রাজনীতি
বিগত ১৫ বছর নববর্ষ পালনেও ষড়যন্ত্র হয়েছে: রিজভী

বিগত ১৫ বছর পরিকল্পিতভাবে একটি দেশের সংস্কৃতি এ দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
আজ সোমবার সকালে রাজধানীর পরীবাগ সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শুভ নববর্ষ উপলক্ষে এ আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সতীর্থ স্বজন।
বিগত ১৫ বছর একটি পরিকল্পিতভাবে একটি দেশের সংস্কৃতি এ দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা করা হতো। এমনকি এই পহেলা বৈশাখে মুখোশের আড়ালে আমাদের নেত্রীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা হতো। এমনকি দাড়ি-টুপি নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র করা হতো, দাড়ি-টুপি পরা সব মানুষ কি খারাপ? না।
জুলাই ছাত্রদলের কথা স্মরণ করে রিজভী বলেন, তুমুল আন্দোলন চলছে, আমি কারাগারে। সেখান থেকে শুনছি, তারুণ্যের উদ্দীপনা, তেজ। পুলিশ বলছে, ‘গুলি করি একটা পড়ে যায়, আবার সেখানে এসে আরেকজন দাঁড়ায়’। এই উদ্দীপনা দিয়েছে জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের গান, লেখা, অনেক কবির লেখনীর মাধ্যমে।
যার জন্য আমাদের ১৬ বছরের লড়াই, সেটি আমরা নিশ্চিত করি। সেই গণতন্ত্রকে নিশ্চিত করা নিয়ে কোনো টালবাহানা করা যাবে না। এই শুভ নববর্ষে জাতির আকাঙ্ক্ষা দ্রুত ভোটাধিকার ফিরে দেওয়া। কারণ ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশের মানুষের ভোটাধিকারসহ সব অধিকার কেড়ে নিয়ে নিজের কর্তৃত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করেছিল।
সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভোটাধিকারকে কেন সংস্কারের সঙ্গে এক করে দেখা হচ্ছে, গণতন্ত্র মানেই সংস্কার। গণতন্ত্র হচ্ছে প্রবাহমান খরস্রোত নদীর মতো। এখানে কর্তৃত্ববাদের কোনো জায়গা নেই, আর যেখানে কর্তৃত্ববাদের জায়গা নেই সেখানেই গণতন্ত্র বয়ে যায়। সংস্কার হচ্ছে বয়ে যাওয়া।
তিনি বলেন, অনেক উপদেষ্টা এখন বিএনপিকে শত্রু ভাবছে, তারা গণতন্ত্র, ভোটাধিকার বাদ দিয়ে কীভাবে গণতন্ত্রের পরিবর্তে সংস্কারকে ভাবছে, সেটা আমাদের বোধগম্য নয়।
বিএনপির সহপ্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নুরুল ইসলাম, কবি রেজা স্টালিন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহবুব ইসলাম, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি ডা. জাহেদুল কবির জাহিদ প্রমুখ।
কাফি

রাজনীতি
জামায়াতের জাতীয় সমাবেশের প্রথম পর্ব শুরু

সাত দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশের প্রথম পর্ব শুরু হয়েছে। পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশের প্রথম পর্ব শুরু হয়।
শনিবার (১৯ জুলাই) সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতের সমাবেশ মঞ্চে কোরআন তেলাওয়াত দিয়ে শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা। প্রথম পর্ব পরিচালনা করছেন শিল্পী সাইফুল্লাহ মানসুর।
এর আগে সকালে সমাবেশ মঞ্চে এসে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহর শুকরিয়া। আমাদের সমাবেশ ইতোমধ্যে জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়ার জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেন তিনি। আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমতের দোয়া করেন।
এদিকে সাত দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতের সমাবেশে মানুষের ঢল নেমেছে। সমাবেশ শুরুর অনেক আগেই দলটির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে গেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। এ ছাড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে হাজার হাজার জামায়াতের নেতাকর্মী অবস্থান করছেন।
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বাস, ট্রেন ও লঞ্চে করে আসা নেতাকর্মীরা রাজধানীতে এসে মিছিল সহকারে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করছেন। নেতাকর্মীদের অনেকের হাতে তাদের দলীয় প্রতীক দাাঁড়িপাল্লা শোভা পাচ্ছে। দাঁড়িপাল্লা ও দলীয় মনোগ্রাম সম্বলিত টি-শার্ট, পাঞ্জাবি পরে এসেছেন হাজারো নেতাকর্মী।
ভোর থেকে হাইকোর্ট এলাকা, মৎস্যভবন, শাহবাগ এলাকার বিভিন্ন স্পট ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ, সব গণহত্যার বিচার, প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার, ‘জুলাই সনদ’ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন, সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন ও এক কোটিরও বেশি প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ।
বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এককভাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ করছে দলটি।
রাজনীতি
জামায়াতের মহাসমাবেশ আজ, ফজরেই পূর্ণ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান

ফজরেই পূর্ণ হয়ে গেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মহাসমাবেশস্থল রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। গতরাত থেকেই উদ্যানে অবস্থান নিয়েছেন বিভিন্ন জেলা থেকে আগত জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। ফজরের পর কার্যত পূর্ণ হয়ে গেছে সভাস্থল।
আজ শনিবার (১৯ জুলাই) ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতের জাতীয় মহাসমাবেশ। দুপুর ২টায় মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ১০টা থেকে মঞ্চ দখলে থাকবে দেশের খ্যাতনামা ইসলামি সংগীতশিল্পীদের। তবে ফজরেই পূর্ণ হয়ে গেছে সভাস্থল।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তারিকুল ইসলাম বলেন, আমার জেলা ঝালকাঠি থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী এসেছেন লঞ্চে। নির্দেশনা অনুযায়ী বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে এসেছেন। লঞ্চে কোনো হই-হুল্লোড় ছিল না। খাবার প্যাকেট নিয়ে ছিল না কোনো হট্টগোল। সিগারেটের কোনো ধোঁয়া ছিল না। পাওয়া যায়নি গাঁজা কিংবা অন্য কোনো নেশাদ্রব্যের ঘ্রাণ। দলবেঁধে জুয়া কিংবা তাস খেলার আসরও ছিল না।
তিনি বলেন, খোঁজ নিয়ে জানলাম প্রত্যেকে নিজ খরচে তাদের দলের সমাবেশে যোগ দিতে ঢাকায় রওনা হয়েছেন- অর্থাৎ লঞ্চে একত্রে গেলেও প্রত্যেকে লঞ্চভাড়া নিজেরা বহন করছেন। তবে ঘুমানোর জায়গার কমতি ছিল। নিজে জেগে থেকে, বসে থেকে অন্য ভাইকে ঘুমানোর সুযোগ দিয়েছে। ইসলামি দলগুলোর সৌন্দর্য এখানেই। অন্য সব প্রোগ্রামেও দেখেছি এমন শৃঙ্খলা ও চেইন অব কমান্ড। সবার মধ্যে এমন শৃঙ্খলা ফিরুক এবং সবাই নিজ দেশের নাগরিকদের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করুক এমনটাই চাওয়া।
কুমিল্লা থেকে আসা আহমদ ইবনে আহসান বলেন, আমরা গতরাতেই রওয়ানা করে এসেছি। ফজরের আগেই পৌঁছে গেছি। আলহামদুলিল্লাহ। নির্দেশনা মোতাবেক মহাসমাবেশ শেষ হওয়া পর্যন্ত থাকবো। ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, আমরা শুকনো খাবার ও পানি নিয়ে এসেছি। প্রত্যেকের ব্যাগে জায়নামাজ আছে। সবাই মিলে একসঙ্গে গাড়িতে এলেও নিজেরাই খরচ বহন করেছি, সংগঠন থেকে দিতে হয়নি। বরং আমাদের অনেকে স্বেচ্ছায় ১০ থেকে ২০ জনের খরচ বহন করেছেন।
উত্তরের জেলা পঞ্চগড় থেকে এসেছেন আবু সালেহ মো. মুসা। তিনি বলেন, আমরা গতকাল বিকেলেই রওয়ানা করেছি। ফজরে এসে পৌঁছেছি। আমাদের নির্দেশনা ছিল ফজরের নামাজের পরই যেন মাঠে থাকতে পারি। সেভাবে গাড়ি নির্দিষ্ট জায়গায় রেখে সবাই চলে এসেছে।
জামায়াতের জাতীয় মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। মহাসমাবেশে তারা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড, সংস্কার ও বিচারসহ বেশ কিছু দাবি উপস্থাপন করবেন।
জানা গেছে, বাংলাদেশের ক্রিয়াশীল সব রাজনৈতিক দলকেই তাদের সমাবেশে আমন্ত্রণ জানিয়েছে জামায়াত।
জামায়াতের মহাসমাবেশস্থলে ওজু-টয়লেটের ব্যবস্থা আছে। আছে নামাজের ব্যবস্থাও। মেডিকেল বুথ আছে। পর্যাপ্ত শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায়।
রাজনীতি
জনগণের ন্যায্য অধিকার আদায়ে জামায়াত সর্বদা প্রস্তুত: ড. হেলাল

দেশের জনগণের ন্যায্য অধিকার আদায়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম সর্বদা প্রস্তুত বলে মন্তব্য করেছেন দলটির কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য এবং ঢাকা-৮ আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) শাহবাগ পূর্ব থানার উদ্যোগে আয়োজিত প্রচার মিছিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজনসহ ৭ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে শনিবার (১৯ জুলাই) ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াত আয়োজিত জাতীয় সমাবেশকে স্বাগত জানিয়ে এই প্রচার মিছিলের আয়োজন করা হয়।
এসময় ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘আগামী নির্বাচন যেন সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ সুষ্ঠু ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়, তা নিশ্চিত করতে শান্তিপূর্ণ গণআন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘১৯ জুলাই ঢাকার জাতীয় সমাবেশ শুধু একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, এটি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এই সমাবেশের মাধ্যমে জনগণের ন্যায্য দাবি ও অধিকার প্রতিষ্ঠার দৃঢ় প্রত্যয় জাতির সামনে তুলে ধরা হবে। তাই এই ঐতিহাসিক জাতীয় সমাবেশ সফল করার জন্য সর্বস্তরের জনগণকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানাই।’
জামায়াত নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র আজ ভূলুণ্ঠিত, মানুষের ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। আমরা একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটানো জাতীয় নির্বাচন চাই। সে লক্ষ্যেই ১৯ জুলাইয়ের সমাবেশ ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করছে।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতিবাহী সময়ে জাতীয় সমাবেশ জাতীয়ভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। রক্তের বিনিময়ে স্বৈরাচারের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করার পর গণঅভ্যুত্থানের মূল উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামী জাতীয় সমাবেশের আয়োজন করেছে।’
ড. হেলাল বলেন, ‘সংস্কার না হলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। আরেকটি ফ্যাসিবাদের জন্ম হবে। আবারও নির্বাচনের নামে প্রহসন হবে, তা জনগণ কিছুতেই মেনে নেবে না। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থেই এই সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী কোনো চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, দখলবাজদের সঙ্গে জোট করবে না। জোট করবে সৎ, দক্ষ, যোগ্য, নৈতিক ও আদর্শবান নেতৃত্বের সঙ্গে। জামায়াতে ইসলামীর লক্ষ্যই হচ্ছে সৎ, যোগ্য, দক্ষ, নৈতিক ও আদর্শবান নেতৃত্বের মাধ্যমে জাতিকে একটি নিরাপদ বাসযোগ্য কল্যাণ রাষ্ট্র উপহার দেওয়া।’
ড. হেলাল আরও বলেন, ‘যারা দল পরিচালনায় ব্যর্থ, তারা দেশ পরিচালনায়ও ব্যর্থ হবে। যারা ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই দলের নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, তারা ক্ষমতায় গেলে দেশের পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ হবে জাতি সেটি জানে। যে দলের এক নেতা আরেক নেতার কাছে নিরাপদ নয়, এক কর্মী আরেক কর্মীর কাছে নিরাপদ নয়, সেই দলের কাছে দেশ ও জাতি কখনোই নিরাপদে থাকতে পারবে না।’
শাহবাগ পূর্ব থানা আমির আহসান হাবীবের সভাপতিত্বে এবং থানা সেক্রেটারি মো. নুরুন্নবী রায়হানের সঞ্চালনায় মিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন- থানা বায়তুলমাল সম্পাদক কামরুজ্জামান, অফিস ও প্রচার সম্পাদক মুখলেছুর রহমান জুয়েল, কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুল মোনিম খান, ওমর ফারুক, ফারুক হোসেন, আলী হোসেন সুমন, সানাউল্লাহ রাকিবসহ অনেকে।
জামায়াতের এই মিছিলটি সেগুনবাগিচার আন নুর মসজিদের সামনে থেকে শুরু হয়ে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিজয়নগর মোড়ে এসে শেষ হয়।
কাফি
রাজনীতি
হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তি দেখে মরতে চাই: সারজিস

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তর) সারজিস আলম বলেছেন, জুলাই গণহত্যার নির্দেশদাতা, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা, শাপলা গণহত্যার নির্দেশদাতা, দিল্লিতে বসে থাকা হাসিনাকে দেশে এনে বিচারের আওতায় আনতে হবে। এই বাংলাদেশে হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দেখে মরতে চাই।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) দুপুর ১২টায় মুন্সীগঞ্জ শহরের কৃষি ব্যাংক চত্বরে পদযাত্রা শেষে পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় সারজিস বলেন, দেশের বাইরে বসে যারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় গণহত্যার সশস্ত্র হামলার ষড়যন্ত্র করছে তাদের অচিরেই গ্রেপ্তার করে জুলাই সহযোদ্ধাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশ পরিপূর্ণ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়নি। ফ্যাসিস্টদের দোসরমুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশ হতে এখনো অনেক পথ বাকি। আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে সেই পথ পাড়ি দিতে হবে।
সারজিস আরও বলেন, আমরা যখন গোপালগঞ্জে যাই, আমরা বলেছিলাম আমাদের এই স্বাধীন বাংলাদেশে একটি অংশ একটি জেলা এই গোপালগঞ্জ। কিন্তু আমরা দেখলাম সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আস্তানা হয়ে উঠেছে এই গোপালগঞ্জ। শুধু গোপালগঞ্জ নয়, পুরো বাংলাদেশে যেখানে ফ্যাসিস্টদের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা থাকবে, আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে দলমত নির্বিশেষে তাদের প্রতিহত করতে হবে। তাদের যদি আমরা জায়গা করে দিই তবে আগামীর বাংলাদেশে তারা এর চেয়ে বেশি ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে।
পথসভায় আরও বক্তব্য দেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলম, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, ডা. তাসনিম জারা, সামান্তা শারমিনসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। সকাল থেকেই কর্মসূচিকে ঘিরে শহরে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। এ ছাড়া পুলিশ ও সেনাবাহিনীকেও সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে।
কাফি
রাজনীতি
জুলাই হত্যাকাণ্ডের যথাযথ বিচার নিশ্চিতের দাবি ছাত্র ইউনিয়নের

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, উত্তরা থানা শাখার কর্মী মাহমুদুল হাসান রিজভীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা নিবেদন কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় উত্তরার বিএনএস সেন্টারের সামনে শ্রদ্ধা নিবেদন কর্মসূচিতে শহীদ রিজভীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি – ঢাকা মহানগর উত্তর, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএল।
শ্রদ্ধা নিবেদন পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন শুভ’র সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি – ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ডা. সাজেদুল হক রুবেল, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি হাসান হাফিজুর রহমান সোহেল, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় নেতা চৌধুরী জোসেন, যুবনেত্রী মিনা চৌধুরী, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ-বিসিএলের সভাপতি গৌতম চন্দ্র শীল, ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা মহানগরের সভাপতি সালমান রাহাত, সাধারণ সম্পাদক প্রিজম ফকির, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি রাকিবুল হাসান সুজনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
ডা. সাজেদুল হক রুবেল বলেন, “অভ্যুত্থানের যেই জন-আকাঙ্খা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিনিয়ত তার বিপরীতে চলছে। যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে এই গণঅভ্যুত্থানকে মেটিকুলাস ডিজাইনড বলে প্রধান উপদেষ্টা দেশের জনগণের সাথে প্রতারণা করেছেন। জনগণের ত্যাগকে অবজ্ঞা করে বাংলাদেশকে বিদেশি প্রভুদের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। নির্বাচনের কথা শুনলেই ওনাদের সংস্কারের কথা মনে হয়, কিন্তু গত এক বছরে দৃশ্যমান কোন সংস্কারই করতে পারেন নাই। এমনকি বিচারকার্যও শুরু করতে পারেন নাই। জনগণের প্রকৃত মুক্তি নিশ্চিতে বাম-প্রগতিশীল শক্তি একত্রিত হয়ে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।”
সভাপতির বক্তব্যে মাহির শাহরিয়ার রেজা বলেন, “২০২৪ সালের ১৮ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলন মূলত স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনের রূপান্তরিত হয়। ছাত্রসমাজ বুঝতে পেরেছিল পরাক্রমশালী স্বৈরাচারকে পরাস্ত করলে না পারলে ন্যায্য দাবি আদায় করা সম্ভব নয়। সেই ১৮ জুলাই উত্তরায় ২৯ জন ছাত্র-জনতা শহীদ হন। ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী মাহমুদুল হাসান রিজভী মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়।
আজ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ১ বছর হতে চলল। অথচ জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারের কোন অগ্রগতি আমরা দেখছি না। উলটো অভ্যুত্থানের চেতনার বিপরীতে গিয়ে নতুন আরেকটি গণবিরোধী সরকার আমরা পরিলক্ষিত করছি। মুক্তিযুদ্ধকে মিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। অথচ সরকার নির্বিকার। জুলাইয়ের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারের পতন হলেও জনগণের মুক্তি আসে নাই। জনগণের মুক্তির লক্ষ্যে আরও একটি গণঅভ্যুত্থান প্রয়োজন। সেই গণঅভ্যুত্থান হতে হবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দেশপ্রেমিক গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল, সাম্যবাদী শক্তির হাত ধরে। আগামীর সেই লড়াইয়েও ছাত্র ইউনিয়ন সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিবে। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার ভেতর দিয়েই শহীদ রিজভীসহ সকল শহীদের আত্মত্যাগের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা হবে।”
কাফি