জাতীয়
প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরে বাংলাদেশের নজর যেসব বিষয়ে

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চলতি সপ্তাহে চীন সফরে যাচ্ছেন। তার সফরকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ চীনের সঙ্গে আরও গভীর অর্থনৈতিক সহযোগিতার দিকে নজর দিচ্ছে। এই সফর দুদেশের ৫০ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্কের এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
আঞ্চলিক পরিস্থিতির পরিবর্তন এবং ভারতের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে এই সফর ভূরাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার, চীনা বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে এবং স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও পানি ব্যবস্থাপনাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী।
সম্প্রতি পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের প্রধান লক্ষ্য বেইজিংয়ের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও উচ্চতর পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া, বিশেষ করে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়ানোর মাধ্যমে। আমরা চীনের কাছ থেকে আরও বিনিয়োগ চাই এবং সেখানে আমাদের পণ্যের রপ্তানি বাড়ানোর পরিকল্পনা করছি।’
প্রধান উপদেষ্টার সফরে অর্থনৈতিক সহযোগিতা গুরুত্ব পাচ্ছে
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, একটি প্রধান আলোচ্য বিষয় হলো চট্টগ্রামে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে চীনা বিনিয়োগ আকর্ষণ করা। আমরা আশা করছি, চীনা কোম্পানিগুলো তাদের কারখানা এখানে স্থানান্তর করবে এবং বাংলাদেশের অনুকূল বিনিয়োগ পরিবেশের সুবিধা নেবে।
তিনি উল্লেখ করেন বাংলাদেশ এখনও বেইজিংয়ের বাজার সুবিধাগুলো পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারেনি, কারণ রপ্তানির জন্য পণ্যের পরিধি সীমিত। চীনের বিশাল ভোক্তা বাজারে প্রবেশের জন্য রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।
স্বাস্থ্যসেবায় সহযোগিতা
স্বাস্থ্যসেবা খাতেও সহযোগিতা আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়, বিশেষ করে বাংলাদেশি রোগীরা ভারতের ভিসা সংক্রান্ত সমস্যার কারণে চিকিৎসা নিতে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশি রোগীদের প্রথম দল ইতোমধ্যে চীনে চিকিৎসার জন্য গেছে। আমরা চাই ঢাকায় একটি আধুনিক হাসপাতাল স্থাপনে বিনিয়োগ করুক চীন।
বাংলাদেশ চীনের কাছে অনুরোধ করেছে কুনমিংয়ে চারটি হাসপাতাল নির্দিষ্ট করতে, যেখানে বাংলাদেশি রোগীদের জন্য বিশেষ সুবিধা থাকবে। এই প্রথম দলটির অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতের চিকিৎসা সহযোগিতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
পানি ব্যবস্থাপনা ও তিস্তা ইস্যু
পানি ব্যবস্থাপনাও আলোচনার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়, যেখানে বাংলাদেশ নদী ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে চীনের সহযোগিতা চাওয়া হচ্ছে, বিশেষ করে তিস্তা নদী ইস্যুতে।
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদী স্বার্থে পানি ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা এগিয়ে নিতে চাই।’
বিশেষজ্ঞ মতামত
প্রধান উপদেষ্টার এ সফর বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের ক্রমবর্ধমান গতিশীলতার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বৈশ্বিক জোটের রদবদলের মধ্যে বাংলাদেশ যখন তার পথ নির্ধারণ করতে চাচ্ছে, তখন ড. ইউনূস চীন সফরে যাচ্ছেন। তার এই সফর কৌশলগত বিবেচনার সঙ্গে অর্থনৈতিক আবশ্যিকতার ভারসাম্য বজায় রেখে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করার স্পষ্ট অভিপ্রায়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই সফর প্রতীকী তাৎপর্য বহন করছে এবং ভবিষ্যতে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তি তৈরি করবে।
প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরের প্রতীকী তাৎপর্যের ওপর জোর দিয়েছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ। তিনি বলেন, এই সফর পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের জন্য দীর্ঘমেয়াদী অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার ক্ষেত্র তৈরি করবে। সফরে বেশ কয়েকটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে পারে, যা বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতির পথ প্রশস্ত করবে।
চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টার এ সফর দু-দেশের সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে। তবে তিস্তার মতো বড় প্রকল্পগুলোর জন্য সম্ভবত নির্বাচনের পর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. লাইলুফার ইয়াসমিন মনে করেন, চীনের কাছ থেকে বিনিয়োগ বা বড় চুক্তি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার কোনো বাধা হবে না। তিনি বলেন, ‘চীন জানে, এই অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জনগণের পূর্ণ ম্যান্ডেট নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছেন।’
তিস্তা ইস্যুতে জোর দিয়ে তিনি বলেন, ঢাকার নিজস্ব স্বার্থে বেইজিংয়ের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করা উচিত।
তিনি আগামী এপ্রিল মাসে ঢাকায় আয়োজিত বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলনকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে একটি প্রতিশ্রুতিশীল প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দেখছেন।
জ্বালানি, স্বাস্থ্যসেবা ও অবকাঠামোতে পারস্পরিক স্বার্থ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘উন্নত মানের চিকিৎসা সুবিধা প্রতিষ্ঠায় চীনের আগ্রহ বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’
বৈদেশিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাব এনাম খান ভূ-রাজনীতির ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার এই সফরকে অন্য দেশের দৃষ্টিভঙ্গির চেয়ে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে জোর দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আঞ্চলিক প্রভাব তাৎপর্যপূর্ণ। তবে বাংলাদেশকে অবশ্যই তার স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। যেমন- রোহিঙ্গা সংকট ও পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।’
অধ্যাপক শাহাব এনাম খান আরও বলেন, এ সফর রোহিঙ্গা সংকট পুনর্বিবেচনার নতুন সুযোগ তৈরি করছে। কারণ ২০২৪ ও ২০২৫ সালে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি অনেকটাই ভিন্ন।
সম্ভাব্য ভ্রমণসূচি
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস হাইনান প্রদেশে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া সম্মেলনে যোগ দিতে ২৬ মার্চ চীনের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন।
২৭ মার্চ তিনি সম্মেলনের উদ্বোধনী পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন এবং চীনের নির্বাহী ভাইস প্রিমিয়ার ডিং জুয়েশিয়াং-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন।
২৮ মার্চ প্রধান উপদেষ্টা বেইজিংয়ের গ্রেট হল অফ দ্য পিপলে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।
তিনি হুয়াওয়ের একটি উচ্চ প্রযুক্তির উদ্যোগ পরিদর্শন ও চীনের শীর্ষস্থানীয় একটি সংবাদ মাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ২৯ মার্চ সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করবে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি সেখানে বক্তব্য দেবেন। এরপর ওই দিনই প্রধান উপদেষ্টার দেশে ফিরে আসার কথা রয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয়
আরও ২ টিভির ইউটিউব চ্যানেল বন্ধ ভারতে, ব্যাখ্যা না পেলে নেয়া হবে পাল্টা পদক্ষেপ

ভারতে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের ছয়টি জনপ্রিয় টেলিভিশন চ্যানেলের ইউটিউব সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইউটিউব জানিয়েছে, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে দেশটির সরকারের অনুরোধে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে ভারত থেকে এসব চ্যানেলের ইউটিউব কনটেন্ট আর দেখা যাচ্ছে না।
বন্ধ হওয়া চ্যানেলগুলো হলো: যমুনা টিভি, একাত্তর টিভি, বাংলাভিশন, মোহনা টিভি, সময় টিভি এবং ডিবিসি নিউজ। এই ছয়টি চ্যানেলই ইউটিউব ভেরিফায়েড এবং এদের সম্মিলিত সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ৫ কোটিরও বেশি।
ভারতীয় ইউজাররা এসব চ্যানেলের ইউটিউব পেজে প্রবেশের চেষ্টা করলে একটি বার্তা দেখতে পাচ্ছেন, “এই কনটেন্টটি বর্তমানে এই দেশে প্রবেশযোগ্য নয়। এটি জাতীয় নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলা–সংক্রান্ত সরকারি আদেশের আওতায় রয়েছে।”
এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কড়া প্রতিক্রিয়া এসেছে। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানিয়েছেন, ইউটিউবের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। তিনি বলেন, “ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের তথ্যপ্রাপ্তির অধিকার এতে ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এটি আন্তর্জাতিক ভোক্তা অধিকার নীতির পরিপন্থী।”
তিনি আরও জানান, বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) আগামী দুই কর্মদিবসের মধ্যে ইউটিউব কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি পাঠাবে। যদি গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা না পাওয়া যায়, তাহলে বাংলাদেশও পাল্টা ব্যবস্থা নিতে পারে।
ফয়েজ আহমদ সতর্ক করে বলেন, “যদি এটি ভারতের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদক্ষেপ হয়, তাহলে বাংলাদেশও প্রয়োজনীয় পাল্টা ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।” তিনি অভিযোগ করেন, ভারতের কিছু গণমাধ্যম, বিশেষ করে রিপাবলিক বাংলা, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে বিভ্রান্তিকর ও ভিত্তিহীন প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে, যার প্রমাণ সরকারের কাছে রয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
সন্ধ্যায় উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন চলছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সন্ধ্যায় জরুরি বৈঠকে বসছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
শনিবার (১০ মে) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে, বাংলাদেশ সচিবালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ, গণজমায়েত, মিছিল ও শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশ। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ আদেশ কার্যকর থাকবে।
শনিবার (১০ মে) দুপুরে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর সই করা এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা জারি করা হয়।
গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, জনশৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং প্রধান উপদেষ্টার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স (অর্ডিন্যান্স নম্বর- III/৭৬) এর ২৯ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে এ আদেশ জারি করা হয়েছে।
পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত, বাংলাদেশ সচিবালয়, প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় (হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়, কাকরাইল মসজিদ মোড়, অফিসার্স ক্লাব মোড়, মিন্টু রোড) যে কোনো প্রকার সভা-সমাবেশ, গণজমায়েত, মিছিল ও শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করা হলো।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
যমুনা ও সচিবালয়ের আশপাশে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ

সচিবালয় এবং প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
শনিবার (১০ মে) ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
গণবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, জনশৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং প্রধান উপদেষ্টার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স (অর্ডিন্যান্স নং- III/৭৬) এর ২৯ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে এ আদেশ জারি করা হয়েছে।
শনিবার (১০ মে) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত, বাংলাদেশ সচিবালয়, প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় (হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়, কাকরাইল মসজিদ মোড়, অফিসার্স ক্লাব মোড়, মিন্টু রোড) যে কোনো প্রকার সভা-সমাবেশ, গণজমায়েত, মিছিল ও শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করা হলো।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
সিলেট সীমান্তে ভারতের কারফিউ জারি, রাতের চলাচল নিষিদ্ধ

ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে রাতে চলাচলের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দেশটির প্রশাসন। ৮ মে থেকে কার্যকর হওয়া এ নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিদিন রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত সীমান্ত সংলগ্ন এলাকাগুলোতে সাধারণ মানুষের চলাচল সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকবে।
ভারতীয় গণমাধ্যম জানায়, পূর্ব ও পশ্চিম জয়ন্তিয়া হিলস, পূর্ব খাসি হিলস, দক্ষিণ গারো হিলস এবং পশ্চিম গারো হিলস জেলার সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে এ নির্দেশনা কার্যকর হয়েছে। শূন্যরেখার ২০০ মিটার থেকে ১ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকাকে ‘নিরাপত্তা সংবেদনশীল’ ঘোষণা করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এই সময়সীমায় পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির জমায়েত, অস্ত্র বা লাঠিসোঁটা বহন, গবাদিপশু ও চা পাতা, সুপারি, পানের পাতা, শুকনা মাছের মতো পণ্যের পরিবহন এবং সীমান্ত পারাপার বা অনুপ্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে।
সম্প্রতি সিলেটের তামাবিল সীমান্তে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাড়তি সতর্কতাকে কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। যৌথ সীমান্ত জরিপ চলাকালে স্থানীয় লোকজনের আপত্তিতে ভারতের বিএসএফ বাধার মুখে পড়ে এবং জরিপ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, এরই পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করেছে।
সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার বাসিন্দা তাওহীদুল ইসলাম বলেন, “আমরা যারা বৈধভাবে চলাফেরা করি, তাদের জন্য এটা তেমন সমস্যা নয়। বরং যারা সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধ কাজ করে, তাদের জন্য এটা চ্যালেঞ্জ হবে।”
জৈন্তাপুরের বাসিন্দা মো. সাজু হোসেন বলেন, “নিরাপত্তা প্রয়োজন ঠিকই, তবে এমন ব্যবস্থা যেন সাধারণ কৃষক বা শ্রমজীবী মানুষের কাজে বিঘ্ন না ঘটায়। অনেকেই ভোরে মাঠে যান, তাদের কথা বিবেচনায় নেওয়া দরকার।”
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ। তিনি বলেন, “ভারতের সিদ্ধান্ত তাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাজনিত। তবে সীমান্তে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে এবং নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সচেতনতা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে, মাইকিংও করা হয়েছে।”
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
জাতীয় সনদ নাগরিকের সব অধিকার সুরক্ষিত করতে পারবে: আলী রীয়াজ

ঐকমত্য কমিশন সকলের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে যে জাতীয় সনদ তৈরি করতে সচেষ্ট আছে, নিঃসন্দেহে তা নাগরিকের সকল অধিকার সুরক্ষিত করতে পারবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, দেশের নাগরিকদের অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করা ছাড়া একটি গণতান্ত্রিক সমাজ বা রাষ্ট্র নির্মাণ কিংবা নাগরিকের মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা যায় না।
আজ শনিবার সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে ইউনাইটেড পিপলস্ ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) আলোচনার শুরুতে অধ্যাপক আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন। এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রই কেবল নাগরিকের অধিকার নিশ্চিত করতে পারে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারে এবং স্বাধীন বিচার বিভাগের মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় সুবিচার ব্যবস্থা পৌঁছে দিতে পারে।
প্রথমবারের মত সবাই মিলে রাষ্ট্র বিনির্মাণের সুযোগ তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে এ সময় অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, সংস্কার কমিশনগুলো থেকে যে সকল প্রস্তাব রাজনৈতিক দলগুলোকে দেওয়া হয়েছে এবং জাতির সামনে প্রকাশ করা হয়েছে তার লক্ষ্য হচ্ছে ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি সুনির্দিষ্ট পথ তৈরি করা।
তিনি আরো বলেন, বহু প্রাণের বিনিময়ে এই ঐতিহাসিক মুহূর্ত তৈরি হয়েছে। এই সুযোগকে সফল করার জন্য সবাইকে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে এবং প্রত্যাশা থাকবে, সকল রাজনৈতিক দল এই আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে অগ্রসর হবে।
আলোচনায় ইউপিডিএফের ঢাকা অঞ্চলের সংগঠক মাইকেল চাকমার নেতৃত্বে ৪ সদস্যের প্রতিনিধিদলে দলটির সদস্য সুনয়ন চাকমা এবং সহযোগী সংগঠন গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি জিকো ত্রিপুরা, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অমল ত্রিপুরা উপস্থিত ছিলেন। ইউপিডিএফসহ এ পর্যন্ত ২৮টি রাজনৈতিক দল কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য জানানো হয়।