অর্থনীতি
ব্যাংকঋণের ৭৫ শতাংশ পুঞ্জীভূত ১.২ শতাংশ গ্রাহক হিসাবে

দেশের ব্যাংক হিসাবের শূন্য দশমিক ১ শতাংশ হিসাবধারীর কাছে ব্যাংকের মোট আমানতের প্রায় ৪২ শতাংশ অর্থ জমা রয়েছে। এ ধরনের ব্যাংক হিসাবে ১ কোটি টাকা বা তার বেশি অর্থ জমা রয়েছে। ২০১৯ সালে এসব ব্যাংক হিসাবে জমা ছিল ব্যাংকের মোট আমানতের ৪৪ দশমিক ৩ শতাংশ অর্থ। দেশের ১১ হাজার ৩০০টির বেশি ব্যাংক শাখার তথ্য সংগ্রহ করে এই চিত্র পেয়েছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট বা পিআরআই।
গবেষণায় পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পিআরআই বলছে, দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে গ্রাহকের যে ঋণ হিসাব রয়েছে, তার মধ্যে ১ দশমিক ২ শতাংশ হিসাবের বিপরীতে কোটি টাকা বা তার বেশি ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। এই অল্পসংখ্যক হিসাবেই বিতরণ করা হয়েছে মোট ব্যাংকঋণের ৭৫ শতাংশের বেশি অর্থ। পিআরআইয়ের গবেষণায় পাওয়া তথ্যে বলা হচ্ছে, গত পাঁচ বছরে দেশের ১২৬টি উপজেলায় ঋণ হিসাব কমেছে। এর বিপরীতে ৬০টি উপজেলায় ঋণ হিসাব ১০০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। দেশের মোট ব্যাংকঋণের প্রায় ৬৩ শতাংশই বিতরণ করা হয়েছে ঢাকায়। আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রায় সাড়ে ১৫ শতাংশ ঋণ বিতরণ করা হয়েছে চট্টগ্রাম জেলায়। সেই হিসাবে দেশের ব্যাংকঋণের ৭৮ শতাংশই ঢাকা ও চট্টগ্রামে কেন্দ্রীভূত। পিআরআই বলছে, এ তথ্য ভৌগোলিকভাবে আর্থিক বৈষম্যের ইঙ্গিত দেয়।
ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১১ হাজার শাখা থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সংস্থাটি একটি গবেষণাপত্রও তৈরি করেছে। ১৯৭১ থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই গবেষণাপত্রটি তৈরি করা হয়। গতকাল বুধবার গুলশানের লেকশোর হোটেলে ‘বাংলাদেশে আর্থিক খাতের উন্নয়নের গতিধারা’ শীর্ষক সেমিনারে এই গবেষণায় পাওয়া তথ্য তুলে ধরা হয়। সেমিনারটি যৌথভাবে আয়োজন করে পিআরআই, বাংলাদেশ ব্যাংক ও ইন্টারন্যাশনাল গ্রোথ সেন্টার (আইজিসি)।
পিআরআইয়ের চেয়ারম্যান জায়দি সাত্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংস্থাটির প্রধান অর্থনীতিবিদ আশিকুর রহমান। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডেপুটি গভর্নর মো. হাবিবুর রহমান।
গবেষণায় পাওয়া বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে সেমিনারে আশিকুর রহমান বলেন, গবেষণার তথ্য ইঙ্গিত দেয়, বাংলাদেশের সম্পদ ব্যাপকভাবে পুঞ্জীভূত হয়ে আছে। দেশের খুব অল্পসংখ্যক মানুষের হাতে সম্পদের বড় অংশ পুঞ্জীভূত হয়ে আছে।
এদিকে গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংক খাতে সারা দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আমানত জমা রয়েছে ঢাকা জেলায়, যা ব্যাংকের মোট আমানতের ৫১ দশমিক ৭৯ শতাংশ। আমানতের দিক থেকে এর পরের অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা ও নারায়ণগঞ্জ। ঢাকায় মাথাপিছু আমানতের পরিমাণ ৬ লাখ ১৩ হাজার টাকা। এরপর ২ লাখ ৬০ হাজার মাথাপিছু আমানত রয়েছে চট্টগ্রামে। আমানতের দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে থাকা সিলেট জেলায় মাথাপিছু আমানতের পরিমাণ ১ লাখ ৮ হাজার টাকা। গবেষণায় আরও বলা হয়, ৬০টির বেশি জেলায় মাথাপিছু আমানতের পরিমাণ ১ লাখ টাকার নিচে রয়েছে। তবে গত পাঁচ বছরে ৪৭টির বেশি জেলায় আমানতের পরিমাণ ৬০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আমানত বেড়েছে শরীয়তপুর ও জামালপুরে। পাঁচ বছরের ব্যবধানে এই দুই জেলায় আমানত বেড়েছে ৯০ শতাংশ।
গবেষণায় পাওয়া তথ্যে আরও বলা হয়, ১৯৭১ সালে দেশে মোট ব্যাংক শাখা ছিল ১ হাজার ১৯৬টি। ২০২৪ সালে সেই সংখ্যা ১০ গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৩৬১টিতে। ২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ব্যাংকের মোট ঋণের মধ্যে শিল্প খাতে বিতরণ করা হয়েছে ৪০ থেকে ৪২ শতাংশ। একই সময়ে কৃষি খাতে দেওয়া ঋণের হার ছিল ৪ থেকে ৫ শতাংশ।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে পুরোপুরি অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়। আমরা হয়তো ভবিষ্যতের নির্বাচিত সরকারের কাছে আংশিকভাবে পুনর্গঠিত একটি অর্থনীতি দিয়ে যেতে পারব। তবে ভবিষ্যতে যে রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় আসবে, তারা এই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া চলমান রাখবে, এটিই আমাদের প্রত্যাশা। তবে যত দিন রাজনৈতিক ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ হবে না, তত দিন অর্থনৈতিক বিকেন্দ্রীকরণও হবে না। অর্থনৈতিক বিকেন্দ্রীকরণের এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করছে রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর।’
গভর্নর আরও বলেন, এখন প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে রিজার্ভ পুনর্গঠন করা। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ২৭ বিলিয়ন ডলার। এটি শিগগিরই ৩০ বিলিয়ন ডলারের দিকে যাবে।
সেমিনারে আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, দেশে অর্থনৈতিক বৈষম্য প্রকট। আর্থিক ব্যবস্থা মূলত ধনী শ্রেণির পক্ষে কাজ করছে—এটা আগে ধারণা থাকলেও এখন গবেষণার মাধ্যমে তা প্রমাণিত।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংক খাতে যে রাজনৈতিক বোঝাপড়া এবং আর্থিক খাত কেন ঢাকা ও চট্টগ্রামনির্ভর হয়ে আছে, এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে বের করা জরুরি।
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আনিস উর রহমান।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
প্রথম দিনেই ১৭ কর্মী ছাঁটাই করলেন নগদের নতুন সিইও

মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান নগদ এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে যোগদান করেছেন মো. সাফায়েত আলম। তবে তার নিয়োগ অবৈধ এবং তাঁর পদে থাকার কোনো অধিকার নেই বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। এরই মধ্যে সিইও হিসাবে যোগদানের প্রথম দিনেই ১৭ জন কর্মী ছাঁটাই করেছেন তিনি। যার ফলে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি) এবং এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (ইডি) সহ প্রথমে ১৯ জনকে টার্মিনেট করে। তবে পরবর্তীতে দুইজনকে এ তালিকা থেকে বাদ দিয়ে বাকি ১৭ জনকে ছাঁটাই করা হয়। কারণ হিসেবে জানা গেছে, গত আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংক নগদে প্রশাসক বসায় বাংলাদেশ ব্যাংক, এই কর্মকর্তারা বাংলাদেশ ব্যাংককে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছে।
সূত্র জানায়, নগদের অভ্যন্তরীণ নোটিসের মাধ্যমে বলা হয়েছিল কেউ যেন বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), বাংলাদেশ ব্যাংক এবং দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) সহযোগিতা না করে। অর্থাৎ যেসব কর্মকর্তা সেই আদেশ অমান্য করেছে তাদেরকে নতুন সিইও যোগদান করে প্রথম দিনেই ১৭ জনকে চাকরিচ্যুত করেছে।
এদিকে একটি সূত্র অর্থসংবাদকে জানায় নগদের নতুন সিইও যোগদানের প্রথম দিনেই গভীর রাতে তার বাসা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায়। যদিও পরবর্তীতে ছেড়ে দেয় বলে জানা গেছে।
এদিকে গত আগস্টে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নগদে প্রশাসক নিয়োগ করলে নিয়োগ প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ করে উচ্চআদালতের দ্বারস্থ হন মো. সাফায়েত আলম। তবে গত ৭ মে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত নগদে প্রশাসক নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করে। তারপরই ১২ মে প্রতিষ্ঠানটির নতুন সিইও হিসেবে দায়িত্ব নেন তিনি। তবে দায়িত্ব নিয়েই যোগদানের প্রথম দিনে প্রতিষ্ঠানের ১৭ জন কর্মকর্তাকে একযোগে ছাঁটাই করে মো. সাফায়েত আলম। তার এমন কর্মকান্ডে প্রতিষ্ঠানের অন্যান্যে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এর আগে, গত রবিবার নগদের পরিচালনা নিয়ে আন্তমন্ত্রণালয় সভা শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, সিইও হিসেবে মো. সাফায়েত আলম অবৈধ এবং তাঁর পদে থাকার কোনো অধিকার নেই। সাফায়েত আলম জালিয়াতির মাধ্যমে এই পদে বসেছেন বলেও জানান গভর্নর।
গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক যাঁর নামে মামলা করেছে, তাঁকে আবারও নগদের সিইও করা হয়েছে। সরকার তো সেটা মানবে না। এটা তো সরকারের পজিশন না। সরকারের পজিশন বাংলাদেশ ব্যাংক যেটা বলেছে, সেটাই। তবে যেহেতু বিষয়টি এখনো আদালতে বিচারাধীন রয়েছে, এ বিষয়ে এর বেশি কিছু বলা ঠিক নয়।
জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার নগদে প্রশাসক নিয়োগ দেয়। প্রশাসক বসানোর পর নিরীক্ষায় উঠে আসে, নগদ লিমিটেডে বড় ধরনের জালিয়াতি সংঘটিত হয়েছে। ভুয়া পরিবেশক ও এজেন্ট দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে আর্থিক জালিয়াতি এবং অতিরিক্ত ইলেকট্রনিক অর্থ বা ই-মানি তৈরি করা হয়েছে। এসব কারণে ২ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকার হিসাব মিলছে না।
সাবেক সরকারের আমলে নিয়মের বাইরে গিয়ে গ্রাহক বানানো, সরকারি ভাতা বিতরণসহ একচেটিয়া সুবিধা পায় নগদ। প্রতিষ্ঠানটিতে যখন এসব অনিয়ম সংঘটিত হয়, তখন এর পরিচালনায় যুক্ত ছিলেন আওয়ামী লীগের একাধিক সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালী ব্যক্তি। এ ঘটনায় ২৪ জনকে আসামি করে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
১ জুলাই থেকে নতুন হারে মহার্ঘ ভাতা পাবেন সরকারি চাকরিজীবীরা

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নতুন হারে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন হারে মহার্ঘ ভাতা পাচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) এমন সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
নতুন হার অনুযায়ী, ১ম থেকে ৯ম গ্রেডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ১৫ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা পাবেন। পাশাপাশি ১০ম থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মীরা ২০ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা পাবেন। এতে সরকারের বাড়তি ব্যয় হবে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা।
২০১৫ সাল থেকে সরকারি চাকরিজীবীরা প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট সুবিধাও পেয়ে আসছেন। এর পাশাপাশি ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকে বাড়তি ৫ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা সুবিধা দেয়া হচ্ছে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।
তবে, মহার্ঘ ভাতা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশেষ এই ৫ শতাংশ প্রণোদনা সুবিধা বাতিল হয়ে যাবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ঈদের আগেই বাজারে আসছে নতুন নকশার নোট

পবিত্র ঈদুল আজহার আগেই নতুন নকশার টাকা বাজারে ছাড়বে বাংলাদেশ ব্যাংক। ঈদের আগে নতুন নকশার ২০, ৫০ ও ১০০০ টাকার নোট ছাড়া হবে। এসব নোটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি থাকছে না। এতে জুলাই অভ্যুত্থানের গ্রাফিতির পাশাপাশি আগের নকশাও ফিরে আসছে। নতুন নকশার এই তিন ধরনের নোটের ছাপা চলছে গাজীপুরের দ্য সিকিউরিটি প্রিন্টিং কর্পোরেশন (বাংলাদেশ) লিমিটেড বা টাঁকশালে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও টাঁকশালের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০ টাকার নোটের ছাপা প্রায় সম্পন্ন। আগামী সপ্তাহে তা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে হস্তান্তর করবে টাঁকশাল কর্তৃপক্ষ। পরের সপ্তাহে ৫০ ও ১০০০ টাকার নোট বাংলাদেশ ব্যাংককে বুঝিয়ে দেবে টাঁকশাল। এরপর কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিদ্ধান্ত নেবে এই টাকা কবে বাজারে ছাড়বে। প্রথমে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস ও অন্যান্য শাখা এবং পরে ব্যাংকগুলোকে এই টাকা দেওয়া হবে। ঈদের ছুটি শুরুর আগে সীমিতসংখ্যক নোট ছাড়া হতে পারে। কারণ, নতুন টাকার যে চাহিদা, তার তুলনায় ছাপা হচ্ছে কম।
টাঁকশালের কর্মকর্তারা জানান, নতুন নকশার নোট ছাপাতে এক থেকে দেড় বছর সময় লাগে। গত বছরের আগস্টে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। গত ডিসেম্বরে নতুন নকশার নোট বাজারে আনার সিদ্ধান্ত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় চলতি মাসে নতুন নকশার নোট ছাপানো শুরু করে। তবে একসঙ্গে তিনটি নোটের বেশি ছাপানোর সক্ষমতা নেই টাঁকশালের। তাই প্রথম ধাপে ২০, ৫০ ও ১০০০ টাকার নোট ছাপানো হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিসহ নোট নিয়ে বিতর্ক ওঠায় গত ১০ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের চিঠি দিয়ে নতুন নোট বিনিময় কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বলা হয়। পাশাপাশি ব্যাংকের শাখায় যেসব নতুন নোট গচ্ছিত আছে, তা বিনিময় না করে সংশ্লিষ্ট শাখায় সংরক্ষণের কথা বলা হয়। এরপর থেকে নতুন নোটের বিনিময় পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বাজারে ছেঁড়াফাটা নোট বাড়তে থাকে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বাংলাদেশকে ২৪১ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে আইডিবি

বাংলাদেশকে ২৪১ দশমিক ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ দেবে ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইডিবি)। বৃহস্পতিবার (২১ মে) আলজেরিয়ার রাজধানী আলজিয়ার্সে আইডিবির পরিচালনা পর্ষদের বার্ষিক সভায় বাংলাদেশ সরকার ও আইডিবির মধ্যে এ ঋণচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
‘কন্সট্রাকশন অফ ফাইভ ক্লাইমেট রেসিলিয়েন্ট ব্রিজ ইন ময়মনসিংহ ডিভিশন, বাংলাদেশ (বিজিডি ১০৯৬)’ শীর্ষক প্রকল্পে এ ঋণ দিচ্ছে আইডিবি।
এ ঋণচুক্তিতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী এবং ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (আইডিবি) পক্ষে ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. রামি আহমেদ স্বাক্ষর করেন।
চুক্তি স্বাক্ষরকালে আইডিবিতে বাংলাদেশ সরকারের বিকল্প গভর্নর মোহাম্মদ হাসান আরিফ; আলজেরিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের চার্জ দ্যা এ্যাফেয়ার্স রাশেদ আহমেদ এবং ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আল জাসের উপস্থিত ছিলেন।
এ প্রকল্পটি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের আওতায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়িত হবে।
প্রকল্পটির মাধ্যমে ৫টি জলবায়ু অভিঘাত সহনশীল সেতু নির্মাণের ফলে ময়মনসিংহ বিভাগের প্রত্যন্ত এলাকায় সুনামগঞ্জ-জামালপুর সীমান্ত সড়ক এবং শ্যামগঞ্জ-দুর্গাপুর সীমান্ত সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠির আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সম্ভব হবে।
এ প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে সংশ্লিষ্ট এলাকায় বসবাসকারী জনসাধারণের জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিক্রিয়া মোকাবেলা, পরিবহন সুবিধা, সড়ক নিরাপত্তা, শিক্ষার প্রসার, অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টিসহ দারিদ্র ও সামাজিক বৈষম্য হ্রাস সম্ভব হবে।
আইডিবি বাংলাদেশের অন্যতম বিশ্বস্ত বহুপাক্ষিক উন্নয়ন অংশীদার এবং প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অনুদান, প্রকল্প ঋণ, বাণিজ্য অর্থায়ন, বেসরকারি খাতের অর্থায়ন, রপ্তানি ঋণ গ্যারান্টি ইত্যাদির মাধ্যমে অব্যাহত সহায়তা প্রদান করে আসছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এক লাফে তেলের দাম ৩৫ টাকা বাড়াল টিসিবি

সারাদেশে ভর্তুকিমূল্যে পণ্য বিক্রি শুরু করবে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। তবে এবার সংস্থাটি সকল পণ্যের দাম বাড়িয়েছে। বাড়তি দামেই কিনতে হবে তাদের পণ্য। যদিও বাজার মূল্য থেকে অনেক কম দাম রয়েছে এসব পণ্যের। বৃহস্পতিবার (২২ মে) থেকে এ পণ্য বিক্রি শুরু হবে।
দেশব্যাপী প্রতিদিন ৬৯০টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে ভোজ্যতেল, চিনি ও মসুর ডাল বিক্রি করা হবে। এসব পণ্যের মধ্যে প্রতি লিটার তেলে ৩৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে, প্রতি কেজি মসুর ডালে ২০ টাকা ও চিনির দাম ১৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে।
বুধবার (২১ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমনটাই জানিয়েছে টিসিবি। টিসিবি জানিয়েছে, যেকোনো সাধারণ ভোক্তা ঈদের পণ্য কিনতে পারবেন বিশেষ ট্রাকসেলে।
তবে বৃহস্পতিবার থেকে ফ্যামিলি কার্ডধারী নিম্ন-আয়ের পরিবারের মধ্যে পূর্বের মূল্যেই টিসিবির পণ্য বিক্রি হবে। বাড়তি দাম শুধু কার্ডধারী ছাড়া যেকোনো সাধারণ ক্রেতাদের জন্য।
দাম বাড়ানো প্রসঙ্গে টিসিবির এক কর্মকর্তা বলেন, সরকার টিসিবির পণ্য বিক্রিতে বড় ভর্তুকি দিচ্ছে। সে খরচ কমাতে দাম কিছুটা বাড়ানো হচ্ছে। এছাড়া বাজারে সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে। সে বাড়তি দামও সমন্বয় করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঈদুল আজহা উপলক্ষে এ কার্যক্রমের পাশাপাশি যেকোনো ভোক্তার কাছে সারাদেশ প্রতিদিন ৬৯০টি ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে টিসিবির পণ্যাদি বিক্রি হবে। ঢাকায় ৫০টি, চট্টগ্রামে ২০টি, ছয়টি বিভাগীয় শহরে ১০ টি করে অবশিষ্ট ৫৬ জেলা শহরে ১০টি করে ট্রাক থাকবে। ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে বিক্রয় কার্যক্রম ২২ মে থেকে শুরু হয়ে ৩ জুন পর্যন্ত (শুক্রবার ও ছুটির দিনসহ) চলমান থাকবে।
ভোক্তা প্রতি সর্বোচ্চ ২ লিটার তেল, এক কেজি চিনি ও দুই কেজি মসুর ডাল কিনতে পারবেন।
কাফি