রাজনীতি
অন্তর্বর্তী সরকারকে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে: ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতার অবস্থান বজায় রাখতে হবে। কোনো মহলকে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের এজেন্ডা যেন সরকারের কর্মপরিকল্পনার অংশ না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
শনিবার (২২ মার্চ) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
সংস্কার নিয়ে তিনি বলেন, সংস্কারের উদ্দেশ্য হলো জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন, জনসাধারণের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান এবং জবাবদিহিতা ও আইনের শাসনের নিশ্চয়তা বিধান করা। সর্বোপরি দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে সুরক্ষিত করা।
সংস্কার না নির্বাচন—এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সংস্কার আগে- নির্বাচন পরে, কিংবা নির্বাচন আগে- সংস্কার পরে এ ধরনের অনাবশ্যক বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই। যেহেতু সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, সংস্কার ও নির্বাচন প্রক্রিয়া দুটোই একই সঙ্গে চলতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি (সংস্কার সনদ) তৈরি হতেই পারে, নির্বাচিত সরকার পরবর্তীতে যা বাস্তবায়ন করবে।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মূলত করণীয় হচ্ছে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা এবং নির্বাচিত সরকারের নিকট দায়িত্ব হস্তান্তর করা। নির্বাচিত সরকার জনগণের কাঙ্ক্ষিত ঐকমত্যের সংস্কারসমূহ সম্পন্ন করবে। কেননা জনগণের নিকট দায়বদ্ধ এবং ন্যায়বিচার ও সুশাসন নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ নির্বাচিত সরকারের পক্ষেই গ্রহণযোগ্য সংস্কার সম্পাদন সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টা ক্ষমতায় থেকে রাজনৈতিক দল গঠন প্রক্রিয়ায় প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে জড়িত থাকায় জনমনে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় প্রশাসনযন্ত্রকে ব্যবহার করার নানা প্রকার লক্ষণ ও প্রমাণ ক্রমেই প্রকাশ পাচ্ছে যা দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য মোটেই সুখকর নয়।
সংস্কার কমিশন নিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কর্তৃক প্রেরিত স্প্রেডশিটে যে অপশন বা পছন্দগুলোর ঘরে টিক চিহ্ন দিতে বলা হয়েছে তাতে একটি বিষয় প্রতিভাত হয়েছে যে, যে বিষয়গুলো প্রস্তবাকারে আসতে পারত তা প্রস্তাব না রেখে এর পরিবর্তে হ্যাঁ, না, উত্তর দিতে বলা হয়েছে। যেমন, প্রস্তাবগুলো গণপরিষদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন চাই কি না? হ্যাঁ অথবা না বলুন। কিন্তু প্রথমে সিদ্ধান্ত আসতে হবে যে, গণপরিষদের প্রস্তাবে আমরা একমত কি না? একইভাবে ‘গণভোট’, ‘গণপরিষদ এবং আইনসভা’ হিসেবে নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়ন চাই কি না ইত্যাদি হ্যাঁ – না বলুন।
নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ উত্তর রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে নানা প্রস্তাব আর মতামত উঠে এসেছে সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের মাধ্যমে, যার মূল ভিত্তিটা রচনা করেছে বিএনপি ৩১ দফা রাষ্ট্রীয় কাঠামোর গণতান্ত্রিক সংস্কারের প্রস্তাবের মধ্য দিয়ে গণঅভ্যুত্থানের অনেক আগে ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই। এক্ষণে গণতান্ত্রিক শক্তিসমূহের অন্তর্ভুক্তিমূলক বৃহত্তর ঐক্যের মাধ্যমে সংস্কার প্রস্তাবসমূহ গৃহীত এবং বাস্তবায়ন করা আবশ্যক। জনপ্রত্যাশা অনুযায়ী সংস্কার প্রস্তাবগুলোর সাংবিধানিক ও আইনি ভিত্তি প্রদানের জন্য একটি নির্বাচিত সংসদই কেবল উপযুক্ত ফোরাম।
কাফি

রাজনীতি
খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে ফিরোজায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ঢাকায় সফররত পাকিস্তান উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে তার বাসভবন ফিরোজায় গেছেন।
রোববার (২৪ আগস্ট) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ইসহাক দার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের বাসভবনে পৌঁছান। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানান।
দুই দিনের সফরে গতকাল শনিবার (২৩ আগস্ট) ঢাকায় আসেন ইসহাক দার। এদিন বেলা দুইটার দিকে পাকিস্তান বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ ফ্লাইটে তিনি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম।
ইসহাক দার তার ঢাকা সফরের প্রথম দিনে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন। এসব বৈঠকে রাজনৈতিক পরিসরসহ নানা ক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্ক বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করেন তিনি। পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও স্বার্থের ভিত্তিতে এই সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে পাকিস্তানের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।
রোববার সকালে বাংলাদেশের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে প্রাতরাশ বৈঠক করেন ইসহাক দার। পরে বৈঠক করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে। এরপর দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। পাকিস্তানের নেতৃত্ব দেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও ইসহাক দারের উপস্থিতিতে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যে একটি চুক্তি, চারটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ), একটি কর্মসূচি (প্রোগ্রাম) সই হয়েছে।
কাফি
রাজনীতি
বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানকে শোকজ

জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে ক্রমাগত বিতর্কিত ও বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করায় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২৪ আগস্ট) বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে তাকে এই নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশে যথাযথ কারণ জানিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত জবাব দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। বিএনপির মিডিয়া সেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এর আগে এক টিভি চ্যানেলের টক শোতে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান গত বছর ৫ আগস্টে শেখ হাসিনার পতনের জন্য বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোকেই দায়ী করেছেন। তার ভাষায় এটি কোনো সাধারণ রাজনৈতিক ঘটনা নয়, বরং একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র, যার মূল পরিকল্পনাকারী ‘কালো শক্তি’ জামায়াত।
তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশ ছাত্রশিবির দীর্ঘদিন ধরে দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করার জন্য ষড়যন্ত্র করে আসছে। এছাড়া ফজলুর রহমান আরও বলেন, ‘যারা ৫ আগস্ট ঘটাইছে, কালো শক্তি, সেই কালো শক্তির নাম হলো জামায়াতে ইসলাম, তাদের যে অগ্রগামী শক্তি তার নাম হলো ইসলামি ছাত্রশিবির। সারজিস আলমরা, যারা ওই এইটার (অভ্যুত্থানের) অভিনয় করছে, ৫ আগস্টের অভিনেতা যারা, আমি তাদেরকে নেতা বলতে আর চাই না, তাদের আমি অভিনেতা বলব। সেই আলবদর, আল শামস, জামায়াতে ইসলাম আমরা মনে করেছিলাম ৫৪ বছর পর পূর্বপুরুষের পরাজয়ের গ্লানি তারা ভুলে গেছে। কিন্তু না, সেই পরাজয়ের গ্লানি দ্বিগুণ আকারে তাদের মধ্যে এসেছে। ’
তিনি আরও জানান, জামায়াত ‘চক্রান্ত করে’ দেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, এবং তাদের পেছনে ‘আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রও’ আছে।
রাজনীতি
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে এনসিপির বৈঠক

ঢাকা সফররত পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা।
শনিবার (২৩ আগস্ট) বিকেলে ঢাকায় পাকিস্তান হাইকমিশনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন এনসিপির সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল।
বৈঠক শেষে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘পাকিস্তান নিয়ে বাংলাদেশের জনগণের যে ধারণা, সেটা তাদের কাছে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। এনসিপি মনে করে, বিগত সময়ে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে যে শত্রু ভাবাপন্ন সম্পর্ক ছিল, সেখান থেকে উন্নতির সুযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জনগণের যে ধারণা, সেটাকে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় রাখতে হবে। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একাত্তরের ইস্যুকে অবশ্যই সমাধান করা উচিত।’
আলোচনার বিষয়বস্তু নিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের শিক্ষায়, অর্থনীতিতে এবং সংস্কৃতিতে সম্পর্ক উন্নয়নের যে সুযোগ রয়েছে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। একই সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের বড় ভাই সুলভ আচরণ যেন কাউকে প্রভাবিত না করে। দক্ষিণ এশিয়ায় আমাদের যেসব প্রতিবেশী দেশ রয়েছে, তাদের মধ্যকার সম্পর্ক হবে ভ্রাতৃত্বের। তাদের মধ্যে কোনো ধরনের বড় ভাই সুলভ, আগ্রাসন, আধিপত্যবাদী মানসিকতা থাকবে না, সেই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।’
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসকাহ দার কী বলেছেন, এমন প্রশ্নে দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়াতে একটা যুদ্ধ হয়েছিল। পানি নিয়ে আবার যদি কোনো যুদ্ধ আসে, যেহেতু আমাদের অনেকগুলো নদী রয়েছে, সেগুলো নিয়ে কথা হয়েছে। আমাদের নদীগুলো কীভাবে ভালো থাকতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান যে অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়, গত ১৫-২০ বছরে ওষুধ শিল্পে সহযোগিতা তৈরিতে তারা অনেকভাবে চেষ্টা করেছে। তাদের ওষুধ খাতের কাঁচামাল অনেক ভালো। সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে আমাদের ওষুধশিল্প খাতের খরচ কমিয়ে আরও বেশি যেন রফতানি করতে পারি, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সেই সুযোগটা আমাদের দুই দেশের মধ্যে হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এখানে করা যায় কি না, সেটা নিয়ে কথা বলেছি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যে এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামগুলো, সেগুলো কীভাবে উন্নয়ন করা যায়। প্রতিরক্ষা খাতে কীভাবে উন্নয়ন করা যায়, সেগুলো নিয়ে আমরা কথা বলেছি। আলোচনায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’
এর আগে তিন দিনের সফরে শনিবার দুপুরে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান পাকিস্তানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এসময়তাকে স্বাগত জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম।
কাফি
রাজনীতি
চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আরেকটি যুদ্ধ করতে হবে: ড. হেলাল উদ্দিন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর, ঢাকা-৮ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ড. হেলাল উদ্দিন বলেছেন, চাঁদাবাজ-সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আরেকটি যুদ্ধ করতে হবে। ৫ আগস্ট পরবর্তী যারা আওয়ামী লীগের শূন্যস্থান পূরণ করে আওয়ামী লীগের ভূমিকায় চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী, দখল, লুটপাট, পাথর দিয়ে মানুষ হত্যার মত ঘৃণ্য কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে, তারা জাতির দুশমন। জাতির দুশমনদের নিপাত করে একটি সুখি-সমৃদ্ধ, বৈষম্যহীন, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, দখলদ্বার, নৈরাজ্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়তে জামায়াতে ইসলামী প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
শনিবার (২৩ আগস্ট) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কার্যালয়ে অবস্থিত অডিটরিয়ামে , বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন মতিঝিল অঞ্চলের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় তিনি আরও বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শ্রমিকদের অবদান অনস্বীকার্য । শহীদ এবং আহতদের মধ্যে সংখ্যায় শ্রমিকেরােই বেশি। স্বাধীনতা-সংগ্রাম থেকে এদেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে শ্রমিকদের অবদান চিরস্মরণীয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে অতীতের কোনো সরকারই কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহন করেনি। বরং শ্রমিকদের রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় বসেছে। শ্রমিকদের জীবন, রক্ত আর ঘাম লেগে আছে বাংলাদেশের মানচিত্রে। শ্রমিকদের আত্মত্যাগ স্বীকার না করলে জাতি হবে অভিশপ্ত। জামায়াতে ইসলামী শ্রমিকদের আত্মত্যাগ স্বীকার করে এবং শ্রদ্ধা করে। আগামীতে কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র-জনতা দাঁড়িপাল্লা প্রতিকে ভোট দিয়ে জামায়াতে ইসলামীকে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ করে দিলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন কর্তৃক উপস্থাপিত শ্রমিকদের সকল ন্যায্য দাবি পূরণ করা হবে। বন্ধ সকল কলকারখানা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে। সকল শ্রেণি-পেশার ভাগ্য উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে। এদেশের কোনো মানুষের বুকে চাপা কষ্ট থাকবে না। সুখি-সমৃদ্ধ নতুন বাংলাদেশের নাগকির হিসেবে সকলের মুখে হাসি ফুটে উঠবে। তাই নতুন বাংলাদেশ গড়তে তিনি, জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে এগিয়ে আসতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, একটি দল ব্যতিত দেশের প্রায় সব দল জনগণের দাবি পূরণে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চাইলেও সরকার সেই দাবিকে উপেক্ষা করে একটিমাত্র দলকে খুঁশি করতে যেনতেন একটি নির্বাচন আয়োজনের পথে হাটছে। সরকার যদি জনগণের মুখের ভাষা, চোখের ভাষা বুঝতে চেষ্টা না করে, তবে জনগণ আবারও রাজপথে নেমে আসবে। জনগণ রাজপথে নামলে কারো জন্যই সুখকর হবে না। নির্বাচন কমিশন সরকারের সবুজ সংকেতে ঐ একটি দলকেই প্রাধান্য দিয়ে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যেখানে বিদ্যমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নেই, সাংবাদিকদের জীবনের নিরাপত্তা নেই, সেখানে কিভাবে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহনমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন সম্পন্ন হবে প্রশ্ন রেখে ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন হলে সেটি নামমাত্র একটি নির্বাচন হবে গ্রহনযোগ্য নির্বাচন হবে না। একদিকে নির্বাচনের পরিবেশ নেই, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা হয়নি, অপরদিকে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনে দেশের ৭১ শতাংশ জনগণের দাবি উপক্ষো করে একটি প্রহসনের নির্বাচন আয়োজন করলে জনগণ সেই নির্বাচন বর্জন করবে। জনগণ নির্বাচনে অংশগ্রহন না করলে শুধুমাত্র একটি দল তাদের, মিত্রদের নিয়ে অংশগ্রহন করলে সেটি কখনো গ্রহনযোগ্য নির্বাচন হবে না। তিনি আরো বলেন, সরকার আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে, সেই সময়েই নির্বাচন হতে পারে এতে কোন সমস্যা নাই। তবে অবশ্যই সেই সময়ের আগেই জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চতকরণ, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এবং বাস্তবায়ন, গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। স্বদিচ্ছা, আন্তরিকতা, নৈতিকতা, দেশপ্রেম ও দায়িত্ব বোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হলে এসব দাবি ১ মাসের মধ্যেই নিশ্চিত করা যায়। তাই সরকারকে জুলাই চেতনা ধারণ করে দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে তিনি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে এবং সহকারী সেক্রেটারি মাহবুবুর রহমানের পরিচালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মো. শামছুর রহমান। এছাড়াও অনুষ্ঠানে মতিঝিল অঞ্চলের দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
রাজনীতি
ক্ষমতায় গেলে বৈষম্যহীন রাষ্ট্র পরিচালনা করবে জামায়াত: ড. হেলাল উদ্দিন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর, ঢাকা-৮ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, জামায়াত যদি ক্ষমতায় যায় তাহলে বৈষম্যহীন রাষ্ট্র পরিচালনা করবে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী। একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র পরিচালনা মানে এমন এক কল্যাণমুখী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা যেখানে জনগণের সকল মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হয়।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ, শাহজাহানপুর পূর্ব থানা আয়োজিত ইউনিট দায়িত্বশীল শিক্ষা বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সামাজিক ন্যায়বিচার ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হয়, এবং ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, বয়স বা অন্য কোনো ভিত্তিতে বৈষম্য থাকে না। এর জন্য প্রয়োজন দেশের সর্বস্তরে বৈষম্যের উৎসগুলো নির্মূল করা, একটি স্বতন্ত্র ও শক্তিশালী বিচার বিভাগ নিশ্চিত করা, এবং শিক্ষা ও অন্যান্য নাগরিক সেবার উন্নয়ন ঘটানো। মা-বোনেরা ঘরেও সুরক্ষিত থাকবে, কর্মস্থলেও সুরক্ষিত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে নারীরা অনেক পিছিয়ে রয়েছে। বিশেষ করে বেকার নারীদের যোগ্য করে গড়ে তুলতে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে মাধ্যমে কর্মমুখী করে তুলবে। নারীদের আলাদা কর্মক্ষেত্র তৈরী করলে দেশ যেভাবে এগোবে তেমনি পারিবারিকভাবে সুসংহতি গঠন হবে। সেই সঙ্গে রাজধানীতে যাতায়াতের জন্য নারীদের নিরাপদ পরিবহন ও মহিলা হোস্টেলের উন্নত পরিবেশ তৈরী করা হবে।
হেলাল উদ্দিন বলেন, জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে একটা ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। দল হিসেবে নারীদের সবচেয়ে বেশি সম্মানের চোখে দেখেন বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী। ‘আমরা চাই দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে। ইনসাফ কায়েম করতে। যেখানে মানুষ চাইলেও অধিকার পাবে, না চাইলেও অধিকার পাবে।’ ‘মহানবী (স.) সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ কাজেও নারীদের যুক্ত করেছেন। যুদ্ধক্ষেত্রে নারীদের যুক্ত করেছেন। তাই আমরা তাদের আটকে রাখার কে! তারা সামর্থ্য অনুযায়ী দেশের জন্য আত্মনিয়োগ করবে।’
ইউনিট দায়িত্বশীল শিক্ষা বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন শাজাহানপুর পূর্ব থানার আমীর মওলানা শরিফুল ইসলাম। সঞ্চালনায় ছিলেন থানা সেক্রেটারি এ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে ইউনিট দায়ীত্বশীলগণও উপস্থিত ছিলেন।
কাফি