রাজনীতি
ঐকমত্য কমিশনে সংস্কার প্রস্তাবনা জমা দিলো জামায়াত

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক সংস্কার নিয়ে আলোচনা শুরু করতে জামায়াতে ইসলামী তাদের মতামত জমা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজের কাছে সংস্কার প্রস্তাব জমা দেয় দলটি।
এ সময় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ছাড়াও অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় পাবলিসিটি ও মিডিয়া সেক্রেটারিসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
পরে এক ব্রিফিংয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ প্রতিবেদন জমা প্রসঙ্গে বলেন, কাজের অগ্রগতি অবশ্যই জানানো হবে। তবে প্রতিদিন ব্রিফিং হবে এমন নাও হতে পারে, কিন্তু অবশ্যই কাজের অগ্রগতি জানানো হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের ওপর কোনোরকম চাপ নেই। এ ক্ষেত্রে স্মরণ করিয়ে দেই জাতীয় ঐকমত্য কমিশন হলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, সে ক্ষেত্রে ঐকমত্য কমিশনের ওপর চাপের প্রশ্নই আসে না। রাজনৈতিক দলগুলো অবশ্যই তাদের অবস্থান বলবে। কিন্তু কমিশন হিসেবে আমাদের দায়িত্ব সংস্কার কমিশনগুলোর সুপারিশগুলো তুলে ধরা এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে আগামী দু-একদিনের মধ্যে তারা আমাদের মতামত জানাবেন। আমরা অপেক্ষা করছি, আশা করছি দু’একদিনের মধ্যেই তারা মতামত জানাবে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে আলোচনা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছাত্রদের সঙ্গে আগামী দুই-তিন দিনে বৈঠক হচ্ছে না। তাদের মতামত পাওয়া গেলে ঈদের পর থেকে যেসব দলের সঙ্গে আমরা আলোচনা করবো তারমধ্যে এনসিপিও থাকবে।
এদিকে সংস্কার বিষয়ে প্রস্তাবনা জমার পর গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জামায়াতে ইসলামীর সুচিন্তিত মতামত আমরা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। দলের আমির ড. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে দফায় দফায় সংস্কার কমিশনগুলোর দেওয়া সুপারিশগুলো নিয়ে আলোচনা করেই আমরা লিখিত মতামত জানিয়েছে।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, সংস্কার প্রস্তাবনার মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে নির্বাচন স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ করার ব্যাপারে আমরা বেশকিছু প্রস্তাব দিয়েছি। নির্বাচন হতে হবে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে। এ ছাড়াও সংবিধান ও দুর্নীতিসহ বেশকিছু ব্যাপারে আমরা আমাদের মতামত জানিয়েছি।
এদিকে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক সংস্কারের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার থেকেই আলোচনা শুরু হচ্ছে, এবং প্রথম দিন আলোচনার জন্য লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টিকে (এলডিপি) আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বিকেল ৩টায় এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। কমিশন জানায়, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ৬টি কমিশন কর্তৃক দেওয়া প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা করা হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

রাজনীতি
আ.লীগ ও বিএনপির সংঘর্ষে নিহত ২ জন

নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দুইজন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছে অন্তত ১০ জন। শুক্রবার (২১ মার্চ) সকাল ৬টায় উপজেলার চাঁনপুর ইউনিয়নের মোহিনীপুর গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- মোহিনীপুর এলাকার খোরশেদ মিয়ার ছেলে সৌদি আরব প্রবাসী আমিন মিয়া (২৮) ও আব্দুল বারিকের ছেলে বাশার মিয়া (৩০)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে চাঁনপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ও ইউনিয়ন বিএনপির ৯নং ওয়ার্ডের সভাপতি সামসু মিয়ার অনুসারীদের সঙ্গে একই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুস সালামের অনুসারীদের বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধের জেরে তাদের মধ্যে কয়েক দফায় সংঘর্ষ হয়। সর্বশেষ গত ৫ মার্চ সামসু মিয়ার লোকজন হামলা চালিয়ে গ্রামে উঠলে তাদের সামনে টিকতে না পেরে গ্রামের বাইরে অবস্থান নেন আবদুস সালাম গ্রুপের লোকজন। পরে আজ ভোরে আবদুস সালাম গ্রুপের লোকজন গ্রামে ওঠার চেষ্টা করলে বাঁধা দেন সামসু মেম্বারের লোকজন। এ সময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে আবদুস সালাম গ্রুপের দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
এর আগে, গত ৫ আগস্টের আগে সামসু মেম্বার ও তার লোকজন সালাম গ্রুপের সামনে টিকতে না পেরে প্রায় দুই বছর এলাকার বাইরে ছিলেন। সংঘর্ষের পর মোহিনীপুর এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
নিহত আমিন মিয়ার বাবা খোরশেদ মিয়া বলেন, গত ৫ আগস্টের পর থেকে আমরা বাড়ি ছাড়া। আজ ভোরে ঈদ করতে গ্রামে ওঠার চেষ্টা করলে সামসু মেম্বারের লোকজন আমাদের ওপর হামলা করে। আমার ছেলের পায়ে গুলি করে মাটিতে ফেলে তারপর গলা চেপে তাকে হত্যা করা হয়।
আব্দুস সালাম বলেন, গত ছয় মাস ধরে প্রতিপক্ষের হামলার ভয়ে আমার অনুসারীরা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র অবস্থান করছিলেন। আজ যখন তারা বাড়িতে ফিরছিলেন, তখন সামসু মেম্বারের লোকজন দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালাযন। এতে আমার পক্ষের দুইজন নিহত হয়েছেন।
সামসু মেম্বার বলেন, আমাদের গ্রুপের তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল মাহমুদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
আ. লীগের পুনর্বাসন জনগণ মেনে নেবে না: জামায়াত আমির

বর্তমান পরিস্থিতিতে সর্বস্তরের জনগণকে সংযত, সতর্ক ও ঐক্যবদ্ধ থেকে দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। শুক্রবার (২১ মার্চ) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ আহ্বান জানান।
আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন জনগণ মেনে নেবে না উল্লেখ করে জামায়াত আমির লেখেন, বাংলাদেশ ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁক অতিক্রম করছে। দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী শাসনের পর ২৪-এর ৩৬ জুলাই আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ মহান আল্লাহর একান্ত মেহেরবানিতে উপহার হিসেবে পেয়েছি। দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য পতিত ফ্যাসিবাদীরা দেশের ভেতরে ও বাইরে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
তিনি লেখেন, বাংলাদেশের নির্যাতিত ১৮ কোটি মানুষের দাবি, গণহত্যাকারীদের বিচার, ২৪-এর শহীদ পরিবারগুলোর পুনর্বাসন, আহত ও পঙ্গু অসংখ্য ছাত্র, তরুণ, যুবক ও মুক্তিকামী মানুষের সুচিকিৎসা এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে ১৫ বছরের জঞ্জালগুলোর মৌলিক সংস্কার সাধন করে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া।
তিনি আরও লেখেন, জনগণ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গণহত্যার বিচারটাই দেখতে চায়। এর বাইরে অন্য কিছু ভাবার কোনো সুযোগ নেই। আমরা সর্বস্তরের জনগণকে সংযত, সতর্ক ও ঐক্যবদ্ধ থেকে দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানাই।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
‘ক্যান্টনমেন্ট বসে ভারতের পরিকল্পনায় নতুন ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা করা হয়’

অন্তর্বর্তী সরকারের আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেছেন তিনি। এরপর থেকে তার এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সরগরম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। পাশাপাশি এই বক্তব্য প্রত্যাখান করে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে মধ্যরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করছেন একদল শিক্ষার্থী।
এদিকে, এই ইস্যুতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ মধ্যরাতে ফেসবুকে দীর্ঘ এক স্ট্যাটাস দিয়েছেন। মধ্যরাত ২টার দিকে দেয়া এই স্ট্যাটাসে শর্তসাপেক্ষে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনে একাধিক রাজনৈতিক দল রাজি হয়েছে বলে দাবি করে সেখানে তিনি বলেন, ১১ই মার্চ, সময় দুপুর ২.৩০টা। ক্যান্টনমেন্ট বসে ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ নামে নতুন ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা করা হয়, সেই মিটিংয়ে অংশ নিয়ে শেষ না করেই চলে আসতে হয়েছে। এই পরিকল্পনা পুরোপুরি ভারতের বলে দাবি এই নেতার।
স্ট্যাটাসে তিনি বলেন, ১১ই মার্চ, সময় দুপুর ২.৩০টা। কিছুদিন আগে আমি আপনাদের বলেছিলাম যে, ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ নামে নতুন একটি ষড়যন্ত্র নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছে। এই পরিকল্পনা পুরোপুরি ভারতের। সাবের হোসেন চৌধুরী, শিরিন শারমিন, তাপসকে সামনে রেখে এই পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে।
‘আমিসহ আরও দুইজনের কাছে ক্যান্টনমেন্ট থেকে এই পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয় ১১ই মার্চ দুপুর ২.৩০টায়। আমাদেরকে প্রস্তাব দেওয়া হয় আসন সমঝোতার বিনিময়ে আমরা যেন এই প্রস্তাব মেনে নিই। আমাদেরকে বলা হয়- ইতোমধ্যে একাধিক রাজনৈতিক দলকেও এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে- তারা শর্তসাপেক্ষে আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনে রাজি হয়েছে। একটি বিরোধী দল থাকার চেয়ে একটি দুর্বল আওয়ামী লীগসহ একাধিক বিরোধী দল থাকা নাকি ভালো।’’ ফলশ্রুতিতে আপনি দেখবেন গত দুইদিন মিডিয়াতে আওয়ামী লীগের পক্ষে একাধিক রাজনীতিবিদ বয়ান দেওয়া শুরু করেছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদেরকে আরও বলা হয়-রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ যাদের দিয়ে করা হবে, তারা এপ্রিল-মে থেকে শেখ পরিবারের অপরাধ স্বীকার করবে, হাসিনাকে অস্বীকার করবে এবং তারা বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ করবে এমন প্রতিশ্রুতি নিয়ে জনগণের সামনে হাজির হবে।
‘আমাদেরকে এই প্রস্তাব দেওয়া হলে আমরা তৎক্ষণাৎ এর বিরোধিতা করি এবং জানাই যে, আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের পরিকল্পনা বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের বিচার নিয়ে কাজ করুন। এর উত্তরে আমাদের বলা হয়, আওয়ামী লীগকে ফিরতে কোন ধরনের বাধা দিলে দেশে যে সংকট সৃষ্টি হবে, তার দায়ভার আমাদের নিতে হবে এবং ‘আওয়ামী লীগ মাস্ট কাম ব্যাক’।’
এনসিপির এই নেতা বলেন, আলোচনার এক পর্যায় বলি-যেই দল এখনো ক্ষমা চায় নাই, অপরাধ স্বীকার করে নাই,সেই দলকে আপনারা কিভাবে ক্ষমা করে দিবেন! অপরপক্ষ থেকে রেগে গিয়ে উত্তর আসে,’ ইউ পিপল নো নাথিং। ইউ ল্যাক উইজডোম এন্ড এক্সপিরিয়েন্স। উই আর ইন দিজ সার্ভিস ফর এটলিস্ট ফোর্টি ইয়ার্স। তোমার বয়সের থেকে বেশি। তাছাড়া আওয়ামী লীগ ছাড়া ‘ইনক্লুসিভ’ ইলেকশন হবে না।
‘উত্তরে বলি, আওয়ামী লীগের সাথে কোন ইনক্লুসিভিটি হতে পারে না। আওয়ামী লীগকে ফেরাতে হলে আমাদের লাশের উপর দিয়ে ফেরাতে হবে। আওয়ামী লীগ ফেরানোর চেষ্টা করা হলে যে সংকট তৈরি হবে, তার দায়ভার আপনাদের নিতে হবে।’ পরে মিটিং অসমাপ্ত রেখেই আমাদের চলে আসতে হয়।
জুলাই আন্দোলন প্রসঙ্গে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, জুলাই আন্দোলনের সময়ও আমাদের দিয়ে অনেককিছু করানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কখনো এজেন্সি কখনো বা ক্যান্টনমেন্ট থেকে নানা ধরনের প্রেসক্রিপশন গ্রহণ করতে চাপ দেয়া হয়েছে। আমরা ওসব চাপে নতি স্বীকার না করে আপনাদের তথা জনগণের উপরেই আস্থা রেখেছি। আপনাদের সাথে নিয়েই হাসিনার চূড়ান্ত পতন ঘটিয়েছি।
‘আজকেও ক্যান্টনমেন্টের চাপকে অস্বীকার করে আমি আবারও আপনাদের উপরেই ভরসা রাখতে চাই। এ পোস্ট দেওয়ার পর আমার কী হবে আমি জানি না। নানামুখী প্রেশারে আমাকে হয়তো পড়তে হবে হয়তো বিপদেও পড়তে হতে পারে। কিন্তু আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে কোন ধরনের আপস করার সুযোগ নাই।’
তিনি বলেন, জুলাইয়ের দিনগুলোতে জনগণের স্রোতে ক্যান্টনমেন্ট আর এজেন্সির সকল প্রেসক্রিপশন আমরা উড়িয়ে দিয়েছিলাম। আজ আবারও যদি আপনাদের সমর্থন পাই, রাজপথে আপনাদের পাশে পাই তবে আবারও এই আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের ভারতীয় ষড়যন্ত্রও আমরা উড়িয়ে দিতে পারবো।
পরিশেষে তিনি বলেন, আসুন, সকল যদি কিন্তু পাশে রেখে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারলে জুলাই ব্যর্থ হয়ে যাবে। আমাদের শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকা পর্যন্ত আমাদের শহীদদের রক্ত আমরা বৃথা হতে দিবো না। ৫ আগস্টের পরের বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের কামব্যাকের আর কোন সুযোগ নাই বরং আওয়ামী লীগকে অবশ্যই নিষিদ্ধ হতেই হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে ধর্ষণ বাড়ছে: নাহিদ ইসলাম

বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণেই দেশে ধর্ষণের মতো ভয়াবহ অপরাধ বাড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, যদি দ্রুততম সময়ের মধ্যে দোষীদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনা যায়, তাহলে এই ধরনের অপরাধ অনেকাংশে কমে আসবে।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহিদ জসিম উদ্দিনের কন্যা ও তার পরিবারের খোঁজ নিতে গিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, শহিদ পরিবারের সদস্য হিসেবে নয়, বরং বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবেই আমি ধর্ষণের সুষ্ঠু বিচার চাই। প্রতিটি ধর্ষণের ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও দ্রুত বিচার হওয়া দরকার। আমরা ভুক্তভোগী পরিবারের পাশে আছি এবং প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি সরকার আইন পরিবর্তনের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা দ্রুত বাস্তবায়নেরও দাবি জানাচ্ছি।
শহিদ পরিবারগুলোর নিরাপত্তা প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, সারাদেশে শহিদ পরিবারের সদস্যরা রাজনৈতিক ও সামাজিক অনিরাপত্তার মধ্যে রয়েছেন। এটি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সকল নাগরিকদের পাশাপাশি শহিদ পরিবারগুলোকেও সার্বিক নিরাপত্তা দেওয়া উচিত সরকারের।
নাহিদ ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় দুজন আসামির মধ্যে একজনকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে এখনো একজন পলাতক রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তার করতে হবে। অন্যথায় জাতীয় নাগরিক পার্টি রাস্তায় অবস্থান নেবে।
এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ, যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনিম জারা, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব মুজাহিদুল ইসলাম, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সচিব জাহিদ আহসান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার পাঙ্গাসিয়া ইউনিয়নে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহিদ বাবার কবর জিয়ারত করে নানা বাড়িতে ফেরার পথে শহিদের ১৭ বছর বয়সী মেয়েকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
রাজনীতি
মানুষের কল্যাণে আইনজীবীদের কাজ করতে হবে: জামায়াত আমির

পলিটিক্যালি মোটিভেটেড না হয়ে মানুষের কল্যাণে আইনজীবীদের কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামির আমির ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি বলেন, আদালত অঙ্গনে আমি বহুবার এসেছি; মুক্ত মানুষ হিসেবে নয়, বন্দি হিসেবে। আজ মুক্ত পরিবেশে আপনাদের সামনে উপস্থিত হতে পেরে এবং দোয়া নেওয়ার সুযোগ পেয়ে মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি, আলহামদু লিল্লাহ।
বুধবার (১৯ মার্চ) বিকেলে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি অডিটোরিয়ামে বাংলাদেশ লইয়ার্স কাউন্সিল আয়োজিত ‘মাহে রমাদানের গুরুত্ব ও তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল’ এর প্রধান অতিথি হিসেবে আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, দুনিয়াতে বহু পেশা আছে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, অধ্যাপক, সাংবাদিক কিন্তু কারো নামের আগে বিজ্ঞ শব্দ ব্যবহার করা হয় না। শুধু আইনজীবীদের নামের পূর্বেই বিজ্ঞ শব্দ ব্যবহার করা হয়। বার ও বেঞ্চ নিয়েই বিচার কার্যক্রম। আইনজীবীরা বিচারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আইনজীবীদের পলিটিক্যালি মোটিভেটেড না হয়ে মানবতার কল্যাণে কাজ করতে হবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মানুষের মাঝে ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দিয়েছেন। মানবজীবনের জন্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক দিক রয়েছে। একটি আদালত আরেকটি চিকিৎসা। এ দুটো জায়গা ঠিক হয়ে গেলে সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হবে অর্থাৎ সমাজ ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু আমাদের দেশে এই দুটোই করুণ অবস্থায় রয়েছে। বলতে গেলে ন্যায়বিচার আজ নির্বাসনে। আর স্বাস্থ্যখাতে চলছে চরম অনিয়ম।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে শিক্ষা ও সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত হলে দেশের নাগরিকরা গর্বিত হতে পারত। কিন্তু আমাদের দেশে শিক্ষার কোনো নৈতিক মান নেই। যার কারণে আমরা বিশ্বের কোথাও মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারি না। বিশ্বের প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর তুলনায় আমাদের দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো র্যাংক নেই বললেই চলে। আমাদের এ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। যে শিক্ষা মানুষকে মানুষ হতে শেখায়, মানুষকে সম্মান দিতে শেখায় সে শিক্ষা না থাকায় সমাজে নানা সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
আমিরে জামায়াত বলেন, আমাদের দেশে ব্রিটিশ ল’কে মাদার ল’ বলা হয়। কিন্তু প্রকৃত মাদার ল’ হচ্ছে কুরআনের আইন। ইসলামের আইনকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য আজ পর্যন্ত কোনো আইন তৈরি হয়নি। অনেক আইন আছে যা এসেছে কুরআন থেকে। যার কারণে বিদ্যমান অনেক আইন কুরআনের সাথে খুব বেশি সাংঘর্ষিক নয়। কুরআনের আইনের ভিত্তিতে এক মানবিক সমাজ গঠনে সকলকে আন্তরিক হতে হবে।
কাফি