রাজনীতি
আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ

শাহবাগে ফ্যাসিবাদের উত্থান হয়েছিল, আর শাহবাগেই তার পতন হলো। শনিবার রাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দলটির সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী সরকারি কার্যদিবসে এই সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
রাতে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহম্মদ ইউনূসের সরকারি বাসভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের এক জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়াও, রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধনী উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের ‘উপদেষ্টা পরিষদের বিবৃতি’ পড়ে শোনান।
বিবৃতিতে বলা হয়, আজ শনিবার, ১০ মে ২০২৫ তারিখে উপদেষ্টা পরিষদের এক বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনী অনুমোদিত হয়েছে। এই সংশোধনী অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল যেকোনো রাজনৈতিক দল, তার অঙ্গসংগঠন বা সমর্থক গোষ্ঠীকে শাস্তি দিতে পারবে।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেসসহ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরিপত্র পরবর্তী কর্মদিবসে জারি করা হবে।
এছাড়াও, আজকের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে জুলাই ঘোষণাপত্র আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত করে প্রকাশ করার সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়েছে।
উল্লেখ্য, শাহবাগের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনার সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সংশোধন করে সরকার পক্ষের আপিল করার বিধান যুক্ত করেছিল।

রাজনীতি
জামায়াতের ৩৬ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বছরপূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ৩৬ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। শনিবার (২৮ জুন) দুপুরে রাজধানীর মগবাজারের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী ১৯ জুলাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে এবং ৫ আগস্ট দেশজুড়ে গণমিছিল করা হবে।
এছাড়াও, পয়লা জুলাই থেকে ৮ আগস্ট ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ পর্যন্ত নানা কর্মসূচি থাকছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- ১৬ জুলাই শহীদ আবু সাঈদ স্মরণে রংপুরে দোয়া ও আলোচনা সভা
- ৬ থেকে ৮ আগস্ট সাংবাদিক ও সুধীজনদের সঙ্গে আলোচনা
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “জুলাই সনদ ঘোষণায় জাতির কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সরকার।” তিনি আরও বলেন, “শহীদ আবু সাঈদ, যার দুঃসাহসে, অকুতোভয় চেতনা সারা দুনিয়াকে নাড়া দিয়েছিল। বাংলাদেশের সব মানুষ ঘর থেকে বের হয়ে এসেছিল, তার সাহসিকতার স্মরণে আমরা রংপুরে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছি। ১৯ জুলাই জামায়াত ঘোষিত যে ৭ দফা, সেটা বাস্তবায়নের জন্য ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আমরা জাতীয় সমাবেশের ডাক দিয়েছি।”
রাজনীতি
ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশে ১৬ দফা ঘোষণা

ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত মহাসমাবেশ থেকে ১৬ দফা দাবি সম্বলিত ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়েছে। শনিবার (২৮ জুন) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশ থেকে দলের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান এই ঘোষণাপত্র পাঠ করেন।
ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, এই মহাসমাবেশ আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে আরেকটি গৌরবোজ্জ্বল মাইলফলক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলো। এটি রাষ্ট্র সংস্কার, বিচার ও সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবির পক্ষে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ধিতাংশ হিসেবে বিবেচিত হবে।
মাওলানা আতাউর রহমান উল্লেখ করেন, গণঅভ্যুত্থানের পর গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনা তাদের কাছে পাঠানো হয়েছিল। তারা সেই প্রস্তাবনা পর্যালোচনা করে বিস্তারিত মতামত জমা দিয়েছেন। ভবিষ্যৎ স্বৈরতন্ত্র রোধ, সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় জনমতের প্রতিফলন নিশ্চিত করার বিষয়টি মুখ্য রেখে তাদের প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে। আজকের মহাসমাবেশ থেকে এই প্রস্তাবনাগুলোকে সক্রিয় বিবেচনায় নেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
১৬ দফা দাবি
সংস্কার নিয়ে দ্বিতীয় দফা আলোচনা চলমান রয়েছে উল্লেখ করে এই জনসমুদ্র থেকে ১৬ দফা দাবি ঘোষণা করা হয়:
১. সংবিধানের মূলনীতিতে ‘আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃস্থাপন: সংবিধানের মূলনীতি হিসেবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের সাথে “আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসই হবে রাষ্ট্র পরিচালনার মূল নীতি” বিষয়টি অবশ্যই পুনঃস্থাপন করতে হবে। কারণ বাংলাদেশের অস্তিত্ব ও সার্বভৌমত্বের জন্য ইসলাম হলো রক্ষাকবচ। এর প্রতিফলন সংবিধানের মূলনীতিতে থাকতে হবে।
২. পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন: সংসদের প্রস্তাবিত উভয়কক্ষে সংখ্যানুপাতিক পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতে হবে।
৩. জুলাই সনদ ঘোষণা: জুলাই’২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশা বাস্তবায়নে বৈষম্যহীন, শোষণ-নিপীড়ন ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে আগামী জুলাই মাসের মধ্যে জুলাই সনদ ঘোষণা করতে হবে।
৪. মৌলিক রাষ্ট্র সংস্কার: আগামী দিনে বাংলাদেশে যাতে কোনো নির্বাচিত স্বৈরাচার, দুর্নীতিবাজ, লুটেরা ও সন্ত্রাসী শ্রেণী রাষ্ট্রক্ষমতাকে ব্যবহার করে জনগণের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে, রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণের মাধ্যমে ধ্বংস করতে না পারে এবং একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসন কায়েম করতে না পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক রাষ্ট্র সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।
৫. জনপ্রশাসনের পুনর্বিন্যাস: সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে জনপ্রশাসনকে ঢেলে সাজাতে হবে। পতিত ফ্যাসিবাদের সহযোগী যারা এখনো জনপ্রশাসনে কাজ করছে, তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত অপসারণ করতে হবে।
৬. অপরাধীদের বিচার ও প্রত্যাবর্তন: পতিত ফ্যাসিবাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং বিদেশে পলাতক অপরাধীদের আটকের জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করতে হবে।
৭. পাচারকৃত অর্থ উদ্ধার: দেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারে সক্রিয়, কার্যকর ও দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
৮. সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি রোধ: দেশে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস ও খুনখারাবি রোধে প্রশাসনকে আরও কার্যকর ও অবিচল হতে হবে।
৯. ভারত-বাংলাদেশ চুক্তি প্রকাশ ও বাতিল: ভারতের সাথে কৃত সকল চুক্তি জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে এবং সকল দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল করতে হবে।
১০. স্থানীয় নির্বাচন সম্পন্ন করা ও নতুন বিধান: জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে সকল পর্যায়ে স্থানীয় নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। আগামীতেও জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সকল স্থানীয় নির্বাচনের বিধান প্রণয়ন করতে হবে।
১১. নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা: চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ, ঋণখেলাপি ও সন্ত্রাসীদেরকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে।
১২. সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ: জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্বে দেশে অবশ্যই একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। সকল দলের জন্য সমতল পরিবেশ এবং সমান সুযোগ তৈরি ছাড়া কোনো রাজনৈতিক পক্ষ বা ভিন্ন কোনো দেশের চাপে অতীতের মতো যেনতেন একটি নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হলে তা কিছুতেই মেনে নেওয়া হবে না।
১৩. নাগরিক হয়রানি বন্ধ: ঘুষ, দুর্নীতিসহ সকল প্রকার নাগরিক হয়রানি বন্ধ করতে হবে। কোনো নিরপরাধ ব্যক্তির বিরুদ্ধে শুধু রাজনৈতিক কারণে হয়রানিমূলক মামলা বন্ধ করতে হবে। হয়রানিমূলক সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। দেশের কোথাও কোনো রকম মব সৃষ্টির সুযোগ দেওয়া যাবে না। মব সৃষ্টিকারীদের দমনে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ইসলাম ও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিরোধী যে কোনো কার্যক্রমে দ্রুততম সময়ে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে গণবিক্ষোভ পুঞ্জীভূত না হয়।
১৪. সাম্রাজ্যবাদ, সম্প্রসারণবাদ ও আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য: দেশ বিরোধী ও ইসলাম বিরোধী সকল ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত মোকাবেলায় সাম্রাজ্যবাদ, সম্প্রসারণবাদ ও আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
১৫. দেশপ্রেমিক ও ইসলামী শক্তির ঐক্য: আগামী জাতীয় নির্বাচনে দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী শক্তির বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক ও ইসলামী শক্তির ইস্পাতকঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
১৬. ইসলামের আদর্শের অনুশীলন: রাষ্ট্রের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের সুরক্ষা, জনগণের জান-মাল ও ইজ্জতের নিরাপত্তা বিধান, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সুরক্ষা, সর্বত্র শান্তি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা এবং কাঙ্ক্ষিত উন্নতি ও অগ্রগতির লক্ষ্যে রাষ্ট্রের সকল পর্যায়ে ইসলামের সুমহান আলোকিত আদর্শের অনুশীলন করতে হবে।
রাজনীতি
ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশে ১৬ দফা ঘোষণা

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত মহাসমাবেশ থেকে ১৬ দফা দাবি ঘোষণা করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। শনিবার (২৮ জুন) দুপুরে ইসলামী আন্দোলনের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান মহাসমাবেশের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন।
ঘোষণাপত্রে বলা হয়, গণঅভ্যুত্থানের পর গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে ৬টি কমিশনের প্রস্তাবনা আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছিল। আমরা সেই প্রস্তাবনা পর্যালোচনা করে বিস্তারিত মতামত দিয়েছি। ভবিষ্যৎ স্বৈরতন্ত্র রোধ করা, সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় জনমতের প্রতিফলন নিশ্চিত করার বিষয়টি মূখ্য রেখে আমরা আমাদের প্রস্তাবনা জমা দিয়েছি। আমাদের প্রস্তাবনাগুলোকে সক্রিয় বিবেচনায় নেওয়ার জন্য আজকের মহাসমাবেশ থেকে আহ্বান জানাচ্ছি।
সংস্কার নিয়ে দ্বিতীয় দফা আলোচনা চলমান রয়েছে। সেটা বিবেচনায় নিয়ে আজকের এই জনসমুদ্র থেকে আমরা ১৬ দফা ঘোষণা করছি।
১. সংবিধানের মূলনীতি হিসেবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের সাথে ‘আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসই হবে রাষ্ট্র পরিচালনার মূল নীতি’ এ বিষয়টি অবশ্যই পুনঃস্থাপন করতে হবে। কারণ বাংলাদেশের অস্তিত্ব ও সার্বভৌমত্বের জন্য ইসলাম হলো রক্ষাকবচ। তার প্রতিফলন সংবিধানের মূলনীতিতে থাকতে হবে।
২. সংসদের উভয় কক্ষে সংখ্যানুপাতিক পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন।
৩. জুলাই ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশা বাস্তবায়নে বৈষম্যহীন শোষণ নিপীড়ন ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে আগামী জুলাই মাসের মধ্যে জুলাই সনদ ঘোষণা করতে হবে।
৪. আগামী দিনে বাংলাদেশে যাতে কোনো নির্বাচিত স্বৈরাচার, দুর্নীতিবাজ, লুটেরা ও সন্ত্রাসী শ্রেণি রাষ্ট্রক্ষমতাকে ব্যবহার করে জনগণের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে, রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণের মাধ্যমে ধ্বংস করতে না পারে এবং একদলীয় কর্তৃত্ববাদী শাসন কায়েম করতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনী মৌলিক রাষ্ট্রসংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।
৫. সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড অপরিহার্য। সেটা নিশ্চিত করার জন্য জনপ্রশাসনকে ঢেলে সাজাতে হবে।
পতিত ফ্যাসিবাদের সহযোগী যারা এখনও জনপ্রশাসনে কাজ করছে তাদেরকে চিহ্নিত করে দ্রুত অপসারণ করতে হবে। না হলে তারা দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা করেই যাবে।
৬. পতিত ফ্যাসিবাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং বিদেশে পালাতক অপরাধীদের আটক করার জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা আরও জোরদার করতে হবে।
৭. দেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারে সক্রিয়, কার্যকর ও দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
৮. দেশে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস ও খুন-খারাবি রোধে প্রশাসনকে আরও কার্যকর ও অবিচল হতে হবে।
৯. ভারতের সাথে করা সকল চুক্তি জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে এবং সকল দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল করতে হবে।
১০. জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে সকল পর্যায়ে স্থানীয় নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। আগামীতেও জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সকল স্থানীয় নির্বাচনের বিধান প্রণয়ন করতে হবে।
১১. চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ, ঋণখেলাপি ও সন্ত্রাসীদেরকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে।
১২. জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্বে দেশে অবশ্যই একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। সকল দলের জন্য সমতল পরিবেশ এবং সমান সুযোগ তৈরি ছাড়া কোনো রাজনৈতিক পক্ষ বা ভিন্ন কোনো দেশের চাপে অতীতের মতো যেনতেন একটি নির্বাচনের জন্যে তফসিল ঘোষণা করা হলে তা কিছুতেই মেনে নেওয়া হবে না।
১৩. ঘুষ, দুর্নীতিসহ সকল প্রকার নাগরিক হয়রানি বন্ধ করতে হবে। কোনো নিরপরাধ ব্যক্তির বিরুদ্ধে শুধু রাজনৈতিক কারণে হয়রানিমূলক মামলা বন্ধ করতে হবে। হয়রানিমূলক সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। দেশের কোথাও কোনোরকম মব সৃষ্টির সুযোগ দেওয়া যাবে না। মব সৃষ্টিকারীদের দমনে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ইসলাম ও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিরোধী যেকোনো কার্যক্রমে দ্রুততম সময়ে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে গণবিক্ষোভ পুঞ্জীভূত না হয়।
১৪. দেশবিরোধী ও ইসলাম বিরোধী সকল ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত মোকাবেলায় সাম্রাজ্যবাদ, সম্প্রসারণবাদ ও আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
১৫. আগামী জাতীয় নির্বাচনে দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী শক্তির বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক ও ইসলামী শক্তির ইস্পাতকঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
১৬. রাষ্ট্রের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের সুরক্ষা, জনগণের জানমাল ও ইজ্জতের নিরাপত্তা বিধান, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সুরক্ষা, সর্বত্র শান্তি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা এবং কাঙ্ক্ষিত উন্নতি ও অগ্রগতির লক্ষ্যে রাষ্ট্রের সকল পর্যায়ে ইসলামের সুমহান আলোকিত আদর্শের অনুশীলন করতে হবে।
কাফি
রাজনীতি
ইসলাম খেলাধুলার ব্যবস্থা করেছে শুধু ট্রফি অর্জনের জন্য নয়: শফিকুল ইসলাম মাসুদ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, ইসলাম আপনাকে খেলাধুলার ব্যবস্থা করে দিয়েছে এই জন্য নয়; যে আপনি শুধু একটা ট্রফি অর্জন করবেন। মুমিনদের গোপন তিনটি রহস্যের মধ্যে একটি হচ্ছে মানুষের কাছে দিনের দাওয়াত পৌঁছে দেওয়া।
শনিবার (২৮ জুন) সকাল ১০টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ডাক্তার বাড়িতে শাহবাগ মানব কল্যাণ সংস্থার আয়োজিত এক ক্রীড়াসামগ্রী বিরতণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। ক্রীড়া পরিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন ঢাকার সৌজন্যে এবং পল্টন নাগরিক ফোরামের সভাপতি মো. ওবায়দুল্লাহর তত্বাবধানে প্রাপ্ত এ ক্রীড়াসামগ্রী বিরতণ করা হয়।
তিনি বলেন, আপনারা দাওয়াতী কাজ করেন। দিনের দাওয়াত মানুষের কাছে নিয়ে যান; আপনার জীবনের যা আরাম করার দরকার তার চেয়ে বেশি আপনি করে ফেলছেন এখন আরাম করা বাদ দিতে হবে। আপনার আরাম করা আল্লাহ নিষেধ করেন নাই, প্রয়োজনীয় আরাম করতে বলেছেন। আপনাকে আরাম করার জন্য পৃথিবীতে পাঠানো হয় নাই। আপনাকে পরিশ্রম করার জন্য পাঠানো হয়েছে। আর এই পরিশ্রমের পথ হচ্ছে আল্লার পথ। পরিশ্রমের পথ আল্লার হলে আরামের পথ শয়তানের। আল্লাহ আপনাকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন পরিশ্রম করার জন্য, কষ্ট করার জন্য। দুনিয়াতে কষ্ট করবেন জান্নাতে ভোগ করবেন; এখানে ভোগ করলে জান্নাতের ভোগ থেকে বঞ্চিত হবেন। এখন সিদ্ধান্ত আপনার; আপনারা দাওয়াতী কাজ করেন।
ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, বডিফিটনেস এমনভাবে করবেন; আমাদের সেনাবাহিনীর সংখ্যা বাংলাদেশে যা আছে; ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা বাংলাদেশে হলে ১৮ কোটি মানুষদের মধ্যে যারা ভয়প্রাপ্ত তারা প্রত্যেকে এ রাষ্ট্রের একজন সেনাবাহিনীর সদস্য হিসেবে গণ্য হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। এতে সভাপতিত্ব করেন জামায়াতে ইসলামীর শাহবাগ থানার আমীর ও শাহবাগ মানব কল্যাণ সংস্থার সভাপতি আহসান হাবীব। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলার ক্রিড়া অফিসার এস আই এম ফেরদৌস আলম।
এছাড়া ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড হেড অব ব্রাঞ্চ এএএম মাজহারুল ইসলাম, জনপ্রিয় মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও চ্যানেল এস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুজিত চক্রবর্তী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসংবাদ/কাফি
রাজনীতি
ক্ষমতায় গেলে ১৮ মাসে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান করা হবে: আমীর খসরু

ক্ষমতায় গেলে ১৮ মাসে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ। আজ শনিবার (২৮ জুন) সকালে সিলেট বিজনেস ডায়লগ অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
ক্ষমতায় গেলে বিএনপি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেবে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে জানিয়ে আমীর খসরু বলেন, ন্যূনতম এসএসসি পাস তরুণ-যুবকদেরও আইটি খাতে চাকরি দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, ব্যবসাকে রাজনীতির বাইরে রাখতে হবে, ফ্যাসিস্টমুক্ত করতে হবে। ক্ষমতায় গেলে প্রথমদিন থেকেই ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে বিএনপি সরকার কাজ করবে। একদিনও দেরি হবে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, যারা কৃষিতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী, তাদেরকে সেই সুযোগ তৈরি করে দেওয়া হবে। এ ছাড়া কৃষিপণ্য বিদেশে রপ্তানির লক্ষ্যেও বিএনপি কাজ করবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু, সাবেক সভাপতি ফজলুল হক, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কাফি