আন্তর্জাতিক
ভূমিকম্পে কাঁপলো দিল্লি

ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই ভূমিকম্পে কেঁপে উঠলো দিল্লি। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় ভোর ৫টা ৩৬ মিনিটে কেঁপে ওঠে ভারতের রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকা। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বাসিন্দাদের মধ্যে। লোকজন ছুটোছুটি করে ঘর ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন।
ভারতের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজির (এনসিএস) তথ্য অনুযায়ী, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল চার। এর উৎপত্তিস্থল দিল্লির মধ্যেই এবং কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার গভীরে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, সাধারণত ৫ বা ১০ কিলোমিটার গভীরতার অগভীর ভূমিকম্পগুলো তুলনামূলক বেশি ক্ষতি করতে পারে।
ভূমিকম্পের পর ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক্স (সাবেক টুইটার) প্ল্যাটফর্মে এক বার্তায় জনগণকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান এবং সতর্কতার সঙ্গে নিরাপত্তা নির্দেশিকা মেনে চলার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতির ওপর নিবিড় নজর রাখছে।
দিল্লি অত্যন্ত ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত। এটি ভারতের ভূমিকম্প সংবেদনশীল ‘জোন ৪’ অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত, যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণিতে পড়ে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দিল্লিতে একাধিকবার চার বা এর বেশি মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। শহরটি প্রায়ই দূরবর্তী ভূমিকম্পের কম্পন অনুভব করে, বিশেষ করে হিমালয়, আফগানিস্তান ও চীন থেকে উৎপন্ন ভূমিকম্পগুলোর প্রভাব সেখানে টের পাওয়া যায়।
সাধারণত ভূগর্ভের ১০০ কিলোমিটার বা তার বেশি গভীরে উৎপন্ন ভূমিকম্প অনেকটা দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে। তবে যত দূরে উৎপত্তি হয়, এর শক্তি তত কমে যায় এবং কম্পনের মাত্রা দুর্বল হয়ে যায়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক
জাপানে ১৯ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতি

জাপানে মূল ভোক্তা মূল্য সূচক চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৩ দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা গত ১৯ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। শুক্রবার প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই প্রবৃদ্ধি বাজারের পূর্বাভাসকেও ছাড়িয়ে গেছে, যা ছিল ৩ দশমিক ১ শতাংশ।
ভোক্তা মূল্য সূচক (সিপিআই) হল একটি অর্থনৈতিক সূচক যা সময়ের সাথে সাথে সাধারণ ভোক্তাদের দ্বারা ক্রয়কৃত পণ্য ও সেবার গড় মূল্য পরিবর্তনকে পরিমাপ করে। এটি মূলত মুদ্রাস্ফীতি পরিমাপ করার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (বিওজে) নির্ধারিত ২ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি লক্ষ্য টানা তিন বছর ধরে অতিক্রম করেছে। ফলে দেশটিতে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির চাপ স্পষ্ট হচ্ছে ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে সুদের হার বাড়ানোর পক্ষে আরও কঠোর অবস্থান তৈরি হচ্ছে।
বিওজের বোর্ড সদস্য হাজিমে তাকাতা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সুদের হার আরও বাড়ানোর বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা উচিত।
নিক্কেই এশিয়ার প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, জানুয়ারিতে তাজা খাবার ও জ্বালানি ছাড়া অন্যান্য পণ্যের মূল্য ২ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি গত বছরের মার্চ মাসের পর দ্রুততম বার্ষিক বৃদ্ধি। মার্চে এই বৃদ্ধি হার ছিল ২ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছিল।
এদিকে, জাপানের সরকারি বন্ডের চাহিদা বৃদ্ধি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে বিওজে এখন প্রাথমিক অনুমানের চেয়ে আরও দ্রুত ও আগ্রাসীভাবে সুদের হার বাড়াতে পারে। মজুরি বৃদ্ধির সম্ভাবনা ও ভোক্তা ব্যয়ের প্রবণতা এই প্রবণতাকে আরও জোরদার করছে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে জাপানের ক্রেন্দ্রীয় ব্যাংক স্বল্পমেয়াদী সুদের হার শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ করেছে। দেশটির গভর্নর কাজুও উয়েদা বলেছেন, যদি মজুরি বৃদ্ধি ও ভোক্তা ব্যয় বাড়তে থাকে, তাহলে সুদের হার আরও বাড়ানো হতে পারে।
অন্যদিকে, জানুয়ারিতে জাপানে পাইকারি মূল্যস্ফীতি ৪ দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা গত সাত মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। টানা পাঁচ মাস ধরে এই বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এটি মুদ্রাস্ফীতির স্থায়ীত্বকেই নির্দেশ করে।
একটি বেসরকারি সমীক্ষা অনুযায়ী, বেশিরভাগ অর্থনীতিবিদরা ধারণা করছেন, পরবর্তী সুদের হার চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে বাড়াতে পারে জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
আ.লীগ সরকারের উৎখাতের কারণ জানা গেল জাতিসংঘের প্রতিবেদনে

জাতিসংঘের অধিকার অফিস (ওএইচসিএইচআর) বলেছে, ২০২৪ সালের জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে আগস্টের প্রথম দিকের ধারাবাহিক ঘটনাবলীর কারণে বিগত সরকার উৎখাত হয়েছে এবং গণঅভ্যুত্থানের শেষ দিনগুলোতে ‘সাময়িকভাবে ভাটা পড়া’ আন্দোলনে নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতা রাস্তায় বিক্ষোভকে পুনরায় উস্কে দিয়েছিল।
ওএইচসিএইচআর রিপোর্টে বলা হয়েছে, কোটা ব্যবস্থা নিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে বিক্ষোভকারীদের শান্ত করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত আসতে অনেক দেরি করেছিল এবং সর্বোচ্চ আদালতের আদেশের আগে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ বিক্ষোভকারীদের নেতাদের কাছে ‘কুটিল’ বলে মনে হয়েছিল।
এতে বলা হয়েছে, ‘বিক্ষোভকারীদের শান্ত করার জন্য, ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই বিগত সরকার হাইকোর্টের কোটা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দাখিল করে, যা মূলত বিক্ষোভের সূত্রপাত করেছিল।’
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, পরের দিন সন্ধ্যায় পদচ্যুত প্রধানমন্ত্রী এক জনসভায় শিক্ষার্থীদের সুপ্রিম কোর্টের প্রত্যাশিত ইতিবাচক সিদ্ধান্তের জন্য ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে বলেছিলেন, ১৬ জুলাই প্রাণহানির জন্য সমবেদনা জানিয়েছিলেন এবং দাবি করেছিলেন যে, ‘আমাদের বিক্ষোভকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ সহযোগিতা করেছিল।’
চলতি মাসের শুরুতে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশে ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টের বিক্ষোভের সাথে সম্পর্কিত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতন’ শীর্ষক তথ্য অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘(কিন্তু) প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ বিক্ষোভকারী নেতাদের কাছে আন্তরিকতাহীন বলে মনে হয়েছিল।’
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দেশজুড়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির আহ্বান জানিয়ে বলেছিল, হাসপাতাল ও জরুরি পরিষেবা খোলা থাকবে, তবে অন্যকোনো প্রতিষ্ঠান চালু থাকবে না এবং অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কোনো যানবাহন রাস্তায় চলতে দেওয়া হবে না।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্ব একই সাথে তাদের অনুসারীদের হরতাল সমর্থন করার আহ্বান জানিয়েছিল, যার ফলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী আইন, শিক্ষা এবং তথ্য মন্ত্রীদের বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের নেতাদের সাথে আলোচনার জন্য মনোনীত করেছিলেন, পাশাপাশি ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই) এর চলমান প্রচেষ্টাও অব্যাহত ছিল।
এতে বলা হয়েছে, তবে, সেই পর্যায়ে, ছাত্ররা আর আলোচনার জন্য প্রস্তুত ছিল না, কারণ তারা তাদের ওপর এর আগে ছাত্রলীগ ও পুলিশের হামলার কারণে সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে সন্দিহান ছিল।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ১৮ জুলাই থেকে, যখন বিক্ষোভকারীরা গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে যান চলাচল ব্যাহত করার চেষ্টা করছিল তখন সাধারণ জনগণও রাস্তায় নেমে আসে এবং নিরাপত্তা বাহিনী ‘এই পর্যায়ে প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগের দিকে ঝুঁকে পড়ে’।
এতে বলা হয়েছে, তারা শান্তিপূর্ণ হলেও বিঘ্ন সৃষ্টিকারী বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে কম প্রাণঘাতী অস্ত্রের পাশাপাশি রাইফেল, পিস্তল ও শটগান ব্যবহার করেছিল, এতে উত্তরায় (৩টি ঘটনা) ও অন্যান্য অনেক জায়গায় হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল, পাশাপাশি তারা আহতদের চিকিৎসা সেবা (৮টি ঘটনা) সক্রিয়ভাবে বাধাগ্রস্ত করেছিল।
এতে বলা হয়েছে, বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী জনতা যখন আরও ভিন্নরূপ ধারণ করে তখন জনতার কিছু অংশ পুলিশ, পরিবহন অবকাঠামো এবং বাংলাদেশ টিভি ভবনসহ সরকারি ভবনগুলোতে আক্রমণ করেছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৮ জুলাই সন্ধ্যায়, সরকার বিজিবি (বর্ডার গার্ডকে বাংলাদেশ) সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগের নির্দেশ দেয় এবং ২৩ জুলাই পর্যন্ত দেশে ইন্টারনেটসেবা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেয়।
ওএইচসিএইচআর প্রমাণ পেয়েছে যে, ১৯ জুলাই, বিজিবি, পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং অন্যান্যরা রামপুরা ও বাড্ডা ছাড়াও ঢাকা ও সারা দেশে জনতার ওপর গুলি চালায়, কিন্তু শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ বা সহিংস অস্থিরতা দমন করতে পারেনি।
সন্ধ্যায়, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মধ্যরাত থেকে কার্যকর দেশব্যাপী কারফিউ জারি, ও ২৭,০০০ সেনা সদস্য মোতায়েন করেন। ২০ ও ২১ জুলাই নিরাপত্তা বাহিনী বড় ধরনের অভিযান চালায়।
এতে বলা হয়েছে, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানের মাধ্যমে নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে এবং গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো অবরোধ মুক্ত করতে বিশেষ করে যাত্রাবাড়ী মোড়ে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কটি খালি করার জন্য সামরিক রাইফেল ও শটগানের গুলি চালায়।
ওএইচসিএইচআর উল্লেখ করেছে যে, ২১শে জুলাই, সুপ্রিম কোর্টের একটি নতুন রায় মুক্তিযোদ্ধাদের বংশধরদের জন্য সংরক্ষিত সরকারি চাকরির কোটা ৫ শতাংশে কমিয়ে দেয় এবং ‘সরকার দ্রুততার সঙ্গে আদালতের মতামত মেনে নিয়ে প্রকাশ্যে এই পরিবর্তনকে সমর্থন জানায়।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘তবে, সেই সময়ে, ছাত্র আন্দোলন ইতোমধ্যেই তাদের নিজস্ব দাবির মধ্যে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আরও বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত, সেইসাথে ছাত্রদের হত্যাকারী পুলিশ অফিসার এবং ছাত্রলীগ সমর্থকদের জন্য ফৌজদারি জবাবদিহিতার দাবি অন্তর্ভুক্ত করেছিল।’
২৬ জুলাই, বিএনপি সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং অন্যান্য সংগঠনের মধ্যে ‘জাতীয় ঐক্য’ প্রতিষ্ঠার এবং সরকারের পতনের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য প্রকাশ্যে আহ্বান জানিয়েছিল।
ওএইচসিএইচআর জানিয়েছে যে, রাস্তার বিক্ষোভ ‘সাময়িকভাবে শান্ত থাকলেও’ নিরাপত্তা বাহিনী ছাত্র, বিরোধী সমর্থক এবং বিক্ষোভে জড়িত থাকার সন্দেহে অন্যদের বিরুদ্ধে গণগ্রেপ্তার অভিযান চালায় এবং ছয়জন বিশিষ্ট ছাত্রনেতাকেও আটক করা হয়।
জাতিসংঘের কার্যালয় জানিয়েছে যে, এই ব্যক্তিদের প্রায়শই অপরাধমূলক কাজের প্রমাণ ছাড়াই আটক করা হতো এবং অনেক ক্ষেত্রে নির্যাতন ও অন্যান্য ধরণের দুর্ব্যবহারের শিকার হতে হয়েছিল।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘২৮শে জুলাই, গোয়েন্দা শাখার প্রধান একটি জোরপূর্বক বিবৃতির একটি ভিডিও রেকর্ডিং প্রকাশ করে। এতে আটক ছয়জন ছাত্রনেতা বিক্ষোভের নিন্দা করেছিলেন। এই ঘটনায় জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
ওএইচসিএইচআর আরও জানিয়েছে যে, ২৫ জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাঙচুর করা মেট্রো স্টেশন এবং পরের দিন পুড়ে যাওয়া বাংলাদেশ টিভি ভবন পরিদর্শন করেছিলেন এবং একই দিনে বেশ কয়েকটি হাসপাতাল পরিদর্শন করে পুলিশ ও বিজিবির গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন আহত রোগীদের সাথে কথা বলেছিলেন।
তিনি ২৮ জুলাই নিহত ছাত্রদের পরিবারবর্গকে তার বাসভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন এবং ‘এই সময়ে, তিনি প্রকাশ্যে বিরোধী দলগুলোর ওপর সহিংসতা ও প্রাণহানির জন্য সমস্ত দোষ চাপিয়েছিলেন’।
৩০ জুলাই, সরকার জামায়াতে ইসলামী এবং এর সহযোগী সংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এসব ঘটনা ২০২৪ সালের আগস্টের শুরুতে ব্যাপক বিক্ষোভ ও সহিংসতা উস্কে দিতে অবদান রেখেছিল। নতুন করে জোরদার গণবিক্ষোভ শেখ হাসিনাকে দেশত্যাগ করতে বাধ্য করেছিল।
ওএইচসিএইচআর উল্লেখ করেছে যে, বিক্ষোভ পুনরায় শুরু হওয়ার পর গণআন্দোলন ‘তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের পদত্যাগ’ করার একটি নতুন, একক দাবির ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারের প্রতিক্রিয়ায় প্রাণঘাতী অস্ত্রসহ ব্যাপক শক্তি প্রয়োগ করা হয়েছিল। নিরাপত্তা বাহিনীর শক্তি প্রয়োগ সম্পর্কে আগস্টের শুরুতে একজন ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তা এবং মন্ত্রিসভার একজন সদস্য ব্যক্তিগতভাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানিয়েছিলেন।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, রাস্তায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছিল। কিন্তু ‘বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে বল প্রয়োগের জন্য অফিসার ও সৈন্যদের মধ্যে সমর্থন হ্রাস পাচ্ছিল’। ৩ আগস্ট সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান একটি বড় সেনা সভা আহ্বান করেন, যেখানে জুনিয়র অফিসাররা তাকে জানান যে, তারা বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালাতে চান না।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, বিক্ষোভকারীরা আন্দোলন কর্মসূচিতে ৫ আগস্ট ঢাকায় একটি গণমিছিলের পরিকল্পনা করেছিল। ৪ আগস্ট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের একটি বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন, যেখানে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা এবং স্বরাষ্ট্র, শিক্ষা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাসহ অন্যান্যরা অংশগ্রহণ করেন। তারা ঢাকায় গণমিছিল ঠেকাতে পুনরায় কারফিউ আরোপ এবং তা কার্যকর করার বিষয়ে আলোচনা করেন।
৪ আগস্ট সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি প্রধানদের সাথে দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সেনাপ্রধান ও অন্যান্য নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তাকে আশ্বস্ত করেন যে, ঢাকায় সমাবেশ করতে দেয়া যেতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি পরিকল্পনায় তারা সম্মত হয়েছিল যে, ঢাকা শহরের কেন্দ্রস্থলে বিক্ষোভকারীদের প্রবেশে বাধা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ করতে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিজিবি মোতায়েন করা হবে।
এতে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট, লাখ লাখ বিক্ষোভকারী ঢাকার কেন্দ্রস্থলের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশ ও সশস্ত্র আওয়ামী লীগ সমর্থকরা অনেক স্থানে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালায়, যদিও সেনাবাহিনী ও বিজিবি বেশিরভাগ সময় পাশে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভকারীদের মিছিল করতে দেয়। তবে, সৈন্যরা অন্তত একবার যেমন যমুনা ফিউচার পার্কে (ঘটনা ৭) গুলি চালিয়েছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সকালে, সেনাপ্রধান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলেন যে, সেনাবাহিনী বিক্ষোভকারীদেরকে তার বাসভবনে পৌঁছাতে বাধা দিতে পারবে না। দুপুর ২টার দিকে শেখ হাসিনা সশস্ত্র বাহিনীর হেলিকপ্টারে করে ঢাকা থেকে দেশ থেকে চলে যান।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বেশি দূরে নয়, সতর্ক করলেন ট্রাম্প

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ খুব বেশি দূরে নয় বলে সতর্ক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তিনি এটি ঘটতে বাধা দেবেন বলেও দাবি করেছেন। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) মিয়ামিতে একটি সম্মেলনে বক্তব্য দেওয়ার সময় এমন মন্তব্য করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
তবে এই যুদ্ধ করে কোনো পক্ষের কোনো লাভ হবে না উল্লেখ করে ট্রাম্প বলেন, আপনারা এটি (বিশ্বযুদ্ধ) থেকে দূরে নন। আমি বলছি, এটি দূরে নয়। যদি বাইডেন সরকার আর এক বছর থাকতো, তাহলে আপনারা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে থাকতেন।
তবে তার প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রকে এ ধরনের যুদ্ধে জড়াতে দেবে না দাবি করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তার দাবি, যুক্তরাষ্ট্র এসব যুদ্ধে অংশ নেবে না বরং সেগুলো বন্ধ করবে।
ট্রাম্প বলেন, আমরা এই মূর্খ, অন্তহীন যুদ্ধ থেকে মানুষকে থামাতে যাচ্ছি। আমরা নিজেরা এতে অংশ নেবো না। তবে আমরা যে কারও চেয়ে আরও শক্তিশালী হবো। যদি কখনো যুদ্ধ শুরু হয়, এমন কেউ নেই যে আমাদের কাছাকাছি আসতে পারবে।
এদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে দায়ী করে রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপের তুলনায় ২০০ বিলিয়ন বা ২০ হাজার ডলার বেশি ব্যয় করেছে। জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রকে এমন একটি যুদ্ধে শত শত কোটি ডলার বিনিয়োগ করতে রাজি করিয়েছেন, যা জেতা সম্ভব নয়।
তাছাড়া ট্রাম্প জেলেনস্কিকে ‘নির্বাচন ছাড়া একজন একনায়ক’ বলে কটাক্ষও করেছেন। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট লেখেন, একজন মধ্যম মানের কৌতুক অভিনেতা ভলোদিমির জেলেনস্কি, যুক্তরাষ্ট্রকে এমন একটি যুদ্ধে ৩৫০ বিলিয়ন বা ৩৫ হাজার ডলার ব্যয় করতে রাজি করিয়েছেন, যা কখনোই শুরু হওয়া উচিত ছিল না এবং ইউক্রেনের যা জেতা অসম্ভব। সম্ভব নয়।
এদিকে, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও জেলেনস্কিকে নিয়ে দেওয়া ট্রাম্পের বক্তব্য বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। আন্তর্জাতিক মহলে তার বক্তব্য নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ভারতে বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটের জরুরি অবতরণ

ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রের নাগপুর বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট। ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া এই ফ্লাইটটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাইতে যাচ্ছিল।
জরুরি অবতরণ করা এই ফ্লাইটটিতে চার শতাধিক আরোহী রয়েছেন। ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ঢাকা থেকে দুবাই যাওয়ার পথে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট ৩৯৬ জন যাত্রী এবং ১২ জন ক্রু সদস্য নিয়ে মহারাষ্ট্রের নাগপুর বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করেছে বলে কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন।
নাগপুর বিমানবন্দরের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে ফ্লাইটটি ডাইভার্ট করা হয় এবং পরে জরুরি অবতরণ করে সেটি।
ফ্লাইটটিতে ৩৯৬ জন যাত্রী এবং ১২ জন ক্রু সদস্য রয়েছেন বলে অন্য একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, যাত্রীদের বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের আরেকটি ফ্লাইটে উঠিয়ে দেওয়া হবে।
এদিকে পৃথক প্রতিবেদনে আরেক ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, ঢাকা থেকে দুবাইগামী বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আজ সকালে মহারাষ্ট্রের নাগপুর বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করেছে।
নাগপুর বিমানবন্দরের পরিচালক আবিদ রুহি বলেছেন, প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে বিমানটি অবতরণ করতে বাধ্য হয়েছে। ফ্লাইটের সব যাত্রীকে অবতরণের পর নিরাপদে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
এবার ১৮ ঘণ্টা রোজা রাখতে হবে যেসব দেশে

পবিত্র রমজানের অপেক্ষার সময় শেষের পথে। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি মধ্যপ্রাচ্যের ইসলামিক দেশগুলোতে রমজানের চাঁদ দেখা গেলে, পরেরদিন ১ মার্চ থেকে সেখানে রোজা শুরু হবে। অপরদিকে ১ মার্চ বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে ১ মার্চ চাঁদ দেখা কমিটি বৈঠক বসবে। ওইদিন চাঁদ দেখা গেলে পরের দিন ২ মার্চ থেকে শুরু হবে মহিমান্বিত এ মাস।
পৃথিবী বাঁকা ও সূর্যের অবস্থানের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় দিন ও রাতের সময়ের মধ্যে পার্থক্য থাকে। আবার কোথাও কোথাও সূর্য কখনো উদয় হয় না। তাই বিশ্বের মুসল্লিরা ভিন্ন ভিন্ন সময়— কেউ কেউ ১৭-১৮ ঘণ্টা। আবার কেউ কেউ ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা বা তারও বেশি রোজা রাখেন।
এ বছর ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলেনস্কির মুসল্লিদের সর্বোচ্চ ১৭ দশমিক ৫ ঘণ্টা রোজা রাখতে হবে। অপরদিকে বাংলাদেশে প্রথম রোজাটি প্রায় ১৩ ঘণ্টা দীর্ঘ হবে। আরও যেসব দেশের মানুষকে দীর্ঘ সময় রোজা রাখতে হবে সেগুলো হলো—
১। নুউক, গ্রিনল্যান্ড (১৭ ঘন্টা)
২। গ্লাসগো, স্কটল্যান্ড (১৬ দশমিক ৫ ঘন্টা)
৩। অটোয়া, কানাডা (১৬ দশমিক ৫ ঘন্টা)
৪। জুরিখ, সুইজারল্যান্ড (১৬ দশমিক ৫ ঘন্টা)
৫। রোম, ইতালি (১৬ দশমিক ৫ ঘন্টা)
৬। মাদ্রিদ, স্পেন (১৬ ঘন্টা)
৭। লন্ডন, যুক্তরাজ্য (১৬ ঘন্টা)
৮। প্যারিস, ফ্রান্স (১৫ দশমিক ৫ ঘন্টা)
৯। রেকজাভিক, আইসল্যান্ড (১৫ ঘন্টা)
অপরদিকে এ বছর সবচেয়ে কম সময় রোজা রাখবেন নিউজিল্যান্ডের মুসল্লিরা। দেশটিতে রোজার দিনের ব্যপ্তি হবে ১১ দশমিক ৫ ঘণ্টা। কম সময় রোজা রাখার তালিকায় অন্য দেশগুলো হলো—
১। পুয়ের্তো মন্ট, চিলি (১১ দশমিক ৫ ঘন্টা)
২। করাচি, পাকিস্তান (১২ ঘন্টা)
৩। বুয়েন্স আয়ার্স, আর্জেন্টিনা (১২ ঘন্টা)
৪। কেপ টাউন, দক্ষিণ আফ্রিকা (১২ দশমিক ৫ ঘন্টা)
৫। নয়াদিল্লি, ভারত (১২ দশমিক ৫ ঘন্টা)
৬। জাকার্তা, ইন্দোনেশিয়া (১২ দশমিক ৫ ঘন্টা)
৭। দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত (১৩ ঘন্টা)
৮। নাইরোবি, কেনিয়া (১৩ ঘন্টা)
৯। ঢাকা, বাংলাদেশ (১৩ ঘণ্টা)
কাফি