আন্তর্জাতিক
পাকিস্তান থেকে পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করল ভারত

কাশ্মিরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তীব্র উত্তেজনা চলছে দক্ষিণ এশিয়ার দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তান থেকে সব ধরনের পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করেছে ভারত।
আজ শনিবার (৩ মে) এক প্রতিবেদনে ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স ও ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি নিউজ এ তথ্য জানায়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা ও জনস্বার্থের কথা বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কোনো ব্যতিক্রম থাকলে তা সরকারের পূর্বানুমোদনের ভিত্তিতে বিবেচিত হবে। এর ফলে ভারত-পাকিস্তানের একমাত্র স্থল বাণিজ্যপথ ওয়াঘা-আটারি সীমান্ত ইতোমধ্যেই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
এনডিটিভির বরাতে জানা গেছে, জাতীয় নিরাপত্তা ও জননীতির স্বার্থেই এ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দিল্লি। আদেশে আরও বলা হয়, নিষেধাজ্ঞার কোনো ব্যতিক্রম ঘটাতে হলে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন নিতে হবে।
ভারতের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর থেকেই পাকিস্তানি পণ্যের উপর ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে আমদানি প্রায় বন্ধ করে দেয় দেশটি। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পাকিস্তান থেকে আমদানি ছিল মোট ভারতের আমদানির ০.০০০১ শতাংশেরও কম।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক
পাকিস্তানের পাল্টা হামলা, ৩ ভারতীয় নিহত

দুই সপ্তাহ আগে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগামে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের কমপক্ষে নয় স্থানে হামলা চালিয়েছে ভারত। পাকিস্তান দাবি করেছে যে, ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে তারাও কাশ্মীরের ভিম্বর গলি অঞ্চলে গোলা নিক্ষেপ করেছে।
ওই অঞ্চলের স্থানীয় বাসিন্দারা বিবিসিকে জানিয়েছেন, ভিম্বর গলির কাছে মেন্ধার এলাকার বেশ কয়েকটি জায়গা থেকে বিস্ফোরণের আওয়াজ পেয়েছেন তারা।
ভারতের সেনাবাহিনী দাবি করেছে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বিনা প্ররোচনায় নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপার থেকে গুলি চালিয়েছে। এই ঘটনায় তিনজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। শ্রীনগর শহরের আকাশেও সামরিক বিমান উড়ে যাওয়ার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে।
এদিকে ভারত-পাকিস্তানের চলমান এই সংঘাতের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস। তিনি উভয় দেশের সর্বোচ্চ সামরিক সংযমের আহ্বান জানিয়েছেন। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সংঘাত বিশ্বের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে না বলেও সতর্ক করেন তিনি। গুতেরেস জানিয়েছেন, নিয়ন্ত্রণ রেখা এবং আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের এই সামরিক অভিযান নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন।
অপরদিকে ভারতের এই হামলাকে ‘লজ্জাজনক’ বলে উল্লেখ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দুই দেশের মধ্যে চলমান সংকট প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক। এইমাত্র এ বিষয়ে জানলাম। আমার মনে হয় অতীতের কিছু ঘটনার ওপর ভিত্তি করে মানুষ জানত যে কিছু একটা ঘটতে চলেছে। তারা অনেক দিন ধরে লড়াই করে আসছে। তারা বহু দশক ধরে লড়াই করে আসছে। আমি আশা করি এটা খুব দ্রুত শেষ হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ভারতে পাকিস্তানের পাল্টা হামলা, ৫ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত

ভারতের মিসাইল হামলার জবাবে দেশটির পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের সঙ্গে বুধবার (৭ এপ্রিল) এ তথ্য জানান তিনি। এছাড়া কয়েকজন ভারতীয় সেনাকে যুদ্ধবন্দি হিসেবে আটকের দাবিও করেছেন তিনি।
খাজা আসিফ জানিয়েছেন, যদি ভারত আগ্রাসী মনোভাব বাদ দেয় তাহলে তারা তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন। কিন্তু ভারত যদি আগ্রাসী কিছু করে তাহলে তারা অবশ্যই জবাব দেবেন। খাজা আসিফ বলেন, যদি এসব শত্রুতাপূর্ণ কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়, আমরা অবশ্যই ভারতের সঙ্গে কথা বলব। আমরা চাই না এই পরিস্থিতি আরও খারাপ হোক। কিন্তু ভারত থেকে যদি শত্রুতাপূর্ণ কিছু আসে, তাহলে আমাদের জবাব দিতে হবে।
যুদ্ধবিমানকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার পাশাপাশি ভারতীয় সেনাবাহিনীর ব্রিগেড সদরদপ্তরে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাকিস্তানের একাধিক জায়গায় মিসাইল ছোড়ে ভারত। এর জবাবে তাৎক্ষণিকভাবে নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা চালানো শুরু করে ইসলামাবাদ। দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর একটি সূত্র সরকারি টিভি চ্যানেল পিটিভিকে জানিয়েছেন, ভারতীয় সেনাদের ব্রিগেড সদরদপ্তরে হামলা চালিয়ে এটি ধ্বংস করা হয়েছে।
এছাড়া সীমান্ত রেখার (এলওসি) দুদনিয়াল সেক্টরে মিসাইল ছুড়ে ভারতীয় সেনাদের একটি চৌকি ধ্বংস করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন। এসবের সঙ্গে একটি ড্রোনও ভূপাতিত করা হয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটি।
প্রথমে তিনটি যুদ্ধবিমান ধ্বংসের কথা শোনা গেলেও দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী এখন পাঁচটি বিমান ভূপাতিতের কথা জানাচ্ছেন।
গত ২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীরা হামলা চালিয়ে ২৬ জনকে হত্যা করে। এ ঘটনায় ভারত পাকিস্তানকে দোষারোপ করার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। যা মঙ্গলবার রাতে চূড়ান্তরূপ ধারণ করে।
এদিকে ভারতের মিসাইল হামলায় এখন পর্যন্ত আটজন নিহত ও ৩৫ জন আহত হয়েছেন। দেশটির ডিজিএফআইয়ের মহাপরিচালক আহমেদ শরীফ চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
‘যুদ্ধ প্রস্তুতি’ ঘিরে তৎপর ভারত, যেভাবে চলবে মহড়া

জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে জঙ্গি হামলাকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এই আবহে ভারত যুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবেলার মহড়ায় তৎপর হয়েছে। ১৯৭১ সালের পর প্রথম রাজ্যে রাজ্যে নিরাপত্তা মহড়ার নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। এই মহড়া শুরু হতে চলেছে বুধবার। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কী করতে হবে আর কী করা যাবে না, সাধারণ নাগরিকদেরকে সেই সচেতনতার পাঠ দিতেই ভারতের রাজ্যে রাজ্যে এই অসামরিক মহড়া চালানো হবে।
ভারতের ২৭টি রাজ্য এবং ৮ টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে মোট ২৫৯টি ‘অসামরিক প্রতিরক্ষা জেলা’ বা ‘সিভিল ডিফেন্স ডিস্ট্রিক্ট’ রয়েছে। তালিকায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ৩১টি জায়গাও। কেন্দ্র সরকার রাজ্যগুলোকে মহড়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছে। তাতে মনে করা হচ্ছে ওই জেলাগুলোতেও মহড়া চলবে।
ভারতীয় পত্রিকা এনডিটিভি জানায়, দিল্লি ও মুম্বাইয়ের মতো বেশি-ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলগুলোসহ ২৪৪ টি ডিফেন্স ডিস্ট্রিক্টে হবে মহড়া। এর সঙ্গে আরও আছে খুবই স্পর্শকাতর কয়েকটি এলাকা যেগুলোতে মহড়া চালানো হবে। যেমন: রাজধানী দিল্লির পারমাণবিক স্থাপনা, সামরিক ঘাঁটি, শোধনাগার, জলবিদ্যুৎ বাঁধ।
ভারতের সব রাজ্যকে পাঠানো নির্দেশে মূলত বিমান হামলা হলে কী করতে হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্যগুলোকে পাঠানো বার্তায় বলা হয়েছে, বিমান হামলার সময়কার সতর্কতামূলক সাইরেন ব্যবস্থা সক্রিয় আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে বুধবারের মহড়ায়। রাতে হামলার ক্ষেত্রে যুদ্ধবিমানের খবর পাওয়া মাত্র যাতে হঠাৎ করে সব আলো নিভিয়ে দিয়ে ‘ক্র্যাশ ব্ল্যাকআউট’ করে শত্রু বিমানবাহিনীকে বিভ্রান্ত করে দেওয়া যায়, তারও মহড়া সেরে রাখতে হবে।
ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার মধ্যে সম্ভাব্য হামলা থেকে যথাসম্ভব ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভবন, সেতু, তেলের ডিপো, রেলস্টেশন বা বিমানবন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো আগে থেকেই ঢেকে দেওয়া বা সেগুলোকে যথাসম্ভব লুকানোর প্রস্তুতিও সেরে রাখাতে হবে রাজ্যগুলোকে। তাছাড়া, সিভিল ডিফেন্স বা অসামরিক প্রতিরক্ষা প্রোটোকল সম্পর্কে নাগরিক ও শিক্ষার্থীদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া, হামলার সময় বা জরুরি অবস্থায় নাগরিকদের মধ্যে সমন্বয় রেখে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার প্রশ্নে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে তা অভ্যাস করিয়ে রাখতে হবে মহড়ায়।
এজন্য জেলাশাসক, বেসামরিক প্রতিরক্ষা স্বেচ্ছাসেবক, হোমগার্ডদের সঙ্গে স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এনডিটিভি’র খবরে বলা হয়েছে কিছু কিছু জেলায় এরই মধ্যেই মহড়া শুরু হয়ে গেছে। পুলিশ, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কিংবা ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেজপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ) এর সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে এই মহড়া চলছে।
বার্তা সংস্থা এএনআই এর শেয়ার করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, জম্মুর স্কুলের শিক্ষার্থীরা বিমান হামলার সাইরেন শুনে তাদের শ্রেণীকক্ষের ডেস্কের নিচে আশ্রয় নিচ্ছে এবং তাদেরকে অন্যান্য জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
আরেকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, উত্তর প্রদেশে পুলিশ এবং স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তারা আগুনের মহড়ায় অংশ নিয়েছেন। তারা বড় একটি লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে ছোট্ট একটি বক্সে লাগা আগুন নেভাচ্ছেন এবং আহতদের পিঠে করে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিচ্ছেন।
লাক্ষ্নৌতে বুধবারের মহড়ার প্রস্তুতিতে বিমান হামলার সাইরেন বাজানো হয়েছে এবং মানুষজন নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটে যাওয়ার সময় যাতে কেউ পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা না ঘটে সেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। উত্তর প্রদেশে ১৯ টি স্থানকে উচ্চ-ঝুঁকির স্থান হিসাবে চিহ্নিত করার কথা জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। দিল্লি পুলিশকেও কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে হামলার সময় কি জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে সে বিষয়ে ব্রিফিং দেওয়া হয়েছে।
রাজস্থান এবং পাঞ্জাবের মতো পাকিস্তানের সীমান্তঘেঁষা রাজ্যগুলো নিয়েও উদ্বেগ বিরাজ করছে। জঙ্গিরা যাতে সীমান্ত এলাকাগুলোতে অনুপ্রবেশ করতে না পারে সেজন্য এসব জায়গায় পুলিশ ও সীমান্ত কর্মকর্তাদেরকে সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে।
পাঞ্জাবের ২০ টি জেলায় চলবে নিরাপত্তা মহড়া। তাছাড়া, উড়িষ্যার ১২ টি স্থানেও মহড়া চলবে। কর্নাটকের তিনটি স্থানে, গুজরাটের ১৫ টি স্থানে এবং মহারাষ্ট্রের ১৬ টি স্থানে বিমান হামলার সতর্কতামূলক সাইরেনের মহড়া চলবে। মনিপুরেও এরই মধ্যে মহড়ার প্রস্তুতি নিয়ে নেওয়া হয়েছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
নিজ ইচ্ছায় যুক্তরাষ্ট্র ছাড়লে এক হাজার ডলার দেবেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসরত অভিবাসীদের দেশ ছাড়তে এক হাজার ডলার দেওয়ার পাশাপাশি যাত্রার ব্যয় বহনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। বাংলাদেশি মুদ্রায় এই প্রণোদনার পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ২১ হাজার টাকা।
মার্কিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টি নোম সোমবার (৫ মে) এক ঘোষণায় বলেন, গ্রেফতার এড়াতে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করার সবচেয়ে ভালো, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী উপায় হলো স্বেচ্ছাপ্রস্থান।
যারা এই প্রণোদনা গ্রহণ করবেন, ভবিষ্যতে তাদের বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার পথ উন্মুক্ত হতে পারে বলে মন্তব্য করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরে ট্রাম্প অবৈধ অভিবাসন দমনে বড় ধরনের অভিযান শুরু করেন। এর মধ্যে রয়েছে একটি পুরোনো যুদ্ধকালীন আইন প্রয়োগের মতো বিতর্কিত কৌশল, যা এরই মধ্যে কিছু আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
দেশত্যাগে আগ্রহী অভিবাসীদের জন্য ‘সিবিপি হোম’ নামে একটি অ্যাপ ব্যবহারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে তারা নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারবেন।
এই স্কিমের আওতায় যারা নাম লেখাবেন, তাদের আটক করার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগ (ডিএইচএস)। তারা আরও জানিয়েছে, এরই মধ্যে একজন ‘অবৈধ অভিবাসী’ এই প্রণোদনার আওতায় শিকাগো থেকে হন্ডুরাসে ফেরার টিকিট পেয়েছেন।
ডিএইচএসের হিসাবে, একজন অভিবাসীকে গ্রেফতার, আটক ও দেশ থেকে বহিষ্কারের গড় ব্যয় ১৭ হাজার ডলারেরও বেশি। তাই এই স্বেচ্ছাপ্রস্থান কর্মসূচি খরচ সাশ্রয় করবে বলে বিশ্বাস তাদের।
তবে এই পরিকল্পনার সমালোচনাও রয়েছে। ডেমোক্র্যাট দলের ডোমিনিকান-আমেরিকান কংগ্রেসম্যান আদ্রিয়ানো এসপেইয়াত ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার)-এ লিখেছেন, আমরা কাউকে টাকা দিয়ে দেশ ছাড়তে বলি না। আমরা এমন একটি দেশ গড়ি, যেখানে সবাইকে জায়গা দেওয়া হয়।
অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার অভিবাসন নীতি সফল হিসেবে তুলে ধরছেন। তিন মাসের মধ্যে অবৈধ সীমান্ত অতিক্রমের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে বলে দাবি করেছে তার প্রশাসন। গত মার্চ মাসে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে মাত্র সাত হাজারের কিছু বেশি ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যা রেকর্ড পরিমাণ কম।
তবে ট্রাম্প প্রশাসন এখন পর্যন্ত যত সংখ্যক অভিবাসীকে বহিষ্কার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা পূরণ করতে পারেনি। এছাড়া জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের প্রচেষ্টাও আদালতে আটকে গেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক আজ

জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে এবং এই উত্তেজনা সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কাও বাড়ছে। এমন অবস্থায় রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসতে চলেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।
সোমবার (৫ মে) এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এখানে পেহেলগামে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলার পরবর্তী পরিস্থিতি এবং ভারতের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা হবে। সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ আজ একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক আয়োজন করতে যাচ্ছে। এই বৈঠকে ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মিরের পেহেলগামে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসী হামলার পরবর্তী পরিস্থিতি এবং ভারতের সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা হবে।
পাকিস্তানের অনুরোধে এই বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা জাতিসংঘে আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং ভারতের একতরফা পদক্ষেপগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরবে। পাকিস্তান এই কূটনৈতিক উদ্যোগকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে সঠিক তথ্য উপস্থাপনের অংশ হিসেবে দেখছে।
মূলত পেহেলগাম হামলার পর ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে এবং সীমান্তবর্তী আতারি-ওয়াঘা স্থলসীমান্ত বন্ধ করে দেয়। পানিচুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্তকে পাকিস্তান “যুদ্ধ ঘোষণার শামিল” বলে উল্লেখ করে এবং পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ও নিজেদের আকাশসীমায় ভারতীয় বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয়।
এছাড়া পাকিস্তান গত শনিবার “আবদালি” ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছে। ভারতের কর্মকর্তারা এটিকে “খোলামেলা উসকানি” বলে মন্তব্য করেছেন। ৪৫০ কিমি রেঞ্জের এই ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তান “সিন্ধু মহড়ার” অংশ হিসেবে পরীক্ষা করেছে বলে জানিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উভয় পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। বিশেষ করে রাশিয়া জানিয়েছে, তারা ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত, যদি উভয় পক্ষ সম্মত হয়।
বর্তমানে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি, সীমান্তে সংঘর্ষ এবং পারস্পরিক নিষেধাজ্ঞার ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়েছে। জাতিসংঘের এই বৈঠকে উত্তেজনা প্রশমনে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না, সেদিকেই নজর রয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের।
উল্লেখ্য, ভেটো ক্ষমতার অধিকারী নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী সদস্য — চীন, ফ্রান্স, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও — কাউন্সিলের ১০টি অস্থায়ী সদস্য হলো— আলজেরিয়া, ডেনমার্ক, গ্রিস, গায়ানা, পাকিস্তান, পানামা, দক্ষিণ কোরিয়া, সিয়েরা লিওন, স্লোভেনিয়া এবং সোমালিয়া।
আর চলতি মে মাসের জন্য জাতিসংঘের এই সংস্থার সভাপতিত্ব করছে গ্রিস।