অন্যান্য
এবারও ২৫ মার্চ রাতে এক মিনিট অন্ধকারে থাকবে দেশ

প্রতিবছরের মতো এবারও গণহত্যা দিবসে এক মিনিট অন্ধকার (ব্ল্যাকআউট) থাকবে সারাদেশ। গণহত্যা দিবসে ২৫ মার্চ কালরাত স্মরণে প্রথম প্রহর স্মরণ করে রাত ১০টা ৩০ মিনিট থেকে ১০টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত জরুরি স্থাপনা ছাড়া সারাদেশে প্রতীকী ‘ব্ল্যাক আউট’ পালন করা হবে।
তবে কেপিআই এবং জরুরি স্থাপনা এ কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে। যদিও গত বছর রাত ১১টা থেকে ১১টা ১ মিনিট পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করা হয়েছিল।
সম্প্রতি ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালন এবং ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম। সভার কার্যবিবরণী থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
কার্যপত্রে বলা হয়, ২৫ মার্চ প্রতীকী ব্ল্যাক আউটের বিষয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনায় রেলপথ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি পবিত্র রমজানে তারাবির নামাজের বিষয় বিবেচনায় রেখে রাত ১২টা থেকে ১২টা এক মিনিট পর্যন্ত প্রতীকী ব্ল্যাক আউটের প্রস্তাব দেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার পর সারাদেশে রাত ১০টা ৩০ মিনিট থেকে ১০টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত এক মিনিট প্রতীকী ব্ল্যাকআউট পালনের বিষয়ে সবাই একমত পোষণ করেন।
বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি মিশনগুলোতে ব্ল্যাক আউট প্রযোজ্য হবে না বলেও কার্যপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে ঢাকায় ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে বর্বর সামরিক অভিযানের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ব্যাপক গণহত্যা চালায়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ২৫ মার্চ রাতের আঁধারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ পুরো ঢাকাজুড়ে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল।
এছাড়া আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি ভবন স্থাপনায় কোনো অবস্থাতেই ২৫ মার্চ রাতে আলোকসজ্জা করা যাবে না।
অন্য বছর ২৩ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সমরাস্ত্র প্রদর্শনী হয়ে থাকে। এ বছর সমরাস্ত্র প্রদর্শনী হবে না বলেও সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অন্যান্য
স্বাস্থ্য নীতিমালা হালনাগাদের সুপারিশ টাস্কফোর্সের

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বিভিন্ন খাতে বিদ্যমান সংকট থেকে উত্তরণে টাস্কফোর্স বিভিন্ন সুপারিশ করেছে। এরমধ্যে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নীতিমালাগুলো হালনাগাদ করার সুপারিশ করেছে টাস্কফোর্স।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে টাস্কফোর্সের সুপারিশসমূহ নিয়ে আলোচনা হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সন্ধ্যায় রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে বৈঠকের বিস্তারিত তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
স্বাস্থ্য খাতের সুপারিশে বলা হয়, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা (প্রাইমারি সেবা) শক্তিশালী করার জন্য পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে। বিদেশ নির্ভরতা কমাতে স্বাস্থ্য খাতে অব্যবহৃত সম্পদের ব্যবহার বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা নামে দুটি আলাদা বিভাগকে একীভূতকরণ, ডিজিটালাইজেশন ও প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত, অপরিকল্পিত ব্যয় কমাতে সংস্কার কার্যক্রম জোরদার ও পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উদ্ভূত স্বাস্থ্যঝুঁকির মোকাবিলায় পদক্ষেপ নিতে হবে।
গুরুত্বপূর্ণ এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ও বিডার চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার আশিক চৌধুরী ছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অন্যান্য
চসিকের লোগোতে নৌকা বাদ, যুক্ত শাপলা

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) লোগো থেকে নৌকা প্রতীক বাদ দেওয়া হয়েছে। এরস্থলে জাতীয় ফুল শাপলার প্রতীক যুক্ত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চসিকের ফেসবুক পেইজে লোগোটি প্রকাশ করা হয়। এতদিন চসিকের লোগেতে পাহাড়, নদী, নদীতে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সাম্পান ও সড়ক বাতি ছিল। নতুন লোগোতে নৌকা বাদ দিয়ে শাপলা যুক্ত করা হয়েছে। বাকিগুলো আগের মতো আছে। নৌকা একটি দলের প্রতীক হওয়ায় বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনের লোগোর মধ্যে নৌকা ছিল। যা একটি দলের দলীয় প্রতীক। তাই দায়িত্ব নেওয়ার পর লোগো থেকে নৌকা বাদ দিয়ে সার্বজনীন প্রতীক হিসেবে জাতীয় ফুল শাপলা প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে লোগো পরিবর্তন করা হয়েছে।
২০২৪ সালের ১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে রায় দেন আদালত। এরপর একই বছরের ৩ নভেম্বর মেয়র হিসেবে শপথ নেন তিনি। ৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব নেন তিনি।
২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী নৌকা প্রতীকে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৪৮ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন ৫২ হাজার ৪৮৯ ভোট পান। ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে নয়জনকে বিবাদী করে মামলা করেন ডা. শাহাদাত হোসেন। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আদালতের রায়ে তিনি মেয়র নির্বাচিত হন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অন্যান্য
চিকিৎসকদের পুনর্মূল্যায়ন: স্বাস্থ্যখাতে মান উন্নয়নের চাবিকাঠি

বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে চিকিৎসকদের যোগ্যতা ও দক্ষতা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চিকিৎসাবিজ্ঞান প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে, নতুন রোগের আবির্ভাব হচ্ছে এবং আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি বিশ্বব্যাপী নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলছে। অথচ আমাদের দেশে একজন চিকিৎসক একবার এমবিবিএস বা বিশেষায়িত ডিগ্রি অর্জন করলে তার দক্ষতা যাচাই বা হালনাগাদের তেমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এর ফলে অনেক চিকিৎসক দীর্ঘদিন ধরে পুরোনো চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করেন, যা রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এবং স্বাস্থ্যসেবার মানের জন্য হুমকিস্বরূপ।
আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা ও তুলনামূলক বিশ্লেষণ
বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে চিকিৎসকদের নির্দিষ্ট সময় অন্তর পুনর্মূল্যায়ন (revalidation) ও দক্ষতা যাচাইয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। এতে চিকিৎসকদের সর্বদা আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার সুযোগ তৈরি হয় এবং রোগীরা সর্বোত্তম চিকিৎসা সেবা পান। উদাহরণস্বরূপ:
•যুক্তরাজ্য:
•প্রতি পাঁচ বছরে একবার চিকিৎসকদের পুনর্মূল্যায়ন করা হয়।
•লাইসেন্স নবায়নের জন্য রোগীর মতামত, সহকর্মীদের মূল্যায়ন এবং দক্ষতা উন্নয়নের রেকর্ড জমা দিতে হয়।
•যুক্তরাষ্ট্র:
•চিকিৎসকদের নির্দিষ্ট সময় অন্তর বোর্ড সার্টিফিকেশন পরীক্ষা দিতে হয়।
•বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্স সম্পন্ন করা বাধ্যতামূলক।
•সিঙ্গাপুর ও অস্ট্রেলিয়া:
•চিকিৎসকদের নির্দিষ্ট সময়ে প্রশিক্ষণ নিতে হয়।
•নির্ধারিত ক্রেডিট অর্জন না করলে লাইসেন্স নবায়ন করা হয় না।
বাংলাদেশে এ ধরনের কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায় অনেক চিকিৎসক পুরোনো ও অপ্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতি অবলম্বন করেন, যা রোগীদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
বাংলাদেশের বর্তমান চিত্র
বাংলাদেশের হাসপাতাল ব্যবস্থার বর্তমান চিত্র উদ্বেগজনক। সঠিক রোগ নির্ণয়ের জন্য দক্ষ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট প্রয়োজন, কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত টেকনোলজিস্ট না থাকায় গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা-নিরীক্ষা অনভিজ্ঞ ব্যক্তিদের দ্বারা সম্পন্ন হচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মতো দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানে এমনকি সুইপার দিয়ে টেস্ট করানোর অভিযোগ রয়েছে, যা চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য ভয়ংকর সংকেত। বর্তমানে দেশে হাজার হাজার মেডিকেল টেকনোলজিস্টের পদ শূন্য রয়েছে, অথচ প্রয়োজনীয় নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। প্রশ্ন হচ্ছে, যদি রোগ নির্ণয়ই ভুল হয়, তাহলে চিকিৎসক সঠিকভাবে চিকিৎসা দেবেন কীভাবে, আর রোগীর সুস্থতা নিশ্চিত হবে কি করে?
অন্যদিকে বাংলাদেশে চিকিৎসকরা একবার ডিগ্রি অর্জন করলেই আজীবনের জন্য চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু পেশাগত দক্ষতা হালনাগাদ বা যাচাইয়ের কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না থাকায় নিম্নলিখিত সমস্যাগুলো দেখা যায়:
•অপ্রচলিত ও ভুল চিকিৎসা: অনেক চিকিৎসক আধুনিক গবেষণার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এমন পদ্ধতি অনুসরণ করেন।
•ভুল ওষুধের ব্যবহার: অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক বা অনুপযুক্ত ওষুধ ব্যবহারের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।
•প্রশিক্ষণের অভাব: চিকিৎসকদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন বাধ্যতামূলক নয়।
•রোগীর প্রতি অবহেলা: পেশাগত উন্নয়নের অভাবে চিকিৎসকরা কখনও কখনও রোগীদের প্রতি প্রয়োজনীয় মনোযোগ দিতে ব্যর্থ হন।
প্রস্তাবিত সমাধান ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে চিকিৎসকদের জন্য বাধ্যতামূলক দক্ষতা উন্নয়ন ও মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু করা জরুরি। সম্ভাব্য পদক্ষেপগুলো হতে পারে:
১. নিয়মিত পুনর্মূল্যায়ন ও দক্ষতা যাচাই ব্যবস্থা চালু করা
•প্রতি পাঁচ বছর অন্তর চিকিৎসকদের দক্ষতা মূল্যায়নের জন্য পরীক্ষা বা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
•আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে নির্দিষ্ট সংখ্যক ক্রেডিট পয়েন্ট অর্জন বাধ্যতামূলক করা।
২. লাইসেন্স নবায়নের জন্য নির্দিষ্ট শর্ত নির্ধারণ করা
•নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা সম্পন্ন না করলে চিকিৎসকের লাইসেন্স নবায়ন স্থগিত রাখা।
•রোগীর মতামত ও সহকর্মীদের পর্যালোচনার ভিত্তিতে চিকিৎসকদের মূল্যায়ন করা।
৩. ডিজিটাল ডাটাবেজ ও ট্র্যাকিং ব্যবস্থা চালু করা
•চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ, পরীক্ষা ও দক্ষতার অগ্রগতি ট্র্যাক করার জন্য একটি কেন্দ্রীয় ডিজিটাল সিস্টেম চালু করা।
•স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসকদের তথ্য সংরক্ষণ ও পর্যবেক্ষণ করা।
৪. বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণ ও ওয়ার্কশপ আয়োজন করা
•আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি, নতুন রোগের গবেষণা, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ইত্যাদি বিষয়ে নিয়মিত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
•মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের মাধ্যমে এই প্রশিক্ষণ পরিচালনা করা।
৫. ভুল চিকিৎসা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা
•ভুল চিকিৎসার বিরুদ্ধে রোগীদের অভিযোগ গ্রহণ ও যথাযথ তদন্তের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
•অযোগ্য চিকিৎসকদের জন্য সতর্কতা, সাময়িক বরখাস্ত বা লাইসেন্স বাতিলের ব্যবস্থা রাখা।
এআই টেকনোলজির মাধ্যমে নতুন মেডিক্যাল ডিভাইস এবং সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা: সেকেন্ড ওপিনিয়ন ও গবেষণা কার্যক্রম।
এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) প্রযুক্তির ব্যবহার স্বাস্থ্যখাতে ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিশেষ করে নতুন মেডিক্যাল ডিভাইস এবং সঠিক ব্যবহারের বিষয়টি নিশ্চিত করতে। বিশ্বব্যাপী মেডিক্যাল ডিভাইসের ক্ষেত্রে এআই অনেক উন্নতি সাধন করেছে, যা রোগীর নির্ণয়, চিকিৎসা প্রক্রিয়া এবং চিকিৎসকের সিদ্ধান্ত গ্রহণে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করছে।
এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে মেডিক্যাল ডিভাইসের উন্নয়ন
এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে নতুন ধরনের মেডিক্যাল ডিভাইস যেমনঃ
•চিকিৎসক সহায়িকা সফটওয়্যার যা রোগীর ল্যাব রিপোর্ট, স্ক্যান ইমেজ এবং রোগীর পূর্ববর্তী ইতিহাস বিশ্লেষণ করে দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে রোগের নির্ণয় প্রদান করে।
•অটোমেটেড ডায়াগনস্টিক টুলস: যেমন এক্স-রে বা এমআরআই ইমেজ অ্যানালাইসিসের জন্য এআই প্রযুক্তির ব্যবহার, যা মানুষের চোখের তুলনায় দ্রুত এবং সঠিকভাবে রেডিওলজি বা প্যাথোলজি রিপোর্ট তৈরি করতে সক্ষম।
•চিকিৎসা প্রক্রিয়া কন্ট্রোল সিস্টেম: হাসপাতালের এবং ক্লিনিকের চিকিৎসা প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য এআই ভিত্তিক ডিভাইস ব্যবহার করা হচ্ছে, যা সময়মত সঠিক চিকিৎসা প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে সাহায্য করছে।
•কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সহ রোবোটিক সার্জারি: যা সার্জনের গাইডলাইনের মাধ্যমে একেবারে নিখুঁতভাবে অস্ত্রোপচার পরিচালনা করতে সক্ষম।
সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য গবেষণা কার্যক্রম
এআই টেকনোলজি, নতুন ডিভাইস এবং চিকিৎসা প্রক্রিয়ায় এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য গবেষণা কার্যক্রম অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ:
১. ক্লিনিকাল ট্রায়ালস: নতুন মেডিক্যাল ডিভাইস বা সিস্টেমের সঠিকতা ও কার্যকারিতা যাচাই করার জন্য নিয়মিত ক্লিনিকাল ট্রায়ালস চালানো হচ্ছে। এআই ব্যবহৃত ডিভাইসগুলোর কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে মানবিক পরীক্ষা ও দীর্ঘমেয়াদী পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ফলাফল মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
২.সেকেন্ড ওপিনিয়ন (Second Opinion): এআই-ভিত্তিক সেকেন্ড ওপিনিয়ন সিস্টেম বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হচ্ছে। অনেক রোগী এখন তাদের চিকিৎসা বা নির্ণয়ের জন্য দ্বিতীয় মতামত নিতে চান। এআই সিস্টেমগুলো প্রাথমিক ডায়াগনস্টিক তথ্য বিশ্লেষণ করে এবং চিকিৎসকদের গাইডলাইন হিসেবে কাজ করে। এটি রোগীদের জন্য নতুন একটি সুবিধা প্রদান করছে, যাতে ভুল সিদ্ধান্তের ঝুঁকি কমে এবং রোগীরা নিশ্চিত হতে পারেন।
৩. মেডিক্যাল ডিভাইসের নিয়মিত মূল্যায়ন: আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড মেনে মেডিক্যাল ডিভাইসের ব্যবহারে নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে। নতুন ডিভাইস ও প্রযুক্তির ব্যবহার সঠিকভাবে হচ্ছে কি না, সেজন্য নিয়মিত মনিটরিং এবং মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
৪.অ্যালগরিদম ট্রেনিং এবং আপডেট: মেডিক্যাল ডিভাইস ও সিস্টেমে ব্যবহৃত অ্যালগরিদমগুলোর আপডেট ও প্রশিক্ষণ চলমান থাকে। নতুন রোগ বা চিকিৎসার পদ্ধতিতে অ্যালগরিদম ট্রেনিং এর মাধ্যমে উন্নতি সাধন করা হয়, যাতে ডিভাইসগুলো সর্বশেষ বৈজ্ঞানিক তথ্যের ভিত্তিতে কাজ করে।
৫.ইথিক্যাল স্টাডিজ ও পলিসি ডেভেলপমেন্ট: এআই এবং মেডিক্যাল ডিভাইসের ব্যবহারের মাধ্যমে আস্থার প্রশ্ন তৈরি হতে পারে। তাই এআই টেকনোলজি ব্যবহার ও মেডিক্যাল ডিভাইসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সঠিক নৈতিক মানদণ্ড ও আইনি নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে।
গবেষণা ও উন্নয়ন চালু রয়েছে কি?
এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে নতুন মেডিক্যাল ডিভাইসের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও গবেষণাকেন্দ্র পৃথিবীজুড়ে কাজ করছে। বেশ কিছু গবেষণামূলক কার্যক্রম ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে এবং বিভিন্ন মেডিক্যাল প্রতিষ্ঠান তাদের প্রযুক্তি উন্নয়ন ও সঠিক ব্যবহার সংক্রান্ত গবেষণায় সক্রিয়ভাবে যুক্ত। বাংলাদেশে কিছু প্রতিষ্ঠানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে এআই প্রযুক্তির ব্যবহার এবং সেকেন্ড ওপিনিয়ন সংক্রান্ত গবেষণা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে, তবে এই খাতে আরও জোরালো পদক্ষেপ এবং গবেষণা জরুরি।
এআই টেকনোলজি এবং মেডিক্যাল ডিভাইসের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা, বিশেষ করে সেকেন্ড ওপিনিয়ন সংক্রান্ত সিস্টেম, একটি নতুন দিগন্ত খুলেছে স্বাস্থ্যখাতে। তবে এই প্রযুক্তির ব্যবহারের সঠিকতা, নিরাপত্তা এবং উন্নত মানের জন্য গবেষণা এবং পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখার প্রয়োজন রয়েছে। প্রযুক্তির সাথে চলতে গিয়ে সঠিক ও নিরাপদ ব্যবহারের দিকে মনোযোগ দিয়ে রোগীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে একটি কার্যকর, নিরাপদ এবং উন্নত চিকিৎসা সেবা প্রদান করা সম্ভব হয়।
শুধু চিকিৎসা খাত নয়, অন্যান্য পেশাগত ক্ষেত্রেও দক্ষতা যাচাই জরুরি
শুধু চিকিৎসকদের জন্য নয়, দেশের অন্যান্য পেশার ক্ষেত্রেও একই ধরনের দক্ষতা যাচাই ব্যবস্থা থাকা জরুরি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা একবার একটি চাকরিতে ঢোকার পর আর নিজেদের দক্ষতা উন্নয়নে সচেষ্ট হন না। এর ফলে প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদনশীলতা কমে যায় এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।
বিশেষ করে শিল্প, উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনা খাতে CGMP (Current Good Manufacturing/Management Practice) যথেষ্ট পরিমাণে অনুসরণ করা হয় না। উন্নত দেশগুলোতে এটি বাধ্যতামূলক, যাতে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা আধুনিক ব্যবস্থাপনা কৌশল ও উৎপাদন পদ্ধতি সম্পর্কে আপডেটেড থাকতে পারেন।
অন্যান্য খাতে দক্ষতা উন্নয়নে প্রস্তাবিত ব্যবস্থা
•সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম চালু করা।
•CGMP বাস্তবায়ন নিশ্চিতে বিশেষায়িত মূল্যায়ন ও অডিট ব্যবস্থা চালু করা।
•কর্মীদের নির্দিষ্ট সময় অন্তর দক্ষতা মূল্যায়ন ও পুনঃপ্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা।
•আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করে পরিচালনা প্রক্রিয়ায় গুণগত মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা ও অন্যান্য পেশাগত ক্ষেত্রের উন্নতির জন্য নিয়মিত দক্ষতা মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু করা এখন সময়ের দাবি। চিকিৎসকদের ক্ষেত্রে যেমন পুনর্মূল্যায়ন ও দক্ষতা যাচাই জরুরি, তেমনি শিল্প, উৎপাদন, প্রশাসন ও অন্যান্য ক্ষেত্রে CGMP অনুসরণ করা উচিত।
একজন চিকিৎসক যেমন মানুষের জীবন বাঁচান, তেমনি তার ভুল সিদ্ধান্ত জীবন বিপন্ন করতে পারে। তাই চিকিৎসকদের দক্ষতা উন্নয়ন ও মূল্যায়ন নিশ্চিত করা শুধু একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত নয়, বরং এটি একটি মানবিক ও নৈতিক দায়িত্ব।
এখনই সময় স্বাস্থ্য, শিল্প ও অন্যান্য পেশাগত খাতের মান উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার। সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সম্মিলিতভাবে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে হবে, যাতে বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক মানসম্মত চিকিৎসা ও সেবা পেতে পারেন এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম হন। দক্ষতা উন্নয়ন ও পুনর্মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু করা ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। সময়ের দাবি অনুযায়ী এখনই ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন। rahman.mridha@gmail.com
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অন্যান্য
চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের

আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সক্ষমতা অর্জন করে একবিংশ শতাব্দির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার জন্য ইএমই কোরের সব সদস্যের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
প্রত্যেক সদস্য আগামী দিনে দেশসেবার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।
ইএমই কোরের বার্ষিক অধিনায়ক সম্মেলনে রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সৈয়দপুর সেনানিবাসস্থ ইএমই সেন্টার অ্যান্ড স্কুলে (ইএমইসিঅ্যান্ডএস) আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেনাপ্রধান এসব কথা বলেন।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
আইএসপিআর জানায়, সেনাবাহিনী প্রধান ইএমই সেন্টার অ্যান্ড স্কুলে পৌঁছালে তাকে জিওসি, আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড; নবনিযুক্ত কর্নেল কমান্ড্যান্ট, ইএমই কোর; জিওসি ও এরিয়া কমান্ডার রংপুর এরিয়া ও কমান্ড্যান্ট ইএমইসিঅ্যান্ডএস অভ্যর্থনা জানান।
সেনাবাহিনী প্রধান সম্মেলনে উপস্থিত ইএমই কোরের ইউনিটের অধিনায়ক এবং অন্য কর্মকর্তাদের উদ্দেশে কোরের তথা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উন্নয়নকল্পে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন।
সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ইএমই কোরের গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য এবং দেশমাতৃকার সেবায় ইএমই কোরের অবদানের কথা উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে জিওসি, আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড; সেনাসদরের ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা; কমান্ড্যান্ট, ইএমই সেন্টার অ্যান্ড স্কুল; বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সব ইএমই ইউনিটের অধিনায়করা উপস্থিত ছিলেন।
গতকাল ২২ ফেব্রুয়ারি ইএমইসিঅ্যান্ডএসে ইএমই কোরের ‘১২তম কর্নেল কমান্ড্যান্ট’ হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল এস এম জিয়া-উল-আজিম। সৈয়দপুর সেনানিবাসস্থ শহীদ ক্যাপ্টেন নুরুল আবসার প্যারেড গ্রাউন্ডে যথাযোগ্য সামরিক ঐতিহ্য ও রীতি অনুযায়ী ইএমই কোরের ‘কর্নেল কমান্ড্যান্ট অভিষেক অনুষ্ঠান’ সম্পন্ন হয়।
এসময় ইএমই কোরের সব ইউনিটের সমন্বয়ে গঠিত একটি চৌকস দল নবনিযুক্ত কর্নেল কমান্ড্যান্টকে গার্ড অব অনার প্রদান করেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অন্যান্য
সিলেটে শিক্ষার্থী হামলার ঘটনায় ইবিতে বিক্ষোভ

সিলেটের এম. সি কলেজে শিক্ষার্থীর উপর হামলার প্রতিবাদে ও কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনে আওয়ামীপন্থীদের নৈরাজ্যের আশংকায় প্রতিবাদী বিক্ষোভ করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখা। একইসাথে আওয়ামী দোসরদের বিচার ও তাদের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনায় তাদের নাম পরিবর্তনের দাবিতে এ বিক্ষোভ অংশগ্রহণ করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় হতে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রশাসন ভবনের সমবেত হয় প্রায় দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীরা।
এসময় ইবি সমন্বয়ক এস এম সুইটের নেতৃত্বে মিছিলে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ সমন্বয়ক নাহিদ হাসান, গোলাম রাব্বানী, ইয়াসিরুল কবীর, তানভীর মন্ডল’সহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের “আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ; আমার ভাইয়ের ওপর হামলা কেন, প্রশাসনের জবাব চাই; জ্বালোরে জ্বালো, আগুন জ্বালো; সন্ত্রাসীদের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না, ” সন্ত্রাসীদের কালো হাত ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও”, “সন্ত্রাসীদের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না” ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারকারী ও বিভিন্ন অপরাধে জড়িত আওয়ামী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি, যেসব স্থাপনা তাদের নামে রয়েছে, সেগুলোর নাম পরিবর্তনের দাবি জানান তারা। এই দাবি আদায় না হলে পরবর্তীতে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
সমাবেশে সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, যে বিগত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার যেমন বিনা ভোটে এমপি তৈরি করেছিল তেমনিভাবে বেশ কিছু বুদ্ধিজীবী তৈরি করেছিল। যারা ১৮ সালের নির্বাচন এবং ২৪ এর গণহত্যাকে বৈধ করার জন্য ন্যারেটিভ তৈরি করেছিল। এই ন্যারেটিভ তৈরি করেছিল যেমন শাহজালাল বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জাফর ইকবাল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রুবায়েদ আরেফিন সিদ্দিকী এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এরকম বেশ কিছু শিক্ষক ছিল যারা এ গণহত্যাকে বৈধতা দেওয়ার জন্য ন্যারেটিভ তৈরি করেছিল। ইসলামী বিদ্যালয়ের কেন ইউজিসির দিকে তাকিয়ে থাকবে? দ্রুত তদন্ত কমিটি গঠন করে বিগত ষোল বছরের শ্বেতপত্র কেনো এখনো ঘোষণা করতে পারেনি? অনতিবিলম্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের ষোল হাজার শিক্ষার্থীদের সামনে তাদের শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বিগত ষোল বছরের যাবতীয় অনিয়ম দুর্নীতির ব্যাপারে সবকিছু প্রকাশ করতে হবে। আপনারা জানেন বিপ্লবে আমাদের বিজয়ের পূর্ব মুহূর্তে, ইসলামী বিদ্যালয়ের শাপলা ফোরাম নামের একটি সংগঠন তাদের নেতৃত্ব কিছু শিক্ষক, কর্মচারী ও কর্মকর্তা যেভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর গণহত্যাকে উসকে দিয়ে ছিলো তারা এখনো কিভাবে তাদের কার্যক্রম চলমান রাখে? আপনাদের কাছে প্রশ্ন রেখে গেলাম! আপনারা একেকদিন একেক দলের সাথে মিটিং করেন কিন্তু আপনারা ভুলে যান, আমার ষোলোশত ভাই বোনের রক্তের উপর দাড়িয়ে আছেন।অনতিবিলম্বে আপনারা এদের বিরুদ্ধে ব্যাস্থা গ্রহণ করুন। গতকাল কুয়েটে যে হামলার ঘটনা ঘটেছে সেখানে ছাত্রদল কতৃক বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আহত হয়েছিল। আজ এমসি কলেজে যে হামলা হয়েছে। গণমাধ্যমে সূত্র জানতে পেরেছি এমসি কলেজে শিবির নাকি অভিযোগ আছে। এখানে ছাত্রদল, শিবির, ছাত্র ইউনিয়ন যেই দলেরই হোক না কেন! তারা অপরাধী, তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী করছি।
অর্থসংবাদ/সাকিব/কাফি