অর্থনীতি
প্রতিশ্রুতি-অর্থছাড় কমেছে, বেড়েছে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ

চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে উন্নয়ন সহযোগীদের থেকে ঋণের প্রতিশ্রুতি কমেছে। একইসঙ্গে কমেছে অর্থছাড়ও। তবে ঝুঁকির বিষয়- এই সময়ে সরকারের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ বেড়েছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) তথ্য অনুযায়ী, জুলাই-জানুয়ারি সময়ে উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিশ্রুতি কমেছে ৬৭ দশমিক ২ শতাংশ। অর্থছাড় কমেছে ১০ দশমিক ৪ শতাংশ। ঋণ পরিশোধে বেড়েছে ৩০ দশমিক ৩ শতাংশ বা প্রায় আড়াই বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ- ইআরডির প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি এসেছে ২ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৭ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার।
চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে উন্নয়ন সহযোগীরা ছাড় করেছে ৩ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে অর্থছাড়ের পরিমাণ ছিল ৪ দশমিক ৩৯৮ বিলিয়ন ডলার।
অন্যদিকে গত অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগীদের পরিশোধ করেছিল ১ দশমিক ৮৫৬ বিলিয়ন ডলার, যা চলতি অর্থবছরের একই সময়ে বেড়ে ২ দশমিক ৪১৮ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।
একই সময়ে আসল পরিশোধ ১ দশমিক ০৯ বিলিয়ন থেকে বেড়ে ১ দশমিক ৫৪৪ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। আর সুদ পরিশোধ ১৬০.৭ মিলিয়ন থেকে বেড়ে হয়েছে ৮৭৪ মিলিয়ন ডলার।
ইআরডি জানায়, অন্তবর্তীকালীন সরকারের মধ্যমেয়াদি ঋণ কৌশলে বৈদেশিক ঋণ কম নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ কারণে উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিশ্রুতি কমেছে। উন্নয়ন সহযোগীরা গত অর্থবছরের চেয়ে বেশি ঋণ দিতে আগ্রহ দেখালেও- এক্ষেত্রে ঋণ নেওয়ার আগ্রহ কম সরকারের। শুধুমাত্র জরুরি বাজেট সহায়তা ও কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে সরকার ঋণ নেবে। এর ফলে ঋণ চুক্তিও হচ্ছে ধীরগতিতে। এর প্রভাবে ঋণের প্রতিশ্রুতি কমেছে।
উল্লেখ্য সরকার গত অর্থবছরে সরকার উন্নয়ন সহযোগীদের আসল পরিশোধ করেছিল ৪ দশমিক ১৬৬ বিলিয়ন ডলার। আর সুদ পরিশোধ করেছিল ১ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার। উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ১০ দশমিক ৭৩৯ বিলিয়ন ডলার প্রতিশ্রুতি আদায় করেছিল।
সরকারি অর্থায়নের প্রকল্পের মতো বিদেশি ঋণের প্রকল্প বাস্তবায়নেও গতি কমেছে নতুন সরকারের সময়ে। অনেক বৈদেশিক অর্থায়নের প্রকল্পেরও ঠিকাদার চলে গেছে। অনেক প্রকল্পে পরিচালক পরিবর্তন হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে বাস্তবায়নে। আবার বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন স্থবির হয়ে গেছে বলে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমেছে। এসব কারণে বাস্তবায়ন কাজও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে উন্নয়ন প্রকল্পে বৈদেশিক অর্থছাড় কমেছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে সবচেয়ে বেশি অর্থছাড় করেছে বিশ্বব্যাংক। এই সংস্থার কাছ থেকে এসেছে ৯৪৪.৫ মিলিয়ন ডলার। এরমধ্যে ৫০০ মিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা ছিল। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭০০ মিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি এসেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের কাছ থেকে। সংস্থাটি ৬০০ মিলিয়ন ডলারের বাজেট সহায়তা ছাড় করে মোট ৭০০ মিলিয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বা ঋণ চুক্তি সই হয়েছে।
এছাড়া জাপানের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি এসেছে ২৫২.১২ মিলিয়ন ডলার, এশিয়ান ইনফ্রাস্টাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) এর কাছ থেকে এসেছে ১৬০ মিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি।
জুলাই-জানুয়ারি সময়ে সবচেয়ে বেশি অর্থছাড় করে এডিবি, যা পরিমাণ ১.০৯ বিলিয়ন ডলার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮৬৭.৬৪ মিলিয়ন ডলার অর্থছাড় করে বিশ্বব্যাংক। এছাড়া জাপান ৬৯৬.৩২, রাশিয়া ৫৩৬.৮৭, চীন ২৬৭.৮১ মিলিয়ন, এবং ভারত ৮০.১৪ মিলিয়ন ডলার ছাড় করে এই সময়ে।

অর্থনীতি
২৮ দিনে এলো ২.৫৪ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স

চলতি (জুন) মাসের প্রথম ২৮ দিনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে পাঠিয়েছেন আড়াই বিলিয়ন (প্রায় ২৫৪ কোটি) ডলার। দেশীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ ৩০ হাজার ৯৭৮ কোটি (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে) টাকার বেশি। এ মাসে প্রতিদিন গড়ে এসেছে এক হাজার ১০৬ কোটি টাকার বেশি।
রোববার (২৯ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি (জুন) মাসের প্রথম ২৮ দিনে ২৫৩ কোটি ৯২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৫৫ কোটি ৬৫ লাখ ডলার, বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩৬ কোটি ১২ লাখ ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৬১ কোটি ৬১ লাখ ৪০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৫৩ লাখ ৭০ হাজার ডলার।
চলতি (২০২৪-২৫) অর্থবছরের জুলাই থেকে চলতি (মাস) জুনের ২৮ তারিখ পর্যন্ত মোট ৩০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলার।
এর আগেও প্রবাসী আয় প্রবাহে ইতিবাচক ধারা ছিল। গত মে মাসে দেশে এসেছে ২ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার, যা ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। তারও আগে মার্চ মাসে সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। পরের মাস নভেম্বরে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এছাড়া মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার, এপ্রিলে আসে ২৭৫ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স। সবশেষ মে মাসে ২৯৭ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে নানান উদ্যোগ, উৎসবকেন্দ্রিক আয় বৃদ্ধি ও অবৈধ পথে প্রেরণ নিরুৎসাহিত করায় এই প্রবাহ বাড়ছে।
অর্থনীতি
এনবিআরের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আজ বৈঠক হবে না: অর্থ উপদেষ্টা

এনবিআরের আন্দোলনকারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে আজ রোববার কোনো বৈঠক হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, কর্মকর্তারা শাটডাউন কর্মসূচি পালন করতে চাইলে করুক।
রোববার (২৯ জুন) দুপুরে অর্থ মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আজ এনবিআরের কর্মকর্তাদের আন্দোলনের বিষয় নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হবে।
আন্দোলনকারী এনবিআর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক না করার বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। আগামী ১ জুলাই তাঁদের সঙ্গে যে বৈঠক হওয়ার কথা, তা–ও হবে কি না, সে সিদ্ধান্ত পরে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা।
এদিকে আজ বেলা দুইটার দিকে এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, আজ বিকেল চারটায় অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করবেন এনবিআরের আন্দোলনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অর্থ উপদেষ্টার কার্যালয়ে এই বৈঠক হবে। এ জন্য আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট ক্যাডারের ২০ সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধি দলের সদস্য চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে নেতৃত্ব দেবেন এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার।
সব পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে রাজস্ব খাতে যৌক্তিক সংস্কারে টানা কয়েক দিন ধরে আন্দোলন করছেন এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গতকালের মতো আজ রোববারও কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালন করছেন তাঁরা। এনবিআর সংস্কার পরিষদের ব্যানারে এই আন্দোলন চলছে।
কাফি
অর্থনীতি
আরও কমল সোনার দাম

পাঁচ দিনের ব্যবধানে ফের দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানো হয়েছে। সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬২৪ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার ২৩৬ টাকা। স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে এ দাম কমানো হয়েছে।
রোববার (২৯ জুন) থেকে নতুন দাম কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
শনিবার (২৮ জুন) বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন প্রাইসিং অ্যান্ড প্রাইস মনিটরিং কমিটি বৈঠকে করে এই দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তীতে কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে গত সাড়ে চার মাসে ২৪ বার স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়েছে। গত ০৫ জুন, ২২, ১৮, ১৫, ০৭, ০৯ মে, ২৩, ২২, ২০, ১৭, ১৩, ১১ এপ্রিল, ২৮, ২৬, ১৯, ১৭, ০৫ মার্চ ২, ৬, ১১, ১৮ ও ২১ ফেব্রুয়ারি এবং ১৬, ২৩ ও ৩০ জানুয়ারি স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়। তবে দেশের ইতিহাসে গত ২৪ এপ্রিল সব চেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৫ হাজার ৩৪২ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ৭২ হাজার ৫৪৫ টাকা। যা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন উচ্চতায় উঠে স্বর্ণের দাম। এছাড়া গত ২৫ জুন, ১৬, ১৩ ১১, ০৯, ০৩ মে, ২৪, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ০২ ও ৯ মার্চ এবং ০৮, ১৪, ২৩ এপ্রিল স্বর্ণের দাম কমানো হয়।
নতুন মূল্য অনুযায়ী, সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬২৪ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার ২৩৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৪০৬ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৬২ হাজার ৫৯৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ১৩৫ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৩৯ হাজার ২৯১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৮৩১ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ১৫ হাজার ১৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিকে স্বর্ণের দাম কমানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৮৪৬ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার ২ হাজার ৭১৮ টাকা। এছাড়া ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৩৩৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার ১ হাজার ৭৫০ টাকা।
এর আগে গত ২৫ জুন সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৬৬৭ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৭২ হাজার ৮৬০ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৫৯৮ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৯৯৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৩৭৬ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৪১ হাজার ৪২৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ১৬৭ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ১৭ হাজার ১ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
গত ১৫ জুন সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ১৯৩ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৭৪ হাজার ৫২৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ১০০ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৮০৮ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৪২ হাজার ৮০২ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৫২৮ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৮ হাজার ১৬৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
গত ৫ জুন সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৪১৪ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৭২ হাজার ৩৩৫ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ২৯৮ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৬৪ হাজার ৪৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৯৭১ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৪০ হাজার ৯৯৪ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৬৯১ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৬ হাজার ৬৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
এর আগে গত ২২ মে সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৮২৩ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯২১ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৬৯৪ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৬২ হাজার ১৯৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৩০৯ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৩৯ হাজার ২৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণের দাম এক হাজার ৯৭২ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১৪ হাজার ৯৪৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
অর্থনীতি
এনবিআর আন্দোলনে স্থবির ব্যবসা-বাণিজ্য: দ্রুত হস্তক্ষেপের দাবি ব্যবসায়ীদের

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের অপসারণ এবং রাজস্ব খাতের সংস্কারের দাবিতে কর্মকর্তাদের চলমান আন্দোলনে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে এসেছে। এ অবস্থায় শীর্ষ ব্যবসায়ী ও রপ্তানিকারক সংগঠনগুলো দ্রুত এই সংকট নিরসনে সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করেছে।
শনিবার (২৮ জুন) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সংগঠনগুলোর মধ্যে ছিল বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ), মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই), বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ), বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিকেএমইএ), ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) এবং বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন (বিইএফ)।
বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান জানান, এনবিআরের অচলাবস্থায় দৈনিক আড়াই হাজার থেকে ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ক্ষতির মুখে পড়ছে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, তুলনামূলক ছোট কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী বলেন, দেশের আমদানি-রপ্তানি ব্যবসা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। পোর্টে ও বিমানবন্দরে আমদানি ও রপ্তানিযোগ্য পণ্য পড়ে থাকায় বৃষ্টি-রোদে নষ্ট হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে ব্যবসায়ী নেতারা কোনো রকম শর্ত ছাড়া আন্দোলনকারীদের কাজে যোগ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এবং সংকট কাটাতে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়কে এগিয়ে আসার তাগিদ দিয়েছেন।
এমসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি নাসিম মঞ্জুর বলেন, “কোনো সমস্যা টেবিলে বসে সমাধান করা যায় না— সেটা আমরা বিশ্বাস করি না। বসতে হবে, কথা শুনতে হবে, কিছু ছাড় দিতে হবে। কিন্তু এনবিআরের সংস্কার হতে হবে।” তবে, দাবির প্রেক্ষিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অপসারণের বিপক্ষে অবস্থানের কথা জানানো হয় এই যৌথ সংবাদ সম্মেলন থেকে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আইসিসিবি সভাপতি মাহবুবুর রহমান, বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ, এলএফএমইএবি সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, মেট্রো চেম্বার সভাপতি কামরান টি রহমান, বিসিএমইএ সভাপতি মঈনুল ইসলাম, বিকেএমইএ নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, ট্রান্সকম লিমিটেডের গ্রুপ সিইও সিমিন রহমান এবং ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান।
অর্থনীতি
ব্যাংকিং খাত বর্তমানে সংকটময় মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে: ডিসিসিআই সভাপতি

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত বর্তমানে এক সংকটময় মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে। তিনি বলেন, ব্যাংক খাতের খেলাপির কারণে আর্থিক স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগের ওপর বড় ঝুঁকি তৈরি করছে। এর ফলে ঋণপ্রাপ্তি কঠিন হয়ে গেছে এবং এসএমই খাতসহ উৎপাদনমুখী ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়ছেন বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি তাসকিন আহমেদ।
শনিবার (২৮ জুন) রাজধানীর ডিসিসিআই অডিটরিয়ামে ‘বর্তমান ব্যাংকিং খাতের চ্যালেঞ্জ: ঋণগ্রহীতাদের দৃষ্টিকোণ’ শীর্ষক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন।
প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক (মুদ্রানীতি বিভাগ) ড. মো. এজাজুল ইসলাম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রিভারস্টোন ক্যাপিটাল লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী ও ডিসিসিআই-এর সাবেক সভাপতি মো. আশরাফ আহমেদ।
তাসকিন আহমেদ বলেন, দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ এবছরের জুন পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। এটি মোট ঋণের ২৪ শতাংশের বেশি। যা আর্থিক স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগের ওপর বড় ঝুঁকি তৈরি করছে। এর ফলে ঋণপ্রাপ্তি কঠিন হয়ে গেছে, এসএমই খাতসহ উৎপাদনমুখী ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়ছেন এবং বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ৭.৫৭ শতাংশে নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে থাকায় নীতি সুদহার ও তারল্য সংকুচিত হয়েছে, ফলে মূলধনের খরচ বেড়েছে। এতে করে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
এ অবস্থায় তিনি কয়েকটি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: ঋণগ্রহীতাদের পুনর্বাসনমূলক উদ্যোগ গ্রহণ, উৎপাদনমুখী খাতে (যেমন এসএমই, কৃষি, সবুজ শিল্প) সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা, সেক্টরভিত্তিক প্রণোদনা এবং গ্যারান্টি স্কিম, ঋণের শর্ত শিথিল করে দীর্ঘ মেয়াদে পরিশোধের সুযোগ দেওয়া, ঋণ শ্রেণিকরণ সময়সীমা ৬ মাস বাড়ানো এবং ইচ্ছাকৃত ও অনিচ্ছাকৃত খেলাপি আলাদা করে চিহ্নিত করা।
ঢাকা চেম্বার সভাপতি বলেন, ব্যাংকিং খাতের সংস্কার শুধু ঝুঁকির দিক থেকে নয়, ঋণগ্রহীতাদের কথাও মাথায় রেখে করতে হবে। নইলে বিনিয়োগ, উদ্ভাবন ও প্রতিযোগিতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
সেমিনারে বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞ, ব্যবসায়ী নেতা ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
কাফি