অর্থনীতি
বিসিএমইএ’র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হলেন মামুনুর রশীদ

বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমইএ) ২০২৫ ও ২০২৬ দ্বি-বার্ষিক মেয়াদের নির্বাচনে মো. মামুনুর রশীদ (এফসিএমএ) সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন।
বর্তমানে মামুন এক্স-ইনডেক্স কোম্পানীজের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি আইসিএমএবি’র প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট।
সোমবার (৩ মার্চ) নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন ১২ সদস্য বিশিষ্ট নবনির্বাচিত পূর্ণাঙ্গ পরিচালনা পর্ষদের নাম ঘোষণা করেন। এ সময় নির্বাচন কমিশনের সদস্য মোরশেদ আলম ও ইমরান আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
পুঁজিবাজারে আস্থা ফেরানোর উদ্যোগ নিন: পলি

পুঁজিবাজারের ওপর আস্থা ফেরাতে উদ্যোগ গ্রহণে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রংপুর উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আনোয়ারা ফেরদৌসী পলি।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাজধানীর একটি হোটেলে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এফবিসিসিআইয়ের পরামর্শক কমিটির ৪৫তম সভায় এই আহ্বান জানান তিনি।
আনোয়ারা ফেরদৌসী পলি বলেন, উদ্যোক্তাদের যাতে মূলধন সংগ্রহের জন্য শুধু ব্যাংকিং ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করতে না হয়, সে জন্য পুঁজিবাজারের ওপর আস্থা ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় নীতি-সহায়তা দিন। এ বিষয়ে প্রস্তাব রাখছি।
তিনি আরো বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে এবং প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে হলে সুদের হার স্থিতিশীল রাখতে হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে বড়পতন

বিশ্ববাজারে সোনার দামে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বড় উত্থানের পর বড় দরপতন দেখা যাচ্ছে। হু হু করে দাম বেড়ে গত ২২ এপ্রিল বিশ্ববাজারে প্রথমবার প্রতি আউন্স সোনার দাম ৩ হাজার ৪৯৪ ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করে। সর্বোচ্চ দামের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়। এই বড় উত্থানের পর এখন সোনার বড় দরপতন দেখা যাচ্ছে। গত ৯ দিনে প্রতি আউন্স সোনার দাম প্রায় ৩০০ ডলার কমে গেছে।
ট্রাম্প প্রতিটি দেশের জন্য পৃথক শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেবেন এমন আশঙ্কায় কয়েক দফায় বিশ্ববাজারে সোনার দাম বেড়ে মার্চের শেষের দিকে প্রথমবার প্রতি আউন্স সোনার দাম ৩ হাজার ১৫০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। তবে ট্রাম্প শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিলে সোনার দামে বড় পতন হয়।
এরপর চীন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করলে যুক্তরাষ্ট্র চীনের ওপর শুল্ক আরও বাড়ায়। দুই দেশের এই শুল্ক যুদ্ধের মধ্যে আবারও হু হু করে বাড়ে সোনার দাম। ১১ এপ্রিল প্রথমবার প্রতি আউন্স সোনার দাম ৩ হাজার ২০০ ডলারের স্পর্শ করে। অবশ্য এখানেই থেমে থাকেনি সোনার দাম বাড়ার প্রবণতা। দফায় দফায় দাম বেড়ে ২২ এপ্রিল প্রতি আউন্স সোনার দাম ৩ হাজার ৪৯৪ ডলারে উঠে যায়। এটাই বিশ্ববাজারে এখনো পর্যন্ত সোনার সর্বোচ্চ দাম।
এই রেকর্ড দাম হওয়ার পরই পতনের মধ্যে পড়ে সোনা। একদিনের মধ্যে প্রতি আউন্স সোনার দাম ২০০ ডলার পর্যন্ত কমে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। এরপর কয়েক দফা সোনার দাম বাড়ার ইঙ্গিত দিলেও শেষ পর্যন্ত পতন প্রবণতায় দেখা যায়। ২২ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া সোনার দাম কমার প্রবণতা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
এ প্রতিবেদন লেখার সময় (বাংলাদেশ সময় ১ মে, বিকেল ৬টা) প্রতি আউন্স সোনার দাম দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২০৭ ডলার। এতে আজই প্রতি আউন্স সোনার দাম ৬৫ ডলার কমে গেছে। আর ২২ এপ্রিলের রেকর্ড দামের সঙ্গে তুলনা করলে ৯ দিনের ব্যবধানে প্রতি আউন্স সোনার দাম কমেছে ২৯০ ডলার।
এদিকে বিশ্ববাজারে সোনার দামে অস্থিরতা দেখা দেওয়ায় সম্প্রতি দেশের বাজারেও কয়েক দফায় সোনার দাম বাড়ানো এবং কমানোর ঘটনা ঘটেছে। দেশের বাজারে সোনার সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণের ১৬ ঘণ্টার পর ২৩ এপ্রিল দেশের বাজারে সোনার দাম কিছুটা কমানো হয়।
বাজুসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২৩ এপ্রিল বিকেল ৪টা ১৫ মিনিট থেকে সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ৫ হাজার ৩৪২ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৭২ হাজার ৫৪৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ৫ হাজার ১০৯ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৬৯৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ৪ হাজার ৩৭৪ টাকা কমিয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৪১ হাজার ১৬৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ৩ হাজার ৭৩২ টাকা কমিয়ে দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ১৬ হাজার ৭৮০ টাকা। বর্তমানে দেশের বাজারে এই দামেই সোনা বিক্রি হচ্ছে।
এর আগে ২২ এপ্রিল ঘোষণা দিয়ে ২৩ এপ্রিল থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনায় ৫ হাজার ৩৪২ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৮৮ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ৫ হাজার ১০৯ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৮০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনায় ৪ হাজার ৩৭৪ টাকা বাড়িয়ে নতুন দাম ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনায় ৩ হাজার ৭৩২ টাকা বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ২০ হাজার ৫১২ টাকা। এটি এখনো পর্যন্ত দেশের বাজারে সোনার সর্বোচ্চ দাম। শুধু ২৩ এপ্রিল সকাল থেকে বিকাল ৪টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত এই দামে সোনা বিক্রি হয়েছে।
এদিকে দেশের বাজার সর্বশেষ সোনার দাম নির্ধারণের পর বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ১০০ ডলারের ওপরে কমে গেছে। ফলে দেশের বাজারে যে কোনো সময় আবারও সোনার দাম কমতে পারে।
এবিষয়ে বাজুসের এক সদস্য বলেন, সোনার দাম এখন অনুমান করা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। বৈশ্বিক অস্থিরতার কারণে সোনার দাম হুট হাট বাড়ছে এবং কমছে। সোনার দামে এতো অস্থিরতা সাধারণত দেখা যায়। ৯ দিনের মধ্যে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম তিন’শ ডলারের মতো কমে গেছে। বিশ্ববাজারে দাম কমায় দেশের বাজারেও দাম কমানো হয়েছে। তবে গত দুই দিনে প্রতি আউন্স সোনার দাম দেড়’শ ডলারের মতো কমেছে। ফলে দেশের বাজারেও যে কোনো সময় সোনার দাম কমতে পারে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বসুন্ধরার চেয়ারম্যান পরিবারের ১৪৫৮ কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ

বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ও তাঁর পরিবারের ৭ সদস্যের নামে ২২ কোম্পানিতে থাকা ৭৫ কোটি ৪৬ লাখ ৯০ হাজার ৩০২টি শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব শেয়ারের বাজারমূল্য ১ হাজার ৪৫৮ কোটি ৭৫ লাখ ৭ হাজার ৫২০ টাকা বলে দুদক জানিয়েছে।
দুদকের তথ্যমতে, ওই পরিবারের সদস্যদের ৭০টি ব্যাংক হিসাবে থাকা ১৯ কোটি ৮১ লাখ ৭৪ হাজার ২৬৬ টাকা ও ১০ হাজার ৫৩৮ মার্কিন ডলার (বর্তমান বাজারমূল্যে ১২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা) অবরুদ্ধ করারও আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন এ আদেশ দেন।
দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা মালিকানা শেয়ার এবং বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে জমা থাকা টাকা অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
দুদক জানায়, যেসব কোম্পানিতে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা শেয়ার জব্দ করার আদেশ হয়েছে সেগুলো হলো, ইস্ট ওয়েস্ট প্রপারটি ডেভেলপমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড, মেঘনা সিমেন্ট মিলস লিমিটেড, বসুন্ধরা পেপার মিলস লিমিটেড, বসুন্ধরা এলপি গ্যাস লিমিটেড, বসুন্ধরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স লিমিটেড, বসুন্ধরা স্টিল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড, বসুন্ধরা হর্টিকালচার লিমিটেড, বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, বসুন্ধরা ড্রেজিং কোম্পানি লিমিটেড, বসুন্ধরা ইমপোর্ট এক্সপোর্ট লিমিটেড, বসুন্ধরা ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেড, ক্রিস্টাল প্রপার্টিজ লিমিটেড, বসুন্ধরা মাল্টি পেপার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, বসুন্ধরা প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, বসুন্ধরা গ্লাস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ইউনাইটেড সিটি টুইন টাওয়ার ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড, টগি রিয়েল স্টেট অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড, বসুন্ধরা সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, বসুন্ধরা সিমেন্ট মিলস লিমিটেড, বসুন্ধরা সিটি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড, বসুন্ধরা টিস্যু ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ প্রাইভেট লিমিটেড।
দুদক বলেছে, ২২টি কোম্পানি ছাড়াও আরজেএসসিতে (যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর) নিবন্ধিত আরও অনেক প্রতিষ্ঠানে বসুন্ধরার স্বার্থ রয়েছে। সেখানে তারা শেয়ার হস্তান্তরের চেষ্টা করছে। এসব শেয়ার হস্তান্তর হলে দুদকের অনুসন্ধান শেষে মামলা করা, অভিযোগপত্র দাখিল ও বিচার শেষে অপরাধলব্ধ আয় থেকে অর্জিত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা যাবে না। তাই এসব সম্পদ অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে ৭০টি হিসাব পেয়েছে দুদক। আদালতে পাঠানো আবেদনে দুদক বলেছে, ১৯৯৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এসব ব্যাংক হিসাবে ২ হাজার ৭৫ কোটি ২৪ লাখ ৫৯ হাজার ৫৭ টাকা ও ১ লাখ ৯২ হাজার ৩৪ মার্কিন ডলার লেনদেন হয়েছে। বর্তমানে এসব ব্যাংক হিসাবে ১৯ কোটি ৮১ লাখ ৭৪ হাজার ২৬৬ টাকা ও ১০ হাজার ৫৩৮ মার্কিন ডলার জমা রয়েছে।
এর আগে ১৮ ফেব্রুয়ারি বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে সংযুক্ত আরব আমিরাত, স্লোভাকিয়া এবং যুক্তরাজ্যে আরও স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত। এসব সম্পদের মধ্যে রয়েছে কোম্পানির শেয়ার, ফ্ল্যাট ও ব্যবসায়িক স্থাপনা। দুদকের তথ্য মতে, আনভীরের নামে আরব আমিরাতের বুর্জ খলিফার ১১তলায় একটি দুই বেডরুমের ফ্ল্যাট আছে, যার বাজারমূল্য ১২ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
তারও আগে গত বছরের ৩ ডিসেম্বর বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানসহ তাঁর পরিবারের আট সদস্যের বিদেশে থাকা স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। দুদক আদালতকে এই আটজনের প্রায় ১৪৩ কোটি টাকার বিনিয়োগ, সম্পদ কেনা ও ব্যাংকে লেনদেনের তথ্য জানায়।
সম্পদ অবরুদ্ধ করার আবেদনে দুদক আদালতকে বলেছে, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং, সরকারি রাজস্ব ফাঁকি, ভূমি জবর দখল, ঋণ জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাৎ, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানকালে আহমেদ আকবর সোবহান, তাঁর ছেলে সায়েম সোবহান আনভীর, সাদাত সোবহান, সাফিয়াত সোবহান, সাফওয়ান সোবহান, সায়েম সোবহানের স্ত্রী সাবরিনা সোবহান, সাদাত সোবহানের স্ত্রী সোনিয়া ফেরদৌসী সোবহান এবং সাফওয়ান সোবহানের স্ত্রী ইয়াশা সোবহানের নামে ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে স্লোভাকিয়া ও সাইপ্রাসে বিপুল অর্থ বিনিয়োগের তথ্য পাওয়া গেছে। বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে বিদেশি পাসপোর্ট ও নাগরিকত্ব গ্রহণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কোনো অনুমতি না নিয়ে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করেছেন তাঁরা।
আদালতে জমা দেওয়া দুদকের আবেদনে আরও বলা হয়েছে, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা স্লোভাকিয়া, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, সুইজারল্যান্ড, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, যুক্তরাজ্য ও সিঙ্গাপুরে একাধিক কোম্পানি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করেছেন। এ ছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাতের হাবিব ব্যাংক লিমিটেডে এবং সাইপ্রাসের ইউরো ব্যাংকে তাঁদের বিপুল অর্থ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। সাইপ্রাসে বাড়ি কেনার তথ্য পাওয়া গেছে। তাঁরা বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি না নিয়ে বিদেশে এসব সম্পদ কিনেছেন। সায়েম সোবহান আনভীর ৩০ লাখ ইউরো (বর্তমান মূল্যে প্রায় ৩৮ কোটি টাকা) বিনিয়োগ করে স্লোভাকিয়ার নাগরিকত্ব নেন। তাঁর স্ত্রী ইয়াশা সোবহান ২০ লাখ ইউরো (২৫ কোটি টাকা) বিনিয়োগ করে নাগরিকত্ব নেন সাইপ্রাসের। আহমেদ আকবর সোবহান ও তাঁর স্ত্রী আফরোজা বেগম আড়াই লাখ মার্কিন ডলার (প্রায় তিন কোটি টাকা) বিনিয়োগ করে নাগরিকত্ব নেন ক্যারিবীয় অঞ্চলের দ্বীপরাষ্ট্র সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিসে।
আহমেদ আকবর সোবহানের পরিবারের আট সদস্য বিভিন্ন দেশের ১৯টি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছেন বলে আদালতকে জানিয়েছে দুদক। সংস্থাটি আরও বলেছে, সাফওয়ান সোবহান ও তাঁর স্ত্রী সোনিয়া ফেরদৌসী সোবহান সংযুক্ত আরব আমিরাতের হাবিব ব্যাংক ও সাইপ্রাসের ইউরো ব্যাংকে হিসাব খুলে অবৈধ অর্থ লেনদেন করেন।
এর আগে গত বছরের গত ২১ অক্টোবর আহমেদ আকবর সোবহানসহ তাঁর পরিবারের আট সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
প্রকৃত রিজার্ভ ২২ বিলিয়ন ডলার ছাড়ালো

বাংলাদেশ ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার মোট মজুত বা রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৪১ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৭৪১ কোটি ডলার। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী, রিজার্ভ বেড়ে হয়েছে ২২ দশমিক শূন্য ৪ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ২০৪ কোটি ডলার। আজ বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। এর আগে ২০২৩ সালের আগস্টে রিজার্ভ এখন যে রিজার্ভ আছে, এর সমান ছিল।
২০২৪ সালের ৩১ জুলাই আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সপ্তাহে মোট রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ৯২ বিলিয়ন ডলার। তখন বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। ফলে মোট রিজার্ভ ও নিট রিজার্ভ—উভয়ই বাড়ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, এর আগে ১৪ এপ্রিল রিজার্ভ বেড়ে হয় ২৬ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৬৩৯ কোটি ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী, রিজার্ভ বেড়ে হয় ২১ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ১১১ কোটি ডলার।
প্রবাসীদের পাঠানো আয় আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বাড়ছে। গত মার্চ মাসে ৩২৯ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় আসে; এক মাসের হিসাবে যেকোনো সময়ের চেয়ে এটি বেশি। আর চলতি মাসের ২৬ দিনে এসেছে ২২৭ কোটি ডলার। ফলে ব্যাংকগুলো উদ্বৃত্ত ডলার বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বিক্রি করছে। ব্যাংকগুলো থেকে ডলার কিনলে আর বিদেশি ঋণ ও অনুদান এলেই রিজার্ভ বাড়ে। এতে বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।
রিজার্ভ বৃদ্ধি পাওয়ায় বৈদেশিক লেনদেনের ওপর চাপ কমেছে। ডলারের দাম না বেড়ে ১২২ টাকায় অনেক দিন ধরে স্থির আছে। পাশাপাশি অনেক ব্যাংক এখন গ্রাহকদের চাহিদামতো ঋণপত্র খুলতে পারছে। ফলে বাজারে পণ্যের সরবরাহ ও দাম স্বাভাবিক।
২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে ডলার নিয়ে দুশ্চিন্তা শুরু হয়। ৮৫ টাকার ডলার বেড়ে ১২৮ টাকা পর্যন্ত ওঠে। সরকার পরিবর্তনের পর নানা উদ্যোগের কারণে প্রবাসী আয় বেড়েছে। পাশাপাশি ডলারের দাম বাড়ছে না। এতে বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে অনেকটা স্বস্তি ফিরেছে। ২০২২ সালের আগের পরিস্থিতিতে ফিরে গেছে অনেক ব্যাংক।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
আদানি গ্রুপের কর ফাঁকি: দুদকের অনুসন্ধানে সাবেক সচিব আহমদ কায়কাউস

ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ আমদানির চুক্তিতে শুল্ক ও কর অব্যাহতির মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) পাশ কাটিয়ে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বিতর্কিত এ চুক্তির সময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সচিবের দায়িত্বে থাকা এবং পরবর্তীতে মুখ্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ড. আহমদ কায়কাউস ও সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে প্রয়োজনীয় নথিপত্র চেয়ে চিঠি দিয়েছে দুদক।
দুদকের উপপরিচালক রেজাউল করিমের স্বাক্ষরিত চিঠিতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) কাছে চার ধরনের তথ্য চাওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের আরেক উপপরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম।
চিঠিতে বলা হয়, আদানি গ্রুপের সঙ্গে চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারকে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকি দেওয়া হয়েছে— এমন অভিযোগে ড. আহমদ কায়কাউস ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলছে। এর সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্র সরবরাহ করতে বলা হয়েছে।
চাওয়া হওয়া নথির মধ্যে রয়েছে:আদানি গ্রুপের সঙ্গে সম্পাদিত বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির সম্পূর্ণ নথির সত্যায়িত কপি। চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারি বিধিনিষেধ মেনে চলা হয়েছে কিনা, তা সংক্রান্ত নথি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম, পদবি, বর্তমান ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর।
এ বিষয়ে আগে কোনো বিভাগীয় তদন্ত হলে তার প্রতিবেদনসহ সব রেকর্ড এর আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) তাদের অনুসন্ধানে আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ আমদানিতে প্রায় ৪০ কোটি ডলারের শুল্ক ফাঁকির তথ্য উদঘাটন করে। তদন্তে উঠে আসে, বহুল আলোচিত এই চুক্তি বাস্তবায়নের সময় এনবিআরকে পাশ কাটিয়ে শুল্ক ও কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৯ মার্চ ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের গড্ডায় অবস্থিত আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হয়। এরপর থেকেই আমদানিকৃত বিদ্যুতের উপর শুল্ক ও অন্যান্য কর পরিশোধ করা হয়নি।