জাতীয়
রাশিয়া ও ক্রোয়েশিয়া সফর শেষে দেশে ফিরলেন সেনাপ্রধান

রাশিয়া ও ক্রোয়েশিয়া সফর শেষে দেশে ফিরেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
শনিবার (১২ এপ্রিল) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে এক পোস্টের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে জানানো হয়, সফরকালে সেনাবাহিনী প্রধান রাশিয়া ও ক্রোয়েশিয়ার বিভিন্ন সামরিক ও বেসামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও বৈঠক করেন। রাশিয়ার সেনাবাহিনী প্রধান, ডেপুটি ডিফেন্স মিনিস্টার এবং ক্রোয়েশিয়ান সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিনি।
এর মধ্যে গত ৭ এপ্রিল রাশিয়ার উপ-প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জেনারেল আলেকজান্ডার ফোমিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। এ সময় দুদেশের সেনাবাহিনীর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়, যেমন প্রশিক্ষণ সহযোগিতা, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন, রাশিয়ায় দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি, উচ্চশিক্ষা, আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং যৌথ প্রশিক্ষণ নিয়ে আলোচনা হয় দুজনের মধ্যে।
পরদিন, ৮ এপ্রিল, রাশিয়ান সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওলেগ সালিউকভের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান। বৈঠকে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি, প্রশিক্ষণ বিনিময়, সামরিক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে শিক্ষার্থী ও প্রশিক্ষকের আদান-প্রদান, এবং যৌথ সামরিক মহড়া সংক্রান্ত ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন দুজন।
এছাড়া, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় জ্বালানি সংস্থা ‘রোসাটম’-এর মহাপরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। সেখানে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং নির্ধারিত সময়ে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সংযুক্তি বিষয়ে আলোচনা হয় দুজনের মধ্যে।
‘রোস্টেক’ ও ‘রোজোবোরন এক্সপোর্ট’-এর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন সেনাপ্রধান। এতে দুই দেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা আরও গতিশীল করার বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়।
১০ এপ্রিল, ক্রোয়েশিয়া সফরের সময় দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল তিহোমির কুন্দিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। বৈঠকে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, সম্ভাব্য প্রতিরক্ষা শিল্প স্থাপন, যৌথ সামরিক মহড়া এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয় তাদের মধ্যে।
উল্লেখ্য, ৬ এপ্রিল সেনাপ্রধান রাশিয়া সফরে রওনা হন এবং পরে ১০ এপ্রিল সেখান থেকে তিনি ক্রোয়েশিয়ায় যান।

জাতীয়
১০ দিনের মধ্যে সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রিয়াজ বলেছেন, আজসহ আগামী ১০ দিনের মতো সময় আমাদের হাতে আছে। এর মধ্যেই আমাদের সবগুলো সংস্কারের বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে হবে।
সোমবার (২১ জুলাই) সকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের ১৬তম দিনের বৈঠকের শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সবকিছুর ঊর্ধ্বে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ। আমরা মুক্তিযুদ্ধে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলাম। তার জন্য লাখ লাখ মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে। শুধু একদিনের সংগ্রাম, একটি যুদ্ধের মধ্য দিয়েই সেটি হয়নি। দীর্ঘদিনের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা সেই জায়গায় এসেছি, রাষ্ট্র অর্জন করেছি।
আলী রীয়াজ বলেন, পরবর্তী সময় ৫৩ বছর ধরে আমরা গণতন্ত্রের সংগ্রাম করেছি। আমরা চেষ্টা করেছি, একটি গণতান্ত্রিক জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার। সেই সংগ্রাম অব্যাহত আছে। তারই এক পর্যায়ে আমরা ভয়াবহ ফ্যাসিবাদের শাসনে নিপতিত হয়েছিলাম। সেখান থেকে সব রকম ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে সবাই মিলে সব মতপার্থক্য ভুলে একটা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা আজকের এই জায়গায় এসেছি।
ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি রাজনৈতিক দলসমূহের নেতাদেরকে মুক্তিযুদ্ধ, অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থান, রক্তপাত এবং হাজারো প্রাণনাশের কথা বিবেচনায় রেখে সামনে অগ্রসর হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, সেখান থেকে পেছানোর কোন উপায় নেই। এগুলোকে পাশ কাটিয়ে যাবার কোন উপায় নেই। সেই বিবেচনায় আমরা চাই, আগামী ১০ দিনের মতো সময় আছে। এর মধ্যে একটা ঐকমত্যে আসতে। হয়তো এক-দুইদিন বিশেষ বিবেচনায় বাড়িয়ে নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু আজসহ আমাদের হাতে থাকা ১০ দিনের মধ্যে বাকি বিষয়গুলোতে আমাদের সিদ্ধান্তে আসতে হবে।
বৈঠকটি বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শুরু হয়। আজকের বৈঠকের আলোচ্য বিষয়, প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকার বিধান এবং রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি।
জাতীয়
রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পাচ্ছেন মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা

জুলাই অভ্যুত্থানে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। গুলির সামনে বুক পেতে শহীদ হয়েছিলেন তাদের অনেকেই। বিশেষ করে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার সড়ক মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের রক্তে লাল হয়েছিল।
সেই আত্মত্যাগকে স্মরণে সোমবার (২১ জুলাই) রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন হবে ‘মাদ্রাসা রেজিস্ট্যান্স ডে’।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে দিবসটি পালন হবে। সে জন্য সমন্বিতভাবে কর্মসূচি ঠিক করা হয়েছে। যাত্রাবাড়ীর ইবনে সিনা হাসপাতালসংলগ্ন রাজপথে অনুষ্ঠান আয়োজনের জোর প্রস্তুতি চলছে।
এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সরকার মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের এই বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার। তিনি ছাড়াও আরও কয়েকজন উপদেষ্টা, সচিব এবং শিল্প, সাহিত্য ও শিক্ষা অঙ্গনের বিশিষ্টজনদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
এ দিন বিকেল ৩টায় আনুষ্ঠানিকভাবে ‘মাদ্রাসা রেজিস্ট্যান্স ডে’-এর কর্মসূচি শুরু হবে। চলবে রাত ১১টা পর্যন্ত। অনুষ্ঠানে থাকবে শহীদ পরিবারের স্মৃতিচারণ, আহতদের অভিজ্ঞতা এবং ২০১৩, ২০২১ ও ২০২৪ সালের ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের প্রামাণ্য গল্প।
কবিতা আবৃত্তি, হামদ, নাত ও নাশিদের পাশাপাশি পরিবেশিত হবে দ্রোহের গান। প্রদর্শন হবে দুটি প্রামাণ্য তথ্যচিত্র— ‘ছত্রিশে জুলাই’ ও ‘সাদা জোব্বা, লাল রক্ত’। আরও থাকবে ‘প্রতিরোধ ও পুনর্জাগরণের প্রতীকী উপস্থাপনা’, ড্রোন শো। আর ক্ষণে ক্ষণে জুলাইয়ের সেইসব জ্বালাময়ী স্লোগানে প্রকম্পিত হবে যাত্রাবাড়ীর রাজপথ।
জাতীয়
ঢাকায় আসছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী, গুরুত্ব পাবে অভিবাসনে

দুই দিনের সফরে আগামী ৩০ আগস্ট ঢাকায় আসছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি। তার সফরে অভিবাসন ইস্যু বিশেষ গুরুত্ব পাবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইতালির প্রধানমন্ত্রী আগামী ৩০ আগস্ট ঢাকায় আসার কথা রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে এটি হবে ইউরোপের কোনো দেশের শীর্ষ নেতৃত্বের প্রথম ঢাকা সফর। তিনি ৩১ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করবেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ইতালির প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবিত সফর নিয়ে রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, সফরে অভিবাসন ইস্যুতে বড় অগ্রগতি আসতে পারে। এ ছাড়া, ইতালির প্রধানমন্ত্রীর সফরে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, ব্যবসা-বাণিজ্য, প্রতিরক্ষাসহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করার সুযোগ রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে ইতালির ক্ষমতায় আসেন জর্জিয়া মেলোনির সরকার। মে মাসে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরে বৈধ ও নিয়মিত অভিবাসন নিয়ে ‘মাইগ্রেশান অ্যান্ড মবিলিটি’ একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ।
ঢাকার একটি কূটনৈতিক সূত্র বলছে, গত মে মাসে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাতেও পিয়ান্তেদোসির ঢাকা সফরের সময় উভয়পক্ষ ইতালির প্রধানমন্ত্রীর সফর নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং রোমের দিক থেকে জর্জিয়ার ঢাকা সফরের বিষয়ে সম্মতি জানানো হয়েছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টাকে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) একটি সম্মেলনে যোগ দিতে রোম সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালে ঢাকায় এসেছিলেন ইতালির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রোমানো প্রোদি। ওই সফর ছিল ইতালির কোনো প্রধানমন্ত্রীর প্রথম ঢাকা সফর। এখন ইতালির দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বাংলাদেশ সফরে আসবেন জর্জিয়া মেলোনি।
জাতীয়
লিবিয়া থেকে দেশে ফিরবেন আরো দুই হাজার বাংলাদেশি

লিবিয়া থেকে দেশে ফেরার জন্য দুই হাজারের বেশি বাংলাদেশি নিবন্ধন করেছেন। পর্যায়ক্রমে এসব বাংলাদেশিদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে। সম্প্রতি লিবিয়ার মিসরাতা সফরে এক গণশুনানিতে দেওয়া বক্তব্যে এ তথ্য জানান দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশার।
রোববার (২০ জুলাই) ত্রিপলির বাংলাদেশ দূতাবাস এ তথ্য জানায়।
দূতাবাস জানায়, রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে সম্প্রতি দূতাবাসের একটি দল লিবিয়ার মিসরাতা সফর করেন। সফরকালে রাষ্ট্রদূত মিসরাতা শহরে কর্মরত বাংলাদেশি পেশাজীবীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাদের সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। তিনি প্রবাসীদের সঙ্গে দূতাবাসের উদ্যোগে আয়োজিত একটি গণশুনানিতে উপস্থিত ছিলেন। গণশুনানিতে শতাধিক প্রবাসী তাদের অভিজ্ঞতা, মতামত ও সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রদূত গণশুনানিতে অংশগ্রহণ করে প্রবাসীদের গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা ও পরামর্শ দেন। তিনি জানান, দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট চালুর লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ চলছে এবং ২০২৫ সালের মধ্যেই এই সেবা চালু করা সম্ভব হবে আশা করা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে কারও ই-পাসপোর্ট হারানো বা নষ্ট হলে, দূতাবাস থেকে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে স্থানীয় থানায় জিডি করার পরামর্শ দেন।
তিনি আরও জানান, লিবিয়ায় প্রবাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দূতাবাস স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছে এবং দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। লিবিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় সবাইকে সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরা করার আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত অবৈধ অভিবাসনের ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে সকলকে সচেতন করেন এবং বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর গুরুত্ব তুলে ধরেন। প্রবাসীদের ভবিষ্যৎ আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রবাসী স্কিমে অংশগ্রহণের জন্যও অনুরোধ জানান তিনি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রবাসীদের ভিসা বা আকামা-সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে দূতাবাস স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা করছে। তিনি সব প্রবাসীকে তাদের আকামা নবায়নের ব্যাপারে সচেতন থাকার আহ্বান জানান। এবং দেশের ভাবমূর্তি রক্ষা এবং নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে লিবিয়ার স্থানীয় আইন-কানুন মেনে চলা এবং নৈতিক আচরণ বজায় রাখার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানান।
রাষ্ট্রদূত জানান, গত দেড় বছরে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সহায়তায় ৫ হাজার ৫০০-এরও বেশি অভিবাসীকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে আরও দুই হাজারের বেশি অভিবাসী স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার জন্য নিবন্ধন করেছেন এবং পর্যায়ক্রমে এসব বাংলাদেশিদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
সফরকালে দূতাবাসের প্রতিনিধি দল মিসরাতা থেকে প্রাথমিক তালিকাভুক্ত ২১৮ জন অভিবাসীকে আইওএমের কাছে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে। এ ছাড়া, দূতাবাসের পক্ষ থেকে মিসরাতা শহরে কনস্যুলার ও কল্যাণ সেবা প্রদান করা হয়। এ সময় মিসরাতা এবং এর আশপাশের শহরে বসবাসরত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী দূতাবাসের বিভিন্ন সেবা গ্রহণ করেন।
কাফি
জাতীয়
ডেঙ্গু ও করোনার চিকিৎসায় নতুন নির্দেশনা জারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের

দেশজুড়ে ডেঙ্গু আর করোনাভাইরাস চোখ রাঙ্গাচ্ছে। দেশের কোথাও কোথাও এ ভাইরাসে মৃত্যু পর্যন্ত হচ্ছে। তবে নতুন ধরন ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে চিকিৎসাসেবার মান উন্নয়নে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
রোববার (২০ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান স্বাক্ষরিত সার্বিক নির্দেশনাপত্র জারি করেছে। এই নির্দেশনাগুলো দেশের সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিশেষায়িত হাসপাতাল, বিভাগীয় ও জেলা হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং সিভিল সার্জন কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি বিবেচনায় নির্দেশনাসমূহর মধ্যে রয়েছে, সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগে ফ্লু কর্নার/ফিভার কর্নার রাখতে হবে। এখানে জ্বরের রোগী এলে শনাক্ত করা ডেঙ্গু রোগীকে ট্রিয়াজ অর্থাৎ প্রাথমিক নির্ণয়ের মাধ্যমে রোগের তীব্রতা অনুযায়ী এ, বি ও সি গ্রুপে অন্তর্ভুক্ত করে গাইডলাইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে হবে। সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষার ব্যবস্থাসহ পর্যাপ্ত ডেঙ্গু শনাক্তকরণ কিটের মজুত নিশ্চিত করতে হবে। বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানসমূহে ডেঙ্গু শনাক্তকরণের জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা বিধি মোতাবেক সরকারের পূর্বনির্ধারিত হারে ফি প্রযোজ্য হবে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নজরদারিতে রাখবে। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী তীব্রতা অনুযায়ী প্রয়োজনে হাসপাতালে ভর্তি হবে অথবা তাকে উচ্চতর হাসপাতালে রেফার করতে হবে।
সব হাসপাতালে ডেঙ্গু ডেডিকেটেড বেড/ওয়ার্ডের ব্যবস্থা করতে হবে। সব হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসার জন্য প্রশিক্ষিত সুনির্দিষ্ট চিকিৎসক দল থাকতে হবে। ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় আইভি ফ্লুইডের ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং প্রয়োজনে বিধি মোতাবেক ক্রয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিটি রোগীর ফ্লুইড গ্রহণ ও বর্জনের চার্ট নিয়মিতভাবে রেকর্ড ও মনিটরিং করতে হবে। ডেঙ্গু রোগীদের জাতীয় গাইডলাইন অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে হবে। প্লাটিলেট কনসেনট্রেট প্রয়োজন হলে সরকারিভাবে সংগ্রহ করা যাবে।
২১টি সেন্টারে প্লাটিলেট সরবরাহের ব্যবস্থা রয়েছে। এসব সেন্টারের মধ্যে রয়েছে- DMCH. NICVD, NIKDU, NINS, BMU, CMCH. RMCH, NICRH. RpmCH, Dinajpur MCH. (DJMCH), SZMCH. Manikganj MCH. Sher-E-Bangla MCH, Sylhet MAG Osmani MCH. NIDCH, ShSMCH. SSMCH. Coxsbazar H. MMCH, Faridpur MCH. Sirajganj MCH
আরও নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীদের ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত মশারির ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রতিটি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানের জন্য গঠিত মৃত্যু পর্যালোচনা কমিটি রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখায় (সিডিসি) পাঠাতে হবে। ডেঙ্গু ভেক্টর বাহিত রোগ বিধায় জিও লোকেশন ট্রেসিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর মোবাইল নম্বর ও পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা অবশ্যই সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করে সংরক্ষণ করতে হবে।
ডেঙ্গু পরীক্ষার তথ্য দেওয়ার জন্য এমআইএস থেকে ডেঙ্গু ট্র্যাকার অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি সব ল্যাবরেটরিতে এর ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। স্থানীয় সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে ডেঙ্গু বিষয়ক প্রচার-প্রচারণার ব্যবস্থা নিতে হবে। ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিধায় হাসপাতালের ভেতর পরিষ্কার রাখতে হবে। এডিস মশার বংশবিস্তার রোধে সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভার সহযোগিতায় হাসপাতালের চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। হাসপাতালের দর্শনার্থীদের সংখ্যা সীমিত রাখতে হবে।
অপর দিকে, করোনা চিকিৎসায় নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে, সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কোভিড প্রতিরোধে ব্যক্তিগত সতর্কতা নিশ্চিত করতে হবে (মাস্ক পরা ও প্রয়োজনে পিপিই পরা)। হাত ধোয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগে জ্বরের রোগীদের বিশেষভাবে পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ করতে হবে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। হাসপাতালে চাহিদা ও সংক্রমণের তীব্রতা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সংখ্যক আইসোলেশন/কোভিড শয্যা নিশ্চিত করতে হবে। হাসপাতালে চাহিদা অনুযায়ী সিডিসি থেকে র্যাপিড অ্যান্টিজেন কিট সংগ্রহ করতে হবে। একই সঙ্গে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিধি মোতাবেক কিট সংগ্রহের ক্রয়প্রস্তুতি নিতে হবে।
অ্যান্টিজেন টেস্টে কোভিড পজিটিভ রোগীদের নির্দিষ্ট আরটি পিসিআর ল্যাবে নমুনা পাঠিয়ে পরীক্ষা করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় তথ্য DHIS2 ও MIS সার্ভারে এন্ট্রি করতে হবে। যৌক্তিক কারণ ছাড়া কোনো কোভিড রোগীকে অন্য হাসপাতালে রেফার করা যাবে না। যদি রেফার করার প্রয়োজন পরে তাহলে প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করে রেফার করতে হবে (রেফারেল হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করে নেওয়া যেতে পারে)। কোভিড চিকিৎসার ক্ষেত্রে জাতীয় কোভিড-১৯ ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট গাইডলাইন-দশম ভার্সন অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে হবে। হাসপাতালে আগত রোগী/দর্শনার্থীদের কোভিড সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সচেতন করা।
কাফি