জাতীয়
পাইলট নির্দেশনা না মানায় বিমানের ঢাকাগামী ফ্লাইট বাধ্য হলো সিলেটে নামতে

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একটি নোটাম (নোটিশ টু এয়ারম্যান) না মানায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মদিনা থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়া একটি ফ্লাইট শেষ পর্যন্ত সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে বাধ্য হয়েছে।
বুধবার এই ঘটনায় জাতীয় পতাকাবাহী সংস্থাটি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে বিমান সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
নোটাম বা নোটিশ টু এয়ারমেন হচ্ছে একটি আন্তর্জাতিক সতর্কবার্তা— যার মাধ্যমে বিমানবন্দর, আকাশপথ বা অবকাঠামো সংক্রান্ত অস্থায়ী পরিবর্তনের কথা জানানো হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের দায়িত্বশীল সূত্র।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বুধবার ঢাকা বিমানবন্দরের রানওয়ে ১১টা ৪৫ মিনিট থেকে ১২টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত ছিল বন্ধ। পাইলটকে নোটামে বিষয়টি জানানো হলেও পাইলট তা উপেক্ষা করে মদিনা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে ঢাকার আকাশে চলে আসে। তবে বাধ্য হয়ে সেটিকে সিলেটে নামতে হয়।
বিমানের সূত্র জানায়, এর আগেও নোটাম উপেক্ষা করে ফ্লাইট পরিচালনার ঘটনা ঘটে বিমানে। সেই ঘটনায় ফ্লাইট সংশ্লিষ্টদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল।
এসব ক্ষেত্রে সাধারণত পাইলট গন্তব্য থেকে রওনা যদি ঢাকায় পৌঁছানোর সময় হিসাব করে সিদ্ধান্ত নিতেন, তাহলে এই পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব হতো।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয়
আবরার হত্যার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ: হাইকোর্টে মৃত্যুদণ্ড বহাল

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় হাইকোর্ট ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে।
গত ১৬ মার্চ দেয়া এই রায়ে বিচারিক আদালতের সিদ্ধান্তই বহাল রাখেন হাইকোর্ট। আসামিদের ডেথ রেফারেন্স, আপিল ও জেল আপিলের শুনানি শেষে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান এবং বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হল থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পরদিন তার বাবা চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই বছরের ১৩ নভেম্বর পুলিশ ২৫ জন বুয়েট শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলার রায় দেন। রায়ে বিচারক মন্তব্য করেন, আসামিরা পরস্পরের সঙ্গে যোগসাজশ করে, মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে আবরারকে শিবির সন্দেহে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন,মেহেদী হাসান রাসেল, মো. অনিক সরকার, মেহেদী হাসান রবিন, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মনিরুজ্জামান মনির, মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ, মো. মুজাহিদুর রহমান, খন্দকার তাবাককারুল ইসলাম তানভীর, হোসাইন মোহাম্মদ তোহা, মো. শামীম বিল্লাহ, এ এস এম নাজমুস সাদাত, মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম, মুনতাসির আল জেমি, মো. শামসুল আরেফিন রাফাত, মো. মিজানুর রহমান, এস এম মাহমুদ সেতু, মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম এবং মুজতবা রাফিদ।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, মুহতাসিম ফুয়াদ হোসেন, মো. আকাশ হোসেন, মুয়াজ আবু হুরায়রা, অমিত সাহা এবং ইশতিয়াক আহমেদ মুন্না।
প্রসঙ্গত, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুনতাসির আল জেমি গত বছরের ৬ আগস্ট গাজীপুরের হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের দেয়াল ভেঙে পালিয়ে যায়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ডে হাসিনার বিরুদ্ধে সবাই মামলা করুন: মাহমুদুর রহমান

২০১৩ সালে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সবাইকে মামলা করার আহ্বান জানিয়েছেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
মাহমুদুর রহমান বলেন, আমি জুলাই বিপ্লবের শহীদদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। আমাদের মনে রাখতে হবে ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে গণহত্যার পর এই প্রথম স্বাধীনভাবে কোনো প্রোগ্রাম করতে পেরেছি।
মাহমুদুর রহমান বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, আপনারা কেন এখনো সেই দানব ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা করেন নাই, আমি জানি না। আমি মনে করি, শাপলা চত্বরে যতজন নিহত হয়েছেন তাদের সবার হয়ে গণহত্যার দায়ে হাসিনার নামে মামলা করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা যেহেতু মুসলমান, তাই গাজা ও ভারতের কাশ্মীরের মুসলমানদের ওপর যে নির্যাতন চলছে, তার বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন চালাতে হবে।
এতে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন হেফাজতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাহমুদুর হাসান কাশেমী, নায়েবে আমির আহমেদ কাশেমী, জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক প্রমুখ।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের জায়গা নেই: হেফাজতের মঞ্চে হাসনাত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার প্রশ্নে কোনো ‘যদি’, ‘কিন্তু’ বা ‘অথবা’ নেই। অবিলম্বে স্বৈরাচারী এই দলটিকে নিষিদ্ধ করতে হবে। এটিই হবে দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সংস্কার।
শনিবার (৩ মে) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
হাসনাত বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে বিদায় নিয়েছে, তাদের ‘শেষকৃত্য’ হয়েছে দিল্লিতে। আবরার ফাহাদ ও শহীদ আলিফের রক্তের ওপর ভর করে এই দল আর দেশে ফিরতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ আদতে কোনো রাজনৈতিক দল নয়। একাত্তর পরবর্তী সময়ে শেখ মুজিব বাকশালের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছেন। দলটির দুর্নীতি ও লুটপাটের জন্য ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষে ১৫ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এটি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন, রাজনৈতিক দল নয়।
শেখ হাসিনার বিচার এবং ফাঁসি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন এনসিপির এই নেতা।
নারী অধিকার সংস্কার প্রসঙ্গে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ করে হাসনাত বলেন, অপ্রয়োজনীয় সংস্কার বাদ দিয়ে এমন সংস্কার করুন, যাতে নারীদের সম্মান ও ধর্মীয় মূল্যবোধ রক্ষা পায়।
উল্লেখ্য, নারী অধিকার সংশোধন কমিশনের প্রস্তাব বাতিল, শাপলা ট্র্যাজেডি ও আওয়ামী শাসনামলে সংঘটিত সব গণহত্যার বিচারের দাবিতে রাজধানীতে মহাসমাবেশ করছে হেফাজতে ইসলাম।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
বর্ষা মানেই পানির নিচে ঢাকা: এ কেমন নগর ব্যবস্থাপনা?

ঢাকায় বর্ষা মানেই জলাবদ্ধতা। বর্ষা মৌসুম এখনও পুরোপুরি শুরু না হলেও সাম্প্রতিক কয়েকদিনের বৃষ্টিতেই রাজধানীর অনেক এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে আবারও প্রশ্ন উঠছে—এবারও কি জলাবদ্ধতায় ডুবে যাবে নগরী?
বিগত কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে, অল্প বৃষ্টিতেই ঢাকার অলিগলি থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো পানিতে ডুবে যায়। একটু বেশি বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। হাঁটু থেকে কোমরসমান পানিতে চলাফেরা করতে হয় নগরবাসীকে। অথচ সিটি কর্পোরেশন নানা উদ্যোগ নিলেও বাস্তবে এর কোনো ফল পাওয়া যায় না। ফলে নগরবাসীর মাঝে বাড়ছে উদ্বেগ—এবারও কী তাদের একই দুর্ভোগ পোহাতে হবে?
প্রতিবছর জলাবদ্ধতা মোকাবেলায় সরকার বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দেয়। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন মিলে প্রায় ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছে। কিন্তু বাস্তব চিত্র বলছে, এই বরাদ্দ কার্যকর কোনো পরিবর্তন আনতে পারেনি।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) সরাসরি ৯০ কোটি টাকা ব্যয় করেছে জলাবদ্ধতা নিরসনে, আরও ৩০ কোটি টাকায় চলেছে খাল-নর্দমা পরিষ্কার কার্যক্রম। অন্যদিকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) খাল উন্নয়ন, পাম্প হাউজ আধুনিকায়ন ও নর্দমা রক্ষণাবেক্ষণে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে।
ঢাকার জলাবদ্ধতা দীর্ঘদিন ধরে সমাধানহীন। আগে এই দায়িত্বে ছিল ঢাকা ওয়াসা। ২০২০ সালের শেষ দিকে নালা ও খালের দায়িত্ব দুই সিটি কর্পোরেশনের হাতে দেওয়া হয়। এরপর থেকে এই সমস্যা পুরোপুরি তাদের উপর বর্তায়। যদিও দুই সিটি কর্পোরেশন খাল খনন ও দখলমুক্ত করতে নানা কার্যক্রম চালাচ্ছে, তবু এর ফল এখনও দৃশ্যমান নয়।
এ বছরও ঢাকার নির্দিষ্ট কিছু এলাকাকে জলাবদ্ধতার ‘হটস্পট’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। উত্তর সিটির মধ্যে উত্তরখান, দক্ষিণখান, বাড্ডা, বনানী কবরস্থান সড়ক ও রোকেয়া সরণি বেশি ঝুঁকিতে। দক্ষিণে রয়েছে নিউ মার্কেট, ধানমন্ডি, বকশীবাজার, মুগদা, জুরাইনসহ বেশ কিছু এলাকা।
তবে কিছু ইতিবাচক দিকও আছে। চলতি বছর খাল পুনঃখনন ও ‘ব্লু নেটওয়ার্ক’ তৈরির প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। ডিএনসিসি ছয়টি খালের কাজ শুরু করেছে এবং আরও ১৩টি খাল খননের পরিকল্পনা রয়েছে। সঠিকভাবে এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে পরিস্থিতির উন্নতি আশা করা যায়।
নগর পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, “জলাবদ্ধতা নিরসনে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রয়োজন। দায় এড়িয়ে নয়, বরং দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে।”
ঢাকার জলাবদ্ধতার পেছনে বড় কারণ—পাম্প স্টেশন, স্লুইসগেট ও খালের অকার্যকারিতা, প্লাস্টিক ও বর্জ্যে খাল-নালার প্রতিবন্ধকতা, আর অবৈধ দখল। প্রতিদিন প্রায় সাত হাজার টন বর্জ্যের ১৫ শতাংশই প্লাস্টিক, যা ড্রেনে গিয়ে পানি চলাচলে বাধা সৃষ্টি করছে।
ফলে প্রতিবার বর্ষায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা নিয়মিতভাবে পানিতে ডুবে যায়। ধানমন্ডি, শান্তিনগর, মিরপুর, বাড্ডা, গুলশান লেক সংযোগ সড়ক, ফার্মগেট, মতিঝিলসহ বহু এলাকায় প্রতি বর্ষায় একই চিত্র।
নগরবাসীর ক্ষোভও বাড়ছে। দোকানদার, চাকরিজীবী, সিএনজি চালক—সবার একটাই আক্ষেপ, প্রতিবার বর্ষায় একই সমস্যা, অথচ কার্যকর সমাধান নেই।
এখন সময় এসেছে বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা নিয়ে, আন্তরিকভাবে কাজ করার। নাগরিকরা আর লোক দেখানো কাজ নয়, দেখতে চায় বাস্তব পরিবর্তন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
সরকার ও ঐকমত্য কমিশনের সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা নেই: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, যেগুলো রাষ্ট্র বিনির্মাণে, পুনর্গঠনের প্রয়োজন, গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহি ব্যবস্থা তৈরির জন্য প্রয়োজন সেখানে আশা করি একমত হতে পারব। সেটা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চেষ্টা। সরকার ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা নেই। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সহায়তাকারী ভূমিকা পালন করা।
শনিবার (০৩ মে) জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সংলাপের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান। জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের (এনপিপি) চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদের নেতৃত্বে জোটের ১১ জন নেতা এ সংলাপে অংশ নিয়েছেন।
সবার সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে জাতীয় সনদ তৈরি করতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত সময় নির্ধারিত করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান আলী রীয়াজ।
তিনি বলেন, সেই চেষ্টায় আমরা আপনাদের (জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট) সহযোগিতা পেয়েছি। রাজনৈতিক দলগুলোর থেকে সহযোগিতা পাচ্ছি। সুনির্দিষ্ট ছয় মাসের মধ্যে আমরা জাতীয় সনদ তৈরি করতে চাই।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য স্বাভাবিক মন্তব্য করে আলী রীয়াজ বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন রকম আদর্শিক অবস্থান থেকে তাদের মতামত দিয়েছেন। কিন্তু আমরা মনে করি, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যে জাতীয় ঐক্য অত্যন্ত প্রয়োজন আমাদের জাতি ও রাষ্ট্র হিসেবে অগ্রসর হওয়ার জন্য। সে কারণে আমরা আশাকরি জাতীয় স্বার্থে, রাষ্ট্র পুনর্গঠন প্রশ্নে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য প্রত্যেকে যার যার অবস্থান থেকে বলবেন, প্রত্যেকটা দল ও জোট কিছুটা ছাড় দিতেও প্রস্তুত থাকবেন। কারণ আমরা সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পুনর্গঠন, বিনির্মাণের জন্য সবাই সমবেত হয়েছি। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমাদের এক জায়গায় আসতে হবে। এর অর্থ এই নয় যে সব বিষয়ে আমরা একমত হতে পারব। কিন্তু যেগুলো রাষ্ট্র বিনির্মাণে, পুনর্গঠনে প্রয়োজন, গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহি ব্যবস্থা তৈরির জন্য প্রয়োজন সেখানে আশাকরি একমত হতে পারব। সেটা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চেষ্টা। সরকার ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা নেই। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সহায়তাকারী ভূমিকা পালন করা। সবাইকে একত্রে দাঁড় করানো একটি লক্ষ্য নিয়ে, সেটা হচ্ছে ঐকমত্যগুলো চিহ্নিত করা, সেগুলোর বাস্তবায়ন করার পথ খুঁজে বের করা। সেটা আমাদের সবার জন্য প্রয়োজন।
আলী রীয়াজ বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কারও প্রতিপক্ষ নয়, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সুনির্দিষ্ট, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করা। যা বাংলাদেশে একটি জবাবদিহিমূলক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য সহযোগিতা করতে পারে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত এ কমিশন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি কাজ শুরু করে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে শুরু হওয়া সংলাপের অংশ হিসেবে শনিবারের সংলাপের শুরুতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বক্তব্য রাখেন।
বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে এনপিপি চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১৬৬ প্রস্তাবের মধ্যে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট (এনপিপি) ১১২টায় একমত, ২৬টায় একমত নয় এবং ২৮টায় আংশিক একমত হয়েছে।