অর্থনীতি
আসন্ন বাজেটে কর বাড়ানো হবে: এনবিআর চেয়ারম্যান

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান জানিয়েছেন, আসন্ন জাতীয় বাজেটে কর যৌক্তিকভাবে বৃদ্ধি করা হবে। তিনি বলেন, দেশের উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে রাজস্ব আদায় বাড়ানো এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (সিসিসিআই) প্রাক-বাজেট আলোচনায় বক্তৃতা করতে গিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত বিশ্বের অন্যতম নিম্নতম, যা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। কর কমালে বড় ধরনের রাজস্ব ঘাটতি দেখা দেবে, যা বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ বহন করতে পারবে না।
তিনি বলেন, উন্নয়নের জন্য রাজস্ব অপরিহার্য। আমাদের উপর ব্যাপক চাপ রয়েছে রাজস্ব সংগ্রহ বাড়ানোর, না পারলে অগ্রগতি নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হব।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিসিসিআই প্রশাসক মোহাম্মদ আনোয়ার পাশা। আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর চেম্বারের সভাপতি খলিলুর রহমান, চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবিদা মুস্তাফা, বাংলাদেশ ফার্নিচার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের মকসুদুর রহমান, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সালেহ আহমেদ সোলাইমান, সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলীসহ অন্যান্য ব্যবসায়ী নেতারা।
এনবিআর চেয়ারম্যান উদাহরণ দিয়ে বলেন, একটি দেশ একটি পরিবারের মতো—যারা বেশি আয় করে, তারা বেশি অবদান রাখে, আর যারা আয় করে না, তারা পকেট মানি পায়। তেমনি আমরা কর সংগ্রহ করি ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সেবা নিশ্চিত করি।
তিনি জানান, দেশে নিবন্ধিত ১ কোটি ৪৫ লাখ করদাতার মধ্যে প্রকৃত কর প্রদান করেন মাত্র ৪৫ লাখ, যার মধ্যে ৩০ লাখ করদাতা শূন্য রিটার্নধারী। তবে তিনি বলেন, কর ব্যবস্থায় ডিজিটাল অগ্রগতি হচ্ছে—গত বছর অনলাইনে ৪ লাখ রিটার্ন জমা পড়লেও এবার তা ১৫ লাখে পৌঁছেছে।
ভ্যাট কমানোর প্রস্তাবের জবাবে আবদুর রহমান খান বলেন, আমরা একক হারে ভ্যাট কমাতে প্রস্তুত, তবে সব পণ্যে একই হার হতে হবে। ব্যবসায়ীদেরও প্রকৃত ভ্যাট প্রদানের ব্যাপারে সৎ হতে হবে। তিনি আরও জানান, এনবিআর প্রতি মাসের পরিবর্তে ত্রৈমাসিক ভ্যাট নিরীক্ষা চালু করার চিন্তা করছে, এবং ভ্যাট ব্যবস্থাকে আরও স্বয়ংক্রিয় করতে কাজ করছে।
বন্ড সুবিধার অপব্যবহার নিয়েও কঠোর মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য করমুক্ত কাঁচামাল আমদানির সুবিধা নেওয়া হলেও তা স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা হয়। স্বর্ণের ক্ষেত্রে তো আমদানি রেকর্ডই নেই, অথচ বাজারে টনকে টন স্বর্ণ পাওয়া যায়।
রিকন্ডিশন গাড়ির বাজারে আন্ডার-ইনভয়েসিংয়ের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ১৫ লাখ টাকায় আমদানিকৃত গাড়ি ৪০ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে—এটা দেখেই বোঝা যায় আন্ডার-ইনভয়েসিং হয়েছে। এজন্যই ৫০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে বাধ্য হচ্ছি।
জাহাজভাঙা শিল্পে আমদানি শুল্ক নিয়েও সমালোচনার জবাবে তিনি বলেন, দেখতে অযৌক্তিক মনে হলেও, এসব শুল্ক না থাকলে জাহাজগুলোতে মূল ওজনের চেয়ে বেশি তেল আসবে—এটা সুবিধার অপব্যবহারের উদাহরণ।
ব্যবসায়ী নেতাদের বিভিন্ন দাবির প্রসঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, বেশিরভাগ প্রস্তাব যুক্তিযুক্তভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে এবং বাজেটে প্রতিফলন ঘটবে বলে আশা করি।
এসময় খলিলুর রহমান মূলধনী যন্ত্রপাতির ওপর শুল্ক কমানোর দাবি জানান। বলেন, গত বছর ক্রেনের মতো যন্ত্রপাতির ওপর শুল্ক ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৭ শতাংশ করা হয়েছে, যা আবার কমানো জরুরি।
সিসিসিআই প্রশাসক আনোয়ার পাশা ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে বাজেটের জন্য প্রায় ১৬টি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। এর মধ্যে ছিল কর ও ভ্যাট ব্যবস্থাকে সহজীকরণ, বন্ড ব্যবহারে নজরদারি, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের উৎসে কর মাফ, আগাম আয়কর (এআইটি) দ্রুত ফেরত, ও ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮ শতাংশ করার প্রস্তাব ইত্যাদি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
সব বৈদেশিক মুদ্রায় হিসাব খুলতে পারবেন প্রবাসীরা

এত দিন শুধু অনুমোদিত চারটি বৈদেশিক মুদ্রায় প্রবাসীদের হিসাব খোলার সুযোগ ছিল। তবে এখন থেকে প্রবাসীরা ব্যবহারযোগ্য সব বৈদেশিক মুদ্রায় হিসাব খুলতে পারবেন। সেই সঙ্গে প্রবাসীদের নামে খোলা বৈদেশিক হিসাবের সুদের হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে এখন থেকে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে সুদের হার নির্ধারিত হবে।
গতকাল রবিবার (১৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংক এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, এত দিন শুধু অনুমোদিত চারটি বৈদেশিক মুদ্রায় প্রবাসীদের হিসাব খোলার সুযোগ ছিল। সেগুলো হলো ডলার, পাউন্ড, ইউরো ও ইয়েন। এখন অনুমোদিত মুদ্রার পাশাপাশি ব্যবহারযোগ্য সব বৈদেশিক মুদ্রায় হিসাব খুলতে পারবেন। এ সুযোগ দেওয়ায় দেশে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বাড়বে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, অনাবাসী বাংলাদেশিরা অনুমোদিত বিদেশি মুদ্রার পাশাপাশি ব্যবহারযোগ্য বিদেশি মুদ্রায় প্রাইভেট ফরেন কারেন্সি (পিএফসি) হিসাব এবং নন-রেসিডেন্ট ফরেন কারেন্সি ডিপোজিট (এনএফসিডি) হিসাব খুলতে পারবেন। পিএফসি ও এনএফসিডি হিসাবের বিপরীতে সুদের নির্ধারিত হারও প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে সুদের হার নির্ধারণ করতে পারবে ব্যাংকগুলো।
খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, যাঁরা দেশের বাইরে অবস্থান করছেন, তাঁরা বিভিন্ন মুদ্রায় আয় করে থাকেন। সেই দেশগুলোর নিজস্ব মুদ্রায় সঞ্চয় করতে তাঁরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। সে জন্য এই সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সুদহার বাজারভিত্তিক করায় ব্যাংকগুলো চাহিদামতো সুদ দিতে পারবে। যখন যে মুদ্রার চাহিদা বেশি হবে, সেই মুদ্রায় বেশি সুদ দিতে পারবে। এতে সঞ্চয় আরও বাড়বে। এতে বিদেশি মুদ্রায় প্রবাসীদের সঞ্চয় বেড়ে যাবে বলে আশা করছেন ব্যাংকাররাও।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
কেজিপ্রতি পেঁয়াজে দাম বেড়েছে ১৫ টাকা

হঠাৎ করেই রাজধানীর বাজারগুলোতে পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করেছে। তিনদিনে কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৫ টাকা পর্যন্ত। সামনে দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশি পেঁয়াজের এখন ভরা মৌসুম। কিন্তু হঠাৎ করেই আড়তে পেঁয়াজের সরবরাহ কমে গেছে। তাই পাইকারিতে দাম বেড়ে গেছে। ঢাকায় সব থেকে বেশি পেঁয়াজ আসে ফরিদপুর থেকে।
ফরিদপুরের পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। আড়তদারদের কথায় যা বোঝা যাচ্ছে সামনে দাম আরও বাড়বে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) ঢাকার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজার ভেদে হালি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬৫ টাকা। গত শুক্রবারও বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজের কেজি ৪০ টাকা ছিল। কিছু কিছু ব্যবসায়ী বাছাই করা ভালো পেঁয়াজ ৪৫ টাকা বিক্রি করছিলেন। এখন সেই পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
মালিবাগ হাজীপাড়ায় পেঁয়াজ বিক্রি করা মো. জাহাঙ্গীর বলেন, শুক্রবার আমরা হালি পেঁয়াজ ৪০ টাকা কেজি বিক্রি করেছিলাম। কিন্তু গত দুই দিন ধরে পাইকারিতে দফায় দফায় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। গতকাল ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। আজ পাইকারিতে যে দামে কিনেছি তাতে ৫০ টাকার নিচে বিক্রি করার উপায় নেই।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
জাপানের কোম্পানিই পাচ্ছে থার্ড টার্মিনালের দায়িত্ব

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল-৩ পরিচালনা নিয়ে শুরু থেকেই জাপানি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা চলছিল। অবশেষে জাপানের দুটি সরকারি ও চারটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গঠিত একটি ‘বিশেষায়িত কোম্পানি’ ১৫ বছরের জন্য নবনির্মিত টার্মিনালটির পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পাচ্ছে।
এবিষয়ে দেশটির কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে এক মাসের মধ্যে চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর হবে বলে আশা করছেন বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, জাপানি কনসোর্টিয়ামের নেতৃত্বে থাকবে দেশটির বেসরকারি খাতের প্রতিষ্ঠান সুমিতোমো করপোরেশন। চারটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি একই কনসোর্টিয়ামের অংশীদার জাপানের মিনিস্ট্রি অব ল্যান্ড, ইনফ্রাস্ট্রাকচার, ট্রান্সপোর্ট অ্যান্ড ট্যুরিজম ও জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) মডেলে বিশেষ এ কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করবে বাংলাদেশ।
থার্ড টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্ব এরই মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসকে দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বিমান অবশ্য সে কাজটি করবে জাপানি কনসোর্টিয়ামের অধীনে।
বেবিচক সূত্র বলছে, থার্ড টার্মিনাল থেকে দুই ধরনের আয় হবে। অ্যারোনটিক্যাল আয়ের মধ্যে অ্যামবার্কেশন ফি ও বোর্ডিং ব্রিজের চার্জ আদায় করবে জাপানি কনসোর্টিয়াম। আর নন-অ্যারোনটিক্যাল আয়ের মধ্যে বিমানবন্দরের সার্বিক বাণিজ্যিক কার্যক্রমের পুরোটাই থাকবে তাদের হাতে। এসব আয় দিয়েই টার্মিনালের যাবতীয় রক্ষণাবেক্ষণকাজ করা হবে। এরপর যে অর্থ উদ্বৃত্ত থাকবে, তার একটি অংশ পাবে পরিচালনার দায়িত্বে থাকা জাপানি কনসোর্টিয়াম, আরেকটি অংশ পাবে বাংলাদেশ সরকার।
বেবিচকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জাপানি কনসোর্টিয়ামকে খসড়া চুক্তির জন্য ‘রিকোয়েস্ট ফর প্রপোজাল’ পাঠানো হয়েছে। পিপিপি আইন অনুযায়ী, এটা পাওয়ার পর তারা সর্বোচ্চ ৪২ দিন সময় নিতে পারে। যদিও বেবিচক কর্মকর্তাদের প্রত্যাশা, এক মাসের মধ্যেই চুক্তি সম্পাদন হয়ে যাবে।
চুক্তির পর পরই অবশ্য টার্মিনালে কার্যক্রম শুরু করতে পারবে না অপারেটর প্রতিষ্ঠান। প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি শেষ করে টার্মিনালের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করতে তাদের ছয় থেকে আট মাসের মতো সময় লাগতে পারে বলে বেবিচক সূত্রে জানা গেছে।
থার্ড টার্মিনালের অপারেটর নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলেন, ‘প্রায় এক মাস ধরে তাদের (জাপানি কনসোর্টিয়াম) সঙ্গে আমরা আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। এরই মধ্যে তাদের রিকোয়েস্ট ফর প্রপোজাল এবং কনসেশন এগ্রিমেন্ট দিয়েছি। টার্মস নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়ে গেছে।’
জাপানি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে থার্ড টার্মিনালের অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স চুক্তির বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছে। শিগগিরই আমরা চুক্তি স্বাক্ষর করে ফেলব। এরপর আমরা থার্ড টার্মিনাল অপারেশনে যাব। চুক্তি সম্পন্ন করার পাঁচ-ছয় মাসের মধ্যে অপারেশনে যেতে পারব বলে আমরা আশাবাদী।
টার্মিনাল থেকে আয় হওয়া রাজস্ব কীভাবে বণ্টন হবে এমন প্রশ্নে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, এটা নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে। যা আয় হবে, তার বড় অংশই টার্মিনাল রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় হবে। বাকি অংশের এক ভাগ পাব আমরা, আরেক ভাগ অপারেটর। যেহেতু এখনো চুক্তি চূড়ান্ত হয়নি, সেহেতু রাজস্ব ভাগাভাগির বিষয়ে চূড়ান্ত কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না।
শাহজালালের থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ হচ্ছে জাইকার ঋণে। ২ হাজার ১৩৯ কোটি টাকার প্রকল্পটিতে জাপানের আর্থিক সংস্থাটির ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা। ঋণদাতা দেশের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টার্মিনালের নির্মাণকাজেও যুক্ত ছিল।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর তরিঘড়ি করে থার্ড টার্মিনালের ‘সফট লঞ্চিং’ করেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। সে সময় টার্মিনাল প্রকল্পের অগ্রগতি ছিল ৯০ শতাংশ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে টার্মিনাল ভবন প্রস্তুত থাকলেও অপারেটর না থাকায় বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। এক মাসের মধ্যে অপারেটরের সঙ্গে চুক্তি হলে চলতি বছরের শেষ নাগাদ বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হতে পারে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সবজির দাম কমেছে, মাছ-মাংস অপরিবর্তিত

সপ্তাহের ব্যবধানে বরিশালের বাজারে সবজির দাম কমলেও অপরিবর্তিত রয়েছে মাছ-মাংসের দাম। গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতি কেজি সবজি ১০-১৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। তবে মাছ-মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকালে বরিশালের বিভিন্ন সবজির বাজার ও আড়ত ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শসা গত সপ্তাহে পাইকারি কেজি ২০-২৫ টাকা করে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকা করে। এছাড়া কাঁচামরিচ গত সপ্তাহে কেজি ৩৫-৪০ টাকা বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকা দরে, পটল গত সপ্তাহে ৫০-৬০ টাকা বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে ৪০-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া ১০-১৫ টাকা কমে বেগুন আকার ভেদে ৪০-৫০ টাকা, সজনে ৮০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৬০ টাকা, কুমড়া ৩০ টাকা, করলা ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পিস লাউ ৪০-৫০ টাকা ও লেবুর হালি ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে আলু প্রতি কেজি ২৫-৩০ টাকা, পেঁয়াজ ৪০ টাকা, রসুন ৫০-৬০ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে মাছ-মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এরমধ্যে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০-১৯০ টাকায়। সোনালি মুরগি ৩৩০ টাকা, গরুর মাংস ৭৫০ টাকা ও খাসির মাংস ১১৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
কেজি প্রতি রুই ৩০০-৪৫০ টাকা, টেংরা মাছ ৫০০-৬০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০ টাকা, পাঙাশ মাছ ১৩০-১৫০ টাকা, চিংড়ি প্রকারভেদে ৪৫০-৬৫০ টাকা, পাবদা ৩৫০-৪০০ টাকা, মাঝারি ভেটকি ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বরিশালে সবজির একমাত্র পাইকারি বাজার বহুমুখী সিটি মার্কেটের ব্যবসায়ী দুলাল বাণিজ্যালয়ের মালিক আমিন শুভ জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই সবজির দাম কম। এর মূল কারণ হচ্ছে এবার দেশের বিভিন্ন স্থানে সবজির উৎপাদন ভালো হয়েছে। এর প্রভাবে খুচরা বাজারেও সবজি কম মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। তবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আছে যারা বিভিন্ন খরচের দোহাই দিয়ে পাইকারি বাজার থেকে সবজি কিনে দ্বিগুণ মূল্যে খুচরা বাজারে বিক্রি করে।
নগরীর বাংলাবাজার এলাকার খুচরা সবজি বিক্রেতা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, পাইকারি বাজারের দাম খুচরা বাজারে হিসাব করলে হবে না। কারণ পাইকারি বাজার থেকে পণ্য কেনার পর তা পরিবহন ব্যয় শ্রমিক দিয়ে আনতে হয়। এরপর বাজারে নিয়ে বসলে সেখানে আলাদা খরচ দিতে হয়।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক অপূর্ব অধিকারী বলেন, অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধি রোধে প্রায় প্রতিদিনই বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীদের জরিমানা করা হচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিরাই যেন ভাতা পান, পরামর্শ আইএমএফের

ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিরাই যেন ভাতা-সুবিধা পান, তা বিবেচনায় রেখে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিগুলো সাজানোর পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সফররত মিশন। এ ব্যাপারে কোনো কারিগরি সুবিধা লাগবে কি না, তা–ও জানতে চেয়েছে সংস্থাটি।
চলমান ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ কর্মসূচি থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থছাড়ের আগে আলোচনা করতে আইএমএফের এই মিশন ৬ এপ্রিল ঢাকায় এসেছে। ধারাবাহিক বৈঠকের অংশ হিসেবে গত শনিবার তারা সচিবালয়ে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করে। এতে আইএমএফ মিশনের তিনজন সদস্য অংশ নেন।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, আইএমএফের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সম্প্রসারণের কোনো উদ্যোগ আছে কি না সরকারের। এ বিষয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী এবং ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর জন্য সরকারের নতুন কোনো সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল আছে কি না, তা–ও জানতে চেয়েছেন তাঁরা।
অর্থ বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রকৃত উপকারভোগীরাই যেন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় থাকেন, সে ব্যাপারে কাজ চলছে। এ নিয়ে বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কারিগরি সহায়তা আছে। আপাতত কোনো কারিগরি সহায়তা লাগবে না।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য সরকার ৯২ পৃষ্ঠার একটি সামাজিক নিরাপত্তা বাজেট প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল গত বছর। সেই প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে ১৪০টি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি রয়েছে। এসব কর্মসূচির জন্য বরাদ্দ রয়েছে ১ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা।
তবে সরকারের দিক থেকে এমন কর্মসূচিকেও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি হিসেবে দেখানো হয়, যা আসলে এ ধরনের কর্মসূচি নয়। কোন কর্মসূচিগুলো সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, কোনগুলো তা নয়—এ নিয়ে অর্থনীতিবিদদেরও ভিন্নমত রয়েছে। প্রকৃত কর্মসূচি হচ্ছে বয়স্ক ভাতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, কর্মজীবী মায়ের জন্য ভাতার মতো ১৪টি, যেগুলোর আওতায় নগদ সহায়তা দেওয়া হয়।
অথচ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের যে বৃত্তি দেওয়া হয়, সেটাকেও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বলে দাবি করে সরকার। আবার অবসরভোগী সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন ও সঞ্চয়পত্রের সুদের একাংশ ইত্যাদিকেও দেখানো হয় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি হিসেবে। এসব খাতে ব্যয় হয় প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা।
সরকার ২০১৫ সালে জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা কৌশলপত্র প্রণয়ন করলেও অনেক ক্ষেত্রে এর সঙ্গে চলমান সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী সংগতিপূর্ণ নয়। পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ ২০১৬ সালেই তথ্য-উপাত্ত দিয়ে জানিয়েছিল যে দেশের ৬৪ শতাংশ দরিদ্র মানুষ সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী কর্মসূচিগুলোর একটির সুবিধাও পায় না।
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সম্পর্কিত উপদেষ্টা কমিটি সম্প্রতি একটি বৈঠক করেছে। এ বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে আগামী অর্থবছরে নগদ সহায়তা দেওয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত কর্মসূচিগুলোতে ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়ানো হবে। আইএমএফকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। আসন্ন বাজেট বক্তব্যে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এ বরাদ্দ বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করবেন বলে জানা গেছে।
সূত্রগুলো জানায়, এ দফার বৈঠকে আইএমএফ মিশনের সদস্যরা নোট নিয়েছেন। কাল মঙ্গলবার অর্থ বিভাগের সঙ্গে একই বিষয়ে আরেকটি বৈঠক রয়েছে। এ বৈঠক থেকে উঠে আসা তথ্যই আইএমএফের পর্যালোচনা প্রতিবেদনে উল্লেখ থাকবে।