রাজনীতি
আ. লীগ নিষিদ্ধ না হলে স্বাধীনতা সংকটে পড়বে: নুর

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হলে এ দেশে আবার স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব নিয়ে সংকট তৈরি হবে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।
শনিবার (১০ মে) রাজধানীর পুরানা পল্টনে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মিছিলের আগে এক সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানে আমরা যারা নেতৃত্ব দিয়েছি— বড় বড় রাজনৈতিক দল অতীতে যেভাবে সমঝোতা করে ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়েছে, রাজনীতি করেছে তাদের আগে আঘাত পড়বে আমাদের বুকে। কাজেই এটা আমাদের অবস্থান পরিষ্কার, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আর কোনো আপস করা হবে না এবং সরকারকে আর কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না।
নুরুল হক নুর বলেন, এ আন্দোলনে আমাদের কিছু ছাত্রনেতা সামনে ছিল। আমরা নাহিদকে জিজ্ঞেস করতে চাই, সাত মাস সরকারে থেকে কেন এই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে পদক্ষেপ নিল না। নাহিদ, আসিফ, মাহফুজ সরকারের বিশেষ সহকারী ছিল। সেখান থেকে প্রমোশন পেয়ে তারা উপদেষ্টা হয়েছেন। তারা যদি উপদেষ্টা পরিষদের মিটিংয়ে বলতেন যে, মাননীয় উপদেষ্টা এবং উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যরা আমাদের ভাইয়েরা রক্ত দিয়ে আন্দোলন সফল করেছে। তাদের ত্যাগ ছাড়া আমাদের এখানে আসার কোরো সুযোগ ছিল না। তাদের কৃপায় আমরা এখানে এসেছি।
তাদের দাবি হচ্ছে ফ্যাসিবাদকে চিরতরে নির্মূল করে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা করা। আপনি প্রধান উপদেষ্টা, আপনার প্রথম সিদ্ধান্ত ফ্যাসিবাদকে এ দেশ থেকে চিরতরে নিষিদ্ধ করা। তারা কি বলেছেন, বলেন নাই। তারা আন্দোলনের মাধ্যমে নেতা হয়ে পুরানো বন্দোবস্তের মাধ্যমেই ক্ষমতার অপপ্রয়োগ, নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্য এবং নিজেরা দল গঠনের মধ্যে ব্যস্ত থেকেছে।
তিনি আরও বলেন, যমুনা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন। এটি একটি স্পর্শকাতর জায়গা। একটা দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল যাদের সমর্থনে এই সরকার আছে, সেই জায়গা থেকে কী আমরা যমুনার সামনে ঘেরাও করতে পারি? আমরা তো যমুনার সামনে যেতে পারি না। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলাপ আলোচনার অনেক রাস্তা আছে। এতদিন খবর নেই, হঠাৎ করে তারা রাতের মধ্যে বিভিন্ন জনকে ডেকে লোকজনকে জড়ো করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের আজকে অনুরোধ করা হয়েছে আমরা যেন নিরাপত্তার কারণে ওই এলাকাটি এড়িয়ে চলে। আমরা সরকারের প্রতি সহনশীল, আমরা যমুনার দিকে যাব না। আমরা একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে এসেছি।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, আমাদের কথা পরিষ্কার, জাতীয় সংলাপ করেন আর নাই করেন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ সিদ্ধান্তে আসতে হবে। অন্যথায় আজকে আমরা যমুনা ঘেরাও না করে আপনাদের ছাড় দিচ্ছি। পরবর্তীতে কোনো রাজপথের কর্মসূচিতে ছাড় দেওয়া হবে না।
উপদেষ্টা পরিষদকে দুর্বল ও ভঙ্গুর মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই উপদেষ্টা পরিষদ দিয়ে বিপ্লব পরবর্তী সরকার চলছে না। তথাকথিত সুশীল কিংবা এনজিও ব্যক্তিত্ব দিয়ে এই সরকার চলবে না। গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন হবে না। উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করতে হবে।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, সরকার সাধারণ মানুষের অনুভূতি ও ন্যূনতম সেন্টিমেন্ট বোঝার চেষ্টা করছে না। সরকার যদি বুঝতে পারত তাহলে চেয়ারে বসার পরপরই তারা আওয়ামী লীগকে গণহত্যার দায়ে নিষিদ্ধ করত। এখন পর্যন্ত সরকারের নয় মাস অতিবাহিত হয়েছে কিন্তু তারা টেস্ট আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
মিছিলের আগে বিক্ষোভ সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের অন্যান্য নেতারা বক্তব্য দেন। বক্তব্য শেষে তারা পল্টন এলাকায় মিছিল করেন। এরপর প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয় স্মারকলিপি দিতে যান তারা।

রাজনীতি
একাত্তরকে ভুলিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে: মির্জা ফখরুল

দেশে একাত্তরকে ভুলিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার বিকালে জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আজকে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের কথা বার বার স্মরণ করতে চাই। এজন্য চাই যে, ১৯৭১ সাল আমাকে একটা স্বাধীন দেশ দেওয়া হয়, ভূখণ্ড দেওয়া হয়, আমাকে একটা স্বাধীন সত্ত্বা দেওয়া হয় এবং সেজন্য আজকে আমার অস্তিত্ব আছে, আমি টিকে আছি। আমি স্মরণ করতে চাই চব্বিশের জুলাই-আগস্টের শহীদদের কারণ আমাদের একটা গণতন্ত্রের স্বপ্ন দেখার সুযোগ করে দিয়েছি।’
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমি কয়েকদিন আগে চিকিৎসার জন্য ব্যাংককে গিয়েছিলাম। ব্যাংককে গিয়ে আমি আমার বন্ধুদের কাছে শুনলাম- ওখানে এখন ব্যাংককে সবচাইতে যেগুলো আপনার অভিজাত এলাকা সেই অভিজাত এলাকাগুলোতে বাড়ি ভাড়ার ধুম পড়ে গেছে। সেই বাড়িগুলো ভাড়া করছেন সমস্ত আওয়ামী লীগের বিতাড়িত নেতারা। তারা একটা যে গাড়ি কিনছেন সেই গাড়িগুলো কোনোটাই আপনার ২ কোটি ৩ কোটি টাকার কমে নয়। এসব টাকা কোথা থেকে গেল? এ দেশের সম্পদকে তারা প্রচার করেছেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, এ দুইটা জিনিসই আমাদের মাথায় রাখতে হবে। আজকে একটা প্রচ্ছন্ন প্রচেষ্টা আছে একাত্তরকে ভুলিয়ে দেওয়ার। এটার বিরুদ্ধে কিন্তু আমাদের সমস্ত বাংলাদেশের নাগরিককে তাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। চব্বিশের জুলাই-আগস্ট যেভাবে সত্য ঠিক একইভাবে সত্য কিন্তু একাত্তরের নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ। সেই মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন কে? শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে একটা নতুন করে কথা উঠছে ষড়যন্ত্র চলছে- আপনার বাংলাদেশে এখানে এক ধরনের উগ্রবাদ মাথা চালা দিয়ে উঠছে। এ উগ্রবাদকে মাথা চালা দিয়ে উঠতে দেওয়া যাবে না। এ উগ্রবাদকে মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে দেওয়া যাবে না। তাহলে আমাদের বাংলাদেশের যে আত্মা, যে সোল সেই অস্তিত্ব আমাদের রক্ষা পাবে না। এই কথাটা আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে।
তিনি বলেন, আমি কথাটা আজকে এজন্য আরও বেশি করে বলছি- এইখানে আপনাদের সবাইকে বিভক্তি বিভাজনের রাজনীতি কেউ করবেন না। অতীতে যা হয়েছে হয়েছে। এখন বাংলাদেশের অস্তিত্বের জন্য, বাংলাদেশকে টিকিয়ে রাখার জন্য, বাংলাদেশের সামনে নেওয়ার জন্য, বাংলাদেশ আরও আরও উন্নত করবার জন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের সম্মানে এ মতবিনিময় অনুষ্ঠান হয়। বিকাল ৪টা ১৫ মিনিটে লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যুক্ত হলে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা উলুধ্বনি এবং ঢাক-ঢোল বাজিয়ে তাকে অভ্যর্থনা জানায় এবং তারেক রহমান হাত নেড়ে এ অভিবাদনের জবাব দেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর যারা আমাদের ভুল বুঝিয়ে আমাদের ভোট নিয়ে আমাদের শাসন করেছেন তারা ১৫ বছর আমাদের বন্ধু হিসেবে মনে করেননি। তারা মনে করেছেন প্রজা হিসেবে। আমাদের ওপর অত্যাচার করেছে নির্যাতন করেছে, আমাদের সমস্ত দেশের সম্পদ লুণ্ঠন করে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি কয়েকদিন আগে চিকিৎসার জন্য ব্যাংককে গিয়েছিলাম। ব্যাংককে গিয়ে আমি আমার বন্ধুদের কাছে শুনলাম- ওখানে এখন ব্যাংককে সবচাইতে যেগুলো আপনার অভিজাত এলাকা সেই অভিজাত এলাকাগুলোতে বাড়ি ভাড়ার ধুম পড়ে গেছে। সেই বাড়িগুলো ভাড়া করছেন সমস্ত আওয়ামী লীগের বিতাড়িত নেতারা। তারা একটা যে গাড়ি কিনছেন সেই গাড়িগুলো কোনোটাই আপনার ২ কোটি ৩ কোটি টাকার কমে নয়। এসব টাকা কোথা থেকে গেল? এ দেশের সম্পদকে তারা প্রচার করেছেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা সবাই জানেন এটা নতুন করে বলার কিছু বলতে চাই না। শুধু এইটুকু বলতে চাই যে, আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের সমস্ত গণতান্ত্রিক যে কাঠামো সে কাঠামো ভেঙে ধ্বংস করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগ এদেশের সম্পদকে লুণ্ঠন করে বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। প্রায় 88 লাখ কোটি টাকা তারা বিদেশে পাচার করেছে।
তিনি বলেন, আর আমাদের সম্পদ বলতে আর কিছু নেই সব পাচার হয়ে গেছে। আমাকে একজন অর্থনীতিবিদ জিজ্ঞেস করছিলেন- দেখে শুনে তো মনে হচ্ছে এর পরে তোমরাই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে আসবে জনগণ তোমাদের ওপরে আস্থা রাখবে। তো তোমরা দেশ চালাবে কোথা থেকে? কারণ টাকা তো সব পাচার হয়ে গেছে অর্থাৎ আমাদের দেশের অর্থনীতির অবস্থা কী করুণ করেছে সেই জিনিসটাই শুধু আমি আপনাদেরকে বললাম।
অসাম্প্রদায়িক একটি ‘রেইনবো রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠাই বিএনপি তথা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের লক্ষ্য উল্লেখ করে ‘আগামীর বাংলাদেশ হবে’ গঠনে সকলকে ঐক্য হওয়ার আহ্বানও জানান বিএনপি মহাসচিব।
রাজনীতি
আমাদের দাবি এনসিওর করে নির্বাচন দিতে হবে: জামায়াত

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে কোনো সমস্যা নেই। তবে নির্বাচনকে সামনে রেখে এখনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হয়নি। আমাদের দাবি এনসিওর করে নির্বাচন দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ তথ্য জানানা জামায়াতের এ নেতা। হামিদুর রহমান আযাদের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার এবং ঢাকা মহানগর উত্তরের নায়েবে আমির ও কেন্দ্রীয় কমিটির কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুর রহমান মূসা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণের বিষয়ে সবার বক্তব্য আমলে নিতে সিইসিকে আহ্বান জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। নির্বাচনে সন্ত্রাস-অনিয়ম বন্ধ করতে হলে পিআর পদ্ধতিতে ভোট করতে হবে। সবাই সবকিছু নাও চাইতে পারে, তত্ত্বাবধায়কও অনেকে চায়নি। জাতির জন্য কল্যাণকর পিআর পদ্ধতির নির্বাচন। জনগণ চাইলে অবশ্যই পিআর পদ্ধতি মানতে হবে। এই দাবি নিয়ে মাঠে থাকবে জামায়াত, পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতিও নেবে।
নিজের আসন ছাড়া আর কোনো আসনে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন কি-না, এমন প্রশ্নে হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে আমরা কথা বলেছি।’
পিআর (সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি) ছাড়া জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে যাবে কি-না, এমন প্রশ্নে হামিদুর রহমান আযাদ সুস্পষ্ট করে কিছু বলেননি। তিনি বলেন, ‘ফেয়ার ইলেকশন ব্যাপারে অলওয়েজ আমরা সিনসিয়ার ছিলাম। এই পদ্ধতিটাও আমরা সিনসিয়ারলি মনে করি যে দেশের জন্য কল্যাণকর হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সহায়ক হবে একটা বেস্ট পদ্ধতি।’ পিআর পদ্ধতিতে ভোটারদের যথাযথ মূল্যায়ন হবে বলেও জানান তিনি।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, আমরা গ্রহণযোগ্য সব নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্ব করেছি। সেই হিসেবে আমরা তিনশ আসনের প্রার্থী দিয়ে মাঠে-ময়দানে জনগণের কাছে যাচ্ছি। আমরা জনমত গঠনের কাজ করছি।
এর আগে গত রোববার নির্বাচনী প্রস্তুতির সার্বিক অগ্রগতি জানতে ইসির সঙ্গে বৈঠক হয়েছিল বিএনপি প্রতিনিধি দলের।
রাজনীতি
রাজনীতি দিয়ে রাজনীতি মোকাবিলা করুন: তারেক রহমান

প্রতিপক্ষ যারা বিভিন্ন শর্তের বেড়াজালে বিএনপির বিজয় ঠেকাতে চেষ্টা করছেন, তাদেরকে রাজনীতি দিয়ে রাজনীতি মোকাবিলা করার আহ্বান জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য দেওয়ার সময় প্রতিপক্ষের প্রতি এ আহ্বান জানান তিনি।
তারেক রহমান বলেন, জনগণের উত্তরণের যাত্রা সহজ নয়। সরকার ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের কথা বললেও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন পক্ষের নিত্যনতুন শর্ত ও প্রস্তাবনা জনমনে প্রশ্ন সৃষ্টি করছে।
এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, সুষ্ঠু ভোট হলে বিএনপি ক্ষমতায় যাবে এমন ভেবে ‘পলাতক স্বৈরাচার’ নানা ষড়যন্ত্র করছে। কিছু পক্ষও বিএনপি ঠেকানোর রাজনীতি করছে।
সেসব রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে উদ্দেশ্য করে তারেক রহমান বলেন, যারা বিএনপির বিজয় ঠেকাতে নানা শর্তের বেড়াজালের কথা বলছেন তাদের বলবো, রাজনীতি দিয়ে রাজনীতি মোকাবিলা করুন।
পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত নয়। পিআর পদ্ধতিতে ভিন্ন মত থাকলেও সেটিই রাজনৈতিক সৌন্দর্য, আর সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় এ সংকট সমাধান সম্ভব।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সতর্ক করে বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে যারা পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছেন, তারা গণতন্ত্রের উত্তরণের পথে বাধা সৃষ্টি করছেন। গণতান্ত্রিক শক্তির বিরোধ এমন পর্যায়ে নেওয়া যাবে না, যাতে করে ‘পলাতক স্বৈরাচার’ সুযোগ পায়।
আগামী নির্বাচনে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সমর্থন কামনা করে তারেক রহমান বলেন, ধর্মীয় পরিচয়কে পুঁজি করে কেউ যাতে রাজনীতি করতে না পারে সেদিকেও সতর্ক থাকতে হবে।
রাজনীতি
শিল্পী ও মিডিয়ার মানুষরা অনুভূতি বিসর্জন দিয়েছেন: রিজভী

১৫ আগস্ট উপলক্ষে দেশের অনেক সেলিব্রিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়েছেন। এ নিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, অভিনয়শিল্পী ও মিডিয়ায় যুক্ত মানুষদের তো সবচেয়ে সংবেদনশীল হওয়ার কথা। অথচ যারা ‘পানি লাগবে পানি’ বলে গুলিবিদ্ধ বন্ধুর জন্য ছুটে গিয়েছিল, সেই দৃশ্য তাদের মনকে একটুও নাড়া দিল না। তারা শোকের নামে পোস্ট দিচ্ছেন, নানা প্রশংসা করছেন। আসলে তারা তাদের সেই অনুভূতির জায়গাটা বিসর্জন দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বেঙ্গল মাল্টিমিডিয়া স্টুডিওতে প্রামাণ্য চলচ্চিত্র ‘৩৬ জুলাই’-এর প্রিমিয়ার অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, একটি দলের প্রতিষ্ঠাতাকে নিয়ে বই লেখার পুরস্কারস্বরূপ বিগত সরকার একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে সর্বোচ্চ পদে পদোন্নতি দিয়েছে। একইভাবে শিল্প–সংস্কৃতি অঙ্গনের অনেক তারকাকেও রানওয়ের পাশে ফ্ল্যাট ও মোটা অঙ্কের অর্থ দেওয়া হয়েছিল।
ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর ও ছাত্রনেতা টুকুর উদাহরণ টেনে তিনি আরও বলেন, আন্দোলনের সময় তাদের ওপরও নির্যাতন চালানো হয়েছে। ডাকসুর ভিপির গায়ে হাত দিয়েছে ফ্যাসিস্ট সরকার—এটাই প্রমাণ করে তাদের মানসিকতা কতটা দমনমূলক।
বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, রাষ্ট্রের অর্থ লুট করে বিদেশে পাচার করা হয়েছে প্রায় ২৭ লাখ কোটি টাকা। জনগণের টাকাকে শেখ হাসিনা দলের ও পরিবারের স্বার্থে ব্যবহার করেছেন। সেই বঞ্চনারই বহিঃপ্রকাশ হলো জুলাই গণ-অভ্যুত্থান।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর শরাফত আলী সপু, গণঅধিকার পরিষদের নেতা নুরুল হক নুর, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের এম আব্দুল্লাহ, আরটিভির বার্তা প্রধান ইলিয়াস হোসেন, কবি রেজা উদ্দিন স্টালিন, সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতা রাশেদুল হক, শিক্ষক মতিনুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
কাফি
রাজনীতি
মালয়েশিয়া সফরে যাচ্ছেন নাহিদ ইসলাম

২০২৪ সালের ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নায়ক, অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম আগামী ২২ থেকে ২৪ আগস্ট মালয়েশিয়া সফর করবেন। তার এ সফরের সার্বিক আয়োজন করছে এনসিপি ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্স – মালয়েশিয়া চ্যাপ্টার।
তিন দিনের এ সফরে তিনি প্রবাসী বাংলাদেশি সম্প্রদায়, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতিনিধি, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী ও বিভিন্ন পেশাজীবীর সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এছাড়াও মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন তিনি।
সফরের অংশ হিসেবে একটি গ্র্যান্ড পাবলিক ইভেন্ট আয়োজন করা হবে, যেখানে ৩০০-র বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি অংশ নেবেন। এ মহাসমাবেশে রাজনৈতিক নেতা, জুলাই বিপ্লবের অংশগ্রহণকারী, ছাত্রছাত্রী ও প্রবাসীরা উপস্থিত থাকবেন।
আলোচনায় বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তন, প্রবাসীদের অধিকার, মানবাধিকার সুরক্ষা এবং রাষ্ট্রগঠনে প্রবাসীদের ভূমিকা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আয়োজকদের মতে, সফরের মূল উদ্দেশ্য হলো গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশের নতুন সম্ভাবনা প্রবাসীদের সঙ্গে ভাগাভাগি করা এবং রাষ্ট্রগঠনে তাদের আরও সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত করা। মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত প্রবাসীদের মধ্যে সফরকে ঘিরে ইতিমধ্যেই উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে।
এনসিপি ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্সের কেন্দ্রীয় সদস্য মো. এনামুল হক বলেন, নাহিদ ইসলামের সফর প্রবাসীদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হবে।