আন্তর্জাতিক
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর স্থগিত

কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যে বাংলাদেশ সফর স্থগিত করেছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসাক দার।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে ইসাক দারের সফর স্থগিতের তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশনের এক কর্মকর্তা।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির কারণে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ২৭-২৮ এপ্রিল বাংলাদেশ সফর করতে পারছেন না। পারস্পরিক পরামর্শের মাধ্যমে সফরের নতুন তারিখ চূড়ান্ত করা হবে।
ঢাকার একটি কূটনৈতিক সূত্র বলছে, কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে চলমান পরিস্থিতির কারণে আগামী ২৭-২৮ এপ্রিল পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করতে পারবেন না মর্মে ঢাকাকে অনুরোধ করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতি বিবেচনায় উভয়পক্ষের সম্মতিতে যত দ্রুত সম্ভব ইসাক দার ঢাকা সফর করবেন।
সম্প্রতি ঢাকা সফর করেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ। তার সফরকালে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে প্রায় ১৫ বছর হওয়া পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়। ইসাক দারের সফরকে ঘিরে ঢাকা-ইসলামাবাদ শেষ সময়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ইতোমধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং সংস্কৃতি খাতে কয়েকটি সমঝোতা স্মারক সই করার প্রস্তুতিও চলছিল।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য বলছে, আগামী ২৮ এপ্রিল পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ইসাক দারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের কথা ছিল। ওইদিন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সৌজন্য সাক্ষাতের কথা ছিল।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খানের ঢাকা সফরের কথা স্মরণ করা যেতে পারে। ওই সময় ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত ডি-৮ সম্মেলনে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানাতে ঢাকায় এসেছিলেন তিনি। ১০ বছরের ব্যবধানে ২০২২ সালের জুলাইয়ে সেই হিনা রাব্বানির ডি-৮ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিতে ঢাকায় আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়। তিনি তখন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু হিনা রাব্বানি ঢাকায় আসেননি।
তার ঢাকা সফর বাতিল হওয়ার কারণ হিসেবে তৎকালীন ঢাকার দক্ষিণ এশিয়া অনুবিভাগের কর্মকর্তাদের ভাষ্য ছিল, ডি-৮ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের আগমুহূর্তে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার সঙ্গে পাকিস্তানের পতাকা জুড়ে দিয়ে ঢাকার পাকিস্তান হাইকমিশন ফেসবুকে একটি ছবি প্রকাশ করে। এ নিয়ে ওই সময় ঢাকার প্রতিক্রিয়ায় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় পাকিস্তান হাইকমিশনকে। বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি পাকিস্তান।
এ ছাড়া, ২০২১ সালে পাকিস্তানে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) মন্ত্রী পর্যায়ের জরুরি বৈঠকে অংশ নিতে যাওয়ার কথা ছিল তৎকালীন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের। কিন্তু শেষ সময়ে তিনি সফরটি বাতিল করেন। তার বদলে বৈঠকে পাঠানো হয় তৎকালীন পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনকে। এর বাইরে ২০২২ সালের মার্চে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনকে ইসলামাবাদে দুই দিনব্যাপী ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ৪৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তিনিও সফরে না গিয়ে তৎকালীন পররাষ্ট্রসচিবকে পাঠান।

আন্তর্জাতিক
বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে আলোচনায় প্রস্তুত ভারত: জয়সওয়াল

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, ‘উপযুক্ত পরিবেশে’ বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়েই আলোচনা করতে প্রস্তুত ভারত।
শুক্রবার (২৭ জুন) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে গঙ্গা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি নবায়ন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে প্রতিষ্ঠিত কূটনৈতিক পদ্ধতি আছে, যার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সব দিক মোকাবিলা করা যায়।
তার এ মন্তব্যটি এমন এক সময়ে এসেছে, যখন ভারতের পার্লামেন্টে পররাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটি ‘ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ’ নিয়ে আলোচনার জন্য ৪ জন বিশেষজ্ঞকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
একটি সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য হিন্দু জানিয়েছে, এই বিশেষজ্ঞরা হলেন- সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিব শঙ্কর মেনন, অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল আতাউল হাকিম হাশনাইন, ঢাকায় ভারতের সাবেক হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাস এবং জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অমিতাভ মাত্তু।
বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রণধীর বলেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ন্যায়বিচার, সমমর্যাদা এবং পারস্পরিক চাওয়ার ভিত্তিতেই ভারতে সংশোধিত বাণিজ্যিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা এসব বিষয়ের সমাধানের অপেক্ষায় রয়েছে ভারত। এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা আগেও বহুবার গঠনমূলক বৈঠকে আলোচনা করেছি, এমনকি সচিব পর্যায়েও।
নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সব বিষয়ে আলোচনার জন্য আমরা প্রস্তুত, যদি তা পারস্পরিক উপকারে উপযোগী পরিবেশে হয়। ১৯৯৬ সালের গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তি নবায়নের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
১৯ জুন বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের একটি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়। চীনের কুনমিংয়ে ‘নবম চায়না-সাউথ এশিয়ান এক্সপজিশন অ্যান্ড দ্যা সিক্সথ চায়না-সাউথ এশিয়া কো-অপারেশন’ শীর্ষক বৈঠকের সাইডলাইনে তিন দেশের পররাষ্ট্র সচিবদের ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই ত্রিপক্ষীয় বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘আশপাশের অঞ্চলের ঘটনাপ্রবাহে আমরা সবসময় নজর রাখি। কারণ এগুলো আমাদের স্বার্থ ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত। প্রতিটি দেশের সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক, তা আলাদা আলাদা ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে।
দ্য হিন্দু জানিয়েছে, ভারতীয় সংসদীয় কমিটির বাংলাদেশ বিষয়ক বিশেষ আলোচনার প্রাথমিক প্রস্তুতিপত্র অনুযায়ী, আলোচনায় অংশগ্রহণকারী বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে যে বিষয়গুলোতে মতামত চাওয়া হবে তা হলো- ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ধর্মীয় উগ্রপন্থার উত্থান, বাংলাদেশের অস্থিরতা থেকে ভারতের নিরাপত্তা হুমকি এবং ২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশ-চীনের ‘কৌশলগত সখ্যতা’ নিয়ে ভারতের উদ্বেগ।
আন্তর্জাতিক
ইরানকে ৩০ বিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রের

পারমাণবিক কর্মসূচি ইস্যুতে মুখ থুবড়ে পড়া আলোচনার টেবিলে ইরানকে ফিরিয়ে আনতে মরিয়া হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্র। নিজেদের পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ ইরানকে কোটি কোটি ডলার ও অন্যান্য সুবিধা দিয়ে খুশি করতে চায় দেশটি। আলোচনায় ফিরতে রাজি হলে দেওয়া হতে পারে আরও নানান সুযোগ সুবিধা।
ইতোমধ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের লোকজন বিষয়টি নিয়ে দৌঁড়ঝাঁপ শুরু করেছে। তারা গোপনে ইরানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে। খবর সিএনএনের।
খবর অনুসারে, পারমাণবিক অস্ত্র উৎপাদনে ব্যবহৃত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম বন্ধ রেখে বিদ্যুৎ উৎপাদনে পারমাণবিক শক্তি ব্যব্হার করা হলে ইরানকে ২০ থেকে ৩০ বিলিয়ন ডলার দেওয়া হবে। এছাড়া শিথিল করা হবে দেশটির উপর বিদ্যমান অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা। বিভিন্ন দেশে ফ্রিজ করে রাখা ইরানের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার সম্পদের একাংশ ছাড় করা হবে।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বেশ কিছুদিন ধরেই দেশটির সঙ্গে আলোচনায় ছিল যুক্তরাষ্ট্র। এ ধারাবাহিকতায় অনুষ্ঠেয় পরবর্তী বৈঠকের ঠিক একদিন আগে ইসরায়েল একতরফাভাবে ইরানে হামলা চালায়। তারা ইরানের বেশ কয়েকজন পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যা করে। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। যুক্তরাষ্ট্র এ হামলার কোনো প্রতিবাদ করেনি। বরং তারা নিজেরাও ইসরায়েলের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় বোমাবর্ষণ করে। এ ঘটনায় চরম ক্ষুব্ধ ইরান তখনই ঘোষণা করেছিল তারা আর আলোচনার টেবিলে ফিরবে না। তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্র তার মিত্রস্থানীয় কয়েকটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশের মাধ্যমে গোপনে এ বিষয়ে ইরানের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র বেশ কয়েকটি প্রস্তাব নিয়ে আগানোর চেষ্টা করছে। এসব প্রস্তাবের মধ্যে ইরানের পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও বিদেশে আটক সম্পদ থেকে ৬ বিলিয়ন ডলার অবমুক্ত করার মতো বিষয় রয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র নিজে সরাসরি ইরানকে কোনো আর্থিক বা বিনিয়োগ সুবিধা দেবে না; মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ এই অর্থের যোগান দেবে। তা দিয়ে ফরডো পারমাণবিক স্থাপনা পুর্নির্মাণ করা হবে। এ লক্ষ্যে গত শুক্রবার অর্থাৎ ইরানে মার্কিন হামলার ঠিক আগের দিন মধ্য প্রাচ্যের কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত উইটকফ।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের এমন প্রস্তাবে ইরান সম্মতি দেবে কি-না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। কারণ দু’দিন আগে ট্রাম্প ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র আবার আলোচনার টেবিলে ফিরছে বলে ঘোসণা দিলেও উরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তা নাকচ করে দিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক
বিশ্ববাজারে আরও কমলো স্বর্ণের দাম

বিশ্ববাজারে লাফিয়ে কমছে স্বর্ণের দাম। মূলত ইরান ও ইসরাইল যুদ্ধবিরতি ও মার্কিন-চীনের বাণিজ্য আলোচনায় অগ্রগতির কারণে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণের চাহিদা কমেছে। পাশাপাশি, মার্কিন মূল্যস্ফীতির নতুন তথ্যের অপেক্ষায় রয়েছে বিনিয়োগকারীরা।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার (২৭ জুন) স্পট মার্কেটে স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্সে ১ দশমিক ২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২৮৮ দশমিক ৫৫ ডলারে। এই সপ্তাহে স্বর্ণের দাম মোট ২.৩ শতাংশ কমেছে। আর ফিউচার মার্কেটে স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্সে কমেছে ১ দশমিক ৪ শতাংশ। বেচাকেনা হচ্ছে ৩ হাজার ৩০০ দশমিক ৪০ ডলারে।
এএনজেড কমোডিটি স্ট্র্যাটেজিস্ট সোনি কুমারী বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদে বাজারের ইতিবাচক মনোভাবের কারণে স্বর্ণের দাম কমেছে। মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধবিরতি এবং মার্কিন-চীনের বাণিজ্য আলোচনায় অগ্রগতির ফলে বাজারের অনিশ্চয়তা কমেছে, যা স্বর্ণের দাম কমার বড় কারণ।
ইরান ও ইসরাইল ১২ দিনের তীব্র সংঘর্ষের পর মঙ্গলবার (২৪ জুন) থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানিয়েছে এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে। অন্যদিকে, বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ শেষ করার চেষ্টা চলছে। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে বিরল খনিজ দ্রুত সরবরাহের জন্য চীনের সঙ্গে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো হয়েছে।
ফেডারেল রিজার্ভের নীতিগত সিদ্ধান্ত সম্পর্কে ধারণা নিতে বিনিয়োগকারীরা শুক্রবার মার্কিন ব্যক্তিগত খরচ ব্যয়ের তথ্যের জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন। রয়টার্সের জরিপে অংশ নেয়া বিশ্লেষকরা এই খাতে মাসিক ০.১ শতাংশ এবং বার্ষিক ২.৬ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছেন।
বাজার মনে করছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে সুদের হার ৬৩ বেসিস পয়েন্ট পর্যন্ত কমানো হতে পারে। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ফেডকে এখনই সুদের হার কমানো উচিত। তবে জুলাইয়ের সভায় মাত্র দুজন নীতিনির্ধারক সুদের হার কমানোর পক্ষে মত দিয়েছেন।
এদিকে, স্পট সিলভারের দাম শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ কমে প্রতি আউন্সে দাঁড়িয়েছে ৩৬ দশমিক ৪৪ ডলার। প্লাটিনামের দাম ২ দশমিক ৮ শতাংশ কমে ১ হাজার ৩৭৮ দশমিক ১৮ ডলারে নেমেছে। অন্যদিকে, প্যালাডিয়ামের দাম শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ১৩৫ দশমিক ৩৬ ডলারে উঠেছে, যা ২০২৪ সালের অক্টোবরের পর সর্বোচ্চ।
আন্তর্জাতিক
যুক্তরাষ্ট্রে সাবেক ইরানি সেনাসহ গ্রেপ্তার ১৩০ জন

একের পর এক অভিবাসনপ্রত্যাশী ইরানি নাগরিকদের গ্রেপ্তার করছে যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস পুলিশ (ইউ এস ইমিগ্রেশন অ্যান্ট কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট-আইসিই)। গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে মোট ১৩০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ইরানিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাদের মধ্যে ইরানের একজন সাবেক সেনাসদস্যও রয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি-ডিএইচএস) সূত্রে জানা গেছে- গ্রেপ্তার ওই ইরানি সেনার নাম রিদওয়ার কারিমি। মার্কিন নাগরিকের বাগদত্ত সঙ্গী হিসেবে একটি বিশেষ ভিসায় গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশ করেছিলেন রিদওয়ার। যুক্তরাষ্ট্রে এসে ওই নাগরিককে বিয়েও করেছিলেন, কিন্তু তারপর আর নিজের ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাস হালনাগাদ করেননি। অর্থাৎ তিনি যে বিয়ে করেছেন- তা স্থানীয় অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেননি।
গত ২২ জুন যেদিন ইরানের তিন পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালায় মার্কিন বিমান বাহিনী, তার পরের দিন তাকে আলবামা অঙ্গরাজ্য গ্রেপ্তার করে কাস্টমস পুলিশ।
বর্তমানে আলবামায় মার্কিন কাস্টমস পুলিশের বন্দিশালায় আছেন রিদওয়ার। তার অন্তস্বত্ত্বা স্ত্রী মরগান কারিমি স্বামীর বুধবার মার্কিন সাময়িকী নিউজউইকে স্বামীর মুক্তির জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
রিদওয়ার কারিমিসহ ১৩০ জন ইরানি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে গত সপ্তাহে। তাদের সবার বিরুদ্ধে অবৈধ অভিবাসন এবং কয়েক জনের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।
কাস্টমস পুলিশসূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে আইসিই বন্দিশালায় ৬৭০ জন অনুপ্রবেশকারী ইরানি নাগরিক আছেন।
আন্তর্জাতিক
ইসরায়েলি বর্বরতায় গাজায় নিহত আরও ৭১ ফিলিস্তিনি

গাজায় বিতর্কিত মানবিক প্রকল্পের আড়ালে পরিচালিত খাদ্য সহায়তা কেন্দ্রগুলো এখন ‘জল্লাদখানা’য় পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিদিন খাবারের লাইনে অপেক্ষারত সাধারণ ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলিবর্ষণে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় উপত্যকাজুড়ে অন্তত ৭১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২৭ জুন) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গাজা সিটি থেকে দির আল-বালাহ পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন বহু মানুষ। এসব হামলায় হাসপাতাল ও আশ্রয়কেন্দ্রও রেহাই পায়নি। হাসপাতাল সূত্র জানায়, নিহতদের বড় অংশ নারী ও শিশু।
বিশেষ করে, নেতজারিম করিডোরে অবস্থিত খাদ্য সহায়তা বিতরণ কেন্দ্রে অপেক্ষারত অবস্থায় গুলিতে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি নিহত এবং আহত হয়েছেন।
গাজার সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসে বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত সহায়তা কেন্দ্রগুলোতে অন্তত ৫৪৯ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন।
গাজার মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, চার সপ্তাহ আগে মার্কিন ও ইসরায়েলি সমর্থিত জিএইচএফ-এর বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে কমপক্ষে ৫৪৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪ হাজার ৬৬ জন আহত হয়েছেন।
বিবৃতিতে এসব ত্রাণ কেন্দ্রকে ‘মৃত্যুর ফাঁদ’ আখ্যা দেওয়া হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে এসব ঘটনায় এখনও ৩৯ জন ফিলিস্তিনি নিখোঁজ রয়েছেন।
এদিকে, ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির বৃহস্পতিবার আবারও গাজায় মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধের পক্ষে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তিনি এই সহায়তা কার্যক্রমকে ইসরায়েলের জন্য ‘লজ্জাজনক’ বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুর প্রতি সহানুভূতির কোনো স্থান নেই।
আল জাজিরা জানিয়েছে, হামাসের হাতে সহায়তা যাওয়ার আশঙ্কায় ইসরায়েল গাজায় দুই দিনের জন্য সহায়তা সরবরাহ বন্ধ রেখেছে। এরইমধ্যে উত্তর গাজাগামী সহায়তা করিডোরগুলো বৃহস্পতিবার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যা দুর্ভিক্ষের মুখে থাকা লাখ লাখ মানুষের জন্য সরাসরি সহায়তা প্রবেশের পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে।
অন্যদিকে, গাজায় আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে তেল আবিবে তাদের পরিবার জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেছে। তারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইসরায়েলি সরকারের প্রতি যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, রাজনৈতিক স্বার্থে জিম্মিদের বলি দেওয়া হচ্ছে।