদ্ধাদের উপর যে নেককারজনক হামলা হয়েছে এটার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, জুলাই যোদ্ধারা সারা দেশব্যাপী যে সমস্ত কর্মসূচি পালন করছে তা প্রশাসনকে জানিয়ে পালন করা হচ্ছে এরপরও প্রশাসন তাদের জন্য নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার সন্ত্রাসী বাহিনী এখনো আগের মতই সংসার সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ এর নেতাকর্মীরা তাদের কৃতকর্মের জন্য কোন অনুশোচনা করেনি। বরং তারা আগের মতই ফুল এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের লোকেরা এখনো তাদের অভ্যাস অনুযায়ী নিরীহ মানুষের উপর সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করে যাচ্ছে। এই সন্ত্রাসী বাহিনীদেরকে যদি নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তবে তারা গর্তের মধ্যে লুকিয়ে থেকে মাঝেমধ্যেই তারা মাথা চারা দিয়ে উঠবে। এবং নিরীহ মানুষের উপর হামলা করে তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে যাবে। জুলাই যোদ্ধাদের উপর তারা যেভাবে নির্যাতন করেছে তাতে প্রমাণিত হয় আওয়ামী লীগ একটি রাজনৈতিক দলের নাম ছিল না বরং একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনীর নাম ছিল।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান অন্তবর্তী সরকার ইতিমধ্যেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে তবে তবে এই সন্ত্রাসী দলকে শুধু নিষিদ্ধ ঘোষণা করলেই হবে না বরং তাদের বিরুদ্ধে বিচার পরিচালনা করে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে বলে তিনি জানান। একই সাথে আওয়ামী লীগকে চিরদিনের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে বলে সরকারের প্রতি আহবান জানান।
ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ জামাত ইসলামী বারবার দাবি জানিয়ে আসছে কোন হত্যাকারীদের বিচার করতে হবে তাদের বিচার করা ব্যতীত দেশে নির্বাচনের সুস্থ পরিবেশ ফিরে আসবেনা। আজ গোপালগঞ্জে জুলাই যোদ্ধাদের উপর হামলার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে যে সারাদেশে আওমী সন্ত্রাসীরা এখনো সরিয়া ছিটিয়ে রয়েছে। আজ শুধু গোপালগঞ্জের সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার হিমশিম খাচ্ছে নির্বাচনের সময় সারা দেশের সন্ত্রাসীদের সরকার কিভাবে নির্বাচিত নিয়ন্ত্রণ করবে তা নিয়ে জনগণের মনে প্রশ্ন রয়েছে এজন্য আমি মনে করি নির্বাচনের আগে অবশ্যই সন্ত্রাসীদের গণহত্যার দায়ে বিচার করতে হবে।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শুরা ও শাহজাহানপুর পশ্চিম থানা আমীর সরোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পথসভায় অন্যান্যের মধ্যে শাহজাহানপুর পশ্চিম থানার সেক্রেটারি মো.আব্দুল্লাহিল কাফি মামুন, শাহজাহানপুর পশ্চিম থানার সাবেক আমীর মো. গিয়াস উদ্দিন, ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ সহ থানা কর্মপরিষদের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসংবাদ/কাফি
রাজনীতি
হামলার প্রতিবাদে দেশব্যাপী এনসিপির বিক্ষোভ কর্মসূচি আজ

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের ওপর হামলার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচির পালন করবে দলটি।
বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে খুলনা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পূর্বঘোষিত পদযাত্রা কর্মসূচি যথারীতি পালন করা হবে। তবে মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে বৃহস্পতিবারের কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। এসব জেলায় পরে নতুন তারিখ ঘোষণা করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে গোপালগঞ্জে হামলার অভিযোগ তুলে নাহিদ ইসলাম বলেন, মাসব্যাপী পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবেই এনসিপি গোপালগঞ্জে পদযাত্রা আয়োজন করে। যথাযথভাবে প্রশাসনকে জানিয়ে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করে কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া হলেও আওয়ামী লীগ ও ‘মুজিববাদী’ সমর্থকেরা পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘গোপালগঞ্জে অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে এনসিপি দেখিয়ে দিয়েছে, আওয়ামী লীগের বাইরেও অন্য রাজনৈতিক দল সেখানে কর্মসূচি পালন করতে পারে।’
হামলার বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘সমাবেশের আগে ও পরে একাধিকবার আমাদের ওপর হামলা হয়েছে। এতে প্রমাণিত, হামলাটি ছিল পূর্বপরিকল্পিত।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট বাহিনী যেভাবে সহযোগিতা করেছে, সে জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’
গোপালগঞ্জে হামলার ঘটনায় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দায়ীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘হামলাকারীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।’
প্রসঙ্গত, গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রা চলাকালে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেছে দলটি। ওই ঘটনার পর এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা বুধবার সন্ধ্যায় খুলনায় পৌঁছান।
রাজনীতি
এনসিপির কর্মসূচিতে হামলাকারীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার দাবি ছাত্রশিবিরের

গোপালগঞ্জে বুধবার (১৬ জুলাই) জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রায় হামলা চালিয়েছে পতিত স্বৈরাচারের দোসররা। এরই প্রতিবাদে এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বিক্ষোভ মিছিল করে বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির। বিক্ষোভে ছাত্রশিবির নেতারা এই ন্যাক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হামলাকারীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানান।
বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে থেকে শুরু হয়। পরবর্তীতে এটি রাজু ভাষ্কর্য ঘুরে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে ভিসি চত্বর পার হয়ে আবার রাজু ভাষ্কর্যে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
বিক্ষোভে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ বলেন, ক্যান্সার যেভাবে মানুষের শরীরে নিরব ঘাতক হিসেবে থাকে, আওয়ামী লীগও এভাবে লুকিয়ে আছে। গত বছরের ষোল জুলাই তারা আবু সাইদ, ওয়াসিম, শান্তদের শহিদ করেছে। এর এক বছরের মাথায় তারা জুলাই যোদ্ধাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা গোপালগঞ্জের সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার করুন। আপনারা আওয়ামী লীগকে উচিত শিক্ষা দিতে না পারলে জনগণ আপনাদের উচিত শিক্ষা দেবে।
ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম বলেন, আমরা আশা করেছিলাম জুলাইয়ের পরে যে গোষ্ঠী গত ১৬ বছর সন্ত্রাস চালিয়েছে, তাদের বিতাড়িত করা হবে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, তারা গোপালগঞ্জে ঘাঁটি গেড়ে তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা স্পষ্ট করে বলছি, জুলাইয়ের এই বাংলাদেশে খুনি হাসিনা ও তার দোসরদের কোন জায়গা হবে না।
তিনি আরো বলেন, জুলাই রক্তের উপর আপনারা (অন্তবর্তীকালীন সরকার) ক্ষমতায় বসেছেন। আপনারা এখানে ভোগ বিলাসের জন্য বসেননি। আপনারা যদি জুলাইয়ের সাথে গাদ্দারি করেন, খুনি হাসিনার যেই পরিণতি হয়েছিল তার চাইতে খারাপ পরিণতি আপনাদের হবে।
ঢাকা মহানগর উত্তরের শিবির সভাপতি রেজাউল করিম শাকিল বলেন, বাংলাদেশের সমগ্র আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের সকল সন্ত্রাসীরা গোপালগঞ্জে আশ্রয় নিয়েছে। আওয়ামী লীগ জেলাটিকে (গোপালগঞ্জ) নিজেদের সন্ত্রাসীদের ক্যান্টনমেন্টে পরিণত করেছে।গোপালগঞ্জকে মনে হচ্ছে বাংলাদেশের কোন জেলা নয়। গোপালগঞ্জকে মনে হচ্ছে একখন্ড ছোট্ট দিল্লি।
এসময় তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, অবিলম্বে গোপালগঞ্জের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। নয়তো গোপালগঞ্জের যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিরোধী এই অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে সমগ্র বাংলাদেশের ছাত্রজনতা নিয়ে মার্চ করতে বাধ্য হব।
ঢাকা মহানগর পূর্বের সভাপতি আসিফ আব্দুল্লাহ বলেন, জুলাইয়ের এক বছর পার হলেও বাংলাদেশ এখনো ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়নি। এখনো জুলাই যোদ্ধাদের ওপর হামলা হচ্ছে। আমরা গোপালগঞ্জে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার নিন্দা জানাচ্ছি। একইসাথে, তাদের দ্রুত গ্রেফতারে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ বলেন, আমরা কি হাসবো না কাঁদব মাঝে মাঝে তা খুঁজে পাই না। সারাদেশে যখন আওয়ামী লীগের ৩০০ এমপি পালিয়ে যায়, গোপালগঞ্জের গুটি কয়েকের লাফালাফি দেখে আমাদের মাঝে মাঝে হাসি পায়। আবার দুঃখ হয়, ইন্টারিম গভর্নমেন্টের এই ব্যর্থতা দেখে। তিনি অভিযোগ করেন, ইন্টেরিম সরকারের প্রত্যেকটা প্রশাসন প্রত্যেকটা ক্যাটাগরিতে চরমতম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের ক্যান্টনমেন্ট খ্যাত সকল সন্ত্রাসীদের আশ্রয়দাতা যারা, গোপালগঞ্জে তারা আশ্রিত ছিল। তারা সবাই মিলে সন্ত্রাসী হামলা করেছে। ইন্টেরিম গভর্নমেন্ট এখানেও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা সুস্পষ্ট কন্ঠে ইন্টেরিম গভর্নমেন্টকে বলতে চাই, আপনারা যদি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হন আল্লাহর ওয়াস্তে দায়িত্বটা ছেড়ে দেন। বাংলাদেশে অসংখ্য তরুণ-যুবক আছে এই দায়িত্ব পালনের জন্য।