Connect with us
৬৫২৬৫২৬৫২

মত দ্বিমত

জুলাই বিপ্লব: জাতীয় ঐক্যমত, সংস্কার অতঃপর নির্বাচন

Published

on

ব্লক

জুলাই-আগস্ট (২০২৪) ছাত্রজনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবের মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসেছে। কাজেই এই সরকার অপরাপর গতানুগতিক রাজনৈতিক দলের গঠিত সরকারগুলোর মতো নয়। তারা দলীয় সরকার নয় বলে তাদের সামনে দলীয় মতাদর্শভিত্তিক কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডাও নেই। তাদের সামনে রয়েছে জাতীয় আকাঙ্ক্ষা, যা আন্দোলনের রাজপথ থেকে উত্থিত ও গৃহীত। যে কারনে প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রচার মাধ্যমের বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে, জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্যে সংস্কার ও নির্বাচন’ র্শীষক বিভিন্ন সংলাপ। জুলাই বিপ্লব পরবর্তী সময়ে ছাত্র-জনতা আমাদেরকে দেশের নতুন দিক নিয়ে আলোচনা করার ব্যাপক সুযোগ করে দিয়েছে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান রাস্ট্র কাঠামো পূর্ণ গঠনকরার জন্য এক বিরল সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে,আশা করা যায় এর মাধ্যমে ধ্বংসের দারপ্রান্তে পৌছা রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও প্রাতিষ্ঠানিক অব্যবস্থাপনা ও দীর্ঘ সময়ের ফেসিবাদী দুঃশাসন থেকে মুক্ত হয়ে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও সহনশীলতার পথে এগিয়ে যাবে। এই সুযোগ বার বার আসবে না। বিগত ৫৪ বছরে কারণে অকারণে বিভেদবান ক্ষমতাসীনরা জাতিকে সে সুযোগ দেয়নি। জুলাই-অগাস্ট যে কারণে গণবিপ্লব এর রূপ নিয়েছিল, আমাদেরকে সেই বিপ্লবের সার্থকতাকে ধরে রাখতে হলে বিভেদ-বিভাজন না করে,জাতীয় স্বার্থে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমরা যদি রাস্ট্র কাঠামো পূর্ণ গঠন করতে না পারি আমাদের স্বাধীনতা অরক্ষিত হয়ে যাবে। আমাদের অবচেতনে পরাধীনতার গ্লানীতে ভুগতে হবে। জাতি হিসেবে আমরা মর্যাদাহীন হয়ে পড়ব।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

জুলাই গন অভ্যুত্থান আমাদের জাতীয় জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য নতুন অধ্যায়। ছাত্র-জনতার সম্মিলিত আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরশাসক ব্যবস্থার থেকে প্রায় হাতছাড়া হতে যাওয়া সার্বভৌমত্ব ফিরিয়ে আনা আমাদের এযাবৎ কালের শ্রেষ্ঠ অর্জন। যা আজীবন ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। বুক ভরা আশা-স্বপ্ন নিয়ে ৭১-এ লক্ষ শহীদের রক্তদান ও মা বোনের পবিত্র ইজ্জতের বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীনতা একটি নতুন দেশের অস্তিত্ব সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু পরিতাপের বিষয় আজ সেই স্বপ্নময় স্বাধীনতা রূপান্তরিত হয়েছে গ্লানী ও হতাশায়। সম্মান, জাতীয়তাবোধ, মর্যাদাবোধ, সামাজিক ও মানবিক মূল্যবোধ এসব কিছুই আজ বিধ্বস্ত। আমাদের বিবেক আজ লুপ্তপ্রায়। সুবিধাবাদ এবং অযোগ্যতার মহড়ায় গোটা জাতি আজ নীরব নিশ্চল অসহায় ও জিম্মি। তাই, ২৪ এসেছে স্বৈরশাসক এর বিরুদ্ধে মানুষের বাক স্বাধীনতা দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার এক গৌরবময় বিজয় নিয়ে ।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

অনেক দেশের ক্ষেত্রে, বিপ্লব বা বড় রাজনৈতিক উত্থান (যেমন ১৮৩০ সালে ফ্রান্সে জুলাই বিপ্লব) প্রায়ই সংস্কার এবং আলোচনার সময়কালকে উদ্বুদ্ধ করে। এই পরিস্থিতিতে, যে সঙ্কট বা অভ্যুত্থানের একটি মুহূর্ত রাজনৈতিক শক্তিগুলিকে একত্রিত হওয়ার, অর্থপূর্ণ সংলাপে জড়িত হওয়ার, এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াগুলি নিশ্চিত করে এবং আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সংস্কারের মঞ্চ তৈরি করতে পারে।

গত দুই দশক ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং নির্বাচন ব্যবস্থায় অপ্রতুলতা তথা অবিচ্ছিন্ন সংস্কারের যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। যারফলে রাস্ট্র ক্ষমতায় যারাই থাকেন তারাই স্বৈরাচারী হয়ে উঠেন। তাঁরা দেশের জনগণ, সংবিধান, আইনের রীতিনীতি অগ্রাহ্য করে জোর করে ক্ষমতা গ্রহণ এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে তাঁদের অধীনস্থ করে রাখেন। মিথ্যাকে সত্যে রুপান্তরিত করার অপচেষ্ট চালিয়ে যান। বিগত ষোল বৎসর ঘটনা বহুল অনেক ইস্যু থাকার পরও রাজনৈতিক দলগুলি বা সুশীল সমাজ তেমন কিছু করতে পারে নাই। ২০২৪-এর বিপ্লবে যে পরিবর্তন এর প্রেক্ষাপট তৈরী হয়েছে তা কাজে লাগাতে হবে। এসুযোগ বারবার আসবে না ।

নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সংস্কার বিহীন নির্বাচন এই দেশকে এগিয়ে নিতে পারবে না। দেশের শাসন ব্যবস্থায় এবং নির্বাচনে সংস্কার বিষয়ে পুরো জাতি আজ ঐকমত্য। জাতীয় ঐক্য এবং নির্বাচনী সংস্কার একে অপরের সাথে দৃঢ় সম্পর্কিত দুটি বিষয়। নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করতে হবে যাতে জনগণের ভোটাধিকারের প্রতি বিশ্বাস এবং অংশগ্রহণ বাড়ানো যায় এবং এর মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপট গণতান্ত্রিক ভাবে সুসংগঠিত হয়। ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন একটিকে ছাড়া অপরটি সফল হবে না। ঐক্যবিহীন সংস্কার কিংবা সংস্কারবিহীন নির্বাচন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারবে না। সংস্কার প্রয়োজন কারন বিগত সময়ে দেশে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি গড়ে ওঠেনি, এর অন্যতম প্রধান কারন প্রায় সকল রাজনৈতিক দলগুলিতেই গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি চালু না থাকা।

বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা আপাত দৃষ্টিতে একটি স্বাধীন ব্যবস্থাপনা। যদিও নির্বাহী বিভাগের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করেছে বারবার । অতীতে নির্বাচনী সহিংসতা এবং ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনী প্রক্রিয়ার কারণে নানা সমস্যা তৈরি হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের স্বাবলম্বী ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে সংস্কারের প্রয়োজন। ভোটিং প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং দ্রুত ফলাফল নিশ্চিত করতে আধুনিক প্রযুক্তি র্নিভর নিবিড় পর্যবেক্ষণ দরকার। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সকল রাজনৈতিক দলের সমঝোতা এবং জনগণের জন্য নিরাপদ নির্বাচনী পরিবেশ সৃষ্টি করা অত্যন্ত জরুরি। একতরফা নির্বাচনে জনগণের বিশ্বাস বজায় থাকে না এবং যার ফলে রাজনৈতিক অস্থিরতার সৃষ্টি হয় ও স্বৈরতান্ত্রিক সরকার আবির্ভূত হয় ।

জনগণের প্রত্যাশার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে জাতিয়-আর্ন্তজাতিক ইস্যুতে ঐক্য এবং সমঝোতা প্রতিষ্ঠা করা আবশ্যক যাতে জনগণের কল্যাণে একটি দীর্ঘমেয়াদি এবং সুদৃঢ় নীতি নির্ধারণ করা যায়। জাতীয় ঐক্য একমাত্র তখনই সম্ভব, যখন রাজনৈতিক দলগুলো তাদের স্বার্থত্যাগ করে জনগণের কল্যাণে একত্রিত হবে।

রাজনৈতিক নেতা ও দলগুলোর মধ্যে সদিচ্ছা এবং পরস্পরের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা তৈরি হওয়া জরুরি। জনগণের মধ্যে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং সুষ্ঠু নির্বাচনী ব্যবস্থার প্রতি আস্থা সৃষ্টি করতে হবে। যেকোনো রাজনৈতিক আন্দোলন বা আলোচনাইয় মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত। সংস্কার এবং জাতীয় ঐক্য এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী এবং সমতাভিত্তিক হবে, এবং রাজনৈতিক দলগুলো একত্রিত হয়ে দেশের কল্যাণে কাজ করবে। স্বচ্ছতা, গণতন্ত্র, এবং ন্যায়ের ভিত্তিতে নির্বাচন প্রক্রিয়া পরিচালনা দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপটকে আরও শক্তিশালী এবং সুদৃঢ় করবে। স্বৈরতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার পুনরাবির্ভাব ঠেকাতে রাষ্ট্রের সংস্কার অপরিহার্য।

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ন্যূনতম যে সকল সংস্কারগুলো প্রয়োজন, সেগুলো সম্পন্ন করার সুযোগ না দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে র্নিবাচন এ বাধ্য করা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে উঠছে অনেকে। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে সবকিছু সংস্কার করা হয়তো সম্ভব নয়। তার জন্য প্রয়োজন সময়ের । ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৯ সালে হওয়ার কথা। অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু নির্বাচন যদি করতেই হয়, প্রথমে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন কাঠামোর নির্বাচন হওয়া উচিত। এতে নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার কতটুকু হয়েছে তা বুঝা যাবে। আর তা না হলে শুধু রাতের অন্ধকারে নয় বরং দিনের আলোর নির্বাচনও প্রশ্নবিদ্ধ হবে। কী জানি অনেকে হয়তোবা তাই চাইছে। ২০২৪-এর জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবের ছয় মাসের মাথায় ষোল বৎসরের জঞ্জাল ঠিক হয়ে যাবে বা ঠিক করে ফেলা হবে এমন চিন্তা আকাশ কুসুম কল্পনা বা জুলাই বিপ্লবকে প্রশ্ন বিদ্ধ করা ছাড়া আর কিছুই নয়। কোনোভাবেই ফ্যাসিস্টের বিচার ও অর্থবহ সংস্কার ছাড়া নির্বাচন করা ঠিক হবে না! সকলেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করে রাস্ট্র কাঠামো ঠিক করার দিকে নজর দিতে হবে । প্রয়োজনে উপদেষ্টা পরিষদ সংস্কার করে শক্তিশালী করতে হবে!

জনগণ সংস্কার চায় এবং চায় এমন একটি নির্বাচনি ব্যবস্থা যেখানে তার ভোট দেবার অধিকার থাকবে এবং সেই ভোট (ক্ষমতার) নির্ধারক হবে, জবাবদিহি ব্যবস্থা থাকবে। সর্বোপরি, ক্ষমতার যেন এককেন্দ্রীকরণ না ঘটে। জবাবদিহিতামূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা ছাড়া গণতন্ত্র ও মানবিক মর্যাদা অর্জন কখনোই সম্ভব নয়। নির্বাচন রাজনীতি ব্যবসায় রূপান্তরিত যেন আর না হয় তার জন্য সজাগ থাকতে হবে।

ভাগ্য নির্মাণের সুযোগ বার বার অসে না। সুযোগ পেলেও তা নষ্ট হয়েছ অনেক বার। ২০২৪ সালে আবার আরেকটি সুযোগ এসেছে শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে। তাদের গণআন্দোলন স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ এনে দিয়েছে। যে ছাত্রসমাজ বাংলাদেশের প্রতিটি রাজনৈতিক আন্দোলন-সংগ্রামে সামনের কাতারে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে, সে ছাত্রসমাজ নানা কারণে ম্রিয়মাণ হলেও যে হারিয়ে যায়নি, তা জুলাই-আগস্টের ঘটনা প্রমাণ করেছে। জাতি গঠনে তাদের পুরনো ভূমিকাকে তারা নতুন করে উজ্জীবিত ও উপস্থাপিত করেছে। বাংলাদেশের মতো রাজনৈতিকভাবে বিভাজিত সমাজে অন্তত সংস্কারের বিষয়ে সকল পক্ষকেই জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। দলীয় বা গোষ্ঠীগত বিবেচনার বাইরে এসে দাঁড়াতে হবে সকল পক্ষকে। সংস্কার, জাতীয় স্বার্থ ও ঐকমত্যই হবে মূল আলোচ্য বিষয়, দলীয় দ্বন্দ্ব-সংঘাত এক্ষেত্রে যেন প্রাধান্য পেতে না পারে। রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব হচ্ছে, এই পুরো প্রক্রিয়াটিকে আন্তরিকতা ও সততার সঙ্গে গ্রহণ করা। তারা যেন যুক্তি ও তথ্য দিয়ে সংস্কার প্রসঙ্গে আলোচনা করে এবং শেষ পর্যন্ত একটি ঐকমত্যে পৌঁছায়। যার ভিত্তিতে তারা নিজেদের মধ্যে এমন একটি অঙ্গীকারে উপনীত হবে যে, জনগণের ভোটের বাইারে কোনো নির্বাচন মানবো না। সংস্কার ও নির্বাচনের মাধ্যমে একটি কার্যকর্ সমন্বয় সাধিত করে ভবিষ্যতের বাংলাদেশে বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐক্য ও ঐকমত্যের পথ প্রশস্ত করবে। রাজনৈতিক ঐক্য না থাকার কারনে কথিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী কিছু স্বার্থন্বেসী মানুষ লোভে পড়ে ক্রমশ হিংস্র হয়ে আন্দোলন্রত শিক্ষার্থীদের উপর র্নিবিচারে গুলি চালায় । জাতিসংঘের তদন্তেও যা প্রমানীত কি ভাবে ফেসিস্ট সরকার নিজ দেশের মানুষের প্রতি অবিচার করেছে।

জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা , অর্থনৈতিক এবং সামাজিক উন্নয়ন প্রতিষ্ঠার পথে সহায়ক হবে। নির্বাচন সংস্কার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং রাজনৈতিক দলের মধ্যে একতাবদ্ধতা দেশকে একটি স্থিতিশীল রাষ্ট্র হিসেবে দাঁড় করাতে সাহায্য করবে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী হবে, এতে দীর্ঘমেয়াদি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া পরিচালিত হবে। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। সামাজিক উন্নয়ন এবং জনকল্যাণের দিকে আরও বেশি মনোযোগ দিতে পারবে, যেমন স্বাস্থ্য, শিক্ষা, এবং বেকারত্ব দূরীকরণ। বাংলাদেশে জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও প্রাতিষ্ঠানিক অব্যবস্থাপনা ও ফেসিস্টের কুশাসন থেকে মুক্ত হয়ে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, সহনশীলতা ও বৈষম্যহীনতার পথে এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরী হয়েছে । জনআকাঙ্ক্ষা পূরণের লক্ষ্যে সংস্কার ও পরিবর্তন, ভবিষ্যতের বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ পুনরায় ফিরে আসার কাল্পনিক আকাঙ্খা রোধ করবে। অতীতের যাবতীয় ভুল ও ব্যর্থতা দূর করার মহত্তর এই সুযোগ নষ্ট হলে আমাদেরকে চড়া মাশুল দিতে হবে। অতএব, আমাদের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের পথে এই সুযোগে আমাদেরকেই নির্মাণ করতে হবে।

আন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রব্যবস্থা সংস্কারের নিমিত্বে যে ৬টি কমিশন গঠন করেছেন ইতিমধ্যে সবাই তাদের গঠিত সুপারিশ রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। সংস্কারের নিমিত্বে সকল রাজনৈতিক দলের মধ্যে সমঝোতা সৃষ্টির লক্ষ্যে তিনি সব দলের প্রতিনিধিত্বে সমন্বয় ও মতামত জরিপে বিশেষ সভা করেছেন, যেখানে তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মানে সংস্কার অপরিহার্য এবং তিনি তা সকলের মতামতের ভিত্তিতে করতে চান। এই মর্মে তিনি সকল দলের নেতাদেরকে স্ব স্ব মতামত লিখিত ভাবে প্রদানের কথা স্পষ্ট করেছেন। যেখানে প্রস্তাবের যেকোন প্রসঙ্গে তাদের পূর্ণ বা আংশিক যেকোন ভাবে দ্বিমত পোষনের একতিয়ার রয়েছে । তিনি নিশ্চিত করেছেন সকল দল সংস্কার প্রস্তাবের যে কোন বিষয়ের পক্ষে বিপক্ষে তাদের মতামত দিতে পারে তবে তা অবশ্যই লিখিত ও যথার্থভাবে স্বাক্ষরিত হতে হবে কেননে তিনি তা জনসমক্ষে তুলে ধরতে চান ওয়েবসাইট এ প্রকাশের মধ্য দিয়ে। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নিজস্ব অবস্থান তুলে ধরে ঐকমত্যে পৌছতে পারলে আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মানে বিশ্বদরবারে তা হতে পারে ২০২৪ এর বাংলার আর এক ম্যগনাকার্টা ।

অধ্যাপক সরওয়ার জাহান, টেকসই উন্নয়ন কর্মী।

শেয়ার করুন:-

মত দ্বিমত

সামান্য কিছু বালু আমেরিকা থেকে আনতে দিলো না, অথচ…

Published

on

ব্লক

সামারে সুইডেনে পাকিস্তানি আম পাওয়া যায়, খেতেও বেশ ভালো। ছোটবেলায় বাংলাদেশে গ্রামেই বেশি সময় কেটেছে। আম, জাম, লিচু, কাঠাল, খেজুরের রস—এসব ছিলো সেই বেহেস্তের খাবারের মতো, যাকে বলে অমৃত। তো বহু বছর দেশের বাইরে থাকতে থাকতে দই-এর সাধ ঘোলে মেটাতে হয় মাঝেমধ্যে। যার ফলে সামারে আমদুধ দিয়ে মুড়ি খাওয়ার সাধ জাগে। আম যেমনই হোক, তা মেলে, তবে সেই মুড়ি কোথায়? শেষে স্টকহোমের একটি বাংলাদেশি দোকান থেকে মুড়ি কিনলাম। ওমা! মুড়ি তেলে ভেজেছে, কেমন একটা বিশ্রী গন্ধ! মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেল। দোকানে গিয়ে বিষয়টি বলতেই ভদ্রলোক বললেন, “বাংলাদেশ থেকে এগুলোই আসে।” আমি শুধু বললাম—ঘটনা কী? শাকসবজি, মাছ-ফলে ফরমালিন, মুড়িতে তেলের গন্ধ, মসলায় ইটের গুঁড়া—এসব সাত সমুদ্র তের নদী পার হয়ে কীভাবে এলো? ভদ্রলোক হেসে বললেন, “যেভাবে আমরা এসেছি ভাই।” আমার আর বলার কিছু ছিল না।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

পরে বেশ কয়েক বছর কেটে গেছে। সম্ভবত ১৯৯৬ সালের দিকে ছুটিতে গিয়েছিলাম ক্যালিফোর্নিয়ার লস এঞ্জেলসে। সাগরের বালু এত পরিষ্কার এবং সাদা দেখে মনে পড়ে গেলো ছোটবেলার কথা। মাকে দেখেছি পরিষ্কার বালু গরম করে চাল দিয়ে মুড়ি ভাজতে। ভাবলাম, কিছু বালু সুইডেনে নিয়ে যাবো। যে ভাবনা, সেই কাজ। ব্যাগ ভরে কয়েক কেজি বালু নিয়ে লস এঞ্জেলস বিমানবন্দরে হাজির। চলছে চেকিং—নানা ধরনের প্রশ্ন: ব্যাগে কী আছে, কে প্যাক করেছে, অস্ত্রপাতি আছে কি না ইত্যাদি। ব্যাগের ওজন একটু বেশি হয়ে গেছে। কিছু ওজন কমাতে হবে অথবা অতিরিক্ত চার্জ দিতে হবে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

আমি ডেস্কে জিঙ্গেস করলাম, “কত?”
উত্তরে বলল, “২০০ ডলার।”
ভাবলাম, তাহলে কিছু বালু রেখে যাই। একটু সাইডে গিয়ে বালু ঢালছি আরেকটি পলিথিনের ব্যাগে। হঠাৎ পুলিশ এসে হাজির। তারা জিজ্ঞেস করল, “এটা কী? কোথা থেকে এলো?” আমি সব বললাম। পুলিশ তো হতবাক! বলল, “জীবনে অনেক কিছু চোরাচালান হতে দেখেছি, কিন্তু বালু চোরাচালান এই প্রথম। তবে কী নিয়মকানুন আছে, সেটা জানা নেই। তোমাকে অপেক্ষা করতে হবে, তদন্ত করতে হবে।”

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

আমি বললাম, “আরে ভাই, এটা খাঁটি বালি, কোনো ভেজাল নেই। আমি নিজে হাতে সাগর থেকে তুলেছি।”
পুলিশ বলল, “তবুও পরীক্ষা করতে হবে। অন্য কিছু এর সঙ্গে জড়িত আছে কিনা তা জানতে হবে। রাষ্ট্রের প্রাকৃতিক সম্পদ পাচার—এটা তদন্তের বিষয়।”

আমি তো হঠাৎ অবাক! ঘাম ছুটে গেল শরীরে। এ যেন মহাবিপদ! এদিকে প্লেন ছেড়ে দেবে, ফ্লাইট মিস হবে, সাথে বালু চোরের খেতাব, জেল-জরিমানা—আর কত কী! আমি আছি আমার রাজ্যে—কে কী বলবে, কী হবে না হবে এসব নিয়ে। এরমধ্যে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এল। হঠাৎ কোনো যান্ত্রিক সমস্যার কারণে প্লেন এক ঘণ্টা দেরিতে ছাড়বে—এটাও কেউ এসে জানিয়ে গেল। একটু স্বস্তি পেলাম, কিন্তু আমার কী হবে সেটা নিয়ে ভাবছি।

কর্তৃপক্ষের সাথে বেশ কিছুক্ষণ কথা হলো। আমার পরিচয়সহ সব ঘটনা জানার পর বিষয়টি বুঝতে পেরে আমাকে ছেড়ে দিলো, তবে বালু রেখে দিল। শুধু বললো, রাষ্ট্রের সম্পদ এভাবে নেওয়া উচিত নয়। যদিও বালুর বিষয়ে প্লেনে ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা নেই, তবুও নিতে পারবে না। আমি মনে মনে ভাবলাম—তুই তোর বালু নে, আমার আর মুড়ি ভাজার শখ নেই। বালু রেখে চলে এলাম।

ঘটনাটি পরে সুইডেনে এসে আলোচনা করেছি, কিন্তু বিষয়টি নিয়ে আর ভাবিনি। যদিও সেদিন লস এঞ্জেলস বিমানবন্দরে আমার বারোটা বাজতে গিয়েছিল, ভাগ্যিস মানসিক চাপ, শ্বাসকষ্ট আর ঘাম ছাড়া অন্য কোনো বিপদ হয়নি। তবে আমদুধ দিয়ে মুড়ি খাওয়ার শখ সেদিন লস এঞ্জেলসের বিমানবন্দরে রেখে এসেছি।

ভেজাল খাবার এড়াতে এবং দেশি খাবারের টান মেটাতে আমি এখানে নিজের মতো কৃষিপণ্য উৎপাদন করি। তবে আম আর ধান এখনও উৎপাদন সম্ভব হয়নি। সময়-সুযোগ হলে চেষ্টা করবো, ইনশাআল্লাহ। আজ হঠাৎ বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ—পাথর উত্তোলন আর সেগুলো রাতারাতি শেষ হয়ে যাওয়ার খবর পড়ে সেই দিনের ঘটনার কথা মনে পড়ে গেল। মনে হলো, বেচারা দেশবাসীর হয়তো ঘর-দুয়ার সাজানোর শখ হয়েছিল পাথর দিয়ে—যেমনটি আমার হয়েছিল বালু দিয়ে মুড়ি ভাজার। প্রকৃতির সম্পদ লুট করে যেমন দেশ ফাঁকা হয়, তেমনি ভেজাল খাবারে মানুষের মনও শূন্য হয়ে যায়।

রহমান মৃধা
গবেষক ও লেখক
সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
Rahman.Mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

চব্বিশের শহীদদের ত্যাগ, গ্রামীণ সমাজের রূপান্তর এবং ভারতের প্রভাবমুক্ত এক স্বতন্ত্র বাংলাদেশের পথনকশা

Published

on

ব্লক

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে ২০২৪ সাল কেবল একটি রাজনৈতিক বর্ষপঞ্জি নয়—এটি এক রক্তাক্ত অথচ গৌরবময় অধ্যায়, যা আমাদের জাতীয় চেতনায় স্থায়ীভাবে খোদাই হয়ে গেছে। এ বছর আমরা দেখেছি—কীভাবে এক তরুণ বুক চিতিয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছে, কীভাবে গ্রামীণ সমাজের নৈতিক ভিত্তি নড়ে গেছে, এবং কীভাবে জাতীয় রাজনীতি এখনও বিদেশি প্রভাবের ছায়ায় বন্দি। এই তিনটি প্রবাহ আলাদা হলেও, একসঙ্গে তারা আমাদের সামনে এক অনিবার্য প্রশ্ন তোলে—আমরা আসলে কতটা স্বাধীন?

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

১৬ জুলাই ২০২৪, রংপুর শহরে ছাত্রনেতা আবু সায়েদ পুলিশের সামনে দাঁড়ালেন—জেনে যে এর পরিণতি হতে পারে মৃত্যু। তবুও তিনি পিছু হটলেন না। মুহূর্তেই পুলিশের গুলিতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন। সেই মুহূর্তে আন্দোলনের চরিত্র বদলে যায়—এটি আর কেবল কোটা সংস্কারের দাবি নয়; হয়ে ওঠে স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার ও মানুষের মর্যাদা পুনরুদ্ধারের লড়াই। গুলির শব্দ, ধোঁয়া, রক্তের গন্ধ উপেক্ষা করে মানুষ দাঁড়িয়ে ছিল—“মেরেছে একজন, দাঁড়িয়েছে দশজন।”

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

কিন্তু সেই রক্তের মূল্য এখনও পরিশোধ হয়নি। জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, কয়েক সপ্তাহের মধ্যে নিহত হয়েছে ৬০০ থেকে ১,৪০০-এর বেশি মানুষ।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

• জাত্রাবাড়ি গণহত্যা: এক দিনে ৫২ জন নিহত—পরিকল্পিত গুলিবর্ষণ।
• চাঁখারপুল হত্যাযজ্ঞ: খোলা রাস্তায় বেছে বেছে হত্যা।
• আশুলিয়া অগ্নিদগ্ধ হত্যাকাণ্ড: জীবন্ত মানুষকে আগুনে পোড়ানো।

এসব হত্যাকাণ্ড শুধু দমন নয়—এগুলো রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের নগ্ন রূপ। আজ সেই শহীদ পরিবারগুলো কোথায়? অনেকেই চিকিৎসার খরচ জোগাতে হিমশিম খাচ্ছে; বহু পরিবার এখনও ন্যায়বিচার পায়নি। আমরা কি ভুলে গেছি—তারা আমাদের জন্য দাঁড়িয়েছিল?

তাদের গল্প শুধু শহরের রাস্তায় গুলির শব্দে সীমাবদ্ধ নয়; এর প্রতিধ্বনি পৌঁছেছে প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত। এই গ্রামগুলোও বহন করছে সময়ের ক্ষতচিহ্ন—যেখানে ত্যাগ, আশা আর ভয়ের ইতিহাস নদীর মতো বয়ে চলেছে।

গ্রাম যেন এক উদার নদী—যার স্রোতে জন্ম নিয়েছে নানা চরিত্র ও স্বভাব। কোনো স্রোত ছিল স্বচ্ছ ও শান্ত, যা সমাজকে পুষ্ট করেছে; আবার কোনো স্রোত ছিল ঘোলা ও উত্তাল, যা শান্তিকে ভেঙে দিয়েছে। এক সময় এই গ্রাম থেকে উঠে এসেছিল আলোকবর্তিকা—যারা ধর্ম, সমাজসেবা ও শিক্ষার আলো ছড়িয়েছিল, দিয়েছে সুশাসন ও ন্যায়বিচারের স্বপ্ন। কিন্তু সময়ের স্রোত বদলেছে। সেবামুখী নেতৃত্বের জায়গা দখল করেছে ভয়, দমননীতি ও শক্তি প্রদর্শনের রাজনীতি। ৫ আগস্ট ২০২৪-এর পর এই গ্রাম তার সবচেয়ে বিপজ্জনক সৃষ্টিকে দেশের সামনে হাজির করেছে—যার উত্থান যেন শুকনো মাঠে দাবানল। আগুন স্থানীয়ভাবে শুরু হলেও, ধোঁয়া ও তাপ গ্রাস করতে পারে পুরো দেশকে।

স্বাধীনতার ৫৫ বছর পরও বাংলাদেশের রাজনীতি বহিরাগত প্রভাবের ছায়া থেকে মুক্ত হয়নি। ভারতের প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরতা, রাজনৈতিক ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে তাদের আশীর্বাদ কামনা, এবং সার্বভৌমত্বের প্রতি উদাসীনতা—আজকের প্রজন্মের জন্য এক গুরুতর হুমকি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান অনস্বীকার্য হলেও, স্বাধীনতার পর প্রশ্ন থেকেই যায়—আমরা কি নিজেদের স্বার্থে স্বাধীন? বন্ধুত্ব মানে অনুগত হওয়া নয়; স্বাধীনতা মানে নিজের পথ নির্ধারণের ক্ষমতা। ২০২৪ সালের নির্বাচন দেখিয়েছে—রাজনীতিতে বিদেশি প্রভাব কতটা গভীরে ঢুকে গেছে। বিরোধী পক্ষের অভিযোগ, সরকার ভারতের সমর্থন পেতে নির্বাচনকে কলুষিত করেছে। জনগণের স্লোগান ছিল স্পষ্ট—“দেশটা কারো বাপের নয়।” কিন্তু স্লোগান যথেষ্ট নয়; প্রয়োজন স্পষ্ট রোডম্যাপ—জনগণের স্বার্থকে রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে আনা, বিদেশি প্রভাবমুক্ত স্বচ্ছ ও দায়বদ্ধ শাসনব্যবস্থা গড়ে তোলা, সম্মান ও সমতার ভিত্তিতে কূটনীতি চালানো, এবং বহুমুখী অর্থনৈতিক সম্পর্ক ও দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি।

২০২৪ সালের সাহসী সন্তানেরা প্রমাণ করেছেন—স্বাধীনতা একবার অর্জন করলেই চিরস্থায়ী হয় না; প্রতিদিন তা রক্ষা করতে হয়। গ্রামীণ সমাজের পরিবর্তন শিখিয়েছে—নৈতিক নেতৃত্ব হারালে স্থানীয় ও জাতীয় রাজনীতি সমানভাবে দূষিত হয়। এই দূষণ থেকে মুক্তি পেতে হলে গণতন্ত্রের ভিত মজবুত করতে হবে, আর তার ভিত্তি শুরু হয় একটি সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। ভারতের মতো শক্তিশালী প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে হলে মাথা উঁচু রাখতে হবে—হাত পেতে নয়। এই মর্যাদা রক্ষার প্রথম ধাপ হলো একটি প্রকৃত স্বাধীন ও কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠন। বর্তমানে বাংলাদেশের বাস্তবতা হলো—ইসি প্রায়ই সরকারের ছায়াতলে পরিচালিত হয়, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ক্ষমতাসীন দলের প্রতি পক্ষপাত দেখায়, আর অভিযোগ তদন্তে কার্যকর ভূমিকা নিতে ব্যর্থ হয়। এর ফলে নির্বাচন হারায় বিশ্বাসযোগ্যতা, আর গণতন্ত্র তার মূল ভিত্তি হারায়।

সুইডেনসহ উন্নত গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচন কমিশন একটি সম্পূর্ণ স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, যা সরকার বা রাজনৈতিক দলের প্রভাবমুক্ত। তাদের মূল দায়িত্বসমূহ হলো—

• ভোটার তালিকা নিয়মিত ও নিরপেক্ষভাবে হালনাগাদ করা
• ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা
• সব প্রার্থী ও দলের জন্য সমান সুযোগ দেওয়া
• নির্বাচন আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করা
• নির্বাচন-পরবর্তী বিরোধ দ্রুত ও নিরপেক্ষভাবে নিষ্পত্তি করা
• নির্বাচনকালীন সময়ে প্রশাসন ও পুলিশ কমিশনের সরাসরি অধীনে রাখা
• ফলাফল ঘোষণার পুরো প্রক্রিয়া জনসাধারণের জন্য দৃশ্যমান রাখা

বাংলাদেশের জন্য করণীয় প্রস্তাব

বাংলাদেশে একটি প্রকৃত নিরপেক্ষ ও কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য নিচের নীতিমালা অবিলম্বে গ্রহণ করা উচিত—
১. সংবিধান সংশোধন করে ইসির পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা
২. প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনার নিয়োগে বহুদলীয় পরামর্শক কমিটি গঠন
৩. ইসির অর্থায়ন সংসদীয় অনুমোদনের মাধ্যমে, যাতে সরকার সরাসরি প্রভাব ফেলতে না পারে
৪. প্রশাসন ও পুলিশ নির্বাচনকালীন সময়ে ইসির অধীনে রাখা
৫. সব ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ও লাইভ স্ট্রিমিং ব্যবস্থা চালু করা
৬. ভোটার তালিকা ও ফলাফল অনলাইনে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা
৭. ভোট জালিয়াতি বা অনিয়মের ক্ষেত্রে কঠোর শাস্তি—দল ও প্রার্থীর জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য

শেষ কথা
যদি এই কাঠামো গ্রহণ করা হয়, তাহলে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন শুধু একটি প্রশাসনিক সংস্থা নয়, বরং গণতন্ত্রের রক্ষক হয়ে উঠবে। সরকার তখন বলতে পারবে না—“আমরা জানতাম না”; বরং জনগণ নিশ্চিত হবে যে তাদের ভোট শুধু গণনা হয় না, গণ্যও হয়। কারণ, গণতন্ত্র তখনই সত্যিকারের বেঁচে থাকে—যখন মানুষের কণ্ঠস্বর ব্যালটের কাগজে প্রতিফলিত হয়।

রহমান মৃধা
গবেষক, লেখক ও সাবেক পরিচালক, ফাইজার সুইডেন
Rahman.Mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

বাংলাদেশের রাজনীতিতে অনুশোচনার অভাব ও নতুন জাগরণের ডাক

Published

on

ব্লক

আমরা কম বেশি ভুল করি, করি না? কিন্তু আমাদের অনুসচনা হয় না কেন? বাংলাদেশ এবং বাঙালি সহ আরো কিছু মানুষের বসবাস এই দেশটিতে। যেভাবেই হোক দেশটা দীর্ঘ ৯ মাসেই সেই ৭১-এ স্বাধীন হয়ে গেলো। শেখ মুজিব দেশে ফিরলেন, নিজ দায়িত্বে প্রেসিডেন্ট হলেন যদিও চারদিকের চামচারা নানা ধরনের রাজনৈতিক সুবিধা নিতে নির্লজ্জের মতো কেউ কিছু বলেনি। সম্ভবত বিনা সফতেই নিজ দায়িত্বে প্রেসিডেন্ট হলেন এবং পরে আবু সাঈদ চৌধুরীকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করে নিজে প্রধানমন্ত্রী হলেন। তারপর কোন ফাঁকে জাতির পিতায় ভূষিত হলেন এবং বঙ্গবন্ধু হলেন। শেষ পর্যায়ে একদলীয় শাসন চালু করে রাষ্ট্রকে ব্যক্তিকেন্দ্রিক পথে নিয়ে গেলেন।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

এরপর এলো জিয়াউর রহমানের উত্থান। মুক্তিযোদ্ধা সেনা অফিসার হিসেবে ক্ষমতায় এসে তিনি রাষ্ট্রকে নতুনভাবে গড়তে চাইলেন। তাঁর উদ্যোগে বিএনপি প্রতিষ্ঠিত হয়, বহুদলীয় রাজনীতি ফিরে আসে। কিন্তু ক্ষমতার খেলায় তাঁর শাসনও স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচারের প্রশ্নে বিতর্কিত রয়ে যায়।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

তারপর এলো হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। তিনি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে দীর্ঘদিন শাসন করেন। তাঁর সময়ে প্রশাসনিক অবকাঠামোর কিছু সংস্কার হলেও রাজনৈতিক সংস্কৃতির অবনতি ঘটে। দুর্নীতি, দলীয়করণ এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্বলতা সেই সময়ে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পায়। এরশাদের শাসন আমাদের শেখায়—সামরিক শাসন কখনোই জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল রাষ্ট্র গড়তে পারে না।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

পরে এলো খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনার পালাবদলের দীর্ঘ ইতিহাস। দুই দলের ক্ষমতার দ্বন্দ্ব, দুর্নীতি, দলীয় স্বার্থসিদ্ধি ও প্রতিহিংসার রাজনীতিতে দেশ বারবার আঘাত পেয়েছে। এক সময় গণতন্ত্র কেবল ভোটের সংখ্যায় সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে, মানুষের অধিকার, ন্যায়বিচার ও সমতার প্রশ্ন পিছিয়ে গেছে।

এখানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো—রাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা কী হওয়া উচিত? ইতিহাসে আমরা দেখেছি সেনাবাহিনী বারবার রাষ্ট্রক্ষমতায় হস্তক্ষেপ করেছে। অথচ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে তাদের মূল দায়িত্ব হলো জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা, রাজনৈতিক ক্ষমতার ভারসাম্য ভাঙা নয়। ভবিষ্যতের জন্য শিক্ষা হলো—সশস্ত্র বাহিনীকে নিরপেক্ষ ও সাংবিধানিক কাঠামোর ভেতরে রাখতে হবে, যাতে তারা গণতন্ত্রকে রক্ষা করে, হুমকি না হয়।

এরপর এলো ড. ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তীকালীন সরকার। তাঁদের দুটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য হলো—প্রথমত, দেশটিতে গৃহযুদ্ধের সম্ভাবনা থাকলেও সেটি ঘটেনি। দ্বিতীয়ত, লুটপাট সত্ত্বেও দেশ দেউলিয়া হয়ে যায়নি। তবে প্রশাসনিক সংস্কার, সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির রূপান্তরে তারা কার্যকর হতে পারেনি। এখন দেখার পালা তারা একটি সত্যিকারের সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করতে সক্ষম হন কিনা।

সবশেষে নতুন প্রজন্মের কথা আসছে। ২০২৪ সালে তারা দেশের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়—তারা কি সেই অধিকার ধরে রাখতে পারবে? তাদের নৈতিক মূল্যবোধ কি অতীতের নেতাদের থেকে ভিন্ন কিছু হবে? যদি না হয়, তবে আমরা আবারও একই অনুশোচনার চক্রে ঘুরপাক খেতে থাকব।

বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ইতিহাসে নেতৃত্ব সংকট, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ব্যর্থতা এবং ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতির পুনরাবৃত্তি আমাদের জাতীয় জীবনে আজ গভীর অনুশোচনার জন্ম দিয়েছে। শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্ব থেকে শুরু করে জিয়াউর রহমান, এরশাদ, খালেদা জিয়া এবং শেখ হাসিনার সময়কাল পর্যন্ত আমরা প্রত্যক্ষ করেছি—রাষ্ট্রের কাঠামো সংস্কারের পরিবর্তে ব্যক্তিকেন্দ্রিক ক্ষমতার চর্চা। যার ফলে প্রশাসন দুর্বল হয়েছে, সশস্ত্র বাহিনীকে কখনো রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে, আবার কখনো তারা পর্দার আড়ালে নীতিনির্ধারণী প্রভাব বিস্তার করেছে।

রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে অবকাঠামোগত দুর্বলতা রয়ে গেছে। প্রশাসন রাজনৈতিক আনুগত্যের বন্দী হয়ে পড়েছে, যেখানে দক্ষতা, জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা অবহেলিত। একইভাবে, সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা কী হওয়া উচিত এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় তাদের প্রভাব কোথায় সীমিত থাকবে—সেই প্রশ্নের কোনো সুস্পষ্ট উত্তর আমরা পাইনি। ফলে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও ক্ষমতার দ্বন্দ্ব বারবার জাতিকে গভীর সংকটে ফেলেছে।

অতএব, এখন দায়িত্ব নতুন প্রজন্মের। কিন্তু এ দায়িত্ব পালন সহজ নয়। কারণ বাস্তবতা হলো—আজকের তরুণদের একটি বড় অংশ বেকার। তাদের হাতে নেই পর্যাপ্ত ক্ষমতা, নেই দক্ষতা, নেই কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তা। ফলে তারা সারাদিন রাজনৈতিক নেতাদের আশেপাশে ঘুরে বেড়ায়, কখনো ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় দুর্নীতি ও লুটপাটে অংশ নেয়, আবার কখনো রাজনৈতিক হানাহানির বলি হয়। তাদের বেকারত্ব দূরীকরণে কোনো কার্যকর পরিকল্পনা নেই, কারণ দুর্নীতিবাজ সরকার টিকে থাকার স্বার্থে এই তরুণ সমাজকে ব্যবহার করছে নিজেদের ক্ষমতার খেলায়—ফলে দেশের বারোটা বাজছে।

আমি ভেবেছিলাম, অন্তবর্তী সরকারের নেতৃত্বে ড. ইউনূস অন্তত একটি জাতীয় কর্মসংস্থান পরিকল্পনা তৈরি করবেন, একটি সঠিক রোডম্যাপ দেখাবেন-যাতে তরুণ প্রজন্ম দক্ষতায়, সততায় এবং সৃজনশীলতায় জাতিকে এগিয়ে নিতে পারে। কিন্তু তিনি সেই কাজটিও করতে পারেননি।

বাংলাদেশের রাজনীতির দীর্ঘ ইতিহাস আমাদের এখন একটাই শিক্ষা দেয়—অনুশোচনা ছাড়া আমাদের পরিবর্তন হবে না। শেখ মুজিব থেকে জিয়া, এরশাদ থেকে খালেদা-হাসিনা পর্যন্ত প্রতিটি যুগে ভুল ছিল, অন্যায় ছিল। কিন্তু কোথাও প্রকৃত অনুশোচনা দেখা যায়নি। সেই কারণেই একই ভুল বারবার পুনরাবৃত্তি হয়েছে, এখনো হচ্ছে।

আমাদের সামনে একমাত্র করণীয় হলো-একটি জাতীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন, যেখানে শিক্ষাকে কর্মসংস্থানের সঙ্গে যুক্ত করা হবে, তরুণদের জন্য প্রযুক্তি ও শিল্পভিত্তিক দক্ষতা উন্নয়নের সুযোগ তৈরি করা হবে, এবং নৈতিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়ে রাষ্ট্রকে পুনর্গঠনের কাজ শুরু করা হবে।

নতুন প্রজন্ম যদি সেই সঠিক দিকনির্দেশনা পায়, তবে তারা শুধু নিজেদের নয়, জাতির ভবিষ্যৎও আলোকিত করতে পারবে। অন্যথায়, আমরা বারবার একই প্রশ্নেই ফিরে যাব—এতো কিছুর পরেও আমরা আমাদের অনুশোচনা করি না কেন?

অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে, অনুশোচনার সংস্কৃতি গড়ে তুলে, আমরা যদি একটি নৈতিক ও সুশাসনভিত্তিক রাষ্ট্র গড়তে পারি, তবে জাতির ভবিষ্যৎ আলোকিত হবে। কিন্তু যদি তা না হয়, তবে আমরা শুধু প্রশ্ন করেই যাব—এতো কিছুর পরেও দেশের প্রায় ১৬ কোটি মানুষের জীবনমান উন্নয়নের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি বারবার দেওয়া হয়েছে এবং হচ্ছে, কিন্তু কই—তাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন তো হয়নি, হচ্ছে না! তারপরও আমাদের কোনো অনুশোচনা নেই, কিন্তু কেন?

রহমান মৃধা
গবেষক ও লেখক
(সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন)
Rahman.Mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

স্বাধীনতার হুমকির মুখে গণমাধ্যম

Published

on

ব্লক

বিশ্বব্যাপী গণমাধ্যম স্বাধীনতার ওপর যখন প্রবল চাপ, তখন বাংলাদেশে পরিস্থিতি প্রায় মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে। স্বাধীন সাংবাদিকতার মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া হয়েছে রাজনৈতিক আনুগত্য, ভীতি ও তোষামোদে। বাংলাদেশের সাংবাদিকরা আজ সত্য প্রকাশ করতে ভুলে গেছেন—বরং সরকারের প্রশংসা করাই হয়ে গেছে প্রধান কাজ। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালীন, সাংবাদিকদের একটি অংশ প্রকাশ্যে বলতেন—‘সমালোচনা নয়, প্রশংসা করতেই এসেছি।’ এই মানসিকতা গণতন্ত্রের জন্য শুধু ক্ষতিকর নয়, এটি রাষ্ট্রের মৌলিক স্বচ্ছতাকেও ধ্বংস করেছে।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

আজও সেই একই চক্র সাংবাদিকতা করছে—যারা সরকারের সমালোচনা করতে ভয় পায়, কারণ তারা জানে, টেন্ডার, বিজ্ঞাপন কিংবা পৃষ্ঠপোষকতা বন্ধ হয়ে যাবে যদি চাটুকারিতার বাইরে পা বাড়ানো হয়। প্রশ্ন হলো—বাংলাদেশে যদি কেউ ‘সুইডেনের আদর্শ’ বলে একটি মডেল প্রস্তাব করে, সেটি কি এই মানসিকতার মধ্যে কার্যকর হতে পারবে?

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

বাংলাদেশের বাস্তবতা হলো—
সংবাদমাধ্যমের মালিকানা: অধিকাংশ বড় মিডিয়া প্রতিষ্ঠানের মালিক রাজনৈতিক বা ব্যবসায়িক স্বার্থে জড়িত।
সম্পাদকীয় স্বাধীনতার অভাব: সম্পাদকরা অনেক ক্ষেত্রে নিজেরা সেন্সরশিপ প্রয়োগ করেন, যাতে ক্ষমতাসীনদের বিরাগভাজন না হতে হয়।
রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ ও আইনি অস্ত্র: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ নানা ধারা সাংবাদিকদের ভয়ভীতি প্রদর্শনের জন্য ব্যবহৃত হয়।
পাঠকের আস্থা কমে যাওয়া: মানুষ জানে, সংবাদপত্র অনেক সময়ই ক্ষমতাবানদের হাতের কণ্ঠস্বর, জনগণের নয়।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও রাষ্ট্র কাঠামো যদি সত্যিই পুনর্গঠিত করতে হয়, তাহলে শুধু আইন নয়—মানসিকতার পরিবর্তন অপরিহার্য। আর এজন্য প্রয়োজন সুইডেনের মতো শক্তিশালী ও স্বাধীন পাবলিক সার্ভিস মিডিয়া মডেল।

সুইডেনের উদাহরণ: গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ
সুইডেনে পাবলিক সার্ভিস সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান—সুইডিশ টেলিভিশন (SVT), সুইডিশ রেডিও (SR) এবং শিক্ষামূলক রেডিও (UR)—আইন দ্বারা সুরক্ষিত, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থেকে মুক্ত এবং সরাসরি জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক। এ প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালিত হয় Radio and Television Act (2010:696) অনুযায়ী।

মূল বৈশিষ্ট্য:
আইনের সুরক্ষা: কোনো সরকারি কর্তৃপক্ষ সম্প্রচারের কনটেন্টে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না—এটি আইনে স্পষ্টভাবে বলা আছে।
আর্থিক স্বাধীনতা: ২০১৯ সাল থেকে কর-ভিত্তিক পাবলিক সার্ভিস ফি চালু হয়েছে, যা Förvaltningsstiftelsen för SR, SVT och UR নামের একটি স্বাধীন ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
নিরপেক্ষতা ও বৈচিত্র্য: সংখ্যালঘু ভাষা, প্রতিবন্ধীদের জন্য কনটেন্ট, শিশু-কিশোরদের জন্য শিক্ষা ও সংস্কৃতি ভিত্তিক অনুষ্ঠান ইত্যাদি তাদের কাজের অংশ।

জনগণের জবাবদিহি ব্যবস্থা:
১. অভিযোগ দাখিল: যে কেউ সুইডিশ প্রেস ও ব্রডকাস্টিং অথরিটি (MPRT)-তে অভিযোগ করতে পারে।
২. সরাসরি মতামত প্রদান: SVT, SR, UR-এর ওয়েবসাইটে অভিযোগ ও প্রতিক্রিয়া জানানোর সুযোগ রয়েছে।
৩. বার্ষিক প্রতিবেদন: কর্মদক্ষতা ও দায়িত্বপালনের অগ্রগতি সংসদে প্রকাশ ও জনগণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।
৪. সংসদীয় শুনানি: খোলামেলা আলোচনায় জনগণের মতামত গুরুত্ব পায়, কিন্তু কনটেন্টে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হয় না।

বাংলাদেশের জন্য শিক্ষা
যদি বাংলাদেশে সুইডেনের মতো একটি মডেল গড়ে তোলা যায়, তবে—
•সাংবাদিকরা সরকারের ভয় ছাড়াই কাজ করতে পারবেন।
•জনগণের আস্থা ফিরবে।
•গুজব, প্রোপাগান্ডা ও বাণিজ্যিক চাপ কমে যাবে।
•সংখ্যালঘু ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কণ্ঠস্বর শোনা যাবে।

কিন্তু এই মডেল কার্যকর করতে হলে শুধু আইন নকল করলেই চলবে না—প্রথমে সাংবাদিকতা থেকে চামচামি ও আত্মসমর্পণ দূর করতে হবে। গণমাধ্যমকে জনগণের জন্য, জনগণের হাতে ফিরিয়ে দিতে হবে।

বাস্তবতার কঠিন মুখোমুখি
একটি সুন্দর উদাহরণ দেখানো সহজ, কিন্তু বাস্তবে তা প্রয়োগের জন্য দরকার একটি শক্ত ভিত্তি। সুইডেনের বর্তমান গণতান্ত্রিক কাঠামো গড়ে উঠেছে—
•মজবুত অর্থনীতি
•উচ্চমানের শিক্ষা ব্যবস্থা
•সামাজিক নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক
•সীমিত জনসংখ্যা ও কার্যকর প্রশাসনিক কাঠামো
•উচ্চ নৈতিক মূল্যবোধ (Moral Values)
এবং—সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—রাজকীয় প্রথা ভেঙে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রূপান্তরের দীর্ঘ রাজনৈতিক যাত্রা।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এর মানে দাঁড়ায়—দুর্নীতি, অনিয়ম, পারিবারিক একচ্ছত্র শাসন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরুদ্ধে লড়াই ছাড়া সুইডেনের মডেল শুধু কাগজে থাকবে, বাস্তবে নয়। তাই গণমাধ্যম সংস্কারের পাশাপাশি গোটা রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার ইনার ইঞ্জিনিয়ারিং—অর্থাৎ জনগণের মধ্যে নৈতিকতা, জবাবদিহি ও সচেতনতার সংস্কার—শুরু করতে হবে।

স্বচ্ছ গণতন্ত্র কেবল আইনের মাধ্যমে নয়, বরং জনগণের মানসিকতা ও অংশগ্রহণের মাধ্যমেই প্রতিষ্ঠিত হয়-এই সাহসী কথাটি আমি বলতে পারলাম শুধু এই জন্যই, আমি দীর্ঘ চল্লিশ বছর ধরে সুইডেনে বেস্ট প্র্যাকটিস করছি এসবের ওপরে।

রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন। Rahman.Mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

মত দ্বিমত

চরকায় তেল ঢালুন, ভণ্ডদের বাজার শূন্য করুন

Published

on

ব্লক

সবাই আমরা সোনার বাংলাকে ভালোবাসি—এই কথা শুনলে গর্ব হয়। কিন্তু প্রশ্ন হলো—আমরা কি সত্যিই সেই ভালোবাসার মর্ম বুঝি? ভালোবাসা তো শুধু মুখের বুলি নয়; সেটি অনুভব করতে হয়, কাজে প্রকাশ করতে হয়। ভালোবাসার প্রকৃত অর্থ হলো দেশের উন্নতি, মানুষের কল্যাণ, ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা, আর সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা। কিন্তু আজকের বাস্তবতায় আমরা কি এসবের জন্য কিছু করছি? নাকি ভালোবাসার নাম করে দেশকে ভাগাভাগি করছি, বিদ্বেষ ছড়াচ্ছি, আর ব্যক্তিগত স্বার্থের পেছনে ছুটছি?

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

আমরা দেশকে ভালোবাসি বলি, কিন্তু নিজের জীবনযাপন, আচরণ, সিদ্ধান্ত—সবকিছু দিয়ে কি সেই ভালোবাসাকে সম্মান দিচ্ছি? নাকি দেশকে শুধু একটা ভৌগোলিক ঠিকানা ভাবছি, যেখানে টাকা রোজগার হয়, সুবিধা পাওয়া যায়, আর অন্যায়ের প্রতি চুপ থাকা যায়?

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

ভালোবাসা মানে শুধু আবেগ নয়—এটি দায়িত্ব। দায়িত্ব নিজের দেশকে ভালোবাসতে, তার উন্নয়নে কাজ করতে, অবিচার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়াতে। আজ আমাদের অভাব নেই ভালোবাসার; আমাদের অভাব ভালোবাসার প্রমাণের।

AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

তাহলে দেখা যাক, কোন কোন কুকর্ম সোনার বাংলাকে ভালোবাসার সাথে কোনোভাবেই মিলতে পারে না—
দুর্নীতি: জনগণের ঘামঝরা টাকায় হাত চালানো, দায়িত্বের দরজা বন্ধ করে ব্যক্তিগত ভান্ডার ভরাট করা।
সন্ত্রাসবাদ: ভয় আর আতঙ্কের ছায়া ফেলে জনজীবনকে জিম্মি করা।
চাঁদাবাজি: শ্রমজীবী মানুষের রক্ত চুষে নেওয়া।
কাজে ফাঁকি: কর্তব্য ফেলে দায়িত্বের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেওয়া।
গুজব ছড়ানো: মিথ্যার আগুন জ্বালিয়ে ঘৃণার বাতাস বইয়ে দেওয়া।
মিথ্যাচার: সত্যকে হত্যা করে অবিশ্বাসের রাজত্ব কায়েম করা।
গরিবের হক চুরি: অভাবীর অন্ন কেড়ে নিয়ে তৃপ্তির হাসি হাসা।
স্বার্থপরতা: দেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে ব্যক্তিগত এজেন্ডার পূজা করা।
বিভাজন সৃষ্টিকারী রাজনীতি: মানুষকে মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ভ্রাতৃত্বকে বিষিয়ে দেওয়া।
অযোগ্য নেতৃত্ব: উন্নয়নকে অবরুদ্ধ করে দেশের স্বপ্নকে শ্বাসরুদ্ধ করা।

এখন প্রশ্ন—যে রাজনীতিবিদ বুকে হাত দিয়ে গর্জে বলে “আমি সোনার বাংলাদেশকে ভালোবাসি”, অথচ তার কর্মকাণ্ড এই কুকর্মের তালিকায় পাওয়া যায়—তার ভালোবাসা কি সত্যি? নাকি সুপরিকল্পিত প্রতারণা?

দেশপ্রেম কোনো অনুষ্ঠানমুখী প্রদর্শনী নয়—না জাতীয় সঙ্গীতের সুরে দাঁড়িয়ে থাকা, না শহীদ মিনারে খালি পায়ে যাওয়া, না স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে ছবি তোলা। আসল দেশপ্রেম শুরু হয় পরিবার থেকে, দায়িত্ব থেকে, বিবেক থেকে। আপনি যদি ঘরের মানুষকে মর্যাদা দেন, অন্যের অধিকারকে শ্রদ্ধা করেন, সততা দিয়ে জীবিকা অর্জন করেন—তাহলেই দেশের হৃদস্পন্দনে ভালোবাসা ঢেলে দিচ্ছেন। নিজের চর্কায় তেল দিলে গোটা দেশের চাকা সচল থাকে—আর তাতেই বেঁচে ওঠে সোনার বাংলার স্বপ্ন। কিন্তু সেই স্বপ্ন জাগাতে হলে প্রথমে আমাদের মুক্ত করতে হবে দেশকে সেই সুবর্ণ ডাকাতদের হাত থেকে—যারা ক্ষমতায় উঠে জনগণের কাঁধে পা দিয়েছে, কিন্তু সেই কাঁধের হাড় ভেঙে দিয়েছে। আজ যারা দেশকে “মা” বলে ডাকে, তারাই মায়ের গলার হার, কানের দুল, এমনকি খোঁপার ফুলও চুরি করে নেয়।

তাদের দেশপ্রেমের মাপ হয় বিদেশি ব্যাংকে ডলারের অঙ্ক দিয়ে, আর জনগণের ভালোবাসা মাপে আগেই ভরা ভোটের বাক্স দিয়ে। তারা ভাবে দলীয় পতাকা উঁচিয়ে রাখলেই দায়িত্ব শেষ—কিন্তু দেশপ্রেম মানে নীরব আত্মত্যাগ, সততা ও দায়বদ্ধতা।

যেদিন আমরা সবাই মিলে নিজেদের চর্কায় তেল ঢালতে শুরু করব, সেদিন “দেশপ্রেমের ব্যবসায়ীরা” বুঝতে পারবে—বাজারে তাদের কোনো ক্রেতাই নেই। আর সেদিন সোনার বাংলার স্বপ্ন শুধু বাঁচবেই না—সে স্বপ্ন দাঁড়াবে এই ভণ্ড দেশপ্রেমিকদের কবরের উপর, হেসে বলবে—এবার তোমাদের বিদায়।

রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার সুইডেন। Rahman.Mridha@gmail.com

শেয়ার করুন:-
পুরো সংবাদটি পড়ুন

পুঁজিবাজারের সর্বশেষ

ব্লক ব্লক
পুঁজিবাজার2 hours ago

ব্লক মার্কেটে ১৭ কোটি টাকার লেনদেন

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্লক মার্কেটে মোট ৪১টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার আর্থিক মূল্য ১৭ কোটি...

ব্লক ব্লক
পুঁজিবাজার2 hours ago

বিআইএফসির সর্বোচ্চ দরপতন

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) শেয়ারদর পতনের শীর্ষে উঠে বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফসি)।  AdLink দ্বারা...

ব্লক ব্লক
পুঁজিবাজার2 hours ago

দর বৃদ্ধির শীর্ষে রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) শেয়ারদর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এসেছে রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য...

ব্লক ব্লক
পুঁজিবাজার3 hours ago

লেনদেনের শীর্ষে সিটি ব্যাংক

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে সিটি ব্যাংক পিএলসি। ডিএসই সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।...

ব্লক ব্লক
পুঁজিবাজার3 hours ago

সূচকের উত্থানে লেনদেন ছাড়ালো ১১৭৭ কোটি টাকা

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্যসূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন ১১৭৭ কোটি...

ব্লক ব্লক
পুঁজিবাজার5 hours ago

নির্বাচন আয়োজনের জন্য দেশ প্রস্তুত আছে: প্রধান উপদেষ্টা

এক বছরে দেশ নির্বাচন আয়োজন করার মতো যথেষ্ট প্রস্তুত এবং স্থিতিশীল অবস্থায় এসেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।...

ব্লক ব্লক
পুঁজিবাজার5 hours ago

পদ্মা ইসলামী লাইফের পর্ষদ সভার তারিখ নির্ধারণ

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড পর্ষদ সভার তারিখ ঘোষণা করেছে। আগামী ২৭ আগস্ট বিকাল ২টা ৩০ মিনিটে...

Advertisement
AdLink দ্বারা বিজ্ঞাপন ×

সোশ্যাল মিডিয়া

তারিখ অনুযায়ী সংবাদ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০
৩১  
ব্লক
আন্তর্জাতিক51 minutes ago

সৌদিতে এক সপ্তাহে ২২ হাজারের বেশি প্রবাসী গ্রেপ্তার

ব্লক
ধর্ম ও জীবন1 hour ago

ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপনে বর্ণাঢ্য জাতীয় কর্মসূচি

ব্লক
পুঁজিবাজার2 hours ago

ব্লক মার্কেটে ১৭ কোটি টাকার লেনদেন

ব্লক
পুঁজিবাজার2 hours ago

বিআইএফসির সর্বোচ্চ দরপতন

ব্লক
পুঁজিবাজার2 hours ago

দর বৃদ্ধির শীর্ষে রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স

ব্লক
পুঁজিবাজার3 hours ago

লেনদেনের শীর্ষে সিটি ব্যাংক

ব্লক
পুঁজিবাজার3 hours ago

সূচকের উত্থানে লেনদেন ছাড়ালো ১১৭৭ কোটি টাকা

ব্লক
রাজনীতি3 hours ago

‘মবের শিকার’ হয়েছেন দাবি করে দোয়া চাইলেন ফজলুর রহমান

ব্লক
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার4 hours ago

ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইলেন উমামা ফাতেমা

ব্লক
রাজনীতি5 hours ago

উপদেষ্টা হোক আর রাজনীতিবিদ, কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না: সারজিস

ব্লক
আন্তর্জাতিক51 minutes ago

সৌদিতে এক সপ্তাহে ২২ হাজারের বেশি প্রবাসী গ্রেপ্তার

ব্লক
ধর্ম ও জীবন1 hour ago

ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপনে বর্ণাঢ্য জাতীয় কর্মসূচি

ব্লক
পুঁজিবাজার2 hours ago

ব্লক মার্কেটে ১৭ কোটি টাকার লেনদেন

ব্লক
পুঁজিবাজার2 hours ago

বিআইএফসির সর্বোচ্চ দরপতন

ব্লক
পুঁজিবাজার2 hours ago

দর বৃদ্ধির শীর্ষে রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স

ব্লক
পুঁজিবাজার3 hours ago

লেনদেনের শীর্ষে সিটি ব্যাংক

ব্লক
পুঁজিবাজার3 hours ago

সূচকের উত্থানে লেনদেন ছাড়ালো ১১৭৭ কোটি টাকা

ব্লক
রাজনীতি3 hours ago

‘মবের শিকার’ হয়েছেন দাবি করে দোয়া চাইলেন ফজলুর রহমান

ব্লক
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার4 hours ago

ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইলেন উমামা ফাতেমা

ব্লক
রাজনীতি5 hours ago

উপদেষ্টা হোক আর রাজনীতিবিদ, কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না: সারজিস

ব্লক
আন্তর্জাতিক51 minutes ago

সৌদিতে এক সপ্তাহে ২২ হাজারের বেশি প্রবাসী গ্রেপ্তার

ব্লক
ধর্ম ও জীবন1 hour ago

ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপনে বর্ণাঢ্য জাতীয় কর্মসূচি

ব্লক
পুঁজিবাজার2 hours ago

ব্লক মার্কেটে ১৭ কোটি টাকার লেনদেন

ব্লক
পুঁজিবাজার2 hours ago

বিআইএফসির সর্বোচ্চ দরপতন

ব্লক
পুঁজিবাজার2 hours ago

দর বৃদ্ধির শীর্ষে রিপাবলিক ইন্স্যুরেন্স

ব্লক
পুঁজিবাজার3 hours ago

লেনদেনের শীর্ষে সিটি ব্যাংক

ব্লক
পুঁজিবাজার3 hours ago

সূচকের উত্থানে লেনদেন ছাড়ালো ১১৭৭ কোটি টাকা

ব্লক
রাজনীতি3 hours ago

‘মবের শিকার’ হয়েছেন দাবি করে দোয়া চাইলেন ফজলুর রহমান

ব্লক
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার4 hours ago

ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাইলেন উমামা ফাতেমা

ব্লক
রাজনীতি5 hours ago

উপদেষ্টা হোক আর রাজনীতিবিদ, কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না: সারজিস