আন্তর্জাতিক
টিকটককে আরো ৭৫ দিন সময় দিলেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ওপর ঝুলে থাকা নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের সময়সীমা আবারও ৭৫ দিনের জন্য পিছিয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) এ সম্পর্কিত একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করার মাধ্যমে দেশটিতে টিকটককে দ্বিতীয়বারের মতো লাইফলাইন প্রদান করলেন তিনি।
অন্যথায় আজই (৫ এপ্রিল) দেশটিতে নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হতো চীনের বাইটড্যান্সের মালিকানাধীন স্বল্পদৈর্ঘ্যের ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপটি। খবর বিবিসির।
গতকাল শুক্রবার (৪ এপ্রিল) ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ লিখেছেন, “আমরা চাই না টিকটক অন্ধকারে চলে যাক। টিকটক এবং চীনকে নিয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর আশা করছি।”
যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ১৭ কোটিরও বেশি গ্রাহক রয়েছে। কিন্তু এর চীনভিত্তিক মালিকানা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছেন মার্কিন আইনপ্রণেতারা। টিকটকের মাধ্যমে চীন সরকার মার্কিন জনগণের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করতে পারে, এই আশঙ্কা ব্যক্ত করেছে মার্কিন প্রশাসন। যদিও বাইটড্যান্স ও চীন এই অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে।
গত বছরের এপ্রিলে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সরকার প্রণীত আইনে জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে টিকটক। জো বাইডেন সরকারের আইন অনুযায়ী, বাইটড্যান্সকে টিকটকের যুক্তরাষ্ট্র অংশের ব্যবসার নিয়ন্ত্রণমূলক মালিকানা চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারির মধ্যে ছেড়ে দিতে হবে কোনো মার্কিন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে। অন্যথায় দেশটিতে টিকটককে নিষিদ্ধ করা হবে।
তবে, জানুয়ারিতে নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড দায়িত্ব নেওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করে টিকটকের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর ৭৫ দিন পিছিয়ে দেন। ফলে সাময়িকভাবে নিষেধাজ্ঞা এড়াতে সক্ষম হয় টিকটক। ৭৫ দিনের সেই সময়সীমা আজ (৫ এপ্রিল) শেষ হওয়ার কথা ছিল।
গতকাল শুক্রবার ট্রাম্পের নতুন নির্বাহী আদেশের ফলে আরো ৭৫ দিন সময় পেল টিকটক। সে হিসেবে এবার ১৯ জুনের মধ্যে বাইটড্যান্সকে টিকটিক ইস্যুতে চুক্তি সম্পাদন করতে হবে।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে বাইটড্যান্স জানিয়েছে, তারা ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এখনো কোনো চুক্তি সম্পন্ন হয়নি।
কোম্পানির এক মুখপাত্র বলেছেন, “কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখনো নিষ্পত্তি করা বাকি এবং যেকোনো চুক্তি চীনা আইনের অধীনে অনুমোদন নিতে হবে।”
বিবিসি প্রতিবেদন বলছে, গত বুধবার টিকটক কেনার একটি চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। তবে একই দিনে ট্রাম্প চীনের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা করার পর চুক্তিটি ভেঙে যায়।
চুক্তির সঙ্গে পরিচিত একটি সূত্র সিবিএস নিউজকে জানিয়েছে, বাইটড্যান্সের প্রতিনিধিরা হোয়াইট হাউজের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারা জানিয়েছেন যে, শুল্কের বিষয়ে আলোচনা না হলে চুক্তিটির অনুমোদন দেবে না চীন।
ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত চীনা দূতাবাস এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা বাজার অর্থনীতির মৌলিক নীতি লঙ্ঘনকারী অনুশীলনের বিরোধিতা করে।
যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা পণ্যের ওপর ৫৪ শতাংশ মোট শুল্কের সম্মুখীন হয়েছে চীন এবং ৩৪ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে। টিকটক বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষর হলে শুল্ক কমানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন ট্রাম্প।

আন্তর্জাতিক
মালয়েশিয়া ভ্রমণকারীদের জন্য নতুন নিয়ম

মালয়েশিয়ায় ভ্রমণকারীদের বিষয়ে নতুন নিয়ম করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে দেশটির ইমিগ্রেশন বিভাগ। এতে বলা হয়েছে সর্বোচ্চ ৯০ দিনের মধ্যে অতিরিক্ত সময় মালয়েশিয়ায় অবস্থানকারী বিদেশিদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক জরিমানার বিধান কার্যকর করা হবে।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) জোহরের সেকোলা কেবাংসান রামবং পুলাইতে ইমিগ্রেশন বিভাগের এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি সাইফুদ্দিন নাসুতিন ইসমাইল।
তিনি বলেন, বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত করা এবং মামলা আদালতে না নেওয়ার উদ্দেশ্যে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে, ৯০ দিনের বেশি অবস্থানকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালানো হবে।
জরিমানার নতুন কাঠামো:
১ থেকে ৩০ দিন অতিরিক্ত অবস্থান করলে প্রতিদিন ৩০ রিঙ্গিত জরিমানা, সর্বোচ্চ ৯০০ রিঙ্গিত পর্যন্ত। ৩১ থেকে ৬০ দিন পর্যন্ত অবস্থান করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ১,০০০ রিঙ্গিত জরিমানা। ৬১ থেকে ৯০ দিন পর্যন্ত অবস্থান করলে ২,০০০ রিঙ্গিত জরিমানা। ৯০ দিনের বেশি অবস্থান করলে তদন্ত পত্র খোলা হবে।
মন্ত্রী জানান, এই পদক্ষেপে বিচারের সময়কাল ১৪ দিন থেকে কমে মাত্র এক দিনে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে অভিবাসন ডিপোতে ভিড়ও কমবে। তবে দুর্ঘটনা, বন্যা বা অন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো যুক্তিসঙ্গত কারণে দেশে ফিরতে না পারা ব্যক্তিদের জন্য শিথিলতার সুযোগ রাখা হয়েছে।
এদিকে, ইমিগ্রেশন বিভাগের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন অভিবাসন আইন লঙ্ঘনের দায়ে ৩৫ হাজার ২২৫ জন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করা হয়েছে। এ সময় দেশব্যাপী ৯ হাজার ৫০০টি অভিযান চালানো হয়, যেখানে ১ লাখ ৫২ হাজার বিদেশিকে চেক করা হয়।
আটক হওয়া অভিবাসীদের মধ্যে ইন্দোনেশীয়, মিয়ানমার এবং বাংলাদেশিরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। তাদের মধ্যে কেউ বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই দেশে প্রবেশ করেছিলেন, কেউ মেয়াদোত্তীর্ণ অবস্থান করেছেন, আবার কেউ বৈধ পাসপোর্ট বা কাজের অনুমতির অপব্যবহার করেছেন। এ সময়ের মধ্যে ১ হাজার ৩৯৫ জন নিয়োগকর্তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে অবৈধ অভিবাসী নিয়োগ ও আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে।
এছাড়া, ২৮ আগস্ট পর্যন্ত ৩৬ হাজার ৫৫৭ জন বিদেশিকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া আটকাদেশ, ফেরত পাঠানোর আদেশ এবং বিমানের টিকিট সংগ্রহের ১০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক
মালয়েশিয়ায় ৩৪ বাংলাদেশিসহ ৯৪ জন আটক

মালয়েশিয়ার জোহর ইমিগ্রেশন বিভাগ বৃহৎ অভিযান চালিয়ে ৩৪ জন বাংলাদেশিসহ মোট ৯৪ জন অবৈধ অভিবাসীকে আটক করেছে।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) ইস্কান্দার পুটেরি ও কুলাই এলাকায় একযোগে ৪৩টি স্থানে অভিযান চালায় জোহর বাহরু ইমিগ্রেশন বিভাগ। এ সময় মোট ১৯৯ জনকে তল্লাশি করে ৯৪ জনকে আটক করা হয়।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে জোহর ইমিগ্রেশন পরিচালক দাতুক মোহাম্মদ রুসদি মোহাম্মদ দারুস জানান, অভিযানে এনফোর্সমেন্ট ডিভিশন অ্যাকশন ইউনিট এবং মালয়েশিয়ান বর্ডার কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রোটেকশন এজেন্সি (AKPS)–এর কর্মকর্তারা অংশ নেন।
আটক ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন- ৩৮ জন বাংলাদেশি পুরুষ, ১৫ জন ইন্দোনেশিয়ান পুরুষ, ১২ জন মিয়ানমারের পুরুষ, ৬ জন পাকিস্তানি পুরুষ, ৪ জন ভারতীয় পুরুষ, ২ জন ভিয়েতনামী পুরুষ, ১ জন নেপালি পুরুষ, ১ জন থাই পুরুষ, ১০ জন মিয়ানমারের নারী এবং ৫ জন ইন্দোনেশিয়ান নারী। তাদের বয়স ১৮ থেকে ৬১ বছরের মধ্যে।
ইমিগ্রেশন আইন ১৯৫৯/৬৩–এর ধারা ৬ (১ ) (সি) ও ১৫ (১) (সি), এবং ইমিগ্রেশন রেগুলেশন ১৯৬৩–এর ধারা ৩৯ (বি) ভঙ্গের অভিযোগে তাদের আটক করা হয়েছে। এছাড়া, অবৈধ অভিবাসীদের সুরক্ষা দেওয়ার অভিযোগে ইমিগ্রেশন আইনের ধারা ৫৬ (১) (ডি) অনুযায়ী দুইজন স্থানীয় নাগরিক এবং একজন প্রাঙ্গণ ব্যবস্থাপককে ধারা ৫৫ই–এর অধীনে গ্রেপ্তার করা হয়।
আটক ব্যক্তিদের আরও তদন্তের জন্য সেতিয়া ট্রপিকানা ইমিগ্রেশন ডিপোতে পাঠানো হয়েছে।
ইমিগ্রেশন বিভাগ জানিয়েছে, অবৈধ অভিবাসীদের আশ্রয় ও নিয়োগ না দেওয়ার জন্য নিয়োগকর্তাদের প্রতি কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিদেশি কর্মী নিয়োগে কোনো পক্ষ পরিচালনায় সক্ষম দাবি করলে তার সঠিক তথ্য অফিস থেকে যাচাই করতে নিয়োগকর্তাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আন্তর্জাতিক
থাইল্যান্ডের নতুন প্রধানমন্ত্রী আনুতিন চার্নভিরাকুল

রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে থাইল্যান্ড তাদের গত দুই বছরের মধ্যে তৃতীয় প্রধানমন্ত্রী পেল। দেশটির পার্লামেন্ট সম্প্রতি শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী আনুতিন চার্নভিরাকুলকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করেছে। এর আগে, দেশটির ক্ষমতা থেকে আরেক প্রধানমন্ত্রীকে অপসারণ করা হয়।
পায়েতংতার্ন সিনাওয়াত্রা থাইল্যান্ডের অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য, তাকে গত সপ্তাহে সাংবিধানিক আদালত অপসারণ করে। আদালতের মতে, কম্বোডিয়ার সঙ্গে সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির সময় তিনি নৈতিকতার লঙ্ঘন করেছেন। এরপরই আনুতিনের দল ভূমিজাইথাই সিনাওয়াত্রাদের দল ফেউ থাই-এর নেতৃত্বাধীন জোট থেকে বেরিয়ে আসে এবং পার্লামেন্টে যথেষ্ট সমর্থন জোগাড় করে প্রধানমন্ত্রীর পদ জিতে নেয়।
তবে এই নির্বাচন সত্ত্বেও থাইল্যান্ডের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এখনো কাটেনি। দেশটিতে বারবার সামরিক অভ্যুত্থান এবং আদালতের হস্তক্ষেপে বিভিন্ন সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে।
আনুতিনের ক্ষমতায় আসা সিনাওয়াত্রা পরিবারের জন্য একটি বড় ধাক্কা। ২০০১ সালে পায়েতংতার্নের বাবা থাকসিন সিনাওয়াত্রা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে এই পরিবারটিই থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করে আসছিল।
বৃহস্পতিবার রাতে ব্যক্তিগত বিমানে করে থাকসিনের দেশ ছাড়ার খবর ঘিরে থাইল্যান্ডে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়। শুক্রবার সকালে থাকসিন সামাজিক মাধ্যমে জানান, তিনি চিকিৎসার জন্য দুবাই গেছেন। তবে আগামী ৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তিনি দেশে ফিরবেন, কারণ ওই দিন একটি মামলায় তাকে আদালতে হাজিরা দিতে হবে, ফলস্বরূপ তাকে আবারও জেলে যেতে হতে পারে।
থাকসিনের দল ফেউ থাই, ২০২৩ সালের নির্বাচনে একটি প্রধান দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিল, এখন ক্ষমতার বাইরে। তাদের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে একমাত্র অবশিষ্ট ছিলেন চাইকাসেম নিতি, যিনি জনসমক্ষে খুব বেশি পরিচিত নন এবং শারীরিকভাবেও অসুস্থ।
অতীতে সিনাওয়াত্রাদের জনমুখী নীতি নিম্ন আয়ের থাই জনগণের মধ্যে ব্যাপক সমর্থন পেলেও ব্যাংককের রক্ষণশীল-রাজতান্ত্রিক অভিজাতদের সঙ্গে তাদের বিরোধ ছিল। থাকসিন এবং তার বোন ইংলাক, যারা তার পরে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন, যথাক্রমে ২০০৬ এবং ২০১৪ সালের সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন।
আন্তর্জাতিক
ভারত শুল্ক দিয়ে আমাদের হত্যা করেছে: ট্রাম্প

ভারতের শুল্ক নীতি নিয়ে আবারও কড়া সমালোচনা করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি অভিযোগ করেছেন, “ভারত আমাদের শুল্ক দিয়ে হত্যা করছে।” চলমান বাণিজ্য ও শুল্ক নীতির টানাপোড়েনের মাঝেই মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দ্য স্কট জেনিংস রেডিও শো-তে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ট্রাম্প বলেন, তারা (ভারত) আমাদের বিরুদ্ধে শুল্ক আরোপ করছে। চীন আমাদের শুল্ক দিয়ে শেষ করে দিচ্ছে, ভারত আমাদের শুল্ক দিয়ে হত্যা করছে, ব্রাজিলও একই কাজ করছে। তিনি দাবি করেন, শুল্ক বিষয়ে তিনি বিশ্বের অন্য যে কারও চেয়ে ভালো জানেন।
ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্র ভারতের ওপর কর আরোপ করার পরই ভারত শুল্ক কমানো শুরু করেছে। ভারতকে বিশ্বের সর্বোচ্চ শুল্ক আরোপকারী দেশ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারত আমাকে জানিয়েছে, এখন থেকে আর কোনো শুল্ক থাকবে না। কিন্তু তারা এই প্রস্তাব দিত না, যদি আমার শুল্ক না থাকত।
এর আগের দিনও ট্রাম্প মন্তব্য করেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র-ভারত বাণিজ্য এতদিন পুরোপুরি “একপাক্ষিক বিপর্যয়” ছিল। তিনি বলেন, ভারত এখন শুল্ক কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে, তবে তা এসেছে অনেক দেরিতে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের একটি আপিল আদালত ট্রাম্পের আরোপ করা শুল্ককে অবৈধ বলে রায় দিয়েছেন। এর জবাবে ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেছেন, আপিল আদালত ভুলভাবে আমাদের শুল্ক প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু তারা জানেন, শেষ পর্যন্ত আমেরিকাই জিতবে।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের ওপর বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এর মধ্যে রাশিয়া থেকে তেল আমদানির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্কও যুক্ত রয়েছে। নয়াদিল্লি এই শুল্ককে “অন্যায্য ও অযৌক্তিক” হিসেবে আখ্যা দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক
বিশ্ববাজারে সোনার দামে নতুন ইতিহাস

বিশ্ববাজারে ইতিহাস গড়েছে সোনার দাম। প্রথমবারের মতো প্রতি আউন্স সোনার দাম ৩ হাজার ৫০৫ ডলার ছাড়িয়েছে। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) স্পট মার্কেটে সোনার দাম প্রতি আউন্সে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪৯৩ দশমিক ৯৯ ডলারে, যা দিনের শুরুতে পৌঁছেছিল রেকর্ড ৩ হাজার ৫০৮ দশমিক ৫০ ডলারে।
একই সময়ে ডিসেম্বর ডেলিভারির জন্য মার্কিন সোনার ফিউচার ১ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৫৬৪ দশমিক ৪০ ডলারে। বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন ডলারের দুর্বলতা এবং ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা বৃদ্ধি মূল কারণ হিসেবে কাজ করছে।
ক্যাপিটাল ডটকমের আর্থিক বাজার বিশ্লেষক কাইল রোডা বলেন, দুর্বল অর্থনৈতিক পরিবেশ এবং মার্কিন সুদের হার কমানোর প্রত্যাশার প্রভাবেই সোনার দাম বাড়ছে। এর সঙ্গে যুক্ত একটি বড় কারণ হলো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফেডের স্বাধীনতার ওপর সমালোচনা, যা ডলারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমিয়ে দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, সুদের হার না কমানোর কারণে কয়েক মাস ধরেই ফেডারেল রিজার্ভ এবং এর চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের সমালোচনা করে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এছাড়া সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়াশিংটন সদর দফতরের ব্যয়বহুল সংস্কারের জন্যও পাওয়েলের সমালোচনা করেছেন।
সোমবার (৩১ আগস্ট) মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, ফেডারেল রিজার্ভ স্বাধীন এবং স্বাধীন থাকা উচিত। তবে তিনি আরও যোগ করেছেন, ফেড ‘অনেক ভুল করেছে’ এবং বন্ধকী জালিয়াতির অভিযোগে ফেড গভর্নর লিসা কুককে বরখাস্ত করার ট্রাম্পের অধিকারকে সমর্থন করেছেন।
তথ্য বলছে, মার্কিন ব্যক্তিগত খরচের মূল্যসূচক মাসে ০.২ শতাংশ ও বছরে ২.৬ শতাংশ বেড়েছে, যা প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সান ফ্রান্সিসকো ফেড ব্যাংকের সভাপতি মেরি ডেলিও শ্রমবাজারের ঝুঁকি বিবেচনা করে সুদের হার কমানোর পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন।
সিএমই ফেডওয়াচ টুল অনুযায়ী, মাসের শেষে ফেড ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদের হার কমাবে বলে ৮৭ শতাংশ সম্ভাবনা দেখছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কম সুদের পরিবেশে স্বর্ণ সাধারণত ভালো ফলাফল দেখায়।
এবার বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি মার্কিন অ-খামার বেতন-বহির্ভূত তথ্যের দিকে, যা আগামী শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত হবে এবং ফেডের সম্ভাব্য সুদের হারের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
এদিকে, বাণিজ্যিক খবরে জানা গেছে, মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার বলেছেন,আদালতের রায় সত্ত্বেও ট্রাম্প প্রশাসন বাণিজ্যিক অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে, প্লাটিনামের দাম শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৩৭৬ দশমিক ৯৫ ডলার ও প্যালাডিয়ামের দাম শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ১১৮ দশমিক ১২ ডলার হয়েছে।