ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে ইবি শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

মাগুরার শিশু আছিয়াসহ সকল ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর, নতুন আইন প্রণয়ন এবং দ্রুত তদন্ত রিপোর্ট প্রদান ও শাস্তির বিধান নিশ্চিত করতে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।
আজ রবিবার (৯ মার্চ) বেলা ১২টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকের সামনে মহাসড়ক অবরোধ করে প্রায় আধাঘণ্টা বিক্ষোভ সমাবেশ করে তারা।
এসময় শিক্ষার্থীদের ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকের ঠাঁই নাই; তুমি কে আমি কে, আছিয়া আছিয়া; দড়ি লাগলে দড়ি নে, ধর্ষকদের ফাঁসি দে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক সাদীয়া মাহমুদ মীম বলেন, যখন রুম থেকে বের হচ্ছিলাম তখন কাউন্টিং করছিলাম যে এরপরে কি আমি ধর্ষিতা হতে চলেছি? এমন চিন্তা সবসময় তাড়া করে বেড়ায় আমাদের। আমরা চাই ধর্ষকের শাস্তি জনসমক্ষে করতে হবে। সকল ধর্ষককে শাস্তির ভয়াবহতা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে হবে। একজন শিশুর উপর যখন পাশবিক নির্যাতন হয় তখন আপনাদের মনুষ্যত্ব কোথায় থাকে? বাসায় কি আপনাদের মা বোন নাই?
শাখা সহ-সমন্বয়ক নাহিদ হাসান বলেন, বাংলাদেশে যে হারে পৈশাচিকভাবে ধর্ষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে স্বাভাবিক মৃত্যুদণ্ড দিলে এদেশে ধর্ষণ কমবে না। আপনারা ধর্ষক যেখানে পাবেন সেখানে মব সৃষ্টি করুন।ধর্ষককে জায়গায় মেরে ফেলুন। তাহলেই বাংলাদেশ থেকে ধর্ষণকে রোধ করা সম্ভব হবে। যদি চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে মাগুরার আছিয়ার ঘটনায় জড়িতদের বিচার না করা হয় আমরা এই রাস্তা আবারও বন্ধ করে দিবো।
ইবি সমন্বয়ক এসএম সুইট বলেন, ধর্ষকের শাস্তি নিশ্চিত না হলে কুষ্টিয়া মহাসড়ক অবরোধ করে আগামী দিনের আন্দোলন চালিয়ে যেতে চাই। যদি অন্যান্য অপরাধের শাস্তি কমানো বা মওকুফ করা গেলেও ধর্ষকের শাস্তি কমানোর কোনো সুযোগ নাই। নারী আমাদের মায়ের জাত। যে সকল মানুষ নারীদের দিকে ধর্ষকের চোখে তাকাবে ছাত্র সমাজের উচিত তাদের চোখ তুলে নেয়া। জুলাই বিল্পবের পর আমরা এখনো স্বাধীনতার স্বাদ পায়নি কারণ সারাদেশে ধর্ষণসহ নানা ধরনের অপতৎপরতা চলছে। সারাদেশে যেভাবে ধর্ষণের বিরুদ্ধে গণ-আন্দোলন শুরু হতে যাচ্ছে তাতে অন্তবর্তীকালীন সরকার ধর্ষণের শাস্তি নিশ্চিত করতে বাধ্য হবে।
অর্থসংবাদ/সাকিব/এসএম

ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এএসএম আমানুল্লাহ এক সংবাদ সম্মেলনে এ ফলাফল ঘোষণা করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটিভ ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভাইস চ্যান্সেলর জানান, ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৫ লাখ ৬০ হাজার ৫৯৫ জন। এরমধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে চার লাখ ৬০ হাজার ৭০৬ জন। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৩৩.২৮ ভাগ পরীক্ষার্থী পঞ্চাশের ওপর নম্বর পেয়েছে। আর ৬৬.৭২ ভাগ শিক্ষার্থী পঞ্চাশের নিচে নম্বর পেয়েছে।
তিনি জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ৪ লাখ ৪০ হাজার আসন রয়েছে। এদের মধ্যে যারা অনার্সে ভর্তি হতে পারবে না তারা পাস কোর্স, কারিগরি এবং অন্যান্য শাখায় ভর্তি হতে পারবে।
উপাচার্য আরও বলেন, আগে শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই অনার্সে ভর্তি করা হত। যাতে অনেকেই বলত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষার ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হয়ে যায়। এখন থেকে আর কেউ বলতে পারবে না যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। দশ বছর পর এই শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভাইস চ্যান্সেলর, ট্রেজার, রেজিস্ট্রার, বিভিন্ন বিভাগের ডিনসহ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ফল জানা যাবে যেভাবে
শিক্ষার্থীরা দুইভাবে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল জানতে পারবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে লগইন করে এবং মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে ফল জানা যাবে।
ওয়েবসাইটে ফল দেখার নিয়ম
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে ফলাফল দেখা যাবে। ফলাফল দেখার ধাপসমূহ প্রথমে Admission result 2025 ওয়েবসাইটে যেতে হবে। পরে সাইনইন পৃষ্ঠায় নিজ পিন নম্বর ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে হবে।
লগইন করার পর ড্যাশবোর্ডে ‘ফলাফল’ অপশনটি নির্বাচন করতে হবে। সেখানে ফলাফল দেখা যাবে। এছাড়া ফলাফল শিটটি ডাউনলোড বা প্রিন্ট করা যাবে।
মোবাইল ফোনে এসএমএসে ফল
মোবাইল ফোনে এসএমএস পাঠালেও ফিরতি বার্তায় ফল জানিয়ে দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে NUAT লিখে স্পেস দিয়ে রোল নম্বর লিখে 16222 নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসে ফল জানা যাবে।
গত ৩১ মে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত দেশের ৬৪ জেলা শহরে ৮৭৯টি কেন্দ্রে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন ৫ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি ভর্তিচ্ছু।
জানা যায়, ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হতো। ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে প্রথমবারের মতো এসএসসি ও এইচএসসির জিপিএর ভিত্তিতে অধিভুক্ত কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি শুরু করে। আট বছর পর তাতে আবারও পরিবর্তন আনা হলো। এবার ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি নেওয়া হচ্ছে।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
একসঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন তিন বোন

টাঙ্গাইলের সখীপুরে একসঙ্গে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন তিনবোন। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) শুরু হওয়া পরীক্ষায় তারা উপজেলার সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে অংশ নিয়েছেন। উপজেলার সখীপুর সরকারি কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা হচ্ছে তাদের।
একসঙ্গে পরীক্ষা দেওয়া তিনবোন হলেন, সখীপুর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শফিকুল ইসলামের বড় মেয়ে সুমাইয়া ইসলাম (১৯), মেজো মেয়ে সাদিয়া ইসলাম (১৮) ও ছোট মেয়ে রাদিয়া ইসলাম (১৭)। তাদের একসঙ্গে পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়টি এলাকায় আলোচনার সৃষ্টি করেছে।
জানা গেছে, বাবা শফিকুল ইসলাম সৌদি আরব প্রবাসী হওয়ায় সেখানেই তিন বোনের জন্ম। এরপর ২০১০ সালে সৌদি আরবের মক্কায় ব্যবসা বাদ দিয়ে পরিবার নিয়ে দেশে চলে আসেন।
শফিকুল ইসলাম বলেন, বিগত পরীক্ষায় মেয়েদের ফলাফলে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আশা করি এবার এইচএসসি পরীক্ষায়ও ভালো ফলাফল করবে। তারা উচ্চশিক্ষা লাভে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে বলে মনে করি।
পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ওই তিন বোন বলেন, বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করাই হচ্ছে প্রধান লক্ষ্য। আমরা উচ্চ শিক্ষালাভ করে প্রতিষ্ঠিত হয়ে নিজেদের পাশাপাশি সমাজ ও দেশের কল্যাণে ভূমিকা রাখতে চাই।
সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ এম এ রউফ বলেন, ওই তিন বোন মেধাবী শিক্ষার্থী। এর আগে তারা প্রাথমিক সমাপনী, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করেছে। এবারের পরীক্ষায়ও তারা কৃতিত্বের ধারাবাহিকতার স্বাক্ষর রাখবে বলে আশা করি।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এইচএসসি পরীক্ষা, ফল হবে দ্রুত: শিক্ষা উপদেষ্টা

সারাদেশে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার। একইসঙ্গে ফল প্রকাশে বিলম্ব যেন না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকালে রাজধানীর ভাসানটেক সরকারি কলেজ ও সরকারি বাঙলা কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
উপদেষ্টা বলেন, পরীক্ষার প্রথম দিন থেকেই কেন্দ্রগুলোতে সুষ্ঠু পরিবেশ বিরাজ করছে। পরীক্ষার্থীরা সময়মতো কেন্দ্রে পৌঁছেছে এবং নির্ধারিত নিয়মে পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, শিক্ষা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় একটি সুশৃঙ্খল পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার প্রশ্নফাঁসের গুজব ঠেকাতে এবং নকলমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো সমস্যার কথা শোনা যায়নি।
এসময় সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের অধ্যক্ষ, কেন্দ্র সচিব, কক্ষ পরিদর্শক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে সারাদেশে একযোগে শুরু হয়েছে ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা। লিখিত পরীক্ষা চলবে ১০ আগস্ট পর্যন্ত। এবারের পরীক্ষায় বসেছেন ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন শিক্ষার্থী।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
এইচএসসি পরীক্ষা শুরু আজ, পরীক্ষার্থী সাড়ে ১২ লাখ

সারাদেশে আজ থেকে একযোগে শুরু হচ্ছে ২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকাল ১০টায় বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে এই বছরের পরীক্ষা, যা চলবে ১০ আগস্ট পর্যন্ত। এরপর শুরু হবে ব্যবহারিক পরীক্ষা।
এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন মোট ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে সাধারণ ৯টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে রয়েছেন ১০ লাখ ৫৫ হাজারের বেশি পরীক্ষার্থী। এছাড়া আলিম পরীক্ষার্থী প্রায় ৮৬ হাজার এবং কারিগরি বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৯ হাজার। এ বছর দেশের ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এসব পরীক্ষা।
শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের তুলনায় এবার পরীক্ষার্থী কমেছে ৮১ হাজার ৮৮২ জন। ২০২৪ সালে পরীক্ষার্থী ছিল ১৩ লাখ ৩২ হাজার ৯৯৩ জন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পরীক্ষা সুষ্ঠু ও নকলমুক্ত রাখতে নেওয়া হয়েছে কঠোর ব্যবস্থা। প্রশ্নফাঁসের গুজব প্রতিরোধ, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং গুজব থেকে পরীক্ষার্থীদের সুরক্ষা দিতে আগামী ১৫ আগস্ট পর্যন্ত দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে গত ২৪ জুন নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
সেখানে পরীক্ষার্থীদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—পরীক্ষা শুরুর অন্তত ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে প্রবেশ, ওএমআর শিটে সঠিকভাবে তথ্য লেখা ও বৃত্ত ভরাট, উত্তরপত্র ভাঁজ না করা, শুধুমাত্র সাধারণ ক্যালকুলেটর ব্যবহার, এমসিকিউ ও সৃজনশীল পরীক্ষার মধ্যে কোনো বিরতি না থাকা এবং কেন্দ্রের ভেতরে মোবাইল ফোন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ রাখা।
এছাড়া, তত্ত্বীয়, এমসিকিউ এবং ব্যবহারিক পরীক্ষায় আলাদাভাবে উত্তীর্ণ হতে হবে। পরীক্ষার্থী শুধুমাত্র প্রবেশপত্রে উল্লেখিত বিষয়েই পরীক্ষা দিতে পারবে এবং নিজের প্রতিষ্ঠানে নয়, অন্য প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরের মাধ্যমে পরীক্ষার আসন নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিটি পরীক্ষার অংশে উপস্থিতি স্বাক্ষর বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
পরীক্ষার প্রথম দিন সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে ভাসানটেক সরকারি কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। এরপর তিনি সরকারি বাংলা কলেজ কেন্দ্রও পরিদর্শন করবেন।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা পরিচালনার দিকেও জোর দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশের সময় পরীক্ষার্থী, কক্ষ পরিদর্শক ও সংশ্লিষ্টদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারের নির্দেশনাও রয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পরীক্ষার সময় বিদ্যুৎ বিভ্রাট এড়াতে স্থানীয় বিদ্যুৎ অফিসকে আগেভাগেই প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। পরীক্ষাকেন্দ্রে শুধুমাত্র এনালগ কাঁটাযুক্ত ঘড়ি ব্যবহারের অনুমতি থাকবে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সমন্বয়ক খন্দকার এহসানুল কবির জানিয়েছেন, সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসন পুরো সময়জুড়ে সতর্ক থাকবে।
তিনি আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও বাড়তি নজরদারি থাকবে। পরীক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়—এমন কোনো তৎপরতা কঠোরভাবে দমন করা হবে।
প্রসঙ্গত, বোর্ডের প্রকাশিত রুটিন অনুযায়ী চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা ২৬ জুন শুরু হয়ে চলবে ১০ আগস্ট পর্যন্ত। আর ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১১ থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
এইচএসসি পরীক্ষা শুরু আগামীকাল, অংশ নিচ্ছে সাড়ে ১২ লাখ শিক্ষার্থী

চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন)। সকাল ১০টায় বাংলা প্রথম পত্রের মাধ্যমে শুরু হবে লিখিত পরীক্ষা, যা চলবে ১০ আগস্ট পর্যন্ত। এরপর শুরু হবে ব্যবহারিক পরীক্ষা।
এবার সারা দেশে মোট ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে সাধারণ ৯টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১০ লাখ ৫৫ হাজারের বেশি, আলিম পরীক্ষার্থী ৮৬ হাজারের বেশি এবং কারিগরি বোর্ডের অধীন পরীক্ষার্থী ১ লাখ ৯ হাজারের বেশি। দেশের ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে এসব পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
জানা গেছে, গত বছরের তুলনায় এ বছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ৮১ হাজার ৮৮২ জন। ২০২৪ সালে মোট ১৩ লাখ ৩২ হাজার ৯৯৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিল।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এবারও পরীক্ষা সুষ্ঠু, নিরাপদ ও নকলমুক্ত রাখতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রশ্নফাঁসের গুজব প্রতিরোধ, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং গুজব থেকে পরীক্ষার্থীদের সুরক্ষা দিতে দেশের সব কোচিং সেন্টার আগামী ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা মঙ্গলবার (২৪ জুন) জারি করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।
এ বছর পরীক্ষার্থীদের জন্য ১০টি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা বোর্ড। এর মধ্যে রয়েছে– পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে উপস্থিত থাকা, ওএমআর শিটে সঠিকভাবে তথ্য লেখা ও বৃত্ত ভরাট, উত্তরপত্র ভাঁজ না করা, শুধু সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা এবং বহুনির্বাচনি ও সৃজনশীল পরীক্ষার মধ্যে কোনো বিরতি না থাকা, পরীক্ষার কেন্দ্রে কোনো অবস্থাতেই মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না, তত্ত্বীয়, এমসিকিউ এবং ব্যবহারিক পরীক্ষায় পৃথকভাবে পাস করতে হবে। এ ছাড়া পরীক্ষার্থী শুধু প্রবেশপত্রে উল্লিখিত বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে এবং স্থানান্তরের মাধ্যমে আসনবিন্যাস করা হয়েছে, অর্থাৎ নিজ প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা নেওয়া হবে না। প্রতিটি অংশের উপস্থিতি পত্রে পরীক্ষার্থীদের স্বাক্ষর দেওয়া বাধ্যতামূলক।
এদিকে, ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ৩৩ দফা নির্দেশনা জারি করেছে, যাতে পরীক্ষা শৃঙ্খলাপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়। এসব নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রতি ২০ জন পরীক্ষার্থীর জন্য একজন কক্ষ পরিদর্শক রাখার পাশাপাশি তিন ফুট দূরত্বে বসার ব্যবস্থা করতে হবে। পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে তিন দিন আগে সংশ্লিষ্ট ট্রেজারি থেকে প্রশ্নপত্র যাচাই করে খামে সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছে। পরীক্ষা শুরুর দিন সকালে নির্ধারিত সেট অনুযায়ী খাম খোলা যাবে এবং অব্যবহৃত সেট ফেরত পাঠাতে হবে। প্রশ্নপত্র আনার সময় থানার ট্যাগ অফিসার ও পুলিশের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
পরীক্ষাকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রের বাইরে জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ, প্রয়োজনে মাইক ব্যবহার করে সচেতনতা তৈরি, সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং প্রতিটি কেন্দ্রে নকল প্রতিরোধ পোস্টার টানানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পরীক্ষার সময় কেন্দ্রে শুধু এনালগ কাঁটাযুক্ত ঘড়ি ব্যবহারের অনুমতি থাকবে। এ ছাড়া বর্ষাকালে বিদ্যুৎ বিভ্রাট এড়াতে সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ অফিসকে আগেভাগে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ক খন্দকার এহসানুল কবির জানিয়েছেন, এবারের এইচএসসি পরীক্ষার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। পরীক্ষার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্ক থাকবে।
স্বাস্থ্যবিধির দিকটিও উপেক্ষিত হয়নি। শিক্ষা বোর্ড জানিয়েছে, কেন্দ্রে প্রবেশের সময় পরীক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবার মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে।
২০২৪ সালের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার সরকারের কঠোর নজরদারি ও প্রস্তুতি আরও জোরালো করা হয়েছে। অতীতের মতো যেন কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকেও সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বাড়তি মনিটরিং চালানো হবে বলে জানা গেছে।